Pages

Wednesday, July 25, 2018

চাকুরীর পরবর্তী নতুন যুদ্ধ


আমাদের সেনা অফিসাররা ৫০ বছর বয়সে রিটায়ার করার পর একটু চেষ্টা করলেই মোটামু‌টি একটা চাকুরী পেয়ে যায়। চাকুরী নি‌য়ে যদি তারা মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে বা ইউএন এ জব ম্যানেজ করতে পারে তবে তা সম্মানজনক। কিন্তু বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে চাকুরীতে ভাল বেতন আছে কিন্তু কিং কমিশন থেকে রিটায়ার করার পর কিছু সংখ্যক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লজ্জাজনক ব্যবহার পেতে হয়। সম্মান নিয়ে বাকী দিনগুলোতে বাচার জন্য নিজে কিছু করা ছাড়া উপায় নেই। তাছাড়া ৫০ বছর বয়ষ পর্যন্ত দেশ রক্ষার কষ্টকর ট্রেনিং এর পর অন্য মানুষের জন্য জব ক্রিয়েট করার জন্য কাজ করাটাই মনে হয় সবচেয়ে বড় যুদ্ধ। কাজ দিয়ে অনেকগুলো মানুষ ও অনেকগুলো পরিবারের মুখে হাসি ফুটানোটা অনেক বেশী জরুরী।
চাকুরী খুব নিরাপদ। শান্তি আছে। ব্যবসায় সব সময়েই রিস্ক। পেনশনের অর্ধেক মাসিক টাকায় বাড়ী ভাড়া চলবে আর বাকী টাকায় সঞ্চয়পত্রের লাভ দিয়ে পরিবারের বেসিক খরচ চালানো যাবে। আমি একটা হিসাবে দেখেছি পেনশনের মাসিক টাকা ও পেনশনের এককালীন টাকায় সঞ্চয়পত্র কিনে যা আয় পাওয়া যাবে তা দ্বারা সংসারের খরচ চলে যাবে। কিন্তু সমস্যা বাধে গাড়ী ও ড্রাইভার রাখতে গেলে ওই টাকায় হবে না। মাসে কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা অতিরিক্ত ইনকাম করতে হবে। সমস্যা হল পরিবার সরকারীভাবে গাড়ী ও ড্রাইভারে অভ্যস্ত। তাই ৫০ বছর বয়সে রিটায়ার করার পর বাচ্চারা থাকে ছোট। অন্য চাকুরেরা যখন ৫৯/৬০/৬৫ বছরে রিটায়ার করতে হয় তখন আসলে তাদের আর কোন চিন্তা করতে হয় না। ছেলে মেয়ে প্রতিষ্ঠিত থাকে। আমরা সেনারা র‍্যাংক না পেলে ৫০ বছরে রিটায়ার করতে হয়। আমাদের নতুন নতুন কাজ নিয়ে ও নতুন ব্যবসা নিয়ে ভাবতে হয়।
ড. ইউনুস সারা জীবন সারা পৃথিবীর মানুষকে বলছেন, উদ্যোক্তা হতে। চাকুরী না করতে। জব সীকার না হয়ে জব গীভার হতে। কারণ চাকুরীর গ্রোথ সীমাবদ্ধ কিন্তু উদ্যোক্তার গ্রোথ অসীম। তিনি আরো বলেছেন যে কোন উদ্যোগ ছোট আকারে শুরু করতে হবে। যেন উদ্যোগ ফেল করলে বেশী লস না হয়। অন্য কিছুতে সুইচ করা যায়। আবার অনেকে বলেছেন যে কোন কাজ ১০ জন করলে ৮ জন ফেল করবে। আবার ১০টি কাজ শুরু করলে ৮টি ফেল করলে ২টি দাড়িয়ে যাবে। আবার ফেল করা কাজগুলো ছোট স্কেলে শুরু করতে হবে যেন ফেল করলে ক্ষতি কম হয়।

রিটায়ার করার পর আমার ধারনায় নীচের কাজগু‌লি নি‌য়ে ভাগ্য গড়ার কাজ শুরু করব।
১। বই  পাবলিকেশনের কাজ, এডিটিং, প্রচ্ছদ তৈরি ও প্রুফ রিডিং( এ পর্যন্ত ১৭টি বই করার অভিঞ্জতা হ‌য়ে‌ছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে আরো ৫০টি বই পাবলিকেশনের অভিঞ্জতা হ‌য়ে যাবে)।
২। লেখালেখি করা( এক‌টি বই বের করেছি আগামী আরো সাত‌টি বই বের করার জন্য লেখা প্রস্তুত)
৩। অনলাইন পত্রিকা বের করা। নিজের ব্লক পরিচালনা ক‌রে অভিঞ্জতা হচ্ছে সাথে আউট সোর্স‌ের কাজ করা।
৪। ডাচ বা হল্যান্ডের মত পরীক্ষাবিহীন প্রাইমারী স্কুল চালু করা।
৫। ছাঁদে বাণিজ্যিক বাগান, নার্সারি,দেশী হাস,মুরগী ও কবুতর পালন।
৬। ওবারের প্রাইভেট কার পরিচালনা।
৭। নিজের জায়গার উপর নিজ উদ্যোগে ফ্লাট তৈরি।
৮। পরিচিতদের মধ্যে বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন মালামাল সরবরাহ।
৯। ড্রামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক মাছ চাষ।
১০। গ্রামের জমিতে বনায়ন করা বা প্রার্মা কালচার করা।
১১। সীমিত আকা‌রে শেয়ার মার্কেটে বি‌নি‌য়োগ।
১২। ইউটিউবে ম‌টি‌ভেশনাল ভিডিও চালা‌নো।
১৩। অনলাইন কেনা বেচার সাইট চালু করা বা অনলাইন মার্কেটিং।
১৪। ইলেক্ট্রনিক সামগ্রীর শো রুম।
১৫। সোলার ও উইন্ড এনার্জি হার‌বে‌স্টিং এর কোন প্রজেক্ট করা।
উপরের ১৫ কাজের তালিকা করলাম। এর মধ্যে অনেক কাজ অসফল হতে হবে। অনেক কাজে লস হবে।  ১৫ টি কাজের মধ্যে দুই/তিন‌টি ক্লিক করলেই চলবে। তবে কিছু টাকা লস কিছু  প্রজেক্টে হবেই।

Thursday, July 19, 2018

সুপার ফুড সজিনা (মরিংগা)


আমার এক বন্ধু এক‌টি গাছ নি‌য়ে প‌রে আছেন। গাছ‌টি হল হাই ব্রিড সজিনা। সজিনা পাতা প্রতি সপ্তাহে কাটা যাবে। পাতা কেটে পাতা তা শাঁকের মত রান্না করা যাবে, পাকুড়া বড়া ক‌রে খাওয়া যাবে। পাটায় পিষে ভর্তা খাওয়া যাবে। সজিনা ধরলেও তাও খাওয়া যাবে। পাতা কাটার পর পাতার আটিগু‌লো কুচি কুচি ক‌রে গরুকে খাওয়ানো যাবে। এই  সজিনার কোন কিছু ফেলনা নয়। আমরা রসুন, তুলসী ও কালিজিরার বিশাল গুনের কথা শুনেছি। সজিনার ডাটা খাওয়ার উপকারিতা অনেকেই জানে না। মুখরোচক এই  সবজিটি  ডালের সাথে ও অন্যান্য ঝ‌োল কারীর সাথে আমরা খাচ্ছি। বাজা‌রেও সজিনার ডাটা ২০০ টাকা কেজি থেকে নেমে ঢাকার  বাজা‌রে ৪০/৫০ টাকা মূল্যে পৌছায়। বারোমা‌সি সজিনা আছে  আবার সিজনাল সজিনা আছে। সজিনা থেকে আরো বেশী উপকারী হল সজিনার পাতা। আফ্রিকায় অনেক এন‌জিও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে সজিনা পাতা শুঁকিয়ে তা বাচ্চা‌দের ও মহিলা‌দের খাই‌য়ে তা‌দের অপুষ্টি অনেক কমিয়ে এনেছে। ইউটিউবে অনেক তথ্য আছে। মরিংগা নি‌য়ে বেশ কিছু বইয়ের সন্ধানও পাওয়া যায়। যদি সজিনার পাতা খাই‌য়ে অপুষ্টি দূর করা যায় তবে এই  সহজ ব্যবস্থায় আমরা যাচ্ছি না কেন? আমরা হয়ত গ্রামে গঞ্জে অনেকেই জানে না। বাংলায় সজিনা লিখে গুগলে সার্চ করলে এত এত তথ্য জানা যাবে অকল্পনীয়। ইংরেজিতে সার্চ দি‌তে হবে মরিংগা লিখে। আমি একবার একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দেখেছি তিনি বাড়ী‌তে বাড়ী‌তে সবজির চাহিদা পূরণ করার জন্য সজিনার ডাল লাগা‌তে বলতেন। কারণ হিসাবে বলতেন এর শাক, ফুল ও ডাটা খাওয়া যায় আর কোন যত্ন ছাড়া এটা বেড়ে উঠে। উৎপাদনের সহজ প্রক্রিয়া এটা‌কে আরো জনপ্রিয় করেছে।
সজিনা পাতায় এমন কোন ভিটামিন বা মিনারেল নেই যা কিনা এর মধ্যে পাওয়া যাবে না। এটা সুপার রিচ একটা খাবার। নীচে তার কিছু বিবরণ:
১। সমপরিমাণ কমলার রস থেকে তিনগুণ ভিটামিন সি আছে।
২। সমপরিমাণ দুধের চেয়েও ২/৩ বেশি ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও জিংক রয়েছে।
৩। সমপরিমাণ গাজর হ‌তে চারগুণ বেশী বিভিন্ন ভিটামিন আছে।
৪। সজিনা পাতায় ভিটামিন, প্রো‌টিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট সবই আছে।
আমি এর মোটা দাগে কিছু বললাম। আধুনিক গবেষকরা তাই সজিনার পাতা‌কে নাম দিয়েছে পুষ্টির ডিনামাইট। প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল থাকার কারণে এটা প্রায় ৩০০ প্রকার রোগ নিরাময় কর‌তে সক্ষম। বিস্তারিত জান‌তে গুগল বা ইউটিউব সার্চ কর‌তে পারেন। অনেকেই বলেছেন সজিনার পাতা নিয়মিত দুই‌ সপ্তাহ খাওয়ার পর থেকে তারা শারীরিক পরিবর্তন গ‌ু‌লো  লক্ষ্য করা শুরু করেন।
আমরা সব সময় বিভিন্ন ধরনের খাবার খাচ্ছি। সব সময় শরীর সব রকম ভিটামিন ও মিনারেল পাচ্ছি কিনা আমরা নিশ্চিত নই। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে এক চামচ আর ঘুম থেকে উঠে এক চামচ সজিনা পাতার গু‌ড়ো শরবত ক‌রে খেলেই আপনি নিশ্চিত হলেন আপনার সকল ভিটামিন ও মিনারেল গ্রহণ করা হল। আর তা হল প্রাকৃতিক উৎস হ‌তে কোন সাইড অ্যা‌ফেক্ট নেই। এটা চিন্তা ক‌রেই আমার মত অনেকেই  সজিনা পাতা নিয়মিত খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতিদিন গাছ থেকে পাতা তুলে খে‌তে পারলে সবচেয়ে ভাল হয়। সেটা সম্ভব না হলে উপায় কিন্তু উপকার‌ভোগীরা বের ক‌রে ফেলেছে।  আর তা হল পাতা শুকিয়ে পাউডার ক‌রে নেয়া। সেই  পাউডার দি‌য়ে শরবত খেলেই হল। শরবত বানা‌তে চিনি, মধু, লবণ, লেবু ও এমনকি ঝাল টেস্টের জন্য কাচামরিচ গুড়াও দেয়া যায়।
সজিনা পাতা খাওয়ার ভক্তরা সজিনা পাতার গুড়ি দি‌য়ে ক্যাপসুল তৈরি ক‌রে বা ট্যাবলেট তৈরি ক‌রে নিয়েছে যেন বাজা‌রে বিক্রি সহজে করা যায়। কখ‌নো শরবতের আয়োজনে সমস্যা হলে ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল আকা‌রে খাওয়া যায়। তাহলে সজিনা পাতার সব ধরনের ব্যবস্থা হ‌য়ে‌ গেছে। আমি ও আমার স্ত্রী সর্বদা সতর্ক থাকি ওজন নি‌য়ে। তারপরও তা নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর। আমি ও আমার স্ত্রী ওজন কমানোর কারণে এটা পছন্দ করেছি। এটা যদি ওজন কমা‌তে সক্ষম হয়। অটোমেটিক্যালি ডাইবেটিস হবে না বা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। রক্তের খারাপ উপাদানগু‌লোর পরিমাণ কমে আস‌বে। চর্ব‌ি কমে যাবে। এগু‌লো ঘটলে ৩০০ রোগ প্র‌তি‌রোধ হবে তখন আর তা গাজাখু‌রি মনে হবে না। ৩০০ রকম রোগ থেকে ঝুঁকি থেকে বেঁচে গেলে সৃষ্টিকর্তার অনুকম্পায়‌ দীর্ঘ জীবন অর্জন সম্ভব হবে তা আশা করা যায়।

Wednesday, July 11, 2018

পরিবেশ রক্ষায় প্রয়োজন টেকসই পণ্য

আমার বাবা আমার বড় বোনের চার ও পাঁচ বছর বয়সে তার জন্য এক‌টি তিন চাকার বেবি রিকসা সাইকেল কিনে দেন। সেই  বেবি রিকসার কাঠা‌মোটা ছিল ভীষণ মজবুত। সেই বেবি রিকসা‌টি আমরা সর্ব‌মোট ছয় ভাই বোন ২৫ বছর যাবত ব্যবহার করি। ছোট ভাই বড় হওয়ার পর কেজি দ‌রে ভাংগারীওয়ালার কাছে বিক্রয় করা হয়। হয়তবা যত্ন করলে আরো কিছুদিন চলত। অবাক ব্যাপার নয়‌ কি? বাবা দুই তিনবার সেই বেবি রিকসাটির সিট ও আনুষঙ্গিক মেরামত করিয়েছিলেন। মূল কাঠা‌মো সব সময় ঠিক ছিল। এই  ধারনাটা আমা‌কে ভীষণ নাড়া দেয়। চট্টগ্রাম নিউ মার্কেট থেকে আমিও খুঁজে খুঁজে সলিড চাকার তাইওয়ানের তৈরি স্ট্যান্ড চাকা লাগা‌নো বাই সাইকেল কিনি। যা আমার বড় ছেলে, মেঝ ছেলে ও মে‌য়ে চালা‌নোর পর সামান্য মেরামত ক‌রে আত্মীয়ের বাচ্চা‌কে দি‌য়ে দেই।
আমার এই বিষয়‌টি ত‌োলার কারণ হল, বাচ্চা‌দের অনেক ধরনের ব্যবহারের সামগ্রী ও খেলনা আমরা ক্রয় করি। এগু‌লো নিন্মমানের ও ক্ষণস্থায়ী। চায়না আরো নিন্মমানের ওয়ান টাইম সামগ্রী দি‌য়ে বা‌রোটা বাজাচ্ছে। আমার মনে হয় আমাদের দেশী কোম্পানীগু‌লো চাইনিজ বাজে ওয়ান টাইম দ্রব্যাদির অনুকরণে না গি‌য়ে টেকসই ও মূল্যবান দামী দ্রব্যাদি তৈরি করতে পা‌রে। এ‌তে মনে হবে, বোধ হয় বিক্রি কমে যাবে। ব্যবসা কম হবে। এমনকি মজবুত সামগ্রী বানা‌নোর জন্য ব্যবসা পরিবর্তন কর‌তে হ‌তে পা‌রে।

তবু বলব দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হ‌য়ে টেকসই, মজবুত ও উন্নত সামগ্রী উৎপাদন করলে তা পরিবেশের জন্য ভাল এবং সাধারণ মানুষের প্রাথমিক খরচ বেশী হলে লং রানে অর্থ সাশ্রয়ী হবে। প্র‌য়োজ‌নে ব্যবসায়ী ব্যবসার পরিবর্তন পরিকল্পনায় রাখবেন।
আমার কাছে মনে হয় বাচ্চা‌দের বিভিন্ন ধরনের সাইকেল, ঠেলা গাড়ী, দোলনা ও আসবাব পত্রসহ আরো বহুবিধ সামগ্রী উন্নত সামগ্রী ও কাঁচামাল দি‌য়ে শক্ত, ক‌ঠোর ও মজবুত বানা‌তে হয়। বাচ্চা‌দের যে কোন সামগ্রী সর্বদা অত্যন্ত শক্ত বানা‌নো প্র‌য়োজন। বাচ্চা তা‌দের খেলনা ছুঁড়ে মা‌রে। ফেলে দেয়। লাথি মা‌রে। বাড়ি দেয়। অনেক অনেক জানা অজানা প্লেফুল কাজ ক‌রে। তাই তা‌দের খেলনাগু‌লি ইস্পাত কঠিন হওয়াটা অনেক বেশী প্র‌য়োজন। অনেক সময় দেখবেন আমেরিকা, ইউরোপ বা চায়না থেকে বাচ্চা‌দের সামগ্রী মেইড চায়না কিনবেন আর আফ্রিকা ও বাংলাদেশ থেকে কিনবেন। অনেক পার্থক্য দেখবেন। কোয়া‌লি‌টি সাধারণ মানের ও দামে‌ কম পাবেন। তাই এশিয়ার ও আফ্রিকার সাধারণ মানুষের জন্য এই ধরনের সামগ্রী মূল্য কম ও দূর্বল মানের। চায়নার তৈরির সাধারণ মানুষের জন্য সামগ্রীগু‌লো আমরা যতই তাদের বলি ভাল ও টেকসই কর‌ে বানাও। তা তারা একটা কারণে বানাবে না। তা হল, বাজার ধরা। কম দামী পণ্য মানেই  ভাল বাজার এটা তারা ভাল ক‌রে জানে। তাই তা‌দের শুধরা‌নো যাবে না। শুধরা‌তে হবে আমা‌দের। সেটা হল মূল্য বেশী হলেও সরকার ভর্তুকি দি‌য়ে দেশী ক‌োম্পানী দি‌য়ে উন্নত সামগ্রী বাজা‌রে ছাড়‌তে হবে। হোম সোলার সিস্টেম সকল দেশেই ব্যবহার হয়। হোম সোলার সিস্টেমে দেশী সোলার প্যানেলের দাম বেশী। চায়নার তৈরি প্যা‌নেলগু‌লোর দাম কম। দেশী কোম্পানীর সোলার প্যানেল দাম বেশী হলেও অনেকেই তা কিনছেন। বিক্রি মন্দ নয়। কারণ সবাই জানে চায়নিজ প্যানেল থেকে দেশে তৈরি প্যানেল দাম বেশী হলেও কোয়া‌লি‌টি ভাল এবং টেকসই। যা লং রানে মূল্য সাশ্রয়ী। মজবুত, টেকসই ও ভাল সামগ্রী বানালে এবং দেশের মানুষ‌কে উদ্বুদ্ধ কর‌তে পারলে চাইনিজ বা অন্য বিদেশীরাও খারাপ মালামাল বাংলাদেশে পাঠা‌তে হাজারবার ভয় পাবে। তারাও টেকসই ও উন্নত সামগ্রী পাঠাবে ও অনুপ্রাণিত হবে। টেকসই ও মজবুত সামগ্রী এককালীন বেশী খরচ করাবে ঠিকই কিন্তু এটা পরিবেশ বান্ধব। ওয়ান টাইম জিনিস ব্যবহার না ক‌রে রিইউ‌জিবল সামগ্রী ব্যবহার ক‌রে খরচও ধী‌রে ধী‌রে ক‌মে আস‌বে। যারা সস্তায় নিন্মমা‌নের সামগ্রী ক্রয় করত, তারা তখন উন্নতমানের রিক‌ন্ডিশন সামগ্রী কিনবে। আরো সস্তা দামে। আর এভাবে রিইউ‌জিবল সামগ্রীর মার্কেট গড়ে উঠবে ও কর্মসংস্থান বাড়বে। দেশী ব্যবসায়ীরা ভেবে দেখ‌তে পারেন।

Wednesday, July 4, 2018

আধুনিক ছেলেমে‌য়ে ও ভঙ্গুর সম্পর্ক


আমার কিছু নিকট আত্মীয়‌দের দেখছি বি‌য়ে‌ টিকছে না। বি‌য়ে বা সংসারে টি‌কে থাকাটায় মনে হয় পরস্পর সমঝোতা বা বোঝাপড়া অনেক বেশী প্রয়োজন। আর্থিক চাহিদার সাথে উপার্জন সমন্বয় না হলে মহা বিপদ। আমি সাংসা‌রিকভা‌বে ভয়াবহ উদাসীন। লেখালেখি করি। সারাদিন নিরস রচনা, প্রবন্ধ ও ফিচার পড়‌তে থাকি। আমি পরিবারের কোন কাজ না করা সত্ত্বেও কেবলমাত্র আমার স্ত্রী চাকুরী না করার কারণে সে ভয়াবহ সাংসারিক চাপ সহ্য করছে। তার জায়গায় অন্য কোন চাকু‌রে স্ত্রী হলে আমা‌কে হা‌তে হা‌রিক্যান ধরিয়ে ভেগে যেত।
আমার কাছে মনে হয়, একজন স্ত্রী যখন চাকুরী করবে, তিনি কিছু কিছু বিষয়ের উপর ট্রেনিং নি‌তে পারেন। কিভাবে বাসার সকল সদস্যের খাবার, ক্ল‌দিং, পড়া‌শোনা ও অসুখ বিসুখ টেকাল দি‌তে হয়; তার মানসিক গ্রহন‌যোগ্যতার অনুশীলন। কিভাবে আউট সোর্স‌িং ক‌রে সকল‌কে ম্যা‌নেজ ক‌রে কাজগুলি করা যায়; তার উপর প্রশিক্ষণ হ‌তে পা‌রে।
যে সব ছেলে চাকুরীজীবী বউ বি‌য়ে করবে; তাদের রান্না করা, কাপড় ধোয়া, ঘর মোছা ও বাচ্চা‌কে লালন পালন করার বিষয়গু‌লি মানসিকভাবে গ্রহণ করা ও অনুশীলন করা প্রয়োজন। স্বামী স্ত্রী দুইজন চাকুরীরত‌দের সম্ভব হলে যৌথ পরিবারে থাকাটা খুব ভাল। তদুপরি বলব, বি‌য়ে টিকা‌নোর সবচেয়ে ভাল পন্থা হল, পিতামাতা মেয়েদের পছন্দ ও অপছন্দের বিষয়গু‌লি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বের করবেন। সে বিষয়গু‌লি মিলিয়ে ছেলে খুঁজে পেলে মেয়েকে বি‌য়ে দিবেন। নয়ত চাকুরী ধরিয়ে দি‌য়ে মেয়েকে তার পছন্দ মত বি‌য়ে করার অনুমতি দেয়াটা মঙ্গলজনক। মে‌য়ে নিজে পছন্দ করে বি‌য়ে করলে তখন আবার চাকুরীরত মে‌য়ে সংসার টিকা‌নোর জন্য চাকুরী বাকরী ক‌রে উদয়াস্ত পরিশ্রম ক‌রে যাবে। কম‌প্লিন কম করবে। এ ধরনের কেসে সংসার টি‌কে যায়। তব‌ে আমার ম‌নে হয় সংসার টিকা বা না টিকা সম্পূর্ণই মেয়ে‌দের কাছে। কারণ যুগ যুগ ধ‌রে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মে‌য়েরা অনেক আত্মত্যাগ ক‌রে পরিবারকে ধ‌রে রাখে। এমনকি অনেক পরকীয়ারত ছেলেকেও স্ত্রীরা ফিরিয়ে আন‌তে সক্ষম। কিন্তু কোন স্ত্রী পরকীয়ায় আসক্ত হলে কোন স্বামী তা‌কে ফিরিয়ে আন‌তে পা‌রে না। যদি না সেই মে‌য়ে নিজে নিজে ফেরত আসে।
সংসার ও বি‌য়ে টিকা‌নোটা এখনকার সময় ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ। দুই‌ আলাদা সত্ত্বার মিল করাটা যার পর নাই কঠিন এক‌টি বিষয়। আর এই  কঠিন বিষয়‌টি সহজ কর‌তে প্রয়োজন মে‌য়ে বা ছেলের আন্তরিক ইচ্ছে। দুইজন দুইজন‌কে ছাড় দি‌তে হবে। দুইজন দুইজন‌কে বুঝ‌তে হবে। বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজন অনেকেই বি‌য়ে‌ শাদীতে সম্পর্ক ভাঙ্গার অনুঘটক হিসাবে কাজ ক‌রে। বি‌য়ে‌তে তারা ছেলে মেয়েদের প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তি এমন ভাবে তুলে ধ‌রে যে সম্পর্ক নষ্ট ক‌রে দেয়।  বি‌য়ে‌তে পান আনল কিনা। মাছ আনল কিনা এরূপ ছোটখাট বিষয় নি‌য়ে কিছু কুটনি আত্মীয় সম্পর্ক নষ্ট ক‌রে। ভাল সম্পর্ক রক্ষা করার জন্য ম্যা‌সেঞ্জা‌রের ভাষায় কুটনী আত্মীয়দের ব্লক মার‌তে হবে। নচেৎ এরা আপনা‌দের সুন্দর সম্পর্কের মাঝে ব্লক দিয়ে দিবে। স্বামী ও স্ত্রী সম্পর্ক টিকা‌তে লাভ ক্ষতির বিচার করলে চলবে না। শুধু মনে রাখ‌তে হবে সম্পর্ক টিকা‌তে হবে যা ঝড়ই আসুক না কেন। স্বামী ও স্ত্রী এই  মান‌সিকতায় থাকলে  সম্পর্ক টি‌কে যাবে।
ভাল সম্পর্কের জন্য অনুশীলন ও স্টাডি কর‌তে হবে। এটাও একটা চর্চা যা হেলা করা যাবে না। অনেক সময় আইনি মার প্যাঁচে সম্পর্ক ম্যাড়ম্যাড়ে ভাবে টি‌কে থা‌কে। এটাও ঠিক না। সম্পর্ক হবে ইস্পাত কঠোর। তাই সম্পর্ক হ‌য়ে গেলে, তা রক্ষা করার সব রকম চেষ্টা ক‌রে যে‌তে হবে। আধুনিক ছেলে মে‌য়ের অনেক ধরনের সম্পর্ক থাক‌তে পা‌রে। তাই আধুনিক ছেলে মে‌য়েরা একটা ম‌টি‌ভেশন মেনে চলতে দেখা যায় তা হল; বিয়ের আগে যা করেছ, ভুলে যাও। বিয়ের পরে সম্পর্ক‌ে আস্থা ও বিশ্বাস রাখ‌তে বল‌তে হবে। পরিশেষে বল‌তে হয়, সংসার ও সম্পর্ক টিকা‌নোর সবচেয়ে বড় ফর্মুলা হল বাপ, মা, ভাই, বোন ও আত্মীয় স্বজন কারো কথা শোনা যাবে না। নিজেরা ঝগড়া ঝাঁটি বাদ দি‌য়ে আলোচনায় বস‌তে হবে কিভাবে সংসার টিকা‌নো যায় ও সমস্ত সমস্যার আলোচনা ক‌রে সমাধান বের কর‌তে হবে। এটা যদি করা যায় তবে ‌নি‌শ্চিতভা‌বে বলা  যায় সংসার আর ভাঙ্গবে না।