Pages

Sunday, August 25, 2019

চা‌বি‌বিহীন ট্রেসহীন জীবন যাপন

এখনকার গাড়ীগু‌লোর মধ্যে ম্যাজিক আছে। পকেটে চাবিরাখলে স্টিয়ারিং এ বসেই গাড়ী স্টার্ট বাটন চাপলেই গাড়ী স্টার্ট। চাবি পকেট থেকে বের ক‌রে গাড়ী স্টার্ট করার প্র‌য়োজন নেই। এগু‌লো সবই আরএফআই‌ডির কাজ। বাসা থেকে বেরুলাম। পকেটে একগাদা চাবির থোকা। আলমারির চাবি, লকারের চাবি, ঘরের চাবি ও গেইটের চাবি। হরেক প‌দের চাবি পকেটে। আর এই‌ চাবির হিসাব মিলা‌নো আ‌রেক বিপদ। আমার পোস্ট‌িংএর চাকুরী ট্রাংক ও বাক্স পেটরার অনেকগুলি তালাচাবির ব্যবহার কর‌তে হয় ও ক‌রে আসছিলাম। তালা ও চাবি ম্যানেজমেন্ট আরেক বিশাল যুদ্ধ। আমার তালা ও চাবি একটা ব্যাগে রেখে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পোস্ট‌িং এর কারণে মুভ কর‌তে হয়। আমার তালা চাবি মিলা‌নোর একটা ভাল কসরত কর‌তে হয়। প্রায়ই মনে হত এবার অনেকগুলো তালার চাবি মিলা‌তে হবে। সময় ব্যয় কর‌তে হবে। কতবার যে তালা চাবির মার্ক‌িং করলাম আবার উল্টা পাল্টা হ‌য়ে যায়। ১৯ বার পোস্ট‌িং এর পর মনে হল জীবনটা‌কে চাবি-মুক্ত করি। প্রথমে আমরা চিন্তা করি লক কেন দেই। লক দেয়ার মূল কারণ হল কাউ‌কে চুরি করা থেকে আটকা‌নো তা কিন্তু নয়। যে ডিটারমাইন্ড চোর তা‌কে আটকা‌নো অনেকটাই শক্ত ব্যাপার। কারণ সে জানে তালা ভাঙ্গতে। সে জানে চাবি তৈরি কর‌তে হয়। তালা নিরাপত্তা দেয় আমা‌দের মনে ও চোর‌কে দেয় বাধা। একটা মানসিক বাধা চোর পায়। এটা আবদ্ধ ও তালা দেয়া জিনিস। এখানে চুরি করতে হলে প্রস্তুতি প্র‌য়োজন। তালার কাজ মানসিকভাবে ও প্রা‌য়ো‌গিক ভাবে বাধা দেয়। চো‌রের মাথায় ঢু‌কে তালা দেয়া আছে। তালা ভাঙ্গতে হবে। কেই দেখে ফেলবে। সময় লাগবে ধরা  পর‌তে হবে। তা থাক অন্য সহজ টার্গেট দেখি। এভাবে আমা‌দের সম্পদ রক্ষা পায়। আমাদের সম্পদ রক্ষা কর‌তে আমরা চাবি নামক যন্ত্রণা লুকিয়ে রাখা ও সাথে রাখার মত যন্ত্রণার শিকার হই। সেই তায়ালার সংখ্যা অনেকগুলি হলে কথা নেই। নম্বা‌রিং ও চাবি মিলা‌নো ভালই একটা সময় ক্ষেপণকারী কাজ। তাহলে উপায় চাবি বিহীন তালা। ডিজিটাল লক বা কম্বিনেশন লক। আমাদের দেশে ডিজিটাল লকের দাম আকাশ ছোয়া। তবে কম্বিনেশন লকের দাম কমছে। তালাগু‌লি বড় হচ্ছে। ডিজিটাল লক আর কম্বিনেশন লকগু‌লি আপনা‌কে স্ব‌স্থি দিবে। অনেকে বলবেন নিরাপদ নয়। আমি নিরাপদ অনিরাপদ জানি না। অনেকের দেখছি দরজায় ডিজিটাল লক। অফিসে ডিজিটাল লকার ভালই চাবি বিহীন জীবন যাপন করছেন। আজকাল মোবাইল থাকলে মানিব্যাগ ও অন্যান্য কার্ড ছাড়া চলা সম্ভব। মোবাইল ব্যাংকিং এ টাকা নিবেন আর বিজ‌নেছ কার্ড ও অন্যান্য কিছু মোবাইল ছবি তুলে রাখলে হল আমরা মানিব্যাগ বিহীন জীবন যাপন করব। পকেটে মানি ব্যাগ নাই ও পকেটে চাবি নাই। হা‌তে মোবাইল। ব্যাস সব হয়ে গেল। মানি ব্যাগ ও চা‌বিমুক্ত অফিসে থাকলে আমরা বাসায়ও তা করতে পারি। কিভাবে করব। বাসায় একটা ডিজিটাল লকার রাখ‌তে পারি দেয়ালের সাথে ফিক্সড। সেই ডিজিটাল লকা‌র‌ে রাখ‌তে পারি বাসার কম খোলা লা‌গে সেমসমস্ত আলমারি, লকার ও ডোর লকের চাবি। ডিজিটাল লকারগু‌লোতে আজকাল বুলেটপ্রুফ ও ফায়ার প্রুফও পাওয়া যায়। অনেক অনেক দামের ডিজিটাল লাক‌ার আছে। আমা‌দের নিজেদের আর্থিক ক্ষমতা অনুযায়ী কিনতে পারি। এখন পর্যন্ত আমদানি নির্ভর তাই দাম বেশী আগামী‌তে দাম অনেক কমবে সন্দেহ নেই। সমস্ত চাবি ডিজিটাল লকা‌রে গুছা‌নো থাকল তাই নো টেনশন। এখন বাসার অন্যান্য দুই চার‌টি যা তালা সব সময় খুল‌তে হয় তা চা‌বিবিহীন তিন/চার ডিজিট নম্বর ম্যাচ করার লক লাগিয়ে নেন। আপ‌নি হ‌য়ে‌ গে‌লেন চা‌বিমুক্ত। এখন বাকী রইল মেইন দরজা ও মেইন গেট। কোন চিন্তা নেই আপনি চা‌বি‌বিহীন নম্বর ম্যাচিং লক বা ডিজিটাল লক লাগিয়ে নেন। আপনি হ‌য়ে গেলেন চাবি মুক্ত। আপনার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করার কোন কারণ নেই। এখনকার ডিজিটাল লক অনেক বেশী নিরাপদ। আর টেনশন আপনার বেশী থাকলে মূল দরজায় আর গেইটে সি‌সি ক্যামেরা লাগিয়ে দেন। তা ইন্টারনেটে কানেক্ট ক‌রে দেন সারা পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে দেখ‌তে পারবেন। আপনি চাবি মুক্ত থাকলে আপনি আপনার নিরাপদ জীবন যাত্রায় অনেক বেশী ট্রেসমুক্ত থাকবেন। দিনের পর দিন প্রযুক্তি অনেক সুলভ হচ্ছে তাই ট্রেস ও টেনশনমুক্ত থাকার জন্য আপনি এখনই চা‌বিমুক্ত জীবন যাপন বেঁছে নি‌তে পারেন।

Friday, August 16, 2019

বাংলাদেশের চামড়ার অপচয়

আমার এক আত্মীয় আক্ষেপ ক‌রে বললেন, ছোট‌বেলায় দেড় হাজার, দুই হাজার টাকায় চামড়া বিক্রয় কর‌তে দেখতাম। গরীব মানুষ বা মাদ্রাসায় একটা ভাল প‌রিমান টাকা দান করা যেত। আজ  ২০/২৫ বছর পর চামড়ার দাম দেখছি মাত্র ৩০০ টাকা। এটা কিভাবে সম্ভব। ৩০০ টাকার জুতার দাম আজ ৩০০০ টাকা। সমস্যাটা কোথায়। সমস্যা হল গরু ও খাসি বেশী কুরবানী হচ্ছ‌ে। মানুষের সক্ষমতা বহুগুণে বেড়েছে। সে অনুযায়ী ট্যানারিরা চামড়া রপ্তানি বা ব্যবহার কর‌তে পারছে না। ধরুন দেশে যদি এক কোটি পশু জবাই হয় তবে চামড়া হবে এক কোটি। এক‌টি চামড়ায় যদি গড়ে দশ জোড়া জুতা হয় তবে এক কোটি চামড়ায় দশ কোটি জুতা হবে। দশ কোটি জুতা কেনার মানুষ আসলে নাই। বিদেশে রপ্তানিও বাড়ে নাই চাহিদা মাফিক। কারণ বাংলাদেশের ট্যানারি বর্জ্য পরিশোধন আন্তর্জাতিক মান অর্জন ক‌রে নাই। গ্রিন বা পরিবেশ বান্ধব পরিবেশে চামড়ার প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছ‌ে না। তাই রপ্তানি কম। চামড়া বছরের পর বছর অবিক্রীত ও অব্যবহৃত থাকছে ট্যানারি মালিকদের কাছে। চামড়া নষ্ট হচ্ছে আড়তদার‌দের কাছে। অনেক সময় লবণের দাম মিল মালিকরা বাড়িয়ে দিলে চামড়ার আড়তদাররা চামড়া লবণ দি‌তে না পে‌রে চামড়া নষ্ট ক‌রে ফেলছে। তাহলে উপায় কি? উপায় আছে চামড়ার বিকল্প ব্যবহার বাড়া‌নো। জুতায় যেভাবে ব্যাপকভাবে আর্টিফিশিয়াল লেদারের ব্যবহার বাড়াচ্ছে তা‌তে ক‌রে চামড়ার চাহিদাও কমে যাচ্ছ‌ে। বাংলাদেশের উন্নয়নে এক কোটি চামড়ার ব্যাপক ব্যবহার কর‌তে হবে। মা‌টি‌তে পুতে ফেললে হবে না। আগে গরুর হাড় অনেকেই  শুকাত, শিং শুকাত, লেজ শুকাত কারণ এগু‌লো কেজি দ‌রে বিক্রয় হত। এখন এগু‌লো ব্যাপকভাবে লোকজন ফেলে দেয়। পরিবেশ দূষণ হয়। কারণ আর কিছুই নয় ১৯৮০ সালে হয়ত ২০ % পরিবার কুরবানী দিত,১৯৯০ সালে ৩০%, ২০০০ সালে ৪০% ২০১০ সালে ৫০% এবং ২০১৯ সালে ৬০% পরিবার কুরবানি দিচ্ছে। কারণ সবচেয়ে কম বেতন যার তারও ঈদ বোনা‌সের টাকা দি‌য়ে একটা ভেড়া বা ছাগলের দাম হয়। গ্রামে ছোট গরুর সাত ভাগের এক ভাগ দি‌তে পা‌রে।

তাই সাড়ে ষোল কোটি মানুষের দেশে কোরবানীর সক্ষমতা বাড়‌তেই থাকবে। 

তাহলে প্রশ্ন হল, আমরা কি কুরবানির চামড়া মা‌টি‌তে পুতে ফেল‌তে থাকব। নাকি নানা ব্যবহারে এগিয়ে যে‌তে পারি। অনেক এলাকার মানুষ মাথার চামড়া খায়। এটা‌কে হালিম, কাবাব ও নানা খাবারে কচকচি খাদ্য হিসাবে ব্যবহারের প্রচলন ঢাকার হো‌টেল গু‌লো‌তে চালু করা যে‌তে পা‌রে। আমরা ভুঁড়ি খাই আবার ভুঁড়ি দি‌য়ে তবলা বা ঢো‌লে ব্যবহার করা যায়। আমরা গরুর বিভিন্ন অংশ আফ্রিকান মাগুর‌কে খাওয়াই। সেখানে চামড়া গরম পানি দি‌য়ে লোম পরিষ্কার ক‌রে মানুষের খাদ্য ও মাছের খাদ্য করা যাবে। আগের দিনে ফ্রিজ না থাকার যুগে দেখতাম মাংস হলুদ দি‌য়ে সিদ্ধ ক‌রে বা কাচা শুঁকিয়ে ম‌য়েরা গরুর মাংস সংরক্ষণ করতেন। একই ভাবে চামড়া পশম ছড়িয়ে তা শুঁকিয়ে মানুষের খাদ্য ও মাছের খাদ্য হিসাবে সংরক্ষণ করা যায়। পোল্ট্রি বা মাছের ফিডে ৩০% প্রো‌টিন যোগ কর‌তে হয়। এটা ট্যানারির চামড়ার মাংসল বা অব্যবহৃত উপজাত ব্যবহার করা হয়। ট্যানারীর সমস্যা হল তা‌দের প্রক্রিয়াটায় লোম ছাড়া‌নো ও প্রসেসের প্রক্রিয়াটা হল রাসায়নিক ব্যবহার ক‌রে আর এভাবে পোল্ট্রি ফিড বিষাক্ত হ‌য়ে যায়। আপনি গরুর চামড়া একফুট দেড় ফুট কেটে চামড়া ছাড়িয়ে শুঁকিয়ে নিন। তারপর ভুট্টা বা অন্য উপকরণ কিনে আপনি পোল্ট্রি বা মাছের ফিড তৈরি করুন। অর্ধেক চামড়া যদি আমরা গরম পানি দি‌য়ে পশম ছা‌ড়ি‌য়ে শুঁকিয়ে আমরা ফিড তৈরি করি তবে বিদেশ থেকে দেশে ফিডের প্র‌ো‌টিন আনার প্র‌য়োজন পড়বে না। আমরা মাছ ও পোল্ট্রি ফিড কম দামে রাসায়‌নিকমুক্ত ভাবে তৈরি কর‌তে পারব। পটুয়াখালী জেলার ন্যায় চামড়াকে ভুঁড়ির ন্যায় কচকচে খাওয়ার অভ্যাসটা না হয় আমরা ক‌রেই নিলাম।

আল্লাহ কুরবানির নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু কুরবানির কারণে বিশৃঙ্খলা, সে‌ন্ডি‌কেট ও অপচয় কর‌তে বলেননি। সকলে সচেতন হলে চামড়ার যথাযথ ব্যবহার সম্ভব হবে। আমরা আশা করব আগামী বছর আর চামড়া কেউ কবর দিবে না। কাচা চামড়া বিদেশে রপ্তানি হবে, মানুষ খাবে, পোল্ট্রি ও মাছের ফিডে স্বাস্থ্যকর চামড়ার প্র‌ো‌টিন ব্যবহার হবে।

Saturday, August 10, 2019

এয়ার কন্ড‌িশান (এ‌সি) সমাচার

আমার একটা অভ্যাস হল কোন একটা কিছু কেনার আ‌গে ও প‌ড়ে তা নি‌য়ে কিছু‌দিন ইউ‌টিউব দেখা ও ইন্টার‌নেট থে‌কে তথ্য নেয়া। প্রায় দশ বছর আ‌গে আ‌মি বাজা‌রের সব‌চে‌য়ে কম দামী একটা চাই‌নিজ এ‌সি কি‌নি। পরীক্ষা করার জন্য। ‌কেমন চ‌লে ও কত ‌দিন চ‌লে। দোকানদার ব‌লে‌ছিল ৭/৮ বছর ব্যবহার কর‌বেন। নস্ট হ‌লে মেরামত কর‌বেন না। বি‌ক্রি ক‌রে দি‌বেন। ঠিক সাত বছর চলার পর কম্প্রেশর নস্ট হল। একজন বলল, নতুন এ‌সি কেনার চে‌য়ে কম্প্রেসর পাল্ট‌ি‌য়ে নিন। তাই করলাম, চলল এক বছর ১৪ হাজার টাকা লস হল। তারপর ছে‌লে‌মে‌য়ে‌দের রু‌মের এ‌সি কিন‌তে গেলাম ঢাকা সেনা‌নিবা‌সের সিএস‌ডি'‌তে। দামী এ‌সির ম‌ধ্য‌ে স্যামসং আ‌ছে। আমার একজন প‌রি‌চিত জ‌নের সা‌থে দেখা হল। এ‌সির আ‌লোচনা হল। বলল, ইনভার্টার এ‌সির ম‌ধ্যে প্যানাস‌নিক, এল‌জি ও স্যামসং ভাল। কারন এরা এ‌সি টেক‌নোলজ‌ি  উন্নয়‌নের জন্য বিশাল বি‌নি‌য়োগ কর‌ছে। যা হোক স্যামসং এ‌সি কিনলাম। এর নানা সু‌বিধা আ‌ছে বেশ ভাল লাগল। ছে‌লে‌মে‌য়েরা মহা খুশী। গল্পটা এখা‌নে শেষ হ‌তে পারত। সে‌দিন ছে‌লে‌মে‌য়েরা আমা‌দের রু‌মের উই‌ন্ডো জেনা‌রেল এ‌সির সা‌থে স্যামসং এ‌সির এক্স‌চেঞ্জ অফার নি‌তে বলল।
আ‌মি কিনলাম। তারপর শুরু করলাম ভাল কিনলাম না মন্দ কিনলাম গবেষনা। এটা হল উ‌ল্টো গ‌বেষনা। এটা হত না। ছে‌লে‌মে‌য়েরা বলায় স্যামসং এ‌সি আ‌গে কিনলাম। তারপর গ‌বেষনায় বসলাম। জানার জন্য। কিছু মজার ফিচার পেলাম শেয়ার কর‌ছি। 

১। আস‌লেই  বিদ্যুৎ এর ব্যবহার কম হয়।

২। শব্দ অনেক অ‌নেক কম।

৩। ৮০ থে‌কে ৪৬০ ভোল্ট পর্যন্ত স্ট্যা‌বিলাই‌জিং ক্যাপা‌সি‌টি। লো ভো‌ল্ট‌েজ সমস্যা নয়। স্ট্যা‌বিলাইজার লা‌গে না। বিদ্যুৎ যতই সমস্যা করুক। নো টেনশন।

৪। বাই‌রের ইউ‌নিট তিন মাস সমু‌দ্রের স্যালাইন ওয়াটা‌রে ভি‌জি‌য়ে রাখার পর পুনরায় একই পার্ফর‌মেন্স পাওয়া গে‌ছে (ইন্টার‌নেট থে‌কে পাওয়া তথ্য)।

৫। বজ্রপা‌তে ক্ষ‌তি হয়‌ না। 

৬। এ‌তে‌ অা‌ছে ডোরা‌ফিন নামক বি‌শেষ কন‌ডেন্সার যাতে কম গ্যাস লা‌গে ও দ্রুত ঠান্ডা হয়।

৭। ইন‌ডোর ইউ‌নি‌টে মাই‌ক্র‌ো ফিল্টার আ‌ছে যা রু‌মের বাতা‌সের ধুলাবা‌লি ও ময়লা ট্র্যাপ ক‌রে। তার জন্য ফিল্টারটা মা‌সে একা‌ধিকবার প‌রিষ্কার করা ভাল।

৮। অ‌টো টেম্পা‌রেচার বাইরের গর‌মের সা‌থে একটা সামঞ্জস্য রক্ষা ক‌রে রু‌মের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক‌রে।

৯।  কম‌ফোর্ড মুড আ‌ছে। যেটা রা‌তের প্রথ‌মে রুম ঠান্ডা রাখ‌বে। ভোর রা‌তে অ‌টো‌মে‌টিক এ‌সি কুলিং বন্ধ ক‌রে ফ্যান মুড চালু ক‌রে দেয়। যেন ভোর‌বেলা ঠান্ডায় ঘুম না ভাং‌গে ও কাথা দি‌তে না হয়।

১০। দুই স্টেজ কু‌লিং অপসনটা বাই‌রে থে‌কে এ‌সে দ্রুত শরীর ঠান্ডা করার জন্য ভাল।

১১। সিং‌গেল ইউজার মুড‌ে রু‌মে একলা থাক‌লে বিদ্যুৎ ব্যবহার কমা‌নোর অপসন।

১২। অন্য এ‌সির মত টাইম‌ার দি‌য়ে অন ও অফ করার অপশনটাও আ‌ছে।

১৩। দোকানদার বলল ১২/১৩ বছর এটা মেরামত ছাড়া ব্যবহার কর‌তে পার‌বেন। আমার কা‌ছে ঠিকই ম‌নে হ‌চ্ছে। চাই‌নিজ সব‌চে‌য়ে কমদামী ৭ বছর ব্যবহার ক‌রে‌ছি। এটা এত প‌্র‌োটেকশন থাকার পর হয়ত কথাটা ঠিক হ‌তে পা‌রে। কারন কম্পেসর নস্ট হ‌লে দশ বছ‌রের ম‌ধ্যে বদ‌লি‌য়ে দি‌বে।

১৩। এ‌দের ওয়া‌রেন্ট‌ি  সি‌স্টেমটা ভাল। ওয়া‌রেন্ট‌ি কাগজ রাখার প্র‌য়োজন নেই।  ইং‌রেজী না‌মের বানানসহ বল‌লে ও ফোন নম্বর বল‌লে তারা সা‌পোর্ট দেয়। দশ বছর কম্প্র‌েসর ওয়া‌রেন্ট‌ি কাগজ না থাকারই কথা। 

১৪। যা‌দের গায়ে সরাস‌রি ঠান্ডা বাতাস লাগ‌লে সমস্যা হয় তাদের জন্য এ‌দের ম‌ডেল আ‌ছে। উই‌ন্ড‌ো না খু‌লে ছাকুনীর মাধ্য‌মে বাতাস ছ‌ড়ি‌য়ে গা‌য়ে ঠান্ডা না লা‌গি‌য়ে রুম ঠান্ডা কর‌বে।

১৫। ও‌দের কিছু এ‌সি‌তে ঠান্ডা গরম দু‌টো করার অপসন আ‌ছে।

১৬। আয়নাইজা‌ররে  মাধ্য‌মে জীবানু মারার অপশন আ‌ছে।

ত‌বে কিছু ফিচার মি‌সিং আ‌ছে। যেমন: ওয়াই ফাই, ইন্টার‌নেট ও মোবাইল অ্যা‌পের মাধ্য‌মে এ‌সি চালনাটা এ‌দের আ‌ছে কিনা জা‌নি না খু‌জে পাই‌নি। যেটা বর্তমা‌নে ওয়ালটন থে‌কে শুরু ক‌রে অ‌নেক এ‌সি‌তে আ‌ছে। এই এ‌সি ব্যবহার ক‌রে নির্দ‌‌িষ্ট তাপমাত্রায় এমন অভ্যাস হয় প‌রে অন্য এ‌সি'র ২/৩ ডিগ্র‌ি তাপমাত্রার আপ ও ডাউ‌নে অস্ব‌স্ত‌ি লা‌গে। অভ্যাস নস্ট হয়। এ ধর‌নের এ‌সি ছাড়া অন্য এ‌সি‌তে ভাল লাগ‌বে না। জেনা‌রেল এ‌সি সবাই ব‌লেন বেস্ট। আ‌মিও তাই ব‌লি। ২৫/৩০ বছর টি‌কে যায়। বিদ্যুৎ ও কম‌ফোর্ড‌ের দিক দি‌য়ে আমার কা‌ছে ম‌নে হয় জেনা‌রেল এ‌সি থে‌কে স্যামসং এ‌সি  ভাল। হোক না এর আয়ু ১২/১৩ বছর। কারন ১২ বছ‌রে এম‌নিও জেনা‌রেল এ‌সি অ‌পেক্ষা লক্ষ টাকা বিদ্যুৎ বি‌লে বাচ‌বে যার দ্বারা পুনরায় আ‌বার নতুন এ‌সি কেনা যাবে। ফ‌লে দীর্ঘস্থায়ী জেনা‌রেল এ‌সি অ‌পেক্ষা স্যামসং ভাল অপশন।

Friday, August 9, 2019

উচ্চ চিকিৎসা বিল ও সাধারণ মানুষ

যা‌দের আয় মাসে ৩ লাখ বা তার উপ‌রে তা‌দের এক ধরনের চিকিৎসা হবে। তা‌দের জন্য রয়েছে স্কয়ার, ল্যাব এইড, ইউনা‌ইটেড ইত্যাদি হাসপাতাল। যা‌দের আয় মাসে ১ থেকে  ৩ লাখ টাকার মধ্যে তাদের চিকিৎসা এক ধরনের। তা‌দের জন্য আছে জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল, বারডেম, ইব‌নে সিনা, পপুলার ইত্যাদি।
আয় অর্ধ লাখ/১ লাখ টাকা তা‌দের এক ধরনের চিকিৎসা হবে। আর তা‌দের জন্য পাড়াগাঁয়ের ক্লিনিক আর অন্যান্য প্রাইভেট হাসপাতাল। এটাই স্বাভাবিক। যা‌দের আয় ২০ হাজারের নীচে তারা সরকারী হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোন স্থান সুবিধাজনক হবে না।
আমার এক আত্মীয় ইউনাইটেড থেকে ২৫ হাজার টাকা প্যাকেজে একদিন হাসপাতালে ভর্তি থেকে এন‌জিওগ্রাম করালেন। ইউনাইটেড হাসপাতালে আমি তাকে দেখ‌তে গেলাম। পরিবেশ ও সার্ব‌িক আয়োজন দেখে ভাল লাগল। কেমন একটা রেস্টুরেন্ট বা হো‌টেল হো‌টেল মনে হল। এর কয়েকদিন পর আমার সেই আত্মীয়ের তীব্র পেটে ব্যথা হল। আবার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হল। এবার তিনদিন হাসপাতালে থাকলেন। জানা গেল গল্ড ব্লাডার স্টোন হয়েছে। অপারেশন প্র‌য়োজন। তবে এখন নয়, তা কর‌তে হবে একমাস পর। ওনা‌কে তিন দিন‌ে ইউনাইটেড খরচ করাল ৯৬ হাজার টাকা। কারণ প্রতিদিন কেবিন ভাড়া ২০ হাজার টাকা। সেদিন পত্রিকায় দেখলাম ডেংগু আক্রান্ত হ‌য়ে ২২ ঘণ্টা প‌রে মারা যাওয়া ১ জন কলেজ ছাত্রের চিকিৎসার জন্য স্কয়ার হাসপাতালে বিল হ‌য়ে‌ছে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা। 
এই  টাকাটা আমা‌দের মধ্যবিত্তের জন্য অনেক অনেক টাকা। যার মাসিক ইনকাম ১০/১২ লাখ টাকা তার জন্য স্কয়ারের চিকিৎসা তেমন খরচের ব্যাপার নয়। কিন্তু যার আয় লাখ টাকার নীচে তার জন্য বেশী। ইউনিভারসিটির মধ্যবিত্ত পরিবারের ডেংগু আক্রান্ত ছাত্রকে নিয়েছে স্কয়ার হাসপাতালে। আমার প্রশ্ন হল, তা‌কে তো সামর্থ্যের মধ্যে পি‌জি বা বারডেমে নি‌তে পারত। সরকারী হাসপাতালের ভাল দিক হল, ফ্লো‌রে রেখে হলেও চিকিৎসা দিবে। প্র‌য়োজ‌নে জাজিম ও বালিশ কিনে বা ভাড়া নি‌য়ে সরকারী হাসপাতালের ফ্লো‌রে শু‌য়ে পরেন। তাতেও আপনার   ১ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা ২২ ঘণ্টায় খরচ হবে না। সরকারী হাসপাতালে দিনে রা‌তে ডাক্তার এখন থাকেন। না পেলে ৯৯৯ কল ক‌রে সমাধান পাবেন। এখন শুদ্ধাচারের যুগে অনেক হাসপাতালে ডিজিটাল অ্যা‌টেন্ড‌‌েন্টস সি‌স্টেম আছে। সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা না দি‌য়ে রোগী মারা গেলে ডাক্তার ডিপার্ট‌মেন্টাল শাস্তি পাবেই। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালে এই জবাব‌দি‌হিতা আছে বলে আমার জানা নাই। সরকার ও প্রশাসন এখন প্রান্তিকদের নি‌য়ে চিন্তা ক‌রে। বাজেটও দেয়ার চেষ্টা ক‌রে। অনেক সরকারী হাসপাতালে নানা সুবিধা দেয়ার জন্য ডোনার পাওয়া যায়। তারা হাসপাতালে নানা ব্যবস্থা ক‌রে থা‌কে। সেদিন অবাক হলাম, একজন ডিআই‌জি বললেন, একজন ডোনার পেয়েছেন তিনি ঢাকা শহরে সমস্ত থানার হাজতে সুপেয় পানির ব্যবস্থা কর‌তে চান। ডিআই‌জি সেই  ব্যবসায়ীর কাছে জান‌তে চাইলেন, আপনি কেন ডো‌নেশান দিবেন। ব্যবসায়ী বলেছিল, আমি কিছুদিন থানা হাজতে কাটিয়েছিলাম। টেপের অপরিষ্কার পানি আমি খেয়েছি। আমার পানির কষ্টের অভিজ্ঞতায় মনে হয় হাজতিরা অপরাধী হলেও মানুষ। স্বাস্থ্যকর পানি খাওয়ার অধিকারটুকু তার আছে। এটা বললাম এজন্য যে, প্রাইভেট ‌ডোনার ও সরকার মিলে অনেক হাসপাতালের উন্নয়ন করা যায়। একই হাসপাতালে পেমেন্ট ও নন‌পে‌মেন্ট চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা যায়। শুধু রাস্তাটা বের কর‌তে হবে ও পরিকল্পনা অনুযায়ী আগা‌তে হবে। বাংলাদেশের সরকারের নাকি ঔষধ কোম্পানী আছে। কারো জানা আছে কিনা আমার জানা নাই তারা নাকি কমিউনিটি ক্লিনিকে ফ্রি ঔষধ সাপ্লাই দি‌য়ে থা‌কে। আমি চাকুরীর সুবাদে সরকারী সাপ্লাই ঔষধ খাই। ধারনা করা হয়, প্যারা‌সিটামল একটার জায়গায় দু‌টো খে‌তে হ‌তে পা‌রে । হয়ত ট্যাবলেটে যে পরিমাণ উপাদান থাকার কথা তা নাও থাক‌তে পা‌রে। তবে কম হলেও উপাদান আছে। কিন্তু নকল ঔষধে উপাদান নাই। তাই সহজে রোগমুক্ত‌ি হয় না। কানাডা, ফ্রান্স ও ইউকেতে সরকার মান নিয়ন্ত্রণ ক‌রে অনেক কম দামে ঔষধ তৈরি ক‌রে। আমা‌দের দেশের সরকার প্র‌য়োজ‌নে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সিএমএইচ ও সকল সরকারী হাসপাতালের জন্য সরকারী ব্রান্ডের ঔষধ তৈরি কর‌তে পা‌রে। পৃথিবীর অনেক দেশ সরকারীভাবে ভাল মানের ঔষধ তৈরি কর‌তে পার‌লে বাংলাদেশও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ভাল মানের ঔষধ বানা‌তে পারব‌ে। ক্যান্সার চিকিৎসায় সিএমএইচ ভাল মান প্রদর্শন কর‌তে পেরেছে। সেখানে অনেক অসামরিক ব্যক্তিবর্গ চিকিৎসা নি‌তে পারছেন। যারা বিদেশে ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট নিতেন তারা আজ দেশে ট্রিটমেন্ট নিচ্ছেন। অনেক বৈদেশিক মুদ্রা বেঁচে যাচ্ছ‌ে। আমরা চেষ্টা করলে সকল সরকারী হাসপাতাল‌কে উন্নত চিকিৎসালয় বানা‌তে পারি। সরকারী হাসপাতালগু‌লো‌তে ভলান্টিয়ার ও ডোনারদের অবদান নেয়া যায়। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে দালাল কমা‌নো যায়। কারণ মাসে ২০,০০০ টাকার নীচে রোজগা‌রের মানুষ হল ৮০% তা‌দের রক্ষা করার জন্য সরকারী হাসপাতালগু‌লো‌কে শক্তিশালী করাটা আজ সকলের জন্য জরুরী। আমা‌দের উচিৎ হবে বিভ্রান্ত না হ‌য়ে সামর্থ্যের বাই‌রে কোন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা না নেয়া। বুঝ‌তে হবে অনেক মন্ত্রী মিনিস্টারও পি‌জি‌ হাসপাতালের মত সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এরশাদ তো সারা জীবন সরকারী সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা নি‌য়েই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। তাই সরকারী চিকিৎসালয়কে বিভ্রান্তির মধ্যে না রেখে প্র‌তিষ্ঠানগু‌লো শক্তিশালী করা প্র‌য়োজন।

Saturday, August 3, 2019

জীবনের সফলতা ও বিফলতার গল্প

জীবনের  ২৭ বছর ঢাকার বাই‌রে চাকুরী ক‌রে ঢাকায় যখন আসলাম তখন আত্মীয় স্বজন অনেকেই আমার বাসায় আসছেন। অনেকের অনেক রকমের জীবনের গল্প শোনা যায়। কারোটা কষ্টকর। কারোটা চ্যা‌লেঞ্জ‌িং। কারোটা শুধু সুখ আর সফলতা। একজন আত্মীয় বললেন, তিনি অনেক সফল হ‌য়ে‌ছেন। গ্রামের থেকে উঠে এসে সরকারী চাকু‌রে হ‌য়ে‌ছেন। তারপর কষ্ট ক‌রে গেছেন। মেয়েদের একজন ফরেন সার্ভিস, আরেকজন ডাক্তার আর এক মে‌য়ে এসএসসি ভাল ফলাফল ক‌রে ঢাকার নামী ক‌লে‌জে ভর্তি হ‌য়ে‌ছে। তার সুখের উৎচ্ছাস আমি বেশ উপ‌ভোগ করলাম। ঘণ্টা দুয়েক বেড়ালেন পুরো পরিবারের ফিরিস্তি দি‌য়ে দিলেন। মানুষ সন্তানদের সুখে এত সুখী হয় হয়ত আমার জানা ছিল না। যখনই তিনি বলেই ফেলছেন, আমি অনেক সুখে আছি। মনে মনে বল‌তে ইচ্ছে করল, এখনই পরিবারের কেউ ক্যান্সারে পড়ুক। সুখ জিনিষটা কোথায় ছুটে যাবে তা টের পাওয়া যাবে। ভাগ্যিস মনে আসলেও মুখে আসেনি।
আর একদিন আ‌রেক‌ আত্মীয় আসল। তার সফলতা অসাধারণ। তার এক ছেলে এক মে‌য়ে রুয়েট পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার। আর এক মে‌য়ে বুয়েট পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার। দুই মে‌য়ের একজন অস্ট্রেলিয়া অন্যজন আমেরিকায় স্বামীসহ থা‌কে। ছেলে ইঞ্জিনিয়ার দেশের বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানে চাকুরী ক‌রে প্রায়ই বিদেশ ভ্রমণে থা‌কে। পুত্র বধুও অনেক উচ্চ বেতনে চাকুরী ক‌রে। ছেলে মেয়েদের ভীষণ ব্যস্ত জীবন। আত্মীয় ভয়ানক সংকটে থাকেন। কখনও এই মে‌য়ে কখ‌নো অন্য মে‌য়ে কখনও ছেলে কোথায় যে উনি থাকেন, কি যে করেন, ভয়ানক সুখের অবস্থা তার। আত্মীয় আধঘণ্টার মধ্যে তার সন্তানদের সফলতার গল্প বলে গেলেন। সহজেই  বুজলাম, তিনি সফলতার গল্পে অনেক দক্ষতা অর্জন করছেন। রত্নগর্ভা পুরষ্কারটা তার প্রাপ্য।
তা‌দের এই সফলতার গল্পগু‌লি আমা‌কে আনন্দ দিয়েছে। বেশ মজা পেলাম।
এখন বলি আরেক গল্প। আমার আরেক আত্মীয় যিনি সফল সরকারী অফিসার ছিলেন। সন্তানরাও পড়া‌শোনা ক‌রে বিদেশে আছে। কিন্তু সমস্যা একটা রয়েছে সন্তানরা বি‌য়ের বিষ‌য়ে আগ্রহী নয়।
তবে নিখাদ সুখের সাগরে আমার দুই আত্মীয়কে পেয়েছি। তেমন আর কাউ‌কে পাইনি। কারো একাধিক সন্তানাদির সকলে সমভাবে সফল হয়নি। কারো পেয়েছি পরিবারের কোন কোন সদস্য অসুস্থ। কারো পেয়েছি সন্তান উচ্চ শিক্ষিত হ‌য়ে‌ছে। চাকুরী পাচ্ছ‌ে না। কারো হয়ত কোন সন্তান অটিস্টিক। নানা পরিবারের নানা সমস্যা। আল্লাহ দুই‌টি পরিবারকে সফল করেছেন ভেবে সত্যি ভাল লেগেছে। কারণ এত সফলতা সংখ্যা সমাজে তেমন বেশী নেই। 
যা‌দের সন্তান ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আমলা, জজ ব্যারিস্টার হল না বা অসুস্থ থাকল বা বিফল হল তারা কি ভেঙ্গে পড়বে। মুষড়ে পড়বে। অবশ্যই না জীবনটা অনেক অনেক চ্যা‌লে‌ঞ্জিং। মুষড়ে পড়া যাবে না। 
সফলতা আসে মূলত: কষ্ট ক‌রে চ্যালেঞ্জের মধ্য দি‌য়ে। আমা‌দের দেশের অনেক উদ্যোক্তা আছেন যারা অনেক শিক্ষিত নয় কিন্তু তর তর ক‌রে এগিয়ে যাচ্ছেন। আমি কতটুকু আমার সন্তান‌দের নি‌য়ে সফলতা পাব আমি জানি না। তা‌দের যে লক্ষ্যগু‌লি আমি দিয়েছি তা দ্বারা উপরের মানুষদের মত সফল পিতা বা সন্তানদের জন্য গর্ব হয়ত আমার থাকবে না। কারণ আমার সন্তান‌দের বলেছি আমি জানি তোমরা পাঠ্য বই‌য়ের বাই‌রে প্রচুর পড়। এই  পৃথিবীর জন্য কিছু করবে। আইডিয়া বা পরিবর্তন নি‌য়ে কাজ করবে। লক্ষ্য থাকবে তোমরা যেন অনেক মানুষের কল্যাণ কর‌তে পার বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা কর‌তে পার। চাকুরী আর নিজের নিরাপদ জীবন নয়, চ্যালেঞ্জ নি‌তে শিখ আর প্রান্তিক মানুষ‌কে স্বপ্ন দেখাও। এই সাধনায় তোমা‌দের কোন সম্পদ না থাকলেও আমি তোমা‌দে‌র নি‌য়ে গর্ব‌িত থাকব।
আমি ক্লাসের বই‌য়ের বাই‌রে পড়ুয়া একজন ছাত্র ছিলাম। বাবার আগ্রহে ক্লাসে ফাস্ট হওয়া আমি ভুল ক‌রে ক্যাডেট কলেজে ঢু‌কে যাই। ক্যাডেট কলেজে যাওয়ার পর হা‌রে হা‌রে টের পেলাম আসলে এই  স্থানটি আমার জন্য নয়। এইচএসসি পাশ করার পর মনে হল বাবা রিটায়ার করেছে আর্ম‌িতে চলে যাই। বাবার টেনশন কমবে চাপ কমবে। চলে গেলাম সামরিক জীবনে যা আমার সাথে যায় না। মাঝে মাঝে মনে হয় নিজের একটা স্ব‌স্থিকর ও নিরাপদ জীবন হল। কিন্তু আমার দ্বারা সমাজের কি হল। কিছুই না। আমি যদি সচিবও হতাম কতটুকু সফল হতাম। কোন সফলতা আমি দেখি না। কয়েক টাকা রোজগার ক‌রে নিজে গাড়ী বাড়ী আর এসিতে থাকা ছাড়া আসলেই কিছুই নেই। যে মানুষটা অনেক মানুষের রিজিকের ব্যবস্থা কর‌তে পা‌রে সে সফল। যে মানুষ প্রান্তিক মানুষের পড়া‌শোনার ও জীবনমা‌নের উন্নয়‌নের ব্যবস্থা কর‌তে পা‌রে সে সফল। যে মানুষ প্রান্তিক মানুষের চিকিৎসা দি‌তে পা‌রে সে সফল। যে মানুষ প্রান্তিক মানুষের ভাগ্য বদলা‌তে পা‌রে সে সফল।
ভোগবাদী সমাজে অনেকেরই আমার বলা সফলতা‌কে হাস্যকর চিন্তা করবেন। যে যেভাবে চিন্তা করুন। মনের সন্তুষ্টি যেভাবে পূনাংগ পায় সেটাই আসল সফলতা ও সুখ। অটিস্টিক বাবা মা যদি তার সন্তানটা‌কে আবাস, খাবার ও পরিবার দি‌তে পারেন সেটা অনেক বড় সফলতা ও সন্তুষ্টি। ড্রাগ অ্যা‌ডিক্ট বাবা মা তার সন্তান‌কে যদি স্বাভাবিক জীবনে ফেরা‌তে পারেন সেটা অনেক বড় সফলতা। তাই পরিবেশ ও চ্যালেঞ্জের কারণে সন্তান নি‌য়ে সফলতা একেক মানুষের কাছে একেক রকম।