Pages

Thursday, November 26, 2015

সাশ্রয়ী প্রি‌ফেব হাউসে হতে পারে সরকারী স্থাপনা

সম্প্রতি চীন থেকে বাংলাদেশে কারখানা ও বিভিন্ন কাজে প্রি‌ফেব ঘর অনেক আমদানি হচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শান্তি মিশনে এ ধরনের চাইনিজ প্রিফেব বাসস্থান ব্যবহার  শুরু করেছে। এগুলো দুইটি টিনের লেয়ারের প্যানেল। এগুলোর উভয় দিকে টিন আর মাঝে ফোম দেয়া। স্যান্ডউইচের আদলে রয়েছে বলে প্রিফেবের প্যানেলগুলোর নাম স্যান্ডউইচ প্যানেল। দুইপাশের টিনের স্যান্ডউইচ প্যানেলের টিন দুই লেয়ারের ও শক্ত কোটিংএর রং লাগানো। মাঝের লেয়ারের ফোম থাকে তা স্যান্ডউইচ প্যানেলের ঘরের মধ্যে বাহিরের তাপ আসতে বাধা দেয়। অপরদিকে ভিতরের এসির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত রুমের ঠাণ্ডা বাইরের গরম আবহাওয়ার সংস্পর্শে আসতে না পাড়ায় এই প্যানেলগুলো দিয়েই তৈরি প্রিফেব বাসস্থানগুলো আরামদায়ক। জাতিসংঘে যারা কর্মরত তারা প্রিফেব হাউজে থাকতে বেশ অভ্যস্ত। সুন্দর ও ঝকঝকে তকতকে পরিচ্ছন্ন পরিবেশের বেশ মনোমুগ্ধকর এই বাসাগুলো। এগুলো খুব দ্রুত বসানো যায়। এগুলো স্থাপনে সবোর্চ্চ একমাসের সময়ের প্রয়োজন হয়। কেবলমাত্র  কয়েকটি খুঁটি ইট বা ব্লকের মাধ্যমে তৈরি করে তার উপর প্রিফেব হাউসগুলো বসানো যায়।  প্রয়োজনে দ্রুত অপসারণও করা যায়। এক স্থান হতে অন্য স্থানে নিয়ে ব্যবহার করা যায়। আমার কাছে মনে হয় বাংলাদেশ সরকার গ্রামের স্থাপনাসমূহ যা কিনা শহর থেকে দূরবর্তী স্থানে অবস্থিত, সেখানে পাকা বাড়িঘর তৈরি না ক‌রে অস্থায়ী প্রি‌ফেব হাউস তৈরি করাই উত্তম। যেমন সরকারের কমিউনিটি ক্লিনিক, কমিউনিটি সেন্টার, পুলিশ বক্স, গার্ড হাউস ইত্যাদি। এছাড়া আরো  অনেক  প্রতিষ্ঠানের নানা ছোট বড় স্থাপনা প্রি‌ফেব আকারে তৈরি করা যায়। অনেক সময় দেখা যায় অনেক সরকারী  স্থাপনা যথেষ্ট খরচ ক‌রে তৈরি করা হয়। প‌রে দেখা যায় সে সব স্থাপনা আর ব্যবহার হয় না। কুষ্টিয়া জেলার  মিরপুর উপজেলার কুষ্টিয়া- মেহেরপুরের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনেক গু‌লো অব্যবহৃত দালান বা কেয়ার্টার দেখা যায়। এর কারণ হল প্রাথমিকভাবে সকল ডাক্তার‌দের জন্য কেয়ার্টার তৈরি করা হয়। অথচ এক দুইজন অনাথ ডাক্তার ছাড়া সবাই শহরে থা‌কে। শহর থেকে আসা যাওয়া ক‌রে সাধারণত অফিস ক‌রে থা‌কে। এটা সাধারণত ব্যক্তিগত সুবিধা অসুবিধার ব্যাপার। আলোচনার বিষয় নয়। কারণ সকল ডাক্তার পরিবার নিয়ে উপজেলায় থাকতে পারবে এটা চিন্তায় আনাটাই বোকামি। তাহলে প্রশ্ন আসে, অতিরিক্ত বাসস্থান কেন তৈরি করল। এর বিপরীতে বলা যায় এটা হল কনস্ট্রাকশ‌নের জন্য প্যাকেজ। তা‌দের প্যাকেজে প্রয়োজন লাগুক আর না লাগুক  সব দালান বানা‌তে হবে। অনেক সময় দাতা দেশগুলোর হাসপাতাল বা দাতব্য প্যাকেজে এধরনের অপ্রয়োজনীয় দালান দেয়। যা ভিক্ষা হিসাবে সরকারের গিলতে হয়। এতে অপ্রয়োজনীয় দালান তৈরী করে মুল্যবান ভূমির অপচয় হয়। আবার যত কাজ তত টাকা। এটা হল পরিকল্পনাবিদ ও নিন্মার্নকা‌রি‌দের লাভ। কোন স্থানে বিপুল পরিমাণ কর্মকর্তার বাসা আছে। সেগু‌লো ব্যবহার হয় না। আবার অন্য দি‌কে নিন্ম গ্রে‌ডের অনেকের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও তা‌দের বাসার ঘাটতি থা‌কে। যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কথা বললামএখানে যদি এমন করা‌ হত। কেবল হাসপাতাল‌টি তৈরি করা হত। কেয়ার্টার গুলোর কয়েকটি প্রি‌ফেব তৈরি করার পরে বেশ কয়েক বছরের ক্রমাগত চাহিদা পূরণ করার পরে জানা যেত বা বোঝা যেত মূলত কয়টি বাসস্থান প্রয়োজন। সে অনুযায়ী চাহিদা মাফিক দালান তৈরি করা হলে দেশে কোন সরকারী দালান অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত হত না। অনেক সময় এমন হয় দালান নতুন হওয়ার পর পরই তা পরিত্যক্ত হয়। সত্যি দূ:খজনক। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এভাবেই সরকারী টাকায় হাজারো অব্যবহৃত দালান তৈরি হত না। সরকারী অনেক দালান দেখা যায় এগু‌লো পরিত্যক্ত ও রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। অথচ এগু‌লো প্রি‌ফেব ক‌রে তৈরি ক‌রে নিলে সরকারের এত অপচয় হত না। প্রি‌ফেব ব্যবহৃত না হলে তা স্থানান্তরিত করা যায়। অপর দিকে দালান পরিত্যক্ত হলে তা ভেৃং‌গে ফেল‌তে প্রয়োজন অনেক বড় বাজেট। তাই দালান পরিত্যক্ত হওয়ার পরও বাজেটের অভাবে দালান ভাঙ্গা হয় না। ধীরে ধীরে সে স্থানটি সাপ ও জন্তু জানোয়ারের আস্তানায় পরিণত হয়। দালান ভাঙ্গা না হওয়ার কারণে সেই জমিটিও অব্যবহৃত থেকে যায়।
একজন ৯নং গ্রেডের ( বিসিএস সম্পন্নকারী) উপরে বেতন ভুক্ত সরকারী চাকুরে সাধারণত ১৫০০/১৬০০ স্কয়ার ফুটের বাসস্থানে থাকেন। বর্তমান বাজার দরে খরচ হবে ২০০০ টাকা প্রতি স্কয়ার ফিট। ঐ দরে ১৬০০ গুণন ২০০০=৩২০০০০০ অর্থাৎ ৩২ লক্ষ টাকা ফ্লাটটি তৈরি করতে খরচ হবে। অপরদিকে প্রিফেবে খরচ হবে ৬০০ টাকা স্কয়ার ফিটের মত। এতে ১৫০০ স্কয়ার ফিটে ( প্রিফেব ঘরের দেয়াল ১ ইঞ্চির মত তাই বাসস্থানের আয়তন কমানো যায় ) খরচ ১৫০০ গুণন ৬০০ বা রাউন্ড ফিগার নয় লক্ষ টাকা। সরকারের বাসস্থান প্রতি ২৩ লক্ষ টাকা সাশ্রয়। মনে করুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ জন ডাক্তারের জন্য বাসস্থান তৈরী করা বাবদ খরচ হল ৩২ লক্ষ গুণন ২০ =৬ কোটি চল্লিশ লক্ষ টাকা।  অপর দিকে চার জন ডাক্তার যারা থাকেন তাদের জন্য চারটি প্রিফেব খরচ ৪ গুণন ৯ লক্ষ টাকা = ৩৬ লক্ষ টাকা। এতে সরকারের ৬ কোটি ৪ লক্ষ টাকাই সাশ্রয় হবে। দেখা যাচ্ছে প্রিফেব করে আমরা সরকারী বিপুল টাকা সাশ্রয় করতে পারি। পাশাপাশি আমরা যেসমস্ত লাভ পাব তা হল প্রয়োজন না হলে যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে প্রিফেব স্থানান্তরিত করা যাবে। অনায়াসে ১৫/২০ বছর ব্যবহার করা যাবে। দালানের মত প্রিফেবে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ নাই। রং করার প্রয়োজন নাই। লাইফ ওভার হলে বদল করলেই হল। সরকারী যারা পলিসি মেকার আছেন তারা আমার এ প্রস্তাব ভেবে দেখবেন। প্রথমে এ সংক্রান্ত পাইলট প্রজেক্টও করা যেতে পারে।


Thursday, November 19, 2015

ডেস্কটপ থেকে ল্যাপটপ ও ল্যাপটপ থেকে স্মাটর্ফোন

প্রযুক্তির পরিবর্তনগুলি এত তাড়াতাড়ি হচ্ছে যে আমরা আজও তাল সামলাতে পারছি না। এই তো ২০০৮ সালে এখনও মনে আছে ডেস্কটপে আমরা প্রায় সকল কাজই করতাম। মাঝে মাঝে ল্যাপটপে ব্যবহার করতাম। একসময় দেখলাম ল্যাপটপে আমার কাজ ধীরে ধীরে বেড়ে যাচ্ছে। ডেস্কটপে কাজ কমে যাচ্ছে। ডেস্কটপ ধীরে ধীরে আমার ছোট ছেলেদের কাজে ব্যবহার হচ্ছে। এক সময় ডেস্কটপে আমার কাজ সত্যিই কমে গেল। আমার ধারনা হল ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ ব্যবহারটা হল অভ্যাসের বিষয়। ডেস্কটপের বড় কীবোর্ডে টাইপ করতে করতে ল্যাপটপের ছোট কীবোর্ড একসময় ঠিক আরামদায়ক ছিল না। একসময় ল্যাপটপে বেশী বেশী কাজ করে ল্যাপটপের ছোট কীবোর্ড আরামদায়ক হয়ে গেল। তখন আবার ডেস্কটপের বড় কীবোর্ড তত আরামদায়ক মনে হল না। ধীরে ধীরে ল্যাপটপের কীবোর্ডে ও ছোট মনিটরে অভ্যস্ত হয়ে গেলাম। অনেকের মত আমিও দিনের বেশ খানিকটা সময় কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহার করি। কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের কারণে টিভি দেখা কমে গেছে। কম্পিউটারে আর্টিক্যাল টাইপ করি। কোন বিষয় মাথায় আসলে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে পড়াশোনা করি। এটাই হল উল্লেখযোগ্য কাজ। মূলত: কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের ব্যবহারের দিকটা নিয়ে দীর্ঘদিন নাড়া চাড়া করে আমার কাছে ধারনা হল। ইন্টারনেট ব্যবহার কোনটায় আরামদায়ক ডেক্সটপ না ল্যাপটপ এটা মূলত অভ্যাসের ব্যাপার। এখন ল্যাপটপ ব্যবহারে অভ্যাস হয়েছে। তাই ডেক্সটপ আর ল্যাপটপের মধ্যে পার্থক্য তেমন লাগে না। তবে একটা পার্থক্য বেশ অনুভব করি তা হল পরিবেশ। ল্যাপটপে কাজ করি আর ডেস্কটপে কাজ করি না কেন আমাদের প্রত্যেকের নিজ ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের পরিবেশটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আমি আমার লেখালেখির কাজ অন্য একটি ল্যাপটপ বা ডেস্কটপে বসে করতে পারি না। কারণ লেখার মত একটা জটিল মনস্তাত্ত্বিক কষ্টকর ও ধৈর্যের কাজ নিজ পরিবেশেই কেবল মনোমত করা যায়। নয়ত গদ্য আর মাথা থেকে বেরুতে চায় না। লেখার আইডিয়া ও কথা যখন বের হতে থাকে তখন ঝর্নার জলের মত কলকলিয়ে ছুটে চলে। আবার মাঝে মাঝে দিনের পর দিন কোন লেখা ছুটে না। ডেক্সটপ আর ল্যাপটপ মধ্যে পরিবেশের পার্থক্য বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মূল বিষয় থেকে লেখালেখির বিষয়ে চলে গেছি। ল্যাপটপ ও ডেস্কটপ ব্যবহারের সাথে ব্যক্তিগত ভাবে আমার লেখালেখি একটা যোগসূত্র রয়েছে। যা অন্যদের অনুভূতি থেকে আলাদা। আমার মনে হয়  আমার মত অনেকেরই তাদের লেখার পরিবেশ ও পদ্ধতির সাথে মনস্তাত্ত্বিক কোন সংযোগ বা অনুভূতি অনুভব করেন। অপরদিকে লেখার পরিবেশ ঠিক রেখে ব্যবহারের অভ্যস্ততার কারণে ধীরে ধীরে ডেস্কটপ থেকে ল্যাপটপের দিকে আমার অভ্যাস পরিবর্তন হয়েছে। 
এখন আসি স্মাটর্ফোন ব্যবহার প্রসঙ্গে। এই তো কয়েক বছর আগে ট্যাব বা মোবাইল ফোন ইন্টারনেটের ব্যবহার ও অন্যান্য পড়াশোনায় কোন কাজে লাগবে ভাবিনি। ধীরে ধীরে লক্ষ করলাম এগুলোও কাজের হয়ে উঠেছে। ছাত্র অবস্থায় ধারনা ছিল পড়াশোনা ভাল ভাবে করতে চেয়ার টেবিল ছাড়া কোন বিকল্প নাই। তথাপিও মাঝে মাঝে মনের ফুর্তিতে বা আয়েশে শুয়ে শুয়ে বই পড়ারও অভ্যাস করে ফেলি। অন্তত অলস সময়ে শুয়ে শুয়ে আরাম করে গল্পের বই পড়া যেত। শুয়ে শুয়ে আরাম করে রাত জেগে গল্পের বই পড়ার অভিঞ্জতা নাই এমন নিরস মানুষ খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। শিক্ষিত মানুষ মাত্রই পড়তে পছন্দ করে। আর শুয়ে আরাম করে বই পড়া বই পড়ুয়াদের তা টিভি দেখার চেয়েও বেশী আনন্দের কাজ।
ল্যাপটপ ব্যবহার করতে করতে হাতে একসময় আসল বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোবাইল ও ট্যাব। টাচ মোবাইল। ৪ ইঞ্চি স্ক্রিনের মোবাইল ফোন ও ৫ ইঞ্চি স্ক্রিনের মোবাইল ফোন ইত্যাদি ইত্যাদি। বিভিন্ন রকম মোবাইল ফোন আর তার সাথে ট্যাবও ব্যবহার করলাম। ল্যাপটপ ও ট্যাব যাই বলিনা কেন এর থেকে বেশী পরিমাণে হাতের মধ্য থাকছে ও ব্যবহারর বেশী হচ্ছে স্মার্ট ফোনগুলি। ২০০৩ সালে প্রথম ল্যাপটপ কেনার পর থেকে আমি ছুটি বা কাজে যেখানেই বাড়ী হতে দুরে যাই না কেন আমার সাথে কিন্তু সর্বদা ল্যাপটপ থাকে। কিন্তু এ বছর পাঁচ ইঞ্চি মাপের স্ক্রিন সম্বলিত মোবাইল ফোন হাতে নেয়ার পর হতে আমি আর ল্যাপটপ সাথে নিয়ে আর কোথাও ছুটি কাটাতে যাইনি। মোবাইল ফোনের পাঁচ ইঞ্চি স্ক্রিনেই ইন্টারনেট ব্যবহার। এসএমএস টাইপিং ও আর্টিক্যাল টাইপিং ইত্যাদি কিছু কিছু কাজ করে নিতে পারছি। আমরা সবাই ছুটতে পছন্দ করি। ছুটে চলা মানুষ যাতায়তের সময় তার সময়গুলি কাজে লাগাতে চায়। সেই কাজগুলো ইমেইল চেক, ভাইবার চেক ও ওয়েব সার্চ করা ইত্যাদি কাজ। এসব কাজ প্রায়শই ল্যাপটপ নিয়ে বা ডেস্কটপে বসে সবসময় করা যায় না। তাই মোবাইলে কাজটা কিছুটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারলে মন্দ হয় না। আর এ কারণে স্মার্ট ফোনগুলির কদর বাড়ছে।
একবার আমি আমার একজন বন্ধুর কাছে জানতে পারলাম আজকাল ছেলে মেয়েরা যারা আউটসোর্সিং এর সাথে জড়িত তারা বড় স্ক্রিনের মোবাইল ব্যবহার করে। তাদের আউট সোর্সিং এর কাজ এতে অনেকটুকু করা যায়। যদি কনটেন্ট রাইটিং প্রয়োজন হয় তবে খুব সহজেই কনটেন্ট রাইটিং এর কাজটি স্মার্ট-ফোনে করা সম্ভব। টাচ স্ক্রিনের কী বোর্ডে টাইপ করা মানে হল অভ্যাসের ব্যাপার। বেশ কিছুদিন টাচ বাটনে টাইপ করতে করতে এটাও অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। প্রথম প্রথম টাচ স্ক্রিনে টাইপ করাটা বেশ বিরক্তিকর ছিল। মনে হত ফিক্সড বাটন থেকে টাচ স্ক্রিন বেশ কষ্টকর ও ধীর। তবে অভ্যাস করে ফেলায় এখন ভাল গতিতেই মোবাইলের টাচ স্ক্রিনে টাইপ করতে পারছি কোন সমস্যা ছাড়াই। প্রথম প্রথম অনেক সময় লাগলেও এখন বিজয় লে আউটে মোবাইলে বাংলা টাইপও করতে পারছি। অভ্র ও ফোনেটিক্স দিয়ে যে কেউ সহজেই বাংলা টাইপ করতে পারবে। এতে যে লাভগুলি হচ্ছে তা হল যেকোনো জায়গা থেকেই মোবাইলটা হতে নিয়ে আমার মত যারা লেখালেখির কাজগুলি করেন তারা উপকার পাবেন। যাতায়ত বা অলস সময়কে কোয়ালিটি সময় করতে পারবেন। মোবাইলে বাংলায় টাইপ করে আমার বেশ কয়েকটি আর্টিক্যালের ২০০-৩০০ শব্দ টাইপ করে ফেলেছিলাম। মূলত ড্রপ বক্সের অনলাইন ফোল্ডারে টাইপ করে নিলে লাভ হয়। যা কিনা পরে ল্যাপটপের ড্রপ বক্সের ফোল্ডার থেকে সরাসরি ব্যবহার করা যাবে। টাইপের সাথে সাথে তা ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে ড্রপ বক্সের ফাইল মূহুর্তেই আপডেট হয়ে যাবে। আমি কয়েকদিন আমার গ্রামের বাড়ী বেড়াতে গিয়ে ধীরে ধীরে অনলাইনে আমার ড্রপ-বক্স ফোল্ডারে টাইপ করে বেশ কিছু আর্টিক্যাল জমা করতে পেরেছিলাম। এ লেখাটিরও প্রথম অংশ আমি মোবাইল ফোনে টাইপ করেছিলাম। মোবাইল ফোনের স্ক্রিন ছোট থাকায় বেশ কিছু লিমিটেশন থাকলেও বিভিন্ন পন্থায় অনেক কাজ করা যায়। স্মার্ট ফোনের স্ক্রিনে এখন প্রায় সকল পত্রিকাই চমৎকার ভাবে পড়া যায়। এখন অনেক ওয়েবসাইট মোবাইল বান্ধব হওয়ায় তা ৫ ইঞ্চি মোবাইল ফোনে কলাম আকারে বেশ আরাম করে ভাবে পড়া যায়। পত্রিকার কলামের মত আরাম করে পড়া যায়। আর যেসব ওয়েব সাইট মোবাইল বান্ধব নয় সেগুলো প্রয়োজনীয় টপিকটি জুম করে নিয়ে আগে পিছে করে সুন্দর ভাবে পড়া যায়। যদি একান্তই অসুবিধা হলে আমি টেক্সটি কপি করে নিয়ে ড্রপ বক্সের একটা নতুন ওয়ার্ড প্যাডের মত ডকুমেন্ট খুলে তাতে পেস্ট করে নিয়ে কলাম আকারে মোবাইল বান্ধব ওয়েবসাইটের মত চমৎকার ভাবে কলাম আকারে পড়তে পারি। পত্রিকার মত কলাম আকারে লিটারেচার সহজে ও আরামদায়ক ভাবে পড়া যায়। পত্রিকার কলাম করা হয় মূলত সহজে ও দ্রুত পঠনের জন্য। তেমনি মোবাইল ফোনের আকৃতির কারণে এরূপ কলাম আকারে লিটারেচার পাওয়া যাওয়ায় তা দ্রুত ও চমৎকারভাবে পড়া যায়। শুধুমাত্র ছবি দেখতে হলে তা আলাদা ভাবে বড় করে দেখা যায়। মোবাইলে সমস্ত ছবি ও টেক্সট ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের মত একবারে দেখতে না পারলেও যেখানে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ ব্যবহার করা ঝামেলা, সেখানেই স্মার্ট ফোন ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের চমৎকার বিকল্প। স্মার্ট-ফোনের মত খুদে ডিভাইসটি আমাদের নি:সন্দেহে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছে। এখন অনেকেরই দৈনিক এক/দুই ঘণ্টা মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে সময় ব্যয় হয়। আমাদের প্রযুক্তির এ পরিবর্তনগুলো ধীরে ধীরে আমাদের চোখের সামনে ঘটছে। আর বেশী দূরে নয় যখন আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় প্রায় ৮০ শতাংশ কাজই করব মোবাইল ফোনে।  ডেস্কটপ আর ল্যাপটপ ব্যবহার করব মাঝে মাঝে। এখন অনেককেই দেখা যাচ্ছে অফিসের কম্পিউটারে মেইল চেক ও অফিশিয়াল কাজ করেন। অপরদিকে মোবাইল ফোন ব্যবহার হচ্ছে এসএমএস, ভাইবার, পত্রিকা পড়া ও ছোটখাটো গুগল সার্চ করা। ট্যাব ব্যবহার হচ্ছে শুয়ে শুয়ে বই বা পত্রিকা পড়ার জন্য। ল্যাপটপ ব্যবহার হচ্ছে বাসায় বিশেষ প্রয়োজনে অফিসের কাজ বা প্রেজেন্টেশন তৈরি করার জন্য। তদুপরি স্মার্ট টিভি হচ্ছে ইউটিউব সহ অনলাইনে টিভি দেখার জন্য। তবে শীঘ্রই আবার গুগল স্মার্ট ওয়াচ যোগ হচ্ছে। এখনকার প্রযুক্তির শক্তিশালী দিক হল সব ডিভাইসকে ইন্টার কানেক্ট করা যায় ও তথ্য আদান প্রদান করা যায়। পরিশেষে বলা যায় মোবাইল ফোনের মোবাইল (সহজে বহনযোগ্য আর তড়াত ব্যবহার করা যায়) গুনটির জন্য ভবিষ্যতে এটাই থাকবে সর্বে সেরা ডিভাইস বা গেজেট। সাধারণ মানের স্মাটর্ফোনের দাম ল্যাপটপের তিনভাগের একভাগ। আর বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে বহুগুণ।


Thursday, November 12, 2015

সফলতার হিসাব নিকাশ

জীবনের হিসাব নিকাশ যেকোন সময় মৃত্যু নিকটবর্তী হলেই তা শেষ হয়ে যায়। আমাদের জীবনে আমরা আমাদের সফলতার মাপকাঠিগুলো  নিজ নিজ মত করে চিন্তা করি। এটা অবশ্যই ভাল দিক। কারন আমরা যত বেশী নিজের সফলতা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকব ততবেশী আমরা কম অস্থির হব। যে কোন মানুষ চায় উতপাদনশীল কোন কাজ করতে। কেউ যখন কোন চাকুরি করে তখন তার মাথায় সব সময়চলতে থাকে কিভাবে সৃজনশীল কাজ করা যায়। তাই দেখা যায় বেতন ভাতার সাথে সম্পর্ক না থাকলেও  আমরা কিছু কিছু কাজ করি। কেউ ছবি আকে, কেউ গান করে, কেউ আমার মত লেখালেখি  করে, কেউ নিন্মান কাজ করে ও কেউ বাগান করে। এভাবে যে কেউ কোন কাজে নিয়োজিত হলে তিনি সব সময় যে আর্থিক লাভ পাবেন তা কিন্তু নয়।বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে মনের আর্তি ও আকুতি থেকে কাজগুলোর সৃস্টি হয়।
তবে কেউ যদি তার পছন্দ আর কাজ একসাথে মেলাতে পারেন তাহলে সাফল্য ধরে রাখা যায় না। আমাদের বেশীর ভাগই তার আগ্রহ ও দক্ষতার ক্ষেত্রগুলোতে কাজ করতে বা যোগাড় করতে ব্যর্থ হয়। তাই সফলতা ও সাথর্কতা একদম নাই বলা যাবে না। কেউ হয়তবা নিজে  সফল হয়েছেন কিন্তু সন্তানে সফল হয়নি।  স্ত্রীর সাথে ভাল সম্পর্কে সফল নয়। প্রতিবেশী ও অন্যান্যদের সাথে সুনামে ছিলেন না। তাই সফলতার সঠিক সংঞ্জা আমার মনে হয় দেয়াটা কঠিন। আমরা সফল বলতে যা বুঝি তা হল আর্থিক সফলতা ও মর্যাদায় সফলতা। দি অর্থ সফলতার একমাত্র নিয়ামক হত তবে আমাদের বিশাল সম্পদশালীদের সন্তানদের আত্মহত্যা কথা শুনতে হত না। আমার ব্যক্তিগত মতামত  থেকে একটা ছক বানিয়েছি । এ ছক থেকে আপনি আপনার সফলতার একটা দৃশ্যমান ধারনায় যেতে পারেন। প্রতিটি ছকে নম্বর দিয়ে বা গ্রেডের মাধম্যে বের করতে পারেন আপনার সফলতার একটা ধারনা গ্রেডগুলো হতে পারে ভাল, সন্তোষজনক ও মন্দ এটা মুলত  আত্মসন্তুস্টির একটা ছক এটা আপনাকে সন্তুস্ট হতে সহায়তা দিবে। আমরা অধিকাংশ পদবী, র‍্যাংক, মর্যাদা ও অর্থিক সফলতা না পেলে এতই বিমর্ষ হয়ে যাই তখন সত্যিই মনোযাতনা শুরু হয়ে যায়। মনে হয় জীবন বিফল হল। বিফলতা এত সহজ নয়। প্রতিটি পজিটিভ কাজ সফলতার সাথে করাই আমাদের জীবনের সফলতার বিন্দু বিন্দু অর্জন। মনোবিজ্ঞানীরা আরো ভাল বলতে পারবেন। আপনি পদবির বা অর্থে শিখরে আরোহন করতে না পারলেও পরিবার ও অনান্য ক্ষেত্রে সফলতা আপনাকে এ ধরনের  ভিজুয়াল হিসাব নিকাশ আপনাকে সন্তুস্টি দিবে এবং আপনার মানসিক অস্থিরতা থেকে মুক্ত করবে। আমি যে ছকটি দিয়েছি  আপনি লজিক্যাল ভাবে আরো   ছক  বাড়াতে পারেন।  আমার ছকে নাই অনেকে যোগ করতে পারেন বিদেশ ভ্রমন ও হজ্জ করা। আবার ধর্মীয় কার্যক্রমের ছক দিতে পারেন। বাড়ি করা, গাড়ী করা ও কোম্পানীর মালিক হওয়া। মিডিয়াতে সফলতা পাওয়া। পরিশেষে বলব যতবেশী পজিটিভ গ্রেড ততবেশী আপনি সফল। সফলতার সংঞ্জার অনুভুতি আবার ভিন্নতায় যেতে পারে। কৃষকের ছেলে কৃষক না হয়ে সরকারী পিয়নের চাকুরী পেলে নিজেকে সফলতার তালিকায় চুড়ান্ত মনে করতে পারে। আবার পিয়নের ছেলে ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারলে তার অবস্থানে সে সফল। প্রেসিডেন্টের ছেলে প্রেসিডেন্ট না হয়ে নামকরা মিডিয়া কর্মী হলে তা এক ধরনের সফলতা। আবার অনেকে চাকুরী জীবনে দামি দামি গাড়ী হাকিয়েছে বা দামী বাড়ীতে থেকেছে। অবসর জীবনে দেখা গেল তার কিছু নাই বা দেখার কেউ নাই। বৃদ্ধ বয়ষে এরুপ বাটে পড়লে তাকে কি ব্যর্থ বলা হবে। আমার মনে হয় অবশ্যই না। সফলতা সামগ্রীকভাবে ব্যাপক ও বিশাল ক্ষেত্র।

জন্মের পর মৃত্যু এই দুইটি সময়ের মাঝে আমাদের যে সময় তাই জীবন। জীবন ক্যালকুলেশনে ছকটি পূর্ন করে আপনি সফলতা যাচাই করতে পারেন(নিজের ছকটা আন্দাজে পুরা করলাম উদাহরন হিসাবে)।
ক্রম
সফলতার বিবরন
নিজ
স্ত্রী
সন্ত১
সন্ত২
সন্ত৩
১।
বিকলাংগ না হয়ে সুস্থভাবে জন্মগ্রহন
ভাল




২।
স্কুল শুরু করা
ভাল




৩।
প্রাইমারী স্কুল শেষ করা
ভাল




৪।
জুনিয়র স্কুলিং শেষ করা
ভাল




৫।
এসএসসি অতিক্রম
ভাল




৬।
এইচএসসি অতিক্রম
ভাল




৭।
সফলতার সাথে টেকনিক্যাল ও অনান্য উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন
ভাল




৮।
সফলভাবে ও যোগ্যতা অনুসারে চাকুরী প্রাপ্তি
ভাল




৯।
উপযুক্ত জীবন সংগী পাওয়া
সন্তোষজনক




১০।
এক বিয়ে ও স্বামী স্ত্রীর তৃপ্ত জীবন
সন্তোষজনক




১১।
সুস্থ ও সবল সন্তান জন্ম দেয়া
ভাল




১২।
৪০ বছর পযর্ন্ত নি:রোগ জীবন যাপন
ভাল




১৩।
পেনসনের পূর্বে আশানুরুপ পদবী, খ্যাতি অর্জন অথবা ব্যবসায় সফলতা অর্জন
ভাল




১৪।
সুস্থ ও সন্মানের সাথে পেনসনে আসা ও ব্যবসা গুছিয়ে নিয় উত্তরোধিকারীকে হস্তান্তর
ভাল




১৫।
পেনসন পরবর্তী মনোমত জীবন ধারন
ভাল




১৬।
বৃদ্ধ জীবনে নিকটাম্মীয়ের সহায়তা পাওয়া
মন্দ




১৭।
বৃদ্ধ জীবনে চিকিতসা,থাকা ও খাওয়ার সংগতি
ভাল




১৮।
স্বাভাবিক/অকাল/অপমৃত্যু
মন্দ