Pages

Thursday, December 31, 2015

“বাংলাদেশ ডট গভ ডট বিডি” এক মোড়কে বাংলাদেশের তথ্য প্রবাহ


ইন্টারনেট ও ইমেইল ব্যাপক প্রর্বতনের পর থেকে আমরা ই গভর্নেস শব্দটির সাথে পরিচিত হই। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলি ই গভর্নেসে ব্যাপকভাবে এগিয়ে গেলেও বাংলাদেশের অগ্রসর তেমনিভাবে হচ্ছিল না। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে অনলাইন তথ্য প্রবাহের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। ২০১৫ সালের শেষ প্রহরে যখন আমি লিখছি এ সময়কার সরকার ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্রগুলি চালু করে বাংলাদেশে অনলাইন তথ্য প্রবাহে ব্যাপক জাগরণ সৃষ্টি করেছে। পৃথিবীর উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটা রোল মডেল হিসাবে প্রকাশ পেয়েছে। কোন তথ্য জানার জন্য এখন আর গ্রামের মানুষকে শহরে আসতে হয় না আর শহরের মানুষকে আর গ্রামে যেতে হয় না। একবার আমার বড়ভাই একটা গুরুত্বপূর্ণ জমির কাগজ আমাকে দেখার জন্য কুমিল্লার গ্রাম থেকে কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠাতে চাইল। আমি বললাম গ্রামের বাজারের কম্পিউটার দোকানে যান। কাগজটি স্ক্যান করুন। ইমেইল করুন। যদিও এখন স্পাটর্ফোনে ছবি তুলে ভাইবারের মাধ্যমে পাঠানো যায়। সরকারী কোন ফরম সংগ্রহ করার জন্য টাকা খরচ করে অফিসে অফিসে ঘুরে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ফরম সংগ্রহ করতে হত। এখন ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্র বা যে কোন কম্পিউটার দোকান থেকে ফরম সংগ্রহ করা যায়। আমি ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে Bangladesh.gov.bd এই ওয়েব সাইটি নিয়ে সাত/আট দিনের একটা তথ্য জানার তল্লাশি অভিযান চালালাম। তথ্য তল্লাশি অভিযান শেষে আমি যার পর নাই মুগ্ধ। বাংলাদেশের প্রায় ছয় সহস্রাধিক ওয়েবসাইটে যেতে আমাদের মনে রাখতে হবে একটি ঠিকানা। আর তা হল বাংলাদেশ ডট গভ ডট বিডি। আমার গত কয়েকদিনে এমনভাবে ঠিকানাটি গেঁথে গেছে যা আমি সহজে ভুলব না। পৃথিবীর যে প্রান্তে থাকি হৃদয়ে আছে “Bangladesh.gov.bd”ওয়েব সাইটি। মজার ব্যাপার হল এই ঠিকানাটি মনে রাখলেই আপনার কাছে বাংলাদেশ সরকারের অনলাইনে দেয়া দেয়া আছে এরূপ কোন তথ্য বের করতে আর কোন সমস্যা থাকবে না। কোন না কোন লিংকে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত তথ্য পেয়ে যাবেন। এই বিশাল তথ্য ভাণ্ডার যেহেতু বাংলায় তাই গুগলে বাংলা ইউনিকোডে সার্চ দিয়ে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত তথ্য পেয়ে যাবেন। এই ওয়েবসাইটের ইনডেক্সটা সাজানো হয়েছে সাবলীল ভাবে এতে সহজেই কাঙ্ক্ষিত তথ্যে পৌঁছানো যায়। যেন আমার বাড়ী শশীদল ইউনিয়নে যেতে ড্রপ ডাউনে ফ্লো চার্ট হল:
চট্রগ্রাম>কুমিল্লা>ব্রাহ্মণপাড়া>শশীদল
এভাবে আমরা যে কোন ইউনিয়নের ওয়েবসাইটে যেতে পারি।
বাংলাদেশের যে কোন জিওগ্রাফিক এলাকার ওয়েব সাইট আমরা বাংলাদেশ ডট গভ ডট বিডি ওয়েবসাইট হতে ড্রপ ডাউন মেনুর মাধ্যমে যেতে পারি।
বাংলাদেশের সমস্ত দপ্তর সমুহের ওয়েব সাইট সুন্দরভাবে ইনডেস্ক করা আছে। মন্ত্রণালয়েরও ওয়েবসাইটগুলি ক্রমান্বয়ে একটার পর একটা দেখা যাবে।
সরকারী সেবার মধ্যে মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল তথ্য পাওয়া। এই তথ্য অত্যন্ত সহজে পাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। এটা নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। ইগর্ভনেসের প্রাথমিক ধাপ অতিক্রমণে এটা অনেক অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে ধারনা করা যায়। সেবা পাওয়ার বিষয়গুলিও আইকনের মাধ্যমে ওয়েবসাইটতে উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া সরকারী যে কোন ওয়েব সাইটে এই মূল ওয়েব সাইটি থেকে যাওয়া যাবে।
এই সাইটির অধীনে প্রায় সমস্ত ওয়েবসাইটগুলোই মোবাইল বান্ধব। সহজেই সমস্ত ওয়েবসাইট স্মার্টফোনে খোলা যায় ও দেখা যায়। তবে যেগুলো এখনো মোবাইল বান্ধব নয় তাও শীঘ্রই মোবাইল বান্ধব হয়ে যাবে।

বাংলাদেশের সরকারী ওয়েব সাইটের মধ্যে ফরমস ওয়েব সাইটটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে ফরম সংগ্রহ করা সরকারী সেবা প্রার্থী যে কারো জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বেশীরভাগ ডিপার্টমেন্টে ই-টেন্ডারিং চালু হয়েছে।  এছাড়া ট্রেজারি চালান চেক করা, জন্ম নিবন্ধন চেক করা ও অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদনের মত অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে করা যায়। -গর্ভনেন্স প্রতিষ্ঠার এটা একটা ভাল দিক। দেরীতে হলেও বাংলাদেশের সরকারী সংস্থাগুলো উন্নত দেশের মত তথ্য  প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে একটা বিষয় নিশ্চিতভাবে বলা যায় ভারতের ইউনিয়ন পর্যায়ে বাংলাদেশের মত ইন্টারনেট সেবা ও সেখানে অনলাইন প্রকাশনা এখনও হয়নি। সেই হিসাবে আমাদের অনেক রিমোট ইউনিয়নগুলি  সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে তাদের ইউনিয়নের তথ্য কেন্দ্রগুলি চালু রেখেছে। শুধু চালু রেখে কেবল তাই নয় তথ্য কেন্দ্রের উদ্যোক্তারা সেসব ওয়েবসাইট দিনের পর দিন হালনাগাদ করছে। নতুন নতুন তথ্য সংযুক্ত করছে। পৃথিবীর কম দেশই একই মোড়কে এত ওয়েব সাইট আনতে পেরেছে। সেই বিবেচনায় বর্তমান সময়ে অধিষ্ঠিত সরকার বেশ বড় একটি অবদান রেখেছে।

Thursday, December 24, 2015

সফলতার ৪৮ মন্ত্র


দিনটা ছিল ২০০৫ সালের মাঝামাঝি সময়। তখন হরতালের কারণে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় ট্রেনে যেতে হল,কুমিল্লা রেলস্টেশনে অপেক্ষারত অবস্থায় আমি প্লাটফর্ম লাইব্রেরী থেকে একটি বই কিনি। ভারতীয় কলকাতার লেখকের লেখা বাংলায় অনুবাদের বই। বইটির নাম ছিলসফলতার ৪৮ মন্ত্র”, বইটি আমেরিকার জনৈক লেখক রবার্ট গ্রিনের “The 48 Laws of Power” নামে ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত। বইটি পাঠক নন্দিত হয়েছিল। আমার কেনা বইটি পরে আমি হারিয়ে ফেলি। পুনরায় নীলক্ষেত থেকে অনুরুপ আর একটি বই কিনি যেটি বাংলাদেশের জনৈক ড. নজরুল ইসলাম ২১ফেব্রুয়ারী ২০০৯ সালে রাজু পাবলিকেশন্স, ৩৮ বাংলাবাজার, ঢাকা থেকে প্রকাশ করে।
বাংলা বইটি আমি কয়েকবার পড়ি। এটি রম্য রচনা হিসাবে পড়লে বেশ মজা লাগবে। এতে সফলতার যে পদ্ধতি বলা আছে সেসব অনেক মন্ত্র মানবতা বিবর্জিত। তা মান্য না করাই ভাল। তবে আমাদের আসে পাশে অনেক সফল ব্যক্তি না জেনেই এসব মন্ত্র ব্যবহার করছে। তাদের সাথে মন্ত্রগুলো মিলিয়ে বেশ মজা পাওয়া যাবে। আমি যতটা সম্ভব সরলীকরন করে মন্ত্রগুলো দিলাম। মুল বইয়ে ৪৮টি মন্ত্রের আবার প্রতিটির সরলীকরণ সহ উদাহরন দিয়ে দুই/তিন পাতার ব্যাখ্যা দেয়া আছে। বইটি যোগাড় করে পড়লে নিছক বিনোদন পাবেন। নিচে আমি আমার বোধগম্যতায় ৪৮ মন্ত্র সংক্ষেপে সংকলিত করলাম:
১. কখনও উপরওয়ালার উপর কেরামতি দেখাতে যাবেন না। সবর্দা আপনার উপরস্থকে এই অনুভুতি দিন যে তিনি যোগ্যতা ও জ্ঞানে সকলের সেরা। নিজের অতিরিক্ত যোগ্যতা অপ্রকাশিত রাখুন। কারন তার বলয়ে কেউ অতিরিক্ত অযাচিত পারদর্শিতা দেখালে ক্ষমতাধর ব্যক্তি যে কোন অজুহাতে তাকে সরিয়ে দেবেন। ক্ষমতার শীষে যারা আছেন তাদের নির্বোধ ও অনুগতদের পছন্দ। তাই অধঃস্থন হয়ে কেরামতি দেখালে বিপদ।
২. বন্ধুদের কখনোই খুব বেশী বিশ্বাস করবেন না, শত্রুদের কীভাবে ব্যবহার করতে হয় সেটা শিখুন।
৩. নিজের আসল উদ্দেশ্য গোপন রাখুন।
৪. যতটা প্রয়োজন সব সময় তার থেকে কম কথা বলুন।
৫. সুনামের উপর অনেক কিছু নির্ভর করে, প্রাণ দিয়ে একে রক্ষা করুন।
৬. যেকোনো মূল্যে মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করুন।
৭. অন্যদের দিয়ে কাজ করান কিন্তু তার জন্য সন্মান আপনি অর্জন করুন।
৮. অন্য লোকেরা আপনার কাছে আসুক, দরকার হলে টোপ দিন।
৯. আপনার কাজের মাধ্যমে জয়লাভ করুন, কখনই তর্কের মাধ্যমে নয়।
১০. ছোঁয়াচে, অসুখী এবং ভাগ্যহীনদের বর্জন করুন।
১১. লোককে আপনার উপর নির্ভরশীল রাখতে শিখুন।
১২. আপনার শিকারকে আপনার সততা ও উদারতার কৌশল দিয়ে নিরস্ত্র করুন।
১৩. কখনও কারো সাহায্য চাইলে তা তাদের উপকারে  লাগবে বলেই চান, কখনও কারও দয়ার উপর নয়।
১৪. বন্ধুর ভাব করে  চরের কাজ করুন।
১৫. শত্রুকে সম্পূর্ণভাবে শেষ করুন।
১৬. মাঝে মাঝে গুরুত্বপূর্ণ  অনুষ্ঠানে অনুপস্থিতি আপনার শ্রদ্ধা ও সন্মান বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করুন।
১৭. অন্যদের ধন্ধে রাখুন, এমন একটা আবহাওয়ার সৃষ্টি করুন যাতে কেউ আপনার সস্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করতে না পারে।
১৮. আপনাকে রক্ষা করার জন্য চারিদিকে দুর্গ তৈরি করবেন না, নির্জনতা বিপদজনক।
১৯. খেয়াল রাখুন আপনি কার সাথে কারবার করছেন প্রয়োজনীয় লোককে অসন্তুষ্ট করবেন না।
২০. কারো পক্ষ অবলম্বন করবেন না, প্রয়োজনে একজনকে অপরের জন্য লাগিয়ে দিয়ে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থাকুন।
২১. আপনার শিকারকে আপনার থেকে দক্ষ ভাবতে দিন, এতে সে ভাবতেই  পারবে না আপনি তাকে ধরাশায়ী করবেন। সহজেই  তাকে শিকার করুন।
২২. যখন আপনি দুর্বল, সন্মানের জন্য লড়বেন না। আত্মসর্মপন করে সময় নিয়ে শক্তি পুনরুদ্ধার করুন।
২৩. চারিদিকে শক্তি সম্পদ না ছড়িয়ে এক জায়গায় সংরক্ষণ করুন যেন ক্ষমতার তীব্রতা বাড়ে।
২৪. সভায় সবোর্চ্চ ক্ষমতাধর না হলে তোষামোদ, বিনয় ও অন্যদের উপর প্রভাব বিস্তার তির্যক ও শোভন ভাবে করুন যাতে অন্যরা আপনাকে সবোর্চ্চ আসনে বসাতে প্রত্যয়ী হয়।
২৫. নিজেকে নতুন করে সৃষ্টি করুন, ভাব ভংগি ও কাজে কমে নাটকীয় কৌশল অবলম্বন করুন। ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
২৬. ভুল ও নোংরা কাজ অন্যদের দিয়ে করিয়ে আপনার হাত পরিষ্কার রাখুন।
২৭. আপনার নতুন যুক্তি, প্রতিশ্রুতিপূর্ণ আশাবাদ দিয়ে ধর্মবিশ্বাসীর মতো অনুসারী সৃষ্টি করুন।
২৮. দৃঢ়তার সংগে কাজ করুন।
২৯. যেকোনো পরিকল্পনা বাধা বিপত্তি মূল্যায়ন করে সম্পূর্ণ করুন, কোথায় থামবেন তা স্পষ্ট জানবেন।
৩০. আপনার সাফল্যের পিছনের বিশাল কার্যাবলী লুকিয়ে রাখুন। প্রচার করুন আপনার সবকিছু সহজেই হয়ে যায়।
৩১. লোকদের এমন পছন্দ দিন, যেন সে যা পছন্দ করবেন তাই আপনার পক্ষে যাবে। অন্যদের পছন্দ নিয়ন্ত্রণ করুন: আপনার বাটা তাসে অন্যদের খেলতে বাধ্য করুন।
৩২. লোকের খোশ খেয়ালের সুযোগ নিন। কি তাদের যাতনা দেয় খোজ করে বের করে আনুন ও তা নিয়ন্ত্রনে নিন। মহান ক্ষমতা লাভের যাদুকরী ক্ষমতা আপনার হাতে চলে আসবে।
৩৩. প্রতিটি লোকের দুর্বলতা আছে যেমন: নিরাপত্তাবোধহীনতা, অনিয়ন্ত্রণযোগ্য আবেগ, গোপন আনন্দ, তা আবিষ্কার করুন। জানতে পারলে আপনার সুবিধার্থে ব্যবহার করুন।
৩৪. আপনার নিজের ফ্যাশনে আপনি রাজকীয় হোন, রাজকীয়ভাবে উপস্থাপন করুন যাতে সে রকম ব্যবহার পান।
৩৫. তাড়াতাড়ি করবেন না। সঠিক সময় নিরূপণ করুন। যা আপনাকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করবে। সময় না হলে পিছনে যান। ফল লাভের সময় হলে হিংস্রভাবে অর্জন করুন।
৩৬. যে জিনিষ আপনি পেতে পারেন না তাকে ঘৃণা করুন। তাদের অবহেলা করাই শ্রেষ্ঠ প্রতিশোধ।
৩৭. বাধ্য করার মতো দৃশ্যাবলীর সৃষ্টি করুন। আপনার চারিদিকে যারা আছে তাদের জন্য এমন দৃশ্যাবলী প্রদর্শন করুন। যাতে আপনার ক্ষমতার উচ্চমাত্রা দেখে তাদের অন্তরে বিনয় জাগ্রত হয়।
৩৮. সাধারণের মূল্যবোধ জেনে ও মেনে চলা অনেক নিরাপদ। কেবলমাত্র সহনশীল বন্ধুদের সংগে নিজের মৌলিকতা প্রকাশ করুন।
৩৯. মাছ ধরার জন্য জলে নাড়া দিন। শত্রুদের বিশৃঙ্খল করুন। রাগিয়ে দিন। তাদের অহংকারের  বিদ্রূপ বের করুন। রশি আপনার হাতে, আপনি তাদের নাচাতে পারেন।
৪০. মাগ্না খাওয়াকে ঘৃণার চোখে দেখুন। যে কোন মাগ্না খাওয়ানোর পিছনে উদ্দেশ্য থাকে। আপনি পয়সা খরচে মুক্ত হস্ত হোন, কারণ উদারতা ক্ষমতার একটা চিন্থ এবং চুম্বক।
৪১. বিখ্যাত লোকের পদাঙ্ক অনুসরণ করা থেকে এড়িয়ে চলুন। নিজের মতো জ্বলে আপনি ক্ষমতাবান হোন।
৪২. রাখালকে আঘাত করুন, ভেড়ারা ছড়িয়ে পরবে। এমন ক্ষমতাধরকে আয়ত্তে আনুন যার অনুসারীরাও আয়ত্তে আসবে।
৪৩. অন্যদের হৃদয় ও মনের ওপর কাজ করুন। জবরদস্তি না করে মন জয় করে কাজ আদায় করুন।
৪৪. দর্পণ প্রভাব দ্বারা শত্রুকে নিরস্ত ও ক্ষুব্ধ করুন। আপনার শত্রুরা যা করেন আয়নার মত তাদের  কাজকর্ম অনুসরণ করলে তারা আপনার উদ্দেশ্য ধরতে পারবে না। বিভ্রান্ত হবে।
৪৫. মানুষ অভ্যাসের জীব। অনেক বেশী পরিবর্তন ভীতিকর ও তা বিদ্রোহের দিকে নিয়ে যায়। তাই পরিবর্তনের কথা প্রচার করুন। কিন্তু কখনোই বেশী পরিবর্তন করবেন না। যা পরিবর্তন করবেন তা অতীতের উন্নয়ন মাত্র বলে  প্রচার করুন। অতীতের কাজে সন্মান দেখানোর ভান করুন।
৪৬. কখনও খুব বেশী সম্পূর্ণ হওয়ার ভাব দেখাবেন না। অন্যদের চেয়ে নিজেকে উত্তম প্রচার করলে অন্যের ঈর্ষা ক্ষতির কারণ হতে পারে।
৪৭. আপনার লক্ষ্যকে অতিক্রম করে যাবেন না। বিজয়ে কখন থামতে হয় শিখুন।
৪৮. আকারহীন হোন। প্রতিরক্ষার উত্তম পন্থা হল জলের মত তরল ও আকারহীন হওয়া। আকারহীন, অস্থায়ী ও পরিবর্তিত হলে শত্রু নিরাকারকে আক্রমণ করে ব্যর্থ হবে।

Web Link:

Thursday, December 10, 2015

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ব্রাশ-লেস ডিসি সিলিং ফ্যান

৮০ ওয়াটের এসি সিলিং ফ্যান আমরা সর্বদা বেশী ব্যবহার করছি। ৮০ ওয়াটের জায়গায় যদি আমরা ২০ ওয়াটের সিলিং ফ্যানের আইডিয়া দেই। তবে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের বিচারে তা হবে অতুলনীয় ভাবনা । ৬০ ওয়াট বিদ্যুৎ বেচে যাচ্ছে। আর দিনে দশ ঘণ্টায় ৬০০ ওয়াট আর আবাসিক বিদ্যুতের বিল হিসাবে দিনে সাশ্রয় ৬x০.৫=৩ টাকা। মাসে সাশ্রয় ৩ x৩০=৯০ টাকা। ১২ মাসে ৭২০ টাকা। ফ্যানের ১০ বছর আয়ুতে সাশ্রয় পায় ১০x৭২০ = ৭২০০ টাকা। সাধারণ ফ্যানের দাম ২৪০০ টাকা আর ডিসি ফ্যানের দাম ৩৪০০ টাকা পার্থক্য ১০০০ টাকা। দশ বছর আয়ুষ্কালে বিদ্যুৎ সাশ্রয় সরাসরি ৭২০০ টাকা। আমরা ২০ ওয়াটের বিএলডিসি ফ্যান ব্যবহারে নিশ্চয়ই উৎসাহিত হব। একটাই সমস্যা আছে। তা হল বাতাস এসি ফ্যান থেকে কম। BLDC ফ্যানের এফিসিয়েন্সী একই শক্তির সাধারণ ব্রাশ ফ্যানের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ % বেশী হবে। একই হর্স পাওয়ারের ব্রাশ ফ্যান ও ব্রাশ লেস মটরের বিদ্যুৎ ব্যবহারও ১৫-২০% বেশী। তাই ব্রাশ না থাকার কারণে ব্রাশের ঘর্ষণ, তাপ ও ঘর্ষণ জনিত বাধা অতিক্রমের কারণে ব্রাশ-লেস মটরের কার্যক্ষমতা বেশী। আমরা স্বাভাবিক ভাবে বুঝতে পারি একটা মটর দুইপাশে স্প্রিং এর চাপে কার্বন ব্রাশ ঘষে মটর চলে আর ঘর্ষণ ছাড়া কেবলমাত্র চুম্বকীয় শক্তিতে ঘুরতে থাকে। স্বাভাবিক ভাবে ঘর্ষনমুক্ত মটর কম শক্তি খরচ করে বেশী ঘূর্ণন শক্তি উৎপাদন করতে পারবে।
বাজারে এখন চায়নার তৈরি ডিসি সিলিং ফ্যান পাওয়া যায়। এ ফ্যানগুলো কিছুটা আস্তে ঘুরে। তবে তা তেমন একটা সমস্যা নয়। গা ঠাণ্ডা করার জন্য যতটুকু বাতাস প্রয়োজন তা পাওয়া যায়। তবে ১২ ভোল্টের ও ১২ ওয়াটের ডিসি টেবিল ফ্যানগুলো বেশ কার্যকরী। একজনের ব্যবহারের জন্য অতুলনীয়। এ ফ্যানগুলো ১২ ভোল্টের এসি  থেকে ডিসি এডাপটার দিয়ে চালাতে যায়। সাধারণ একটা এসি টেবিল ফ্যান সাধারণত ৫০/৬০ ওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করে আর সেখানে বিএলিডসি মটর ১২ ওয়াট ব্যবহারে অনেক বেশী বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা যায়।
আমি আমার ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য বিএলডিসি ফ্যান আইপিএস এর ১২ ভোল্ট সেকেন্ডারি ব্যাটারি থেকে সংযোগ নিয়ে চালিয়ে ছিলাম। ফলাফল সন্তোষজনক। আমাদের দেশের গ্রামের প্রান্তিক জনগণ যাদের ইনকাম যথেষ্ট নয়। যাদের মাসিক ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা বিদ্যুৎ বিলই অনেক বেশী মনে হয়। যাদের বাসস্থানের চারিদিকে অনেক অনেক গাছগাছালি দ্বারা পূর্ণ ও বাসস্থানটি তুলনামুলক ভাবে শীতল তারা এ ধরনের ফ্যান ব্যবহার করতে পারেন। অর্থাৎ হালকা গরম এলাকায় যেখানে ঘূর্ণিঝড়ের মত বাতাস প্রয়োজন নেই সেখানে ডিসি সিলিং ফ্যান গুলো অনেক বেশী কার্যকরী। কারো সোলার সিস্টেম বা আইপিএস এ ১২ ভোল্টের ব্যাটারি মজুদ থাকলে তাতে ১২ ভোল্ট ডিসির বিএলডিসি ফ্যান ব্যবহার করা যাবে। অন্যথায় ১২ ভোল্টের ২০/২৫ ওয়াটের এ্যাডাপটার ব্যবহার করে এ ধরনের ফ্যান চালনা করা যায়। ফ্যানগুলি একবার টিকে গেলে সহজে নষ্ট হয় না। তবে একটা বড় সমস্যা হল এ ফ্যানগুলি নষ্ট হলে জটিল সার্কিটের কারণে রিপিয়ার সহজ নয়। তবে এখনও ব্যাপকভাবে ফ্যানগুলি চালু হয়নি। সীমিত আকারে সোলার সিস্টেমের সাথে ব্যবহার হচ্ছে। আরো কিছুদিন পর বিএলডিসি ফ্যান ব্যাপকভাবে ব্যবহার হলে এর দাম কমে আসবে। ব্যবহার বাড়লে এর সার্কিটের প্রাপ্যতা বেড়ে যাবে। তখন নষ্ট হলে সহজে রিপিয়ার হবে। রিপিয়ারের ক্ষেত্রে সাধারণত সার্কিট নষ্ট হলে তা বদলাতে হবে। বিএলডিসি মটরের কয়েল ফিক্সড থাকে ও কোন ব্রাশ থাকে না। ফলে ফ্যানের কয়েল সহজে নষ্ট হয় না। রেগুলেট করার জন্য ফ্যানের ভিতরে ব্যবহৃত ইলেক্ট্রনিক্স সার্কিট নষ্ট হতে পারে।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী আলোক ব্যবস্থায় ইনক্যান্ডসেন্ট লাইটের ব্যবহার কমেছে, তারপর এসেছে সিএফএল লাইট তার থেকেও বেশী আয়ু নিয়ে এসেছে এলইডি লাইট। টিভির সিআরটি মনিটর প্রতিস্থাপিত হয়ে এসেছে এলইডি মনিটর। এলইডি মনিটর অনেক অনেক বেশী বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। এখন সময় এসেছে পাখা বা এসির বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পালা। এসিতে ইনভার্টর সিস্টেম এসিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ব্যবস্থা নিয়ে এসেছে। এখন আমাদের ফ্যানের ঘূর্ণনের প্রক্রিয়ার বিদ্যুৎ সাশ্রয় ব্যবস্থাটাই কেবল বাকী। বিএলডিসি মটর দিয়ে এটা আপাতত চালু হয়েছে। ডিসি ডিভাইসে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এসি বিদ্যুতে এই প্রক্রিয়ার ব্যবহার কেবল সময়ের ব্যাপার। আমরা উৎসাহী হলে সিলিং ফ্যানের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী প্রক্রিয়ায় ব্যবহার আমার মত আপনারাও শুরু করতে পারেন। এখন বিএলডিসি সিলিং ফ্যান আস্তে ঘুরলেও আর বেশীদিন বাকী নেই, যখন বিএলডিসি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ফ্যানগুলো বাসা বাড়ীতে ঝড়ের মত ঘুরতে থাকবে।

Thursday, December 3, 2015

স্মার্ট-ফোন ও তরুণ সমাজ

গত একবছর থেকে লক্ষ্য করছি আমাদের তরুণ সমাজের মাঝে স্মার্ট-ফোন ব্যবহারের কারণে কম্পিউটার বা ল্যাপটপের ব্যবহার অনেক কমে গেছে। এমনকি তরুণদের গেমসগুলিও ছোট ছোট আকারে মোবাইলে চলে এসেছে। এতেই মনে হয় কম্পিউটার ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার আর সুযোগও নেই। কারণ প্রযুক্তির সুফলগুলো হাতের মুঠোয় চলে আসলে তখন নিশ্চয়ই কেউ চেয়ার টেবিল নিয়ে পড়াশোনার আদলে কম্পিউটারে বসতে চাইবে না। কারণ কম্পিউটারের সব কাজ শুয়ে বসে মোবাইলে করা যাচ্ছে। তবে কি প্রয়োজন ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটারে সামনে বসার। আর কোন উপায় নেই এখন আমাদের কম্পিউটার কার্যক্রম মোবাইলেই নিয়ে আসতে হবে। ইমেইল চেক করে ইমেইলের উত্তরগুলি দিতে হবে মোবাইলের মাধ্যমে। আমার ওয়ার্ড ডকুমেন্টের কার্যক্রম আনতে হবে  মোবাইলে। পেপার-লেস অফিস গুলোতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আজকাল মোবাইলে ইমেইলে সিদ্ধান্ত দেন। নির্দেশনা প্রেরণে ভাইবার বা আরো অনেক কাষ্টমাইজ সফটওয়্যার ব্যবহার করেন।
এখন অফিসের কার্যক্রম আধুনিক তরুণ সমাজের জন্য মোবাইল ইন্টারনেটের প্রযুক্তির মধ্যে আনতে পারলে ভাল হবে। একটা পর্যায়ে উপরস্থ কর্মকর্তারা ডকুমেন্ট পড়তে চায় না। তারা তথ্যাদি শুনতে চান। কারণ তাদের অধীনস্থ অন্যান্য কর্মকর্তারা তাদের সমস্ত তথ্য সরলীকরণ করে দিবেন আর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সিদ্ধান্ত নিবেন। সেজন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার স্টাফরা সব তথ্য তাদের মোবাইলে বা ট্যাবে রাখবে। এ বিষয়ে আমার ছোট ভাইয়ের কথা মনে পড়ে গেল সে পড়াশোনার ভয়ে ব্যবসা শুরু করে । ব্যবসায় সফল হয়। কিন্তু এখনও কোন কিছুর পড়াশোনায় সে মোটেই আগ্রহী নয়। ইনকাম ট্যাক্স উকিল তাকে বিস্তারিত বুঝিয়ে দেয়ার পর সে তার সিদ্ধান্ত জানায় ও স্বাক্ষর করে তাও পড়ে দেখতে উৎসাহী নয়। এছাড়া লাইসেন্স ও অন্যান্য কাগজ তার ম্যানেজার বুঝানোর পর সে বুঝে নিয়ে সিদ্ধান্ত দেয় ও সে স্বাক্ষর করে। একবার তার ম্যানেজার বলল, এখানে কিছু শর্ত আছে। আপনি অবসর সময়ে পড়ে দেখতে পারেন। তার উত্তর, তুমি পড়েছ। জী হ্যাঁ পড়েছি। তুমি যদি পড়ে থাক, তবে আমাকে পড়তে হবে কেন। তোমাকে বেতন দিচ্ছি কিসের জন্য। চিঠিতে লেখা শর্তগুলি তুমি পড়তে থাক আর আমাকে বুঝাতে থাক।  তদুপরি তুমি বুঝতে না পারলে উকিল মোক্তার ভাড়া কর। এরপর আমার ধারনা হল ব্যবসা, অর্থ-বিত্ত সর্বদা ইত্যাদির জন্য পণ্ডিত আর কাগজ কলাম প্রয়োজন নেই। একাউন্টট্যান্টদের বড় বড় লেজার বই লেখা এবং ক্লার্কদের সারি সারি ফাইল সাজানো এগুলো আসলে তাদের অভ্যাসের ব্যাপার। সেইসাথে তাদের কাজকে জটিল ভাবে প্রদর্শনের বিষয়। লেজার বই না হলেও একাউন্ট চলবে কম্পিউটার ও ইন্টারনেটে লিপিবদ্ধ রেখে। ডকুমেন্ট স্ক্যান করে পেপার-লেস করে ফাইলের সারি না রেখেও অফিস চালনা সম্ভব।
আমরা এমন যুগে এসেছি এখন ক্লার্কদের টাইপ করে কাগজে প্রিন্ট করার প্রয়োজন নেই। তারা খসড়া তৈরি করবে। স্টাফ অফিসার ইমেইলে বসের কাছে পাঠাবে । বস ওকে করলে চিঠি চলে যাবে পুনরায় স্টাফ অফিসারের কাছে। স্টাফ অফিসাররা টয়লেটের কমোডে বসেই নিদ্দিষ্ট ইমেইলে সেন্ড করে দিবে যে কোন সময়।
আসুন আমরা একটি পরিবেশ কল্পনা করি। যেখানে কম্পিউটার নেই। সবার আছে বড় বড় স্ক্রিনের মোবাইল ফোন। ক্লার্ক তার স্টাফ অফিসারের কাছে একটা চিঠি ড্রাফট করার নির্দেশ পেল। ক্লার্ক বাসায় বা অফিসে বসে স্মার্ট ফোনে চিঠি ড্রাফট করল। স্টাফ অফিসারের কাছে ইমেইলে সেন্ড করল। স্টাফ অফিসার প্রয়োজনীয় সংশোধন বা কারেকশন শেষে বসের কাছে পাঠাল। বস তার মোবাইলে দেখে নিয়ে ওকে করল। স্টাফ অফিসাররা যেখানে যেখানে পাঠানোর প্রয়োজন সেখানে পাঠিয়ে দিল। আর সম্পূর্ণ কার্যক্রম হবে ক্লাউডে। কোন কারণে কেউ এক্সিডেন্টে মারা গেল বা কারো মোবাইল ডিভাইস হরিয়ে গেল। এতে কাজ বন্ধ থাকবে না। কারণ সমস্ত তথ্যাদি থাকবে অনলাইনে।  মোবাইল হারালে বা মানুষ মারা গেলে কোন সমস্যা নেই।
          এখন আসি ছোট একটা প্রতিষ্ঠানে যদি মোবাইল ফোনে অফিসের কার্যক্রম করা যায়। তা হল একটি অনাবাসিক স্কুল। স্কুলের প্রশাসন কিভাবে পেপার-লেস করা যায়। স্কুলের জন্য কিছু অ্যাপস থাকবে। ক্লাস টিচার ক্লাসে কারা কারা উপস্থিত তাদের উপস্থিতি মোবাইলের অ্যাপসে দিবে। একাউন্টট্যান্ট কোন কোন স্টুডেন্ট বেতন দিল তার আপডেট মোবাইলের সফটওয়্যারে এন্ট্রি করবে। সহকারী প্রধান শিক্ষক শিক্ষকদের উপস্থিতি ও ছুটির রেকর্ড তার মোবাইল অ্যাপসে আপডেট করবে। শিক্ষকদের কারণ দর্শাও ইমেইলে দিবে। প্রধান শিক্ষক তার মোবাইল থেকে সব তথ্য দেখতে পারবেন। তাই মোবাইলের অ্যাপস ও অনলাইন স্টোরে সব কাজ হয়ে যাচ্ছে। যদি কোন ডকুমেন্ট মামলা বা অন্য কোন কাজে প্রয়োজন হয় তখন তা অনলাইন বা ক্লাউড থেকে প্রিন্ট করার ব্যবস্থা থাকবে। তাই আধুনিক ছেলে মেয়েদের আর কম্পিউটার ও খাতা কলমে কাজ না শিখিয়ে মোবাইলে টাইপিং ও অনলাইনে কাজ আর অ্যাপস ব্যবহার শিখাতে পারলেই তাদের দিয়ে অফিসিয়াল সব কাজ করানো যবে বলে ধারনা করা যায়। ক্লাসের প্রস্তুতিও তারা মোবাইলের সফট বই পড়ে নিতে পারবঅনেক রেফারেন্সও তারা সফট বই পড়তে পারবে। হয়ত একজন টিচার বিয়ের অনুষ্ঠান আছে। পরের দিন তার ক্লাস আছে। সে তার মোবাইলে বা ট্যাবে সফট কপি থেকে পড়ে নিতে পারবে।

এখন সময় এসেছে কম্পিউটার বাদ দিয়ে সস্তা স্মার্ট মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সব কাজ করে আমাদের তরুণ সমাজকে দক্ষ জনবল হিসাবে গড়ে তোলা। মোবাইল ফোনের এরূপ একটি টেকনোলজি যা কিনা যেকোনো স্থানে ও যে কোন সময়ে অফিসিয়াল কাজ করা যাবে। এরা যারা কাজ করবেন তাদের দিবে অনেক অনেক স্বাধীনতা বা ফ্রীডম। আজকাল কম্পিউটার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কমে এসেছে। কারণ এখন কম্পিউটার ক্রয় করলে অটোমেটিক শেখা হয়ে যাচ্ছে। তবে এখন মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার ও স্মার্ট-ফোন ব্যবহারের জন্য তিনদিন বা সাত দিনের কোর্স চালু করা যেতে পারে। ফেইসবুক আর ভাইবার ব্যবহার করতে করতে বর্তমানে যুব সমাজ স্মার্ট-ফোনে অনেক দক্ষতাই অর্জন করেছে। তাই এখন অফিসিয়াল কাজ স্মার্ট-ফোনে করার ইনোভেটিভ আইডিয়া তাদের বের করতে হবে। প্রয়োজন মোতাবেক নিত্যনতুন অ্যাপস বানাতে হবে। লেখাটি উদ্দোগতা বা অন্যান্য উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গকে চিন্তার খোঁড়াক যোগাতে পারলে আমার এ লেখা সার্থক হবে।

Thursday, November 26, 2015

সাশ্রয়ী প্রি‌ফেব হাউসে হতে পারে সরকারী স্থাপনা

সম্প্রতি চীন থেকে বাংলাদেশে কারখানা ও বিভিন্ন কাজে প্রি‌ফেব ঘর অনেক আমদানি হচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শান্তি মিশনে এ ধরনের চাইনিজ প্রিফেব বাসস্থান ব্যবহার  শুরু করেছে। এগুলো দুইটি টিনের লেয়ারের প্যানেল। এগুলোর উভয় দিকে টিন আর মাঝে ফোম দেয়া। স্যান্ডউইচের আদলে রয়েছে বলে প্রিফেবের প্যানেলগুলোর নাম স্যান্ডউইচ প্যানেল। দুইপাশের টিনের স্যান্ডউইচ প্যানেলের টিন দুই লেয়ারের ও শক্ত কোটিংএর রং লাগানো। মাঝের লেয়ারের ফোম থাকে তা স্যান্ডউইচ প্যানেলের ঘরের মধ্যে বাহিরের তাপ আসতে বাধা দেয়। অপরদিকে ভিতরের এসির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত রুমের ঠাণ্ডা বাইরের গরম আবহাওয়ার সংস্পর্শে আসতে না পাড়ায় এই প্যানেলগুলো দিয়েই তৈরি প্রিফেব বাসস্থানগুলো আরামদায়ক। জাতিসংঘে যারা কর্মরত তারা প্রিফেব হাউজে থাকতে বেশ অভ্যস্ত। সুন্দর ও ঝকঝকে তকতকে পরিচ্ছন্ন পরিবেশের বেশ মনোমুগ্ধকর এই বাসাগুলো। এগুলো খুব দ্রুত বসানো যায়। এগুলো স্থাপনে সবোর্চ্চ একমাসের সময়ের প্রয়োজন হয়। কেবলমাত্র  কয়েকটি খুঁটি ইট বা ব্লকের মাধ্যমে তৈরি করে তার উপর প্রিফেব হাউসগুলো বসানো যায়।  প্রয়োজনে দ্রুত অপসারণও করা যায়। এক স্থান হতে অন্য স্থানে নিয়ে ব্যবহার করা যায়। আমার কাছে মনে হয় বাংলাদেশ সরকার গ্রামের স্থাপনাসমূহ যা কিনা শহর থেকে দূরবর্তী স্থানে অবস্থিত, সেখানে পাকা বাড়িঘর তৈরি না ক‌রে অস্থায়ী প্রি‌ফেব হাউস তৈরি করাই উত্তম। যেমন সরকারের কমিউনিটি ক্লিনিক, কমিউনিটি সেন্টার, পুলিশ বক্স, গার্ড হাউস ইত্যাদি। এছাড়া আরো  অনেক  প্রতিষ্ঠানের নানা ছোট বড় স্থাপনা প্রি‌ফেব আকারে তৈরি করা যায়। অনেক সময় দেখা যায় অনেক সরকারী  স্থাপনা যথেষ্ট খরচ ক‌রে তৈরি করা হয়। প‌রে দেখা যায় সে সব স্থাপনা আর ব্যবহার হয় না। কুষ্টিয়া জেলার  মিরপুর উপজেলার কুষ্টিয়া- মেহেরপুরের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনেক গু‌লো অব্যবহৃত দালান বা কেয়ার্টার দেখা যায়। এর কারণ হল প্রাথমিকভাবে সকল ডাক্তার‌দের জন্য কেয়ার্টার তৈরি করা হয়। অথচ এক দুইজন অনাথ ডাক্তার ছাড়া সবাই শহরে থা‌কে। শহর থেকে আসা যাওয়া ক‌রে সাধারণত অফিস ক‌রে থা‌কে। এটা সাধারণত ব্যক্তিগত সুবিধা অসুবিধার ব্যাপার। আলোচনার বিষয় নয়। কারণ সকল ডাক্তার পরিবার নিয়ে উপজেলায় থাকতে পারবে এটা চিন্তায় আনাটাই বোকামি। তাহলে প্রশ্ন আসে, অতিরিক্ত বাসস্থান কেন তৈরি করল। এর বিপরীতে বলা যায় এটা হল কনস্ট্রাকশ‌নের জন্য প্যাকেজ। তা‌দের প্যাকেজে প্রয়োজন লাগুক আর না লাগুক  সব দালান বানা‌তে হবে। অনেক সময় দাতা দেশগুলোর হাসপাতাল বা দাতব্য প্যাকেজে এধরনের অপ্রয়োজনীয় দালান দেয়। যা ভিক্ষা হিসাবে সরকারের গিলতে হয়। এতে অপ্রয়োজনীয় দালান তৈরী করে মুল্যবান ভূমির অপচয় হয়। আবার যত কাজ তত টাকা। এটা হল পরিকল্পনাবিদ ও নিন্মার্নকা‌রি‌দের লাভ। কোন স্থানে বিপুল পরিমাণ কর্মকর্তার বাসা আছে। সেগু‌লো ব্যবহার হয় না। আবার অন্য দি‌কে নিন্ম গ্রে‌ডের অনেকের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও তা‌দের বাসার ঘাটতি থা‌কে। যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কথা বললামএখানে যদি এমন করা‌ হত। কেবল হাসপাতাল‌টি তৈরি করা হত। কেয়ার্টার গুলোর কয়েকটি প্রি‌ফেব তৈরি করার পরে বেশ কয়েক বছরের ক্রমাগত চাহিদা পূরণ করার পরে জানা যেত বা বোঝা যেত মূলত কয়টি বাসস্থান প্রয়োজন। সে অনুযায়ী চাহিদা মাফিক দালান তৈরি করা হলে দেশে কোন সরকারী দালান অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত হত না। অনেক সময় এমন হয় দালান নতুন হওয়ার পর পরই তা পরিত্যক্ত হয়। সত্যি দূ:খজনক। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এভাবেই সরকারী টাকায় হাজারো অব্যবহৃত দালান তৈরি হত না। সরকারী অনেক দালান দেখা যায় এগু‌লো পরিত্যক্ত ও রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। অথচ এগু‌লো প্রি‌ফেব ক‌রে তৈরি ক‌রে নিলে সরকারের এত অপচয় হত না। প্রি‌ফেব ব্যবহৃত না হলে তা স্থানান্তরিত করা যায়। অপর দিকে দালান পরিত্যক্ত হলে তা ভেৃং‌গে ফেল‌তে প্রয়োজন অনেক বড় বাজেট। তাই দালান পরিত্যক্ত হওয়ার পরও বাজেটের অভাবে দালান ভাঙ্গা হয় না। ধীরে ধীরে সে স্থানটি সাপ ও জন্তু জানোয়ারের আস্তানায় পরিণত হয়। দালান ভাঙ্গা না হওয়ার কারণে সেই জমিটিও অব্যবহৃত থেকে যায়।
একজন ৯নং গ্রেডের ( বিসিএস সম্পন্নকারী) উপরে বেতন ভুক্ত সরকারী চাকুরে সাধারণত ১৫০০/১৬০০ স্কয়ার ফুটের বাসস্থানে থাকেন। বর্তমান বাজার দরে খরচ হবে ২০০০ টাকা প্রতি স্কয়ার ফিট। ঐ দরে ১৬০০ গুণন ২০০০=৩২০০০০০ অর্থাৎ ৩২ লক্ষ টাকা ফ্লাটটি তৈরি করতে খরচ হবে। অপরদিকে প্রিফেবে খরচ হবে ৬০০ টাকা স্কয়ার ফিটের মত। এতে ১৫০০ স্কয়ার ফিটে ( প্রিফেব ঘরের দেয়াল ১ ইঞ্চির মত তাই বাসস্থানের আয়তন কমানো যায় ) খরচ ১৫০০ গুণন ৬০০ বা রাউন্ড ফিগার নয় লক্ষ টাকা। সরকারের বাসস্থান প্রতি ২৩ লক্ষ টাকা সাশ্রয়। মনে করুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ জন ডাক্তারের জন্য বাসস্থান তৈরী করা বাবদ খরচ হল ৩২ লক্ষ গুণন ২০ =৬ কোটি চল্লিশ লক্ষ টাকা।  অপর দিকে চার জন ডাক্তার যারা থাকেন তাদের জন্য চারটি প্রিফেব খরচ ৪ গুণন ৯ লক্ষ টাকা = ৩৬ লক্ষ টাকা। এতে সরকারের ৬ কোটি ৪ লক্ষ টাকাই সাশ্রয় হবে। দেখা যাচ্ছে প্রিফেব করে আমরা সরকারী বিপুল টাকা সাশ্রয় করতে পারি। পাশাপাশি আমরা যেসমস্ত লাভ পাব তা হল প্রয়োজন না হলে যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে প্রিফেব স্থানান্তরিত করা যাবে। অনায়াসে ১৫/২০ বছর ব্যবহার করা যাবে। দালানের মত প্রিফেবে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ নাই। রং করার প্রয়োজন নাই। লাইফ ওভার হলে বদল করলেই হল। সরকারী যারা পলিসি মেকার আছেন তারা আমার এ প্রস্তাব ভেবে দেখবেন। প্রথমে এ সংক্রান্ত পাইলট প্রজেক্টও করা যেতে পারে।


Thursday, November 19, 2015

ডেস্কটপ থেকে ল্যাপটপ ও ল্যাপটপ থেকে স্মাটর্ফোন

প্রযুক্তির পরিবর্তনগুলি এত তাড়াতাড়ি হচ্ছে যে আমরা আজও তাল সামলাতে পারছি না। এই তো ২০০৮ সালে এখনও মনে আছে ডেস্কটপে আমরা প্রায় সকল কাজই করতাম। মাঝে মাঝে ল্যাপটপে ব্যবহার করতাম। একসময় দেখলাম ল্যাপটপে আমার কাজ ধীরে ধীরে বেড়ে যাচ্ছে। ডেস্কটপে কাজ কমে যাচ্ছে। ডেস্কটপ ধীরে ধীরে আমার ছোট ছেলেদের কাজে ব্যবহার হচ্ছে। এক সময় ডেস্কটপে আমার কাজ সত্যিই কমে গেল। আমার ধারনা হল ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ ব্যবহারটা হল অভ্যাসের বিষয়। ডেস্কটপের বড় কীবোর্ডে টাইপ করতে করতে ল্যাপটপের ছোট কীবোর্ড একসময় ঠিক আরামদায়ক ছিল না। একসময় ল্যাপটপে বেশী বেশী কাজ করে ল্যাপটপের ছোট কীবোর্ড আরামদায়ক হয়ে গেল। তখন আবার ডেস্কটপের বড় কীবোর্ড তত আরামদায়ক মনে হল না। ধীরে ধীরে ল্যাপটপের কীবোর্ডে ও ছোট মনিটরে অভ্যস্ত হয়ে গেলাম। অনেকের মত আমিও দিনের বেশ খানিকটা সময় কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহার করি। কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের কারণে টিভি দেখা কমে গেছে। কম্পিউটারে আর্টিক্যাল টাইপ করি। কোন বিষয় মাথায় আসলে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে পড়াশোনা করি। এটাই হল উল্লেখযোগ্য কাজ। মূলত: কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের ব্যবহারের দিকটা নিয়ে দীর্ঘদিন নাড়া চাড়া করে আমার কাছে ধারনা হল। ইন্টারনেট ব্যবহার কোনটায় আরামদায়ক ডেক্সটপ না ল্যাপটপ এটা মূলত অভ্যাসের ব্যাপার। এখন ল্যাপটপ ব্যবহারে অভ্যাস হয়েছে। তাই ডেক্সটপ আর ল্যাপটপের মধ্যে পার্থক্য তেমন লাগে না। তবে একটা পার্থক্য বেশ অনুভব করি তা হল পরিবেশ। ল্যাপটপে কাজ করি আর ডেস্কটপে কাজ করি না কেন আমাদের প্রত্যেকের নিজ ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের পরিবেশটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আমি আমার লেখালেখির কাজ অন্য একটি ল্যাপটপ বা ডেস্কটপে বসে করতে পারি না। কারণ লেখার মত একটা জটিল মনস্তাত্ত্বিক কষ্টকর ও ধৈর্যের কাজ নিজ পরিবেশেই কেবল মনোমত করা যায়। নয়ত গদ্য আর মাথা থেকে বেরুতে চায় না। লেখার আইডিয়া ও কথা যখন বের হতে থাকে তখন ঝর্নার জলের মত কলকলিয়ে ছুটে চলে। আবার মাঝে মাঝে দিনের পর দিন কোন লেখা ছুটে না। ডেক্সটপ আর ল্যাপটপ মধ্যে পরিবেশের পার্থক্য বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মূল বিষয় থেকে লেখালেখির বিষয়ে চলে গেছি। ল্যাপটপ ও ডেস্কটপ ব্যবহারের সাথে ব্যক্তিগত ভাবে আমার লেখালেখি একটা যোগসূত্র রয়েছে। যা অন্যদের অনুভূতি থেকে আলাদা। আমার মনে হয়  আমার মত অনেকেরই তাদের লেখার পরিবেশ ও পদ্ধতির সাথে মনস্তাত্ত্বিক কোন সংযোগ বা অনুভূতি অনুভব করেন। অপরদিকে লেখার পরিবেশ ঠিক রেখে ব্যবহারের অভ্যস্ততার কারণে ধীরে ধীরে ডেস্কটপ থেকে ল্যাপটপের দিকে আমার অভ্যাস পরিবর্তন হয়েছে। 
এখন আসি স্মাটর্ফোন ব্যবহার প্রসঙ্গে। এই তো কয়েক বছর আগে ট্যাব বা মোবাইল ফোন ইন্টারনেটের ব্যবহার ও অন্যান্য পড়াশোনায় কোন কাজে লাগবে ভাবিনি। ধীরে ধীরে লক্ষ করলাম এগুলোও কাজের হয়ে উঠেছে। ছাত্র অবস্থায় ধারনা ছিল পড়াশোনা ভাল ভাবে করতে চেয়ার টেবিল ছাড়া কোন বিকল্প নাই। তথাপিও মাঝে মাঝে মনের ফুর্তিতে বা আয়েশে শুয়ে শুয়ে বই পড়ারও অভ্যাস করে ফেলি। অন্তত অলস সময়ে শুয়ে শুয়ে আরাম করে গল্পের বই পড়া যেত। শুয়ে শুয়ে আরাম করে রাত জেগে গল্পের বই পড়ার অভিঞ্জতা নাই এমন নিরস মানুষ খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। শিক্ষিত মানুষ মাত্রই পড়তে পছন্দ করে। আর শুয়ে আরাম করে বই পড়া বই পড়ুয়াদের তা টিভি দেখার চেয়েও বেশী আনন্দের কাজ।
ল্যাপটপ ব্যবহার করতে করতে হাতে একসময় আসল বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোবাইল ও ট্যাব। টাচ মোবাইল। ৪ ইঞ্চি স্ক্রিনের মোবাইল ফোন ও ৫ ইঞ্চি স্ক্রিনের মোবাইল ফোন ইত্যাদি ইত্যাদি। বিভিন্ন রকম মোবাইল ফোন আর তার সাথে ট্যাবও ব্যবহার করলাম। ল্যাপটপ ও ট্যাব যাই বলিনা কেন এর থেকে বেশী পরিমাণে হাতের মধ্য থাকছে ও ব্যবহারর বেশী হচ্ছে স্মার্ট ফোনগুলি। ২০০৩ সালে প্রথম ল্যাপটপ কেনার পর থেকে আমি ছুটি বা কাজে যেখানেই বাড়ী হতে দুরে যাই না কেন আমার সাথে কিন্তু সর্বদা ল্যাপটপ থাকে। কিন্তু এ বছর পাঁচ ইঞ্চি মাপের স্ক্রিন সম্বলিত মোবাইল ফোন হাতে নেয়ার পর হতে আমি আর ল্যাপটপ সাথে নিয়ে আর কোথাও ছুটি কাটাতে যাইনি। মোবাইল ফোনের পাঁচ ইঞ্চি স্ক্রিনেই ইন্টারনেট ব্যবহার। এসএমএস টাইপিং ও আর্টিক্যাল টাইপিং ইত্যাদি কিছু কিছু কাজ করে নিতে পারছি। আমরা সবাই ছুটতে পছন্দ করি। ছুটে চলা মানুষ যাতায়তের সময় তার সময়গুলি কাজে লাগাতে চায়। সেই কাজগুলো ইমেইল চেক, ভাইবার চেক ও ওয়েব সার্চ করা ইত্যাদি কাজ। এসব কাজ প্রায়শই ল্যাপটপ নিয়ে বা ডেস্কটপে বসে সবসময় করা যায় না। তাই মোবাইলে কাজটা কিছুটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারলে মন্দ হয় না। আর এ কারণে স্মার্ট ফোনগুলির কদর বাড়ছে।
একবার আমি আমার একজন বন্ধুর কাছে জানতে পারলাম আজকাল ছেলে মেয়েরা যারা আউটসোর্সিং এর সাথে জড়িত তারা বড় স্ক্রিনের মোবাইল ব্যবহার করে। তাদের আউট সোর্সিং এর কাজ এতে অনেকটুকু করা যায়। যদি কনটেন্ট রাইটিং প্রয়োজন হয় তবে খুব সহজেই কনটেন্ট রাইটিং এর কাজটি স্মার্ট-ফোনে করা সম্ভব। টাচ স্ক্রিনের কী বোর্ডে টাইপ করা মানে হল অভ্যাসের ব্যাপার। বেশ কিছুদিন টাচ বাটনে টাইপ করতে করতে এটাও অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। প্রথম প্রথম টাচ স্ক্রিনে টাইপ করাটা বেশ বিরক্তিকর ছিল। মনে হত ফিক্সড বাটন থেকে টাচ স্ক্রিন বেশ কষ্টকর ও ধীর। তবে অভ্যাস করে ফেলায় এখন ভাল গতিতেই মোবাইলের টাচ স্ক্রিনে টাইপ করতে পারছি কোন সমস্যা ছাড়াই। প্রথম প্রথম অনেক সময় লাগলেও এখন বিজয় লে আউটে মোবাইলে বাংলা টাইপও করতে পারছি। অভ্র ও ফোনেটিক্স দিয়ে যে কেউ সহজেই বাংলা টাইপ করতে পারবে। এতে যে লাভগুলি হচ্ছে তা হল যেকোনো জায়গা থেকেই মোবাইলটা হতে নিয়ে আমার মত যারা লেখালেখির কাজগুলি করেন তারা উপকার পাবেন। যাতায়ত বা অলস সময়কে কোয়ালিটি সময় করতে পারবেন। মোবাইলে বাংলায় টাইপ করে আমার বেশ কয়েকটি আর্টিক্যালের ২০০-৩০০ শব্দ টাইপ করে ফেলেছিলাম। মূলত ড্রপ বক্সের অনলাইন ফোল্ডারে টাইপ করে নিলে লাভ হয়। যা কিনা পরে ল্যাপটপের ড্রপ বক্সের ফোল্ডার থেকে সরাসরি ব্যবহার করা যাবে। টাইপের সাথে সাথে তা ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে ড্রপ বক্সের ফাইল মূহুর্তেই আপডেট হয়ে যাবে। আমি কয়েকদিন আমার গ্রামের বাড়ী বেড়াতে গিয়ে ধীরে ধীরে অনলাইনে আমার ড্রপ-বক্স ফোল্ডারে টাইপ করে বেশ কিছু আর্টিক্যাল জমা করতে পেরেছিলাম। এ লেখাটিরও প্রথম অংশ আমি মোবাইল ফোনে টাইপ করেছিলাম। মোবাইল ফোনের স্ক্রিন ছোট থাকায় বেশ কিছু লিমিটেশন থাকলেও বিভিন্ন পন্থায় অনেক কাজ করা যায়। স্মার্ট ফোনের স্ক্রিনে এখন প্রায় সকল পত্রিকাই চমৎকার ভাবে পড়া যায়। এখন অনেক ওয়েবসাইট মোবাইল বান্ধব হওয়ায় তা ৫ ইঞ্চি মোবাইল ফোনে কলাম আকারে বেশ আরাম করে ভাবে পড়া যায়। পত্রিকার কলামের মত আরাম করে পড়া যায়। আর যেসব ওয়েব সাইট মোবাইল বান্ধব নয় সেগুলো প্রয়োজনীয় টপিকটি জুম করে নিয়ে আগে পিছে করে সুন্দর ভাবে পড়া যায়। যদি একান্তই অসুবিধা হলে আমি টেক্সটি কপি করে নিয়ে ড্রপ বক্সের একটা নতুন ওয়ার্ড প্যাডের মত ডকুমেন্ট খুলে তাতে পেস্ট করে নিয়ে কলাম আকারে মোবাইল বান্ধব ওয়েবসাইটের মত চমৎকার ভাবে কলাম আকারে পড়তে পারি। পত্রিকার মত কলাম আকারে লিটারেচার সহজে ও আরামদায়ক ভাবে পড়া যায়। পত্রিকার কলাম করা হয় মূলত সহজে ও দ্রুত পঠনের জন্য। তেমনি মোবাইল ফোনের আকৃতির কারণে এরূপ কলাম আকারে লিটারেচার পাওয়া যাওয়ায় তা দ্রুত ও চমৎকারভাবে পড়া যায়। শুধুমাত্র ছবি দেখতে হলে তা আলাদা ভাবে বড় করে দেখা যায়। মোবাইলে সমস্ত ছবি ও টেক্সট ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের মত একবারে দেখতে না পারলেও যেখানে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ ব্যবহার করা ঝামেলা, সেখানেই স্মার্ট ফোন ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের চমৎকার বিকল্প। স্মার্ট-ফোনের মত খুদে ডিভাইসটি আমাদের নি:সন্দেহে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছে। এখন অনেকেরই দৈনিক এক/দুই ঘণ্টা মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে সময় ব্যয় হয়। আমাদের প্রযুক্তির এ পরিবর্তনগুলো ধীরে ধীরে আমাদের চোখের সামনে ঘটছে। আর বেশী দূরে নয় যখন আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় প্রায় ৮০ শতাংশ কাজই করব মোবাইল ফোনে।  ডেস্কটপ আর ল্যাপটপ ব্যবহার করব মাঝে মাঝে। এখন অনেককেই দেখা যাচ্ছে অফিসের কম্পিউটারে মেইল চেক ও অফিশিয়াল কাজ করেন। অপরদিকে মোবাইল ফোন ব্যবহার হচ্ছে এসএমএস, ভাইবার, পত্রিকা পড়া ও ছোটখাটো গুগল সার্চ করা। ট্যাব ব্যবহার হচ্ছে শুয়ে শুয়ে বই বা পত্রিকা পড়ার জন্য। ল্যাপটপ ব্যবহার হচ্ছে বাসায় বিশেষ প্রয়োজনে অফিসের কাজ বা প্রেজেন্টেশন তৈরি করার জন্য। তদুপরি স্মার্ট টিভি হচ্ছে ইউটিউব সহ অনলাইনে টিভি দেখার জন্য। তবে শীঘ্রই আবার গুগল স্মার্ট ওয়াচ যোগ হচ্ছে। এখনকার প্রযুক্তির শক্তিশালী দিক হল সব ডিভাইসকে ইন্টার কানেক্ট করা যায় ও তথ্য আদান প্রদান করা যায়। পরিশেষে বলা যায় মোবাইল ফোনের মোবাইল (সহজে বহনযোগ্য আর তড়াত ব্যবহার করা যায়) গুনটির জন্য ভবিষ্যতে এটাই থাকবে সর্বে সেরা ডিভাইস বা গেজেট। সাধারণ মানের স্মাটর্ফোনের দাম ল্যাপটপের তিনভাগের একভাগ। আর বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে বহুগুণ।


Thursday, November 12, 2015

সফলতার হিসাব নিকাশ

জীবনের হিসাব নিকাশ যেকোন সময় মৃত্যু নিকটবর্তী হলেই তা শেষ হয়ে যায়। আমাদের জীবনে আমরা আমাদের সফলতার মাপকাঠিগুলো  নিজ নিজ মত করে চিন্তা করি। এটা অবশ্যই ভাল দিক। কারন আমরা যত বেশী নিজের সফলতা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকব ততবেশী আমরা কম অস্থির হব। যে কোন মানুষ চায় উতপাদনশীল কোন কাজ করতে। কেউ যখন কোন চাকুরি করে তখন তার মাথায় সব সময়চলতে থাকে কিভাবে সৃজনশীল কাজ করা যায়। তাই দেখা যায় বেতন ভাতার সাথে সম্পর্ক না থাকলেও  আমরা কিছু কিছু কাজ করি। কেউ ছবি আকে, কেউ গান করে, কেউ আমার মত লেখালেখি  করে, কেউ নিন্মান কাজ করে ও কেউ বাগান করে। এভাবে যে কেউ কোন কাজে নিয়োজিত হলে তিনি সব সময় যে আর্থিক লাভ পাবেন তা কিন্তু নয়।বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে মনের আর্তি ও আকুতি থেকে কাজগুলোর সৃস্টি হয়।
তবে কেউ যদি তার পছন্দ আর কাজ একসাথে মেলাতে পারেন তাহলে সাফল্য ধরে রাখা যায় না। আমাদের বেশীর ভাগই তার আগ্রহ ও দক্ষতার ক্ষেত্রগুলোতে কাজ করতে বা যোগাড় করতে ব্যর্থ হয়। তাই সফলতা ও সাথর্কতা একদম নাই বলা যাবে না। কেউ হয়তবা নিজে  সফল হয়েছেন কিন্তু সন্তানে সফল হয়নি।  স্ত্রীর সাথে ভাল সম্পর্কে সফল নয়। প্রতিবেশী ও অন্যান্যদের সাথে সুনামে ছিলেন না। তাই সফলতার সঠিক সংঞ্জা আমার মনে হয় দেয়াটা কঠিন। আমরা সফল বলতে যা বুঝি তা হল আর্থিক সফলতা ও মর্যাদায় সফলতা। দি অর্থ সফলতার একমাত্র নিয়ামক হত তবে আমাদের বিশাল সম্পদশালীদের সন্তানদের আত্মহত্যা কথা শুনতে হত না। আমার ব্যক্তিগত মতামত  থেকে একটা ছক বানিয়েছি । এ ছক থেকে আপনি আপনার সফলতার একটা দৃশ্যমান ধারনায় যেতে পারেন। প্রতিটি ছকে নম্বর দিয়ে বা গ্রেডের মাধম্যে বের করতে পারেন আপনার সফলতার একটা ধারনা গ্রেডগুলো হতে পারে ভাল, সন্তোষজনক ও মন্দ এটা মুলত  আত্মসন্তুস্টির একটা ছক এটা আপনাকে সন্তুস্ট হতে সহায়তা দিবে। আমরা অধিকাংশ পদবী, র‍্যাংক, মর্যাদা ও অর্থিক সফলতা না পেলে এতই বিমর্ষ হয়ে যাই তখন সত্যিই মনোযাতনা শুরু হয়ে যায়। মনে হয় জীবন বিফল হল। বিফলতা এত সহজ নয়। প্রতিটি পজিটিভ কাজ সফলতার সাথে করাই আমাদের জীবনের সফলতার বিন্দু বিন্দু অর্জন। মনোবিজ্ঞানীরা আরো ভাল বলতে পারবেন। আপনি পদবির বা অর্থে শিখরে আরোহন করতে না পারলেও পরিবার ও অনান্য ক্ষেত্রে সফলতা আপনাকে এ ধরনের  ভিজুয়াল হিসাব নিকাশ আপনাকে সন্তুস্টি দিবে এবং আপনার মানসিক অস্থিরতা থেকে মুক্ত করবে। আমি যে ছকটি দিয়েছি  আপনি লজিক্যাল ভাবে আরো   ছক  বাড়াতে পারেন।  আমার ছকে নাই অনেকে যোগ করতে পারেন বিদেশ ভ্রমন ও হজ্জ করা। আবার ধর্মীয় কার্যক্রমের ছক দিতে পারেন। বাড়ি করা, গাড়ী করা ও কোম্পানীর মালিক হওয়া। মিডিয়াতে সফলতা পাওয়া। পরিশেষে বলব যতবেশী পজিটিভ গ্রেড ততবেশী আপনি সফল। সফলতার সংঞ্জার অনুভুতি আবার ভিন্নতায় যেতে পারে। কৃষকের ছেলে কৃষক না হয়ে সরকারী পিয়নের চাকুরী পেলে নিজেকে সফলতার তালিকায় চুড়ান্ত মনে করতে পারে। আবার পিয়নের ছেলে ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারলে তার অবস্থানে সে সফল। প্রেসিডেন্টের ছেলে প্রেসিডেন্ট না হয়ে নামকরা মিডিয়া কর্মী হলে তা এক ধরনের সফলতা। আবার অনেকে চাকুরী জীবনে দামি দামি গাড়ী হাকিয়েছে বা দামী বাড়ীতে থেকেছে। অবসর জীবনে দেখা গেল তার কিছু নাই বা দেখার কেউ নাই। বৃদ্ধ বয়ষে এরুপ বাটে পড়লে তাকে কি ব্যর্থ বলা হবে। আমার মনে হয় অবশ্যই না। সফলতা সামগ্রীকভাবে ব্যাপক ও বিশাল ক্ষেত্র।

জন্মের পর মৃত্যু এই দুইটি সময়ের মাঝে আমাদের যে সময় তাই জীবন। জীবন ক্যালকুলেশনে ছকটি পূর্ন করে আপনি সফলতা যাচাই করতে পারেন(নিজের ছকটা আন্দাজে পুরা করলাম উদাহরন হিসাবে)।
ক্রম
সফলতার বিবরন
নিজ
স্ত্রী
সন্ত১
সন্ত২
সন্ত৩
১।
বিকলাংগ না হয়ে সুস্থভাবে জন্মগ্রহন
ভাল




২।
স্কুল শুরু করা
ভাল




৩।
প্রাইমারী স্কুল শেষ করা
ভাল




৪।
জুনিয়র স্কুলিং শেষ করা
ভাল




৫।
এসএসসি অতিক্রম
ভাল




৬।
এইচএসসি অতিক্রম
ভাল




৭।
সফলতার সাথে টেকনিক্যাল ও অনান্য উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন
ভাল




৮।
সফলভাবে ও যোগ্যতা অনুসারে চাকুরী প্রাপ্তি
ভাল




৯।
উপযুক্ত জীবন সংগী পাওয়া
সন্তোষজনক




১০।
এক বিয়ে ও স্বামী স্ত্রীর তৃপ্ত জীবন
সন্তোষজনক




১১।
সুস্থ ও সবল সন্তান জন্ম দেয়া
ভাল




১২।
৪০ বছর পযর্ন্ত নি:রোগ জীবন যাপন
ভাল




১৩।
পেনসনের পূর্বে আশানুরুপ পদবী, খ্যাতি অর্জন অথবা ব্যবসায় সফলতা অর্জন
ভাল




১৪।
সুস্থ ও সন্মানের সাথে পেনসনে আসা ও ব্যবসা গুছিয়ে নিয় উত্তরোধিকারীকে হস্তান্তর
ভাল




১৫।
পেনসন পরবর্তী মনোমত জীবন ধারন
ভাল




১৬।
বৃদ্ধ জীবনে নিকটাম্মীয়ের সহায়তা পাওয়া
মন্দ




১৭।
বৃদ্ধ জীবনে চিকিতসা,থাকা ও খাওয়ার সংগতি
ভাল




১৮।
স্বাভাবিক/অকাল/অপমৃত্যু
মন্দ