ইলেক্ট্রিক গাড়ী, ইলেক্ট্রিক বাস ও ইলেক্ট্রিক ট্রাইসাইক্যাল পরিবেশ বান্ধব। পৃথিবী ধীরে ধীরে এই কালচারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাহলে পেট্রোল কার ও ডিজেল কারের কি অবস্থা হবে। ভারত ২০৩০ সালের মধ্যে অল ইলেক্ট্রিক পরিবহন করতে চায়। প্রশ্ন হল তাহলে চলমান ডিজেল ও প্রেট্রোল কারের কি হবে? আমি ভাবলাম আচ্ছা যখন পরিবেশবাদীরা বেশী সোচ্চার হবে হাইব্রিড গাড়ী ও ইলেক্ট্রিক গাড়ী চালনার জন্য তখন কিছু তথ্য জানার জন্য গুগল করতে থাকলাম। অবাক হয়ে দেখলাম সাধারন গাড়ীকে রিক্ট্রোফিট করে ব্যাটারী, ইডাকশন মটর কন্ট্রোলার অ্যাড করে খুব সহজেই হাইব্রিড করা যাচ্ছে। সিএনজি ও এলপিজি'র মত সাধারন কনভার্সন। ৬/৭ ঘন্টার মধ্যে সাধারন গাড়ী হাইব্রিড হয়ে যাচ্ছে। হয়ত বা অনেকে বলবেন এতে তো পরিপূর্ণ হাইব্রিড হচ্ছে না। না হোক হাইব্রিড গাড়ী ৪০% জ্বালানী সাশ্রয় হওয়ার জায়গায় আর না হোক ৩০% সাশ্রয় তো হচ্ছে তাতে বা কম কিসে। একটা গাড়ী কিন্তু অনেক সময় ২০ বছর বা ততোধিক বয়স পর্যন্ত বা তার বেশী সময় ব্যবহার করা যায়। বাংলাদেশে একটা গাড়ী ৩০ বছরও ব্যবহার হতে দেখা যায়। উন্নয়নশীল দেশ বলে হয়ত তা ঘটছে। ধনী দেশ হলে তা মোটেই ঘটত না। অনেক দেশে দশ বছর একটানা কেউ একই গাড়ী ব্যবহার করে কিনা সন্দেহ। সবাই নিত্য নতুল মডেলের গাড়ীর দিকে ধাবিত হয়। এমনও জানা যায় গাড়ীর মডেল বদল করার জন্য অনেক সময় অনেক কোম্পানী তাদের পুরাতন মডেলের গাড়ী নতুন অবস্থায় বাতিল ঘোষনা করে। মাঝে মাঝে এটাও শোনা যায় কোন কোন কোম্পানী তাদের প্রডাকশন কস্ট কমানোর জন্য অনেক সময় বিপুল পরিমান গাড়ী উৎপাদন করে ফেলে। পড়ে হয়তবা দেখা গেল উৎপাদিত গাড়ী আশানুরুপ বিক্রি হচ্ছে না। তখন কোম্পানী তাদের গাড়ীর মূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য বাজারে গাড়ী সরবরাহ বন্ধ রেখে নতুন গাড়ী ফেলে রেখেনেস্ট করে মজুদ করে বাজার স্থিতিশীল রাখে। তা যাই হোক গাড়ী মানুষের চরম আগ্রহের জায়গা। এটা বদলানোর অভ্যাস ও নিত্যনতুন মডেলে যাওয়াটা বেশীর ভাগ সামর্থ্যবানরাই তাই করে।
বাংলাদেশের জন্য প্রাযুক্তিক আন্দোলনে শরীক হওয়ার উপায় কি?
১। আমাদের বাস, ট্রাক ও কার জাতীয় যত গাড়ী আছে সেগুলোকে প্রথম ধাপে হাইব্রিড করতে হবে। হাইব্রিড ছাড়া অন্য গাড়ীর আমদানী বন্ধ করতে হবে।
২। সমস্ত সিএনজি ট্যাক্সিকে ক্রমান্বয়ে হাইব্রিডে রুপান্তর করা এবং ভবিষৎএ সিএনজি'র আমদানী বন্ধ করে অল ইলেক্ট্রিক ট্যাক্সি তৈরি ও আমদানী করা।
৩। সমস্ত অটোরিক্সাকে আরো হালকা ও অ্যাফিশিয়েন্ট করার জন্য লীড অ্যাসিড হতে লিথিয়াম আয়নে কনভার্ট করা।
৪। গ্রামের রিক্সা ভ্যান ইত্যাদি যেগুলো ইলেক্ট্রিক মটরে চলে সেগুলোর সিলড এসিড বা ম্যানটেন্যান্স ফ্রি ব্যাটারীর পরিবর্তে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারীর ব্যবহার করা।
৫। গ্রামের শ্যালো ইঞ্জিনের ট্রলার ও অনান্য বাহনগুলিকে ধীরে ধীরে হাইব্রিডে রুপান্তর করে আয়ুপূর্তি করে ফেইজ আউট করা।
যে কোন ইলেক্ট্রিক বাহন সমশক্তির ফুয়েল গাড়ী হতে ২০% কম পরিবেশ দূষন করে। শহরের বাতাসকে নির্মল রাখতে ইলেক্ট্রিক বাহন ছাড়া আর কোন বিকল্প নাই। ইলেক্ট্রিক বাহন কম প্রচলিত বলে প্রাথমিকভাবে ইলেক্ট্রিক মটর আমদানী নির্ভর বলে দাম বেশী হবে। তবে সময়ের সাথে দাম কমতে থাকবে। লিথিয়াম আয়ন দিয়ে প্রাথমিক সময় গাড়ীর দাম যত ছিল আজকাল ধীরে ধীরে দাম কমছে। এমনকি লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারীর দামও ধীরে ধীরে আরো কমছে। চার্জ ডেনসিটি বাড়ছে। ব্যাটারীতে আগুন ধরার প্রবনতা বন্ধ হয়েছে। আজ তৈল বা কয়লার জেনারেটরের বিদ্যুৎতে গাড়ী চার্জ হলেও বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না যখন আমরা সোলার প্যানেলের বিদ্যুৎ দিয়ে সব চার্জ করব।
অপরদিকে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারী ও সোলার প্যানেল দশ/বিশ বছর ব্যবহার করে রিসাইক্যাল করা যায় বলে আরো বেশী পরিবেশ বান্ধব। সারা পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো ধীরে ধীরে পরিবেশ বান্ধব বাহনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন আমাদেরও এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে। অন্যথায় আমরা হয়ত আরো বেশী পিছিয়ে পড়ব।