১৯৯৪ সাল থেকে যখন আইটির হাতে খড়ি পাই। তখন থেকেই স্বপ্ন জাগে
কম্পিউটার ক্রয় করার জন্য। ১৯৯৬ দিকে কম্পিউটারের দাম ছিল প্রায় ৫০,০০০
টাকা অর্থাৎ আমার তৎকালীন ক্যাপ্টেনের সম্পূর্ণ বেতনের প্রায় পাঁচ মাসের বেতনের
সমান। আমার এ আশা সফল হয় ২০০০ সালে । ব্যাংকে ওডি করে ৩৬,০০০
টাকায় একটি কম্পিউটার ক্রয় করতে সমর্থ হই। ২০০২ সালে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন
সিয়েরালিওনে গেলে তখন কুমিল্লা সেনানিবাসের টিপরা বাজার থেকে কেনা কম্পিউটারটি
সাথে নেই। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে সিয়েরালিয়নে যাওয়ার সময় আরো একটি কম্পিউটার
কিনে পরিবারকে দিয়ে যাই। যাতে তারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে মিশনে আমার সাথে যোগাযোগ
করতে পারে। পরিবার তখন বগুড়ায় থাকত। বগুড়াতে তখনও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট আসেনি।
ডায়াল-আপ ইন্টারনেট ছিল। কম্পিউটারটি তখন ব্যাংকে লোণ করে ক্রয় করে দেই। পরবর্তীতে ছয়মাস পড়ে মিশন থেকে ছুটি এসে পরিশোধ করি। অবশ্য পারিবারিক যোগাযোগের প্রয়োজনে ওডি করে
ক্রয় করতে হয়েছে। বগুড়াতে যখন কম্পিউটার ক্রয় করে দিয়ে যাই সেটা ছিল এক অর্থে
অপচয়। কারণ এ কম্পিউটার দিয়ে আমার পরিবারের সাথে ইন্টারনেট যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি
। তখন টিএন্ডটি থেকে ইন্টারনেট সংযোগ আবেদন করেও পাওয়া যায়নি। সাধারণত তখন ঢাকা ও
চট্টগ্রামের বাইরে টিএন্ডটি হতে ইন্টারনেটের সংযোগ পেতে তিনমাস থেকে ছয়মাস সময়
লাগত। এ ধরনের দীর্ঘসূত্রিতার জন্য পরবর্তীতে আর ইন্টারনেটের জন্য চেষ্টা করিনি।
এখন অবশ্য কোম্পানি হওয়ায় বিটিসিএলএর ইন্টারনেট কিছুটা তাড়াতাড়ি সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তবে তখনও ঢাকা ও
চট্টগ্রামে বেসরকারি মালিকানার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডাররা অত্যন্ত কম খরচে
ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করত। টিএন্ডটি এর ইন্টারনেট প্রাপ্তির দীর্ঘসূত্রিতার
কারণে মিশনে থেকে পরিবারের সাথে যোগাযোগের জন্য অতিরিক্ত কম্পিউটার ও মোডেম কিনে
ব্যবস্থা করলেও তা অপচয়ে রূপান্তরিত হয়। বগুড়ায় আমার স্ত্রীর বাসার পাশের একটি
দোকানে নেট টু ফোনের ব্যবস্থা ছিল যারা কিনা বিটিসিএল থেকে ইন্টারনেট নিয়ে ব্যবহার
করত। সেই দোকানটিই মূলত আমার স্ত্রীকে
ইমেইলে চিঠি লিখলে তা প্রিন্ট করে বাসায় দিয়ে যেত। বিনিময়ে ২০টাকা নিত। আর মাঝে
মাঝে ভয়েজ মেইল বা ভিডিও মেইল পাঠালে তা ফ্লপি ড্রাইভে করে বাসার কম্পিউটারে দিয়ে
যেত। আর একান্তই আমার স্ত্রীর ফোন করতে ইচ্ছে করলে দোকানের নেট টু ফোন থেকে
যোগাযোগ করত। আমি ইমেইলের পাশাপাশি সপ্তাহে ১/২ দিন ইউএনের ফোনে ১০ মিনিট এক ডলার
রেটে কথা বলতাম। মূলত; ২০০২ সালের মার্চ থেকে ২০০৩ সালের
মার্চের সময়কাল পর্যন্ত মিশনের সময়টা আমার ক্রয়-কৃত কম্পিউটার, ডায়াল আপ মোডেম ও ওয়েব ক্যাম্প ক্রয়ে আনুমানিক খরচ ৪০,০০০ টাকা। এর পুরোটাই ছিল আইটি খাতে অপচয়, তখন স্বর্ণের দাম ছিল ৮০০০ টাকা
ভরি।
আমি মিশনে যে কম্পিউটারটি নিয়ে গিয়েছিলাম সেটা আমার খুব কাজে
লেগেছিল। সর্বদা কম্পিউটারের নানা কাজ করতে পেরেছি। মিশনে কম্পিউটার সংক্রান্ত
নানা কাজ শিখতে পেরেছি। অত:পর মিশন থেকে ফেরত আসার সময় জাম্বিয়ার একজন পুলিশ
অবজারভারের কাছে কম্পিউটারটি বিক্রি করে দেই ৬০০ ডলারে। প্রায় কেনা দামে
কম্পিউটারটি বিক্রয় করতে পেরেছিলাম। বিদেশে যাওয়ার সময় ক্রয় করা দেশের কম্পিউটারটি
আমি বিদেশ থেকে আসার পর আমার বড় ছেলের কাজে লাগে। তখন সে একটু কম্পিউটার নাড়াচাড়া করে
করে শিখতে শুরু করেছিল। তবে মোডেম বা ওয়েব ক্যামের কোন ব্যবহার তখন পর্যন্ত হয়নি। কিছুদিন আগে একজন কম্পিউটার মেকানিককে মোডেমটি দান করে দেই। আমার
কম্পিউটার অপচয়ের আরো দুটি বড়ো অপচয় হল ২২৫ ডলারে এক্সটারনাল সিডি রাইটার ক্রয়
করা। আমি মিশনে থাকাকালীন আমার একজন কোর্স-মেটকে দিয়ে আবুধাবি থেকে ২২৫ ডলারে এসার
এক্সটারনাল সিডি রাইটার ক্রয় করেছিলাম। তখন
সিডি-রাইটার যথেষ্ট পরিমাণে বাজারে পর্যাপ্ততা ছিল না। এই সিডি রাইটারটি ক্রয় করে
আমার সিডিরাইটার ব্যবহার করা শেখা ছাড়া কোন লাভই হয়নি। বরং অনেক সিনিয়রকে সিডি
কিনে রাইট করে দিতে হয়েছে। অথচ বাজারে সিডি রাইট করা যায় মাত্র ২০ টাকা রেটে।
তখনকার ২২৫x৬০=১৩৫০০ টাকা খরচে রাইটারটি না কিনে বাজার থেকে সিডি রাইট
করলে ১৩৫০০/২০=৬৭৫ টি সিডি রাইট করা যেত। সিডি রাইটারটি ক্রয় করার পর প্রায় তিন
বছর আমি এটি ব্যবহার করি। মনে হয় না তিন বছরের মধ্যে আমি ও অন্যান্যরা মিলে ২৫০ এর
বেশী সিডি কপি করতে পেরেছি। অথচ ২০০৩ সালের ১৩৫০০ টাকা যে সিডি রাইটার ক্রয় করেছি
তার থেকে অনেক উন্নত রাইটার অনেক কম দমে দুই/তিন বছরের মধ্যেই বাজারে পাওয়া যেতে
লাগল। তাই ব্যবহার ও প্রয়োজন না চিন্তা করে ক্রয় করে তা লাভজনক হয়নি। ২০০৩ সালের
শেষের দিকে আমি একটি স্ক্যানার কিনি। এই স্ক্যানারের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এটি দিয়ে
ফ্লিম ক্রয় করা যেত। এটি কিনে আমি ভাবলাম ক্যামেরায় ফ্লিম ডেভেলপ করার পর ছবি
প্রিন্ট করার আগে ছবিগুলির ফ্লিম স্ক্যান করে ভাল কোয়ালিটির ছবিগুলি প্রিন্ট করে
খরচ কমানো যায়। তখন বাজারে ছবি স্ক্যান করার জন্য খরচ হচ্ছিল ৫ টাকা করে। সে
হিসাবে ৯৫০০ টাকা দিয়ে স্ক্যানারটি কিনেছিলাম। ৯৫০০/৫=১৯০০ ছবি স্ক্যান করা হলে
এটার দাম উঠতে পারত। মনে হয়
প্রায় ৩৫০ টি ছবি স্ক্যান করি আর ১০০ মত ডকুমেন্ট স্ক্যান করি। এছাড়া ৫০/৬০ এর
বেশী ফ্লিম স্ক্যান করতে পারিনি। সর্বমোট হয়তবা ৫০০ মত স্ক্যান করি। যা কিনা দোকান
থেকে করলে সর্বসাকুল্যে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার মত খরচ হতে পারত। এর মধ্যে
স্ক্যানারটি নষ্ট হলে রিপেয়ার করে আনুমানিক ১৫০০ টাকা খরচ হয়। পরে আবার নষ্ট হলে
রিপেয়ার না করে একজনকে দান করে দেই। স্ক্যানারটির পিছনে খরচ ৯৫০০+১৫০০=১১০০০ টাকা
আর সার্ভিস প্রাপ্তি ৩০০০ টাকা। স্ক্যানারে আর্থিক লস হল ৮০০০ টাকা। ব্যবসায়িক
কাজে ব্যবহার না হলে স্ক্যানার কেনা একটা আর্থিক অপচয়।
ল্যাপটপ কেনায় অপচয় আমার জীবনের একটি বড় অপচয়। আমি ২০০৩ সালের
আনুমানিক নভেম্বর মাসে একটি ল্যাপটপ কিনি। তখন ল্যাপটপ কেনায় আমাকে ৬৫০০০ টাকা খরচ
করতে হয়। বাজারে তখন উন্নত মানের ল্যাপটপ পাওয়া যাচ্ছে তবে বর্তমান কালের
ল্যাপটপের ধারে কাছে নেই। আমি যেই ল্যাপটপ কিনেছিলাম তা ছিল কমপ্যাক প্রসারিও ৫০০
মেগাহার্টজ এএমডি প্রসেসর। আমি ঢাকার বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে গিয়েছিলাম চাইনিজ
ল্যাপটপ ক্রয় করতে। যা কিনা ডেস্কটপ প্রসেসর ও মাদারবোর্ড দিয়ে ক্লোন করে তৈরি।
তখন বাজারে ল্যাপটপের দাম অনেক বেশী থাকায় ডেস্কটপ মাদারবোর্ড ও প্রসেসর দিয়ে এক
ধরনের কম দামের ক্লোন ল্যাপটপ বাজারে চালু হয়েছিল। মূলত অনেক গভেষনা করে আমি সেই
ধরনের ডেস্কটপ টাইপ ল্যাপটপ কেনার পরিকল্পনা করেছিলাম, আমার ল্যাপটপ ক্রয়ের মূল কারণ ছিল আমি তখন পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি
ক্যাম্পে থাকি। ক্যাম্পে অনেক সময়। তাই একটা ল্যাপটপ থাকলে আমার ক্যাম্পের অফুরন্ত
সময়গুলি ভালভাবে কাটাতে পারব। তখন বিশেষ বিশেষ ক্যাম্পে মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া
যায়। এখনকার-মত মোডেম ও ইন্টারনেট চালু হয়নি। আমি বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে ৪৮০০০
টাকায় আমার ডেস্কটপ প্রসেসরের ল্যাপটপ টাইপ কম্পিউটারগুলি পেলাম। ৮০,০০০
টাকা থেকে শুরু করে ১,০০,০০০ টাকায়
বিভিন্ন ব্রান্ডের ল্যাপটপ দেখলাম। আমার বাজেট ৫০,০০০ টাকা।
যদিও মনে মনে চাইনিজ ব্রান্ডের ডেক্সটপ প্রসেসরের ল্যাপটপটি কেনার জন্য প্রস্তুত
হচ্ছিলাম। তখন একটি দোকানে কমপ্যাক প্রসারিও ডিসপ্লেতে দেখলাম। দাম ৬৫০০০ টাকা।
এতক্ষণ কোন ব্রান্ডের ল্যাপটপ কম দামে দেখিনি। হঠাৎ করে ৬৫০০০টাকা দাম দেখে আগ্রহ হল। ল্যাপটপটি চালু করে দেখলাম।
দোকানদার বলল এটা ইংল্যান্ডের সেল থেকে কেনা। মূল দাম আরো বেশী। আমি ল্যাপটপের
সাউন্ড ও ডিসপ্লেটা আমাকে মুগ্ধ করল। চাইনিজ ডেস্কটপ প্রসেসরের ল্যাপটপের সম্ভবত
কোম্পানির নাম দেয়া ছিল কিংস্টন। এর শব্দটা অত ভাল ছিল না। তবে কমপ্যাক প্রোসারিও
ল্যাপটপটি দোকানদার একবছরের ওয়ারেন্টি দিয়েছিল। রি-কন্ডিশন কমপ্যাক প্রসারিও
ল্যাপটপটি কেনা আমার জন্য ছিল একটা বড় ভুল। তখন ৬৫০০০ টাকা ল্যাপটপ কিনেছিলাম আর
ঢাকার বসুন্ধরায় ৫ লক্ষ টাকায় ৫ কাঠা প্লট পাওয়া যাচ্ছিল। মূল্যবান টাকার অমূল্য
ব্যবহার আমার দ্বারা হয়নি। কারণ হল ল্যাপটপটি যে কারণে কেনা তার দুইমাস পড়েই আমি
ইউনিট তথা ক্যাম্প থেকে বদলী হয়ে হিলের রিজিয়ন হেডকোয়ার্টার গুইমারাতে বদলী হয়ে
আসি। গুইমারা রিজিয়ন সদরে আসার কারণে মূলত আমার ল্যাপটপ ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা
ফুরিয়ে যায়। হয়ত কম্পিউটার প্রফেশনালস বা ব্যবসায়ী হলে ল্যাপটপ প্রয়োজন হত।
বর্তমানে ল্যাপটপ একমাসের বেতনের দামে পাওয়া যাচ্ছে তখন আমার চারমাসের বেতনের সমান
দামে ছিল। তবে রিকন্ডিশান ব্রান্ড আইটেম হলেও ক্রয় করা উচিত হয়নি কারণ সেই
ল্যাপটপটি আমি তিনবছর ব্যবহার করতে পেরেছি। অথচ আমার বর্তমান ল্যাপটপটি পাঁচবছর
ধরে ব্যবহার করছি এর মধ্যে উইন্ডোজ এক্স-পি থেকে উইন্ডোজ সেভেন সম্প্রতি উইন্ডোজ ৮
এ আপগ্রেড করেছি একটু স্লো হলেও আমার ইন্টারনেট ব্যবহার আর টাইপের কাজ ভালভাবে
চলছে। আর সেই প্রথম ল্যাপটপটি নষ্ট হওয়ার পর দীর্ঘদিন ঢাকায় মেকানিকের কাছে রেখেও
মাদার বোর্ড যোগাড় করতে না পেরে হার্ড ডিস্ক রিকন্ডিশন হিসাবে ৩৫০০ টাকায় বিক্রয়
করে দেই। পরে আমি চিন্তা করে দেখেছি আমি রিকন্ডিশন ল্যাপটপ ক্রয় করে অপচয় করেছি।
চাইনিজ নতুন ল্যাপটপ আরো কমে ক্রয় করলে আমার এ লসটা কম হত। এ ল্যাপটপ ক্রয় করার পর
এটিকে ক্যাম্পে বিদ্যুৎবিহীন চালাতে দুইটি ব্যাটারি(২০০০টাকা), দুইটি
সোলার প্যানেল(১৩০০০টাকা) ও টিভি দেখার জন্য টিভি কার্ড(৭৫০০টাকা) সর্বমোট
২০০০+১৩০০০+৭৫০০=২২৫০০ টাকা খরচ হয়। ল্যাপটপ সহ ৬৫০০০০ টাকা + ২২৫০০ টাকা=৮৭৫০০
টাকা। বিশাল আইটি অপচয়। অনেক সামর্থবানদের কাছে এটা তেমন বড় কোন অপচয় নয় শখের জন্য
অনেক খরচ হতেই পারে। তবে চাকুরীজীবীদের জন্য অপচয় বৈকি।
আমার এ লেখাটির উদ্দেশ্য হল আইটি সামগ্রী আমাদের দৈনন্দিন
জীবনে অনেক অপচয় ঘটিয়ে থাকে। আপনার যদি প্রফেশনাল প্রয়োজন না থাকে শুধুমাত্র নিজের
ব্যবহারের জন্য স্ক্যানার কেনা লাভজনক নয়। যদি অনেক আইটেম স্ক্যান করার থাকে এবং
দোকান থেকে করলে যা খরচ হবে তার থেকে স্ক্যানারের দাম কম হলে কাজের জন্য স্ক্যানার
কেনা লাভজনক। এখনকার সময়ে ডিভিডিরম ড্রাইভ না কিনে পেন ড্রাইভ বা মোবাইল
হার্ডডিস্ক দিয়ে কাজ চালানো য়েতে পারে। এখন অবশ্য ল্যাপটপের দাম কমে এসেছে। তাই
ল্যাপটপ কেনা আর ডেস্কটপ কেনার মধ্যে কোন পার্থক্য নাই বরং ল্যাপটপ সব জায়গায়
ব্যবহার করা যায়। দুটি না কিনে প্রয়োজন অনুযায়ী ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ যে কোন একটি
কিনলেই চলবে এতে আইটি অপচয় কম হবে। আমার অভিজ্ঞতার অলোকে লেখাটি লিখলাম। অনেক বেশী
বিচার বিবেচনা করে না ক্রয় করলে ক্রম বর্ধমান পরিবর্তনশীল আইটি সামগ্রীতে আমাদের
অপচয় বাড়তে থাকবে।