আমাদের সেনা অফিসাররা ৫০ বছর বয়সে রিটায়ার করার পর একটু
চেষ্টা করলেই মোটামুটি একটা চাকুরী পেয়ে যায়। চাকুরী নিয়ে যদি তারা মাল্টি
ন্যাশনাল কোম্পানিতে বা ইউএন এ জব ম্যানেজ করতে পারে তবে তা সম্মানজনক। কিন্তু
বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে চাকুরীতে ভাল বেতন আছে কিন্তু কিং কমিশন
থেকে রিটায়ার করার পর কিছু সংখ্যক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লজ্জাজনক ব্যবহার পেতে হয়।
সম্মান নিয়ে বাকী দিনগুলোতে বাচার জন্য নিজে কিছু করা ছাড়া উপায় নেই। তাছাড়া ৫০ বছর বয়ষ পর্যন্ত দেশ রক্ষার কষ্টকর ট্রেনিং এর পর অন্য মানুষের জন্য জব ক্রিয়েট করার জন্য কাজ
করাটাই মনে হয় সবচেয়ে বড় যুদ্ধ। কাজ দিয়ে অনেকগুলো মানুষ ও অনেকগুলো পরিবারের মুখে
হাসি ফুটানোটা অনেক বেশী জরুরী।
চাকুরী খুব নিরাপদ। শান্তি আছে। ব্যবসায় সব সময়েই রিস্ক।
পেনশনের অর্ধেক মাসিক টাকায় বাড়ী ভাড়া চলবে আর বাকী টাকায় সঞ্চয়পত্রের লাভ দিয়ে
পরিবারের বেসিক খরচ চালানো যাবে। আমি একটা হিসাবে দেখেছি পেনশনের মাসিক টাকা ও
পেনশনের এককালীন টাকায় সঞ্চয়পত্র কিনে যা আয় পাওয়া যাবে তা দ্বারা সংসারের খরচ চলে
যাবে। কিন্তু সমস্যা বাধে গাড়ী ও ড্রাইভার রাখতে গেলে ওই টাকায় হবে না। মাসে
কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা অতিরিক্ত ইনকাম করতে হবে। সমস্যা হল পরিবার সরকারীভাবে গাড়ী
ও ড্রাইভারে অভ্যস্ত। তাই ৫০ বছর বয়সে রিটায়ার করার পর বাচ্চারা থাকে ছোট। অন্য
চাকুরেরা যখন ৫৯/৬০/৬৫ বছরে রিটায়ার করতে হয় তখন আসলে তাদের আর কোন চিন্তা করতে হয়
না। ছেলে মেয়ে প্রতিষ্ঠিত থাকে। আমরা সেনারা র্যাংক না পেলে ৫০ বছরে রিটায়ার করতে
হয়। আমাদের নতুন নতুন কাজ নিয়ে ও নতুন ব্যবসা নিয়ে ভাবতে হয়।
ড. ইউনুস সারা জীবন সারা পৃথিবীর মানুষকে বলছেন, উদ্যোক্তা
হতে। চাকুরী না করতে। জব সীকার না হয়ে জব গীভার হতে। কারণ চাকুরীর গ্রোথ
সীমাবদ্ধ কিন্তু উদ্যোক্তার গ্রোথ অসীম। তিনি আরো বলেছেন যে কোন উদ্যোগ ছোট আকারে
শুরু করতে হবে। যেন উদ্যোগ ফেল করলে বেশী লস না হয়। অন্য কিছুতে সুইচ করা যায়।
আবার অনেকে বলেছেন যে কোন কাজ ১০ জন করলে ৮ জন ফেল করবে। আবার ১০টি কাজ শুরু করলে
৮টি ফেল করলে ২টি দাড়িয়ে যাবে। আবার ফেল করা কাজগুলো ছোট স্কেলে শুরু করতে হবে যেন
ফেল করলে ক্ষতি কম হয়।
রিটায়ার করার পর আমার ধারনায় নীচের কাজগুলি নিয়ে ভাগ্য
গড়ার কাজ শুরু করব।
১। বই
পাবলিকেশনের কাজ, এডিটিং, প্রচ্ছদ তৈরি ও
প্রুফ রিডিং( এ পর্যন্ত ১৭টি বই করার অভিঞ্জতা হয়েছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে
আরো ৫০টি বই পাবলিকেশনের অভিঞ্জতা হয়ে যাবে)।
২। লেখালেখি করা( একটি বই বের করেছি আগামী আরো সাতটি
বই বের করার জন্য লেখা প্রস্তুত)
৩। অনলাইন পত্রিকা বের করা। নিজের ব্লক পরিচালনা করে
অভিঞ্জতা হচ্ছে সাথে আউট সোর্সের কাজ করা।
৪। ডাচ বা হল্যান্ডের মত পরীক্ষাবিহীন প্রাইমারী স্কুল
চালু করা।
৫। ছাঁদে বাণিজ্যিক বাগান, নার্সারি,দেশী হাস,মুরগী ও কবুতর পালন।
৬। ওবারের প্রাইভেট কার পরিচালনা।
৭। নিজের জায়গার উপর নিজ উদ্যোগে ফ্লাট তৈরি।
৮। পরিচিতদের মধ্যে বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন মালামাল সরবরাহ।
৯। ড্রামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক মাছ চাষ।
১০। গ্রামের জমিতে বনায়ন করা বা প্রার্মা কালচার করা।
১১। সীমিত আকারে শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ।
১২। ইউটিউবে মটিভেশনাল ভিডিও চালানো।
১৩। অনলাইন কেনা বেচার সাইট চালু করা বা অনলাইন
মার্কেটিং।
১৪। ইলেক্ট্রনিক সামগ্রীর শো রুম।
১৫। সোলার ও উইন্ড এনার্জি হারবেস্টিং এর কোন
প্রজেক্ট করা।
উপরের ১৫ কাজের তালিকা করলাম। এর মধ্যে অনেক কাজ অসফল হতে হবে। অনেক কাজে লস হবে। ১৫ টি কাজের মধ্যে
দুই/তিনটি ক্লিক করলেই চলবে। তবে কিছু টাকা লস কিছু প্রজেক্টে হবেই।