Pages

Friday, August 26, 2016

রিয়াল ভিউ বাংলাদেশী ডাইরেক্ট টু হোম টিভি


আজ থেকে প্রায় ৮/১০ বছর আগে ক্যাবল টিভিতে ডিশটিভি, এয়ারটেল, ভিডিওকন ইত্যাদি ডাইরেক্ট টু হোম   (ডিটিএইচ) টিভির বিঞ্জাপন দেখে দেখে ভাবতাম কবে আমাদের দেশেও এগুলো আসবে আমাদের বাংলাদেশের চ্যানেল নিয়ে। এটা অনেক দেরীতে হলেও আমাদের দেশে ডিটিএইচ চালু হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান এটা চালু করেছে। ২০১৪ সালে স্মার্ট টিভি কেনার পর থেকেই পরিষ্কার ও ঝকঝকে ছবি দেখার জন্য ডিটিএইচ খোজ করছিলাম। আমাদের অনেক সৌখিন ব্যক্তিরা স্মার্ট টিভিতে এইচডিএমআই ক্যাবল(অডিও ও ভিডিও ইনপুটের মত ইউএসবি ক্যাবলের অনুরুপ উন্নত ইনপুট ডিভাইস)দিয়ে অনেক আগে থেকেই হয়ত পেমেন্টে ভারতীয় চ্যানেল দেখতেন। ভারতের ডিটিএইচ এর মার্কেট বেশ প্রসারিত ও প্রতিযোগিতা সম্পন্ন।
যদিও পোস্টিং এর চাকুরী তথাপিও আমার দুই ছেলের আগ্রহের কারণে বিশেষ করে বিভিন্ন খেলা দেখার ছুতায় আমাকে বাংলাদেশের নতুন চালু হওয়া ডিটিএইচ কেনার আর্জি করে। আমার অনেক দিনের শখ স্মার্ট টিভিতে পরিষ্কার ছবি ও শব্দে টিভি দেখা। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় ক্যাবল অপারেটররা যতই ভাল কানেকশন দেয় না কেন তাতে সমস্যা থেকেই যায়। এছাড়া মাঝে মাঝে ক্যাবল কাটা যাওয়ার কারণে ডিশ লাইন বন্ধ থাকে। কুষ্টিয়ার মিরপুরে ১৫০ টাকা মাসে দিয়ে বাসায় ডিশ লাইন দেখছি। রিয়াল ভিউ ডিটিএইচতে ৩০০ টাকা দিতে হবে। এককালীন ৭৫০০ টাকা খরচ। অনেক বড় খরচের ধাক্কা। তবে সমস্ত খরচ পুষিয়ে যায় যখন ঝকঝকে ছবি ও পরিষ্কার শব্দে মনটা ভরে যায়। একবার ডিটিএইচতে পরিষ্কার ছবি ও শব্দে অভ্যাস হলে পরে সাধারণ ক্যাবল টিভি দেখাটা কষ্টকর। এইচডি চ্যানেলগুলো অসাধারণ দেখা যায়।
টিভি চ্যানেলের ট্রান্সমিশন এত ভাল মনে হয় ঢাকা ব্যতীত অন্য কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়। ঢাকার অপারেটররা সেটটপ বক্স দেয়া শুরু করেছে ভাল ছবি দেখার জন্য। তবে সেটটপ বক্স তিন হাজার পাঁচশত টাকায় কিনে মাসে মাসে ৩০০ টাকা খরচ করার চেয়ে আরো কিছু টাকা খরচ করে ছোট ডিশ লাগিয়ে নিয়ে ডিটিএইচ ব্যবহার করাটা একটা ভাল আইডিয়া হতে পারে। ক্যাবল অপারেটরদের মেনটেন্যান্সগত সমস্যা থাকে আর তদুপরি তারা সহজে অভিযোগ নেয়না বা লাইন ভাল রাখতে সদা প্রস্তুত নয়। এই হিসাবে ছোট ডিশ ঝড় বৃষ্টিতে তেমন উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। ডিশটা না উল্টালে বাকী কোন কিছুই নষ্ট হওয়ার নয়। ক্যাবলের সেটটপ বক্সের মত এটিও ভালই চলবে।
ভারত সরকার বেশ কয়েকমাস হল (২০১৬ সালের মার্চ/এপ্রিল) ক্যাবল টিভি অপারেটরদের জন্য সেটটপ বক্স বাধ্যতামূলক করেছে। এটার মূল কারণ হতে পারে যথাযথ ভাবে সরকারের রেভিনিউ পাওয়া। সেটটপ বক্সের সার্ভারে সব তথ্য থাকে। তাই ক্যাবল অপারেটরের লাইন সংখ্যা ও সরকার কর্তৃক ভ্যাট আদায় করাটা সহজ এবং ক্যাবল অপারেটররা আইটি ও ভ্যাট ফাকি দিতে পারে না। আমাদের দেশে কয়েক বছর পর এগুলো চালু হবে তা নি:সন্দেহে বলা যায়। তবে যতদিন পর্যন্ত না অন্যান্য সেটটপ বক্স চালু হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের ডিটিএইচ রিয়েল ভিউ লাগানোর আইডিয়াটা মন্দ নয়। যারা ঢাকার বাইরে চাকুরী বা অন্য কোন কারণে অবস্থান করেন তাদের জন্য ডিটিএইচ অনন্য একটি অপশন।
২০০৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আমি পার্বত্য চট্টগ্রামে থাকাকালীন ক্যাবল টিভির ২৫/৩০ টি চ্যানেল দিয়ে ক্যাবল লাইন করে নিয়েছিলাম। তখন ভাল চ্যানেল ও পে চ্যানেল দেখাটা ছিল বিশাল খরচের ধাক্কা। ৩০০ টাকা মাসিক দিয়ে এখন শতাধিক চ্যানেল দেখা সম্ভব। এতে দেশী সকল চ্যানেলের পাশাপাশি অগণিত পে চ্যানেল পাওয়া যাচ্ছে। এখন যারা পার্বত্য চট্টগ্রাম বা অন্য কোন রিমোট স্থানে চাকুরী করে তাদের জন্য বাংলাদেশের রিয়াল ভিউ ডিটিএইচ ভাল সমাধান। বাংলাদেশের সকল স্থানে মোবাইল নেটওয়ার্কের কারণে থ্রিজি ইন্টারনেট কানেকশন পৌঁছে গেছে। এখন রিয়াল ভিউ এর মাধ্যমে রাজধানী বা বড় শহরের মত ক্যাবল টিভির চ্যানেলও পৌঁছে গেল। ঢাকার বাইরে চাকুরী বা সেটল হতে আর কোন বাধা থাকল না। এখন রাজধানীর বাইরে প্রয়োজন ভাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল। সেটাও এক/দুই যুগের মধ্যে পাওয়া যাবে। আমি আশাবাদী।
আমার মনে হয় আরো কিছু কোম্পানিকে ডিটিএইচের লাইসেন্স প্রদান করা প্রয়োজন। তাহলে প্রতিযোগিতা থাকবে এবং গ্রাহকরা ভাল সার্ভিস পাবে। একটি কোম্পানি মনোপলী করে ব্যবসা করলে গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা হবে না। রিয়াল ভিউ এর ওয়েব সাইট থেকে এদের বিষয়ে অনেক কিছু জানা যাবে। “Realvubd” লিখে সার্চ দেয়া যেতে পারে। অথবা ভিজিট করতে পারেন: https://realvubd.com


রিয়াল ভিউ সেটটপ বক্স ও এলএনবি আরো উন্নত হওয়া প্রয়োজন। প্রত্যেক জেলায় এদের ডিলার থাকা প্রয়োজন। কারণ প্রতি জেলায় এখনও ডিশের সামগ্রী বিক্রতা আছে। তাদের ডিলারশীপ দেয়া প্রয়োজন। আমি কুষ্টিয়াতে লাগানোর জন্য নিকটবর্তী জেলা রাজবাড়ী থেকে লোক এনে লাগাতে হয়েছে। এতে দুর থেকে লোক আনার ভাড়ার খরচ ও খাবার খরচ দিতে হয়। সেনাবাহিনী ও বিজিবিতে অনেকেই রিমোট ক্যাম্পে থাকে। রিমোট ক্যাম্পে লাগাতে হলে নিজস্ব টেকনিশিয়ানদের ট্রেনিং দিলে তারাই সংযোগ দিতে পারবে। অন্যথায় ডিশ বসানোর জন্য বেশ কিছু টাকা খরচ করে ফেলতে হবে। এই সিস্টেমের মাসিক বিল ৩০০ টাকা প্রিপেইড মোবাইলের মত মাসের প্রথমে পরিশোধ করতে হয়।
সেটটপ বক্সটিতে কোন অনুষ্ঠান সময়মত দেখতে না পারলে পেন ড্রাইভে রেকর্ড করে পরে দেখা যায়। এই অপশনটি আমার জন্য বেশ কাজে লেগেছে। কোন কারণে বাইরে গেলে নির্দিষ্ট চ্যানেলে রেকর্ড চালু করে যাই। ৮ জিবি পেন ড্রাইভে প্রায় ৫ ঘণ্টা ব্যাপী এইচডি চ্যানেল রেকর্ড করা যায়। এর সেটটপ বক্সটি ১২ ভোল্টে চলায় সোলার সিস্টেম বা ১২ ভোল্টের যে কোন ব্যাটারি দিয়ে চালানো যাবে। রিমোট ও নন গ্রিড এলাকায় এলইডি টিভির সাথে ১২ ভোল্টের ব্যাটারি দিয়ে  এই ডিটিএইচ সহজে ব্যবহার করা যাবে। একটা সমস্যা আছে অল্প বৃষ্টিতে ছবি আসে বেশী বৃষ্টি হলে ছবি আসে না। এটা এটা বড় সমস্যা নয় কারণ আমাদের দেশের মুষলধারে বৃষ্টি দীর্ঘ সময় থাকে না।

পরিশেষে আমার কাছে নতুন হিসাবে এর পারফরমেন্স অনেক ভাল মনে হয়েছে। আশা করি অনুন্নত ও দূগর্ম এলাকার জনগোষ্ঠীর জন্য চমৎকার একটি ব্যবস্থা হবে। বদলীর চাকুরী যারা করেন তাদের জন্য উন্নত ছবি ও শব্দের চ্যানেল পাওয়ার নিশ্চয়তা পাওয়া গেল। বদলীর সাথে সাথে ডিশ আর সেটটপ বক্স সাথে রাখলেই হল। আমার এ লেখাটি আশা করছি দূগর্ম এলাকায় অবস্থানকারীদের উপকারে আসবে।

Thursday, August 25, 2016

নির্দিষ্ট দিন ও ক্ষণে অনলাইন প্রকাশনা

আমরা যারা পেশাদার লেখক নই কিন্তু মনের তাগিদে লেখালেখি করি। তাদের লেখায় একটা ধারাবাহিকতা আনা প্রয়োজন রয়েছে। আমরা যদি কোথাও লিখি বা কোন ওয়েব সাইটে প্রকাশ করি তবে আমাদের প্রকাশনা হতে হবে নিয়মিত। মাসে একটা প্রকাশনা বা সাপ্তাহিক একটা প্রকাশনা। আবার প্রকাশনার সময়টা হতে পারে নির্দিষ্ট কোন সময়। আমি যদি কোন একটা সাইটে প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় একটা করে লেখা অবমুক্ত করি তা হবে চমৎকার একটি ব্যবস্থা।
আমি আমার সাইটিতে ব্লগ স্পটের সুন্দর একটা ব্যবস্থা পেলাম আর সেটি হল শিডিউল দিয়ে পোস্ট প্রকাশ করা। গুগল ব্লগস্পটের অনেকগুলি ভাল ব্যবস্থার মধ্যে এটি একটি চমৎকার ব্যবস্থা। ওয়ার্ড প্রেসের ফিচার অনেক উন্নত হলেও ব্লগস্পট অনেক ইউজার ফ্রেন্ডলি। ব্লগস্পটে ইমেইলের মাধ্যমেও পোস্ট দেয়া যায়। মোবাইলের পড়ার ইন্টারফেসটা ভাল। ডিজাইন অপশন কম হলেও কম্পিউটারে টাইপ যারা করতে পারে তারাই নির্ধিদ্বায় ব্লগস্পটে পোস্ট দিতে পারবে।
যে কোন কাজের ধারাবাহিকতা অনেক বেশী জরুরী বিষয়। আমরা চাকুরীজীবী আর ব্যবসায়ী যাই হই না কেন সব সময় আমাদের একইভাবে সময় যাবে না। কখনো কাজের চাপ বেশী থাকবে।  কখনো কাজের চাপ কম থাকবে। আবার কখনো মানসিক অবস্থা ভাল থাকবে আবার কখনো মন্দ থাকবে। তাই প্রতিদিন বা প্রতি সপ্তাহে নিয়ম করে কোন জার্নালে বা অনলাইন পাবলিকেশনে আমরা প্রকাশ করতে পারব তা হলফ করে বলা যায় না। কেবলমাত্র প্রফেশনালরা নিয়মিত কোন জার্নাল প্রকাশ করতে পারে। যারা প্রফেশনাল নই তাদের জন্য গুগল ব্লগস্পটের ব্যবস্থাটি বেশ ভাল। কোন দিন কোন সময় লেখাটি প্রকাশ পাবে তা নির্ধারণ করা যায়। আমার লেখার বিভিন্ন পর্যায়ে কখনো প্রতি দুই/তিন দিন পর পর একটা করে লেখা প্রকাশ করতাম আবার কখনো দশ বার দিন পার হয়ে যায় লেখা লিখতে পারি না ও অনলাইনে প্রকাশ করতে পারি না। তাহলে উপায়। এদিকে আমার পাঠকরা নিয়মিত লেখা পেলে খুশী হয়।
নিয়মিত যে কোন বিষয়ই সাফল্য ও স্বস্তি দায়ক। আমার পাঠকরা বেশীর ভাগ আমার বন্ধু ও চাকুরীজীবী এই জন্য আমি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় লেখা প্রকাশের টাইমটা বেছে নিয়েছি। যা অত্যন্ত কার্যকর একটা ব্যবস্থা হয়েছে। এতে আমার বন্ধুরা ছুটির দিনে ইন্টারনেট ব্যবহারের পাশাপাশি ইচ্ছে হলে আমার লেখাটা পড়তে পারে।
ইন্টারনেটে ব্লগে সময় ধরে প্রকাশনাটা স্কুল কলেজের নোটিশ ও অন্যান্য প্রকাশনার ক্ষেত্রেও অনেক বেশী কার্যকর হবে। এটা আমার অনলাইন প্রকাশনায় অনেক অনেক স্বস্তি দিয়েছে। আমাকে অনলাইন প্রকাশনার জন্য অনেক সময় শিডিউল এ্যালার্ম বা শিডিউল মনে রাখার এসএমএস এর মাধ্যমে মনে রেখে বৃহস্পতিবারে প্রকাশনাটা করতে হত। এখন যখন একটা লেখা তৈরি হয়ে যায় সাথে সাথে শিডিউল দিয়ে সেট করে দেই। অটোমেটিক ভাবে নির্দিষ্ট সময়ে সেই লেখাটি অনলাইনে প্রকাশিত হয়। এতে নিদিষ্ট দিনের প্রকাশনা করার জন্য প্রতিনিয়ত অপেক্ষা করার প্রয়োজন আর থাকছে না।
আমরা অনেক সময় কোন লেখায় বিশেষ কোন তথ্য প্রাপ্তির অপেক্ষায় থেকে আমাদের লেখাটি প্রকাশ করতে দেরী হয়। আবার অনেক সময় দেখা যায় বিশেষ তথ্যটি যথেষ্ট প্রয়োজন নয়। সেই ক্ষেত্রে আমরা আমাদের লেখাটি শিডিউল করে প্রকাশনার জন্য কিউ করে রাখতে পারি। কিউ করে রাখা অবস্থায় যখন খুশি ব্লগের অ্যাডমিনে ঢুকে লেখাটি যতবার খুশি যতদিন খুশী সম্পাদনা করা যাবে। পরে লেখাটি নির্ধারিত সময়ে প্রকাশ পাবে। প্রয়োজন হলে প্রকাশনার শিডিউলটিও পরিবর্তন করা যাবে।

আপনার যারা অনলাইন প্রকাশনা করেন আশা করি তাদের এ ফিচারটি বেশ কাজে লাগবে। আমি যখন বিষয়টি জানতাম না তখন অনেক দিন সময় রক্ষা করে অনলাইন প্রকাশনায় আমাকে অনেক বেগ পেতে হয়েছি। এখন সময় রক্ষা করে প্রকাশনা অনেক সহজ হয়েছে।

Thursday, August 18, 2016

জিপিএস মোবাইলে সহজ হয়েছে টুরিস্টদের পথ চলা

আমার জীবনের দুইটি জাতিসংঘের মিশনে চাকুরীর সুবাদে আমার বেড়া‌নো সিয়েরালিওন ও কঙ্গো দেশ দুটিতে গাইড ম্যাপ ও লোকজ‌নের সহায়তায় নিয়ে ঘুরে বেড়া‌তে পেরেছি। গত ২১ জানুয়ারি ২০১৬ আমি সপরিবারে ভারতের কলিকাতায় যাই। কলিকাতার সমস্ত বেড়া‌নো বলা যায় কারো কাছ থেকে তেমন কোন ব্রিফিং না নিয়েই আমরা বেড়া‌তে সক্ষম হই। ভার‌তে যাওয়ার এক সপ্তাহ আগেই আমার দুই ছে‌লেকে ( ২০১৬ সালে দশম ও পঞ্চম শ্রেণীর ইংরেজি ভার্সনে অধ্যয়নরত)  নিয়ে ইন্টারনেট ঘেঁটে কলিকাতার বেড়া‌নোর মত গুরুত্বপূর্ণ স্থানগু‌লো বের ক‌রে ফেলি। তারপর গুগল ম্যা‌পে সে সমস্ত স্থানের ঠিকানা, দূরত্বও অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় আনি। ইন্টারনেট হ‌তে স্থান নির্ধারণের পর   আমরা যে স্থানে থাকব সে স্থান হ‌তে প্রতিটি স্থানের দূরত্ব ও সম্ভাব্য খরচ আমরা হিসাব করি। আমার দুই ছেলেকে নিয়ে আমা‌দের ভারতের কলিকাতার বেড়া‌নোর পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত ক‌রে ফেলি।
কলিকাতায় যাওয়ার পর একটা ব্রিফিং পেয়েছিলাম ট্যাক্সিওয়ালারা বাংলাদেশ থেকে এসেছে এরূপ আন্দাজ কর‌তে পারলে মোটা‌মো‌টি গোটা কলিকাতা ঘুরে বেড়িয়ে বিভিন্ন রাস্তা ঘুরিয়ে মিটা‌রে য‌থেষ্ঠ পরিমাণ বিল তুলে দেয়। একটা উপায় অভিজ্ঞ জনেরা বাতলে ছিল আর তা হল ট্যাক্সি নির্দিষ্ট গন্তব্যে চুক্তিভিত্তিক ভাড়া নির্ধারণ ক‌রে যাওয়া। চুক্তিভিত্তিক ভাড়া গিয়েও কোন লাভ পাইনি। কারণ এরা চুক্তিভিত্তিক ভাড়া আরো বেশী দাবী করে। তবে উপায়। মিটারে অপ্রয়োজনে কি গোটা কলিকাতা চক্কর দিয়ে ট্যাক্সিওয়ালা মর্জিমাফিক কি বেশী ভাড়া দিতে থাকব। আমি আর আমার বড় ছেলে একটা উপায় বের করলাম। আর তা হল। ট্যাক্সিওয়ালা সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি শুরু করলে আমি ছেলেকে বলব জিপিএস অন্য করার জন্য। ছেলে জিপিএস তার মোবাইলে অন্য করে ঘুরানো রাস্তা হলে ট্যাক্সি চালককে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিবে। এতেই ট্যাক্সি চালক সর্তক হয়ে ঘোরাঘুরি বন্ধ করে সোজা রাস্তা ধরবে। কারণ সে অপরিচিত রাস্তায় নিয়ে মুরগা বানানোর কাজ থেকে বিরত থাকবে। আমাদের এ ব্যবস্থাটি বেশ কাজে লেগেছিল। আমাদের তেমন মুরগা বনতে হয়নি। তবে আমার মনে হয়েছে কলিকাতার বেশীরভাগ ট্যাক্সিচালক তেমন ধান্ধাল নয়। মিটারে ঠিকঠাক ভাবে সাধারণত যায়। কলিকাতার যে কোন পয়েন্টে থেকে জিপিএস ও লোকেশন অন্য করলে পরবর্তী গন্তব্য জিপিএস এর গুগল ম্যাপে সার্চ দিলে এই পয়েন্ট কখন কোন বাস আসছে ও ট্রেন কাছাকাছি কোথায় আছে সকল তথ্য পাওয়া যায়। ইতিপূর্বে অনেকের কাছ শুনেছি জিপিএস ব্যবহার নিয়ে। কলিকাতায় মোবাইলের জিপিএসএর এত চমৎকার ব্যবহার করা যায় তা কলিকাতায় না আসলে আমি ও আমার ছেলেরা জানতাম না। আমরা কোন স্থানে যেতে কাউকে তেমন একটা জিজ্ঞাসা করতে হয়নি। জিপিএস মোবাইলের চার্জ কমিয়ে দেয় ও ইন্টারনেট খরচ করে। তাই যখনই কোন স্থান ঠিকমত মন হচ্ছে না, সাথে আমার জিপিএস এর হটস্পট অন করি। আমার বড় ছেলে ওয়াই ফাই অন্য করে আমার মোবাইলের সহায়তায় গুগল ম্যাপে আমাদের গন্তব্যের বিস্তারিত তথ্যাদি বের করে। এভাবে পথ হারানো থেকে রক্ষা পেতাম। বড় বড় শপিং মল ও বড় বড় দোকানের ছবিসহ বিবরণ গুগল ম্যাপে পাওয়া যায়।
কলিকাতার গুগল ম্যাপে একটা বিষয় আমাকে সহায়তা দিয়েছে আর তা হল নির্দিষ্ট স্থানের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর। একবার আমরা কলিকাতার অলিপুর নামক স্থানে চিড়িয়াখানায় যাব। আগের দিন গুগল ম্যাপ থেকে চিড়িয়াখানার তথ্য নিতে গিয়ে দেখি চিড়িয়াখানা পরের দিন বন্ধ থাকবে। গুগল ম্যাপে এ তথ্য না পেলে আমরা পরের দিন চিড়িয়াখানায় যেতাম আর বন্ধ দেখে ফেরত আসতাম। গুগল ম্যাপের বন্ধ থাকার তথ্যের সাথে অনুসন্ধানের মোবাইল নম্বর থাকায় আমি মোবাইলে কল করে আরও নিশ্চিত হতে পেরেছিলাম। সত্যি জিপিএস আর গুগল ম্যাপের কার্যক্রম অসাধারণ। আমাদের বাংলাদেশে সমস্ত রাস্তা ও ডিটেইলস গুগল ম্যাপে না থাকলেও অনেকটুকু উপকারে আসে ও অনেক কাজে লাগে। ভারতের কলকাতার রাস্তায় আরও একটা ভয়াবহ বিষয় হল ট্রাফিক জ্যাম। বাংলাদেশের ঢাকা থেকে কোন অংশে কম নয়। গুগল ম্যাপে কলিকাতার ট্রাফিক জ্যামের বিষয়টি অত্যন্ত চমৎকার ভাবে জানা যায়। কতটুকু রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম আছে। ট্রাফিক ঘনত্ব কেমন। জ্যামে পড়ে  থাকতে হবে আনুমানিক কত সময়। ইত্যাদি বিষয় খুবই উপকারী। এভাবে ট্রাফিক জ্যামের তথ্য জানার কারণে জ্যামের রাস্তাগুলো বাদ দিয়ে বাইপাস করার ভাল সুযোগ হয়। আমার ছেলে গুগল ম্যাপ দেখে ট্যাক্সি চালককে যখন বলে, আংকেল সামনে জ্যাম আছে। আপনি বামে এই এই রাস্তা ধরে গিয়ে জ্যাম থেকে বাচতে পারবেন। চালকরা একটু অবাক হয় জানতে চায় সে কিভাবে জানে। যখন বলা হয় মোবাইলের গুগল ম্যাপ থেকে তখন অনেকেই বিষয়টি জানার জন্য বেশ আগ্রহী হয়।

আমি চাকুরী জীবনের ২৫ বছর ধরে ঢাকার বাইরে আছি। তাই ঢাকার গুগল ম্যাপের অগ্রগতি তেমন ধারনায় নাই। তবে আমার চাকুরীর এলাকা কুষ্টিয়া ও কাছাকাছি অনেক শহরের ডিটেইলস গুলো মফস্বল এলাকা হিসাবে ভালই পাওয়া যাচ্ছে। কলিকাতায় মোবাইলে জিপিএস ব্যবহার করে আমার একটা ধারনা হল আমরা ও আমাদের সন্তানরা যারা আইটি ঞ্জান নিয়ে বড় হচ্ছে। তাদেরকে পৃথিবীর যে কোন স্থানে জিপিএস সম্বলিত মোবাইল দিয়ে ছেড়ে দিলে তারা চমৎকার ভাবে রাস্তা চিনে নিতে পারবে। এখন বিদেশ ভ্রমণ হয়েছে পানির মত সহজ ও চিন্তামুক্ত।

Thursday, August 11, 2016

আমার কৃষি ভাবনা

আমার দাদা ছোটবেলা থেকেই জাত কৃষক ছিলেন। আমার নানা প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক থাকার পরও জমি ছিল ও কৃষি ছিল। নিজে সরাসরি কৃষিকাজ না করলেও মুনি মজুর দিয়ে জমি করাতেন। আমার বাবা ১৯৯১ সালে তৎকালীন টিএন্ডটি ইঞ্জিনিয়ার পদ থেকে রিটায়ার করার পর থেকে গ্রামের বাড়ীতে থাকেন ও পুরো দস্তুর কৃষক। গত দুই বছর হল স্ট্রোক করে শয্যাশায়ী হওয়ার পর থেকে সরাসরি গাছ লাগানো ও গাছের পরিচর্যা ইত্যাদি করতে পারছেন না। আমার বাবা সরকারী কোয়ার্টারে চাকুরীকালীন সারা জীবন কাটিয়েছেন। সরকারী ক্যাম্পাসে তার বাসস্থান সংলগ্ন স্থানে তিনি সব্জির চাষাবাদ না করে থাকতে পারতেন না। অপরদিকে আমার মাও কখনও বসে থাকতেন না। বাড়ীর আসে পাশে তার সব্জি গাছ লাগানো চাই। এখনো সাতাত্তর আটাত্তর বয়সে টুকটাক সব্জি গাছ লাগিয়ে যাচ্ছেন।
আমার পিতা মাতার কৃষি প্রীতি আমার মাঝেও সংক্রামিত হয়েছে। ২০০০ সালে একবার চাকুরীর সুবাদে সেনাবাহিনীর একতালা স্বতন্ত্র বাসস্থানে থাকার সুবাদে কিছু কৃষির প্রচেষ্টা করেছিলাম। বিজিবিতে দুইবার চাকুরীর সুবাদে সামগ্রিক ভাবে সবার জন্য কিছু কৃষির ব্যবস্থা করছি। একবার আমার সিনিয়র জেনারেল বলেছিলেন আমরা যদি আমাদের ক্যাম্পাসে একটি কুমড়ো উৎপাদন করতে পারি তবে আমরা স্থানীয় বাজার হতে একটি কুমড়ো কম কিনলাম, এতে বাজারে একটি কুমড়োর চাহিদা কম হল ও আমরা জাতীয় জিডিপিতে একটি কুমড়ো যোগ করলাম। এই ধারনার পর থেকে আমি সকলকে সব্জি চাষে উৎসাহ দেই। আর যদি একান্তই চাষাবাদ করতে না পারে তবে সরকারী বা বেসরকারি কোন স্থান ফেলে না রেখে দ্রুত লীজ দেয়ার ব্যবস্থা করি। প্রয়োজন যাতে সর্বদা স্থানগুলো উৎপাদনশীল থাকে। আমি বড় জমিতে একাধিক চাষকে প্রাধান্য দেই। ছোট ছোট প্লটে একাধিক ফসলের উৎপাদন সহজেই বিতরণ করে শেষ করা যায়। একবার আমাদের ক্যাম্পাসে বড় জমিতে শুধু টমেটো চাষ করল। পরে সেই টমেটো অত্যন্ত সুলভে বাজার ছাড়তে হল। তারপর থেকে ছোট ছোট প্লটে অনেক জাতের সব্জি চাষ করেছিলাম। এতে অপচয় কমে আসল। সহজেই সবাইকে বিতরণ করে শেষ করা যায়।
আমার প্রধান হবি কম্পিউটার ও ইলেক্ট্রনিক্স হওয়ার পরও আমার চাষাবাদে আগ্রহের কারণে আমি প্রতিনিয়ত চাষাবাদের উপর জ্ঞান অর্জন করে চলেছি। আমার কৃষির উপর জ্ঞান অর্জনের বিষয়গুলি অনেককে উৎসাহিত করতে পারে। তাই বিষয়গুলি সকলের সাথে শেয়ার করলাম। আশা করি আমার জানা বিষয়গুলি অনেককে কৃষির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য উৎসাহিত করবে।
আমার জানা কৃষির বিষয়গুলি হল:
. ছাদে বাগান করা
. টবে বাগান করা
. বস্তায় বাগান করা
. ভার্টিক্যাল বাগান করা
. কীহোল গার্ডেন করা
. ড্রিপ ইরিগেশন
. পিভিসি ইরিগেশন
. লীফ কালার চার্ট
. কম্পোষ্ট তৈরির নিয়ম
১০. রেইজ বেড গার্ডেন
১১. পট গার্ডেনিং
১২. হাইড্রোপনিক চাষাবাদ
১৩. ধান ক্ষেতে সম্বন্বিত মাছ চাষ
১৪. ভাসমান সব্জি চাষ
১৫. কান্দি কেটে সব্জি চাষ
১৬. গ্রীষ্মকালে শীতের সব্জি চাষ
১৭. শীতকালে গ্রীষ্মের সব্জি চাষ
১৮. স্ট্রবেরী, ক্যাপসিক্যাম ও ড্রাগন ফল
১৯. ছোট পুকুরে ভিয়েতনামী কই চাষ
২০. চিড়িং চাষ
২১. বিভিন্ন ধরনের মাছের চাষ
২২. আমবাগান উন্নয়ন ও পরিচর্যা
২৩. খাঁচায় মাছ চাষ
২৪. সিমেন্টের রিং এর রেইজ গার্ডেনে চাষাবাদ
২৫. বাসস্থানের ফেলে দেয়া কনটেইনারে ও পুরাতন টায়ারে গার্ডেনিং
২৬. গাছের পাতার আর্বজনা হিসাবে না পুড়িয়ে কম্পোস্ট তৈরি
২৭. বোতল মাধ্যমে ড্রিপ ইরিগেশন

আমার লিষ্ট যা মনে পড়েছে তা এখানেই লিপিবদ্ধ করলাম। আরো নতুন নতুন কৃষি গভেষনা ভবিষ্যতে আমি যুক্ত করব। আমার এ ধারনা ও চেকলিস্ট অনেকেই কৃষির নতুন নতুন বিষয় জানতে উৎসাহিত করবে। আমাদের দেশের কৃষির উপর আলাদা কোন টিভি চ্যানেল নাই। একবার শুনেছিলাম বাংলাদেশে কৃষির উপর চ্যানেল অতি প্রয়োজনীয় হবে। আমরা আমাদের অবসর সময় অবশ্যই সবুজের সাথে কাটালে আমরাও নিজেকে সবুজ রাখতে পারব।

Thursday, August 4, 2016

সন্তানের জন্য আনা চর্বি ও শর্করা জাতীয় খাবার কিন্তু ওজন বাড়ায় পিতা/মাতা ও অভিভাবকদের

আজ থেকে ৩০/৩৫ বছর আগে আমার মধ্যবিত্ত বাবার পরিবারে আমরা ছয়জন ভাইবোন প্রায়শই একটা ডিমকে শেয়ার করে খেতাম। কখনো একটা সিদ্ধ ডিম দুই ভাগে বা তিনভাগে খেতে হত। মাঝে মাঝে আমরা ছোটরা কেউ একাধিক টুকরো খেতে চাইলে মায়ের ভাগ বা বাবার ভাগ দিয়ে দিতেন। ১৯৯৭ সালের পর আমি যখন সংসারী হলাম হয়ত বাবার থেকে একটু উপরের ধাপে উঠলাম কমিশন অফিসার হওয়ার কারণে। আমার বাবা বিটিএন্ডটির অফিসার হলেও ছয় সন্তান ও তাদের পড়াশোনার খরচ চালাতে গিয়ে আমার মা ডিম আস্ত না দিয়ে কয়েক টুকরো করে আমাদের ভাই বোনদের খেতে দিতেন। আমাদের এখনকার সন্তানরা অজস্র পোলট্রি ফার্মের কারণে ও সহজলভ্য হওয়ার কারণে ডিম শেয়ার করে খাওয়া হয় এটা হয়ত চিন্তায় আনতে পারবে না। তাদের জন্য প্রতি নিয়ত ডিম খাওয়ানোর জন্য পরিবারের স্ত্রীরা বা সন্তানদের মায়েরা এত ব্যস্ত থাকেন যে ভাবতেও অবাক লাগে। এমন হয় সন্তানের জন্য ডিম সিদ্ধ করা হল কিন্তু সন্তান বলল ডিম সিদ্ধ খাব না পৌচ খাব তখন সিদ্ধ ডিম থাকা সত্ত্বেও পৌচ করতে হয়। আর এ অব্যবহৃত সিদ্ধ ডিম অপচয়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য মা বাবাকে অতিরিক্ত ডিম খেতে হয় আর ওজন বাড়াতে হয়। মধ্যবিত্ত পরিবারের সমস্যা হল কারণে ও অকারণে খাবার নষ্ট করতে পারে না। ছেলে মেয়েরা খেল না আর পিতা মাতা খেয়ে নিবে বা কাজের লোককে দিবে এটা বেশী হয় মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোতে। কারণে ও অকারণে খাদ্য দ্রব্য ফেলে দেয়ার মত ভয়ানক মানসিক শক্তি সাধারণত ধনী পরিবার গুলোতে হতে পারে। মধ্যবিত্ত পরিবার সাধারণত অতিরিক্ত খাবার খেয়ে হলেও খাবার ফেলে না দিয়ে তা কাজে লাগায়। এভাবে চাহিদার বাইরে অপরিকল্পিত খাবারই সাধারণত আমাদের শরীরে বারোটা বাজিয়ে দেয়। অধিকাংশ পরিবারের স্ত্রীদের ওভার ওয়েট হওয়ার কারণ অনেক ক্ষেত্রেই বলা যায় সন্তানদের জন্য তৈরি করা বেচে যাওয়া খাবার ফেলে না দিয়ে নিজেদের চাহিদার অতিরিক্ত হিসাবে সেসব খাবার ব্যবহার করা।
একটা কথা প্রচলিত আছে চোখের খিদা। এটা একটা মারাত্মক দিক। আমি অনেকেই দেখেছি খাবার তুলে নিতে গেলে অনেক খাবার তুলে নেন কিন্তু বাস্তবে খেতে পারেন না। অনেক খাবার অপচয় হয় এ ধরনের চোখের খিদা মিটানোর কাজে।
চোখের খিদা মিটানোর জন্য বেশী রান্না করা। বাচ্চাদের জন্য প্রয়োজনের তুলনায় বেশী রান্না করাটা অনুচিত। আর বাচ্চাদের বেশী রান্নার ভার বইতে হয় সাধারণত পিতামাতাকে। মাঝে মাঝে এরূপ হয় ছোট ছেলে কিছু খাচ্ছে না, তার জন্য রান্না করা ভাত, মাছ ও মাংস বেচে যাচ্ছে। আমি তখন ঘটনার গভীরে গিয়ে দেখলাম। স্কুল থেকে আসার পথে ছোট ছেলে মাঝে মাঝে ব্যাকারী থেকে স্ন্যাকস ও কোল্ড ডিংকস খেয়ে বাসায় ফেরা। বাসায় এসে আইসক্রিম, বিস্কুট, চানাচুর ও আরো বেশ কিছু ড্রাই খাবারের সদব্যবহার হয়েছে। তখন স্বাভাবিক ভাবে স্ত্রীকে পয়েন্ট আউট করে বললাম, ছেলের পেটের ক্যাপাসিটি অনুযায়ী ভাত ও সাধারণ খাবার দ্বারা পরিপূর্ণ না করে আগেই অন্য খাবারে চাহিদা পূর্ণ করেছে করে ফেলেছে। তাই বাসার খাবার বাড়তি হয়েছে। এ সকল ক্ষেত্রে সাধারণত অনেক বাবা মা সন্তানদের বুঝাতে পারলে বাইরের খাবার পরিহার করাতে পারেন। আর একান্তই না পাড়া গেলে স্বাভাবিক খাবারের পরিমাণ এই সন্তানের জন্য অর্ধেক করে বা প্রয়োজনে আরো কমিয়ে রান্না করতে হবে। এতে পিতামাতারা ফোর্স ইটিং থেকে রক্ষা পাবেন।
অনেক পিতামাতা সন্তানদের অপ্রয়োজনীয় জাংক খাবার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। আবার আমরা অনেকেই পারি না, যারা পারি না তারা সন্তানদের জন্য একেক জনের পছন্দমাফিক একেক খাবার তৈরি করে পরিবেশন করার চেস্টা করি যেন বাচ্চারা পেটপুরে তৃপ্তিতে খেতে পারে। আর্থিক সংগতি থাকায় ও কাজের লোক বা নিযুক্তিতে লোক প্রাপ্তির সুবিধা থাকলে আমরা অতিরিক্ত মেনু তৈরী নিয়ে তেমন একটা চিন্তা করি না। কিন্তু এটা ক্রমান্বয়ে অহেতুক বিভিন্ন ধরনের অতিরিক্ত খাবার গ্রহণে প্ররোচিত করে। পরিণামে মা বাবা সহ গোটা পরিবার ওভার ওয়েটের যাতা কলে পিষ্ট হয়। এটা থেকে উত্তরণের একটা উপায় আছে। তা হল সুষম ও কঠোর খাদ্যাভ্যাস।

পরিকল্পিত খাদ্য অভ্যাস আমাদের খাবার অপচয়ের পাশাপাশি আমাদের অযাচিত মুটিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে, খাওয়ার পরিমাণ সব সময় করতে হবে পরিমাণ থেকে কিঞ্চিত কম। খাবার কম পড়লে ইজ্জত গেল এ ধরনের মানসিক চিন্তায় না থেকে খাবার কম পড়বে এবং কম খাব, এই নীতিতে আগানোই সবচেয়ে ভাল। খাবার কম পড়লে পুনরায় একই জাতীয় খাবার বা বিকল্প খাবার পরিকল্পনা করলে সব সময় খাবারের বিষয়ে টাইট অবস্থানে থেকে ডায়েট কন্ট্রোল করা যায়। পরিশেষে বলব আমরা নিজেদের সুচারু পরিকল্পনায় খাদ্য শৃঙ্খলার মাধ্যমে সুস্থ থাকব এটাই হোক আমাদের সকলের একান্ত কামনা।