ইসলাম ধর্মে বর্ণিত আছে, আল্লাহ সকল পশুপাখির জন্য রিজিক দিয়েছেন। মানুষকে বলেছেন, অবলোকন করতে; একটি পাখি ক্ষুধার্ত অবস্থায় বেড়িয়ে যায়। দিন শেষে ফেরত আসে পেট ভর্তি করে। মানুষেরও মূলত: রিজিক নিয়ে স্ট্রেসফুল হওয়ার কোন কারণ নাই। কারণ সুস্থ মানুষ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করে গেলে তার খাদ্যের অভাব হবে না। সুস্থ মানুষের ধরে নিলাম কাজ করবে খাদ্যের অভাব নাই। তাহলে সিনিয়র সিটিজেনদের কি হবে। তাদের তো কাজ করার সীমাবদ্ধতা আছে। তাদের ঔষধ খরচ লাগে, নার্সিং লাগবে। বৃদ্ধাশ্রমগুলি মানুষের নেতিবাচক মনোভাবের শিকার। শেষ বয়সে বৃদ্ধ বৃদ্ধরা ছেলে মেয়ে পরিবারের মাঝে থাকতে চান। ইউটিউবে দেখা যায় বৃদ্ধ ও বৃদ্ধারা অভিযোগ করছে তাদের ছেলেমেয়েরা তাদের দেখতে আসে না। তাদের খোজ খবর নেয় না। দূ:খজনক। অনেকে বলছেন, ছেলে মেয়ে ম্যাজিস্ট্রেট, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও প্রফেসর হয়েও বাবা/মাকে সাথে রাখছে না। ছেলেমেয়ে কি কারণে সাথে রাখতে পারছে না। তার মূল কারণ আর্থিক নয়। সময় দেয়া ও ব্যবস্থাপনা করার সমস্যা। সেটার জন্য অনেক ছেলে মেয়ে সময় ও ব্যবস্থাপনাটা করতে পারে না। তারা তাদের ক্যারিয়ার ও পরিবার নিয়ে এত এত সমস্যায় থাকে, বাবা মাকে আসলে টেক কেয়ার করতে পারে না। তাহলে উপায় কি? কোন কো-অপারেটিভ বা সহযোগীতা করার সংস্থার প্রয়োজন। যদি এরূপ হয় চাকুরীজীবী স্বামী ও স্ত্রী দুজনেই সকালে চলে যায়, তবে কে বৃদ্ধ মা বা বাবাকে দেখবে। যদি এমন হয়, কোন সাহায্যকারী সংস্থা থেকে এসে তাদের গোসল করাল। কাপড় ধুয়ে দিল। রুম ও টয়লেট পরিষ্কার করে দিল। খাবার ঔষধ খাইয়ে দিল। এভাবে বুয়া বা কাজের লোকের মত সাপোর্ট দিল। কেমন হয় বলুন? এতে আমি নিশ্চিত অনেক অনেক সচ্ছল অথচ সব সময় দেখভালে অপারগ সন্তানরা তাদের বাবা ও মাকে বৃদ্ধ আশ্রমে পাঠাবে না। একজন গৃহিনী যারা সকাল থেকে শুরু করে রাত/দিন স্বামী সংসারে খেঁটে খেঁটে ত্যক্ত ও বিরক্ত। তারা যদি শশুর শাশুড়ির জন্য একবেলা সাপোর্ট পায়, আমি নিশ্চিত; তারা তাদের বৃদ্ধ শাশুর ও শাশুড়িকে খেদিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবে না।
পৃথিবীর অনেক দেশে সিনিয়র সিটিজেনদের দেখাশোনা করার জন্য অনেককে চাকুরী দেয়া হয়। এমনকি সিনিয়র সিটিজেনকে হাঁটিয়ে বা বেড়িয়ে আনার জন্য চাকুরী আছে। বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে। অপর দিকে ভাল চিকিৎসার জন্য মৃত্যুর হারও কমেছে। ফলাফল সিনিয়র সিটিজেন বেড়েছে। জাপানের সিনিয়র সিটিজেন অনেক বেশী। সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য কমিউনিটি লিভিংটা অনেক অনেক বেশী জরুরী। কমিউনিটি লিভিং সিনিয়র সিটিজেনদের কোয়ালিটি টাইম বাড়ায়। সিনিয়র সিটিজেনরা শারীরিক সীমাবদ্ধতার জন্য ধীরে ধীরে কাজ করে। গল্প করতে বেশী পছন্দ করে। সেজন্য তারা যখন অনেক সিনিয়র সিটিজেনের সাথে কাটাবে তখন অনেক বেশী কর্মক্ষম থাকবে। অপরদিকে সিনিয়র সিটিজেন যারা স্বামী বা স্ত্রীকে হারিয়েছেন। একা একা আছেন তারা ইচ্ছে করলে অন্য কোন সিনিয়র সিটিজেনকে বিয়ে করতে পারেন। বিবাহিত সিনিয়র সিটিজেন একাকী সিটিজেন থেকে আরো দীর্ঘ আয়ু হবেন এটা আশা করা যায়। সেজন্য সিনিয়র সিটিজেন সাপোর্ট সেন্টারে মেট্রোমোনিয়াল সার্ভিসেরও ব্যবস্থা করা যায়। সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য পিকনিক ও নানা বিনোদনমূলক ট্রিপ চালু করা যেতে পারে। অনেক সিনিয়র সিটিজেন অনেক অর্থ রাখছেন। কিন্তু কোন সহায়তা পাচ্ছেন না; বেড়ানো, বিনোদন করা ইত্যাদি কার্যক্রমে। তাই বিত্তবান সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য অনেক ধরনের সাপোর্ট অনেক সুলভে ও কমিউনিটির আইডিয়ায় করা যেতে পারে। এখন সময় এসেছে সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য কমিউনিটি লেভেলে কিছু করার।
বাংলাদেশে অনেকেই অসহায় বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাদের নিয়ে বৃদ্ধাশ্রম চালু করেছে। অনেক অনাথ বৃদ্ধও বৃদ্ধাদের বিনা খরচে থাকা, খাওয়া ও ঔষধের ব্যবসা করেছে। ভারতের কলকাতার একজন এধরণের সাপোর্ট সেন্টার করেছে। এটা নতুন কোন আইডিয়া নয়। এই আইডিয়া হল যারা ছেলে মেয়ে, নাতি নাতনীদের ত্যাগ করতে কষ্ট আবার সন্তানরাও তাদের সেবা করতে পারে না। এই ধরনের সাপোর্টে সেন্টার হতে পারে সে ধরনের সমস্যার উত্তম সমাধান।