কয়েক মাস মাস পর পর দুই একজন করে ছাত্র রোড অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায়। সাপ্তাহ ব্যাপী ছাত্ররা আন্দোলন করে তারপর আবার আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায়। আন্দোলনের সময় সময় ছাত্ররা চালকদের কাগজপত্র চেক করে। গাড়ীর কাগজপত্র চেক করে। আধুনিক ছেলে মেয়েরা এটা বুঝে না কাগজ চেক করা একটা হয়রানী। কাগজ চেক করে সত্যতা যাচাই করা যায় না। কোন চালক যদি তার গাড়ীর ব্লুক বুক বহন করতে ভুলে যায় বা তার লাইসেন্স সাথে রাখতে ভুলে যায় তার অর্থ এই নয় যে যে লাইসেন্সধারী নয়। সে চালক নয়। বরং নকল ব্লু বুক ও নকল লাইসেন্স দেখিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে অনেকে। গাড়ীর চালকদের পুলিশি হয়রানী থেকে রক্ষা করার জন্য আমাদের প্রতিবেশী দেশে নরেন্দ্র মোদী নিয়ম করেছেন গাড়ীর চালকরা মোবাইলে লাইসেন্সের ডিজিটাল কপি দেখালে বা অনলাইনে ডিজিটাল প্রমান দেখাতে পারলে পুলিশ যে কাউকে খেয়াল খুশী মত ফাইন করতে পারবে না।
আমাদের ছাত্ররা সেই সমস্ত কাগজ চেক করছে যা কিনা সহজে নকল করা সম্ভব। আমার জানা মতে বিআরটিএ এর ওয়েব সাইটে গিয়ে যে কোন গাড়ীর নম্বর দিয়ে সার্চ করলে গাড়ীর সমস্ত তথ্য পাওয়া সম্ভব। একবার আমি আমার একজন লোককে দিয়ে আমার গাড়ীকে ঢাকায় পাঠিয়েছিলাম রিপিয়ারের জন্য। আমি কেবলমাত্র গাড়ীর ফিটনেস করিয়েছি। বাসার ড্রয়ারে নতুন ফিটনেসের কাগজটা গাড়ীতে দেয়া হয়নি। আমার লোক ঢাকাতে গিয়ে যথারীতি ধরা। পুরাতন ফিটনেস কাগজ থাকার কারণে আমার লোক জানাল স্যার পুলিশ ৩০০০ টাকা জরিমানা করেছে। আমি পুলিশের সাথে কথা বললাম। ভুলের বিষয়টি বললাম। বললাম আমি এখনই আমার লোকের মোবাইলে নতুন ফিটনেস সার্টিফিকটে ছবি পাঠাচ্ছি। আমার লোক আমার প্রেরিত ফিটনেসের ছবি দেখাল। পুলিশ বলল ডুপ্লিকেট। আমার লোক পুলিশকে মোবাইল দিল আমি বললাম আপিনি বিআরটিএ ওয়েব সাইটে গিয়ে গাড়ীর নম্বর দিয়ে সার্চ দেন। দেখুন ফিটনেছ আপডেটেড কিনা। পুলিশ বলল, এত কিছু বুঝি না। কাগজ নাই জরিমানা দেন। আমি পুনরায় আমার মোবাইলে বিআরটিএর আপডেটেড তথ্য বের করে মোবাইলের স্ক্রীন শর্ট পাঠালাম। পুলিশ বেচারার দয়া হল। জরিমানা ৩০০০ টাকা হতে কমিয়ে ১০০০ টাকা করা হল। আমার প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রী পুলিশের স্বেচ্চাচারীতা বন্ধ করার জন্য যে কোন ফর্মে লাইসেন্স বা গাড়ীর বাগজের প্রমান দেখিয়ে জরিমানা মাপ পাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটাল ছেলে মেয়েরা কাগজ চেক করছে। তাদের এই পশ্চাৎপদ ভাবনায় আমি হতাশ। তারা বলতে পারত সকল গাড়ীতে কিউআরএফ কোড বাধ্যতামূলক। যে কেউ এই কিউআরএফ কোড তার মোবাইলে সার্চ করে গাড়ীর যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবে। তেমনি গাড়ীর একপাশে চালক তার লাইসেন্স নম্বর ও কিউআরএফ কোড ঝুলিয়ে গাড়ী চালাবে। যেন চালকের কিউআরএফ কোড স্কেন করে যে কেউ ইন্টারনেট হতে তার যাবতীয় তথ্য যেন পেয়ে যেতে পারে। এমন কি চালকের চেহাড়া স্কেন করেও পুলিশ তার সমস্ত ডিটেল জানতে পারে। ফেস রিকগনিশন সফটওয়্যারের অভাব নাই। তা অল্প খরচেই করা যায়। চালকের ফিংগার প্রিন্ট স্কেন করে সমস্ত তথ্য জানা যাবে। প্রতিটি চালকের সমস্ত তথ্য কতবার অ্যাবসিডেন্ট কেরেছে। কতবার জরিমানা পেয়েছে। ইত্যাদি যাবতীয় তথ্য ডাটা বেইজে থাকবে। শিক্ষার্থীরা এই ধরনের উন্নত চিন্তা না করে ফানি কাগজ চেকিং করে আন্দোলন করছে। আমার ক্রেডিট নিচ্ছে পুলিশের গাড়ীতে কাগজ নাই। আর্মির গাড়ীতে কাগজ নাই। আইন শৃংখলা বাহিনীর ইউনিফরমই তার বড় পরিচয়। অপরদিকে হেলপারর ও কমবয়সী লাইসেন্স ছাড়া লোক গাড়ী চালিয়ে অঘটন ঘটায়। আইন শৃংখলা বাহিনীর গাড়ি চালনায় সাধারনত ব্যতয় কম হয়। তাই তাদের অ্যাবসিডেন্ট কুলনামূলকভাবে কম।
ফেইসবেুকের মত সমস্ত লাইসেন্সধারী চালকেদের জন্য বিডি ড্রাইভার বুক থাকতে পারে। সেখানে সমস্ত চালকদের তথ্য থাকবে। যে কেউ যে কোন চালকে বের করতে পারে এবং তার অপরাধের ফিরিস্তি সহজে পুলিশের কাজে সাবমিট করতে পারে। এভাবে হতে পারে চালকদের উপর নজরধারীর কাজ। একইভাবে কারো নজরে কোন ফিটনেছ বিহীন গাড়ী নজরে এলে সাথে সাথে নিদ্ষ্টি সাইটে গিয়ে রিপোর্ট করতে পারে। চিন্তা করে দেখুন এভাবে নকল চালক। গাড়ীর নকল কাগজ শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে। এভেব সম্ভব আমাদের দেশে পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ডিজিটালাইজ অনিয়ম তূর করার জন্য গতিশীল করা।