Pages

Friday, May 30, 2014

সাশ্রয়ী হচ্ছে সোলারের মুল্য প্রয়োজন হচ্ছে সকলের ব্যবহার

আজ থেকে তিন/চার বছর আগে যখন সোলার সিস্টেমের প্রতি ওয়াটের দাম ১০০ টাকার উপরে ছিল। তখন ধারনা করা হয়েছিল, যখন সোলারের দাম  ওয়াট প্রতি এক ডলারের নীচে চলে আসবে, তখন সোলারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে।
তবে সোলার প্যানেলের দাম কমলেও বিদ্যুৎ উৎপাদন আশানুরুপ বাড়েনি।
এখন দেখা যাচ্ছে শুধুমাত্র দিনের বেলা ব্যাটারি ব্যতীত সোলারের ইউনিট প্রতি খরচ ৬ টাকায় মধ্যে চলে এসেছে। অন্যদিকে ব্যাটারি ব্যাংক ব্যবহার করে রাতের জন্য সোলার ব্যবহার করলে খরচ পড়বে প্রতি ইউনিট ১৮ টাকা। জেনারেটরের ১০০ কেভি থেকে ২ কেভি পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের জেনারেটরের বিদ্যুৎ খরচ আনুমানিক কিলোওয়াট প্রতি ২৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। এ হিসাবগুলি আমি অংক কষে বের করেছি তার সাথে কমবেশী ২০% পাথর্ক্য হতে পারে। ব্যাটারি ব্যাংক ব্যবহার করেও সোলারের খরচ এখনও জেনারেটরের সর্বনিন্ম খরচ থেকেও কম। ব্যাটারি ব্যতীত দিনে সোলার সিস্টেম আমরা ব্যাপকভাবে ব্যাবহার করতে পারি।
সারাদেশে সমস্ত ইরিগেশন সিস্টেম ব্যাটারি ব্যাংক বিহীন  সোলার সিস্টেমের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়। তবে যেহেতু সোলারের বিদ্যুৎ সূর্য কিরণের উপর নির্ভরশীল তাই বিদ্যুতের পরিমাণ দিনের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হবে সেহেতু ছোট ব্যাটারি ব্যাংক প্রয়োজন হবে সোলারের পাওয়ার স্টেবিলাইজ করার জন্য। বাংলাদেশের আনুমানিক ৩০% এলাকায় সেচে বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়। এতে প্রায় ৭০০-৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়
(তথ্য: www.iebeed.org)
৭০% এলাকা ধরা যাক ডিজেলের মাধ্যমে সেচের ব্যবহার হচ্ছে। আর দেশে সোলার ইরিগেশন সিস্টেমের প্রজেক্টের সংখ্যা (মে ২০১৪ পর্যন্ত) এখনও একশত অতিক্রম করেনি। তবে অতি শীঘ্রই সরকারের ১০,০০০ ডিজেল চালিত পাম্পকে সোলারে প্রতিস্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশে বেশ কিছু প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান সোলার ইরিগেশন সিস্টেমে এগিয়ে আসতে শুরু করেছে। কারণ বিদ্যুতের বিল থেকে সোলার খরচ কমে গেছে। তবে ব্রাশলেছ ডিসি মটর(BLDC) ব্যবহার করলে কম বিদ্যুৎ খরচে আরও বেশী পানি তোলা যাবে।
বাংলাদেশে ১২ লক্ষ ডিজেল পাম্প ব্যবহ্রত হয়। যার জন্য ৮০কোটি লিটার ডিজেল ব্যবহ্রত হয়। যার মূল্য ৫৪৪০ কোটি টাকা। এ তথ্য “MINISTRY OF POWER, ENERGY AND MINERAL RESOURCES” এর   ওয়েব সাইটে পাওয়া যাবে। আমরা ধীরে ধীরে হয়ত বা ২০-২৫ বছরে সমস্ত ডিজেল পাম্প সৌর শক্তিতে রূপান্তর করতে পারব। এতে ক্লিন এনার্জি ব্যবহারের পাশাপাশি আমরা আমদানিকৃত জ্বালানী সাশ্রয় করতে পারব। অনেকসময় অনেক জায়গায় অস্থায়ী ভাবে পানি সেচের প্রয়োজন হতে পারে সে সমস্ত স্থানে চাকা লাগানো ও টেনে আনা যায় সে ধরনের মোবাইল সোলারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
বিদ্যুৎ শক্তির বিশাল অংশ ব্যবহার হচ্ছে বৈদ্যুতিক মটরে। নতুন ব্রাশলেছ মটর আবিষ্কারে দেখা গেছে কম বিদ্যুৎ খরচ করে বেশী কার্য ক্ষমতা প্রদর্শন করছে। আমরা ভবিষ্যৎ এ ধরনের সাধারণ মটর বাদ দিয়ে ব্রাশলেছ মটর ব্যবহার করতে পারলে আরও বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারব। সোলারে পাম্প চালালে বৈদ্যুতিক মটরের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সোলারের এককালীন খরচটা অনেক বেশী। তবে একবার খরচটা করা গেলে আপনি ফল ভোগ করবেন দীর্ঘ ২০ বছরের জন্য। ২০ বছর অত্যন্ত কম মেনটেইন্যান্সে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে থাকবেন। যুদ্ধের সময় কোন দেশের ছোট বড় সকল কোম্পানি যেমন সমরাস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত থাকে তেমনি বর্তমান পৃথিবীতে ভবিষ্যৎ এর ফসিল ফুয়েল শেষ হওয়ার আগে আগে ব্যাপকভাবে সোলার এনার্জি ও উইন্ড এনার্জি ব্যবহারের প্রস্তুতির প্রয়োজন। ধারাবাহিক ভাবে সোলার প্যানেলের মূল্য কমে যাওয়া প্রমাণ করছে সোলারের মাধ্যমে সৌর শক্তি ব্যবহারের মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। সেইসাথে সোলার প্যানেলের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। তবে মুল্য কমার সাথে আনুপাতিক হারে ব্যবহার আরও বাড়তে থাকবে। আমাদের দেশে হয়ত আগামী এক/দুই বছরের মধ্যে যদি ওয়াট প্রতি খরচ ১৫ টাকার উপরে উঠে তখন ব্যাপক আকারে সোলারের ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। এখনও যদি সরকার বিদ্যুৎ এর ভর্তুকি তুলে দিয়ে ভূর্তকি বিহীন বিদ্যুৎ বিল নির্ধারণ করে তবে তা মনে হয় ইউনিট প্রতি ১৫ টাকার নীচে থাকবে না। তখন ব্যাপক হারে সোলারের ব্যবহার শুরু করবে কারণ সোলারে ব্যাটারি বিহীন খরচ মাত্র প্রতি ইউনিট ৬ টাকা। দেশের প্রয়োজনে বিদ্যুৎ এর ভর্তুকি তুলে দিয়ে বিদ্যুৎ বিল বাড়াতে হবে। সোলার সামগ্রীর ট্যাক্স সম্পূর্ন মওকুফ করা প্রয়োজন এবং তা ক্রমাগতভাবে বহাল রাখতে হবে। সেই সাথে সোলারের বিনিয়োগকারীদের সোলার সিষ্টেমের বিনিয়োগের সম পরিমাণ টাকার ট্যাক্স মওকুফ করে দিলে সোলারের ব্যাপক বিস্তৃতি হবে।

আসুন পরিবেশের প্রয়োজনে ও দেশের প্রয়োজনে আমরা সকলে সোলারে বিনিয়োগ ও ব্যবহার বৃদ্ধি করি।


Monday, May 26, 2014

টেকনো যাকাত

আজ থেকে প্রায় চার বছর আগে আমি একজন সেনা অফিসারের সংস্পর্শে এসেছিলাম।  তার যাকাতের টাকার একটা ব্যতিক্রমধর্মী কার্যক্রম দেখে অবাক হয়েছিলাম।
সে প্রতি বছর যাকাতের জন্য যা হিসাব করত তা ইসলামী ব্যাংকের তহবিলে জমা রাখত। সে টাকা থেকে যা লভ্যাংশ পেত তা মাসে মাসে দরিদ্র নিকট আত্মীয়দের প্রদান করত। তার এ পদ্ধতিটি কোন হুজুর সহি বলেনি। আল্লাহ ভাল জানেন।
তার কথা হল; “আমি প্রথমত: যাকাতের টাকা নিকট আত্মীয়দের দিব এবং এমনভাবে দিব যেন তারা পরবর্তীতে যাকাত নিতে না হয় এবং স্বাবলম্বী হতে পারে। আমি ভ্যান কিনে দিয়েছিলাম একবছর পর দেখলাম ভ্যান ভেঙ্গে চুরে তার লোহা দিয়ে আমার নিকট আত্মীয় কটকটি খাচ্ছে। আমার কাছে পরের বছর যথারীতি যাকাত দাবী করছে।  এর পর আমি চিন্তা করলাম, মাসে মাসে টাকা দিব” আমি বললাম, এতে তো তাকে স্বাবলম্বী না করে নির্ভরশীল করা হল। সেই অফিসার উত্তর দিল, “স্বাবলম্বী বানানোর বিনিয়োগ করে অপচয় করার চেয়ে আমি বিনিয়োগ করে তাদের লাভ নিয়মিত দেব সেই ভাল” এ ধরনের যাকাতের বিষয় জানার পর আমার মাথায় টেকনো যাকাতের আইডিয়া আসল।
ধরুন স্ত্রীর স্বর্ণের ও আপনার  অন্যান্য বিষয় বাবদ যাকাত হয় বাৎসরিক ২৫,০০০ টাকা।
এখন এই ২৫,০০০ টাকায় বাসস্থানে বিদ্যুৎ বিভ্রাট থেকে বাচার জন্য স্থানীয়ভাবে নির্মিত ১০০০ ওয়াটের আইপিএস ১২ ভোল্টের ব্যাটারি সহ কিনে নেন। একটি বৈদ্যুতিক মিটার সেট করে কত বিদ্যুৎ আইপিএস উৎপাদন করেছে তার হিসাব রাখি মাসের শেষে যত বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে তা পিডিবি বা পল্লি-বিদ্যুতের রেট অনুযায়ী যাকাতের টাকায় অর্জিত আয় হিসাবে নির্ধারণ করি। কারণ যাকাতের টাকা বিনিয়োগ করার কারণে এ লাভটুকু পাচ্ছি। তবে আমরা ব্যাটারির চার্জ করার জন্য যে বিদ্যুৎ খরচ করছি তা আমরা আমাদের বিনিয়োগের বাইরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে যাকাতের বাইরের বাড়তি খরচ ধরে নিতে পারি। কারণ যাকাতের টাকা ছাড়া আইপিএস ক্রয় করলে মুল মিটারের বাড়তি বিলটা অবশ্যই আমাদের দিতেই হত। এছাড়া জেনারেটর চালালে এর চেয়ে বেশী খরচ হত।
দ্বিতীয় বছরে ২৫,০০০ টাকা দিয়ে আপনি ৪০০ ওয়াটের চারটি সোলার প্যানেল কিনে নিলেন। আপনার বাসার ছাদের উপর চারটি ১০০ ওয়াট বা দুটি ২০০ ওয়াটের প্যানেল সেট করে নিলেন। এবার এটা আগের বছরের কেনা আইপিএস এর সাথে জুড়ে দিন। প্যানেল লাগানোর পর আপনার বিদ্যুৎ বিল কমে আসবে কারণ আপনার আইপিএস চার্জ করার কম খরচটা আপনি যাকাত মিটারের সাথে উৎপাদিত বিদ্যুতের হিসাবের সাথে জুড়ে দিয়ে সে অনুযায়ী যাকাত হতে লাভ নির্ধারণ করে মাসিক বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারবেন। তবে আপনার সিস্টেমটা অবশ্যই এমন থাকবে যাকাত মিটার তখনই চালু থাকবে যখন আইপিএস বা সোলার বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। অর্থাৎ আইপিএস এর ১০০০ ওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের লোডে থাকলে যাকাত মিটার রিডিং দিবে না।
৩য় বছরে ২৫,০০০ টাকায় আরো সোলার প্যানেল ক্রয় করে আরো বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা যেতে পারে। আপনার বিদ্যুৎ বিল যদি আসে ২০০০ টাকা আর সোলার ব্যবহার করে যদি আপনি তিন বছরে ১০০০ টাকা কমাতে পারেন তবে যাকাত বিনিয়োগ থেকে আপনি প্রতি মাসে কমবেশি ১০০০ টাকা যাকাতের লভ্যাংশ দান করতে পারেন। বছরে ২৪,০০০ টাকা যাকাত বিনিয়োগের আয় আসবে। তিনবছরে প্রায় আপনার সম্পূর্ণ বাৎসরিক যাকাতের সমান টাকা আপনি বিতরন করতে পারবেন।
৪র্থ বছরে হয়ত আপনাকে পুনরায় ব্যাটারি কেনার জন্য যাকাত ফান্ড খরচ করতে হবে। এভাবে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করে মাসিক যাকাতের টাকা বর্ধিত করতে পারেন।
তবে সরকারী বা অন্যান্য বদলীর চাকুরীজীবী তাদের জন্য পদ্ধতিটি সুবিধাজনক হবেনা কারণ যেহেতু তারা দৌড়ের উপর থাকেন। যাদের নিজেদের বাসাবাড়ি আছে তার এই টেকনো যাকাত ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করতে পারেন।
বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হচ্ছে কারণ দেশের অধিকাংশ মানুষ অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান,চিকিৎসা ও শিক্ষা ইত্যাদি মৌলিক চাহিদাগুলো মধ্যম মানের সচ্ছলতায় মিটাতে পারছে।
যাকাত দশ বছর আগেও নিকট আত্মীয়দের মাঝে দেয়া যেত এখন তেমনিভাবে যাকাত উপযোগী নিকট আত্মীয় পাওয়া যায় না।
আমার টেকনো যাকাতের বিবেচনায় আপনার গরীব আত্মীয়ের কেউ যদি কিস্তিতে সোলার প্যানেল কিনে থাকেন তবে তার পুরো টাকাটা পরিশোধ করে তাকে ধারমুক্ত করা যায়। কারণ সোলার সিস্টেম অর্থ সাশ্রয়-কারী ব্যবস্থা এতে জেনারেটর বাবদ বা হারিক্যানের কেরোসিনের খরচ লাঘব হচ্ছে। এতে যে কোন পরিবারের কেরোসিন খরচ সাশ্রয়ের পাশাপাশি সেভিং বৃদ্ধি পাবে।
অথবা যাদের বিদ্যুৎ বা সোলার সিস্টেম নাই তাদের সোলার সিস্টেম কিনে দিতে পারেন।
আমরা কয়েকজন মিলে ছোট গ্রিড সিস্টেম করে একটা লোকালয়কে সংযোগ করতে পারি। হয়তবা ১-২লক্ষ টাকায় ১০-২০টি পরিবারকে আনুমানিক ৬০ ওয়াট করে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ দিতে পারবেন। এরমধ্যে যারা যাকাত নিবেন না তারা খরচ দিবেন আর যারা যাকাত নিবেন তারা নিখরচায় বিদ্যুৎ পাবেন। এতে দরিদ্রদের রাতের বেলাও উপার্জনের কাজ যেমন: সেলাই,খেলনা তৈরি,হস্তশিল্প সামগ্রী তৈরি করে রোজগার বাড়াতে পারবে। বাচ্চারা রাতে সোলারের আলোতে পড়াশোনা করে স্বনির্ভর হতে পারবে।

এ বিষয়ে ধর্মীয় জ্ঞানী ব্যক্তিবর্গ আমার প্রস্তাবটা ধর্মীয় দৃষ্টিতে সহি আছে কিনা ভাল বলতে পারেন। তবে সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে টেকনো যাকাত  বাড়তে পারে। আপনার একজন দরিদ্র নিকট আত্মীয় কম্পিউটার শিখেছে। এখন একটি ল্যাপটপ হলে সে আউট সোসিং করে আত্মনির্ভরশীল হতে পারবে। আপনি নিশ্চয়ই এ ধরনের টেকনো যাকাতকে নিরুৎসাহী হবেন না। আসুন আমরা আয় বর্ধক টেকনো যাকাত চালু করি।
------------------------------------------------------------------------

কৃষি মজুর আরোজউল্লাকে টেকনো যাকাত প্রদান
মো: আরোজউল্লা পেশায় একজন কৃষি মজুর। তার স্ত্রী পার্ট টাইম বাসাবাড়িতে ঠিকা কাজ করে। তাদের এক মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে বৃত্তি পেয়ে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে । শ্রেণীতে রোল একসম্ভাবনাময় প্রতিভা। সেখানকার শিমুলিয়া গ্রামে তাদের বসবাস। পড়াশোনা করে হারিকেন জ্বালিয়ে। দীর্ঘ সময় ইচ্ছে থাকলেও পড়তে পারে না। বাড়ী থেকে মাত্র ৫০০ গজ দুরে পল্লী বিদ্যুৎ এর খুঁটি। পাঁচ বছর অপেক্ষা করে বিদ্যুৎ না পেয়ে উল্লেখিত শিমুলিয়া গামের অনেকেই আর ডি এফ মিরপুর,কুষ্টিয়ার শাখার মাধ্যমে সৌর বিদ্যুৎ সংযোগ শুরু করে।

এই প্রেক্ষাপটে আমি (মেজর মো: তারেক মাহমুদ সরকার)  আমার স্ত্রীর অনুপ্রেরনায় আমার প্রথম টেকনো যাকাতের কার্যক্রম শুরু করি গত ৭ জুলাই ২০১৪ তারিখে আরোজউল্লা বাড়ীতে সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে। ছবিতে আমি(চশমাওয়ালা),আমার বিজিবি সদস্য,সৌর বিদ্যুৎ এর লোক,মিরপুর পল্লী বিদ্যুৎ এর প্রকৌশলী ও খালী-গায়ে টেকনো যাকাত গ্রহণকারী আরোজউল্লা। বাড়ীর টিনের চালের উপরে ৪০ ওয়াটের সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে, যা দ্বারা ৬০ অ্যাম্পিয়ার এর ব্যাটারি চার্জ হবে এতে দুইটি তিন ওয়াট এক ফুট টিউব ও দুইটি ছোট ডিসি ফ্যান চলবে।
---------------------------------------------------------


আমি আমার বন্ধুবান্ধবদের গ্রুপ  কৃষি মজুর আরোজউল্লাকে টেকনো যাকাত প্রদান লেখাটি দিলে নীচের মন্তব্যগুলি পাই। তারজন্য সকলকে প্রনঢালা শুভেচ্ছা জানাচ্ছি:

Abdul Aziz Bhuya' via Ex-cadets'89 date: 8 July 2014
Good job done.we appreciate ur efforts.

Zillur Rahman 8 July 2014 14:47
Simply great!! Congratulations!! Alhamdulillah!

নুরুজ্জামান ZAMAN  8 July 2014 14:55
Hi Tech Tareq
Assalamualikum.  Praise worthy work to follow your foot print.
Warmest Salams. Tammam O Allahi.
Nuruzzaman

saifuddin4210 via রজত বন্ধন date: date:  8 July 2014
Much appreciated

Saif-uk

islam.arshadul@gmail.com  date:  8 July 2014
Dosto,
You are a genius. Keep going friend. Definitely you will succeed and many of us will follow you.
Take care,
Arshad
Toronto.

'Akbar' via রজত বন্ধন  date:  8 July 2014
Tarek...,
Good but how it's going to uplift his ROJKAR.....
Akbar...

Tarek Topu  8 July 2014 18:44
Dosto Tareq

My salute to your good work. You inspired me.

Tarek,Engrs

Shahriyar 8 July 2014 19:00
Dear Tareq,

Alhamdulillah. May Allah Allah always give you to continue with good work & deeds 

Shahriyar

Md Ashraful Islam 9 July 2014 10:44
Dosto good job done.kind regards Ashraf

md nurul alam 9 July 2014 12:41
Dear Tareq,

Alhamdulillah. May Allah Allah always give you to continue with good work & deeds 

LT COL NURUL ALAM
ADST
AREA HQ CTG CANTT.
Bangladesh Army.
01711733416

 Reazur Rahman <reazurrahman4161@gmail.com date: 9 July 2014 14:03
tareq, really very great job.

Anwarul Azim 9 July 2014 14:14
Good job done....cont.................

Saif Islam  9 July 2014 22:35
great job

Sunday, May 18, 2014

আমি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ দেখতে পেয়েছি

গত ১৪মে ২০১৪ রাতে আমরা কুষ্টিয়া থেকে বিজিবি অফিসাররা ডিসি কুষ্টিয়ার পক্ষ থেকে সার্কিট হাউসে দাওয়াত পাই। উপলক্ষটা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের এ্যামবেসেডর ড্যান মজিনার কুষ্টিয়ায় আগমন। ড্যান মজিনা গাজীপুরের কাপাসিয়ার লোহাদি গ্রামের একটি সোলার সিস্টেমে গত ৯ মে ২০১৪ তারিখে ভিজিট করেছেন। পরে পত্রিকায় জানতে পারলাম, ফেরার পথে তার গাড়ী দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছিল।
ড্যান মজিনা গাজীপুরের কাপাসিয়ার লোহাদি গ্রামের সোলার সিস্টেমের পরিদর্শনের,অভিজ্ঞতায় বললেন, তিনি কাপাসিয়ার সৌর ব্যবস্থায় বাংলাদেশের নতুন ভবিষ্যৎ দেখতে পেয়েছেন আমি তখন তাকে বললাম, আপনি যদি দৌলতপুরের চরে যান তবে দেখতে পাবেন, প্রত্যেকটি বাড়ীতে  সোলার সিস্টেম আছে। তদুপরি বাংলাদেশের এমন কোন বাড়ী নেই যাদের হয় বিদ্যুৎ আছে নয়ত সোলার সিস্টেম আছে। আমি তাকে রাতের কঙ্গোর অন্ধকার জগতের বর্ণনা করলাম। কঙ্গোতে অত্যন্ত উচ্চমূল্য চায়না থেকে আমদানি করা সোলার সিস্টেম কিনতে হয়। সেখানে আমরা বাংলাদেশে সোলার সিস্টেম তৈরি করা শুরু করেছি এবং প্রতি ওয়াট সোলারের মূল্য এক ডলারের নীচে চলে এসেছে।
ড্যান মজিনা সবকিছু শুনে বললেন, গাজীপুরের কাপাসিয়ায় আমি ভবিষ্যৎ দেখেছি এজন্য নয় যে তারা গ্রিন এনার্জি ব্যবহার করছে। তারা এমন কিছু চালু করেছে যা আমাদের প্রচলিত বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থাপনাকে বদলে দেবে যা কিনা ন্যানো গ্রিড সিস্টেম। তিনি আরো বললেন, তারা বিদ্যুৎ বিতরণে প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়ার জন্য হাইব্রিড সিস্টেম করেছে। এর জন্য মাত্র ৮ লক্ষ টাকায় ৫০ টি পরিবারকে বিদ্যুৎ দিচ্ছে।
আমি ইন্টারনেট হতে পড়াশোনা করে আর বিজিবি'র তিন কিলোওয়াট সিস্টেম দেখেছি এ অভিজ্ঞতায় মজিনাকে বললাম, প্রথমে সোলার থেকে ১২ ভোল্ট ব্যাটারিকে চার্জ করে তা থেকে আইপিএস এর মাধ্যমে ডিসি কে এসিতে রূপান্তর করে পরে তারের মাধ্যমে বিভিন্ন বাড়ীতে সোলার বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়। মজিনা বললেন, তিনি এটা জানেন। কিন্তু তিনি যা দেখেছেন তা আলাদা রকম কিছু। যা হল ২২০ ভোল্টের ডিসি গ্রিড ও প্রিপেইড মিটার । এতে লাইট, টিভি ও ল্যাপটপ চলছে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে।
গত ১৪ মে ২০১৪ তারিখ রাত থেকে মজিনার ২২০ ভোল্ট ডিসি গ্রিড কথাটি আমার মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে। রাতে ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে ২২০ ভোল্ট ডিসি গ্রিড সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য পেলাম না। পরদিন ১৫ মে অফিসে গিয়ে অপারেটরকে বললাম, গাজীপুরের কাপাসিয়ার ইউএনও সাহেবের মোবাইল নম্বর বের কর। যদিও জানি কাপাসিয়া উপজেলার ওয়েবসাইটে গেলে আমি ইউএনওর নম্বরটা সহজেই পাব। তবুও অপারেটরকে কাজ দেয়া আর কি। ঘন্টা খানেক পর অপারেটর নম্বরটা দিল। ইউএনওকে নিজের পরিচয় দিয়ে, কাপাসিয়ার ড্যান মজিনা যে সৌর সিস্টেম দেখেছেন সে সংস্থার কারো মোবাইল নম্বর চাইলাম। ইউএনও এই এলাকার চেয়ারম্যানের মোবাইল নম্বর দিলেন। অতঃপর বাবলু চেয়ারম্যানের কাছ থেকে সোলারিক কোম্পানির স্বত্বাধিকারীর দিদার ভাইয়ের মোবাইল নম্বর পেলাম। ভাই এজন্য বানিয়ে ফেললাম কারণ তিনি ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের বড় ভাই। অর্থাৎ ক্যাডেট কলেজের ভাইয়া গ্রুপের আর আমি বরিশাল ক্যাডেট কলেজের।
আমি  ছোট্ট পরিচয়ে উনাকে বললাম, আমি আপনার ২২০ ভোল্ট ডিসি গ্রিড সম্পর্কে জানতে চাই। ইতিমধ্যে আমি উনার ওয়েবসাইটের সন্ধান পেয়েছিলাম। ওয়েবসাইটের সংবাদগুলো থেকে সোলারিক শব্দটা পেয়েছিলাম আর এটা দিয়ে সার্চ দিয়ে তার ওয়েব সাইট পেয়ে যাই। ওয়েবসাইটি হল: http://solar-ic.com. আমি উনাকে বললাম, কুষ্টিয়া বিজিবি,র কিছু ক্যাম্প আছে পদ্মার পারে ও পদ্মার চরে, যেখানে অনেক অনেক বসতি আছে যারা হোম সোলার সিস্টেমে চলে। তাদের এলাকায় ন্যানো গ্রিড সিস্টেম করা সম্ভব কিনা। আমি এ বিষয়ে অফিস টাইমের বাইরে রাতে ফোন করব বলে জানালাম। ইতিমধ্যে লাঞ্চের পরে উনার ওয়েবসাইট ও ভিডিও দেখে ডিসি গ্রিড সম্পর্কে কিছুটা ধারনা নিতে পারলাম।
তারপর আমার কোয়েরিগুলো নোটবুকে লিখে তাকে মেসেজ করলাম, আপনার কাছ থেকে ২০ মিনিট চাচ্ছি। আপনি যখন ফ্রি আমাকে কল বা মিস কল দিন। রাত আনুমানিক ৮টায় কল পেলাম। আমি লাইন কেটে কল ব্যাক করলাম। তিনি আমার প্রশ্নগুলি একে একে উত্তর দিতে থাকলেন। তিনি দীর্ঘ ৫১ মিনিট সময় নিয়ে আমাকে বুঝলেন। তার সংক্ষিপ্তসার নীচে তুলে ধরছি:
১। আমাদের ব্যবহার্য প্রায় সকল সামগ্রী ২২০ ভোল্ট এসিতে যেমন চলে তেমনি ডিসিতে চালানো যাবে। মোবাইলের চার্জার,ল্যাপটপ,আগের মডেলের ফিলামেন্ট বাতি( ইনকেনডিসেন্ট), এনার্জি সেভিং টিউব লাইট ইত্যাদি অনেক সামগ্রী। এগুলো ১২০-২২০ ডিসির মধ্যে চলবে।
২। আমাদের সব সামগ্রী যদি ডিসিতে চলে তবে ডিসি সোলার সিস্টেম ও ডিসি ব্যাটারিকে এসি পাওয়ারে কনভারসন করার প্রয়োজন নেই। কারণ এসির সামগ্রীগুলো সমপরিমাণ ডিসি দিয়ে চলবে। ডিসি কে এসি করতে ইনভার্টরে যে পাওয়ার লস হয় তা থেকে সোলারে উৎপাদিত মূল্যবান বিদ্যুতকে রক্ষা করা যায়।
৩। এসি বৈদ্যুতিক পাখা ডিসিতে চলবে না। তাই ডিসি পাখা ব্যবহার করা ভাল। অন্য দিকে এসি পাখার ওয়াট হল ৮০ আর  ডিসি পাখার ওয়াট হল ২০। সুতরাং এসি পাখার সমান বিদ্যুৎ দিয়ে ৪টি ডিসি পাখা চালানো যাচ্ছে। তাই ব্যাটারির ডিসিকে এসি করে এসি মটর চালানোর চেয়ে সরাসরি ডিসি মটর ব্যবহার করা যায়।
৪। ব্যাটারির ডিসি ভোল্ট(১২ ভোল্টকে) বেশিদূর নেয়া যায় না এর বিপরীতে ১২০-২২০ ভোল্ট ডিসি এসির মতই দুরে বিদ্যুৎ নেয়া যায়। প্রায় ১ কিলোমিটার দূরত্বে পাঠানো সম্ভব হয়েছে।
৫। সিস্টেম লস ও অন্যান্য সমস্যা মুক্ত রাখার জন্য তার আন্ডার গ্রাউন্ড করা যাচ্ছে। এসি তার আন্ডারগ্রাউন্ড সমস্যা কিন্তু ডিসিতে সাধারণ চিকন তার পিভিসি পাইপের মধ্যে দিয়েই আন্ডারগ্রাউন্ড করা যাচ্ছে।
৬। ক্যাপাসিটি বাড়াতে প্যারালালি পাওয়ার জেনারেশন বা লোড বৃদ্ধি করা যাবে অনেকটা প্যারালাল-ভাবে ব্যাটারির সংযোগ দেয়ার মত। এসি সিস্টেমে এ ধরনের সংযোগ জটিল। এমনকি পুরো সিস্টেম বদল করার প্রয়োজন পড়বে।
৭। ৪৮ ভোল্ট ডিসি থেকে ২২০ ভোল্ট ডিসিতে করভারশন করা হয় সেখানে লস কমানোর জন্য সেন্সরের মাধ্যমে লোড অনুযায়ী পাওয়ার মডিউলের সক্রিয় থাকার সংখ্যা কম বেশী করে বিদ্যুৎ লস আরও দক্ষতার সাথে কমানো হয়। যা কিনা অত্যন্ত আধুনিক ও দক্ষ প্রযুক্তি। এভাবে সোলার সিস্টেমের মূল্যবান বিদ্যুতের ব্যবহারিক অপচয় ব্যাপকভাবে রোধ করা যায়।
৮। প্রতিটি গ্রাহককে অনলাইন সিস্টেম,সার্ভার ও জটিল নেটওয়ার্ক ছাড়া অল্প খরচে প্রিপেইড মিটার দেয়া সম্ভব হচ্ছে।
৯। ডিসি গ্রিড হল অদূর ভবিষ্যতের সবচেয়ে উপযোগী ব্যবস্থা যা কিনা বিদ্যুতকে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ব্যবহার করে।
আমি জনাব দিদার ভাইয়ের তথ্যগুলি নিয়ে আমার মত ইন্টারনেটে গবেষণা করতে বসলাম। আমি ডিসি ট্রান্সমিশন নিয়ে যা পেলাম তা এক এক করে তুলে ধরছি:
১। ডিসি ট্রান্সমিশন সিস্টেম ধারনা করা যায় এটা আগামী শতকের প্রযুক্তি কারণ গিগা-ওয়াট বিদ্যুৎ কম লসে ও কম খরচে ডিসি গ্রিডে পরিবহন সম্ভব। বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ পাওয়ার ট্রান্সমিশন হচ্ছে HVDC  সিস্টেমে রাশিয়ায় ও চীনে।
২। এসি গ্রিড হতে ডিসি গ্রিডে সবচেয়ে বেশী দূরত্বে বিদ্যুৎ পরিবহন করা যায়।
৩। আন্ডার গ্রাউন্ড বা সাগরের তল ডিসি বিদ্যুতই বেশী দূরত্বে পরিবহন করা যায়। ৮০০ কিমি সাগরের নীচ দিয়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে আর ৫০ কিমি বেশী এসি বিদ্যুৎ আন্ডারগ্রাউন্ড বা সাগরের নীচ দিয়ে নিতে স্কিন এফেক্ট ও ইনডাকশন লসের জটিল সমস্যায় পড়তে হয়।
৪। ডিসি পাওয়ারে ট্রান্সমিশন এসি থেকে নিরাপদ।
৫। ডিসি পাওয়ার ট্রান্সমিশন এসি থেকে সাশ্রয়ী।
৬। তবে ডিসি পাওয়ায় ট্রান্সমিশন সফল না হওয়ার পিছনে মূল কারণ পাওয়ার স্টেপ আপ ও স্টেপ ডাউন ডিসি ট্রান্সমিশনে খুবই ব্যয়বহুল ও জটিল। এই কারণে ডিসি সিস্টেম মোটেই জনপ্রিয়তা পায়নি। এসি ট্রান্সমিশন অত্যন্ত সহজ ও কম ব্যয়বহুল। খুব সহজেই কয়েল পেঁচিয়ে যেখানে সেখানে এসি বিদ্যুৎ স্টেপ আপ ও স্টেপ ডাউন করা যায়। আয়রন কোরে ইনডাকশনের মাধ্যমে বেশী প্যাচ দিলে বেশী ভোল্টের বিদ্যুৎ আর কম প্যাচ দিলে কম ভোল্টের বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। ট্রান্সফরমারে মোটা তার দিলে বেশী এ্যাম্পিয়ারের বিদ্যুৎ আর চিকন তার দিলে কম এ্যাম্পয়ারের বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে ।
৭। ভবিষ্যতে পৃথিবীব্যাপী ব্যাপকভাবে ডিসি ট্রান্সমিশনের চিন্তা চলছে কারণ ডিসি ট্রান্সমিশনের স্টেপ আপ ও স্টেপ ডাইন করার জটিলতা সাশ্রয়ী প্রযুক্তিতে রূপান্তর হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা পৃথিবীতে ১০০ বছর পরের যে প্রযুক্তি অর্থাৎ ডিসি গ্রিড সিস্টেম চালু হওয়ার আশা করছেন সেখানে কাপাশিয়ার পল্লীর কুঠিরে সে প্রযুক্তি দেখে  যুক্তরাষ্ট্রের এ্যামবেসেডর বলেছেন,”তিনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ দেখতে পেয়েছেন


বাংলাদেশের ভবিষ্যতকে এই পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের সকলের কাছ থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা পেতে পারেন ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ক্যাডেট ও সোলারিক কোম্পানির স্বত্বাধিকারী জনাব দিদারুল ইসলাম। উনার বেশ কিছু আবিষ্কারের প্যাটেন্ট রয়েছে। আমরা তাঁর ও তাঁর প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক উন্নতি কামনা করি। আপনারা সময় পেলে সোলারিক কোম্পনীর ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন।

Tuesday, May 13, 2014

অনগ্রসর সেনাজীবনে মন-প্রফুল্ল রাখার উপায়

এডিট করে স্বনির্বাচিত কলাম ২য় খন্ডে প্রকাশ
১।       আমাদের প্রত্যেকের ভাগ্যের জন্য আমরা নিজেরা দায়ী। যখন যেদিকে ছাতা ধরা প্রয়োজন তখন সেদিকে ধরাটা না শিখলে জীবনভর ধরা খেতে হবে। এছাড়া কখনও উপরালার সাথে কেরামতি দেখাতে নাই।

২।       এখন ইন্টারনেটের যুগে আমরা প্রত্যেকে অন্যদের সম্পর্কে কিছু না কিছু জানতে পারছি। তবে পরিবেশ পরিস্থিতি আমাদের সবাইকে  পরিবর্তিত করে এটা বুঝতে হবে।

৩।       অগ্রগামী বন্ধুদের আমন্ত্রণে যাওয়ার পূর্বে যোগাযোগ ও অন্যান্য ব্যবস্থাদি সম্পর্কে জেনে গেলে বউ বাচ্চাসহ অপমানিত হওয়ার ভয়টা থাকবে না।  জীবনের ব্যর্থতা ও সার্থকতা আপেক্ষিক বিষয়।
         
          ক।       আজ ভাল আছি, আগামীকাল ক্ষুদ্র ভুলে  হয়তবা আমরা যে কেহ গহীন গহ্বরে  পতিত হতে পাড়ি।
              খ।       সফলতার ধারাটা যে সবসময় ঊর্ধ্বমুখী থাকবে তারও নিশ্চয়তা নাই।
৪।       একটি পর্যায়ে আসলে আমাদের নিজেদের সফলতাকেও ছাড়িয়ে যায় সন্তানদের সফলতা। তাই বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় স্বজন ও ক্যারিয়ার গড়ার সামাজিকতা থেকে সন্তানদের গড়ার চেষ্টা ও সময় ব্যয়টা অনেক বেশী কার্যকর।

৫।       নিজের গ্রাফটা যখন ঊর্ধ্বমুখী না হয়ে সমান্তরাল হয় তখন বিশেষ কিছু সুবিধা অর্জন করা যায়।
       ক।       অফিস ও কাজের স্ট্রেস কমে আসে কার জিরো এরর সিন্ড্রোম  পারফেক্টসনিস্ট হওয়ার টেনশন কমে যায়।

          খ।       ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় কাজে স্বাচ্ছন্দ্য আসে অতিরিক্ত চাপ কম হয়।

          গ।       চাপ-মুক্তভাবে ভবিষ্যৎ এর জন্য Goal Setting এর জন্য বেশী সময় ও ফুসরত মিলে।

       ঘ।       অফিসে হেটে যাওয়ার অভ্যাস, বাজারে যাওয়ার অভ্যাস ও সীমিত আয়ের মধ্যে জীবনধারণ করার অনুশীলন করে গেলে কোনরূপ শারীরিক ও আর্থিক দুর্ভাবনার সম্ভাবনা নাই।

       ঙ।       অফিস টাইমে ইন্টারনেট ব্রাউজ ও টেলিভিশন দেখা বাদ দিয়ে অফিসিয়াল কাজ,বই পড়া ও অন্যান্য সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত থাকলে চাকুরী ক্ষেত্রে কিছু সংখ্যক মানুষিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি দ্বারা কিছুটা বিব্রত হলেও মনটা প্রফুল্ল থাকবে। তবে সিগারেট ও মদ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা ছাড়তে পারলে শরীর ও মন আরো ভাল থাকবে ।

৬।       নীচের কয়েকটি বিষয় মেনে চললে শরীর ও  মন প্রফুল্ল থাকবেঃ
          ক।       সকালে ও বিকালে এক/দুই ঘণ্টা হাটা।
খ।       একঘণ্টা ধর্মীয় বা মটিভেশনাল বই পড়া।
গ।       প্রোটিন রিচ ব্রেকফাস্ট পেট ভরে খেলে।
ঘ।       তিনটি বিষয় বাদ দিতে হবে:
()     চিনি জাতীয় খাবার
()     ময়দার তৈরি খাবার
()     লবণ।  
৭।       আমাদের অনেক সময় বিশেষ করে অনগ্রসর পদবীতে নিন্ম মর্যাদায় কাজ করতে হয়। সে সময় কাজকে মনে করতে হবে "লো ভেল্যু টাস্ক"। অন্যথায় কষ্ট বাড়বে। লো ভেল্যু টাস্ক" সম্ভব হলে অন্যদের ডেলিগেট করতে হবে, আর যদি বস সাইজ করার জন্য করাতে চায় এবং ডেলিগেট করা সম্ভব না হলে "প্রায়োরিটি টাস্ক" ও "হাই ভেল্যু টাস্কের" ফাকে ফাকে করতে হবে। তবে আমি দেখেছি অফিস টাইমে শুধুমাত্র অন্যদের বীরত্বগাথা না শুণলে, টিভি দেখা ও ইন্টারনেট ব্রাউজিং বাদ দিলেই প্রচুর সময় হাতে পাওয়া যায়। তখন অনেক "লো ভেল্যু টাস্ক" করা সম্ভব হয়।
৮। অনঅগ্রসর অবস্থায় যারা অবশিষ্ট দিনগুলো চাকুরী পূর্ন করে অবসর যেতে চায় তাদের মন ও ইমোশন নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরী। অন্যথায় চাকুরী ছেড়ে বিকল্প চিন্তাই বুদ্ধিমানের কাজ।
৯।       পরিশেষে বলব, অনগ্রসর আমরা যারা আছি তাদের জন্য একটাই উপদেশ থাকবে, অনেক বেশী কর্মঠ হয়ে প্রচুর জীবনী শক্তি ধরে রাখতে হবে কারণ জীবন যুদ্ধের  অনেক দীর্ঘ পথ সামনে রয়েছে। আর ‘‘আর্থিক মুক্তির/Financial Freedom’’  চেষ্টা সর্বদা বহাল রাখতে হবে।

          সুতরাং, পরিশেষে আমার উপদেশ হবে নিজের চামড়াটা গন্ডারের চামড়া তৈরি করে দুইটা বিষয়ে Goal Setting  করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

ক।       Financial Freedom’’  এর লক্ষ্যে কাজ করা অর্থাত “নিজের যৌক্তিক চাহিদা অনুযায়ী সচ্ছল জীবন ধারন করা”
খ।       সন্তানদের পৃথিবীর বুকে  সৎ ও সফল মানুষ’’ হিসাবে প্রতিষ্ঠা।


বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয় পরিজন কে কি বলল, আর কেউ দুই/এক মিনিট দিল কিনা, সন্মান দেখাল কিনা সেটা মুলত: চিন্তা করলেই দু:খ বাড়বে। সেটা গুরুত্ব দিয়ে মন খারাপ করার কোন কারন নেই। জীবনটাকে প্রবাহিত রাখতে হবে বহমান নদীর মত।