Pages

Tuesday, February 11, 2020

সামা‌জিক যোগা‌যোগ মাধ্যম ও নে‌তিবাচকতা

সামা‌জিক যোগা‌যোগ মাধ্যম মান‌সিক স্বা‌স্থ্যের জন্য ভাল না খারাপ আ‌মি এ ধর‌নের বিতর্ক‌ে যাচ্ছ‌ি না। আমার আজ‌কের লেখনীর উ‌দ্দেশ্য আমা‌দের মা‌ঝে সামা‌জিক যোগা‌যোগ মাধ্য‌মের পোস্ট নি‌য়ে স‌চেতনতা সৃ‌স্টি করা। আমার স্ত্রী প্রায়ই ব‌লে তোমার লেখা বিতর্ক সৃ‌স্টি ক‌রে ও চাচা‌ছোলা কথা লিখ। অভ্যাস বদলাও। স্ত্রী‌কে একটা কথাই ব‌লি, এত বয়‌সে বদলা‌নো দায়। তার চে‌য়ে যেমন আ‌ছি তেমন থাকা ভাল। আমার লেখার পাঠক খুবই সী‌মিত তাই এত রাখ ঢাক ক‌রে লিখে কি লাভ?
প্রসংগটা হল, আমরা সামা‌জিক যোগা‌ে‌যোগ মাধ্য‌মে য‌দি নী‌চের মত ক‌রে পোস্টগু‌লি দেই তাহ‌লে কি ঘ‌টে:

" আমার বাবা পৃ‌থিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা"

"আমার মা পৃ‌থিবীর সেরা মা"

" আমার সন্তান সেরা‌দের সেরা"

"আমি পৃ‌থিবীর শ্রেষ্ঠ সুখী"

"আমার রাজকুমারী"

" আমার রাজকুমার"

"আমার স্ত্রী নারী জা‌তির সেরা"

"আমার স্বামী শ্রেষ্ঠ ও সফল মানুষ"

"আমার সন্তান সর্ব‌শ্রেষ্ঠ বিজয়ী"

উপ‌রের সুপার‌লে‌টিভ কথাগু‌লি আমা‌দের ঘ‌রের মধ্যকার কথাবার্তা। এগু‌লো পাব‌লিক‌লি আনা মা‌নে অ‌ন্যকে তুলনায় ফে‌লে দেয়া। ত‌বে হ্যা এটা তখনই  করা যা‌বে যখন আমার বন্ধুরা কেবলমাত্র আপনার গুনগ্রাহী হয়। অ‌নে‌কে ভা‌বেন আমার আত্মীয়রা ও বন্ধুরাও তো আমার গুনগ্রাহী যারা ফেইসবু‌কে আ‌ছে। ভুল, আপ‌নি আপনার সন্তা‌নদের নানা বিষয়গু‌লি নি‌য়ে নানা সফলতার পোস্ট দি‌তে থাক‌লেন। অপর‌দি‌কে আপনার কোন বন্ধু তার অ‌টি‌স্টিক সন্তান‌কে নি‌য়ে জীবনযু‌দ্ধে রত র‌য়ে‌ছে। অ‌টি‌স্টিক সন্তা‌নের পিতামাতা অন্য‌দের সন্তান‌দের সফলতা দেখ‌তে দেখ‌তে এক সময় নিজে‌কে সামা‌জিক মাধ্যম থে‌কে সরি‌য়ে নেয়। আমার জানা ম‌তে অ‌নে‌কেই আ‌ছেন যারা কেবল মাত্র তুলনায় পরে ফ‌েইস বুক থে‌কে বিষন্নতায় প‌ড়ে‌ছে ও এক সময় বিষন্নতায় আক্রান্ত হ‌য়ে ফেইস বুক ত্যাগ ক‌রে‌ছে। আমরা আমা‌দের একান্ত ব্যক্ত‌ি‌গত ঘ‌রোয়া ডায়ালগগু‌লি পাব‌লিক‌লি এ‌নে কতটুকু আত্মতৃ‌প্তি পাব জা‌নি না; ত‌বে অ‌নেকের ক্ষ‌তি হ‌বে স‌ন্দেহ নেই। প‌জি‌টিভ ভা‌বে বাচার জন্য টি‌ভি, নিউজ‌পেপার ও সামা‌জিক মাধ্যম থে‌কে দু‌রে থাকার জন্য আজকাল অ‌নেক ম‌টি‌ভেটররা সাজেশান ‌দি‌য়ে থা‌কেন।

উপ‌রের ডায়লগগু‌লির পোস্ট য‌দি আমরা এভা‌বে দেই ত‌বে কেমন হয়।

"আমার বাবা চমৎকার মানুষ তি‌নি একজন ভাল মানুষ এবং ভাল বাবা‌দের একজন"

" আমার মা একজন ভাল মা তা‌কে পে‌য়ে আমরা ধন্য আল্লাহ তা‌কে দীর্ঘজী‌বি করুন"

"আমার সন্তান অ‌নেক প‌রিশ্রম ক‌রে ও সাধনা ক‌রে বি‌সিএস'এ চান্স পে‌য়ে‌ছে। সে জন্য মানু‌ষের খেদমত ক‌রে একজন সৎ মানুষ হিসা‌বে জীবনধারন কর‌তে পা‌রে তার জন্য দোয়া কর‌বেন"

" আল্লাহ আমা‌র প্র‌তি কৃপার দৃ‌ষ্টি দি‌য়ে‌ছেন ও শত প্র‌তিবুলতার ম‌ধ্যে ভাল রে‌খে‌ছেন। আলহামদু‌লিল্লাহ।"

" আমার রাজকুমার বা আমার রাজকুমারী লেখার প‌রিবর্ত‌ে লেখা যায় আমার প্রান‌প্রিয় কন্যা বা পূত্র"

" আমার স্ত্রী অ‌নেক প্রেয়সী একজন নারী যি‌নি আমাকে অ‌নেক অ‌নেক খেয়াল রা‌খেন ও দেখভাল ক‌রেন"

" আমার বন্ধুর মত স্বামী‌টি আমার জন্য আল্লাহ কাছ থে‌কে পাওয়া‌ বড় নেয়ামত"

" সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ'র তি‌নি আমার সন্তান‌কে সফলতা দি‌য়ে‌ছেন জয়ী ক‌রে‌ছেন। দোয়া কর‌বেন আম‌ার সন্তান যেন সুসন্তান হ‌য়ে মানবজা‌তির খেদমত কর‌তে পা‌রে।"

আমার ফেইস বুক থে‌কে অ‌নেক অ‌কে‌জো গ্রুপ ও অ‌কে‌জো বন্ধু‌কে স‌রি‌য়ে‌ছি। আ‌গে অ‌নেক বন্ধু থাকার পর দেখতাম অ‌নেক রকম আ‌জে বা‌জে পোস্ট যা কিনা ছিল ভয়ানক পীড়াদায়ক। আপনার সেরকম ব্লি‌নিং অপা‌রেশর চালা‌তে পা‌রেন।

‌এখন আ‌সি আসরা কিভা‌বে পোস্ট দিব। য‌দি ভাল বিষয় শেয়ার করুন, সেটা ভাল। ত‌বে শেয়ার করার আ‌গে ভাল ক‌রে দে‌খে বু‌ঝে শেয়ার করাটা ভাল। আমা‌দের পোস্ট ত‌ৈরী করার আ‌গে নো‌টিশ বোর্ড‌কে কল্পনা কর‌তে হ‌বে। খেয়াল কর‌তে হ‌বে কারা কারা বোর্ড‌টি দেখ‌বে? কা‌কে কি কি ম্যা‌সেজ দিব। এখা‌নে প‌রি‌চিত কারা কি অবস্থায় আ‌ছে। আমার পোস্ট কাউ‌কে ইর্ষায়  ‌ফেল‌ছে কি? কাউ‌কে তুলনায় ফেল‌ছে কি? আ‌মি কি দোয়া চাচ্ছ‌ি না আমার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমান কর‌তে চাচ্ছ‌ি। আমাদের মনে রাখ‌তে হ‌বে এটা সামা‌জিক যোহা‌যোগ ব্যবস্থা। এখা‌নে সব মানসিকতার মানুষ আ‌সে যোগা‌যোগ রাখ‌তে। অন্যদের খবর জান‌তে। নিশ্চয়ই ফুটানী টাইপ পোস্টগু‌লি অন্য‌দের হার্ট করবে।

প‌রি‌শে‌ষে বলব, নিজে‌র সাফল্য‌কে অন্যদের বদনজর থে‌কে মুক্ত রাখুন। লক্ষ্য ক‌রে থাক‌বেন;  গ্রা‌মের স্বাস্থ্যবান ও সুন্দর বাচ্চা‌দের অন্য‌দের ইর্ষা ‌যেন না লা‌গে তার জন্য মা‌য়েরা কাল টিপ দেয়। তার টিপটা ম্যা‌সেজ দেয় বাচ্চা‌টি‌কে দোয়া কর।  ইর্ষা‌ন্বিত হয়ো না। আমরা প‌রিবার নি‌য়ে প্রসংগ উ‌ল্ল্যেখ ক‌রে দোয়া চে‌য়ে বিন‌য়ের সা‌থে পো‌স্টে তথ্য উপস্থাপন করাটা হ‌বে হৃদয়গ্রাহী। কারন ফেইসবু‌কে অন্য‌কে ইর্ষান্বিত করাটাও অ‌ন্য‌ের স্বাধীনতা হর‌নের সমান অপরাধ।

Friday, November 29, 2019

বাংলা‌দে‌শে বায়ু দূষনরো‌ধে প‌রি‌বেশ বান্ধব যানবাহন প্রচলন

ই‌লেক্ট্র‌িক গাড়ী, ই‌লেক্ট্র‌িক বাস ও ই‌লেক্ট্র‌িক ট্রাইসাইক্যাল প‌রি‌বেশ বান্ধব। পৃ‌থিবী ধী‌রে ধী‌রে এই কালচা‌রের দি‌কে এ‌গি‌য়ে যাচ্ছ‌ে। ত‌াহ‌লে পে‌ট্রোল কার ও ডি‌জেল কা‌রের কি অবস্থা হ‌বে। ভারত  ২০৩০ সা‌লের ম‌ধ্য‌ে অল ই‌লেক্ট্র‌িক প‌রিবহন কর‌তে চায়। প্রশ্ন হল তাহ‌লে চলমান ডি‌জেল ও প্রে‌ট্রোল কা‌রের কি হ‌বে? আ‌মি ভাবলাম আচ্ছা যখন প‌রি‌বেশবাদীরা বেশী সোচ্চার হ‌বে হাই‌ব্রিড গাড়ী ও ই‌লেক্ট্র‌িক গাড়ী চালনার জন্য তখন কিছু তথ্য জানার জন্য গুগল কর‌তে থাকলাম। অবাক হ‌য়ে দেখলাম সাধারন গাড়ী‌কে রিক্ট্র‌ো‌ফিট ক‌রে ব্যাটারী, ইডাকশন মটর ক‌ন্ট্রোলার অ্যাড ক‌রে খুব সহ‌জেই হাই‌ব্রিড করা যাচ্ছ‌ে। সিএন‌জি ও এল‌পি‌জি'র মত সাধারন কনভার্সন। ৬/৭ ঘন্টার ম‌ধ্যে সাধারন গাড়ী হাই‌ব্রিড হ‌য়ে যাচ্ছ‌ে। হয়ত বা অ‌নে‌কে বল‌বেন এ‌তে তো প‌রিপূর্ণ হাই‌ব্রিড হ‌চ্ছে না। না হোক হাই‌ব্রিড গাড়ী ৪০% জ্বালানী সাশ্রয় হওয়ার জায়গায় আর না হোক ৩০% সাশ্রয় তো হ‌চ্ছে তা‌তে বা কম কি‌সে। একটা গাড়ী কিন্তু অ‌নেক সময়  ২০ বছর বা ত‌তো‌ধিক বয়স পর্যন্ত বা তার বেশী সময় ব্যবহার করা যায়। বাংলা‌দে‌শে একটা গাড়ী ৩০ বছরও ব্যবহার হ‌তে দেখা যায়। উন্নয়নশীল দেশ ব‌লে হয়ত তা ঘট‌ছে। ধনী দেশ হ‌লে তা মো‌টেই ঘটত না। অ‌নেক দ‌েশে দশ বছর একটানা কেউ একই গাড়ী ব্যবহার ক‌রে কিনা স‌ন্দেহ। সবাই নিত্য নতুল ম‌ডে‌লের গাড়ীর দি‌কে ধা‌বিত হয়। এমনও জানা যায় গাড়ীর ম‌ডেল বদল করার জন্য অ‌নেক সময় অ‌নেক কোম্পানী তাদের পুরাতন ম‌ডেল‌ের গাড়ী নতুন অবস্থায় বা‌তিল ঘোষনা ক‌রে। মা‌ঝে মা‌ঝে এটাও শোনা যায় কোন কোন কোম্পানী তা‌দের প্রডাকশন কস্ট কমা‌নোর জন্য অ‌নেক সময় বিপুল প‌রিমান গাড়ী উৎপাদন ক‌রে ফে‌লে। প‌ড়ে হয়তবা দেখা গেল উৎপা‌দিত গাড়ী আশানুরুপ বি‌ক্রি হ‌চ্ছে না। তখন কোম্পানী তা‌দের গাড়ীর মূল্য স্থ‌ি‌তিশীল রাখার জন্য বাজা‌রে গাড়ী সরবরাহ বন্ধ রে‌খে নতুন গাড়ী ফে‌লে রে‌খেনেস্ট ক‌রে মজুদ ক‌রে বাজার স্থি‌তিশীল রা‌খে। তা যাই হোক গাড়ী মানু‌ষের চরম আগ্র‌হের জায়গা। এটা বদলা‌নোর অভ্যাস ও নিত্যনতুন ম‌ডেল‌ে যাওয়াটা বেশীর ভাগ সামর্থ্যবানরাই তাই করে। 
বাংলা‌দে‌শের জন্য প্রাযুক্ত‌িক আ‌ন্দোল‌নে শরীক হওয়ার উপায় কি?
১। আমা‌দের বাস, ট্রাক ও কার জাতীয় যত গাড়ী আ‌ছে সেগু‌লো‌কে প্রথম ধাপে হাই‌ব্রিড কর‌তে হ‌বে। হাই‌ব্রিড ছাড়া অন্য গাড়ীর আমদানী বন্ধ কর‌তে হ‌বে।
২। সমস্ত সিএন‌জি ট্যা‌ক্সি‌কে ক্রমান্ব‌য়ে হাই‌ব্রি‌ডে রুপান্তর করা এবং ভবিষৎএ সিএন‌জি'র আমদানী বন্ধ ক‌রে অল ই‌লেক্ট্র‌িক ট্যাক্স‌ি ত‌ৈরি ও আমদানী করা।
৩। সমস্ত অ‌টো‌রিক্সা‌কে আ‌রো হালকা ও অ্যা‌ফি‌শি‌য়েন্ট করার জন্য লীড অ্যা‌সিড‌ হতে লি‌থিয়াম আয়‌নে কনভার্ট করা।
৪। গ্রা‌মের রিক্সা ভ্যান ইত্যা‌দি যেগু‌লো ই‌লেক্ট্র‌িক মটর‌ে চ‌লে সেগু‌লোর সিলড এ‌সিড বা ম্যান‌টেন্যান্স ফ্রি ব্যাটারীর প‌রিবর্ত‌ে লি‌থিয়াম আয়ন ব্যাটারীর ব্যবহার করা।
৫। গ্রা‌মের শ্যা‌লো ই‌ঞ্জ‌ি‌নের ট্রলার ও অনান্য বাহনগু‌লি‌কে ধী‌রে ধী‌রে হাই‌ব্রি‌ডে রুপান্তর ক‌রে আয়ুপূর্ত‌ি ক‌রে ফেইজ আউট করা। 

‌যে কোন ই‌লেক্ট্র‌িক বাহন সমশক্ত‌ির ফু‌য়েল গাড়ী হ‌তে ২০% কম প‌রি‌বেশ দূষন ক‌রে। শহ‌রের বাতাসকে নির্মল রাখ‌তে ই‌লেক্ট্র‌িক বাহন ছাড়া আর কোন বিকল্প নাই। ই‌লেক্ট্র‌িক বাহন কম প্রচ‌লিত ব‌লে প্রাথ‌মিকভা‌বে ই‌লেক্ট্র‌িক মটর আমদানী নির্ভর ব‌লে দাম বেশী হ‌বে। ত‌বে সম‌য়ের সা‌থে দাম কম‌তে থাক‌বে। লি‌থিয়াম আয়ন দি‌য়ে প্রাথ‌মিক সময় গাড়ীর দাম যত ছিল আজকাল ধী‌রে ধী‌রে দাম ক‌ম‌ছে। এমন‌কি লি‌থিয়াম আয়‌ন ব্যাটারীর দামও ধী‌রে ধী‌রে আ‌রো কম‌ছে। চার্জ ডেন‌সি‌টি বাড়‌ছে। ব্যাটারী‌তে আগুন ধরার প্রবনতা বন্ধ হ‌য়ে‌ছে। আজ তৈল বা কয়লার জেনা‌রেট‌রের বিদ্যুৎ‌তে গাড়ী চার্জ হ‌লেও বে‌শি‌দিন অ‌পেক্ষা কর‌তে হ‌বে না যখন আমরা সোলার প্যা‌নে‌লের বিদ্যুৎ দি‌য়ে সব চার্জ করব।
অপর‌দি‌কে লি‌থিয়াম আয়ন ব্যাটারী ও সোলার প্যা‌নেল দশ/‌বিশ বছর ব্যবহার ক‌রে রিসাইক্যাল করা যায় ব‌লে আ‌রো বেশী প‌রি‌বেশ বান্ধব। সারা পৃ‌থিবীর উন্নত দেশগু‌লো ধী‌রে ধী‌রে প‌রি‌বেশ বান্ধব বাহ‌নের দি‌কে এ‌গি‌য়ে যাচ্ছ‌ে। এখন আমা‌দেরও এ‌গি‌য়ে যাওয়ার সময় এ‌সে‌ছে। অন্যথায় আমরা হয়ত আ‌রো বেশী পি‌ছি‌য়ে পড়ব।

Saturday, November 23, 2019

সন্তা‌নের বি‌য়ে ও শশুর হওয়ার কর্তব্য

একজন সেনা অফিসার তার মে‌য়ে'‌কে দামী একটা কমিউনিটি সেন্টারে বি‌য়ের অনুষ্ঠান ক‌রে বি‌য়ে দিয়েছেন। প্রায় ২০ লাখ টাকা খরচ। এ যুগে তেমন টাকা নয়। আমার স্ত্রী বলল, দেখবা তোমার ছেলে মে‌য়ে বি‌য়ে দেয়ার সময় এর দ্বিগুণ টাকা লাগবে। মানে ৪০ লাখ টাকা। স্ত্রী'‌কে বললাম কও‌কি তাইলে তো প্রোপার্ট‌ি বিক্রি কর‌তে হইব।
আমার স্ত্রী'‌কে স্মরণ করালাম মনে আছে আমা‌দের বি‌য়ের সম‌য়ের কথা ১৯৯৭ সালে ডিসেম্বরে আমার শাশুড়ি আম্মা বললেন, তোমার শশুর আব্বা মারা যাবার আগে মেয়েদের একাউন্ট খুলে তা‌দের বি‌য়ের জন্য টাকা জমাতে শুরু ক‌রে ছিলেন, তোমার স্ত্রী'র একাউন্টে আছে তিন লাখ টাকা। এখন এটা খরচের তোমার মতামত চাচ্ছি। আমার মতামত হল, আমি আমার শুধুমাত্র পরিবারের সদস্য নি‌য়ে বি‌য়ে‌তে আসব। আপনি আপনার অতিনিকট আত্মীয়‌দের দাওয়াত করবেন।‌ নিজ বাসায় আয়োজন করুন। বরযাত্রী অ‌তি সী‌মিত হ‌বে। ঢাকা‌তে আমার দাওয়াত আমি করব ও আমার আত্মীয়‌দের খাওয়াব। বেঁচে যাওয়া অর্থ আপনি আপনার পরিবারের প্র‌য়োজ‌নে খরচ করুন।
অপরদিকে আমি আরেকটা বি‌য়ে দেখলাম; অসচ্ছল পরিবারের মে‌য়ে শিক্ষিত হ‌য়ে‌ছে। শশুরবাড়ীর পক্ষ শিক্ষিত ও সচ্ছল। ধুমধাম ক‌রে বি‌য়ে না দিলে ইজ্জত থা‌কে না। বাবা ঘুরে ঘুরে সাত আট লাখ টাকা ধার ক‌রে খরচ ক‌রে মে‌য়ের বি‌য়ে দেন। মে‌য়ের বি‌য়ের ধুম ধাম হয় ঠিকই। বাবা মার হাঁড়ি তো আর চড়ে না। বাবা চো‌রের মত ঘুরে বেড়ায় পাওনাদারদের এড়িয়ে।
আমি ঢাকায় নিজ বাসার ছা‌দের উপর বি‌য়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করব নিজের টাকায়। শুধু অতি কাছের আত্মীয়‌দের দাওয়াত করব। সব ঠিক ঠাক। বড় ভাই বাধ সাধল। ঢাকার মাঝামাঝি স্থানে বি‌য়ের আয়োজন করবে। ক্যাপ্টেন সা‌হে‌বের বি‌য়ে বলে কথা। বড় ভাই চাকুরীজীবী ঢাকায় সরকারী চাকুরী ক‌রে। অনেক বন্ধু বান্ধব। আমাকে দিয়ে ঢাকায় বড়সড় কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করাল। ধার কর্জ ক‌রে খরচ করাল। পড়ে দেখলাম আমার সামরিক ও ক্যাডেট কলেজ বন্ধুরা সবাই অনুপস্থিত। আর যারা উপস্থিত তা‌দের আমার অচেনা বড় ভাই‌য়ের বন্ধু বান্ধব। বি‌য়ের পাঁচ বছর পর শান্তিরক্ষী মিশন থেকে এসে ব্যাংকের ওডি আর বড় ভাই‌য়ের ঋণ শোধ করেছিলাম।
অনেক সতর্ক থাকার পরও অপরের অনুরোধে ঢেঁকি গিলে ধরা খেলাম।
এটা একটা বিরাট শিক্ষা।
এখন চিন্তা করলে মনে হয় বাসার ছা‌দের উপর অনুষ্ঠান ক‌রে তৎকালীন সম‌য়ের বিশাল অপচয় কমা‌তে পারতাম।
সন্তান‌দের বি‌য়ের খরচের জন্য আমার পরিকল্পনা অতি সহজ। ছেলেদের স্ত্রী'‌দের জন্য দশ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ক‌রে দি‌য়ে ছেলেকে ন‌মিনী করব এবং ছেলের বি‌য়ের এই দশ লাখ টাকা কাবিন হবে ও কাবিনের উসুল দেখাবে। বাকী বি‌য়ের খরচ ও অলংকার ছেলের মার ও ছেলে তা‌দের ইনকাম ও সম্পত্তি বেচা বিক্রি ক‌রে যা পা‌রে খরচ করুক। আমি নাই এর মধ্যে। ছেলের বৌ চাকুরী করলে পাবে দশ লাখ। আর চাকুরী না ক‌রে পিউর হাউজ ওয়াইফ হলে পাবে বিশ লাখ। মে‌য়ের বি‌য়ের আগে থেকেই তার নামে সঞ্চয়পত্রের মত মাসিক ইনকাম থাকবে। ছেলে মেয়েদের বি‌য়ের সময় আর্থিক নিরাপত্তা দেয়াটা জরুরী।      নতুন সংসার শুরু কর‌তে অনেক কিছু কেনা কাটা কর‌তে হয়। এখানে অনেকে বলবেন  ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বেশী হ‌য়ে যাচ্ছ‌ে না। আমি বলব আপনি  ২০লাখ টাকার অনুষ্ঠান করছেন নাম কামা‌নো ও ইজ্জত বাড়া‌নোর জন্য সেটা না ক‌রে সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে নব দম্পতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তা অবশ্যই ভাল কাজ।  অতঃপর নব দম্পতির সন্তান হলে প্রত্যেক নাতি নাতনীর জন্য মা‌য়ের নামে অতিরিক্ত পাঁচ লাখ টাকা ক‌রে সঞ্চয়পত্র যোগ হবে। আমরা সবাই জীবন শেষেই কেবল সম্পদ সন্তান বা উত্ত‌রো‌ধিকারী‌দের দেয়ার চিন্তা করি। কিন্তু জীবনের শেষ‌ে দেয়ার বদলে কোন বি‌নি‌য়ো‌গে রেখে মাসিক একটা আর্থিক অর্জনটা বেশী প্র‌য়োজন। নশ্বর এই  জীবনে  সম্পদ জ‌মি‌য়ে রাখার চে‌য়ে ক্রমান্বয়ে উপযুক্ত প্র‌য়োজ‌নে খরচ করাটা অনেক অনেক মংগলজনক। এটা আমার নিজ মতামত ও পরিকল্পনা। মে‌য়ের নিরাপত্তার জন্য চাকুরীর ম‌ধ্যে নেয়া ও সঞ্চয়পত্রের মত মাসিক ইনকামের ব্যবস্থা করা প্র‌য়োজন। এটা হয়তবা ছেলের বৌ বা মে‌য়ের জন্য ‌তেমন কোন টাকাই নয় এ যুগে। কিন্তু আমি নিশ্চিত,  এই  অল্প মাসিক পকেট খরচের মত টাকাটা তা‌দের বাড়তি বি‌নোদন ও স্ব‌স্থি দিবে। মে‌য়ের বি‌য়ে‌তে অপর পক্ষ কোন চাহিদা অলংকার ও যৌতুক হলে আমার পক্ষ থে‌কে ঝাঁটাপেটা হবে। যদি মে‌য়ের মা ও মে‌য়ে তাদের প্রপার্টি সেল ক‌রে আধুনিক কালের চাহিদা মিটায় তবে সেটা তা‌দের ব্যাপার। অপচয়ে ও মানুষ খাওয়া‌নো‌তে আমি নাই। অনেকে বলবেন, ছেলেদের বৌ'‌দের আর মেয়েকে সঞ্চয়পত্র ক‌রে কিভাবে এত টাকা দিবেন। ভবিষ্যতে আপনার ক্যান্সার হল, তখন বিদেশ চিকিৎসা আপনার পরিকল্পনায় পানি দিবে। এটা ঠিক। তবে সরকারী হাসপাতালে নিজের চিকিৎসা নি‌য়ে স্বেচ্ছায় মৃত্যু গ্রহণ করলে পরিবারের প্রতিশ্রুত  কাজগু‌লি করা যাবে।
অনেকে বলবে, সঞ্চয়পত্র সুদ শব্দটার জন্য যারা এটা ব্যবহার কর‌বেন না তাদের জন্য ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বি‌নি‌য়োগ আ‌ছে। মূল বিষয়‌ হল মাসিক ‌যেন একটা আয় আসে । এমন‌কি দোকান ক্রয়েও বি‌নি‌য়োগ হ‌তে পা‌রে। অনেকে বলবেন, বৌ টিকল না বা মে‌য়ের স্বামী টিকল না। তাহলে কি এত বড় ঝুঁকিতে যাওয়া যাবে।
অবশ্যই‌ যাওয়া যা‌বে। কারন সংসার টিকুক না টিকুক আত্মীয়তা যেটা হল সে বিদ্যমান থাকুক মা‌সোহারা মধ্য দি‌য়ে। কল্যাণ হোক কা‌রো না কা‌রো।

Thursday, November 21, 2019

প‌রি‌বেশ বান্ধব অ্যালু‌মি‌নিয়াম ওয়ান টাইম ক‌ন্টেইনার‌ের ব্যবহার

 পবিব‌েশ বান্ধব অ্যালু‌মি‌নিয়াম ওয়ান টাইম ক‌ন্টেইনার‌ের ব্যবহার

আমার অষ্টম‌শ্রেণী পড়ুয়া ছে‌লের কা‌ছে জান‌তে চাইলাম পৃ‌থিবী‌তে অ্যালু‌মি‌নিয়া‌মের প‌রিমান কত? ছে‌লে চটপট উত্তর দিল, পৃ‌থিবীর সব‌চে‌য়ে বেশী মজুদ ধাতুর ম‌ধ্যে অ্যালু‌মি‌নিয়াম এক‌টি। প‌রে ইন্টার‌নেটে পেলাম ‌বিদ্যমান ধাতুর ম‌ধ্যে ৮.২%  অ্যালু‌মি‌নিয়াম। অপর দি‌কে এত ব্যবহা‌রের পরও আয়রন মাত্র ৫% বিদ্যমান। মা‌নে অ্যালু‌মি‌নিয়াম থে‌কে পৃ‌থিবী‌তে আয়রন বা লোহার প‌রিমান কম। ত‌বে আয়রন আক‌রিক প্রক্রিয়ায় অ্যালু‌মি‌নিয়াম থে‌কে কম খরচ হয়। ফ‌লে অ্যালু‌মি‌নিয়াম থে‌কে আয়র‌নের দাম কম ও আমরা চা‌রি‌দি‌কে আয়র‌ন বা লোহার ব্যবহার বেশী দেখ‌তে পাই। অপর দি‌কে প্র‌ক্রিয়াজাত কর‌তে খরচ বেশী ব‌লে অ্যালুম‌ি‌নিয়াম ভূপৃ‌ষ্ঠে বেশী থাকার পরও এর ব্যবহার কম। অ্যালু‌মি‌নিয়াম রিসাইক্যা‌লের প‌রিমান ৬৭% আর আয়রন রিসাইক্যাল ৫২%। অ্যালু‌মি‌নিয়াম বেশী রিসাইক্যাল হওয়ার কার‌নে তার দাম ক‌মে আস‌বে তা নি‌শ্চিত ভা‌বে বলা যায়।
"ওয়ান টাইম ইউজ" অ‌ধিক প্রচ‌লিত কিছু সামগ্রীর নাম। যা কিনা প‌রিবে‌শের বারোটা বা‌জি‌য়ে পৃ‌থিবী‌কেও "ওয়ান টাইম" ক‌রে দি‌চ্ছে। তাহ‌লে উপায় প্লাষ্টি‌কের ব্যবহার কমা‌নো আর যতটুকু প্লা‌স্টিক ব্যবহার করা হয় তা পু‌রো মাত্রায় রিসাইক্যাল করা। ত‌বেই প‌রি‌বেশ‌কে কিছুটা স্ব‌স্থি দেয়া যা‌বে। আ‌মি বরাবরই ওয়ান টাইম ব্যবহা‌রের বিপক্ষ‌ে। কিছু‌দিন আ‌গে আমার মা হাসপাতা‌লে ভর্ত‌ি হলেন, মা‌য়ের জন্য কিছু মূখ‌রোচক খাবার প্রেরণ জরুরী। টি‌ফিন ক্যা‌রিয়ার দি‌য়ে লোক মারফত খাবার পাঠা‌নো। পুনরায় টি‌ফিন ক্যা‌রিয়ার ধোয়া ফেরত আনা পু‌রো প্র‌ক্রিয়াটা চ্যা‌লে‌ঞ্জ‌িং। তখন বু‌দ্ধি আসল ওয়ান টাইম ফুড কন‌টেইনার ব্যবহার করা। অপর‌দি‌কে আ‌মি আবার ওয়ান টাইম প্লা‌স্টিক কন‌টেইনার ব্যবহা‌রের বিপক্ষ‌ে তাহ‌লে উপায় কি? উপায় আর কিছুই নয় অ্যালু‌মিনিয়াম‌ের ওয়ান টাইম কন‌টেইনার ব্যবহার করা। প্লা‌স্টিক থে‌কে অ্যালু‌মি‌নিয়াম ওয়ান টাইম বক্সগু‌লি প‌রিবেশ বান্ধব। প্লা‌স্টিক প‌চে না। ত‌বে অ্যালু‌মি‌নিয়াম ভু‌মির সা‌থে মি‌শে অ‌তি ধী‌রে ধী‌রে। মা‌টির সা‌থে রাসায়নিক বি‌ক্রিয়ায় ধীরে ধী‌রে ক্ষয়প্রাপ্ত হবে ও এক সময় ক্ষ‌দ্র ক্ষুদ্র কনা হ‌য়ে মাটি‌তে মি‌শে যা‌বে। মাটি‌তে ক্ষয় প্রাপ্ত হওয়ার জন্য এটা অ‌ধিক প‌রিমান প‌রি‌বেশ বান্ধব। অ্যালু‌মি‌নিয়াম প্লা‌স্ট‌িক ওয়ানটাইম থে‌কে কিছুটা বেশী দাম হ‌লেও এর প‌রি‌বেশ বান্ধব কোয়া‌লি‌টির জন্য ডিস‌পো‌জেবল ফুড কন‌টেইনা‌রের জন্য প্লাস্ট‌িক ব্যবহার বাদ দি‌য়ে অ্যালু‌মি‌নিয়ামের ব্যবহার বাড়া‌নোটা অ‌ধিক জরুরী।  ২০১৮ সা‌লে‌র হিসাব অনুযায়ী সারা পৃ‌থিবী‌তে ৯% প্লা‌স্টিক রিসাইক্যাল হয়। অপর‌দি‌কে অ্যালু‌মি‌নিয়াম রিসাইক্যাল হয় ৬৭%। প্লা‌স্টিক ডিস‌পো‌জেবল ফুড কন‌টেইনার ব্যবহার নি‌ষিদ্ধ ক‌রে তার জায়গায় অ্যা‌লুমি‌নিয়াম কো‌টেট কাগ‌জের ফুড প্যা‌কেট, অ্যালু‌মি‌নিয়াম ক্যান, অ্যালু‌মি‌নিয়ামের নানা মা‌পের ওয়ানটাইম ক‌ন্টেইনা‌রের ব্যবহার বাড়া‌নো যে‌তে পা‌রে। প্লাস্ট‌িক দি‌য়ে যা মোড়ানো যায় তার বেশীর ভাগই অ্যালু‌মি‌নিয়াম ফয়েল দি‌য়ে মোড়া‌নো যায়। বার্গার কিং, ম্যাক‌ডোনালস, ড‌মি‌নোজ, পিৎজ‌া হাট, কেএফ‌সি ও সাবও‌য়ে এরুপ অ‌ধিকাংশ চেইন ফুড শপ প্লা‌স্টিক‌ের ব্যবহার ক‌মি‌য়ে রিসাইক্যাল কাগজ ও ওয়াক্স পেপার ব্যবহার কর‌ছে। যা তা‌দের প‌রি‌বেশ স‌চেতনার জন্য অনুসরনীয় একটা কাজ।
আ‌মি প্লা‌স্টিক ব্যাগ ও ডিস‌পো‌জেবল কন‌টেইনার কম পছন্দ ক‌রি। ‌সৌ‌দি আর‌বে 'ওমড়া হজ্জ" করার সময় দেখলাম লক্ষ লক্ষ হাজীর জন্য ব্যাপক হা‌রে প্লা‌স্টিক আর প‌লি‌থি‌নের ব্যবহার হ‌চ্ছে। মাথা কামা‌নোর জন্য বড় বড় প‌লি‌থিন গায়‌ে জ‌ড়ি‌য়ে মাথা কা‌মি‌য়ে সেই প‌লি‌থিন গার‌বেজ ব্যা‌গে ফে‌লে দি‌চ্ছে। খাবার কিন‌তে গে‌ছেন। প‌লি‌থি‌নে ব্যাগ, প্লাস্টিক ওয়ান টাইম কন‌টেইনার, ডিস‌পো‌জেবল গ্লাস ইত্যা‌দি দি‌য়ে আপনা‌কে ব্য‌তিব্যস্ত ক‌রে দি‌চ্ছে। এমন কি টে‌বি‌লে বি‌ছি‌য়ে খাওয়ার জন্য বড় ডিস‌পো‌জেবল প‌লি‌থিনও দি‌চ্ছে। আ‌মি স‌ত্যি এত এত প‌লি‌থি‌নের ব্যবহার দে‌খে আতং‌কিত ছিলাম। ধর্মীয় তীর্থস্থান ও অনান্য পর্যটন কে‌ন্দ্রগু‌লো‌তে যেখা‌নে প‌লি‌থি‌নের ব্যবহার বেশী সেসব স্থা‌নে অ্যালু‌মি‌নিয়াম ফ‌য়েল ও ডিস‌পো‌জেবল অ্যালু‌মি‌নিয়াম ক্যান এবং অ্যালু‌মি‌নিয়া‌মের কন‌টেইনার‌ের ব্যবহার বাড়া‌নো প্র‌য়োজন। কাগজ বা রিসাইক্যাল কাগ‌জের ব্যবহার বাড়া‌নো প্র‌য়োজন। যেখা‌নে তরল নি‌তে হবে সেখা‌নে অ্যালু‌মি‌নিয়াম কো‌টেট পেপার বা ওয়াক্স পেপারের ব্যবহার বাড়া‌নো যায়। মোট কথা প্লা‌স্টি‌কের শক্ত‌িশালী বিকল্প হল অ্যালু‌মি‌নিয়াম এ‌তে খরচ কিছুটা বেশী হ‌লেও প‌রি‌বেশ বান্ধব। প‌রি‌বে‌শের কথা চিন্তা ক‌রে আমরা অ্যালু‌মি‌নিয়া‌মের ব্যবহার বাড়া‌তে পা‌রি। ঘ‌রের জানালা দরজা অ্যালু‌মি‌নিয়া‌মে তৈরী হ‌চ্ছে যা দীর্ঘ মেয়াদী। ম‌রিচা প‌ড়ে না। রিসাইক্যাল করা যায়। এখন সময় এ‌সে‌ছে ব্যবহৃত অ‌নেক সামগ্রী প্লা‌স্টি‌কের প‌রিবর্ত‌ে অ্যালু‌মি‌নিয়াম দি‌য়ে ত‌ৈরী করার। হয়ত অদুর ভ‌বিষৎ এ অ্যালু‌মি‌নিয়া‌মের ব্যবহার বাড়‌বে। সেই  সা‌থে বাড়‌বে রিসাইক্যাল করার ক্ষমতা। তখন হয়তবা ৯০% অ্যালু‌মি‌নিয়াম রিসাইক্যাল করা যা‌বে।

Thursday, November 14, 2019

‌ঢাকার যানজট নিরশ‌নের কোন সমাধান আ‌ছে কি?

কোন শহ‌রের যানজট নিরশ‌নে অ‌নে‌কে ব‌লেন, মানু‌ষের হা‌তে টাকা অ‌নেক। বেশী বেশী গাড়ী কে‌নে। ট্যাক্স বাড়াও গাড়ীর দাম বাড়াও। গাড়ী কেনা নাগা‌লের বাই‌রে নাও। ত‌বেই  গাড়ী কেনা কম‌বে। গাড়ী কেনা কম‌লে রাস্তায় কম গাড়ী থাক‌বে। যানজট কম হ‌বে। রাস্তা যতটুকু সম্ভব বড় ক‌রে রাস্তায় খানা খন্দক মেরামত কর‌তে হ‌বে। বেশী বেশ‌ী আন্ডার পাস ও ওভার পাস বানা‌তে হ‌বে। ট্রা‌ফিক সিগন্যাল তু‌লে দি‌য়ে ইউলুপ ত‌ৈরী কর‌তে হ‌বে। সবই খুব কার্যকরী ব্যবস্থা। কিন্তু কতটুকু কার্যকরী। দুইতলা তিনতলা রাস্তা। আন্ডার গ্রাউন্ড পার্ক‌িং ইত্যা‌দি অ‌নেক কিছু করা যায়। আপ‌নি সব কিছুই‌ কর‌লেও য‌দি ক‌য়েক তলাবি‌শিষ্ট চ‌ার‌ লেন রাস্তা কর‌তে না পা‌রেন ত‌বে যানজট থে‌কে কোন মুক্ত‌ি নাই। তার উপর রাস্তায় গাড়ী পার্ক‌িং নি‌ষিদ্ধ কর‌তে হ‌বে। অ‌নে‌কে বল‌বেন, ঢ‌াকা শহ‌রের যানজট নিরশ‌নের উপায় আস‌লে আ‌ছে কি? স‌ত্যি বল‌তে কি ঢাকা‌কে ত্যাগ করা ছাড়া আর কোন উপায় নাই। রাজধানী নতুনভা‌বে কর‌তে হ‌বে। যে কোন শহ‌রের যানজ‌টের মূল কারন বেশী গাড়ী ও অপ্রতুল রাস্তা। শহ‌রের রাস্তা অপ্রতুল ও গাড়ী বেশী এবং এ কার‌নে যানজট বেশী। অপ্রতুল রাস্তা‌কে বড় করা যা‌বে কি। এটা পুরাতন শহ‌রের জন্য অ‌নেক অ‌নেক জ‌টিল ব্যাপার। নতুন শহর নতুন প‌রিকল্পনায় এটা কার্যকরী হ‌তে পা‌রে। নতুন শহ‌রের প‌রিকল্পনায় যেটা কর‌তে হ‌বে যে কোন বাড়ী বা প্র‌তিষ্ঠা‌নের সাম‌নের রাস্তা অবশ্যই দুই‌টি ছোট গাড়ী ও রিক্সা ক্রশ করার মত হ‌তে হ‌বে। বা‌নি‌জ্যিক এলাকার রাস্তা কমপক্ষ‌ে  ফোর লেন হওয়াটা বেশ জরুরী।
রাস্তা বড় কর‌লেও তার একটা সীমাবদ্ধতা আ‌ছে। কিন্তু এ‌কের পর এক অপ‌রিক‌ল্পিতভা‌বে দালান উপ‌রের দি‌কে বাড়া‌নোটা ঠিক নয়। 
আমার বাবা  ১৯৮৬ সা‌লে যখন আমা‌দের নি‌য়ে ঢাকায় আ‌সেন তখন আমরা ঢাক‌ার জুরাইন ছিলাম। রিক্সা নি‌য়ে বল‌তে গে‌লে গোটা ঢাকা শহর ঘুরতাম। পুরান ঢাকায় যে‌তে চিকন রাস্তায় জ্যাম পেতাম। আর কোথাও তেমন জ্যাম নেই। ম‌নে আ‌ছে জুরাইন এলাকায় চিকন রাস্তাগু‌লি‌তে কোন জ্যাম ছিল না। আজ ভয়নক জ্যাম। গ‌লির ভিত‌রের চিকন রাস্তাগু‌লি গাড়ী ও রিক্সার ভয়াবহ জ্যাম। কিন্তু কেন এই  অবস্থা। কারন একটাই আ‌গে ১৯৮৬ সা‌লে আমা‌দের পাড়া ও মহল্লায় কোন বাড়ী ২ ও ৩ তলার বেশী ছিল না। কদা‌চিত দুই একটা বাড়ী পাচ তলা দেখা যেত। এখন পাচতলা হল একটা দুই‌টা বাড়ী আর বেশীর ভাগই আটতলা দশতলা। ১৯৮৬ সা‌লে যা মানুষ ছিল গত ৩২ বছ‌রে ঢাকার মানুষ ম‌নে হৃয বে‌ড়ে‌ছে পাচগুন। এটা আমার চো‌খের দেখা ঘটনা। পাচগুন মানুষ বে‌ড়ে‌ছে গ‌লির রাস্তাগু‌লি একই মা‌পের আ‌ছে। তা‌তে যা হবার তাই হল, গ‌লির রাস্তা আর পাচগুন মানুষ‌কে নি‌তে পার‌ছে না। উত্তরা সরকারীভা‌বে উন্নয়ন করা আবা‌সিক এলাকা এর রাস্তাঘাট প‌রিক‌ল্পিতভা‌বে ত‌ৈরি করা। এখন সেই প‌রিকল্প‌িত উত্তরার রাস্তাও জ্যাম। কারন একটাই আ‌গে উত্তরায় ৬ তলা বাড়ীর অনুম‌তি ছিল এখন  ৮ তলা বা তার বেশী উচু করার অনুম‌তি ‌মিল‌ছে। প‌রিক‌ল্পিত রাস্তার সা‌থে ৬ তলা বাড়ীর যে সামঞ্জস্য ছিল তা অ‌তি‌রিক্ত উচু করার অনুম‌তি দেয়ায় তার চাপ পরেছে রাস্তার উপর। ট্রা‌ফিক জ্যাম কমা‌নোর প্রথম ধাপ হল, উচু দালান ক‌মি‌য়ে আনা। ঘন বস‌তি ক‌মি‌য়ে ফেলা। পার্ক‌িং এর স্থান বাড়া‌তে হ‌বে। ফ্লাইওভার ও রাস্তা ক‌য়েক স্ত‌রে কর‌তে হ‌বে। রাস্তা ও আন্ডার গ্রাউন্ড যোগা‌যোগ বাড়া‌তে হ‌বে। পাব‌লিক ট্রান্স‌পোর্ট বাড়া‌তে হ‌বে। মানুষ‌কে উন্নতমা‌নের পাব‌লিক ট্রান্স‌পোর্ট দি‌য়ে ব্য‌ক্ত‌িগত গাড়ীর ব্যবহার কমা‌তে হ‌বে। ঢাকা‌কে ব্যবসা‌য়িক শহর ক‌রে বাংলা‌দে‌শের প্রশাস‌নিক রাজধানী পদ্মা ব্রি‌জের আ‌শে পা‌শে স্থানান্ত‌রিত করা এখন সম‌য়ের দাবী। এটা করাটাও প্র‌য়োজন অন্যথায় বেশী দেরী হ‌য়ে যে‌তে পা‌রে। বর্তমান ঢাকা‌কে রক্ষা করার জন্য কোন দালান‌কে ৫/৬ তলার বেশী উপ‌রে উঠ‌তে দেয়া যা‌বে না। রাস্তাগু‌লি দুইতলা তিনতলা কর‌তে হ‌বে। সব স্থা‌নে ইউলুপ কর‌তে হ‌বে। পার্ক‌িং এর জন্য মাল্ট‌িস্টো‌রেজ ব্যবস্থা কর‌তে হ‌বে। ত‌বেই  হয়ত আমরা মোটামু‌টি বাস‌যোগ্য ঢাকার প‌থে আ‌গাতে পারব। যানজট আমা‌দের মূল্যবান সময়টা‌কে কে‌ড়ে নি‌য়ে দুর্ব‌িসহ জীবন ত‌ৈরি ক‌রে‌ছে তার লাগাম টে‌নে ধর‌তে হ‌বে। বল‌তে হ‌বে আর নয় যানজট। বাড়ীর উচ্চতা বাড়া‌তে হ‌বে। রাস্তার প্রশস্থতা ও পার্ক‌িং ব্যবস্থার উপর নির্ভর ক‌রে দালান উচু করার অনুম‌তি দি‌তে হ‌বে অন্যখায় নয়। কম উচু দালান ও সুপ‌রিসর যোগা‌যোগ ব্যবস্থা ছাড়া দুর্বিসহ যানজট ঠেকা‌নোর আর কোন উপায় আ‌ছে ব‌লে ম‌নে হয় না।

Wednesday, November 6, 2019

সফল নয় ভাল মানুষ হওয়াটা প্র‌য়োজন

ছোট ছেলেকে নি‌য়ে জেএস‌সি পরীক্ষা শেষে বাসায় নি‌য়ে ফিরছিলাম। আমা‌দের পিছন পিছন একজন ছাত্রী জেএসসি পরীক্ষা দি‌য়ে বাবার সাথে ফিরছিল। মেয়েটি তার বাবা‌কে বলছিল, বাবা জান, আমার ভাগ্যটাই খারাপ। আমার সিটের সামনেই টিচারদের বসার জায়গা। একদম সামনে আর কিছুক্ষণ পর পর টিচার বল‌তে থাকে ডানে বামে দেখলে খাতা নি‌য়ে নিব। কথা বললে খাতা নি‌য়ে নিব। অথচ দেখ পিছনে সবাই কথা বলছে। ওখানে টিচার দেখে না। ভাগ্যটাই খারাপ। এটা শো‌নে পিছন ফি‌রে মেয়েটাকে বললাম, " সফলতার চে‌য়ে ভাল মানুষ হ‌য়ে বাচাটা ভাল না? কি বল।" মেয়েটি বলে উঠল, না না, আং‌কেল কি বলছেন, বাকীরা তো কথা বলে এম‌সি‌কিউ কারেক্ট করার সু‌যোগ পেল। সমান তো হল না। আমি বললাম, দুঃখ ক‌রো না ও‌দের সফল হ‌তে দাও। এ সফলতা সাময়িক। মেয়েটি আরো কিছু বল‌তে চাচ্ছিল। বাবা বলল, থাক মা আং‌কে‌লের সাথে কথা বাড়িও না।
আমি জানি বাবা ও মে‌য়ে দুজনেই আমার কথায় বিরক্ত হ‌য়ে‌ছে। আমার ছেলে হাসছে। আমার ছেলের হাসার কারণটাও আমি জানি। আমার ছেলে জানে আমি তা‌কে কখনও এ প্রশ্ন করি না পরীক্ষা কেমন হল? আমি তা‌কে প্রশ্ন করি? সব উত্তর দিয়েছ। আমি জানি ছেলে সব উত্তর দিলে একটা ভাল নম্বর সে পাবে। কারণ সে কো‌চিং ক‌রে না। সেজন্য তার কোন সাজেশন নেই। পুরো বই সে পড়ে। রচনা কমন পড়ল কি পড়ল না তার কোন পার্থক্য নেই কারণ বই‌য়ের সব রচনা তার পড়া। যে কোন ধরনের রচনা সে লিখ‌তে পারবে । তবে যারা সাজেশন ক‌রে প্রস্তুতি নি‌য়ে লিখবে তারা পাবে ৮০% নম্বর আর সে পাবে ৬০% অথবা ৭০% নম্বর। আমি আমার জীবনে অনেক পড়তাম কখনও দাগিয়ে পড়তাম না। মাঝে মাঝে দাগা‌নো পেলে ওটা একটু বেশী পড়ে বাকী সবই পড়তাম। আমার এই  প্যাটার্ন আমার সন্তান‌দের মাঝে থাকায় আমি একটু হতাশও হ‌য়ে‌ছি কারণ এ ধরনের সব পড়ে চূড়ান্তভাবে আউট স্ট্যা‌ডিং রেজাল্ট করাটা কঠিন। আমার ছেলের কোন উত্তর ছুটে না গেলে সে ভাল স্কোর করবে কিন্তু আউটস্ট্যা‌ডিং ফলাফল করবে না।
আমি ছাত্র জীবনে পাঠ্য বই‌য়ের বাই‌রে প্রচুর বই পড়তাম এখনও পড়ি। ছেলে মে‌য়েরাও তাই হ‌য়ে‌ছে। ট্যাব‌ে ডাউনলোড ক‌রে সর্বদা বই পড়ার রিক্রিয়েশন নি‌য়ে আছে। আমার বই‌য়ের ভাষা ছিল বাংলা আর ওদেরটা হল ইংলিশ এটাই পার্থক্য। আমি যখন আমার সন্তান‌দের বলি দেখ তোমা‌দের সাইন্স পড়ে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার প্র‌য়োজন নেই। যেটা ভাল লাগে সেটা হও। প্রচুর পড়‌তে ও জান‌তে ভালবাস। শিক্ষক হও। ব্যারিস্টার হও।
ক্যাডেট কলেজ, মিলিটারি একাডেমী, সামরিক চাকুরী ইত্যাদি'র পর মনে হ‌য়ে‌ছে অর্থ ও বিত্ত হয়ত সুখে রাখে, প‌দোন্ন‌তি ও ক্ষমতা সুখ দেয়, আনন্দ দেয়, সন্মান দেয়। সবাই তাই চায়। কিন্তু সফলতার বিপরীতে ভাল মানুষ হওয়াটাই বেশী জরুরী। এক বাবার একজন শিক্ষক সন্তান আর এক বাবার দুর্নীতি দমন কমিশনে হাজিরা দেয়া অর্থ বিত্তের মালিক সফল "সচিব পদবীর সন্তান" কোনটা ভাল। আমি হয়ত সৎ ভাবে বাঁচা "শিক্ষক সন্তান"কে বেশী পছন্দ করব। আর এক ধরনের মানুষ আমার পছন্দ যারা কর্মসংস্থান কর‌তে পা‌রে।
আসলে আমার এই ভাবনাটা  স্র‌ো‌তের বিপরীতে চিন্তা করা। আমি জানি আমি একলা নই। অনেকেই আমার মত আছে। আমার মত চিন্তা ক‌রে। সফল মানুষ থেকে ভাল মানুষ হওয়াটা অনেক ভাল। ভাল মানুষ হ‌তে চাইলে আমি নিয়মিত পড়া‌শোনা করব। আমার চিত্ত‌বি‌নোদনই তখন পড়া‌শোনা। আর পড়া‌শোনা অভ্যাস করলে এটা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় পাশ হবে। যেহেতু দুই নম্বরি ক‌রে সফলতার ধান্ধা নাই সেহেতু নিজের গরজে পাঠ্য বই বা ভর্তি পরীক্ষার বই পড়া হবেই। এ‌তে আউট স্ট্যান্ডিং ফলাফল না হলেও পাশ হবেই। অন্তত অতি সফল না হলেও মধ্যম মানের পরিচ্ছন্ন জীবন পাওয়া যাবে। যেহেতু কাজে কর্ম‌ে ও অর্থ‌ে সততা থাকবে তাই একটা শান্তিপূর্ণ জীবন জুটে যাব। এটাই বাস্তবতা। আমি গ্যারান্টি দি‌য়ে বল‌তে পারি সফলতা চিন্তা না ক‌রে ভাল মানুষ হওয়ার অনুশীলন যদি সন্তান‌দের দেয়া যায় তা‌তে নিজেও শান্তিতে থাকা যায়। সন্তানরাও মাথা উঁচু ক‌রে শান্তিতে বাঁচবে। ভুটানীরা রাস্ট্রীয়ভা‌বে সম্পদশালী হওয়ায় বিশ্বাস ক‌রে না সু‌খে বিশ্বাস ক‌রে। আমরা প্র‌তি‌টি প‌রিবা‌রে সফল বা সম্পদশালী হওয়ার চিন্তা বাদ দি‌য়ে ভাল মানুষ হওয়ার দি‌কে অগ্রসর হ‌লে দেশটা সুখ ও শান্ত‌িতে ভ‌রে যা‌বে।

Sunday, November 3, 2019

শহুরে জীবনে শূন্য বি‌নি‌য়ো‌গে চাষাবাদ

 ‌ছোট‌বেলা থেকেই দেখে আসছি। আমার বাবা ও মা সবজি চাষ, ফল গাছ লাগা‌নো, গরু, ছাগল, হাস, মুরগী পালন এই  কাজগু‌লি করতেন। বাবা ও মা পরিবারের চাহিদা নিজেদের উৎপাদিত পণ্য হ‌তেই মিটা‌তেন। আমরা ছোট‌বেলা পেতাম বিষমুক্ত খাবার। ইঞ্জিনিয়ার বাবা যেখানে যেতেন টিএন্ড‌টি'র ওয়্যারলেস ডিপার্টমেন্টে চাকুরীর সুবাদে সরকারী কোয়ার্টার পেতেন আর আবাদ করার অনেক স্থান পেতেন। বাবা মা‌য়ের  সব কাজের মধ্যে সবজি ও ফল চাষ আমি জ্যা‌নে‌টিক্যালী পেয়েছি। নোংরা করার কারণে গরু, ছাগল ও হাস মুরগী পালন পছন্দের তালিকায় আন‌তে পারিনি তার কারণ এগু‌লোর বিষ্ঠা ত্যাগ ও নিয়মিত পরিষ্কার থাকার জন্য অনেক অনেক বেশী শ্রম দি‌তে হয়।

সবজি বাগান আমার কাছে অনেক অনেক প্রিয় কাজ। আমার মাঝে ঘুরপাক খায় শহরে বাড়ীর উপর ছাদ বাগান। গত সেপ্টেম্বর ২০১৯ আমি হে‌লিকপ্টা‌রে ঢাকা শহরের একটা অংশের উপর লো ফ্লাইং এর সু‌যোগ হয়। উত্তরার দি‌কে প্রায় ৮০% বাড়ীর উপর ছাদ বাগান দেখে আমার অনেক ভাল লেগেছে। ইউটিউব ও নানা টেলিভিশন প্রোগ্রাম ছাদ বাগান‌কে জনপ্রিয় করছে। শহুরে মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ছাদ বাগান করাটা অনেক অনেক বেশী লাভজনক।

অনেকেই  প্রায় ছাদেই  প্রায়  দুই/তিন শতাংশ জ‌মির আকা‌রে ছাদ বাগানে শাক সবজি যথেষ্ট পরিমাণে উতপাদ‌নে সক্ষম। যা দিয়ে সহজেই  পারিবারিক চাহিদা পূরণ কর‌তে পারেন। আমি অনেকেই দেখেছি ছাদ বাগানের সাথে চৌবাচ্চা বা ড্রামে মাছ চাষ কর‌তে।

তাহলে নিশ্চিত ছা‌দের উপর শাক, সবজি, মাছ, মুরগী, কো‌য়েল ও কবুতর পালন ক‌রে একটা প‌রিবা‌বের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। তবে বিপদ হয় যৌথ মালিকানার ছাদগুলো নি‌য়ে। তাতে ছাদ বাগান করার একটা জটিলতা হ‌য়ে যায়। তবে অনেক ভাড়াটিয়াও মালিকের অনুমতি নি‌য়ে ছাদ বাগান ক‌রে। অনেকে আবার কমিউনিটির অনুমতি নি‌য়ে ছাদ বাগান ক‌রে। কয়েকদিন আগে ছাদ বাগানের গাছ কাটা ফেইস বু‌কে ভাইরাল হয়। পরিবেশবাদীরা অনেক অনেক ফল ফসলের চারা নিয়ে এগিয়ে আসে। এত‌ে আসলেই বুঝা যায় মানুষ ছাদ বাগান ও পরিবেশ রক্ষায় কত সচেতন।

সবজি হল ও ফল হল। প্রো‌টি‌নের চাহিদা কিভাবে মিটবে তার জন্য প্রয়োজন মুরগীর চাষ। ডিম পাওয়া যাবে ও মাংস পাওয়া যাবে। তবে বিপদ হল মুরগীর বিষ্ঠা। যদিও তা পরিষ্কার ক‌রে ছাদ বাগানে দেয়া যায়। ছাদ বাগানে একটা ইকো সিস্টেম করা যায়। যেমন: ঘরের সমস্ত পচনশীল বর্জ্য কন্টেইনারে পচিয়ে ছাদ বাগানে ব্যবহার করা যাবে। ছাদ বাগানের মরা পাতা মরা ডাল ইত্যাদি পচিয়ে পুনরায় ছাদ বাগানে ব্যবহার করা যায়। এখন নারিকেলের ছোবড়া ও ডাস্ট ছাদ বাগানের মা‌টি‌কে রিপ্লেস করছে। গাছের চারা বা টবের সাথে কিছু মা‌টি উঠে আসলে বাকী কম্প‌োস্ট, বাড়ীর পচনশীল দ্রব্য ও বাগানের মরা পাতা ও মরা ডাল ছত্রাক ও ব্যাক‌টে‌রিয়া নাশক দ্বারা শোধন ক‌রে কম্প‌োট ও এক ধরনের মাল‌চিং তৈরী করা যায়। যা মাটির বিকল্প। পানি ধারক।

আমার বড় বো‌নের ছাদ বাগান দেখলাম। কোন ইন‌ভেস্ট নাই। বড় সোয়া‌বি‌নের তৈলের প্লাস্টিক কন্টেইনার। এছাড়া অব্যবহৃত বা ব্যবহার অনুপ‌যোগী নানা কন্ট‌েনার দি‌য়ে সাজা‌নো তার ছাদবাগান। গাছের চারা কি? সেটাও জি‌রো ইনভেস্টমেন্ট। পুইশাক ও কলমিশাক রান্নার কাটাকুটির সময় উৎ‌ছিস্ট শক্ত ডাটা কন্টেইনারে লাগিয়েছেন। কাকরুল,করল্লা ও ট‌মে‌টো রান্নার কাটাকুটির সময় পাওয়া বিচি একইভাবে মরিচের বিচি কন্টেইনারে ফেলে বাগান। ভালই নাকি শাকসবজি খাওয়া চলছে। জান‌তে চাইলাম সার দেন কি? বলল রান্নার কাটাকুটি পচে সার। তবে পানি দি‌তে হয়। জানালেন, ছাদে কাপড় উঠানে নামা‌নোর সময় বাগানে পানি লাগলে পাইপ আছে পানি দি‌য়ে দেই। বাগানটা ভালই মনে হল। জি‌রো ইন‌ভে‌স্টের বাগান যা পাওয়া যাবে তাতেই  সন্তুষ্টি।

আমি জি‌রো ইন‌ভে‌স্টে বাগান করাটায় বেশ মজা পেলাম। আমি ৫০টা টবের বাগান শুরু ক‌রে পরিচর্যার অভাবে ফেল করেছিলাম। আরেকবার ব্যালকনী‌তে বাগানে ফেল করি তা‌তেও বি‌নি‌য়োগ মন্দ ছিল না। চাঁপাইনবাবগঞ্জে একজন‌কে মাসে দুই‌ হাজার টাকা পারিশ্রমিক দিচ্ছিলাম সে আমা‌কে চমৎকার বাগান ক‌রে দিয়েছিল। তবে আরো কয়েক জায়গায় বাগানের বি‌নি‌য়ো‌গে ফেল করি। আমার বড় বো‌নের জি‌রো ইন‌ভেস্ট বাগানের ভাল দিক হল কত বি‌নি‌য়োগ করলাম কত রিটার্ন পেলাম তার হিসাবটা জরুরী নয়।

জি‌রো ইন‌ভেস্ট চাষাবাদ ভাল। ছা‌দের উপর জি‌রো ইন‌ভেস্ট বাগানের পাশাপাশি লো ইন‌ভেস্ট দেশী মুরগীর বা দেশী মাছের চাষ করা যায়। পুরাতন বড় বালতিতে বাজার থেকে কম দাম‌ে ছোট কই মাছ ও ছোট শিং মাছ কিনে পরিত্যক্ত বালতিতে জিয়ল মাছ চাষ শুরু করা যায়। খাবার হিসাবে জিয়ল মাছ কেনা হলে তার থেকে বেঁছে বেঁছে  ছোট মাছগু‌লি বালতিতে বা‌য়োফ্লস্ক‌ের মাধ্যমে চাষ করা যায়। বাজা‌র থেকে ছোট সাইজের দেশী মুরগী ছাদে খাঁচায় রেখে পালন করা যায়। বড় হলে হয় ডিম পারবে নচেৎ মাংস খাওয়ার মুরগী হিসাবে পাওয়া যাবে। মাছের খাবার বা মুরগীর খাবার ঘরের ফেলে দেয়া উৎছিস্ট থেকে দেয়া যায়। রেশনের আটা চালুনি দি‌য়ে চেলে সেই ভুষি ও বেঁচে যাওয়া ভাত ইত্যাদি নানা খাবার দি‌য়ে আমার মা‌য়ের মুরগী পালন চলত। পরিশেষে বলব, আমরা একটু নজর দিলে আমাদের শহরের ছাদগু‌লিও হ‌তে পা‌রে জি‌রো বা লো ইন‌ভে‌স্টের ছাদ বাগান, ড্রামে মাছ ও খাঁচায় মুরগী পালনের এক মহা উদ্যোগ।

Tuesday, October 22, 2019

জেনা‌রেশন সত্তর 

একদ‌িন আমার এক বন্ধু বল‌ছিল আমরা যারা  ১৯৭০ সা‌লের আ‌গে পি‌ছে জন্ম গ্রহন ক‌রে‌ছি তারা লাকী। আ‌মি জান‌তে চাইলাম কিভা‌বে? আমার বন্ধু বি‌শ্লেষন করল; আমরা জ‌ন্মের পর দুই/এক‌টি ক‌লের গান দে‌খে‌ছি। ভিত‌রে বড় বড় আ্যা‌নোড ক্যা‌থোড টিউ‌বের ত‌ৈরী বড় বড় রে‌ডিও সেট দে‌খে‌ছি। বাইস‌কোপ দেখে‌ছি। ধী‌রে ধী‌রে প্রযক্ত‌ির অগ্রগ‌তি‌তে আমরা ক্যাসেট টেপ, ভি‌ডিও ভি‌সিআর টেপ বিলুপ্ত হ‌তে দে‌খে‌ছি। আমরা ফিলম‌ের ক্যা‌মেরা বিলুপ্ত হ‌তে দে‌খে‌ছি। আমরা অনলাইন যু‌গে আ‌ছি। বড় বড় মোবাইল সেট থে‌কে আমরা টাচ ফোন দেখ‌ছি। স্টীম ই‌ঞ্জি‌নের রেলগাড়ীর পর আমরা বু‌লেট ট্রেন দেখ‌ছি। আমরা আর্ট‌ি‌ফি‌শিয়াল ইন্ট‌ে‌লি‌জেন্ট দেখ‌ছি। আমরা ছোট‌বেলা চা‌ঁদে মানুষ যাওয়া দে‌খে‌ছি। তারপর মহাকাশ স্টেশান স্থাপন হওয়া দে‌খেছি। আমরা তার পর মংগ‌লে মানুষ‌কে যে‌তে দেখব। ৫জি ইন্টার‌নেট দেখব। কম খর‌চে পৃ‌থিবীর যে কোন প্রা‌ন্তে স্যা‌টেলাইট ইন্টার‌নেট দেখ‌ব। আমরা বিজ্ঞা‌নের উন্ন‌তির এমন একটা পর্যায়‌ দে‌খছি, যখন মানুষ অ‌নেক অ‌নেক বেশী বি‌নোদন ও আরাম আ‌য়েশ ভোগ কর‌তে পার‌ছে। ৫জি ইন্টার‌নেট ব্যবহা‌রের ফ‌লে হয়ত আমরা ক্যাবল টি‌ভি, ডি‌টিএইচ ইত্যা‌দির ব্যবহার ক‌মে যে‌তে দেখব। মোবাইল, টি‌ভি ও সমস্ত ই‌লেক্ট্র‌নিক ডিভাইস ইন্টার‌নেট কা‌নেক‌টেড থাক‌বে রি‌মোটলী অপা‌রেট করা যাবে। সমস্ত গাড়ী ও কার ড্রাইভার‌লেছ হ‌য়ে যা‌বে। স্টো‌রেজ ক্লাউ‌ডে চ‌লে যা‌বে। ক্যান্সার, ডা‌য়ো‌বে‌টিক ও এইডস এর টিকার প্রচলন হ‌বে ও দূরা‌রোগ্য ক্যান্সারের চি‌কিৎসা ক‌রে মানুষের আয়ু বে‌ড়ে যা‌বে। মংগল গ্র‌হে মানুষ যাবে। পিতামাতারা মংগল গ্র‌হে সন্তান‌দের সা‌থে স্কাই‌পি‌তে কথা বল‌বে। কেন যেন ম‌নে হয় ১৯৭০ সা‌লে জন্ম হ‌য়ে য‌দি কেউ য‌দি ৮০/৯০ বছর বা‌ঁচে বা ২০৫০ বা ২০৬০ বছ‌রে মারা যায় ত‌বে প্রযুক্ত‌ির এত এত উন্নয়ন দেখ‌বে এবং প্রযুক্ত‌ির উন্নয়ন এত বেশী পুর্নাংগতা পা‌বে যা কিনা প‌রের ১০০০ বছ‌রে তেমন গ‌তিতে আগা‌বে কিনা স‌ন্দেহ আ‌ছে। এখন য‌দি আমরা ৫জি গ‌তি পে‌য়ে থা‌কি যা কিনা আমা‌দের প্র‌য়োজ‌নের তুলনায় বেশী ম‌নে হয়। ত‌বে আগামী ১০০০ বছ‌রে আর কত আগা‌তে পা‌রে। কম্প‌িউটার প্র‌সেসরের গ‌তি যত বে‌ড়ে‌ছে আগামী ১০০০ বছ‌রে আর কত বাড়‌বে ব‌লে ধারনা করা যাচ্ছ‌ে না। ১০০০ বছর আ‌গে মানুষ সিদ্ধ ক‌রে ভাত রান্না ক‌রে খা‌চ্ছে। এখনও খা‌চ্ছে। আগামী ১০০০ বছর‌েও ম‌নে হয় খা‌বে। তাই অ‌নেক কিছুই বদলায় না। কাপড় বদল হ‌চ্ছে কিন্তু কাপ‌ড়ের ত‌ৈরী শার্ট‌ের ডিজাইন প‌রিবর্তন হ‌লেও বহু বছর ধ‌রে টি‌কে আ‌ছে। আগামী ১০০০ বছর ধ‌রে শার্ট প্যান্ট টি‌কে থাক‌বে হয়তবা। একজন মানুষ ম‌নে ক‌রি কৃ‌ত্রিমভা‌বে বা‌চি‌য়ে রাখা হল ১০০০ বছর পর তা‌কে কম্প‌িউটার দেয়া হল। সে দেখল ১০০০ বছ‌রে কম্প‌িউটা‌রের এত উন্ন‌তি হ‌য়ে‌ছে সে চালা‌তে পার‌ছে না আবার এত ফ্যান্ডলী‌ হল চালা‌তে কোন সমস্যাই হ‌চ্ছে না। ত‌বে উন্নয়ন বা উন্ন‌তি হাজার বছ‌রে হাজার গুন উন্ন‌তি হয় না। কারন প্রযুক্ত‌িরও একটা সেচু‌রেশন আ‌ছে। একটা পর্যা‌য়ের পর অগ্রগ‌তি আর আরএন্ড‌ডি হয় ধী‌রে ধী‌রে। আমরা বিগত ১৯৭০ সা‌লের আ‌সে পা‌শের মানুষরা যা দে‌খে যাচ্ছ‌ি তার পর প্রযুক্ত‌ির উন্নয়নটা অত দ্রুত হ‌বে ব‌লে ম‌নে হয় না।  তাহ‌লে ১০০০ বছর পর ৫জি থে‌কে ক্রমান্ব‌য়ে ১০জি হ‌বে। মোবাইল ফোন ফোল্ড‌েড ও ছোট হ‌য়ে হাত ঘ‌ড়ির মত হ‌য়ে যে‌তে পা‌রে। সমস্ত রো‌গের টিকা পাওয়া যা‌বে। মানুষ তখন অ‌নেক বেশী বাঁচ‌বে। বেশী খা‌বে কিন্তু মোটা হ‌বে না সেই ব্যবস্থাও চালু হ‌বে। মংগল গ্র‌হে মানুষ যা‌বে ক‌য়েক মাস সময় লাগ‌লেও মানুষ হয়ত ট্যাব‌লেট জাতীয় খাবার খা‌বে। টয়‌লেট হ‌বে না। খিদা লাগ‌বে না। এমন ট্যাব‌লেট আস‌তে পা‌রে শরী‌রের পা‌নি ইউ‌রিন হ‌য়ে বের হওয়ার প্র‌য়োজন পর‌বে না। রিসাইক্যাল হ‌য়ে ইউ‌রি‌নের পা‌নি পুনরায় শরী‌রে ব্যবহার হ‌বে। শুধুমাত্র চামড়ার মাধ্য‌মে বাষ্প হ‌য়ে যে পা‌নিটুকু বের হয় ততটুকু পা‌নি হয়ত ব‌্যবহার হ‌বে। স্পেস স্টেশা‌নে ন‌ভোচারীদের ইউ‌রিন রিসাইক্যাল ক‌রে সেই পা‌নি পুনরায় খা‌চ্ছ‌ে। ত‌বে যে যাই বলুক পরের জেনা‌রেশন কেউ আমার লেখা‌টি পড়‌লে নিশ্চয়ই বুঝ‌তে পার‌বে আমরা কত দ্রুত প্রযুক্ত‌ির প‌রিবর্তন দে‌খে‌ছি। আমার মে‌য়ের ৯ বছ‌র বয়‌সে মে‌য়ের জ‌ন্মের আগ‌েই স্মার্ট ফোন পৃ‌থিবী‌তে ছিল। এই মে‌য়ের জীবদ্দশায় স্মার্ট ফোন প‌রিবর্তন হ‌য়ে অন্য কি আস‌বে জা‌নি না। ত‌বে আমার ম‌নে হয় ফোন ফোল্ডিং হ‌বে, আ‌রো পাতলা হ‌বে, আরো শক্ত‌শালী ইন্টার‌নেট থাক‌বে। মোবাইল ফো‌ন‌ হয়ত ঘ‌রে বিদ্যমান আ‌লো ও ঘ‌রে রাখা ম্যাংগ‌নে‌টিক ফিল্ড থ‌েকে চার্জ হ‌বে। আলাদা চার্জ কর‌তে হ‌বে না। মোবাইল থে‌কে ঘ‌রের সমস্ত‌ কিছু নিয়ন্ত্রন করা যা‌বে। হাই রেজু‌লেশন লাইভ ব্রডকাস্ট করা যা‌বে। আর অনুমান নয়। নি:স‌ন্দে‌হে বলা যায় প্রযুক্ত‌ির অ‌নেক অ‌নেক প‌রিবর্ত‌নের সাক্ষী হ‌য়ে আ‌ছে উ‌নিশশত সত্তর সা‌লের নিকটবর্তী জেনা‌রেশন। প‌রি‌শে‌ষে বলব, আমা‌দের প‌রের জেনা‌রেশন আ‌রো ভাগ্যবান হ‌বে, কারন তারা অন্য গ্র‌হে বেড়া‌তে যা‌বে। অ‌নেক অ‌নেক বেশী বয়স পর্যন্ত বে‌ঁচে থাক‌বে।  

Thursday, October 3, 2019

রিটায়ার জীবনের ডে‌মো অ‌ফিস

রিটায়ার জীবনের ডে‌মো অ‌ফিস

‌সে‌দিন আমার থে‌কে আট বছ‌রের বড় একজন অবসরপ্রাপ্ত অ‌ফিসার আমার অ‌ফি‌সে আস‌লেন। যে‌হেতু অবস‌রের দিনগু‌লি এ‌গি‌য়ে আস‌ছে তার কা‌ছে অবস‌রের প্রস্তু‌তি কিভা‌বে কাটাব তা জান‌তে চাইলাম। বললাম, চাকুরী ছে‌ড়ে আবার নতুন চাকুরী‌তে যে‌তে চাই না। করনীয় ক‌ি? তি‌নি রিটায়ারমে‌ন্টের পর করনীয়‌  কিছু কাজ বল‌লেন:
প্রথমত: কাউ‌কে কোন ধার কর্জ দি‌বে না।
‌দ্বিতীয়ত: পেনশ‌নের টাকা নস্ট করা যা‌বে না। সঞ্চয়পত্র বা বি‌নি‌য়ো‌গে রাখ‌তে হ‌বে।
তৃতীয়ত: দোকান পাট, বাড়ী ভাড়া কিছু ক্যাশ ফ্লো রাখ‌তে হ‌বে।
চতুর্থত: বু‌ঝে শু‌নে চল‌লে ও ছোটখাট ব্যবসা করাটাও মন্দ না।

আর একজন অবসর প্রাপ্ত প‌রি‌চিত অ‌ফিসার এল‌পিআর শেষ না ক‌রে নতুন কা‌জে যোগ দি‌য়ে‌ছেন। জান‌তে চাইলাম স্যার চাকুরী শেষ ক‌রে নতুন চাকুরী‌তে ঢু‌কে পড়‌লেন। স্ট্রেট উত্তর পেলাম। আস‌লে কাজ ছাড়া বাসায় ব‌সে থাকা যায় না। বাসাটা হল স্ত্রীর ডো‌মেন ওখা‌নে থাকাটা অ‌নিরাপদ। তাই কাজ নি‌য়ে ভে‌গে যাওয়াটা ভাল।
‌প্লেট ধোয়া, টে‌বিল মোছা ইত্যা‌দি নানা কাজ যা ক‌রি‌নি তার ম‌ধ্যে ঢু‌কে পড়াটা অ‌নেক সময় শরীর ও ম‌নের দিক দি‌য়ে যায় না। তাই স্ত্রী'র ডো‌মেন থে‌কে ভে‌গে যাওয়াটা মন্দ নয়।
চাকুরী শে‌ষে চাকুরী এটাই বেশীর ভাগ মানু‌ষের লক্ষ্য। মানুষ হয়ত কাজ ছাড়া থাক‌তে পা‌রে না। কাজ সবাই কর‌তে চায়। এখন প্রশ্ন হল বে‌চে থাকার জন্য কাজ না মন‌ের আনন্দ‌ের জন্য কাজ। বেশীর ভাগ চাকুরীজী‌বি কাজ নেয় বে‌চে থাকার জন্য। ম‌নের খোড়াক বা আনন্দ পুর‌নের জন্য কাজ কর‌তে পা‌রে খুব কম মানুষ। যারা পা‌রে তারা অবশ্যই ভাগ্যবান।
‌বে‌চে থাকার জন্য কাজ না ক‌রে ম‌নের আন‌ন্দের জন্য কাজ করার জন্য প্রথম প্র‌য়োজন হল চা‌হিদা ক‌মি‌য়ে ফেলা। চা‌হিদা কমা‌নোটা বিশাল চ্যা‌লেঞ্জ। ত‌বে অ‌নে‌কে বল‌বেন, বুদ্ধ‌িমানরা চা‌হিদা কমা‌নোর চিন্তা ক‌রে না বরং ইনকাম বাড়া‌নোর চিন্তা ক‌রে। তাই বু‌দ্ধিমান চাকুরীজী‌বিরা নতুন ভা‌বে আর্থ‌িক মুক্ত‌ির চিন্তা ক‌রে এখা‌নেই নতুন জীবনযুদ্ধ শুরু হয়। নতুন যুদ্ধ শুধু বয়সটা বেশী নিয়‌মিত ঔষধ খে‌তে হয়। মন চাই‌লেও শরীর পা‌রে না। তাহ‌লে রিটায়ার করার পর সারা‌দিন বন্ধু বান্ধব নি‌য়ে সকা‌লে হাটা, দুপু‌রে টুক টাক সমাজ সেবা, বিকা‌লে গলফ, রা‌তে রেস্টু‌রে‌ন্টে বন্ধু বান্ধব নি‌য়ে খাওয়া এভা‌বে না হ‌লে জীবনটা জ‌মে না। এটার জন্য যে আর্থ‌িক সামর্থ্যতা প্র‌য়োজন তা সবাই অর্জন কর‌তে পা‌রে না।
ত‌বে চাকুরী না কর‌লেও প্র‌তি‌দিন বাসা থে‌কে বের হ‌য়ে এমন একটা স্থান বা অ‌ফিসের আদ‌লে বসার জায়গা প্র‌য়োজন যেখা‌নে পা‌রিবা‌রিক প‌রি‌বেশ থে‌কে নি‌জের জন্য ক্রি‌য়ে‌টিভ কিছু করা য‌ায়। যেটা ছিল আ‌গের যু‌গের মানু‌ষের জন্য কাচারী ঘর। যা কিনা বাড়ীর বাই‌রের দি‌কে মূল বাড়ী থে‌কে বাই‌রে। কাচারী ঘ‌রে ব‌হিরাগতরা যাওয়া আসা ক‌রে নানা রকম জ‌মি জমা সংক্রান্ত কাজ ও বিচার আচার চ‌লে। দেন দরবার চ‌লে। আমরা যারা ফ্লা‌টে থা‌কি তারা এই  কাচারী ঘর কোথায় পাব। বড় বাসা হ‌লে হোম অ‌ফিস বানা‌নো যে‌তে পা‌রে। ছোট বাসায়ও করা যায়। ত‌বে স্ত্রী খে‌টে মর‌বে আর হোম অ‌ফি‌সে ব‌সে আপ‌নি প‌ত্রিকা পড়‌বেন ভয়ানক রিস্ক‌ের ব্যাপার। তাহ‌লে উপায়, বাসার অন‌তিদূ‌রে অ‌ফিস স্প‌েস ভাড়া নেয়া। ত‌বে সমস্যা হল আয় না আস‌লে প‌ত্রিকা পড়া ও কিছু ছোটখাট কাজ করার জন্য অ‌ফিস স্পেস ভাড়া নেয়াটা তেমন যুতসই হ‌বে না। ক‌য়েকজ‌নে মি‌লে একটা কমন অ‌ফিস হ‌তে পা‌রে। পিয়ন, সি‌কিউ‌রি‌টি ইত্যা‌দি থাকল ত‌া মন্দ নয়। আমা‌কে একবার অবসরপ্রাপ্ত স‌চিব ব‌লে‌ছি‌লেন তি‌নি নামমাত্র বেত‌নে প্রাই‌ভেট প্র‌তিষ্ঠা‌নে উপ‌দেস্টার চাকুরী নি‌য়ে‌ছেন একটা অ‌ফিস পাওয়ার আশায়। সারা জীবন অ‌ফি‌সে চাকুরী ক‌রে‌ছেন এখন বাকী জীবনটা সকা‌লে নাস্তা ক‌রে অ‌ফিস নামক বদ্ধ ঘ‌রে না বস‌লে মনট‌ি ভাল কাট‌বে না। অ‌ফিসটাও মিস করার একটা অংশ। তাই হাটার দূরত্বের ম‌ধ্যে বসার জন্য ক‌য়েকজন অবস‌র লোক মি‌লে একটা অ‌ফিস কর‌লে মন্দ হয় না। ওই অ‌ফিস হ‌তে পা‌রে নানা যোগা‌যো‌গের ব্যবস্থা। হতে পা‌রে কনসাল‌টেন্স‌ি অ‌ফিস। হ‌তে পা‌রে নানা রকম প্রব‌লেম সলভিং ব্যবন্থা। 
অ‌নে‌কের অ‌নেক রকম চিন্তা থাক‌বে তাই অ‌ফিস হা‌রি‌য়ে একটা ডে‌মো অ‌ফিস ক‌রে নি‌লে রিটায়ার লাইফ মন্দ কাট‌বে না।

Sunday, August 25, 2019

চা‌বি‌বিহীন ট্রেসহীন জীবন যাপন

এখনকার গাড়ীগু‌লোর মধ্যে ম্যাজিক আছে। পকেটে চাবিরাখলে স্টিয়ারিং এ বসেই গাড়ী স্টার্ট বাটন চাপলেই গাড়ী স্টার্ট। চাবি পকেট থেকে বের ক‌রে গাড়ী স্টার্ট করার প্র‌য়োজন নেই। এগু‌লো সবই আরএফআই‌ডির কাজ। বাসা থেকে বেরুলাম। পকেটে একগাদা চাবির থোকা। আলমারির চাবি, লকারের চাবি, ঘরের চাবি ও গেইটের চাবি। হরেক প‌দের চাবি পকেটে। আর এই‌ চাবির হিসাব মিলা‌নো আ‌রেক বিপদ। আমার পোস্ট‌িংএর চাকুরী ট্রাংক ও বাক্স পেটরার অনেকগুলি তালাচাবির ব্যবহার কর‌তে হয় ও ক‌রে আসছিলাম। তালা ও চাবি ম্যানেজমেন্ট আরেক বিশাল যুদ্ধ। আমার তালা ও চাবি একটা ব্যাগে রেখে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পোস্ট‌িং এর কারণে মুভ কর‌তে হয়। আমার তালা চাবি মিলা‌নোর একটা ভাল কসরত কর‌তে হয়। প্রায়ই মনে হত এবার অনেকগুলো তালার চাবি মিলা‌তে হবে। সময় ব্যয় কর‌তে হবে। কতবার যে তালা চাবির মার্ক‌িং করলাম আবার উল্টা পাল্টা হ‌য়ে যায়। ১৯ বার পোস্ট‌িং এর পর মনে হল জীবনটা‌কে চাবি-মুক্ত করি। প্রথমে আমরা চিন্তা করি লক কেন দেই। লক দেয়ার মূল কারণ হল কাউ‌কে চুরি করা থেকে আটকা‌নো তা কিন্তু নয়। যে ডিটারমাইন্ড চোর তা‌কে আটকা‌নো অনেকটাই শক্ত ব্যাপার। কারণ সে জানে তালা ভাঙ্গতে। সে জানে চাবি তৈরি কর‌তে হয়। তালা নিরাপত্তা দেয় আমা‌দের মনে ও চোর‌কে দেয় বাধা। একটা মানসিক বাধা চোর পায়। এটা আবদ্ধ ও তালা দেয়া জিনিস। এখানে চুরি করতে হলে প্রস্তুতি প্র‌য়োজন। তালার কাজ মানসিকভাবে ও প্রা‌য়ো‌গিক ভাবে বাধা দেয়। চো‌রের মাথায় ঢু‌কে তালা দেয়া আছে। তালা ভাঙ্গতে হবে। কেই দেখে ফেলবে। সময় লাগবে ধরা  পর‌তে হবে। তা থাক অন্য সহজ টার্গেট দেখি। এভাবে আমা‌দের সম্পদ রক্ষা পায়। আমাদের সম্পদ রক্ষা কর‌তে আমরা চাবি নামক যন্ত্রণা লুকিয়ে রাখা ও সাথে রাখার মত যন্ত্রণার শিকার হই। সেই তায়ালার সংখ্যা অনেকগুলি হলে কথা নেই। নম্বা‌রিং ও চাবি মিলা‌নো ভালই একটা সময় ক্ষেপণকারী কাজ। তাহলে উপায় চাবি বিহীন তালা। ডিজিটাল লক বা কম্বিনেশন লক। আমাদের দেশে ডিজিটাল লকের দাম আকাশ ছোয়া। তবে কম্বিনেশন লকের দাম কমছে। তালাগু‌লি বড় হচ্ছে। ডিজিটাল লক আর কম্বিনেশন লকগু‌লি আপনা‌কে স্ব‌স্থি দিবে। অনেকে বলবেন নিরাপদ নয়। আমি নিরাপদ অনিরাপদ জানি না। অনেকের দেখছি দরজায় ডিজিটাল লক। অফিসে ডিজিটাল লকার ভালই চাবি বিহীন জীবন যাপন করছেন। আজকাল মোবাইল থাকলে মানিব্যাগ ও অন্যান্য কার্ড ছাড়া চলা সম্ভব। মোবাইল ব্যাংকিং এ টাকা নিবেন আর বিজ‌নেছ কার্ড ও অন্যান্য কিছু মোবাইল ছবি তুলে রাখলে হল আমরা মানিব্যাগ বিহীন জীবন যাপন করব। পকেটে মানি ব্যাগ নাই ও পকেটে চাবি নাই। হা‌তে মোবাইল। ব্যাস সব হয়ে গেল। মানি ব্যাগ ও চা‌বিমুক্ত অফিসে থাকলে আমরা বাসায়ও তা করতে পারি। কিভাবে করব। বাসায় একটা ডিজিটাল লকার রাখ‌তে পারি দেয়ালের সাথে ফিক্সড। সেই ডিজিটাল লকা‌র‌ে রাখ‌তে পারি বাসার কম খোলা লা‌গে সেমসমস্ত আলমারি, লকার ও ডোর লকের চাবি। ডিজিটাল লকারগু‌লোতে আজকাল বুলেটপ্রুফ ও ফায়ার প্রুফও পাওয়া যায়। অনেক অনেক দামের ডিজিটাল লাক‌ার আছে। আমা‌দের নিজেদের আর্থিক ক্ষমতা অনুযায়ী কিনতে পারি। এখন পর্যন্ত আমদানি নির্ভর তাই দাম বেশী আগামী‌তে দাম অনেক কমবে সন্দেহ নেই। সমস্ত চাবি ডিজিটাল লকা‌রে গুছা‌নো থাকল তাই নো টেনশন। এখন বাসার অন্যান্য দুই চার‌টি যা তালা সব সময় খুল‌তে হয় তা চা‌বিবিহীন তিন/চার ডিজিট নম্বর ম্যাচ করার লক লাগিয়ে নেন। আপ‌নি হ‌য়ে‌ গে‌লেন চা‌বিমুক্ত। এখন বাকী রইল মেইন দরজা ও মেইন গেট। কোন চিন্তা নেই আপনি চা‌বি‌বিহীন নম্বর ম্যাচিং লক বা ডিজিটাল লক লাগিয়ে নেন। আপনি হ‌য়ে গেলেন চাবি মুক্ত। আপনার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করার কোন কারণ নেই। এখনকার ডিজিটাল লক অনেক বেশী নিরাপদ। আর টেনশন আপনার বেশী থাকলে মূল দরজায় আর গেইটে সি‌সি ক্যামেরা লাগিয়ে দেন। তা ইন্টারনেটে কানেক্ট ক‌রে দেন সারা পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে দেখ‌তে পারবেন। আপনি চাবি মুক্ত থাকলে আপনি আপনার নিরাপদ জীবন যাত্রায় অনেক বেশী ট্রেসমুক্ত থাকবেন। দিনের পর দিন প্রযুক্তি অনেক সুলভ হচ্ছে তাই ট্রেস ও টেনশনমুক্ত থাকার জন্য আপনি এখনই চা‌বিমুক্ত জীবন যাপন বেঁছে নি‌তে পারেন।

Friday, August 16, 2019

বাংলাদেশের চামড়ার অপচয়

আমার এক আত্মীয় আক্ষেপ ক‌রে বললেন, ছোট‌বেলায় দেড় হাজার, দুই হাজার টাকায় চামড়া বিক্রয় কর‌তে দেখতাম। গরীব মানুষ বা মাদ্রাসায় একটা ভাল প‌রিমান টাকা দান করা যেত। আজ  ২০/২৫ বছর পর চামড়ার দাম দেখছি মাত্র ৩০০ টাকা। এটা কিভাবে সম্ভব। ৩০০ টাকার জুতার দাম আজ ৩০০০ টাকা। সমস্যাটা কোথায়। সমস্যা হল গরু ও খাসি বেশী কুরবানী হচ্ছ‌ে। মানুষের সক্ষমতা বহুগুণে বেড়েছে। সে অনুযায়ী ট্যানারিরা চামড়া রপ্তানি বা ব্যবহার কর‌তে পারছে না। ধরুন দেশে যদি এক কোটি পশু জবাই হয় তবে চামড়া হবে এক কোটি। এক‌টি চামড়ায় যদি গড়ে দশ জোড়া জুতা হয় তবে এক কোটি চামড়ায় দশ কোটি জুতা হবে। দশ কোটি জুতা কেনার মানুষ আসলে নাই। বিদেশে রপ্তানিও বাড়ে নাই চাহিদা মাফিক। কারণ বাংলাদেশের ট্যানারি বর্জ্য পরিশোধন আন্তর্জাতিক মান অর্জন ক‌রে নাই। গ্রিন বা পরিবেশ বান্ধব পরিবেশে চামড়ার প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছ‌ে না। তাই রপ্তানি কম। চামড়া বছরের পর বছর অবিক্রীত ও অব্যবহৃত থাকছে ট্যানারি মালিকদের কাছে। চামড়া নষ্ট হচ্ছে আড়তদার‌দের কাছে। অনেক সময় লবণের দাম মিল মালিকরা বাড়িয়ে দিলে চামড়ার আড়তদাররা চামড়া লবণ দি‌তে না পে‌রে চামড়া নষ্ট ক‌রে ফেলছে। তাহলে উপায় কি? উপায় আছে চামড়ার বিকল্প ব্যবহার বাড়া‌নো। জুতায় যেভাবে ব্যাপকভাবে আর্টিফিশিয়াল লেদারের ব্যবহার বাড়াচ্ছে তা‌তে ক‌রে চামড়ার চাহিদাও কমে যাচ্ছ‌ে। বাংলাদেশের উন্নয়নে এক কোটি চামড়ার ব্যাপক ব্যবহার কর‌তে হবে। মা‌টি‌তে পুতে ফেললে হবে না। আগে গরুর হাড় অনেকেই  শুকাত, শিং শুকাত, লেজ শুকাত কারণ এগু‌লো কেজি দ‌রে বিক্রয় হত। এখন এগু‌লো ব্যাপকভাবে লোকজন ফেলে দেয়। পরিবেশ দূষণ হয়। কারণ আর কিছুই নয় ১৯৮০ সালে হয়ত ২০ % পরিবার কুরবানী দিত,১৯৯০ সালে ৩০%, ২০০০ সালে ৪০% ২০১০ সালে ৫০% এবং ২০১৯ সালে ৬০% পরিবার কুরবানি দিচ্ছে। কারণ সবচেয়ে কম বেতন যার তারও ঈদ বোনা‌সের টাকা দি‌য়ে একটা ভেড়া বা ছাগলের দাম হয়। গ্রামে ছোট গরুর সাত ভাগের এক ভাগ দি‌তে পা‌রে।

তাই সাড়ে ষোল কোটি মানুষের দেশে কোরবানীর সক্ষমতা বাড়‌তেই থাকবে। 

তাহলে প্রশ্ন হল, আমরা কি কুরবানির চামড়া মা‌টি‌তে পুতে ফেল‌তে থাকব। নাকি নানা ব্যবহারে এগিয়ে যে‌তে পারি। অনেক এলাকার মানুষ মাথার চামড়া খায়। এটা‌কে হালিম, কাবাব ও নানা খাবারে কচকচি খাদ্য হিসাবে ব্যবহারের প্রচলন ঢাকার হো‌টেল গু‌লো‌তে চালু করা যে‌তে পা‌রে। আমরা ভুঁড়ি খাই আবার ভুঁড়ি দি‌য়ে তবলা বা ঢো‌লে ব্যবহার করা যায়। আমরা গরুর বিভিন্ন অংশ আফ্রিকান মাগুর‌কে খাওয়াই। সেখানে চামড়া গরম পানি দি‌য়ে লোম পরিষ্কার ক‌রে মানুষের খাদ্য ও মাছের খাদ্য করা যাবে। আগের দিনে ফ্রিজ না থাকার যুগে দেখতাম মাংস হলুদ দি‌য়ে সিদ্ধ ক‌রে বা কাচা শুঁকিয়ে ম‌য়েরা গরুর মাংস সংরক্ষণ করতেন। একই ভাবে চামড়া পশম ছড়িয়ে তা শুঁকিয়ে মানুষের খাদ্য ও মাছের খাদ্য হিসাবে সংরক্ষণ করা যায়। পোল্ট্রি বা মাছের ফিডে ৩০% প্রো‌টিন যোগ কর‌তে হয়। এটা ট্যানারির চামড়ার মাংসল বা অব্যবহৃত উপজাত ব্যবহার করা হয়। ট্যানারীর সমস্যা হল তা‌দের প্রক্রিয়াটায় লোম ছাড়া‌নো ও প্রসেসের প্রক্রিয়াটা হল রাসায়নিক ব্যবহার ক‌রে আর এভাবে পোল্ট্রি ফিড বিষাক্ত হ‌য়ে যায়। আপনি গরুর চামড়া একফুট দেড় ফুট কেটে চামড়া ছাড়িয়ে শুঁকিয়ে নিন। তারপর ভুট্টা বা অন্য উপকরণ কিনে আপনি পোল্ট্রি বা মাছের ফিড তৈরি করুন। অর্ধেক চামড়া যদি আমরা গরম পানি দি‌য়ে পশম ছা‌ড়ি‌য়ে শুঁকিয়ে আমরা ফিড তৈরি করি তবে বিদেশ থেকে দেশে ফিডের প্র‌ো‌টিন আনার প্র‌য়োজন পড়বে না। আমরা মাছ ও পোল্ট্রি ফিড কম দামে রাসায়‌নিকমুক্ত ভাবে তৈরি কর‌তে পারব। পটুয়াখালী জেলার ন্যায় চামড়াকে ভুঁড়ির ন্যায় কচকচে খাওয়ার অভ্যাসটা না হয় আমরা ক‌রেই নিলাম।

আল্লাহ কুরবানির নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু কুরবানির কারণে বিশৃঙ্খলা, সে‌ন্ডি‌কেট ও অপচয় কর‌তে বলেননি। সকলে সচেতন হলে চামড়ার যথাযথ ব্যবহার সম্ভব হবে। আমরা আশা করব আগামী বছর আর চামড়া কেউ কবর দিবে না। কাচা চামড়া বিদেশে রপ্তানি হবে, মানুষ খাবে, পোল্ট্রি ও মাছের ফিডে স্বাস্থ্যকর চামড়ার প্র‌ো‌টিন ব্যবহার হবে।

Saturday, August 10, 2019

এয়ার কন্ড‌িশান (এ‌সি) সমাচার

আমার একটা অভ্যাস হল কোন একটা কিছু কেনার আ‌গে ও প‌ড়ে তা নি‌য়ে কিছু‌দিন ইউ‌টিউব দেখা ও ইন্টার‌নেট থে‌কে তথ্য নেয়া। প্রায় দশ বছর আ‌গে আ‌মি বাজা‌রের সব‌চে‌য়ে কম দামী একটা চাই‌নিজ এ‌সি কি‌নি। পরীক্ষা করার জন্য। ‌কেমন চ‌লে ও কত ‌দিন চ‌লে। দোকানদার ব‌লে‌ছিল ৭/৮ বছর ব্যবহার কর‌বেন। নস্ট হ‌লে মেরামত কর‌বেন না। বি‌ক্রি ক‌রে দি‌বেন। ঠিক সাত বছর চলার পর কম্প্রেশর নস্ট হল। একজন বলল, নতুন এ‌সি কেনার চে‌য়ে কম্প্রেসর পাল্ট‌ি‌য়ে নিন। তাই করলাম, চলল এক বছর ১৪ হাজার টাকা লস হল। তারপর ছে‌লে‌মে‌য়ে‌দের রু‌মের এ‌সি কিন‌তে গেলাম ঢাকা সেনা‌নিবা‌সের সিএস‌ডি'‌তে। দামী এ‌সির ম‌ধ্য‌ে স্যামসং আ‌ছে। আমার একজন প‌রি‌চিত জ‌নের সা‌থে দেখা হল। এ‌সির আ‌লোচনা হল। বলল, ইনভার্টার এ‌সির ম‌ধ্যে প্যানাস‌নিক, এল‌জি ও স্যামসং ভাল। কারন এরা এ‌সি টেক‌নোলজ‌ি  উন্নয়‌নের জন্য বিশাল বি‌নি‌য়োগ কর‌ছে। যা হোক স্যামসং এ‌সি কিনলাম। এর নানা সু‌বিধা আ‌ছে বেশ ভাল লাগল। ছে‌লে‌মে‌য়েরা মহা খুশী। গল্পটা এখা‌নে শেষ হ‌তে পারত। সে‌দিন ছে‌লে‌মে‌য়েরা আমা‌দের রু‌মের উই‌ন্ডো জেনা‌রেল এ‌সির সা‌থে স্যামসং এ‌সির এক্স‌চেঞ্জ অফার নি‌তে বলল।
আ‌মি কিনলাম। তারপর শুরু করলাম ভাল কিনলাম না মন্দ কিনলাম গবেষনা। এটা হল উ‌ল্টো গ‌বেষনা। এটা হত না। ছে‌লে‌মে‌য়েরা বলায় স্যামসং এ‌সি আ‌গে কিনলাম। তারপর গ‌বেষনায় বসলাম। জানার জন্য। কিছু মজার ফিচার পেলাম শেয়ার কর‌ছি। 

১। আস‌লেই  বিদ্যুৎ এর ব্যবহার কম হয়।

২। শব্দ অনেক অ‌নেক কম।

৩। ৮০ থে‌কে ৪৬০ ভোল্ট পর্যন্ত স্ট্যা‌বিলাই‌জিং ক্যাপা‌সি‌টি। লো ভো‌ল্ট‌েজ সমস্যা নয়। স্ট্যা‌বিলাইজার লা‌গে না। বিদ্যুৎ যতই সমস্যা করুক। নো টেনশন।

৪। বাই‌রের ইউ‌নিট তিন মাস সমু‌দ্রের স্যালাইন ওয়াটা‌রে ভি‌জি‌য়ে রাখার পর পুনরায় একই পার্ফর‌মেন্স পাওয়া গে‌ছে (ইন্টার‌নেট থে‌কে পাওয়া তথ্য)।

৫। বজ্রপা‌তে ক্ষ‌তি হয়‌ না। 

৬। এ‌তে‌ অা‌ছে ডোরা‌ফিন নামক বি‌শেষ কন‌ডেন্সার যাতে কম গ্যাস লা‌গে ও দ্রুত ঠান্ডা হয়।

৭। ইন‌ডোর ইউ‌নি‌টে মাই‌ক্র‌ো ফিল্টার আ‌ছে যা রু‌মের বাতা‌সের ধুলাবা‌লি ও ময়লা ট্র্যাপ ক‌রে। তার জন্য ফিল্টারটা মা‌সে একা‌ধিকবার প‌রিষ্কার করা ভাল।

৮। অ‌টো টেম্পা‌রেচার বাইরের গর‌মের সা‌থে একটা সামঞ্জস্য রক্ষা ক‌রে রু‌মের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক‌রে।

৯।  কম‌ফোর্ড মুড আ‌ছে। যেটা রা‌তের প্রথ‌মে রুম ঠান্ডা রাখ‌বে। ভোর রা‌তে অ‌টো‌মে‌টিক এ‌সি কুলিং বন্ধ ক‌রে ফ্যান মুড চালু ক‌রে দেয়। যেন ভোর‌বেলা ঠান্ডায় ঘুম না ভাং‌গে ও কাথা দি‌তে না হয়।

১০। দুই স্টেজ কু‌লিং অপসনটা বাই‌রে থে‌কে এ‌সে দ্রুত শরীর ঠান্ডা করার জন্য ভাল।

১১। সিং‌গেল ইউজার মুড‌ে রু‌মে একলা থাক‌লে বিদ্যুৎ ব্যবহার কমা‌নোর অপসন।

১২। অন্য এ‌সির মত টাইম‌ার দি‌য়ে অন ও অফ করার অপশনটাও আ‌ছে।

১৩। দোকানদার বলল ১২/১৩ বছর এটা মেরামত ছাড়া ব্যবহার কর‌তে পার‌বেন। আমার কা‌ছে ঠিকই ম‌নে হ‌চ্ছে। চাই‌নিজ সব‌চে‌য়ে কমদামী ৭ বছর ব্যবহার ক‌রে‌ছি। এটা এত প‌্র‌োটেকশন থাকার পর হয়ত কথাটা ঠিক হ‌তে পা‌রে। কারন কম্পেসর নস্ট হ‌লে দশ বছ‌রের ম‌ধ্যে বদ‌লি‌য়ে দি‌বে।

১৩। এ‌দের ওয়া‌রেন্ট‌ি  সি‌স্টেমটা ভাল। ওয়া‌রেন্ট‌ি কাগজ রাখার প্র‌য়োজন নেই।  ইং‌রেজী না‌মের বানানসহ বল‌লে ও ফোন নম্বর বল‌লে তারা সা‌পোর্ট দেয়। দশ বছর কম্প্র‌েসর ওয়া‌রেন্ট‌ি কাগজ না থাকারই কথা। 

১৪। যা‌দের গায়ে সরাস‌রি ঠান্ডা বাতাস লাগ‌লে সমস্যা হয় তাদের জন্য এ‌দের ম‌ডেল আ‌ছে। উই‌ন্ড‌ো না খু‌লে ছাকুনীর মাধ্য‌মে বাতাস ছ‌ড়ি‌য়ে গা‌য়ে ঠান্ডা না লা‌গি‌য়ে রুম ঠান্ডা কর‌বে।

১৫। ও‌দের কিছু এ‌সি‌তে ঠান্ডা গরম দু‌টো করার অপসন আ‌ছে।

১৬। আয়নাইজা‌ররে  মাধ্য‌মে জীবানু মারার অপশন আ‌ছে।

ত‌বে কিছু ফিচার মি‌সিং আ‌ছে। যেমন: ওয়াই ফাই, ইন্টার‌নেট ও মোবাইল অ্যা‌পের মাধ্য‌মে এ‌সি চালনাটা এ‌দের আ‌ছে কিনা জা‌নি না খু‌জে পাই‌নি। যেটা বর্তমা‌নে ওয়ালটন থে‌কে শুরু ক‌রে অ‌নেক এ‌সি‌তে আ‌ছে। এই এ‌সি ব্যবহার ক‌রে নির্দ‌‌িষ্ট তাপমাত্রায় এমন অভ্যাস হয় প‌রে অন্য এ‌সি'র ২/৩ ডিগ্র‌ি তাপমাত্রার আপ ও ডাউ‌নে অস্ব‌স্ত‌ি লা‌গে। অভ্যাস নস্ট হয়। এ ধর‌নের এ‌সি ছাড়া অন্য এ‌সি‌তে ভাল লাগ‌বে না। জেনা‌রেল এ‌সি সবাই ব‌লেন বেস্ট। আ‌মিও তাই ব‌লি। ২৫/৩০ বছর টি‌কে যায়। বিদ্যুৎ ও কম‌ফোর্ড‌ের দিক দি‌য়ে আমার কা‌ছে ম‌নে হয় জেনা‌রেল এ‌সি থে‌কে স্যামসং এ‌সি  ভাল। হোক না এর আয়ু ১২/১৩ বছর। কারন ১২ বছ‌রে এম‌নিও জেনা‌রেল এ‌সি অ‌পেক্ষা লক্ষ টাকা বিদ্যুৎ বি‌লে বাচ‌বে যার দ্বারা পুনরায় আ‌বার নতুন এ‌সি কেনা যাবে। ফ‌লে দীর্ঘস্থায়ী জেনা‌রেল এ‌সি অ‌পেক্ষা স্যামসং ভাল অপশন।

Friday, August 9, 2019

উচ্চ চিকিৎসা বিল ও সাধারণ মানুষ

যা‌দের আয় মাসে ৩ লাখ বা তার উপ‌রে তা‌দের এক ধরনের চিকিৎসা হবে। তা‌দের জন্য রয়েছে স্কয়ার, ল্যাব এইড, ইউনা‌ইটেড ইত্যাদি হাসপাতাল। যা‌দের আয় মাসে ১ থেকে  ৩ লাখ টাকার মধ্যে তাদের চিকিৎসা এক ধরনের। তা‌দের জন্য আছে জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল, বারডেম, ইব‌নে সিনা, পপুলার ইত্যাদি।
আয় অর্ধ লাখ/১ লাখ টাকা তা‌দের এক ধরনের চিকিৎসা হবে। আর তা‌দের জন্য পাড়াগাঁয়ের ক্লিনিক আর অন্যান্য প্রাইভেট হাসপাতাল। এটাই স্বাভাবিক। যা‌দের আয় ২০ হাজারের নীচে তারা সরকারী হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোন স্থান সুবিধাজনক হবে না।
আমার এক আত্মীয় ইউনাইটেড থেকে ২৫ হাজার টাকা প্যাকেজে একদিন হাসপাতালে ভর্তি থেকে এন‌জিওগ্রাম করালেন। ইউনাইটেড হাসপাতালে আমি তাকে দেখ‌তে গেলাম। পরিবেশ ও সার্ব‌িক আয়োজন দেখে ভাল লাগল। কেমন একটা রেস্টুরেন্ট বা হো‌টেল হো‌টেল মনে হল। এর কয়েকদিন পর আমার সেই আত্মীয়ের তীব্র পেটে ব্যথা হল। আবার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হল। এবার তিনদিন হাসপাতালে থাকলেন। জানা গেল গল্ড ব্লাডার স্টোন হয়েছে। অপারেশন প্র‌য়োজন। তবে এখন নয়, তা কর‌তে হবে একমাস পর। ওনা‌কে তিন দিন‌ে ইউনাইটেড খরচ করাল ৯৬ হাজার টাকা। কারণ প্রতিদিন কেবিন ভাড়া ২০ হাজার টাকা। সেদিন পত্রিকায় দেখলাম ডেংগু আক্রান্ত হ‌য়ে ২২ ঘণ্টা প‌রে মারা যাওয়া ১ জন কলেজ ছাত্রের চিকিৎসার জন্য স্কয়ার হাসপাতালে বিল হ‌য়ে‌ছে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা। 
এই  টাকাটা আমা‌দের মধ্যবিত্তের জন্য অনেক অনেক টাকা। যার মাসিক ইনকাম ১০/১২ লাখ টাকা তার জন্য স্কয়ারের চিকিৎসা তেমন খরচের ব্যাপার নয়। কিন্তু যার আয় লাখ টাকার নীচে তার জন্য বেশী। ইউনিভারসিটির মধ্যবিত্ত পরিবারের ডেংগু আক্রান্ত ছাত্রকে নিয়েছে স্কয়ার হাসপাতালে। আমার প্রশ্ন হল, তা‌কে তো সামর্থ্যের মধ্যে পি‌জি বা বারডেমে নি‌তে পারত। সরকারী হাসপাতালের ভাল দিক হল, ফ্লো‌রে রেখে হলেও চিকিৎসা দিবে। প্র‌য়োজ‌নে জাজিম ও বালিশ কিনে বা ভাড়া নি‌য়ে সরকারী হাসপাতালের ফ্লো‌রে শু‌য়ে পরেন। তাতেও আপনার   ১ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা ২২ ঘণ্টায় খরচ হবে না। সরকারী হাসপাতালে দিনে রা‌তে ডাক্তার এখন থাকেন। না পেলে ৯৯৯ কল ক‌রে সমাধান পাবেন। এখন শুদ্ধাচারের যুগে অনেক হাসপাতালে ডিজিটাল অ্যা‌টেন্ড‌‌েন্টস সি‌স্টেম আছে। সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা না দি‌য়ে রোগী মারা গেলে ডাক্তার ডিপার্ট‌মেন্টাল শাস্তি পাবেই। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালে এই জবাব‌দি‌হিতা আছে বলে আমার জানা নাই। সরকার ও প্রশাসন এখন প্রান্তিকদের নি‌য়ে চিন্তা ক‌রে। বাজেটও দেয়ার চেষ্টা ক‌রে। অনেক সরকারী হাসপাতালে নানা সুবিধা দেয়ার জন্য ডোনার পাওয়া যায়। তারা হাসপাতালে নানা ব্যবস্থা ক‌রে থা‌কে। সেদিন অবাক হলাম, একজন ডিআই‌জি বললেন, একজন ডোনার পেয়েছেন তিনি ঢাকা শহরে সমস্ত থানার হাজতে সুপেয় পানির ব্যবস্থা কর‌তে চান। ডিআই‌জি সেই  ব্যবসায়ীর কাছে জান‌তে চাইলেন, আপনি কেন ডো‌নেশান দিবেন। ব্যবসায়ী বলেছিল, আমি কিছুদিন থানা হাজতে কাটিয়েছিলাম। টেপের অপরিষ্কার পানি আমি খেয়েছি। আমার পানির কষ্টের অভিজ্ঞতায় মনে হয় হাজতিরা অপরাধী হলেও মানুষ। স্বাস্থ্যকর পানি খাওয়ার অধিকারটুকু তার আছে। এটা বললাম এজন্য যে, প্রাইভেট ‌ডোনার ও সরকার মিলে অনেক হাসপাতালের উন্নয়ন করা যায়। একই হাসপাতালে পেমেন্ট ও নন‌পে‌মেন্ট চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা যায়। শুধু রাস্তাটা বের কর‌তে হবে ও পরিকল্পনা অনুযায়ী আগা‌তে হবে। বাংলাদেশের সরকারের নাকি ঔষধ কোম্পানী আছে। কারো জানা আছে কিনা আমার জানা নাই তারা নাকি কমিউনিটি ক্লিনিকে ফ্রি ঔষধ সাপ্লাই দি‌য়ে থা‌কে। আমি চাকুরীর সুবাদে সরকারী সাপ্লাই ঔষধ খাই। ধারনা করা হয়, প্যারা‌সিটামল একটার জায়গায় দু‌টো খে‌তে হ‌তে পা‌রে । হয়ত ট্যাবলেটে যে পরিমাণ উপাদান থাকার কথা তা নাও থাক‌তে পা‌রে। তবে কম হলেও উপাদান আছে। কিন্তু নকল ঔষধে উপাদান নাই। তাই সহজে রোগমুক্ত‌ি হয় না। কানাডা, ফ্রান্স ও ইউকেতে সরকার মান নিয়ন্ত্রণ ক‌রে অনেক কম দামে ঔষধ তৈরি ক‌রে। আমা‌দের দেশের সরকার প্র‌য়োজ‌নে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সিএমএইচ ও সকল সরকারী হাসপাতালের জন্য সরকারী ব্রান্ডের ঔষধ তৈরি কর‌তে পা‌রে। পৃথিবীর অনেক দেশ সরকারীভাবে ভাল মানের ঔষধ তৈরি কর‌তে পার‌লে বাংলাদেশও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ভাল মানের ঔষধ বানা‌তে পারব‌ে। ক্যান্সার চিকিৎসায় সিএমএইচ ভাল মান প্রদর্শন কর‌তে পেরেছে। সেখানে অনেক অসামরিক ব্যক্তিবর্গ চিকিৎসা নি‌তে পারছেন। যারা বিদেশে ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট নিতেন তারা আজ দেশে ট্রিটমেন্ট নিচ্ছেন। অনেক বৈদেশিক মুদ্রা বেঁচে যাচ্ছ‌ে। আমরা চেষ্টা করলে সকল সরকারী হাসপাতাল‌কে উন্নত চিকিৎসালয় বানা‌তে পারি। সরকারী হাসপাতালগু‌লো‌তে ভলান্টিয়ার ও ডোনারদের অবদান নেয়া যায়। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে দালাল কমা‌নো যায়। কারণ মাসে ২০,০০০ টাকার নীচে রোজগা‌রের মানুষ হল ৮০% তা‌দের রক্ষা করার জন্য সরকারী হাসপাতালগু‌লো‌কে শক্তিশালী করাটা আজ সকলের জন্য জরুরী। আমা‌দের উচিৎ হবে বিভ্রান্ত না হ‌য়ে সামর্থ্যের বাই‌রে কোন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা না নেয়া। বুঝ‌তে হবে অনেক মন্ত্রী মিনিস্টারও পি‌জি‌ হাসপাতালের মত সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এরশাদ তো সারা জীবন সরকারী সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা নি‌য়েই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। তাই সরকারী চিকিৎসালয়কে বিভ্রান্তির মধ্যে না রেখে প্র‌তিষ্ঠানগু‌লো শক্তিশালী করা প্র‌য়োজন।

Saturday, August 3, 2019

জীবনের সফলতা ও বিফলতার গল্প

জীবনের  ২৭ বছর ঢাকার বাই‌রে চাকুরী ক‌রে ঢাকায় যখন আসলাম তখন আত্মীয় স্বজন অনেকেই আমার বাসায় আসছেন। অনেকের অনেক রকমের জীবনের গল্প শোনা যায়। কারোটা কষ্টকর। কারোটা চ্যা‌লেঞ্জ‌িং। কারোটা শুধু সুখ আর সফলতা। একজন আত্মীয় বললেন, তিনি অনেক সফল হ‌য়ে‌ছেন। গ্রামের থেকে উঠে এসে সরকারী চাকু‌রে হ‌য়ে‌ছেন। তারপর কষ্ট ক‌রে গেছেন। মেয়েদের একজন ফরেন সার্ভিস, আরেকজন ডাক্তার আর এক মে‌য়ে এসএসসি ভাল ফলাফল ক‌রে ঢাকার নামী ক‌লে‌জে ভর্তি হ‌য়ে‌ছে। তার সুখের উৎচ্ছাস আমি বেশ উপ‌ভোগ করলাম। ঘণ্টা দুয়েক বেড়ালেন পুরো পরিবারের ফিরিস্তি দি‌য়ে দিলেন। মানুষ সন্তানদের সুখে এত সুখী হয় হয়ত আমার জানা ছিল না। যখনই তিনি বলেই ফেলছেন, আমি অনেক সুখে আছি। মনে মনে বল‌তে ইচ্ছে করল, এখনই পরিবারের কেউ ক্যান্সারে পড়ুক। সুখ জিনিষটা কোথায় ছুটে যাবে তা টের পাওয়া যাবে। ভাগ্যিস মনে আসলেও মুখে আসেনি।
আর একদিন আ‌রেক‌ আত্মীয় আসল। তার সফলতা অসাধারণ। তার এক ছেলে এক মে‌য়ে রুয়েট পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার। আর এক মে‌য়ে বুয়েট পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার। দুই মে‌য়ের একজন অস্ট্রেলিয়া অন্যজন আমেরিকায় স্বামীসহ থা‌কে। ছেলে ইঞ্জিনিয়ার দেশের বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানে চাকুরী ক‌রে প্রায়ই বিদেশ ভ্রমণে থা‌কে। পুত্র বধুও অনেক উচ্চ বেতনে চাকুরী ক‌রে। ছেলে মেয়েদের ভীষণ ব্যস্ত জীবন। আত্মীয় ভয়ানক সংকটে থাকেন। কখনও এই মে‌য়ে কখ‌নো অন্য মে‌য়ে কখনও ছেলে কোথায় যে উনি থাকেন, কি যে করেন, ভয়ানক সুখের অবস্থা তার। আত্মীয় আধঘণ্টার মধ্যে তার সন্তানদের সফলতার গল্প বলে গেলেন। সহজেই  বুজলাম, তিনি সফলতার গল্পে অনেক দক্ষতা অর্জন করছেন। রত্নগর্ভা পুরষ্কারটা তার প্রাপ্য।
তা‌দের এই সফলতার গল্পগু‌লি আমা‌কে আনন্দ দিয়েছে। বেশ মজা পেলাম।
এখন বলি আরেক গল্প। আমার আরেক আত্মীয় যিনি সফল সরকারী অফিসার ছিলেন। সন্তানরাও পড়া‌শোনা ক‌রে বিদেশে আছে। কিন্তু সমস্যা একটা রয়েছে সন্তানরা বি‌য়ের বিষ‌য়ে আগ্রহী নয়।
তবে নিখাদ সুখের সাগরে আমার দুই আত্মীয়কে পেয়েছি। তেমন আর কাউ‌কে পাইনি। কারো একাধিক সন্তানাদির সকলে সমভাবে সফল হয়নি। কারো পেয়েছি পরিবারের কোন কোন সদস্য অসুস্থ। কারো পেয়েছি সন্তান উচ্চ শিক্ষিত হ‌য়ে‌ছে। চাকুরী পাচ্ছ‌ে না। কারো হয়ত কোন সন্তান অটিস্টিক। নানা পরিবারের নানা সমস্যা। আল্লাহ দুই‌টি পরিবারকে সফল করেছেন ভেবে সত্যি ভাল লেগেছে। কারণ এত সফলতা সংখ্যা সমাজে তেমন বেশী নেই। 
যা‌দের সন্তান ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আমলা, জজ ব্যারিস্টার হল না বা অসুস্থ থাকল বা বিফল হল তারা কি ভেঙ্গে পড়বে। মুষড়ে পড়বে। অবশ্যই না জীবনটা অনেক অনেক চ্যা‌লে‌ঞ্জিং। মুষড়ে পড়া যাবে না। 
সফলতা আসে মূলত: কষ্ট ক‌রে চ্যালেঞ্জের মধ্য দি‌য়ে। আমা‌দের দেশের অনেক উদ্যোক্তা আছেন যারা অনেক শিক্ষিত নয় কিন্তু তর তর ক‌রে এগিয়ে যাচ্ছেন। আমি কতটুকু আমার সন্তান‌দের নি‌য়ে সফলতা পাব আমি জানি না। তা‌দের যে লক্ষ্যগু‌লি আমি দিয়েছি তা দ্বারা উপরের মানুষদের মত সফল পিতা বা সন্তানদের জন্য গর্ব হয়ত আমার থাকবে না। কারণ আমার সন্তান‌দের বলেছি আমি জানি তোমরা পাঠ্য বই‌য়ের বাই‌রে প্রচুর পড়। এই  পৃথিবীর জন্য কিছু করবে। আইডিয়া বা পরিবর্তন নি‌য়ে কাজ করবে। লক্ষ্য থাকবে তোমরা যেন অনেক মানুষের কল্যাণ কর‌তে পার বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা কর‌তে পার। চাকুরী আর নিজের নিরাপদ জীবন নয়, চ্যালেঞ্জ নি‌তে শিখ আর প্রান্তিক মানুষ‌কে স্বপ্ন দেখাও। এই সাধনায় তোমা‌দের কোন সম্পদ না থাকলেও আমি তোমা‌দে‌র নি‌য়ে গর্ব‌িত থাকব।
আমি ক্লাসের বই‌য়ের বাই‌রে পড়ুয়া একজন ছাত্র ছিলাম। বাবার আগ্রহে ক্লাসে ফাস্ট হওয়া আমি ভুল ক‌রে ক্যাডেট কলেজে ঢু‌কে যাই। ক্যাডেট কলেজে যাওয়ার পর হা‌রে হা‌রে টের পেলাম আসলে এই  স্থানটি আমার জন্য নয়। এইচএসসি পাশ করার পর মনে হল বাবা রিটায়ার করেছে আর্ম‌িতে চলে যাই। বাবার টেনশন কমবে চাপ কমবে। চলে গেলাম সামরিক জীবনে যা আমার সাথে যায় না। মাঝে মাঝে মনে হয় নিজের একটা স্ব‌স্থিকর ও নিরাপদ জীবন হল। কিন্তু আমার দ্বারা সমাজের কি হল। কিছুই না। আমি যদি সচিবও হতাম কতটুকু সফল হতাম। কোন সফলতা আমি দেখি না। কয়েক টাকা রোজগার ক‌রে নিজে গাড়ী বাড়ী আর এসিতে থাকা ছাড়া আসলেই কিছুই নেই। যে মানুষটা অনেক মানুষের রিজিকের ব্যবস্থা কর‌তে পা‌রে সে সফল। যে মানুষ প্রান্তিক মানুষের পড়া‌শোনার ও জীবনমা‌নের উন্নয়‌নের ব্যবস্থা কর‌তে পা‌রে সে সফল। যে মানুষ প্রান্তিক মানুষের চিকিৎসা দি‌তে পা‌রে সে সফল। যে মানুষ প্রান্তিক মানুষের ভাগ্য বদলা‌তে পা‌রে সে সফল।
ভোগবাদী সমাজে অনেকেরই আমার বলা সফলতা‌কে হাস্যকর চিন্তা করবেন। যে যেভাবে চিন্তা করুন। মনের সন্তুষ্টি যেভাবে পূনাংগ পায় সেটাই আসল সফলতা ও সুখ। অটিস্টিক বাবা মা যদি তার সন্তানটা‌কে আবাস, খাবার ও পরিবার দি‌তে পারেন সেটা অনেক বড় সফলতা ও সন্তুষ্টি। ড্রাগ অ্যা‌ডিক্ট বাবা মা তার সন্তান‌কে যদি স্বাভাবিক জীবনে ফেরা‌তে পারেন সেটা অনেক বড় সফলতা। তাই পরিবেশ ও চ্যালেঞ্জের কারণে সন্তান নি‌য়ে সফলতা একেক মানুষের কাছে একেক রকম।

Friday, May 31, 2019

স্টার লিংক হ‌তে যাচ্ছ‌ে তথ্যপ্রযুক্তির নতুন যুগ

স্টার‌লিংক বা স্টারলাইন এধর‌নের এক‌টি নাম ঢাকা-চট্রগ্রাম বা ঢাকা-লাকসাম রু‌টে আমরা অ‌নে‌কেই প‌রিবহন কোম্পান‌ির নাম শু‌নে‌ছিলাম। এখনও থাক‌তে পা‌রে আ‌মি নি‌শ্চিত নই। "স্টার‌লিংক" হয়ত আজ থে‌কে পাচ বছর পর দে‌শে‌র আনা‌চে কানা‌চে ও প্র‌তি‌টি কোনায় এ নাম শোনা যা‌বে এটা হলফ ক‌রে বলা যায়। ইন্টা‌নে‌টের ব্যবহার সারা পৃ‌থিবীর মানু‌ষের জন্য লাইফলাইন বলা যায়। এখন পৃ‌থিবীর অর্ধ‌েক মানুষ ইন্টা‌নেট ব্যবহার ক‌রে। বাকী অর্ধ‌েকের অর্ধ‌েক হয়তবা শা‌রী‌রিক অক্ষমতা ও অর্থ‌িক অক্ষমতার কার‌নে ব্যবহার ক‌রে না। বাকী চার ভা‌গের এক ভাগ মানুষ অপ্রাপ্যতা বা অপ্রতুল অবস্থার জন্য ইন্টার‌নেট ব্যবহার কর‌তে পা‌রে না। পৃথিবী এখন বিশাল জন‌গোষ্ঠী বিদ্যুত সু‌বিধার বাই‌রে। ত‌বে বিদ্যুত ও পা‌নির ক্ষ‌েত্রে প্রাপ্যতার সীমাবদ্ধতা সরাস‌রি অর্থ‌ের সা‌থে জ‌ড়িত। অার্থ‌িক অবস্থা ভাল ত‌বে বড় বা ছোট সোলার প্যা‌নেল বা জেনা‌রেটর কিন‌লে কাজ হ‌য়ে যাচ্ছ‌ে। রান‌িং ওয়াটার করার জন্য  বোরিং ক‌রে উপ‌রের ট্যাং‌কে পা‌নি তু‌লে দি‌লেই হল। বিদ্যুৎ আর পা‌নি যে কোন স্থা‌নে উৎপাদন করা যায় শুধু প্র‌য়োজন আর্থ‌িক সামর্থ্যতা। মানু‌ষের মোটামু‌টি অর্থ‌িক সামর্থ্যতা থাক‌লে তা আয়‌ত্বে আনা যায়। এখন গ্রা‌মে গ্রা‌মে ওয়াশার পা‌নির সাপ্লাই নাই কিন্তু ঘ‌রে ঘ‌রে মটর চল‌ছে। টাকা থাক‌লে স্যা‌টেলাইট ডিশ ও ইন্টার‌নেট পাওয়া সম্ভব। কিন্তু সাধারন কৃষ‌কের পক্ষ‌ে বা প্রান্ত‌িক মানু‌ষের পক্ষ‌ে স্যা‌টেলাইট ডিশ বা ইন্টার‌নেট ব্যবহার করা অ‌নেক অ‌নেক খর‌চের বিষয়। সে তুলনায় শহর এলাকায় ক্যাবল টি‌ভি ও ইন্টার‌নেট অ‌নেক অ‌নেক বেশী‌ সাশ্রয়ী ও ব্যাপক ব্যবহৃত। মোবাইল নেটওয়ার্ক‌ের মাধ্য‌মে ইন্টার‌নেট দেয়া গে‌লেও তা য‌থেস্ট প‌রিমা‌নে সাশ্রয়ী নয়। গ্রা‌মের কৃষক স্বল্প খর‌চে ইউ‌টিউব দেখ‌তে পার‌বে তা কিন্তু বলা যায় না। আবার সব জায়গায় একই গ‌তির ইন্টার‌নেট পাওয়াও যায় না। একবার ফেসবু‌কে একজ‌নের একটা পোস্ট দে‌খে‌ছিলাম। সে বলল, ছু‌টি‌তে বাড়ী যাচ্ছ‌ি। ভাবলাম, ইউ‌টিউব দে‌খব। বেশী ক‌রে জি‌বি কিনলাম সাত দিন মেয়া‌দের। কিন্তু বি‌ধিবাম,  ফেইস বুকই সহ‌জে ব্যবহার কর‌তে পার‌ছি না এত স্লো নেট। আর ইউ‌টিউব তো অ‌নেক অ‌নেক দূ‌রের ব্যাপার। তার জি‌বি কেনাটাই লস। গ্রা‌মে মা‌ঝে মা‌ঝে আত্মীয় স্বজ‌নের সা‌থে কথা হয়। ব‌লি এটার ছ‌বি পাঠাও ওটার ছ‌বি পাঠাও। একটা সুন্দর উত্তর পাই। ব‌লে আচ্ছা অাপনা‌কে পরে দিব। এম‌বি কি‌নে নেই তারপর ছ‌বি পাঠাচ্ছ‌ি। আ‌মি তখন ব‌লি, অাচ্ছা এখনই আ‌মি এম‌বি পাঠাচ্ছ‌ি। ছবি দাও। আমরা যারা শহ‌রে ব্রডব্যান্ড ব্যবহার ক‌রি তা‌দের জন্য ওয়াই ফাই ও আন‌লি‌মি‌টেড ইন্টার‌নেট মা‌সিক খর‌চের বিষয়। কিন্তু মোবাইল ইন্টার‌নে‌টে আন‌লি‌মি‌টেড বা মা‌সিক ইন্টার‌নেট অ‌নেক অ‌নেক খর‌চের ব্যাপার। তাই গ্রা‌মের মানু‌ষের কা‌ছে এম‌বি কেনা অ‌নেক আগ্র‌হের ও বিলাসিতার বিষয়। অপ‌টিক্যাল লাই‌নের ব্রডব্যান্ড ইন্টার‌নেট মোবাইল ইন্টা‌নেট হ‌তে সাশ্রয়ী। মোবাইল ইন্টার‌নেট আবার স্যা‌টেলাইট ইন্টার‌নেট হ‌তে সাশ্রয়ী। এখন আসুন প্রাপ্যতার হিসাব ক‌রি। স্যা‌টেলাইট ইন্টার‌নেট পৃ‌থিবীর বেশীর ভাগ এলাকায় পাওয়া সম্ভব। ত‌বে মোবাইল ইন্টার‌নেট হ‌তে প্রায় দশগুন দাম গুন‌তে হ‌তো। এক জি‌বি য‌দি মোবাইল ইন্টার‌নে‌টে ১০০ টাকা হয় ত‌বে স্যা‌টেলাইট ইন্টার‌নে‌টে তা  ১০০০ টাকা গুন‌তে হ‌বে। অপর‌দি‌কে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট আবার নির্ভর কর‌ছে অপ‌টিক্যাল লাই‌নের উপর। যার ফ‌লে সকল স্থা‌নে ব্রডব্যান্ড ইন্টার‌নেট পাওয়া যায় না। মোবাইল আবার তার চে‌য়ে বেশী কাভারে‌জে আ‌ছে। এখন যেটা সাশ্রয়ী সে মাধ্যম সব স্থা‌নে দি‌তে গে‌লে আবার লাভজনক হ‌বে না। ঘনবস‌তি স্থা‌নে অপ‌টিক্যাল ফাইবারের মাধ্য‌মে বেশী লাভজনক ও সাশ্রয়ী। গ্রা‌মের ব‌িস্তৃীর্ণ এলাকার জন্য অপ‌টিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক লাভজনক নয়। একটা বিষয় দেখ‌‌েছি যে কোন অবস্থায় স্যা‌টেলাইট ইন্টার‌নেট‌ই রি‌মোট বা প্রান্ত‌িক এলাকার জন্য ভাল। এখন য‌দি আপনা‌কে ১০০এম‌বি‌পিএস গ‌তির ইন্টার‌নেট ১০ টাকায় প্র‌তি জি‌বি দেয়া হয় ত‌বে কতই না মজা হ‌তো। স্টার‌লিংক কোম্পানী সারা পৃ‌থিবী‌তে ব্রডব্যান্ড থে‌কেও সাশ্রয়ী ইন্টার‌নেট দেয়ার ঘোষণা দি‌য়ে‌ছে। এর জন্য তারা আগামী পাচ বছ‌রে ১২০০০ মাই‌ক্রো স্যা‌টেলাইট লঞ্চ কর‌বে। যার প্র‌ক্রিয়া তারা শুরু ক‌রে‌ছে গত ২৫ মে ২০১৯ এক সা‌থে ৬০ স্যা‌টেলাইট লঞ্চ করার মধ্য দি‌য়ে।
তারা ৪০০ থে‌কে ৫০০ কি:‌মি: দূর‌ত্বের ম‌ধ্যে ক‌য়েক হাজার স্যা‌টেলাইট রাখ‌বে। তারপর ১২০০০ কি‌লো‌মিটার দু‌রে আ‌রো কিছু স্যা‌টেলাইট দি‌বে। ১২০০০ কি:‌মি: বাই‌রে আ‌রো কিছ‌ু স্যা‌টেলাইট বসা‌বে। স্যা‌টেলাইট থে‌কে গ্রাউ‌ন্ড‌ে সং‌যোগ পা‌বে ভি ও কিইউ ইত্যা‌দি ব্যা‌ন্ডের মাধ্য‌মে। স্যা‌টেলাইট থে‌কে স্যা‌টেলাইট সং‌যোগ পা‌বে লেজার বীম এর মাধ্য‌মে। যতটুকু জানা যায় মহাকা‌শে প্রায় সা‌ড়ে চার হাজার স্যা‌টেলাইট আ‌ছে। সেখা‌নে আ‌রো ১২০০০ স্যা‌টেলাইট পাঠা‌লে মহাশূ‌ন্যে বিপুল প‌রিমান স্যা‌টেলাইট জমা হ‌বে। ত‌বে ছোট আকা‌রের মাই‌ক্রো স্যা‌টেলাইট ও সেগু‌লো আবার মেয়াদ শে‌ষে ধ্বংশ কারার ব্যবস্থা থাক‌বে। মহাকা‌শ প‌রিচ্ছন্ন রাখারও উপায় উদ্ভা‌বিত হ‌য়ে‌ছে। তাই মহাকাশ প‌রিছন্ন রাখা নি‌য়ে শং‌কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। বার হাজার স্যা‌টেলাইট পাঠা‌নো চার‌টিখা‌নি বিষয় নয়। অ‌নেক খর‌চের বিষয়। সেই  খরচ ক‌মি‌য়ে এ‌নে‌ছে স্টার‌লিং‌কের স্পেস এক্স কোম্পানী। তারা পূন:ব্যবহার‌যোগ্য র‌কেট বা‌নি‌য়ে‌ছে। একটা র‌কেটের প্রথম পার্ট ১২ বার পুন:ব্যবহা‌রের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হ‌য়ে‌ছে। স্পেস এক্স স্টার লিং‌কের মাধ্য‌মে ৩০ বি‌লিয়ন ডলার আ‌য়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ক‌রে‌ছে। এর দ্বারা স্পেক এক্স মংগলগ্র‌হে মানুষ‌ের বস‌তি গড়ার সুদূর চিন্তা ক‌রে রে‌খে‌ছে। সে যাই‌ হোক পৃ‌থিবীর প্র‌তি‌টি মানুষ যেখা‌নে যে অবস্থায় থাকুক না কেন সস্তায় ইন্টার‌নেট পা‌বে সেটা য‌দি স‌ত্যি করা যায় তাহ‌লে একটা তথ্য প্রযুক্ত‌ির নতুন যু‌গের সূচনা হ‌বে। মানুষ আ‌রো বেশী এ‌কে অপ‌রের সা‌থে কা‌নেক্ট‌েড হ‌বে। আ‌রো বেশী মানু‌ষের উন্ন‌তি হ‌বে। আশা ক‌রি ইলন মা‌স্কের স্টার‌লিংক নতুন তথ্য প্রবা‌হের সভ্যতার উন্নয়ন ঘটা‌বে। সেই যু‌গের শুরুটা হ‌য়েছে বাকীটা শুধু মাত্র সম‌য়ের ব্যাপার।

Thursday, April 25, 2019

সময় দুই ঘন্টা ও সি‌রিয়াল যুদ্ধ

নিউ‌রো‌মে‌ডি‌সিন ডা: দ্বীন মোহাম্মদ। সকল ডাক্তার সি‌রিয়াল দেন একভা‌বে তি‌নি দেন আ‌রেকভা‌বে। রোগী দেখা শুরু ক‌রেন ৩টা থে‌কে। প্রথ‌মে হাসপাতা‌লের রোগী। তারপর সি‌রিয়াল রোগী। সি‌রিয়াল রোগীর ক্ষ‌েত্রে প্রথ‌মে নতুন রোগী। তারপর পুরাতন রোগী। রোগী‌দের যথারী‌তি ১০০ টাকা ভি‌জি‌টের বাই‌রে প‌রি‌শো‌ধে চ‌লে রোগীর হি‌স্ট্রি লেখা। এই  ডাক্তার সা‌হে‌বের রোগী দেখা‌নোর জন্য যতটুকু সম্ভব সি‌রিয়াল যুদ্ধ ভিন্ন রকম। অন্য‌দের সি‌রিয়াল যুদ্ধ হল এক মাস দেড় মাস অ‌পেক্ষা করা। ওনার সি‌রিয়াল যুদ্ধ হল মোবাই‌লে বি‌শেষ একটা নম্ব‌রে ট্রাই কর‌তে থাকা। একঘন্টা ধ‌রে সেই নম্বর‌টিতে ট্রাই ক‌রে সি‌রিয়াল লেখা‌তে হ‌বে। এক জ‌টিল এক হিসাব। যারা সি‌রিঢাল দেন তারা ডাক্তার সা‌হে‌বের পু‌রো বিষয়টা বেশ ভালভা‌বে দেথভাল ক‌রেন। ওনার আ‌শে পা‌শের মানুষ জ‌নের কা‌ছে র‌য়ে‌ছে এই  ব্যবস্থার মিশ্র প্র‌তি‌ক্রিয়া। কেউ বল‌ছেন দি‌নে দি‌নে সি‌রিয়াল পাওয়ার একটা ভাল ব্যবস্থা। কেউ বল‌ছেন লটারী জেতার মত। ত‌বে ডাক্তার সা‌হেব রোগী দেখার জন্য ব্যবস্থা‌টি ক‌রে‌ছেন তার ম‌ধ্যে একটা বি‌শেষত্ব আ‌ছে। দি‌নে নির্ধা‌রিত ৫০টি রোগী। রাত নয়টার মধ্যে ওনার রোগী দেখা শেষ হয় তারপর নানা ধর‌নের কনসাল‌টেন্স‌ি সেশন থা‌কে। পু‌রো ব্যবস্থাপনা মন্দ না। সি‌রিয়াল বা‌ণিজ্য একটা সমস্যা অ‌নেক ডাক্তা‌রের চেম্বা‌রে। এভা‌বে অবশ্য বা‌ণিজ্য কমা‌নোর একটা ভাল ব্যবস্থা থা‌কে। অ‌নেক ডাক্তার সা‌হেব‌ের সি‌রিয়া‌লে এক ম‌াসা‌ধিক কাল সি‌রিয়াল থাক‌লেও এক রক্ষণা‌বেক্ষ‌নে একটা সমস্যা থা‌কে। ঢাকা বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ের নিউ‌রো সাইন্স সেন্টা‌রের সি‌রিয়া‌লে একটা ভাল ব্যাপার লক্ষ করলাম। তা হল ওনারা কম্প‌িউটা‌রে সি‌রিয়াল ম্যা‌ন্টেইন ক‌রেন। সি‌রিয়াল আস‌বে তখন কল ক‌রে জানা‌বে। য‌দি কেউ কল ম‌িস ক‌রে তবে ক‌য়েক‌দিন পর পুনরায় আবার কল আস‌বে। এরপর মিস কর‌লে সি‌রিয়াল নম্বর মিস হ‌য়ে যে‌তে পা‌রে। এই বিষয়‌টি মন্দ নয়। ত‌বে সি‌রিয়াল বড় বড় ডাক্তা‌রের জন্য অ‌নে‌ক অ‌নেক লম্বা সি‌রিয়াল দি‌তে হয় এর ম‌ধ্যে ভয়াবহ হল সি‌রিয়াল বা‌ণিজ্য। এই সি‌রিয়াল বা‌ণিজ্য হল ভয়ানক মন্দ বিষয়। এই মন্দ বিষয়‌টি এ‌কেকজন ডাক্তার এ‌কেকভা‌বে চিন্তা ক‌রেন।
‌বিপ‌দের বিষয় হল ডাক্তার‌কে দেখা‌নোটা অ‌নেক সময়ই হয় ইমার্জ‌েন্স‌ি। সি‌রিয়ালওে ইমার্জ‌ে‌ন্সি দুই‌টি‌ সমস্যা যুগপৎভা‌বে ত‌ৈরী ক‌রে ভয়াবহ সমস্যা।
‌মোবাই‌লে সি‌রিয়াল বঞ্চ‌িতরা আবার ডাক্তা‌রের কা‌ছে আ‌সে বুঝা‌নোর চেস্টায় রত থা‌কে। কল কর‌েপোই‌নি সি‌রিয়াল দেন। চ‌লে আ‌রেক দেন দরবার। সি‌রিয়াল প্রদানকারীরা ব‌লে মোবাই‌লে  ৫০ জন পাইল আর আপ‌নি পাই‌লেন না। তখন স‌ত্যি ভয়াবহ অবস্থা। তখন একটা আ‌লোচনা চ‌লে হয়ত নিয়‌মিত রিকু‌ষ্ট চ‌লে। হয়ত নিয়‌মিত সি‌রিয়া‌লের প‌রে চ‌লে রিকু‌য়েস্ট। ডাক্তার কখনও হ্যা ব‌লেন বা কখনও না ব‌লেন। মোবাই‌লে দি‌নের এক ঘন্টার সি‌রিয়াল সি‌স্টেম পছন্দ হ‌য়েছে। ত‌বে পু‌রো সি‌রিয়া‌ল সি‌স্টেমটা হাই‌ব্রিড হ‌লে মন্দ হত না। ডাক্তা‌রের এই সি‌স্টে‌মে অ‌নেক রোগী দি‌নের পর দিন চেস্টা‌ কর‌বে আবার সি‌রিয়াল টা‌বে না। আবার অ‌নেক রোগী সি‌রিয়াল নি‌য়ে আটকা পড়‌বে। আবার কিছু রোগী সুপা‌রি‌শে থাক‌বে। কিছু রোগী‌কে রাখ‌তে হ‌বে হাইব্রিড ব্যবস্থাপনায়।
‌সি‌রি‌য়ে‌লের হাই‌ব্রিড ব্যবস্থাপনাটা জরুরী।
‌সি‌রিয়াল নি‌ঢে উ‌ল্লে‌খিত ডাক্তা‌রের আ‌লোজনার একটা টর্যা‌য়ে একজন বণ‌লেন দে‌খেন ডাক্তার একলা মানুষ। সকল রোগী য‌দি তা‌কেই দেখা‌তে ভিড়  ক‌রেন তা‌তো সম্ভব না। রোগী অন্য‌ ডাক্তা‌রদের বে‌ছে নি‌তে হ‌বে। বিকল্পতে যে‌তে হ‌বে। ন‌চেৎ অন্য‌দের গ্রো হ‌তে না। মাজার বিষয় হল সাধা‌রন মানুষ ডাক্তা‌রের না‌মে তার কা‌ছে ছু‌টেন। আর ডাক্তার‌দের এই  নামটা হয় দি‌নের পর দিন রোগী দেখার সফলতার উপর। তাই সফল ও সুনামধারী ডাক্তা‌রের কা‌ছে সবাই ছুট‌তে চায়। মা‌সের পর মাস সি‌রিয়াল থাকার চে‌য়ে এটা মন্দ নয়। তাই সকল সুনামধারী ডাক্তা‌রে উ‌চিত য‌দি দি‌নে যত রোগী দে‌খেন তা‌দের অন্তত ৫০% প্র‌য়োজন দি‌নের নির্দষ্ট সম‌য়ে ফোন ক‌রে সি‌রিয়াল লটারী যেতা। ২৫% প্র‌য়োজন স্বাভা‌বিক সি‌রিয়াল যারা লাটারী সি‌রিয়া‌লে পায়‌নি তারা। আর বাকী ২৫% প্র‌য়োজন রেফার কেস বা সুপা‌রিশ পে‌শেন্ট। এভা‌বে একটা কম্প‌িউটারাইজ হাই‌ব্রিড ব্যবস্থাপনা হ‌তে পা‌রে। আশার ক‌রি আমা‌দের দে‌শের বেশীর ভাগ ডাক্তার সফল হ‌বেন ও রোগী সমভা‌বে সকল ডাক্তারগ‌নের কা‌ছে যা‌বে। সেটাই হ‌বে কাং‌খিত প‌রিস্থি‌তি।

Friday, April 19, 2019

পৃথিবী রক্ষায় প্রয়োজন আদি কৃষি

মা‌ঝে মা‌ঝে চিন্তা কর‌লে অবাক হই ১৯০০ থে‌কে ২০০০ সাল। পৃ‌থিবী‌তে ব্যাপক উন্নয়‌নের শতক। আবার পৃ‌থিবী‌কে ব্যাপক ধবং‌শের শতকও বলা যায়। এই  সময়ে মানুষ ব্যাপক ভা‌বে পৃ‌থিবীর ভিতরকার খ‌নিজ ধ্বংশ ক‌রে‌ছে। প‌রি‌বেশ ব‌লে কিছু আ‌ছে চিন্তায় আ‌নে‌নি। কৃ‌ষিক্ষ‌‌েতে সার ও কীটনাশক ব্যাপকভা‌বে ব্যবহার ক‌রে ধ্বংশ ক‌রে‌ছে জ‌মির স্বাস্থ্য ও মানু‌ষের স্বাস্থ্য। অ‌নেক অ‌নেক যুদ্ধও ক‌রে‌ছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ইত্যা‌দি। এই  শত‌কে মানুষ ব্যাপকভা‌বে খ‌নিজ পু‌ড়ি‌য়ে‌ছে। কখনও চিন্তা ক‌রে‌নি পৃ‌থিবীর ভির‌রের খ‌নিজ কখনও অফুরন্ত নয়। কৃ‌ষি বাড়া‌নোর জন্য তারা ব্যাপকভা‌বে রাসা‌নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার ক‌রে‌ছে। তা‌দের সময় জ‌ৈব বালাইনাশক ও জ‌ৈব সার তারা জানত। বেশী ফসল ফলা‌নোর আশ‌ায় তারা বৃষক‌কে রোগাক্রান্ত ক‌রে‌ছে। জ‌মির মা‌টি ধ্বংশ ক‌রে‌ছে। অথচ রাসা‌নিক সার ও কীটনাশক আসার আ‌গে মানুষ জ‌ৈব পদ্ধ‌তি‌তে চাষাবাদ ক‌রে‌ছে। জ‌ৈব পদ্ধ‌তির চা‌ষে কৃষক সুস্থ ছিল। সচ্ছল ছিল। এখন মাল্ট‌িনেশনাল কোম্পানী তা‌দের লা‌ভের আশায় রাসায়‌নিক সার ও কীটনাশক‌ে‌ কৃষক‌কে ধ্বং‌শের দ্বারপ্রা‌ন্তে নি‌য়ে গে‌ছে। সরকারী কৃ‌ষি বিভাগ ও মি‌ডিয়া কর্প‌ো‌রেট কোম্পানী গু‌লি‌কে সহায়তা ক‌রে‌ছে। আজ কৃষক জ‌ৈব সার, ভার্ম‌ি কম্প‌োষ্ট, জ‌ৈব বালাই নাশক, মাল‌চিং পেপার ও নেট হাউজ নি‌য়ে এ‌গি‌য়ে যাচ্ছে লাভজনক ও স্বাস্থ্য সম্মত কৃ‌ষির দি‌কে। আমার এখনও ম‌নে আ‌ছে আমার ই‌ঞ্জি‌নিয়ার বাবা আ‌শির দশ‌কে ছু‌টি‌তে গ্রা‌মে গে‌লে তার আত্মীয় কৃষক‌দের উষ্মা প্রকাশ কর‌তেন, কেন তারা বেশী ফল‌নের জন্য সার ও কীটনাশক ব্যবহার কর‌ছে না। কেন তারা ডিপ‌টিউবও‌য়েল ব্যবহার কর‌ছে না। তার প্রায় চ‌ল্লিশ বছর পর আ‌মি গ্রা‌মে গেলে নতুন কৃষক‌দের বল‌ছি রাসায়‌নিক সার ও বিষ বাদ দাও। জ‌ৈব সার ও জ‌ৈব বালাইনাশক ব্যবহার কর। জ‌মি‌তে মালচিং পেপার দাও। ডিপ টিউবও‌য়েল বাদ দাও। চাষাবা‌দের জন্য পুকুর বা খা‌লে বৃ‌ষ্টির পা‌নি জ‌মি‌য়ে তা ড্রিপ ই‌রি‌গেশ‌নের মাধ্য‌মে সব‌জি চা‌ষে ব্যবহার ক‌রো। মা‌টি‌তে কে‌চো আর অনুজীব ফি‌রি‌য়ে দাও। মা‌টি‌তে প্রান আন। মা‌টি‌তে যেখা‌নে ৫% জ‌ৈব সার আর অনুজীব থাকার কথা সেখা‌নে রাসায়‌নিক সার ব্যবহার ক‌রে তার ১% ও বিদ্যমান নাই।
গত শত‌কে কো‌টি কো‌টি টন প্লা‌স্টিক ব্যবহার ক‌রে‌ছে। অথচ সেই  মানুষগু‌লি প্লা‌স্টিক রিসাইক্যাল করার চেস্টা ক‌রে‌নি।
ব্যাক টু দি স্কোয়ার ও ফি‌রি‌য়ে দাও অরণ্য। আজ কো‌টি কো‌টি টাকা খরচ ক‌রে সার কারখানা ত‌ৈরী করার প্র‌য়োজন নাই। আমা‌দের লক্ষ লক্ষ নারীরা গ্রা‌মের রান্নার আবর্জনা, লতাপাতা পচা, গরুর গোবর ও মুরগীর বিষ্ঠা দি‌য়ে ভার্ম‌ি কম্পোষ্ট, ট্রাই‌কো কম্প‌োস্ট ও অনান্য কম্প‌োষ্ট ত‌ৈরী ক‌রে অত্যন্ত কম খর‌চে সার সরবরাহ কর‌তে পা‌রে। এ‌তে নারীরা কম্প‌েষ্টে বিক্রি ক‌রে লাভবান হ‌তে পা‌রে। দা‌রিদ্রতা দূর হ‌বে। রাসায়‌নিক সার ব্যবহা‌রে জ‌মি শেষ ও সার কি‌নে কৃষক ফতুর। জ‌ৈব সা‌রে কৃষাণীর নগদ আয়, জ‌মি উর্বর ও কৃষ‌কের খরচ ক‌মে গি‌য়ে কৃষক লাভবান।
সরবারীভা‌বে জৈব সা‌রের ব্যপক প্রচারনা প্র‌য়োজন। সরকার সা‌রের যে ভর্তু‌কি দেয় সেই  ভর্তুকি সরকার কৃষানী যারা জ‌ৈব সার ত‌ৈরী কর‌ছে তা‌দের ইন‌সেন‌টিভ হিসা‌বে দেয়া যে‌তে পা‌রে।
জ‌ৈব বালাইনাশ‌কের উপর আ‌রো গ‌ভেশনা প্র‌য়োজন। এটা হ‌তে পা‌রে অনান্য রাসায়‌নিক বালাইনাশ‌কের মত পাউডা‌রের ফর‌মে। কৃষক ত‌বে তা সহ‌জে ব্যবহার কর‌তে পার‌বে। এখন নিম পাতা সিদ্ধ কর। মেহগ‌নি বীজ সিদ্ধ কর। কয়েক‌দিন পা‌নি‌তে ভি‌জি‌য়ে রাখ। আবার অ‌নেক সময় গরুর চনা দাও। ইত্যা‌দি নানা জ‌টিল ও কষ্টকর পদ্ধ‌তি‌তে যে‌তে হয়। ডি‌জিটাল যু‌গে মানুষ চায় সহ‌জে সব‌কিছু। তাই কম্প‌োস্ট  সা‌রের মত রে‌ডিমেট প্যা‌কে‌টে ক‌রে জ‌ৈব বালাই নাশক আস‌তে হ‌বে। তা‌বে আশার কথা হল এখন কিছু কিছু প্র‌তিষ্ঠান জ‌ৈব বালাই নাশক প্যা‌কেট জাত কর‌ছে। এগু‌লোর প্রাপ্যতা আ‌রো বাড়া‌তে হ‌বে। পৃ‌থিবী‌কে রক্ষা করার আধু‌নিক উপায় হল ফি‌রি‌য়ে দাও অরণ্য।

Thursday, April 11, 2019

অপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর সেট


একশত বিশটা আইটেম টুলসসহ ড্রিল মেশিন। এরূপ আরো অনেক অনেক দ্রব্যাদিসহ অনলাইন অফার চলে। আপনার এক‌টি ড্রিল মেশিন প্র‌য়োজন। সাথে আরো অনেক ড্রিল বিট, প্লায়ার্স, স্ক্রু ড্রাইভারসহ ম্যাগা অফার একটা কিনতে চাচ্ছেন অথচ প্লায়ার্স ও অনেক ক‌টি সামগ্রী আপনার আছে। আপনি চিন্তা করলেন অল্প কিছু টাকা বেশী খরচ ক‌রে অনেক কয়‌টি সামগ্রী আমি নি‌তে পারব। অনেক ক‌টি সামগ্রী নি‌তে পারাটা সর্বদা ভাল অপশন নয়। প্রথমে আপনি অনেক ক‌টি অপ্র‌য়োজনীয় সামগ্রী কিনলেন এগু‌লো কোন একদিন আপনার কাজে লাগবে। ঘর পরিষ্কার রাখার একটা ফর্মুলা হল আপনি যদি দেখেন আপনার ঘরের কোন দ্রব্য বা জিনিস এক বছরে একবার ব্যবহার হয় নাই তবে তা আপনি চোখ বন্ধ ক‌রে ত্যাগ কর‌তে পারেন। কারণ সে দ্রব্য‌টি আপনার দ্বিতীয়বার ব্যবহারের সম্ভবনা অনেক অনেক কম। অনেক দ্রব্য বা আইটেম কেনার মধ্যে আনন্দ থাক‌তে পা‌রে। কিন্তু লাভ নাই। কারণ আপনার অপ্রয়োজনীয় কোন দ্রব্য ও টুলস রাখা মানে আপনার রক্ষণাবেক্ষণের চাপ বাড়া‌নো। আপনার রাখার স্থান বেশী লাগছে। তাই কেবল মাত্র ব্যবহার উপ‌যোগী সামগ্রী ছাড়া আর কোন সামগ্রী ষ্টকে রাখার প্র‌য়োজনীয়তা নাই বলা যায়। আপনি দুর্গম এলাকায় আছেন। যেখান থেকে প্রতিনিয়ত কোন টুলস কোন সামগ্রী হয়ত কালে ভদ্রে একবার কাজে লাগ‌তে পা‌রে। তবুও তা স্থানের দুর্গমতা বিচার ক‌রে মজুদ রাখ‌তে হ‌তে পা‌রে। সাধারণ শহর এলাকা প্রায় সব ধরনের সামগ্রী সহজ হোক বা জটিল হোক তা পাওয়া যায়। তাই যদি কাছের দোকা‌নে মজুদ থাকলে নিজের কাছে মজুদ করা সবচেয়ে বোকামী। প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে তাই আমা‌দের আজ‌কে যে প্রযুক্তি লে‌টেস্ট মনে হচ্ছে আগামী‌তে তা আরো উন্নত হচ্ছে। পরিবর্তন হচ্ছে চা‌হিদাগু‌লো। আজ যে যন্ত্রাংশ প্র‌য়োজনীয় মনে হচ্ছে তা আগামীকাল অপ্র‌য়োজনীয় মনে হচ্ছে।
উপায় আউট সোর্স। যা একান্ত প্র‌য়োজন তা কেনা বাকী ভাড়ায় চলা। আবার কোন সামগ্রী না কিনে উপায় নাই। ব্যবহার শেষে তা পুনরায় দোকা‌নে ফেরত প্রদান। ভাড়া প‌রি‌শোধ বা বিক্রি ক‌রে দেয়াটা হল সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। যে কোন টুলস বা আইটেম ছয় মাসে বা বছরে একবার ব্যবহার হলে তা আগাম কিনে বা অফারের সাথে না কেনাটা জরুরী। আগাম কেনা বা অতিরিক্ত কেনাটা অপচয়। অপচয় থেকেও জরুরী বিষয় আপনার রক্ষণাবেক্ষণের চাপ বাড়াবে। যে কোন বাড়তি দ্রব্য মানেই স্টোর বা ঘরের মূল্যবান স্থানটুকু নেয়া ও ঘর পরিষ্কার করার জন্য অতিরিক্ত শ্রম ও সময় নষ্ট হওয়া।
দুই হাজার টাকায় ড্রিল বিট সহ, প্লায়াস সহ  ০২১টি আইটেম কিনে ২০০০ টাকা খরচ করার চে‌য়ে প্র‌য়োজনীয়  ২০টিঅেই‌টেম কেনাটা অনেক ভাল। এতে খরচ কম লাগবে। প্রতিটি আইটেম বেঁছে বেঁছে বেস্ট আইটেম কেনা যাবে। এভাবে বেস্ট আইটেম ও প্র‌য়োজনীয় আইটেম কিনতে পারলে তা সেটে কেনা আইটেম হ‌তে অনেক বেশী টেকসই ও সাশ্রয়ী হবে।
অফার নয়, প্র‌য়োজন মোতা‌বেক বেস্ট বা টেকসই আইটেমটা কেনাই সবচেয়ে বুদ্ধির পরিচায়ক হবে। আমা‌দের জীবনে প্রায় সবখানেই  আমরা আমাদের একান্ত প্র‌য়োজনীয় আইটেমের বাই‌রে অনেক আইটেম দেখ‌তে পাই। এই আইটেমগুলো আমা‌দের জীবন যাত্রা‌কে জটিল ও অগুছা‌নো ক‌রে তুলছে। এগু‌লো আমা‌দের গুছানো দরকার।
ব্যবসায়ীরা তা‌দের পণ্য‌কে আকর্ষণীয় ও চাহিদা বাড়া‌তে অনেক অপ্র‌য়োজনীয় অফার নি‌য়ে আসে। এসব অফার পরিবেশ বান্ধব নয়। পরিবেশ বান্ধব হল তাই যা হবে টেকসই ও দীর্ঘদিন ব্যবহার ক‌রে রিইউজ/‌রিসাইক্যাল করা যাবে। হালকা পাতলা কম টেকসই  সামগ্রী পরিবেশের জন্য উপকারী হবে না। এগু‌লো আইন ক‌রে বন্ধ করা প্র‌য়োজন। মুক্ত বাজার অর্থনীতির যুগে অপ্রয়োজনীয় ও পরিবেশ বান্ধব নয় এরূপ দ্রব্যাদি নিষিদ্ধ করা প্র‌য়োজন। কারণ ব্যবসায়ী ফয়দা অপেক্ষা ক্রেতার স্বার্থ ও ক্ষতি কমা‌নোটা জরুরী। তারপর জরুরী কাজ হয় পরিবেশের ক্ষতি বন্ধ করা। পরিশেষে বলব, বন্ধ হোক নানা লোভনীয় অফারের মাধ্যমে অপ্র‌য়োজনীয় সামগ্রীর বাণিজ্য।

Thursday, April 4, 2019

বেকার থাকা সহজ নয়

আমার মা‌ঝে মা‌ঝে মনে হয় বাংলা‌দে‌শের মানুষ কখনও বেকার থে‌কে না খে‌য়ে মরার কথা নয় য‌দি তার দুই হাত বা দুই পা থা‌কে। বাংলা‌দে‌শে লেবার সংকট। তাই মজুরীর বি‌নিম‌য়ে কাজ সব জায়গায় আছে। আ‌গে কৃ‌ষিকাজ লাভজনক ছিল না এখন কৃ‌ষিকাজ লাভজনক হ‌চ্ছে। সা‌রের প‌রিবর্ত‌ে  কেঁচো সার বা ভার্মী কম্প‌োস্ট দি‌য়ে খরচ ক‌মে যাচ্ছ‌ে। জ‌ৈব বালাইনাশক ব্যবহার ক‌রে কীটনাশ‌কের খরচ শূন্য হ‌য়ে যাচ্ছ‌ে। মাল‌চিং পেপার বা জ‌ৈব মাল‌চিং ব্যবহার ক‌রে জ‌মি চাষ আগাছা বাছার লেবার খরচ অ‌নেক ক‌মে গে‌ছে। একই ভা‌বে মাল‌চিং এর কার‌ণে পা‌নি কম লাগ‌ছে। পা‌নি আ‌রো কমা‌নো যায় ড্রিপ ই‌রি‌গেশ‌নের মাধ্য‌মে।
‌মে‌য়েরা গৃহ কর্ম‌ের পাশাপা‌শি ভার্ম‌ি কম্প‌োস্ট  উৎপাদন কর‌তে পা‌রে মা‌সে ৮/১০ হাজার টাকা নি‌শ্চিত আয় কর‌তে পা‌রে। তার জন্য দি‌নে ক‌য়েক ঘন্টা সময় দি‌লেই চ‌লে। এখন পর্যন্ত ঝিনাইদহ, কু‌ষ্টিয়া, ময়মন‌সিংহ, নরে‌সিংদ‌ী ও কু‌মিল্লা সফলতা পে‌য়ে‌ছে। চিন্তা করুন বাংলা‌দেশ হাজার হাজার কো‌টি টাকার কীটনাশক ও সার আমদানী থে‌কে মুক্ত হ‌তে পা‌রে শুধু জ‌ৈব সার ও জ‌ৈব বালাইনাশক ব্যবহা‌রে। কৃষক হ‌তে পা‌রে সচ্ছল। দে‌শের মানু‌ষের হাজার কো‌টি টাকা অর্গা‌নিক শশ্য ও শাকসব‌জি খাওয়ার কার‌নে বে‌চে যা‌বে স্বাস্থ্যখা‌তে আ‌রো হাজার কো‌টি টাকা। পৃ‌থিবীর দ্ব‌িতীয় বৃহত্তস গার‌মেন্টস শিল্প বাংলা‌দে‌শে র‌য়ে‌ছে। তাই নারী‌দের বেকার থাকার কোন সু‌যোগ নাই। এখন বেকার থাক‌লে বল‌তে হ‌বে শখ ক‌রে বেকার থাকা।
আ‌মি জা‌নি বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ের ছাত্র/ছাত্রীরা ক্ষে‌পে যা‌বে দে‌শে প্র‌তিবছর আট লক্ষ শি‌ক্ষিত বেকার যুবক/যুবতী ত‌ৈরী হ‌চ্ছে। এ‌দের কি হ‌বে। সমাধান একটাই। দে‌শে অ‌নেক এ‌ক্সি‌কিউ‌টিভ জব বাড়া‌তে হ‌বে। উপ‌জেলায় কর্মকর্তা বাড়া‌তে হ‌বে। দে‌শের সকল দপ্ত‌রে কর্মকর্তা বাড়া‌তে হ‌বে। প্র‌য়োজ‌নে ইউ‌নিয়ন পর্যা‌য়ে কর্মকর্তা নি‌য়োগ দি‌তে হ‌বে। প্রাই‌ভেট প্র‌তিষ্ঠান বাড়া‌তে হ‌বে। আপ‌নি য‌দি খোজ নেন কা‌য়িক প‌রিশ্র‌মের লো কস্ট জ‌বের কোন ঘাট‌তি নেই। ঘাট‌তি কেবল বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ের পড়ুয়া‌দের। বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ে পড়া অবস্থায় ছাত্র/ছাত্রীদের কিছু কিছু কা‌জে দক্ষ করা অ‌তি প্র‌য়োজন। যেমন: তা‌দের গাড়ী চালনায় দক্ষ হওয়া, ক‌ম্পিউটা‌রে ওয়ার্ড, এক্স‌েল ও  পাওয়ার প‌য়েন্ট‌ জানা প্র‌য়োজন। ইং‌রেজীতে কথা বল‌তে পারা প্র‌য়োজন। প্র‌েজেন্ট‌‌েশান দেওয়ার দক্ষতা থাক‌তে হ‌বে। ত‌বে আশা করা যায় এ ধর‌নের দক্ষ অনার্স টাইপ শি‌ক্ষিত যুবক যুবতী দে‌শে বি‌দে‌শে চাকুরী পা‌বে। বেকার থাক‌বে না। আমা‌দের দে‌শে ডি‌প্লোমা ই‌ঞ্জি‌নিয়ার বেকার থাকার কথা নয়। নার্স বেকার থাকার কথা নয়। ডাক্তাররা বি‌সিএস না কর‌ল্লে না‌কি বেকার অথচ মৃত্যুর আ‌গের দিন পর্যন্ত ডাক্তার‌দের বেকার থাকার কথা নয়। আপ‌নি এমএ পাশ। আ‌রো কোন দক্ষতা আয়ত্ব ক‌রেন নাই। অথচ চা‌চ্ছেন ওয়াল্ড ক্লাস জব। আমার কা‌ছে ম‌নে হয় প্র‌তিটা মানুষ শি‌ক্ষিত হওয়ার সা‌থে সা‌থে ইনকাম করার জন্য দক্ষতায় আগা‌তে হ‌বে। শুধু পড়া‌শোনা করলাম ইনকাম করা জানলাম না। তা ঠিক নয়। প্রথ‌মেই কিভা‌বে টিউশন করাতে হয়, এটা শিখ‌তে হ‌বে। নি‌জে একটা লিসন নি‌য়ে তা অপর‌কে শেখা‌নো এটা কিন্তু যেন তেন বিষয় নয়। তার জন্য অনুশীলন কর‌তে হ‌বে। প‌ড়ি‌য়ে বু‌ঝি‌য়ে নেয়ার টেক‌নিটটাও বুঝ‌তে হ‌বে। ভাল শিক্ষক হিসাবে ছাত্রজীব‌নে যে আত্মপ্রকাশ কর‌তে পার‌বে সে ভ‌বিষৎ এ ভাল মা‌নের প্রে‌জেন্টেশন দেয়ার কৌশল ও আয়ত্ব কর‌তে পার‌বে। তাই ছাত্র/ছাত্রী‌দের টিউশনী হল নি‌জেকে উপার্জনমূখী করার প্রথম ধাপ। ছাত্র/ছাত্রী যত বড় ধনীর সন্তানই হোক না কেন ছাত্রজীব‌নে পার্ট টাইম উপার্জন করার ব্যবস্থা ক‌রে নেয়াটা বরং অ‌নেক ফলদায়ক।

‌বি‌য়ের বাজা‌রে এসএস‌সি পাশ সরকারী কর্মজী‌বি ভাল না অনার্স পাশ বেকার ভাল। সবাই বল‌বেন, এসএস‌সি পাশ চাকু‌রে ভাল। অনার্স পাশ আর যে কোন স্কি‌লে উপার্জন কর‌তে পার‌লেন না। তাহ‌লে হ‌বে না। পাশ দিলাম চাকুরী পে‌য়ে গেলাম। জি‌তে গেলাম। য‌দি প্র‌তি‌যোগীতায় চাকুরী না হয় তখন? সবার প্রথম লক্ষ্য চাকুরী। আ‌মি অ‌নেক‌েই দে‌খি অনার্স পাশ ক‌রেছ‌ে টিউশনী ও প্রাই‌ভেট ছোটখাট চাকুরীতে লে‌গে আ‌ছে। তারপর বি‌সিএসও ক‌রে ফেল‌ছে। যে যাই বলুক এরা কিন্তু রিয়াল হিরু।

তাই শুধু পড়া‌শোনা নয় উপার্জনমূখী হওয়াটা প্র‌তি ছাত্র/ছাত্রী‌দের লক্ষ হওয়া প্র‌য়োজন। ত‌বেই ক‌মে আস‌বে জা‌তির অ‌ভিশাপ শি‌ক্ষিত বেকা‌রের সংখ্যা।


Saturday, March 30, 2019

বর্তমান ডিজিটাল ছাত্র দের আন্দোলনে বোকামী


ক‌য়েক মাস মাস পর পর দুই একজন ক‌রে ছাত্র রোড অ্যাক্স‌ি‌ডে‌ন্টে মারা যায়। সাপ্তাহ ব্যাপী ছাত্ররা আ‌ন্দোলন ক‌রে তারপর আবার আ‌ন্দোলন স্তি‌মিত হ‌য়ে যায়। আ‌ন্দোল‌নের সময় সময় ছাত্ররা চালকদের কাগজপত্র চে‌ক করে। গাড়ীর কাগজপত্র চেক ক‌রে। আধু‌নিক ছে‌লে মে‌য়েরা এটা বু‌ঝে না কাগজ চেক করা একটা হয়রানী। কাগজ চেক ক‌রে সত্যতা যাচাই করা যায় না। কোন চালক য‌দি তার গাড়ীর ব্লুক বুক বহন কর‌তে ভু‌লে যায় বা তার লাই‌সেন্স সা‌থে রাখ‌তে ভু‌লে যায় তার অর্থ এই  নয় যে যে লাই‌সেন্সধারী নয়। সে চালক নয়। বরং নকল ব্লু বুক ও নকল লাই‌সেন্স দে‌খি‌য়ে পার পে‌য়ে যাচ্ছ‌ে অনে‌কে। গাড়ীর চালকদের পু‌লি‌শি হয়রানী থে‌কে রক্ষা করার জন্য আমা‌দের প্র‌তি‌বেশী দেশ‌ে ন‌রেন্দ্র মোদী নিয়ম ক‌রে‌ছেন গাড়ীর চালকরা মোবাই‌লে লাই‌সে‌ন্সের ডি‌জিটাল ক‌পি দেখা‌লে বা অনলাই‌নে ডি‌জিটাল প্রমান দেখা‌তে পার‌লে পু‌লিশ যে কাউ‌কে খেয়াল খুশী মত ফাইন কর‌তে পার‌বে না। 
আমা‌দের ছাত্ররা সেই সমস্ত কাগজ চেক কর‌ছে যা কিনা সহ‌জে নকল করা সম্ভব। আমার জানা ম‌তে বিআর‌টিএ এর ও‌য়েব সাই‌টে গি‌য়ে যে কোন গাড়ীর নম্বর দি‌য়ে সার্চ কর‌লে গ‌াড়ীর সমস্ত তথ্য পাওয়া সম্ভব। একবার আ‌মি আমার একজন লোক‌কে দি‌য়ে আমার গাড়ী‌কে ঢাকায় পা‌ঠি‌য়ে‌ছিলাম ‌রি‌পিয়া‌রের জন্য। আ‌মি কেবলমাত্র গাড়ীর ফিট‌নেস ক‌রি‌য়ে‌ছি। বাসার ড্রয়া‌রে নতুন ফিট‌নে‌সের কাগজটা গাড়ী‌তে দেয়া হয়‌নি। আমার লোক ঢাকা‌তে গি‌য়ে যথারী‌তি ধরা। পুরাতন ফিট‌নেস কাগজ থাকার কার‌ণে আ‌মার লোক জানাল স্যার পু‌লিশ ৩০০০ টাকা জ‌রিমানা কর‌েছে। আ‌মি পু‌লি‌শের সা‌থে কথা বললাম। ভুলের বিষয়‌টি বললাম। বললাম আ‌মি এখনই  আমার লো‌কের মোবা‌ই‌লে নতুন ফিট‌নেস সার্ট‌িফি‌কটে ছ‌বি পাঠাচ্ছ‌ি। আমার লোক আমার প্রে‌রিত ফিট‌নে‌সের ছ‌বি দেখাল। পু‌লিশ বলল ডু‌প্লি‌কেট। আ‌মার লোক পু‌লিশ‌কে মোবাইল দিল আ‌মি বললাম আপি‌নি বিআর‌টিএ ও‌য়েব সাই‌টে গি‌য়ে গাড়ীর নম্বর দি‌য়ে সার্চ দেন। দেখুন ফিট‌নেছ আপ‌ডে‌টেড কিনা। পু‌লিশ বলল, এত কিছু বু‌ঝি না। কাগজ নাই জ‌রিমানা দেন। আ‌মি পুনরায় আমার মোবাই‌লে বিআর‌টিএর আপ‌ডেটেড তথ্য বের ক‌রে মোবাই‌লের স্ক্রীন শর্ট পাঠালাম। পু‌লিশ বেচারার দয়া হল। জ‌রিমানা ৩০০০ টাকা হ‌তে ক‌মি‌য়ে ১০০০ টাকা করা হল। আমার প্র‌তি‌বেশী দে‌শের প্রধানমন্ত্রী পু‌লিশের স্বেচ্চাচারীতা বন্ধ করার জন্য যে কোন ফর্ম‌ে লাই‌সেন্স বা গাড়ীর বাগ‌জের প্রমান দেখি‌য়ে জ‌রিমানা মাপ পাওয়ার ব্যবস্থা ক‌রে‌ছেন। আমা‌দের ডি‌জিটাল বাংলা‌দে‌শে ডি‌জিটাল ছে‌লে মে‌য়েরা কাগজ চেক কর‌ছে। তা‌দের এই  পশ্চাৎপদ ভাবনায় আমি হতাশ। তারা বল‌তে পারত সকল গাড়ী‌তে কিউআরএফ কোড বাধ্যতামূলক। যে কেউ এই কিউআরএফ কোড তার মোবাই‌লে সার্চ ক‌রে গাড়ীর যাবতীয় তথ্য পে‌য়ে যা‌বে। তেম‌নি গাড়ীর একপা‌শে চালক তার লাই‌সেন্স নম্বর ও কিউআরএফ কোড ঝু‌লি‌য়ে গাড়ী চালা‌বে। যেন চাল‌কের কিউআরএফ কোড স্কেন ক‌রে যে কেউ ইন্টার‌নেট হ‌তে তার যাবতীয় তথ্য যেন পে‌য়ে যে‌তে পা‌রে। এমন‌ কি চাল‌কের চেহাড়া স্কেন ক‌রেও পু‌লিশ তার সমস্ত ডি‌টেল জান‌তে পা‌রে। ফেস র‌িকগ‌নিশন সফটওয়্যা‌রের অভাব নাই। তা অল্প খর‌চেই করা যায়। চাল‌কের ফিংগার প্রিন্ট স্ক‌েন ক‌রে সমস্ত তথ্য জানা যাবে। প্র‌তি‌টি চাল‌কের সমস্ত তথ্য কতবার অ্যাব‌সি‌ডেন্ট ক‌ে‌রে‌ছে। কতবার জ‌রিমানা পে‌য়ে‌ছে। ইত্যা‌দি যাবতীয় তথ্য ডাটা বেই‌জে থাক‌বে। শিক্ষার্থীরা এই ধর‌নের উন্নত চিন্তা না ক‌রে ফা‌নি কাগজ চে‌কিং ক‌রে আ‌ন্দোলন কর‌ছে। আমার ক্রে‌ডিট নি‌চ্ছে পু‌লি‌শের গাড়ী‌তে কাগজ নাই। আর্ম‌ির গাড়ী‌তে কাগজ নাই। আইন শৃংখলা বা‌হিনীর ইউ‌নিফরমই তার বড় প‌রিচয়। অপর‌দি‌কে হেলপারর ও কমবয়সী লাই‌সেন্স ছাড়া লোক গাড়ী চা‌লি‌য়ে অঘটন ঘটায়। আইন শৃংখলা বা‌হিনীর গা‌ড়ি চালনায় সাধারনত ব্যতয় কম হয়। তাই তা‌দের অ্যাব‌সি‌ডেন্ট কুলনামূলকভা‌বে কম।

‌ফেইস‌বেু‌কের মত সমস্ত লাই‌সেন্সধারী চাল‌কে‌দের জন্য বি‌ডি ড্রাইভার বুক থাক‌তে পা‌রে। সেখা‌নে সমস্ত চালক‌দের তথ্য থাক‌বে। যে কেউ যে কোন চাল‌কে বের কর‌তে পা‌রে এবং তার অপরা‌ধের ফি‌রি‌স্তি সহ‌জে পু‌লি‌শের কা‌জে সাব‌মিট কর‌তে পা‌রে। এভা‌বে হ‌তে পা‌রে চালক‌দের উপর নজরধারীর কাজ। একইভা‌বে কা‌রো নজ‌রে কোন ফিট‌নেছ বিহীন গাড়ী নজ‌রে এ‌লে সা‌থে সা‌থে নি‌দ্ষ্টি সাই‌টে গি‌য়ে রি‌পোর্ট কর‌তে পা‌রে। চিন্তা ক‌রে দেখুন এভা‌বে নকল চালক। গাড়ীর নকল কাগজ শনাক্ত ক‌রে ব্যবস্থ‌া নেওয়া সহজ হ‌বে। এ‌ভেব সম্ভব আমা‌দের দে‌শে প‌রিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ডি‌জিটালাইজ অ‌নিয়ম তূর করার জন্য গ‌তিশীল করা।