Pages

Thursday, April 26, 2018

প্রিন্ট বুক অন ডিমান্ড ও ই-বুক


২০০২ সালে আমি যখন ইউএন মিশনে সিয়েরালিওন গেলাম তখন থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারের অনেক সুযোগ পাই। তখন আমি পিডিএফ বই ই-বুক ব্যাপক ভাবে ইন্টারনেটে পড়ার সুযোগ পাই। প্রাথমিক অবস্থায় আমি ইন্টারনেট হতে ডাউন লোড করে প্রিন্ট করে বইয়ের মতন বাঁধাই করে ই-বুক পড়তাম তখন দুই একটি বাংলা বই ই-বুক পাওয়া যেত।মূলত ইংলিশ বই ই-বুক পাওয়া যেত। কেই কেই চুরি করে নিজ নিজ ব্লগে বাংলাদেশের বিখ্যাত লেখকদের বই অনলাইনে দিত । সে সকল বই মাঝে মাঝে পড়তাম। এক সময় কম্পিউটার স্ক্রিনে পিডিএফ বই পড়ার অভ্যাসটা রপ্ত হয়ে গেল। মাঝে মাঝে পিডিএফ ইংরেজি বই থেকে কপি পেস্ট করে ওয়ার্ডে কনভার্ট করে নিতাম। ওয়ার্ডে কনভার্ড করার মজাটা হল এটাকে বড় করে রিডিং ভিউতে কম্পিউটার স্ক্রিনে বড় করে পড়া যায় যা খুব মজাদার। এখনও আমি ইংরেজি বই ওই ভাবে পড়ার একটা অভ্যাস করে রেখেছি। বড় বড় হরফে ওয়ার্ডের রিডিং ভিউতে পড়ার অভ্যাসটা আজো আছে। এটাই ইংরেজি বই ও বাংলা বই এডিট ও রিভাইস করার জন্য আমার জন্য খুব মজাদার একটি ব্যবস্থা। কিছুদিন আগে প্রিন্ট অন ডিমান্ড বা পিওডি সম্পর্কে জানতে পারি। এর আগে আমি পিডিএফ কম্পিউটারে পড়তাম কিন্তু আমি যদি প্রিন্ট পিডিএফর প্রিন্ট করি, তবে বই পড়ার জন্য কাগজ ও কালি অপচয় হল। এটা না করে আমি সহজেই কম্পিউটারে পড়তে পারি। এটা পাঠ্য বই না যে আমাকে বার বার করে পড়তে হবে মুখস্থ করতে হবে। এক বা দুইবার পড়লেই হল। আর তা ডিজিটাল ফরমেটে একটু কষ্ট হলেও প্রিন্ট করার হিউজ কষ্ট থেকে বাঁচা যায়। আমি তারপর আর একটি বিষয় সম্পর্ক জানতে পারি আর তা হল, পেপার লেস অফিস। পেপারলেস অফিস আমাদের এই পৃথিবীর গাছ কাটা কমিয়ে দেয়ার জন্য ভূমিকা রাখতে পারে।  অনেক বই প্রিন্ট করা মানে অনেক পরিমাণ গাছ ব্যবহার করা । তাই বই যত কমানো যাবে গাছ কাটা তত কমানো যাবে।  দেখতে দেখতে আমাজনে প্রায় ৫৭% পাঠক ই-বুক পড়ে। মানুষের মানুষিকতায় কত বড় পরিবর্তন। বই ক্যারিং অনেক সময় কমফোর্টেবল নয় তাই ই-বুকের মাধ্যম বই পড়ুয়ারা বই পড়ে থাকে। মোবাইল ও ট্যাব বই পড়ার আন্দদটাকে আরো বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
আমি ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসাবে কমিশন পাওয়ার পর থেকে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে বই ও ম্যাগাজিন কিনতাম। খুব ভাল লাগত। তখন থেকে আমার একটা অভ্যাস ছিল, কোন বই কিনলে আমি তা প্রায়শ:ই বইয়ের ভাঁজ নতুন থাকতে থাকতেই পড়া শেষ করে ফেলতাম। আমার আর একটা অভ্যাস ছিল ডিকশনারি বা অন্যান্য বই যেটা আমার মনে হত আমি বার বার পড়ব বা দেখব, সেই সমস্ত বই বাদে, বাকী বই আমি নিজের কাছে রাখতাম না বিতরন করতাম। মনে হত, এই বইটা আমার সেলফে থাকলে সে বইটার ভাল ব্যবহার হল না। কাগজ ও কালি খরচ করে একটা বই তৈরি করার পর তা একজনের ব্যবহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যাওয়া উচিত। আমি একটা বই বড়জোর মাস দুয়েক আমার কাছে রাখতাম তারপর তা বন্ধু বান্ধব যারা বই পড়তে পছন্দ করে, তাদের কে দিয়ে দিতাম। যার ফলে কখনো আমার কাছে বইয়ের কোন স্টক ছিল না। অনেক বই কেনার পড়ও আমার বইয়ের সেলফ খালী থাকত। আজও আমি এই ধারনা ও চর্চা নিয়ে চলছি। বই পড়ে অন্যকে উপহার দিয়ে দেই। বাসায় যা বই আছে তা বাচ্চাদের ও স্ত্রীর কয়েকটা বই ডিকশনারি ও রেফারেন্স বই ছাড়া আমার বাসায় আমার কোন বই নাই।
আজ অনেক দিন পর আমার কাছে মনে হয় কেন ই-বুক ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে যায় না। আমরা কেন এত বই কিনব। কিন্তু বই টাচ করে পড়ার জন্য হার্ড কপির ব্যতীত কোন আনন্দ নাই। তাই আজও আমদের দেশের মানুষের কাছে হার্ডকপি বই ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আজো আমাদের দেশে ব্যাপক হারে বই প্রিন্ট হয়। অনেক আগে থেকেই আমার মাথায় ঘুরত বই কেন আমি প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রিন্ট করব। বই প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রিন্ট করব আর তা লাইব্রেরীতে ব্যবহার ছাড়া পড়ে থাকবে এটা কেন হবে। বই প্রযোজন ছাড়া প্রিন্ট হবে না। গাছ কেটে কাগজ তৈরি করে বইটা তৈরি। পরিবেশ গত দিক দিয়ে বইটার সংখ্যা বাড়ানো উচিত নয় তবে কি করা যায়। বই ই-বুকে বেশীর ভাগ ব্যবহার করতে হবে। যারা ই-বুকে কমফরটেবল নয় তাদের জন্য শুধু প্রিন্ট হবে। পরিবেশ রক্ষা ও গাছ রক্ষার জন্য বইয়ের প্রিন্ট কমাতে হবে। আমি জানি লেখক ও পাবলিশারটা ক্ষেপে যাবেন। কারণ ব্যবসা কমে যাবে। আমি বলব ই-বুক আমাজনের মত ওয়েব সাইট হতে পেমেন্টে ডাউনলোড করার প্রভিশন করতে হবে। যারা হার্ড কপি পড়বে তাদের জন্য  কয়টি বই ডিজিটালী প্রিন্ট করে সরবরাহ করতে হবে
“প্রিন্ট অন ডিমান্ড” বই হয়ত ছাপার বই থেকে কিছুটা দাম বেশী পড়বে। কোয়ালিটি কিছুটা খারাপ হবে। তবুও প্রেসের প্রিন্ট কমিয়ে গাছ কাটা কমাতে হবে । আমি আশাবাদী পরিবেশের কথা চিন্তা করে মানুষ অপ্রয়োজনীয় বই প্রিন্ট না করে ই-বুক ব্যবহারে মনোযোগ দিবে কেবল মাত্র লাইব্রেরীর মত কমন জায়গার জন্য “প্রিন্ট অন ডিমান্ড”এর মাধ্যমে বই সরবরাহের ববস্থা থাকবে


Thursday, April 19, 2018

সহজ পাবলিকেশন্স


সারা পৃথিবীর প্রকাশনা শিল্পে অনলাইন প্রকাশনার এক চমৎকার প্রভাব পড়েছে। অনলাইন প্রকাশনা বর্তমানে বই পাবলিকেশনের জন্য মাইল স্টোন স্থাপন করেছে। বই প্রকাশনা কোন কালে এত সহজ ছিল না। যা গত দুই দশকে হয়েছে। আমাজন, ফ্লিককার্ড ইত্যাদির মত অনলাইন প্রকাশনাগুলি প্রকাশনাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এখন অনলাইন বই প্রকাশ করা যাচ্ছে মূহুর্তের মধ্যে। আধুনিককালে বইকে চার ভাবে পাবলিশ করা যায়:
১। ট্র্যাডিশনাল পাবলিকেশন।
২। পিওডি বা প্রিন্ট অন ডিমান্ড।
৩। ই-বুক প্রকাশনা।
৪।  অডিও বুক প্রকাশনা।
বই নিয়ে ড্রইংরুম আলোচনায় আমার একজন বন্ধু বলল, আমার বই লেখার খুব শখ। আমি "ইন্টেলেকচুয়াল গ্লামারাস" হ‌তে চাই। আমি বন্ধু‌কে বললাম, কে তোমা‌কে আটকিয়ে রেখেছে। সে বলল, আমি টাইপ জানি না। আমি কাগজ কলম নি‌য়ে লিখে তারপর কাউকে দি‌য়ে টাইপ করাব এই  ধৈর্যটা পাচ্ছি না। আমি তা‌কে বললাম, লেখালেখিটা একটা একাকী প্রফেশন। এটা বুদ হ‌য়ে ভাল লাগার মাঝে কাজটা কর‌তে হয়।
তখন সে বলল, এটা‌কে একাকী থেকে পার্টিসি‌পেটারী করা যায় না? কেই আমাকে টাইপ ক‌রে দিবে।
বললাম, তাহলে টাইপিস্ট ভাড়া কর।
সে আরো বলল, আচ্ছা এমন কি করা যায়। আমি। রেকর্ড ক‌রে দিব। কেউ আমা‌কে টাইপ ক‌রে দিবে। প‌রে আমি টাইপের লেখাটা ঠিক ঠাক ক‌রে দিব।
আমি বললাম, উত্তম প্রস্তাব। এটা অন্য দেশে অহরহ হচ্ছে। সেলিব্রোটিদের বই এভাবে প্রকাশ হয়। তাদের কথা অডিও বা ভিডিও রেকর্ড করা হয়। তা থেকে গ্রন্থকাররা লিখে ফেলেন। পরে সম্পাদকরা সম্পাদনা করে ভাষা ও শব্দ ঠিক করেন। অত:পর সেলিব্রেটি রাইটারকে বইটি পড়া ও অনুমোদনের জন্য দেয়া হয়। এটা চালু করা কোন বিষয় নয়। ব্যবস্থাও আমদের দেশে আছে। আমাদের দেশে পেমেন্টে এই ধরনের কার্যক্রম থাকতে পারে। অনেক পাবলিশার তা করতে পারেন। তারা সেলিব্রেটিদের সাথে কথা বলে তার অনুক্ত কথা লিখে সেলিব্রেটির জন্য বই বের করতে পারেন। এর একটা ভাল ব্যবসায়িক দিক আছে। এতে প্রকাশকরা অনেক বেশী লাভবান হবেন। সেলিব্রেটিদের বইয়ের কাটতি হতে সময় লাগে না।
এখন আসি সারা পৃথিবীর বই প্রকাশনার বাস্তবতা নি‌য়ে। আমেরিকা‌তে প্রতি বছর ৩ লক্ষ বই প্রকাশিত হয়। সেখানকার  জনসংখ্যা আমাদের প্রায় দ্বিগুণ। অর্থাৎ আমা‌দের জনসংখ্যা তা‌দের অর্ধেক। ওদের ৩২ কোটির বেশী আর আমা‌দের ১৬ কোটির বেশী। তাই আমাদের দে‌শে সেই হিসাবে ১ লক্ষ ৫০ হাজার বই বের হওয়ার কথা। কিন্তু নতুন পুরাতন মিলিয়ে আমা‌দের দেশে বড়‌ জোড় ৮,০০০ হ‌তে ১০,০০০ বই প্রকাশিত হয়। কারণ একুশে  বই মেলায়  গড়ে পাঁচ ও ছয় হাজার বই বের হচ্ছে‌। নিকট ভবিষ্যৎ এ দশ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। আগামী দিনগুলোতে আরো বাড়বে। উন্নত দেশে হিসাবে এটা নগণ্য। আমেরিকা ও ব্রিটেনে বিপুল বই প্রকাশিত হয় বলে এদের বই‌য়ের পাবলিশিং বিশাল বড় শিল্প হিসাবে দাঁড়িয়েছে। তা‌দের পাবলিশিং কার্যক্রমের কিছু নমুনা হল:
১। সেলফ পাবলিশিং
২। রাইটার্স মেনটর। এরা লেখককে লেখালেখির উপর লেখককে ক্রমাগত অনুপ্রেরণা দেয়।
৩। অন লাইন রাইটিং কোচ। আপনি লিখে লিখে ম্যাসেজ আকা‌রে দিবেন। সেই  অনলাইন কোচ আপনা‌র লেখা ঠিক ক‌রে আপনা‌কে ফেরত দিবে।
৪। লেখক কোচ বা গাইড আপনার লেখা আলোচনা ক‌রে টাইপ ক‌রে আপনার সাথে কাজ করবে।
৫। লেখা রেকর্ড ক‌রে পাঠিয়ে দিবেন লেখার হরফে টেক্সট ক‌রে ও সম্পাদনা ক‌রে আপনা‌কে দিবে।
৬। লেখা সম্পাদনা ক‌রে দেয়া।
৭। প্রুফ রিডিং করা।
৮। বই প্রিন্ট ক‌রে দেয়া।
৯। বই সার্কুলেশন ও বিতরণ করা।
১০। বই মার্কেটিং করা।
১১। ইউটিউব প্রমোশন করা।
১২। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বইয়ের কাটতি বাড়ানো।
১৩। বুক রিভিউ তৈরি।
এভাবে অনেক ধরনের অনেক অনেক সংস্থা আমেরিকা বা উন্নত দেশগু‌লো‌তে আছে। আমা‌দের দেশে যেদিন প্রতি বছর অর্ধ লক্ষ বই প্রকাশ পাবে।  সেদিন আমাদের দেশেও বই প্রকাশনায় নিত্য নতুন খাত উন্মোচিত হবে। বাংলাদেশের শিক্ষার হার বাড়তির দিকে। এক সময় শিক্ষার হার যখন শত ভাগের দিকে এগুবে সেদিন আজকের সংখ্যা থেকে অনেক গুন পাঠক বেড়ে যাবে। তার সাথে পাল্লা দিয়ে লেখক বাড়বে। এভাবেই প্রকাশনা শিল্পের উন্নতি ঘটবে।


Thursday, April 12, 2018

ঠোটের সিক্ততায় আঙ্গুল লাগিয়ে কাগজ উল্টানো


ঠোটের সিক্ততায় আঙ্গুল লাগিয়ে কাগজ উল্টানোতে আমাদের অনেকেরই অভ্যাস আছে আমার বড় ছেলে তখন  ক্লাস ওয়ানে পড়ছিল আমি ঠোটে আঙ্গুল টাচ করে আঙ্গুল সিক্ত করে বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছিলাম ছেলে হঠাৎ বলে উঠল পাপা, তুমি থুতুর দিয়ে পৃষ্ঠা উল্টাচ্ছ কেন তোমার থুতু আমার বইয়ের পাতায় লেগে যাচ্ছে তোমার শরীরের রোগ জীবাণু বইয়ে যাচ্ছে এটা তো ভাল হচ্ছে না ছেলের কথার পর থুতু দিয়ে পৃষ্ঠা উল্টানো ছেড়ে দিয়েছি প্রায় ১০/১১ বছর হতে চলল সময় লাগলেও থুতু দিয়ে পৃষ্ঠা ছাড়াই না অনেকে থুতু দিয়ে টাকা গুনেন এটা আরও ভয়াবহ অনেকে ভাবতে পারেন থুতু দিয়ে পৃষ্ঠাতো সবাই উল্টায় অনেক বড় বড় ডাক্তার, আমলা প্রায় সকলে থুতু ছাড়া পানি দিয়ে জোড় লাগানো পৃষ্ঠার জট ছোটানো মনে হয় অনেক ভাল ব্যাপার স্পঞ্জের কৌটায় পানি রেখে তা দিয়ে পাতা উল্টানো মনে হয় হাইজেনিক তাইতো স্পঞ্জে পানি রেখে ওভাবে বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টানো প্রচলন শুরু হয়েছে সব সময় স্পঞ্জ পানি রাখা যায় না বলে হয়ত আনহাইজেনিক থুতু সিস্টেম চালু আছে
আপনি একটি নতুন বই পেলেন আপনি বইটি থুতু লাগিয়ে বইটি পাতা উল্টাতে থাকলেন আপনি বইটির উপরের ডান কোনায় সবার মত থুতু লাগাচ্ছেন এই বইটি আপনার পড়া শেষ করে যখন আর একজন পড়তে নিল তখন সে আপনি যেখানে থুতু লাগিয়েছেন সেখানে সেও থুতু লাগিয়ে পৃষ্ঠা উল্টাবেন আপনার থুতু হয়ত শুকিয়ে গেছে কিন্তু আপনার কিছু সংক্রামক জীবাণু হয়ত রয়ে গেছে যা আপনার পর যে থুতু মেখে পাতা উল্টাচ্ছেন তিনি কিন্তু মনের অজান্তে আপনার সংক্রামক জীবাণু নিয়ে নিচ্ছেন আধুনিক স্বাস্থ্য সচেতনতার অংশ হিসাবে বাসার প্রতিটি সদস্যের গ্লাস বাসন আলাদা রাখি তেমনি তোয়ালে আলাদা রাখি সেই আপনি থুতু দিয়ে পৃষ্ঠা উল্টানোর কারণে বাইরের অনেক মানুষের থুতু মাখা কাগজ উল্টিয়ে আপনি তা আবার নিজের মুখেই থুতুর সাথে তুলে নিচ্ছেন ২০১৮ সালে পর্যন্ত প্রায় ১০ বছর যাবত আমি থুতু দিয়ে পৃষ্ঠা উল্টানোর অভ্যাস থেকে মুক্ত হওয়ার পর থেকে আমার সামনে কেউ থুতু দিয়ে পৃষ্ঠা উল্টালে আমি তাকে বলি অনুগ্রহ করে কাগজে থুতু লাগাবেন না আস্তে আস্তে সময় নিয়ে উল্টান তারাহুরো করার দরকার নেই প্রায় সবাই থুতু দিয়ে না উল্টানোর প্রস্তাবটা ভাল ভাবে গ্রহণ করেছে কেউ রাগ করেনি।
একটা গল্প আমাদের প্রায় সবার জানা একবার এক রাজা কোন একটা অপরাধের কারণে একজন পণ্ডিতের গর্দান নিলেন পণ্ডিতের শেষ ইচ্ছে ছিল রাজা যেন তার একটি বই পড়েন পণ্ডিতের মৃত্যু দণ্ডের পর রাজা পণ্ডিতের শেষ ইচ্ছে পূরণ করার জন্য পণ্ডিতের দেয়া বইটি পড়তে শুরু করলেন বইটির পৃষ্ঠাগুলো এমন ভাবে জট লাগানো ছিল যে রাজার সেই জট ছাড়াতে জিহ্বায় আঙ্গুল থুতু দিয়ে ভিজিয়ে নিচ্ছিলেন বইটি শেষে যখন রাজা পৈাছালেন তখন শেষ পৃষ্ঠায় লেখা ছিল প্রতিটি পৃষ্ঠা উল্টানোর সময় আপনি মুখে বিষ নিয়েছেন কারণ আমি প্রতিটি পৃষ্ঠায় বিষ মাখিয়ে রেখে ছিলাম কিচ্ছুক্ষণ পর আপনার মত “অন্যায্য রাজা”কে আমার মত পৃথিবীর মায়া কাটাতে হবে ধীরে ধীরে রাজা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন
আমরাও থুতু দিয়ে আনহাইজেনিক ভাবে যদি টাকা গুনতে থাকি বা কাগজ বইয়ের পাতা উল্টাতে থাকি তবে আমাদেরকে অনেক সংক্রামক ব্যাধির সাথে বসবাস করতে হবে আমি গত দশ বছরের পরিশ্রমে এমন এক অভ্যাসে এসেছি টাকা থেকে কোন কিছু গুনতে আমার আর পানি বা থুতুর প্রয়োজন হয় না সময় একটু বেশী লাগতে পারে তবে হাইজেনিক ভাবে থাকার চেয়ে সময়টা বড় কিছু নয় এটা একটা অভ্যাসের বিষয় আপনি আপনার সহকর্মীদের সংশোধন করতে থাকুন একসময় দেখবেন সবাই পানি বা থুতু ছাড়া কাগজ উল্টানো শিখে যাবে অভ্যাস বদল হবে