Pages

Wednesday, February 27, 2019

স্বাস্থ্য রক্ষার বি‌বেচনায় ছাদকৃ‌ষি লাভজনক

আমরা মানুষরা খুব স্বার্থপর। কোন কিছু লাভ ছাড়া করি না। বাংলাদেশের প্রখ্যাত একজন ডাক্তারের ছা‌দের কৃষি দেখলাম বাংলাদেশের এক ‌আলোচিত অনুষ্ঠানে। তিনি জানালেন, প্রথমে ছাদে কিছু ফুল গাছ রেখেছিলেন। এখন ছা‌দের উপর ফল ও সবজি করছেন। ফল ও সবজি আগে করেননি, তিনি হিসাব ক‌রে দেখেছিলেন ফল ও সবজি ছাদে ক‌রে লাভ নেই  কারণ বাজা‌রে কম দামে পাওয়া যায়। খা‌মোখা কষ্ট করা। দুই বছর আগে তার এক‌টি কিডনি ড্যামেজ হয়। এখন এক‌টি কিডনি নি‌য়ে বেঁচে আছেন। এখন কিডনির ডাক্তার আমা‌দের আলোচ্য ডাক্তার‌কে বলেছেন, আপনি যতটুকু পারেন ক্যা‌মিক্যাল ও ভেজালমুক্ত খাবার খাবেন। তখন থেকে ডাক্তার সাহেব যত খরচই লাগুক লোক লাগিয়ে ছা‌দের টবে শাক, সবজি ও ফল উৎপাদন শুরু করেন। ভেজাল ছাড়া খাবার খেয়ে যেন একটা কিডনির আয়ুটা বাড়া‌নো যায়।
চারিদিকের বিষের মধ্যে রাসায়নিক সার আর কীটনাশকমুক্ত খাবার খাওয়ার একমাত্র উপায় হল নিজে উৎপাদন করা। কারণ লাউটা বড় না হোক বিষমুক্ত। বেগুনটার পোকার অংশ কেটে ফেলে রান্না করি সমস্যা নেই কারণ তা বিষমুক্ত। এখন অনেকে বলবেন, ধান আর গম তো আমা‌দের হা‌তে নেই তার বিষ কি করব। ধ‌রে নেই এটা যেহেতু হা‌তে নেই সেটার খেলাম। বাকী শাকসবজি বিষমুক্ত হলেও অনেকটুকু বিষমুক্ত থাকা যায়। ধরুন বেগুন খাচ্ছেন। নানা ফল খাচ্ছেন। কৃষি বিভাগ বলছে যদি ফসল বা ফলে বিষ দেয়া হয় তবে তা সাত দিন‌ের মধ্যে খাওয়া যাবে না। এটা আমা‌দের কৃষকরা মানে না। তারা বিষ বা কীটনাশক দিচ্ছে ও যখন তখন তা বিক্রি করছে। অপর দিকে বাড়ী‌তে এনে রান্না করার আগে আমা‌দেরও প্র‌য়োজন এক দেড়ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে তা খাওয়া। কিন্তু তা সব সময় হয় না। আলোচ্য ডাক্তারের বক্তব্যের প‌রে আমার কাছে মনে হয় ছাদ আছে কিন্তু বাগান ক‌রে শাক সবজি  উৎপাদন করছি না; এটা আসলে একটা অপরাধ। কিডনি অসুখ হওয়ার আগে ভাবলেন দশ টাকার শাক পাওয়া যায় বাজা‌রে আর সেই  শাক যদি ছাদে করি তবে  ১০০ টাকা খরচ পড়বে। অথচ ভেজাল খেয়ে একটা কিডনি হারা‌নোর পর ডাক্তার ঠিকই বুঝলেন দশ টাকায় নয় ১০০ টাকার শাক খাওয়া প্র‌য়োজন। খরচ বেশী পড়লেও নিজের খাবার নিজে উৎপাদন করাটাই ভাল। ছাদে শাক সবজি ও ফল চাষ করা যায়। ছাদে মুরগী, হাস ও কবুতর পালন করা যায়। ড্রামে মাছ চাষ করা যায়। এত কাজ যদি করা যায় তবে আর্থিক সামর্থ্য থাক‌তে শহরে থেকে বিষযুক্ত খাবার কেন খাব। নিজে পারব না লোক রেখে কাজ করাব। কর্ম সংস্থান বাড়াব। দামী গাড়ী না কিনে কমদামী গাড়ী কিনব। সব সময় ড্রাইভার না রেখে পার্ট টাইম রাখব তারপরও একটা মালী রেখে খাদ্য উৎপাদন ক‌রে নিজের পরিবারের আয়ু বাড়া‌নোর জন্য চেষ্টা করা যায়। মনে করি আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫ জন। বিষযুক্ত খাবার খেয়ে পরিবারের একজনের কিডনি সমস্যা দেখা দিল। প্রতি সপ্তাহে যদি একবার ডায়ালাইসিসে ৩০০০ টাকা খরচ হলে মাসে ১২০০০ টাকা। আপনার সামর্থ্য আছে আপনি মনে করলেন ডায়ালাইসিস নয় আমি একটা লোক রাখব ১২০০০ টাকা দি‌য়ে ভবিষ্যৎ ডায়ালাইসিসের খরচ হিসাবে এখনই  ছাদ কৃষিতে খরচ করব। তাহলে কেমন হয়। একজনের ডায়ালাইসিসের খরচ খাদ্য উৎপাদনে ব্যয় ক‌রে পাঁচজনকে ক্যান্সার ও অন্যান্য বিষ খাওয়ার কারণে জটিল রোগ থেকে মুক্ত করা যায়। আমার কাছে মনে হয় বাংলাদেশে প্রায় ২০/৩০ লক্ষ মানুষ আছে যারা ছাদ কৃষির জন্য মাসে দশ বার হাজার টাকায় লোক রাখ‌তে পারবে। তাই বিষমুক্ত শাক/ সবজির বিবেচনায় রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়া সবজি উৎপাদনটা মনে হয় লাভ/ক্ষতির বিচারে নয়; ভাল স্বাস্থ্যের বিচারে ছাদ কৃষি শুরু করাটা প্র‌য়োজন।
কিডনি হারি‌য়ে বিষমুক্ত শাকসবজি উৎপাদনে ডাক্তাররা যদি এগিয়ে আস‌তে পারেন তবে আমরাও আগে ভাগেই  আমা‌দের পরিবারের সদস্য‌দের কিডনি ডায়ালাইসিসের টাকা ও বিষযুক্ত খাবার খাওয়ার রোগগু‌লির টাকা ছাদ কৃষির মাধ্যমে  কিছুটা অ্যাডভানস ব্যয় কর‌তে পারি। অনেকে বলবেন, আগে রোগ হ‌য়ে নিক তারপর বিষমুক্ত খাবার আয়োজন করব। এটা হবে বোকার মত কাজ। কারণ রোগ হওয়ার পর মানসিক উৎকণ্ঠা ও দুর্দশা সৃষ্টি হয় তা টাকা পয়সা ব্যয় করার থেকে কষ্টকর।
পরিশেষে বলব, লাভ নয় বরং স্বান্থ্যবীমা হিসাবে শহর এলাকায় আমরা ছাদকৃ‌ষি শুরু কর‌তে পারি। প্র‌য়োজ‌নে চাঁদা দি‌য়ে হলে কয়েকজনে মিলে ছাদে শাক/সবজি উৎপাদন শুরু করা যায়।

বাস রে‌পিড ট্রানজিট বনাম ট্রেন

বাস রে‌পিড ট্রানজিট বা বিআরটি স্থাপন‌ে প্রাথমিক খরচ রেল থেকে সাশ্রয়ী। বিআর‌টি রাস্তা তৈরিতে কি‌লো‌মিটার প্রতি খরচ ৬৪ কোটি টাকা। মে‌ট্রো, পাতাল বা স্কাই রেলে কম বেশী প্রতি কি‌লো‌মিটারে খরচ ৮০০ কোটি টাকার মত। দেখা যাচ্ছ‌ে  কি‌লো‌মিটার প্রতি বিআর‌টি থেকে প্রায় ১২ গুন খরচ বেশী। যে টাকায় ১০০ কি:‌মি: মে‌ট্রো রেলের রাস্তা বানা‌নো যায় সম টাকায় ১২০০ কি: মি: বিআর‌টি বানা‌নো যাবে। বিআর‌টি রাস্তা পুরোটা পাকা করার প্র‌য়োজন নেই  শুধুমাত্র চাকা বরাবর পাকা ক‌রে আরো খরচ সেইভ করা যায়। মনে করুন ঢাকা থেকে কুমিল্লা ১০ মিনিট পর পর বাস যায়। এখন ঢাকা কুমিল্লার ৮৫ কি:‌মি: যে‌তে ৩/৪ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। তাই ঢাকা কুমিল্লার জন্য আলাদা আসা যাওয়ার লাইন বসিয়ে ৩/৪ মিনিট অন্তর সরু রাস্তা দি‌য়ে বাস চালা‌নো সম্ভব। যা কিনা বড় বড় দুই, তিন বা চার‌টি বাস জোড়া দি‌য়ে এক‌টি ইঞ্জিন দি‌য়ে   বাস তৈরি করা যায়। তবে বাস গুলির বৈশিষ্ট্য হল বড় দরজা দ্রুত নামা উঠা করা যায়। টিকেট প্রি‌পেইড কার্ড‌ের মাধ্যমে দ্রুত প‌রি‌শো‌ধের ব্যবস্থা। ফলে আধা কি‌লো‌মিটার দূরে দূরে থামলেও প্রতি স্টেশনে যাত্রীরা দ্রুত নামা উঠার কারণে প্রতি স্টেশনে ১/২ মিনিটের বেশী থাম‌তে হচ্ছে না। এমনকি ৩০/৪০ সেকেন্ডও নামা উঠা সম্ভব। লোকাল বাসের মত স্থানে স্থানে ৫/১০ মিনিট অপেক্ষা কারার প্র‌য়োজন হয় না বলে ঘন ঘন অল্প সম‌য়ের জন্য থামলে যাত্রী‌দের জন্য অত‌বেশী কষ্টকর, ক্লান্তিকর ও  বিরক্তিকর মনে হয় না। পুরো প্রক্রিয়া খুব দ্রুত। যারা বাই সাইকেল নি‌য়ে বাসে উঠবে তা‌দের জন্য গাড়ীর সামনে বা পিছনে বাইসাইকেল বহন করার ব্যবস্থা আছে। কেউ হয়ত বাসা থেকে বাইসাইকেল নি‌য়ে বাসে উঠল। বাস থেকে নেমে পরবর্তী কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বাইসাইকেল নামিয়ে নিলে। বাইসাইকেল বহন করার ব্যবস্থা‌টিও আধুনিক। হুইল চেয়ারে যারা আরোহী আছেন তা‌দের জন্য সুবিধাজনক কারণ বড় বাস ও বড় দরজা। প্লাটফরমের সাথে লেভেল বা রে‌মের ব্যবস্থা থাকবে। একটা দেশের মে‌ট্রো ট্রেন বা অন্য কোন লাইট ট্রেন‌কে তখনই মূলত: আমরা পরিবেশ বান্ধব বল‌তে পারি যখন তা বৈদ্যুতিক ট্রেন হয়। আর সেই বিদ্যুৎ যদি সৌর থেকে আসে। তবে তা সম্পূর্ণ ভাবে দূষণ ফ্রি। আমা‌দের অল্প দূরত্বে যেমন ঢাকার আসে পাশের জেলা শহরগু‌লি যোগা‌যোগটা ট্রেনে করার আগে হ‌তে পা‌রে বিআর‌টি এর মাধ্যমে। কারণ ট্রেন থেকে প্রায় দশ ভাগের একভাগ খরচে বিআর‌টি করা যায়। ঢাকার গাজীপুর হতে উত্তরা আবার উত্তরার হ‌তে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত বিআর‌টি চালুর কার্যক্রম চলছে। ঢাকার আশে পাশে অল্প দিনে ও অল্প খরচে বিআর‌টি চালু করা যায়। বিআর‌টি চালু করার জন্য যে কোন বাস বা দোতালা বাস দি‌য়ে চালু করা যায়। বাসের দরজাগু‌লি ‌অটোমে‌টিক ও বড় কর‌তে হবে। রাস্তা পুরো আট দশ‌ ফিট পাকা করার প্র‌য়োজন নেই। চাকা বরাবর ব্লক বসিয়ে গেলেও বাস চল‌তে পারবে। ইন্টারনেটে ও ইউটিউবে স্টাডি করলে দেখা যাবে কেবল চাকা বরাবর পাকা অংশ দি‌য়ে বাস চলছে মাঝ বরাবর সবুজ ঘাস বিদ্যমান। আসলে বিআর‌টি লাইন প্রক্রিয়াটি বেশ চমৎকার ও সাশ্রয়ী। সকল দেশে সমস্ত ট্রাফিক সিগনালে বিআর‌টি প্রা‌য়ো‌রি‌টি দেয়া হয়।
আমরা যদি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ট্রাফিক জ্যামযুক্ত রাস্তা চিন্তা করি তবে ঢাকা আশে পাশে জেলাগু‌লো থেকে বেশী মানুষ ঢাকা‌তে আসে। সে সমস্ত সকল জেলা বিআর‌টি দিয়ে চালু করলে সাধারণ বাহনের উপর চাপ কমবে। একটা বিআর‌টি নব্বইটি  প্রাইভেটকা‌রের যযাত্রী বহন কর‌তে পা‌রে। তাই দুই‌টি লেন বিআর‌টি জন্য রেখে দিলে কি পরিমাণ ট্রাফিক কমে আস‌বে তা সহজেই  অনুমান করা যায়। বাস রে‌পিড ট্রান্স‌পোর্ট সারা পৃথিবীব্যাপী জনপ্রিয় হ‌য়ে‌ছে। কারণ এটা ট্রেন থেকে সাশ্রয়ী। অনেক দেশে প্রতিটি স্টেশনে আটোমে‌টিক চার্জ‌িং স্টেশন স্থাপন ক‌রে বিআর‌টি সিস্টেমকে পরিবেশ বান্ধব ও বিদ্যুৎ চালিত ব্যবস্থাও করা সম্ভব হ‌য়ে‌ছে। আমরা কোন শহরে প্রথমে কম খরচে রেল না চালু ক‌রে বিআর‌টি চালু কর‌তে পারি। তারপর তা বৈদ্যুতিক বাসে রূপান্তর কর‌তে পারি। তারপর ধী‌রে ধী‌রে ইলেকট্রিক ট্রেনে যে‌তে পারি। ইলেকট্রিক ট্রেন‌ে প্রাথমিক খরচ বেশী হলেও দীর্ঘদিন কম রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমে যায় বলে পৃথিবীব্যাপী মে‌ট্রো রেলের চাহিদা বিদ্যমান। কম খরচে দ্রুত চালু করার জন্য বিআর‌টি ভাল অপশন। তবে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেশী ও ঘন ঘন প্র‌য়োজন। বাসের রাবারের চাকা ট্রেনের লোহার চাকা হ‌তে দ্রুত পরিবর্তনের প্র‌য়োজন হয়। পরিশেষে বলব কোন দেশের ট্রাফিক সমস্যার দ্রুত সমাধানে বিআর‌টি বিশাল অবদান রাখছে তা আজ প্রমাণিত। তাই বাংলাদেশের ঢাকার সাথে নিকটবর্তী জেলাসমূ‌হের সাথে বিআর‌টি লাইন দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্র‌য়োজন।

Wednesday, February 13, 2019

পাশ মার্ক ২০


একশতে পাশ মার্ক ২০ আজব শুনাবে বিষয়টা। সেদিন বন্ধু‌দের গ্রুপে আমার সাথে তুমুল বিতর্ক হচ্ছিল। সেটা হল ৩৩%  পাশ মার্ক নি‌য়ে আলোচনা। এই পাশ মার্কটা কেন ৩৩  হল কেন  ৩০ নয় কেন ৪০ নয়। কারণ হিসাবে জানা গেল ব্রিটিশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশ মার্ক ছিল নাকি ৬৫%। ব্রিটিশ শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা চিন্তা ক‌রে দেখল ভারত‌ের মানুষগু‌লো দেহের আকা‌রে অর্ধেক, মগজও অর্ধেক হবে। পশ্চাৎপদ জনপদ। পাশ মার্ক অর্ধেক ক‌রে দিল ৩২.৫ মার্ক। অনেকদিন এই নম্বর চলছিল। তারপর মনে করা হল এই  নম্বর ৩২.৫ না রেখে পূর্নাংগ সংখ্যা ৩৩ করা সুবিধাজনক। তারপর থেকে চলছে সেই ৩৩ নম্বর। অনেকে বলছে পাশ মার্ক দশ‌কে রাউন্ড আপ হ‌য়ে ৪০ বা ৫০ হ‌তে পা‌রে। হয়তবা কোন কোন প্রতিষ্ঠান তা করেছে।
আমার প্রশ্ন আমরা বাড়াব না কমাব। কোনটা ভাল হবে। তার আগে আসুন শিক্ষা ব্যবস্থার বাস্তব চিত্র দেখি। দেশে এখনও লক্ষ লক্ষ ছাত্র ফেল ক‌রে বার বার পরীক্ষা দেয়। এটা বন্ধ কর‌তে হবে। পাশটা সহজ কর‌তে হবে। এখন আসি পড়া‌শোনার এই  প্রান্তিকে যুদ্ধের কথা। আমরা কত এসএস‌সি ফেল, এইচএস‌সি ফেল ও বিএ ফেল রাখব। ফেল যত কমা‌নো যায় সমাজের প্রতি‌যোগীতা তত কমবে। মানসিক চাপ তত কমবে। সহজ পড়া সহজ পাশ মানুষ‌কে আরো সৃজনশীল করবে। এখন পিতা মাতা এক ক্লাস থেকে উপরের ক্লাসে তুল‌তে চিন্তায় থা‌কে। যখন পাশ মার্ক কমে যাবে পে‌রেন্টস আর চিন্তায় থাকবে না। পাশ করা নি‌য়ে টিউশন ও কো‌চিং বাণিজ্য কমে যাবে। যারা অনেক অনেক ভাল রেজাল্ট কর‌তে চায় তারা তখন কোচিং করবে। টাকা খরচ করতে থাকবে। যদি পাশ মার্ক  ২০ হয় তবে পাশ মার্ক তুল‌তে টিচার‌দের ভয়ভীতি ও জোর ক‌রে ফেল করা‌নোটা কমবে। পাশ নি‌য়ে চিন্তা নাই বলে কো‌চিং বাণিজ্য অনেক কমে যাবে। গরীব বাবা মা মুক্তি পাবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় স্বস্থি আস‌বে। ছাত্র/ছাত্রীরা পাশ নি‌য়ে চিন্তা না ক‌রে সৃজনশীল চিন্তা করবে। পড়া‌শোনা‌কে হৃদয়গ্রাহী ক‌রে গ্রহণ করবে। টেনশন ছাড়া মুক্ত মনে পড়া‌শোনা করবে। অনেক দেশেই পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত বাচ্চা‌দের কোন পরীক্ষা নেই। পরীক্ষা-মুক্ত দেশের বাচ্চারা বরং পরীক্ষাযুক্ত দেশ হ‌তে এগিয়ে আছে। আমার জানা ম‌তে অনেক সংস্থায় পরীক্ষা‌বিহীন পদ্ধতিতে মাস্টার্স পাশ দেয়া হয়। তা‌দের অ্যা‌সেস‌মেন্ট হয় প্রে‌জেন্টশান ও অ্যাসাইন‌মেন্ট ও ব্যবহারিক কাজের উপর ভিত্তি ক‌রে। উপরের ডিগ্রীর এই হাল হলে ২০ পাশ নম্বর হলে ক্ষতি কি? কিছু সংখ্যক জ্ঞানপাপী মানুষ পড়া‌শোনাটা‌কে বাণিজ্য ক‌রে ফেলেছে। তারা পাশ নম্বর বাড়িয়ে পড়া‌শোনাটা স্বতঃস্ফূর্ত না রেখে সবসময় বাণিজ্য করতে চায়।
পাশ মার্ক  ২০ করলে বেকার কমবে। কারণ যারা ২০/৩০ নম্বর পেয়ে পাশ করবে তারা সরকারী বা দামী চাকুরী না খো‌জে নিজে নিজে কাজের উদ্যোগ নিবে। সেই  সাথে  পাশ কারার কারণে তা‌রা নিজেরা হীনমন্যতায় ভোগ‌বে না।
মেয়েদের বি‌য়ের সমস্যাটা দূর হবে হবে। দেশে এখন ছেলেদের চে‌য়ে ম‌েয়েরা বেশী শিক্ষিত হচ্ছে। মে‌য়েরা পরীক্ষায় বেশী পাশ করছে। ফলে অনেক উচ্চ শিক্ষিত মে‌য়ে শিক্ষিত পাত্র পাচ্ছে না। মাস্টার্স পাশ মে‌য়ে আইএ পাশ ছেলেকে বি‌য়ে করে‌তে পারছে না সামাজিক কারণে। ২০% পাশ মার্ক করলে ছেলেদের পাশ‌ের পরিমাণ বাড়বে। ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তার মত সক্ষম শিক্ষিত পাত্রের সংখ্যা বাড়বে। পাশ মার্ক বেশী হলে পাশ করার জন্য প্রশ্ন ফাঁস ও নানা জালিয়াতি কমবে। বেকার কমে যাওয়ার কারণে সবাই কাজ ক‌রে জীবন যাপন করবে। অসুস্থ প্রতি‌যোগীতা কমে যাবে। দেশে দুর্নীতি কমে যাবে। স্কুল কলেজে সহজে পাশ করার কারণে শিক্ষাজীবনে শেখার আগ্রহ বাড়বে। প্রতি‌যোগীতা কমে যাবে। ফলে দুনীতি কমে সার্ব‌িকভা‌বে ভাল একটা অবস্থার সৃষ্টি হবে।
আমি জানি, অনেক জ্ঞান পাপী শিক্ষিতরা আমার এই লেখার তীব্র নিন্দা করবেন। আমি বলব বু‌কে হাত দিয়ে কল্পনা করুন, এটা হলে কত মানুষের স্বস্তি আস‌বে। সমাজে নানা অনাচার দুর হবে।

Thursday, February 7, 2019

আকাশ আর মিতু সমাচার


ভাইরাল মিডিয়া জগৎ। আকাশের শোকে যখন মুহ্যমান বাংলাদেশের বিবেকবান মানুষ। তখন আবার তসলিমা নাস‌রিন গরম হ‌য়ে‌ছেন। জরায়ুর স্বাধীনতাকামী নারীর গরম হওয়াটাই স্বাভাবিক।
আমরা যারা বিবাহিত পুরুষ ও নারী, সন্তানসন্তু‌তি নি‌য়ে সমাজবদ্ধ হ‌য়ে বাস করি; তা‌দের জন্য আকাশের মৃত্যুটা শিক্ষণীয় বিষয়। যারা তসলিমা নাস‌রি‌নের জন্য জরায়ুর স্বাধীনতা চায় তাদের জন্য আলাদা ক‌রে ভাববার বিষয় আছে। তরুণ বয়সে শুনতাম, অভিজাত এলাকায় ছেলে মে‌য়ের কাছে পার্টনার বদল, কাপড় বদলের মত। ওয়ান অর টু নো প্রবলেম। অনেক নারী খোলা‌মেলা পোষাক পছন্দ ক‌রে তা‌দের নাকি "খুল্লাম" মানে খুলে ফেল্লামস্বভাবের বলা হয়। এখন খুল্লাম স্বভাবের মে‌য়ের কনজার‌ভে‌টিব স্বভাবের ছেলের সাথে পড়লে বিপদ আছে।
সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে মানসিক ও সাংসারিক জীবনটা অনেক বেশী জরুরী। বিবেকবানদের হা-হুতাশ নয় বা তসলিমা নাস‌রি‌নের জরায়ু স্বাধীনতা নয় বরং সহনশীলতা বেশী জরুরী। প্রতি‌টি মানুষ‌কে বুঝ‌তে হবে সে ইউনিক। স্ত্রী বা স্বামী তাদের সাথে জোড়া দেয়া প্রজননগত প্রয়োজ‌নে প্রাকৃতিক ব্যবস্থা। সেই  পার্টনার সব সময় মনঃপূত হবে সেটা কখ‌নো সম্ভব নয়। গড়মিল থাকবেই। সেজন্য সমাজ ও ধর্ম তালাকের ব্যবস্থা রেখেছেন। নিজের সাথে মি‌লে‌নি তালাক দি‌য়ে ভাল পার্টনারের সন্ধান করাটা জরুরী। জীবনটা ছোট, এর মধ্যে পার্টনার‌কে একের পর এক সু‌যোগ দি‌য়ে শুধরা‌নোর কিছু নাই। এই ছেলে বা মেয়েকে না পেলে অন্যকে পেলে হবে না, এটাও ভুল ও ইমোশনাল চিন্তা। অন্য‌র মাঝে ভাল মানুষী না খোঁজে আমরা নিজের দরদ, ধৈর্য ও উদারতা বাড়া‌তে পারি। একদম প্রথম থেকেই আমার মানসিকতা ছিল, আমার পার্টনার আমার ম‌নোমত পাব না। তা‌কে আমার উপ‌যোগী কর‌তে চেষ্টা কর‌তে হবে। না পারলে খেদা হা‌ফেজ। ক্লাস টেনে আমার এক বাংলা শিক্ষক দেবদাস পড়া‌তে গি‌য়ে বলেছিলেন, জীবনটা তোমার। এক পার্বতী‌তে পাওনি কি হ‌য়ে‌ছে, যে চন্দ্রমুখী তোমাকে চায় তার কাছে যাও। জীবন‌কে অর্থবহ কর। আজও স্যা‌রের কথাটা কানে বাজে। সেদিন থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ছ্যাকা খেলে যে চায় তার কাছে যাব। জীবন অর্থবহ করব। পার্টনারের কারণে আত্মহত্যা জীবনের সবচেয়ে বড় পরাজয় বা কাপুরুষতা। অনেক পুরুষ ভাবে আমি অক্ষম স্ত্রী অন্য কারো কাছে চলে যাচ্ছ‌ে  এটা আমার জন্য লজ্জাজনক। বেঁচে লাভ নেই। আমি হলে সেক্ষেত্রে কম চাহিদা সম্পন্ন স্ত্রী লোক খোজতাম। বেশী যৌন চাহিদা সম্পন্ন পার্টনারকে ত্যাগ করতাম। একবার ইন্টারনেটে দেখলাম একজন মে‌য়ে চার জনের সাথে সেক্স ক‌রেও পরিতৃপ্ত হয় না। এ গুলোও মানসিক রোগ। এদের দ্রুত মানসিক চিকিৎসা প্রয়োজন। কোন পুরুষ তার কোম‌ড়ে জোর বেশী না কম, সেটা নি‌য়ে ব্যস্ত না হয়ে তার উপযোগী কম চাহিদা সম্পন্ন নারী খোঁজা প্রয়োজন।
সমাজে যে পুরুষের স্ত্রী বার বার চলে যায়, তা‌কে নাকি অন্যরা হিজড়া ভাবে। স্ত্রী‌কে সে সে‌টিসফাই কর‌তে পা‌রে না। একটা নারী বিবাহিত না থাকলে সে হিজড়া হয় না। একটা পুরুষ হিজড়া হ‌য়ে যায়। সেদিন একটা প্রাংক দেখলাম। মেয়েদের জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে তারা যৌনকা‌জে অভিজ্ঞ পুরুষ চায়, না অনভিজ্ঞ পুরুষ চায়। শতকরা ৯০% মে‌য়ে অভিজ্ঞ পুরুষ চায়। কারণ অনভিজ্ঞ পুরুষ তা‌কে যথাযথ সন্তুষ্টি নাও দি‌তে পা‌রে। মেস ক‌রে ফেল‌তে পা‌রে যৌন কার্যক্রম। নারীরা সেই রিস্কে যে‌তে চান না। অপর দি‌কে পুরুষ চিন্তা ক‌রে নারী‌কে আমার মত তৈরি ক‌রে নিব। নারীর আগের অভিজ্ঞতা জ্ঞান প্রয়োজন নাই। থাকলে বরং অসতী হয়ে গেল। এখন পুরুষ ইচ্ছে করুক আর না করুক আধুনিক নারীরা ইন্টারনেটের ব‌দৌল‌তে সব ধরেনের জ্ঞানে তুষ্ট। অনেক নারী নিয়ন্ত্রণ না কর‌তে পে‌রে প্রাক‌টিক্যাল জ্ঞানে চলে যাচ্ছ‌ে। যারা প্রাক‌টিক্যাল লার্নিং চলে যাচ্ছে, সেখানেই আকাশের মত রক্ষণশীল যুবক‌দের সমস্যা হচ্ছ‌ে।
উপায় কি? নৈতিক শিক্ষা। আকাশ এক নারীর জন্য আত্মহত্যা করেছে। সেখানে ইসলাম ধর্ম‌ে চার বি‌য়ে করার অনুমতি দিয়েছে। স্ত্রীর স্বেচ্ছাচারিতায় আকাশের উচিত ছিল স্ত্রী‌কে তালাক নো‌টিশ পাঠিয়ে দ্বিতীয় বি‌য়ে করা। আর নিজের জীবন‌কে মানব কল্যাণে ব্যয় করা। একজন মানুষ কষ্ট ক‌রে এতটা বছর ধ‌রে ডাক্তারি পড়ল। তার কাছে সমাজের অনেক প্রাপ্যতা আছে। তার এই  অকাল তি‌রোধান মেনে নেয়া যায় না।
আমা‌দের সমাজে অনেক অনেক মানুষ আছে যারা স্বামী বা স্ত্রীর স্বেচ্ছাচারিতায় ভুগছে। এই ধরনের মানুষ‌দের জন্য আমার উপদেশ শরীয়া মোতা‌বেক এক বা সামর্থ্য থাকলে একাধিক বি‌য়ে করুন। সুস্থভাবে বাঁচুন। নিজে সুখী থেকে সমাজ‌কে সুখী করুন। রূপকে নয়, নারী/পুরুষের মনের মিলটার জন্য তালাশ করুক। পরস্পরকে বুঝুন। মনটা বুঝুন। নারী বা পুরুষ পরস্পরের সমাজ ও পরিবেশ বুঝুন। আপনার উপ‌যোগী হলে তা‌কে গ্রহণ করুনরূপকে নয় মানুষকে খুঁজুন। এতে আপনার পৃথিবী স্বর্গীয় হবে। নরক যন্ত্রণা পাবেন না।
পরিশেষে বলব, আকাশ ও মিতুর ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় প্রমাণিত হয় ধর্মীয় অনুশাসন সমাজ‌কে সুশৃঙ্খল কর‌তে পা‌রে। নারী পুরুষের সম্পর্ক‌ে ইমোশন নয় বাস্তবতায় ও সামাজিক দায়বদ্ধতায় আন‌তে হবে।