Pages

Thursday, January 28, 2016

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে লোড শেডিং মুক্ত থাকা

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বলা যায় মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে বাংলাদেশ উঁকিঝুঁকি মারছে। এতেই বাংলাদেশের প্রায়  সকল মানুষেরই বিদ্যুৎ একটি বেসিক রাইট হিসাবে প্রতিষ্ঠিত। বিদ্যুৎ ছাড়া উন্নয়ন কল্পনা করা যায় না। 
২০০৮ সালের জুন মাসের দিকে একবার আমরা পর পর তিনদিন লোডশেডিং এর ভয়াবহতায় অস্থির। রাতে প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর এক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ নাই। এতে যা ঘটে তা হল সবার ঘুমের ব্যাঘাত। পিডিবি উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ডাকা হল। পিডিবিএর দায়িত্ব প্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ইন্জ্ঞিনিয়াররা আসলেন। তাদেরকে সেনানিবাসের বিদ্যুৎ বিভ্রাটের তথ্য তুলে ধরা হল। তারা জানাল, বিদ্যুৎ উৎপাদন সমস্যা থাকায় সবস্থানেই ব্যাপক লোড শেডিং হচ্ছে। তারা আমাদের এলাকা কম লোড শোডিং এ রেখেছেন। একেবারে লোড শেডিংমুক্ত রাখতে তারা একান্তই অপারগ। তখন তারা একটা চমৎকার সলিউশন নিয়ে হাজির হল।
তারা জানাল ময়মনসিংহ সেনানিবাসের একদিকে রয়েছে শহর অপরদিকে রয়েছে গ্রাম অঞ্চল। দুইদিকে দুই এলাকার হাই টেনশন (১১কেভি) লাইন রয়েছে। তাদের সাজেশন হল দুইটি ১১০০ কেভির লাইনের দুপাশ থেকে দুটি সংযোগ নিতে। তার এমন ব্যবস্থা করে দিবে যাতে এক লাইনে লোড শেডিং থাকলে অন্য লাইনে লোড শেডিং থাকবে না। তাতে আমরা কোন না কোন লাইনে অবশ্যই বিদ্যুৎ পাব। এতেই আমাদের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এর পর পিডিবি ও আর্মির পক্ষ থেকে আর একটি ১১০০ কেভি লাইন গ্রামের মাঝ থেকে এগিয়ে সেনানিবাস পর্যন্ত আনা হয়। এভাবে দুই পাশ থেকে দুইটি লাইন আনা হয়েছিল । একটি অটো সুইচ বা চেঞ্চওভার লাগানো হয়েছিল যা কিনা যে লাইনে কারেন্ট আছে কেন্দ্রীয়ভাবে সেখানে সংযোগ করে দেয়। এভাবে ব্যবস্থা করার পর পরবর্তীতে মাসের পর মাস ময়মনসিংহ সেনানিবাসে বিদ্যুৎ যেত না। আমি সর্বশেষ ২০১৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ময়মনসিংহে তেমন একটা বিদ্যুৎ যাওয়া বা লোড শেডিং পাইনি। সর্বদা বিদ্যুৎ থাকায় মহা সুখকর অবস্থা ছিল। এভাবে হয়ত বা অনেক প্রতিষ্ঠান একাধিক লাইন টেনে নিয়ে নিজেদের লোড শেডিং মুক্ত রাখতে পারে বা রাখছে।
২০১৩ সালে বিজিবি কুষ্টিয়া সেক্টরে জানুয়ারির শেষে বদলী আসার পর বিদ্যুতের একটা ভয়াবহ অবস্থা দেখতে পাই। প্রতিদিন চার/পাঁচবার বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করে। পল্লী বিদ্যুতের লাইন গ্রামের মধ্য দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়ার কারণে প্রায়ই ডালপালা পরে লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। এমনও হয় মাঝে মাঝে একটানা ১০/১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এসব বহুবিদ কারণে আমরা দীর্ঘদিন যাবত বড় জেনারেটর ক্রয় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। পরে অবশ্য ৫০,৩০,২৫,১৫,১০,৫ কেভি জাতীয় একাধিক জেনারেটর চালিয়ে বিদ্যুৎ চলে গেলে চাহিদা মিটানো হচ্ছিল। বাসস্থানে, অফিসে ও সিকিউরিটি লাইনে আইপিএস লাগিয়ে বিদ্যুতের আসা যাওয়াটা কিছুটা সহনশীল করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের একদিন প্রায় ২০ঘন্টা বিদ্যুৎ নাই। বিদ্যুৎ না থাকলে পানির সংকটও চরম রূপ নেয়। পরে আমি পল্লী বিদ্যুতের জিএম সাহেবের সাথে আলোচনা শুরু করি কিভাবে লোড শেডিং কমানো যায়। আমি তাকে দুটি ১১০০ কেভি লাইন ব্যবহার করে সলিউশন দিলাম। তিনি নিকটবর্তী আর একটি লাইন আনার আইডিয়াটা মাথায় রাখলেন কিন্তু খরচ হবে জানালেন। পরে অবশ্য তিনি ভাল একটা সলিউশন বের করলেন। তিনি আমাদের বিজিবি সেক্টরের গ্রিড লাইনটির সাথের বেসামরিক এলাকার লোড অন্য লাইনের মাধ্যমে কমিয়ে দিয়ে একটা ছোট পরিসরে ৫০০ কিলোওয়াট টাইপ লোড তৈরি করে নিলেন। কুষ্টিয়া ও মিরপুর উপজেলার অন্যান্য মেগাওয়াট লোডের সরবরাহ থেকে আলাদা করে দিলেন। এতে মিরপুর উপজেলার সাব ষ্টেশন থেকে বিজিবির ৫০০ কিলোওয়াট লোডকে লোড শেডিংমুক্ত রাখতে তাদের আর কোন সমস্যা থাকল না। অনেক চেষ্টা তদবিরের পর এরূপ একটা ব্যবস্থা করায় আমরা বিজিবি কুষ্টিয়ার সকলে পল্লী বিদ্যুত সমিতি কুষ্টিয়ায় উপর যারপর নাই কৃতজ্ঞ হলাম। এরপর মিরপুর উপজেলার মত গ্রামে থেকেও এক সাপ্তাহে একবার/দুইবারের বেশী বিদ্যুৎ যাচ্ছে না। কেবল মাত্র ঝড়ে দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য  সত্যি তার কল্পনাতীত। যা বিদ্যুৎ যায় তা মূলত লাইন রক্ষণাবেক্ষণ ও তার ছেড়ার কারণে। মাঝে মাঝে গ্রিড লাইন রক্ষণাবেক্ষণে বিদ্যুৎ যায়। ঝড় বাদলের দিনে পল্লী বিদ্যুৎ তাদের গ্রামীণ জনপদের ভিতর দিয়ে যাওয়া লাইনগুলো সাধারণত বন্ধ করে রাখে। পরিশেষে আমার দেয়া লোড শেডিংমুক্ত ব্যবস্থাপনা আপনারা কাজে লাগাতে পারেন।


Thursday, January 21, 2016

মুক্ত অফিস

আউট স‌ো‌র্সিং যারা করেন তারা মূলত এক‌টি ভার্চুয়াল অফিসে কাজ ক‌রে। আমা‌দের অফিসগুলো কি আসলে দরকার আছে। আমা‌দের অফিসগু‌লো হ‌তে পা‌রে বড় একটা কনফারেন্স রুম। বেশিরভাগ অফিস সমন্বয়ের জন্য ব্যবহার হয়। আর এ সমন্বয় যদি ভাচুয়ার্লী করা যায় তবে অফিসের কি প্রয়োজন। আলাদা আলাদা কক্ষ বিশিষ্ট বা কিউবিক্যাল না হ‌য়ে একটা সাইবার ক্যাফে টাইপ হ‌তে পা‌রে। এতে অনেক খরচ কমবে। ভার্চুয়াল অফিসগুলো হবে অতি দ্রুত ও কার্যকরী। প্রথমে আসি আমা‌দের অফিস কেন দরকার?
১. একটা ঠিকানা
২. ফাইলপত্র রাখার জায়গা
৩. চিঠিপত্রাদি  ও দালিলিক লেখাপড়ার জন্য আরামদায়ক স্থান
৪. টয়লেট বাথরুমের ব্যবস্থা
৫. যোগা‌যোগের ব্যবস্থা
৬. ফ্যাক্স, কম্পিউটার ও প্রিন্টার থাকবে
,. লোকজন আসলে বসার ব্যবস্থা ও কনফারেন্সের ব্যবস্থা
৮. সহকারী‌দের বসার ব্যবস্থা
৯. নিরাপত্তা রক্ষী‌দের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা ইত্যাদি ইত্যাদি।

মনে করুন, উপরের অফিস কমপ্লেক্সে আপনার লেগেছে ৩০০০ স্কয়ার ফিট। আমার প্রস্তাবিত মুক্ত অফিসে আমা‌দের প্রয়োজন হবে তিনভাগের একভাগ জায়গা। তাহলে আমা‌দের অফিস পরিচালনা ব্যয় কমবে। মূলত অধিকাংশ কাজ ভার্চুয়ালী হবে। অফিস ও স্থাপনা ছোটো হওয়ায় বিদ্যুৎ পানি ইত্যাদিরও খরচ কমবে।
আমার কল্পনার ভার্চুয়াল অফিসটা কেমন হবে তুলে ধরছি।
১. কনফারেন্স আকা‌রে বড় রুম থাকবে।
২. সবার সামনে মনিটর থাকবে। যা‌তে সকলে কম্পিউটারে কাজ কর‌তে পারে। সবাই একই সাথে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের মাধ্যমে ভার্চুয়াল অফিসে চিঠি তৈরি ও চিঠি দেখা ইত্যাদি কাজ করবে। প্রত্যেকের জন্য আলাদা নির্ধারিত কম্পিউটার প্রয়োজন। যে যখন ওয়ার্ক-স্টেশন খালী পাবে। সেখানেই কাজ করবে।
৩. টয়লেট ও প্রসাধনীর ব্যবস্থা থাকবে। অফিস প্রধান চাইলে কাঁচের গেঁড়াও দেয়া টয়লেট ও আলাদা প্রাইভেসী রাখ‌তে পারেন। আসলে মুক্ত অফিসে অফিস প্রধান ও অন্যান্যরা  ভ্রমণরত থাকবেন। তারা বেড়াবেন। মিটিং করবেন। কনফারেন্স ও দেখা সাক্ষাত বাইরে বিভিন্ন স্থানে করবেন। রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ হবে সাথে মিটিংও চলবে। মুক্ত অফিসের মুল ধারনাই হল সিকিউরিটি ব্যতীত সবাই ঘুরে বেড়াবে। অফিস সিকিউরিটির সবাই একসাথে সবাই কাজ করবে তা নয়। এক দুইজন সরাসরি দায়িত্ব করবে অন্যরা আইপি ক্যামেরায় মনিটর করবে। এমনকি অন্য সংস্থার সাথে ভাড়া ভিত্তিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও চালু করা যাবে।  এভাবে মুক্ত অফিসে সবাই আসন বিহীন থাকবে। অফিস হবে মূলত রি‌পো‌র্টিং প্লেস। অফিসের সবাইকে অফিস করার জন্য অফিসে আস‌তে হবে না। প্রয়োজন পড়লে বা মিটিং এর জন্য আস‌বে। ইমেইল, ভাইবা‌র ও হোয়াটস আপ ইত্যাদিতে ভার্চুয়াল  কার্যক্রম চলবে। একান্তই কারো সাইনের প্রয়োজন হলে ডি‌জিটালী সাইন দিবে। যেমন: সাইনের সাথে তারিখ দি‌য়ে সাইন করবেন। তারপর স্ক্যান ক‌রে ডকুমেন্টে দিবেন। স্বাক্ষর একই থাকলেও ‌যে‌হেতু নিজ হাতের লেখায় সাইনের নীচে তারিখ লিখবেন। এভাবে এ পরিবর্তনের মাধ্যমে সাইন ও তারিখের স্বতন্ত্রতা এনে স্বাক্ষর ক‌রে তারিখের ভিন্নতা স্ক্যান ক‌রে ডুকু‌মে‌ন্টের সিগনেচার ব্লগে সেট ক‌রে অফিসের বাইরে থেকেও কাজ করা যায়।
তবে বিভ্রান্তি দূর করতে সাথে সাথে প্রেরকে জানাবে যে তিনি সাইন ক‌রে স্ক্যান ক‌রে ডকুমেন্টে সংযুক্ত করেছেন। ফি‌রে আসলে প্রয়োজনে পুনরায় স্বাক্ষর করবেন।
তবে নিদিষ্ট ফরমে স্বাক্ষর করার প্রয়োজন হলে তা আবার ইমেইলে  পাঠিয়ে কাযর্ক্রম গ্রহণ কর‌তে হবে।
আমার কাছে মনে হয় মুক্ত অফিসের কোন সুনির্দিষ্ট প্যাটার্ন বলা যাবে না। যে অফিস যেভাবে চাইবে সেভাবে তা‌দের ক‌রে নিতে হবে। মুল আইডিয়া হবে আমরা ঘুরে বেড়াব কিন্তু অফিস চলমান থাকবে। এই চিন্তা করলেই আমরা সমাধান পেয়ে যাব।
আধুনিক যুগে আমরা প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে আমাদের জীবন সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্য করা যায়। পরিবারের দায়িত্ব সামাজিক দায়িত্ব ইত্যাদি অনেক দায়িত্বের ভিড়ে আমরা এমনভাবে চাপের মধ্যে থাকি মোটেই ফুসরত পাওয়া যায় না। আমার চাকুরী জীবনে দুইটি শান্তিরক্ষী মিশনের দুই বছর ব্যতীত আমি অদ্যবদি (জানু ২০১৬ পর্যন্ত) সপরিবারে চাকুরীর স্থলে থাকি। অমাদের অনেকেই রাতে অফিস করে ।আমি রাতে অফিস না করেই কাটাতে পেরেছি। প্রয়োজনে ড্রপ বক্স, ভাইবার, এসএমএস, বাংলা টাইপ জানার কারণে বাসায় চিঠির ড্রাফট তৈরি ইত্যাদি বহুবিধ কাজ বাসায় করতে পারায় রাতে অফিস করার প্রয়োজন পড়েনি। আপনি ভ্রমণ রত আছেন জরুরী কোন চিঠি আসল জরুরী উত্তর দেয়া প্রয়োজন। আপনার প্রয়োজন আপনার অফিস সহকারীকে বলা সে যেন ভাইবার বা ড্রপবক্সে চিঠিটা দিয়ে দেয়। আপনি চিঠিটা পড়ে নিলেন ও মোবাইল ফোনের ড্রপবক্স, ভাইবার বা এসএমএস করে আপনার সহকারীকে পাঠিয়ে দিলেন, আপনার সহকারী চিঠি প্রস্তুত করে আপনার জন্য অপেক্ষা করল। আপনি পৌঁছে চিঠি সাইন করে দিলেন। অথবা ডিজিটাল সাইন দিলেন। আপনার প্রতিষ্ঠানের পত্রালাপ যদি জাতিসংঘের মত পেপারলেস ও লোটাস নোটে নিতে পারেন তবে তো কথাই নেই কাগজে কোন কারবারই আপনাকে করতে হল না। মুক্ত অফিস করাটা আপনার ইচ্ছে টেকনোলজি অতি সস্তায় আপনার চারিদিকে বিদ্যমান শুধু ব্যবহার জানতে হবে।

Friday, January 15, 2016

অনলাইন ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন

বিয়ের রেজিস্ট্রেশন সারা পৃথিবীতে পূরুষতান্তিক সমাজে মেয়েদের নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। বিয়ের রেজিস্ট্রেশন মামলা মোকদ্দমায় বিশেষ করে নারীদের বিশেষ সহযোগিতা করে থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে পুরুষরাও  বিবাহ সংক্রান্ত বিষয়ে সমস্যায় পড়তে পারে। আর তার থেকে উত্তরণের পথ হল বিবাহ রেজিস্টার। আর যেহেতু কাজীরা বিয়ের পূর্বের যাচাই বাছাই করতে হয়, তবে অনলাইন ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন হবে আধুনিক যুগের সমাধার। একটি ঘটনা আজ তুলে ধরছি। ডিসেম্বর ২০১৫ শেষে কুষ্টিয়ায় বিজিবির মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষ করা একজন সৈনিককে চাকরীচ্যুত করতে হয়েছিল। তখন আমি সেখানে চাকুরীরত অবস্থায় অবলোকন করি। কারণ হিসাবে জানা যায়, এই সৈনিকের ভেরিফিকেশনে বিবাহিত হিসাবে পুলিশ তথ্য দিয়েছিল। যদিও ছেলেটার চাকুরী থাকেনি। তথ্যে দেখা যায় ট্রেনিং শুরু হওয়ার পর কাজি অফিসে তার বিয়ে দেখানো আছে কোন একজন মেয়ের সাথে। অথচ মেয়েটি আর একজনের স্ত্রী ও স্বামী সন্তান নিয়ে সংসার করছে। অথচ তিন মাস পর সেই মেয়ের সাথে ডিভোর্স দেখানো আছে। অথচ ছেলেটি বিজিবিতে ট্রেনিংরত ছিল। দালিলিক প্রমাণের কারণে তার চাকুরী রক্ষা করা যায়নি। হয়ত ছেলেটি মামলা মোকদ্দমা করে এ ষড়যন্ত্রের রেহাই পেতে পারে। কিন্তু বিজিবির নেতিবাচক ভেরিফিকেশনের জন্য চাকুরী রক্ষা করা যায়নি। পরে জানা গেছে পূর্ব শত্রুতার জের হিসাবে তার নিকটবর্তী কেউ এভাবে ধাপে ধাপে ঘটনা সাজিয়ে তার চাকুরী নষ্ট করেছে। এটা সম্ভব হয়েছে কাজী অফিসের তথ্যের যাচাই বাছাই করার কোন ব্যবস্থা না থাকার কারণে। অথবা অসৎ কোন কাজি এ বিষয়ে শত্রুপক্ষের সাথে দুর্নীতিতে জড়িয়েছে।
এভাবে যেখানে অবিবাহিত শতে চাকুরী প্রতিনিয়ত মানুষের নানা ষড়যন্ত্র ও তৎপরতায়  অনেকের চাকুরী যাচ্ছে। এর সমাধান কি। বাংলাদেশের প্রতিটি শিশুর জন্ম অনলাইন রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে। অনলাইনে যে কোন শিশুর অনলাইন সনদের নম্বরটি দিয়ে তাদের সনদটি অনলাইনে ভেরিফাই করা যাচ্ছে। একইভাবে প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় মৃত্যু রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে। এগুলো খুবই ভাল বিষয়। গাড়ীর মালিকানা থেকে শুরু করে যে কোন তথ্য এখন অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। অনলাইন ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন বিষয়টি সরকারের প্রজেক্ট আকারে থাকলেও এখনো তা সকল স্থানে চালু  হয়নি। এটি আসলে অনেক  গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় । একবার আমার অধীনস্থ একজনের স্ত্রী জানল, তার স্বামী তার খোজ খবর নিচ্ছে না ও তার ভরণপোষণে  খরচও দিচ্ছে না। তার স্ত্রী আরো জানাল সে আর একটি বিবাহ করেছে। আমরা তদন্ত দল প্রমাণাদি পেলাম কর্মচারী দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। কিছু সাক্ষীও পেলাম সে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। এমনকি তার বড় ভাইও সাক্ষী দিয়েছে সে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। কিন্তু তদন্ত দল সমস্ত তদন্তের পরেও কেবল মাত্র নিকটস্থ এলাকার কাজী অফিসে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন না পাওয়ায় কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। কারণ কাজি বলল, প্রতিটি জেলা ও এলাকায় বেশ কয়েকজন কাজী আছে। আর দেশের যে কোন জায়গায় গিয়ে যে কেহ বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করতে পারে তাই কারো বিয়ের রেজিস্ট্রেশন তার স্বীয় এলাকায় নাও করতে পারে। সাধারণত বিয়ের রেজিস্ট্রেশনটা মেয়ে পক্ষ করে থাকে। টাকা প্রদান করে ছেলে পক্ষ। মেয়েদের নিরাপত্তার জন্য মেয়ে পক্ষ সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
আমাদের সমাজে এখনও রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বিয়ে চালু আছে।
কারণ কলেমা পড়ে দুইজন সাক্ষী থাকলেই সরিয়া মোতাবেক বিয়ে হয়ে যায়। এখন আমি আদর্শ ও  নিরাপদ একটা পরিস্থিতি বর্ণনা করব। যদি এমন ব্যবস্থা থাকে কেউ বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করার প্রয়োজন হলে কাজীর কাছে গেল। কাজি প্রথমেই পাত্রের জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর দিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ করবে। এতে পাত্র পূর্বে বিয়ে করে থাকলে তার তথ্য বেরিয়ে যাবে। একইভাবে পাত্রী পূবে বিয়ে করে থাকলে তার তথ্য চলে আসবে। কাজী পূর্ববর্তী বিয়ের বিষয়ে ও বয়স নিশ্চিত হয়ে রেজিস্ট্রেশন করাতে পারবে। আর এটি তখনই সম্ভব যদি বিয়ে ও ডিভোর্স সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য অনলাইনে থাকে এবং তা সার্চ করে পাওয়া যায়। আর এটা করা বেশী জটিল নয়। বাংলাদেশের প্রতিটি দম্পতির বিয়েতে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব। বতর্মানে প্রতিটি উপজেলায় ইনফরমেশন সেন্টার আছে। সে সব ইনফরমেশন সেন্টার থেকে কাজীরা অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে। এজন্য কাজীরা ল্যাপটপ মোডেম না কিনেও তথ্যাদি অনলাইন করতে পারবে। এটা সম্ভব কারণ স্কুল কলেজের সকল ছাত্র/ছাত্রী বতর্মানে তাদের শিক্ষা বোডের্র রেজিস্ট্রেশন অনলাইনে স্কুল/কলেজ থেকেই কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে করতে পারছে। একইভাবে সপ্তাহে একটা ইউনিয়ন পরিষদে আনুমানিক সাত/আটটি বিয়ে রেজিস্ট্রেশন হতে পারে। আর এই সাত/আটটি বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করতে তথ্য কেন্দ্রে  কয়েক  ঘণ্টা সময় ব্যয় হবে। জন্ম/মৃত্যু রেজিস্ট্রেশনের মত একটি সার্ভার জাতীয় পর্যায়ে তৈরি করতে হবে।  এ সার্ভার আবার জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভারের সাথে সংযোগ থাকবে যেন পাত্রপাত্রীর আইডি দিয়ে পাত্র/পাত্রীদের তথ্যাদি অনলাইনে ভেরিফাই করা যায়। বিয়ে রেজিস্ট্রেশন সাভারের মধ্যে আর একটি অপশন থাকবে তালাক রেজিস্ট্রেশন। এটা  ম্যারেজ সাভারের সাথে সংযুক্ত থাকবে। এতে সুবিধা যেটা হবে তা হল, জাতীয় আইডির বিপরীতে যে কোন তথ্য সহজে যাচাই বাছাই করা যাবে।
বিবাহ রেজিস্টারের জন্য একটা ফরম ব্যবহার করা হয়। সম্পূর্ণ  ফরমটি কাজীরা পূরণ করে তাদের নথিতে লিপিবদ্ধ করে থাকে এবং তারা প্রতিটি বিয়ের অনুকূলে সরকার প্রদত্ত ট্যাক্স পরিশোধ করে থাকে। তাদের নথির সম্পূর্ণ ফরমটি অনলাইনে থাকতে পারে। কাজীরা অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের কাজের চাপ কমানোর জন্য বর বা কনে পক্ষ বর বা কনের তথ্য অনলাইনে দিয়ে  ড্রাফট কপি দিবে। কাজী ড্রাফট কপি অনলাইনে সম্পূর্ণ চেক করে বিয়ের রেজিস্ট্রি  চালান দাখিল করে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন  কনফার্ম করবে।
অনলাইন রেজিস্ট্রেশন চালু হলে পুরানো বিয়ের কেসগুলোও আপডেট করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিবে। পুরাতন রেজিস্ট্রেশনগুলো সরকার আলাদা বরাদ্দ দিয়ে কাজীদের দিয়ে করানো যাবে। দেশের সকল স্থানে প্রচারণা চালাতে হবে। এতে পূর্বের যাদের  বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়েছে তারাও  কাবিননামা গুলো পুনরায় অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করে নিবে। এতে হয়ত প্রাথমিকভাবে বেশী রেসপন্স পাওয়া যাবে না। পরে ধীরে ধীরে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন বাড়তে থাকবে। আজকাল সমস্ত কিছু অনলাইনে বুকিং হয় তো অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন হয়ে থাকে। এত ব্যবস্থা থাকতে বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন হবে না তা মানা যায় না। বিয়ের অনলাইন রেজিস্ট্রেশন পারিবারিক বিরোধ  দূর করবে। বিবাহ সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা হ্রাস পাবে। অনেক পুরুষের প্রতারণা হ্রাস পাবে।এটা করতে সরকারের যে পরিমাণ টাকা খরচ হবে তার চেয়ে বেশী সরকারের টাকা সাশ্রয় হবে পারিবারিক বিরোধের মামলা কমে যাওয়ার কারনে। এছাড়া  বিয়ে সংক্রান্ত টাকা কাজীরা যথাযথভাবে সরকারী কোষাগারে জমাদানে বাধ্য হবে এবং তা অনলাইনে চেক করা যাবে। কাজীরাও বিয়ে সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়ে জবাবদিহিতার মধ্যে আসবে।

সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিয়ে ও ডিভোর্সের অনলাইন রেজিস্ট্রেশন বাস্তবায়ন হলে তা জাতীয় জীবনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

Thursday, January 14, 2016

স্ক্যানার বনাম মোবাইল ফোনের ক্যামেরা


আমি প্রায় পাঁচ বছর আগে একটি ডিভাইস ক্রয় করে বেশ গর্বিত ছিলাম। আর তা ছিল পোর্টেবল স্ক্যানার। ৫০০০ টাকা খরচ করে ল্যাপটপ ব্যাগে বহনযোগ্য পোর্টেবল স্ক্যানার বেশ চমৎকার একটি ডিভাইস ছিল। ছোটোখাটো মেমো ও অন্যান্য চিঠি স্ক্যান করতে এটা বেশ কার্যকরী ছিল। কোন আলাদা পাওয়ার দেয়ার প্রয়োজন হত না। ফ্ল্যাটবেড স্ক্যানারের মত টেবিলে বেশী জায়গা নিত না। এটা বড় মাপের একটা টুথ পেস্টের বাক্সের মত । সহজেই ল্যাপটপ ব্যাগে বহন করা যায়। ইউএসবি পাওয়ারে চলে যখন স্ক্যান করা হয় ২.৫ ওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করে । আবার স্ট্যান্ড বাই থাকলে তেমন বিদ্যুৎ খরচ করে না। আমি এই স্ক্যানার দিয়ে অনেক ডকুমেন্ট ,মেমো ও ছবি স্ক্যান করি। আমার টার্গেট ছিল কমপক্ষে ৫০০০ স্ক্যান করি। এতে অন্তত  এক টাকা করে আমার স্ক্যানিং খরচ উঠে যাবে । কারণ বাজারে প্রতি কপি স্ক্যান করতে খরচ ৫ টাকা। সেই হিসাবে এক হাজার স্ক্যান করতে পারলেই দাম উঠে যাওয়ার কথা। সেখানে ৫০০০ কপি টার্গেট। আমার মনে হয় আমার স্ক্যানার দিয়ে আমি ৫০০০ স্ক্যান করতে সামর্থ্য হই। স্ক্যানারের এই কার্যক্রম যখন চলমান সেদিন আমার ছেলে দেখাল মোবাইল ফোনের স্ক্যানার অ্যাপ। আমি দেখলাম ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলে পরিষ্কার ঝকঝকে সাদা কালো ফটোকপির মত ডকুমেন্ট ইমেজ হাজির। সত্যি চট করে বইয়ের পাতা ডকুমেন্ট যেকোনো কিছু এর দ্বারা মূহুতেই স্ক্যানিং ডকুমেন্টের আদলে ফটো তোলা সম্ভব। আবার সেই ডকুমেন্ট অপটিক্যাল ক্যারেকটর রিডার চালিয়ে এডিটেবল বা টাইপ করা ও কারেকশন উপযোগী ডকুমেন্ট তৈরি করা সম্ভব। আমরা স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করে যা যা কার্যক্রম করতে পারি তার সবকিছুই করা সম্ভব। স্মার্ট ফোনের ক্যামেরার স্ক্যানার হিসাবে ব্যবহারটা অতুলনীয়। পরীক্ষামূলক ভাবে করে দেখতে পারেন। এতে আপনার গুরুত্বপূর্ণ দলিল দস্তাবেজ মোবাইলে কপি করে নেয়া সম্ভব। বন্ধুর কাছে একটা গুরুত্বপূর্ণ নোট আছে। ফটোকপির দোকান বন্ধ চটপট স্মার্ট ফোনের ক্যামেরা দিয়ে স্ক্যান করে নিন। 
‌মোবাইল ফোনে স্ক্যানিং সবচেয়ে ভাল ভাবে করা যায় যদি মোবাইল ফোনের ক্যামেরাটি ভাল মানের হয়। স্যামসং জে৭ মডেল আর সিম্ফনি মোবাইল নিয়ে আমি পরীক্ষা‌টি করি। ১৩ মেগা‌পি‌ক্সে‌লের স্যামসং মোবাইল ফোনের ফলাফল বেশ ভাল। সাধারণত যেন তেন ভাবে একবার ছবি তুলেই স্ক্যানিং এর কাজ‌টি সম্পন্ন করা গেছে। অন্য দি‌কে ১০ মেগা‌পি‌ক্সে‌লের সিম্ফনি মোবাইল ফোন দি‌য়েও ভালভাবে স্ক্যান করা যায়। তবে মাঝে মাঝে তাড়াহু‌ড়ো ক‌রে ঝাপসা ছবি আসার কারণে একাধিক বার ছবি তেলার প্রয়োজন হয়।
রঙ্গিন স্ক্যানিঙটা ফ্ল্যাটবেড স্ক্যানারের মাধ্যমে করাই ভাল। রঙ্গিন স্ক্যানিং ভাল ভাবে মোবাইলে করাটা সময় সাপেক্ষ ও অনেক অনুশীলনের প্রয়োজন প‌রে। যে কোন এফোর সাইজ কাগজ স্ক্যানিং করার জন্য মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্ক্যানিং হবে চমৎকার। কাগজের লেখা সাদা কা‌লো চমৎকার ভাবে পড়ার উপ‌যোগী ক‌রে স্ক্যান করা যায়। স্ক্যানিঙটা ভাল হল সাদা কা‌লো লেখা দিয়ে। স্ক্যানিং করার জন্য মোবাইল ফোনের ক্যামেরাটি অন করলে অটোমেটিক্যালী আগে পিছে ফোকাস ক‌রে ক্যামেরা ছবি তুলে নিবে। প্রয়োজন হলে অটোমেটিক্যালী লাইট কম হলে ফ্লাশ হ‌য়ে যাবে।

অল্প সময়ে স্ক্যান করে ভাইবার, হোয়াটস অ্যাপ ইত্যাদির মাধ্যমে যে কোন ডকুমেন্ট তড়িৎ যে কারো কাছে পাঠানো যায়। মোবাইল ফোনকে স্ক্যানিং কাজে ব্যবহারের এই আইডিয়াটি আশা করি অনেকের জন্য অনেক কাজে লাগবে।