Pages

Thursday, April 3, 2014

ব্যক্তিগত আর্থিক ব্যবস্থাপনা

এডিট করে স্বনির্বাচিত কলাম ২য় খন্ডে প্রকাশ
আমার  আর্থিক ব্যবস্থাপনা আমি কখনোই যুতসই ভাবে করতে পারিনি। আমি অনেক পরিকল্পনা করি ঠিকই কিন্তু আমার খরচের হাতটা স্থির রাখতে পারি না । আর্থিক ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে করতে যে পরিমাণ ধৈর্য ধারণ করতে হয় সে পরিমাণ ধৈর্য আমার কখনোই ছিল না।
মাঝে মাঝে মনে হয় ক্যান্টিনেঅফিসার মেস ইত্যাদি খরচ যত কম বকেয়া করে করা যায় ততোই মঙ্গল। বকেয়া খরচের প্রদান সমস্যা হল খরচের হিসাবের লাগাম ধরা যায় না। যারা বকেয়া পরিহার করে নগদে ক্রয় করতে পারে তারাই বুদ্ধিমান।
উন্নতির সবচেয়ে বড় শর্ত হল আয়ের থেকে ব্যয় কম করতে হবে।আয়ের থেকে ব্যয় কম করে জমাতে পারলেই কেবল উন্নতি করা যায়। আয়ের থেকে ব্যয় কম করতে হবে আর কিছুটা জমাতে হবে। আমরা সব সময় অন্যকে অনুসরণ করতে চাই। ধার কর্জ করে চাকচিক্য করে আমরা অতৃপ্তি পেতে চাই । এর থেকেও আমি কোনও ব্যতিক্রম নই। আমার প্রথম জীবনে বেহিসাবি খরচের মধ্য পরিবারকে দেয়াছুটিতে বেড়য়ে খরচ করা। যেটা হয়মধ্যবিত্ত পরিবারের কেউ চাকুরী পেলে সে মনে করে স্বর্গ হাতে পেল। আর যদি জীবনে অতৃপ্তি থাকে তবে তো কথাই নেই। বাজেট কমানো বা খরচের রাশ টেনে ধরা অনেক বড় অনুশীলনের বিষয়।
এ অনুশীলনটি পরিবারের সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অর্জন করা সম্ভব। পরিকল্পনা ছাড়া হটাত করে কেনাকাটা করা উচিত নয়। সবচেয়ে সর্বনাশা হল। ছোট বাচ্চারা কখনোই  হিসাব অনুযায়ী আচরণ করে না। প্রায়শ:ই তারা পিতামাতাকে বিপাকে ফেলার মত আচরণ করে। পরিকল্পনা করে গেলেন আপনি ২০০০ টাকায় কেনাকাটা সারবেন। হুট করে একটা খেলনা ও খাবার আইটেম বগলদাবা করে বসল। আপনি কোনক্রমেই অতিরিক্ত ১০০০ টাকা পরিশোধের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। তখন নিজের ইজ্জত বাচাতে আপনি আপনার ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করতে বাধ্য হন অথবা তাৎক্ষনিক লোণ করতে বাধ্য হন।
আবেগ ও ভালবাসা আমাদের প্রায়শই আমাদের এত বেশী ইমোশনাল বা আবেগপ্রবণ করে ফেলে এতে আমরা শাসনে শক্ত হতে পারিনা। বর্তমান যুগে বাচ্চাদের মারধর করা একদম নিষেধ তাতে ভালোর চেয়ে মন্দ হয় বেশী। এতে অনেক শিশুর কথা না শোনার মাত্রা এত বেড়ে যায়। তখন মনে হয় আগের পদ্ধতিতে মারধর করলে হয়ত ভাল হত। মাঝে মাঝে ধমকেও বাচ্চারা এত রিএক্ট করে তখন অবাক লাগে। তখন নিজেদের অতীত মেলালে একটু অবাক হতে হয়। এ ধরনের ইমোশনাল সমস্যা বর্তমান সময় থেকে আগে বেশী ছিল কিনা মনে করতে পারছিনা।
উন্নতির প্রথম শর্ত হল আয় থেকে ব্যয় কমাতে হবে। যদি তিন-বেলা খাওয়ার সামর্থ্য না থাকে তবে দুইবেলায় খাবারের বিল কমিয়ে আনতে হবে। সস্তা খাবার আহত সস্তা প্রোটিন অথবা প্রাণীজ প্রোটিনের পরিবর্তে উদ্ভিদজাত প্রোটিনের ব্যবহার বাড়াতে হবে। মোট কথা আয় থেকে ব্যয় কমিয়ে রাখতে হবে। কোন কিছুই বাকীতে( ক্রেডিটে) কেনা যাবে না। ওভার ড্র করা যাবে না।
তবে একটা বিষয়ে মনে হয় আমি আমার বাবার ধৈর্যের ও বিচক্ষণতার প্রশংসা না করে পারছিনা যিনি ছয় সন্তানের পরিবার চমৎকারভাবে সামলিয়েছেন। আজকে আমি তিন সন্তানের পরিবারের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসাবে খরচ চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি।
আমি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হিসাবে চাকুরী-কালীন সময়ে আমি একটা বিষয় লক্ষ করেছি তা হল আমাদের প্রায় সমস্ত খরচই আমরা ক্রেডিটে করি। আর আমাদের এ বকেয়া থাকার কারণে যারা অধিক সচেতন কেবল তারাই হয়তবা নিজের হিসাবের মধ্যে চলতে পারেন। অধিকাংশই আমরা বেতনের মধ্যে চলতে পারিনা। আলটিমেটলি টিএ/ডিএ ইত্যাদি বাড়তি আয়ের উপর আমাদের নির্ভরশীল হতে হয়। আর আমরা যদি একদম শক্তভাবে চিন্তা করে নেই অবশ্যই আমি নির্দিষ্ট পরিমাণ খরচে চলব তা অবশ্যই করা সম্ভব। মূলত আমাদের সাংসারিক খরচ বিশেষ করে খাওয়া খরচ আমরা অনেক সময় নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। অনেক সময় সন্তানের পড়াশোনা বা ইত্যাদি খরচ ইচ্ছে করলেও কমানো যায় না। যেমন: একজন মালী যার মাসিক বেতন ও অন্যান্য উৎস মিলিয়ে আয় ১৫০০০ টাকা। সে তার এক মেয়েকে মেডিক্যাল কলেজে পড়াচ্ছে। এখন মেয়ের পিছনে কম করে ৫০০০ টাকা খরচ করলে তার অন্য সন্তান,স্ত্রী ও নিজ খরচ বাকী ১০০০০ টাকায় চালাতে হচ্ছে। যদিও এধরনের সাধ্যের বাইরে সুযোগ সৃষ্টি হলে আমাদের সন্তানদের জন্য আমরা প্রভিডেন্ট ফান্ডজমি ও স্ত্রীর গয়না বিক্রি হতে বাড়তি ব্যয় নির্বাহের ব্যবস্থা নিতে হয়। কারণ মেধাবী সন্তানের ভাল পরিবেশে পড়াশোনা করানোটাও একটা বিশাল ইনভেস্ট।
তাহলে যে কোন চাকুরী বা উপার্জনে একটা লক্ষ্য স্থির করে চলতে হবে আমার জীবনে আবেগ প্রবণ হয়ে জীবনে বিভিন্ন সময় ওডি করে বেতনের বিশাল অংশ ওডি,র সুদ হিসাবে ব্যাংক কর্তনে চলে যেত। আর ঋণের একটা মহা আর্বতে জীবন আবর্তিত হতে থাকত। দুইটি জাতি সংঘ মিশনের টাকা দিয়ে ঋণ শোধ হয় কিন্তু উন্নতির ধারা ব্যাহত হয়। মরার উপর খরার ঘা হল পেনশন কমুটেশনের উপর ২০ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে শেয়ার মার্কেটে খাটানো যা ছিল আরো ধ্বংসাত্মক।
আমার এই ৪৩ বছর বয়সে খরচের বিপরীতে পরিবারের ইচ্ছের বিরুদ্ধ যুদ্ধ করাটা একটা বিশাল বিষয়। এরূপ একটা যুদ্ধ আমি করেছিলাম। তা হল শেয়ার মার্কেটে ধরাশায়ী হয়ে। তখন ৩০০০০ টাকা দিয়ে কিভাবে পরিবারের খরচের টাকায় চালানো যায় তার জন্য যুদ্ধ করা। এত খরচ কমাতে না পারলেও অনেকটুকু কমাতে পেরেছিলাম। পারিবারিক খরচ কমানো একটা বিশাল যুদ্ধ। এ যুদ্ধে পরিবারের সকলে জড়িত থাকে বলে যুদ্ধটা ভয়াবহ। এখন আবার একটা যুদ্ধ করতে চাচ্ছি তা হল বেতনের আয়ের মধ্যে জীবনধারণ করা। এ যুদ্ধটা করছি ঢাকা শহরের বাইরে থেকে যদি বেতনের টাকায় চলতে না পারি তবে তা ভয়াবহ বিষয়। আর চাকুরীর পূর্ণ বেতন প্রাপ্তির সময় আছে মাত্র ৯ বছর। এ ৯ বছর যদি বেতনের খরচের মধ্য চলার অভ্যাস করতে পারিতবে সামনের জীবন যুদ্ধটা সহজ হবে।


এখন হয়তোবা অনেকে দ্বিমত করবেন। বেতনের টাকার পুরোটা জমাব আর বাড়তি টাকায় সংসার চালাব। এটা অবশ্য চাকুরীজীবীদের সৎ চিন্তাধারার পথ নয়। আমাদের মন্ত্রটা এরূপ হতে হবে যেন বেতনের অর্থে নিজের জীবন ও জীবিকা চালিত করব। আর কিঞ্চিত বেশী উপার্জন করতে পারলে তা সঞ্চয় করব। এভাবে হয়ত সততার জীবন নির্বিঘ্ন হবে।

মোবাইল ডিভাইসে বাংলা টাইপ করা

আজ থেকে আনুমানিক দশ বছর আগে কোন একটি দৈনিক পত্রিকায় মজার বিষয় পড়েছিলাম।  ইউরোপের একজন সাংবাদিক ভদ্রলোক বাসা থেকে কর্মস্থলে যেতে প্রতিদিন যাওয়া ও আসায় সর্বমোট দুই ঘণ্টার বেশী সময় ব্যয় করতেন। তিনি তার এই দুই ঘণ্টা সময়ের একটা মজাদার ব্যবহার বের করলেন। তা হল মোবাইলের এসএমএস অপশনের মাধ্যমে ম্যাসেজ আকারে ইংরেজি আর্টিক্যালের অংশ বিশেষ টাইপ করে যেতেন। পরে তিনি সেসব এসএমএস মোবাইল থেকে কম্পিউটারে নিয়ে নিতেন আর এভাবে তিনি দিনের পর দিন মোবাইলের মাধ্যমে লিখে যেতেন।
এভাবে এসএমএস আকারে টাইপ করে করে তিনি কয়েকটি বই লিখতে সমর্থ হন। আমি এটা পড়ার পর বেশ মজা পেয়েছিলাম। এ পদ্ধতি তখন আমি অহরহ ব্যবহার করা শুরু করেছিলাম। আমার মত অনেকে হয়তবা এটির ব্যবহার করেন। হয়তবা আপনি কোন স্থানে যাচ্ছেন বা কোথাও কারো সাক্ষাতের জন্য অপেক্ষা করছেন। তখন বসে বসে নানা ইংরেজি চিঠিপত্রাদির ড্রাফট তৈরি করে নেয়া সম্ভব। পরে আপনার মোবাইল থেকে সেসব ড্রাফট ব্লটুথের মাধ্যমে ল্যাপটপে পার করতে পারেন। অথবা ইউএসবি ক্যাবলের মাধ্যমে নিতে পারেন। আর একান্তই কোনভাবে পার করতে না পারলে আপনার সহযোগীর মোবাইলে আপনার তৈরিকৃত ড্রাফটগুলি এসএমএস আকারে ফরওয়ার্ড করে নিন। ফরোয়ার্ড কৃত ম্যাসেজ আপনার সহযোগীকে বলুন টাইপ করে প্রিন্ট আউট নিয়ে বা সফট কপি আপনার কারেকশনের জন্য দিতে। আপনি হয়তবা কাছে নেই আপনার সহকারী জানাল, কোন বিষয়ে জরুরী মতামত দিতে। তখন সহকারীর কাছ থেকে বিষয় শুনে নিয়ে আপনি উত্তরটি বলে দিলেন। আর চিঠিটি যদি ইংরেজিতে হয় আর চিঠির উত্তর যদি বেশী বড় না হয় তবে আপনি এসএমএস করে উত্তর পাঠিয়ে দিতে পারবেন। আপনার সহকারী এসএমএস দেখে চিঠির উত্তর তৈরি করে নিতে পারবেন। বর্তমানে ড্রপ বক্স ও অন্যান্য অনলাইন ড্রাইভ শেয়ার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে থেকেও অনলাইনে ফাইল শেয়ার করা সম্ভব। মূলত: অনলাইন ফাইল শেয়ারিং এখন আর কাউকে অফিসের কাজে অফিসে থাকার প্রয়োজন পরছে না। যে কোন স্থানে বসেই আপনার সহকারীর তৈরি করা ড্রাফট দেখে দিতে পারেন বা অনুমোদন দিতে পারেন।
এ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম দিন দিন বেশ উন্নত পর্যায়ে গেছে এখন প্রায় সব ধরনের কাজের জন্য অ্যাপস পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের দেশের ডেভলাপাররা বর্তমানে অ্যাপস তৈরিতে অনেক বেশী কার্যকরী ভূমিকা রাখছেন  বাংলা টাইপিং এর জন্য অনেক ধরনের অ্যাপস তৈরি হচ্ছে।
          আমি যাতায়তের পথে এসএমএস কম্পোজ করার মাধ্যমে বই লেখার আইডিয়াতে বেশ পুলকিত হলাম।আমি যেহেতু বাংলায় লিখতে চাই এবং সব সময় সবস্থানে ল্যাপটপ ব্যবহার করা যায় না, সেহেতু ট্যাবলেট পিসির মাধ্যমে করা যায় কিনা সে বিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাতে লাগলাম। এর জন্য ৭.৫ ইঞ্চি একটা চাইনিজ এ্যান্ড্রয়েড ট্যাবলেট পিসি কিনে নিলাম। পরবর্তীতে বিভিন্ন এ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস ব্যবহার করে আমি বাংলায়  টাইপের পরীক্ষা শুরু করলাম। টাচ স্ক্রিনে বাংলায় টাইপ করার সফট ওয়্যার পেলাম। কিন্তু সমস্যা একটা রয়ে গেল তা হল কীবোর্ডের মত টাচ স্ক্রিনে তাড়াতাড়ি টাইপ করা যায় না। তাড়াতাড়ি টাইপ করার জন্য কী বোর্ড সুবিধাজনক।তবে বর্তমান টাচ স্ক্রিনের প্রজন্ম হয়তবা টাচ স্ক্রিনের কী-বোর্ড থেকে তাড়াতাড়ি টাইপ করতে পারবে। তবে এটা কেবলমাত্র আমার ধারনা। কারণ শুরুতে যে টাচ স্ক্রীনে ব্যবহার শুরু করেছে সে নিশ্চয়ই আমরা যারা টাচ স্ক্রিনে অভ্যস্ত নই তাদের থেকে তাড়াতাড়ি টাইপ করতে পারবে।
          সুখবর হল, যারা বিজয় কীবোর্ড বা ফনেটিকের মাধ্যমে টাইপ করতে পারেন তাদের জন্য মোবাইল ডিভাইস এ্যান্ড্রয়েডে টাইপ করা এখন আর কোন সমস্যা নয়। চীনের তৈরি ট্যাবলেট পিসি বা ট্যাব গুলোর সাথে বিজয় কীবোর্ড সংযোগ করে খুব সহজেই আমরা বাংলা টাইপ করতে পারব। আর টাচ স্ক্রিনের অপসনতো থাকলোই।

 শুরুতে ইউরোপের যে গল্প বলেছিলাম সে ব্যক্তির মত মোবাইল ডিভাইসে আমরাও বই লিখতে পারি রাস্তাঘাটে আমাদের অলস সময়গুলো অবহেলায় ব্যয় না করে নিজের সৃজনশীলতা  উৎপাদনশীলতায় তা মহামূল্যবান করে তুলতে পারব সময়ের যথাযথ ব্যবহারে কল্যাণ রয়েছে, নিজের  দেশের সকলের