Pages

Saturday, March 30, 2019

বর্তমান ডিজিটাল ছাত্র দের আন্দোলনে বোকামী


ক‌য়েক মাস মাস পর পর দুই একজন ক‌রে ছাত্র রোড অ্যাক্স‌ি‌ডে‌ন্টে মারা যায়। সাপ্তাহ ব্যাপী ছাত্ররা আ‌ন্দোলন ক‌রে তারপর আবার আ‌ন্দোলন স্তি‌মিত হ‌য়ে যায়। আ‌ন্দোল‌নের সময় সময় ছাত্ররা চালকদের কাগজপত্র চে‌ক করে। গাড়ীর কাগজপত্র চেক ক‌রে। আধু‌নিক ছে‌লে মে‌য়েরা এটা বু‌ঝে না কাগজ চেক করা একটা হয়রানী। কাগজ চেক ক‌রে সত্যতা যাচাই করা যায় না। কোন চালক য‌দি তার গাড়ীর ব্লুক বুক বহন কর‌তে ভু‌লে যায় বা তার লাই‌সেন্স সা‌থে রাখ‌তে ভু‌লে যায় তার অর্থ এই  নয় যে যে লাই‌সেন্সধারী নয়। সে চালক নয়। বরং নকল ব্লু বুক ও নকল লাই‌সেন্স দে‌খি‌য়ে পার পে‌য়ে যাচ্ছ‌ে অনে‌কে। গাড়ীর চালকদের পু‌লি‌শি হয়রানী থে‌কে রক্ষা করার জন্য আমা‌দের প্র‌তি‌বেশী দেশ‌ে ন‌রেন্দ্র মোদী নিয়ম ক‌রে‌ছেন গাড়ীর চালকরা মোবাই‌লে লাই‌সে‌ন্সের ডি‌জিটাল ক‌পি দেখা‌লে বা অনলাই‌নে ডি‌জিটাল প্রমান দেখা‌তে পার‌লে পু‌লিশ যে কাউ‌কে খেয়াল খুশী মত ফাইন কর‌তে পার‌বে না। 
আমা‌দের ছাত্ররা সেই সমস্ত কাগজ চেক কর‌ছে যা কিনা সহ‌জে নকল করা সম্ভব। আমার জানা ম‌তে বিআর‌টিএ এর ও‌য়েব সাই‌টে গি‌য়ে যে কোন গাড়ীর নম্বর দি‌য়ে সার্চ কর‌লে গ‌াড়ীর সমস্ত তথ্য পাওয়া সম্ভব। একবার আ‌মি আমার একজন লোক‌কে দি‌য়ে আমার গাড়ী‌কে ঢাকায় পা‌ঠি‌য়ে‌ছিলাম ‌রি‌পিয়া‌রের জন্য। আ‌মি কেবলমাত্র গাড়ীর ফিট‌নেস ক‌রি‌য়ে‌ছি। বাসার ড্রয়া‌রে নতুন ফিট‌নে‌সের কাগজটা গাড়ী‌তে দেয়া হয়‌নি। আমার লোক ঢাকা‌তে গি‌য়ে যথারী‌তি ধরা। পুরাতন ফিট‌নেস কাগজ থাকার কার‌ণে আ‌মার লোক জানাল স্যার পু‌লিশ ৩০০০ টাকা জ‌রিমানা কর‌েছে। আ‌মি পু‌লি‌শের সা‌থে কথা বললাম। ভুলের বিষয়‌টি বললাম। বললাম আ‌মি এখনই  আমার লো‌কের মোবা‌ই‌লে নতুন ফিট‌নেস সার্ট‌িফি‌কটে ছ‌বি পাঠাচ্ছ‌ি। আমার লোক আমার প্রে‌রিত ফিট‌নে‌সের ছ‌বি দেখাল। পু‌লিশ বলল ডু‌প্লি‌কেট। আ‌মার লোক পু‌লিশ‌কে মোবাইল দিল আ‌মি বললাম আপি‌নি বিআর‌টিএ ও‌য়েব সাই‌টে গি‌য়ে গাড়ীর নম্বর দি‌য়ে সার্চ দেন। দেখুন ফিট‌নেছ আপ‌ডে‌টেড কিনা। পু‌লিশ বলল, এত কিছু বু‌ঝি না। কাগজ নাই জ‌রিমানা দেন। আ‌মি পুনরায় আমার মোবাই‌লে বিআর‌টিএর আপ‌ডেটেড তথ্য বের ক‌রে মোবাই‌লের স্ক্রীন শর্ট পাঠালাম। পু‌লিশ বেচারার দয়া হল। জ‌রিমানা ৩০০০ টাকা হ‌তে ক‌মি‌য়ে ১০০০ টাকা করা হল। আমার প্র‌তি‌বেশী দে‌শের প্রধানমন্ত্রী পু‌লিশের স্বেচ্চাচারীতা বন্ধ করার জন্য যে কোন ফর্ম‌ে লাই‌সেন্স বা গাড়ীর বাগ‌জের প্রমান দেখি‌য়ে জ‌রিমানা মাপ পাওয়ার ব্যবস্থা ক‌রে‌ছেন। আমা‌দের ডি‌জিটাল বাংলা‌দে‌শে ডি‌জিটাল ছে‌লে মে‌য়েরা কাগজ চেক কর‌ছে। তা‌দের এই  পশ্চাৎপদ ভাবনায় আমি হতাশ। তারা বল‌তে পারত সকল গাড়ী‌তে কিউআরএফ কোড বাধ্যতামূলক। যে কেউ এই কিউআরএফ কোড তার মোবাই‌লে সার্চ ক‌রে গাড়ীর যাবতীয় তথ্য পে‌য়ে যা‌বে। তেম‌নি গাড়ীর একপা‌শে চালক তার লাই‌সেন্স নম্বর ও কিউআরএফ কোড ঝু‌লি‌য়ে গাড়ী চালা‌বে। যেন চাল‌কের কিউআরএফ কোড স্কেন ক‌রে যে কেউ ইন্টার‌নেট হ‌তে তার যাবতীয় তথ্য যেন পে‌য়ে যে‌তে পা‌রে। এমন‌ কি চাল‌কের চেহাড়া স্কেন ক‌রেও পু‌লিশ তার সমস্ত ডি‌টেল জান‌তে পা‌রে। ফেস র‌িকগ‌নিশন সফটওয়্যা‌রের অভাব নাই। তা অল্প খর‌চেই করা যায়। চাল‌কের ফিংগার প্রিন্ট স্ক‌েন ক‌রে সমস্ত তথ্য জানা যাবে। প্র‌তি‌টি চাল‌কের সমস্ত তথ্য কতবার অ্যাব‌সি‌ডেন্ট ক‌ে‌রে‌ছে। কতবার জ‌রিমানা পে‌য়ে‌ছে। ইত্যা‌দি যাবতীয় তথ্য ডাটা বেই‌জে থাক‌বে। শিক্ষার্থীরা এই ধর‌নের উন্নত চিন্তা না ক‌রে ফা‌নি কাগজ চে‌কিং ক‌রে আ‌ন্দোলন কর‌ছে। আমার ক্রে‌ডিট নি‌চ্ছে পু‌লি‌শের গাড়ী‌তে কাগজ নাই। আর্ম‌ির গাড়ী‌তে কাগজ নাই। আইন শৃংখলা বা‌হিনীর ইউ‌নিফরমই তার বড় প‌রিচয়। অপর‌দি‌কে হেলপারর ও কমবয়সী লাই‌সেন্স ছাড়া লোক গাড়ী চা‌লি‌য়ে অঘটন ঘটায়। আইন শৃংখলা বা‌হিনীর গা‌ড়ি চালনায় সাধারনত ব্যতয় কম হয়। তাই তা‌দের অ্যাব‌সি‌ডেন্ট কুলনামূলকভা‌বে কম।

‌ফেইস‌বেু‌কের মত সমস্ত লাই‌সেন্সধারী চাল‌কে‌দের জন্য বি‌ডি ড্রাইভার বুক থাক‌তে পা‌রে। সেখা‌নে সমস্ত চালক‌দের তথ্য থাক‌বে। যে কেউ যে কোন চাল‌কে বের কর‌তে পা‌রে এবং তার অপরা‌ধের ফি‌রি‌স্তি সহ‌জে পু‌লি‌শের কা‌জে সাব‌মিট কর‌তে পা‌রে। এভা‌বে হ‌তে পা‌রে চালক‌দের উপর নজরধারীর কাজ। একইভা‌বে কা‌রো নজ‌রে কোন ফিট‌নেছ বিহীন গাড়ী নজ‌রে এ‌লে সা‌থে সা‌থে নি‌দ্ষ্টি সাই‌টে গি‌য়ে রি‌পোর্ট কর‌তে পা‌রে। চিন্তা ক‌রে দেখুন এভা‌বে নকল চালক। গাড়ীর নকল কাগজ শনাক্ত ক‌রে ব্যবস্থ‌া নেওয়া সহজ হ‌বে। এ‌ভেব সম্ভব আমা‌দের দে‌শে প‌রিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ডি‌জিটালাইজ অ‌নিয়ম তূর করার জন্য গ‌তিশীল করা।

Wednesday, March 20, 2019

গ্রামের পরিবহনে সহজ কর্মসংস্থান


সে‌দিন গ্রা‌মের বাড়ী‌তে গেলাম। ঢাকা থে‌কে বা‌সে এ‌সে কু‌মিল্লার শাশনগাছা নামক স্থা‌নে বাস থে‌কে নামলাম। সা‌থেই সিএন‌জি স্ট্যান্ড । আমা‌কে সিএন‌জিওয়ালা জিঞ্জাসা করল, কোথায় যা‌বেন। বললাম, ব্রাম্মনপাড়া।সিএন‌জি রিজার্ভ নি‌বেনমানা করলাম। আমা‌দের দুইজ‌নের জন্য পিছ‌নের তিন‌সিট রিজার্ভ চ‌লেন। তারপর সিএন‌জি নি‌য়ে গ্রা‌মের রাস্তায় প্রথ‌মে বু‌ড়িচং উপ‌জেলা তারপর ব্রাম্মনপাড়া উপ‌জেলা। নামলাম ব্রাম্মনপাড়ায়। আবার সিএন‌জি নি‌তে হ‌বে। যে‌তে হ‌বে বিশ মি‌নিটচানলা টানা ব্রিজচানলা টানা ব্রি‌জে নে‌মে নি‌তে হ‌বে রিক্সা। আবার ২০ মি‌নিট ধ‌রে ভাংগা রাস্তা। তারপর মন্দভাগ বাজা‌রের পা‌শে দেউস সা‌হেব বাড়ী। আ‌গে কু‌মিল্লা থে‌কে বা‌সে ব্রাম্মনপাড়া আসতাম। বেবী‌টেক্স‌ি  ছিল। ১৯৯৫ সা‌লে বাস ভাড়া মাথা‌পিছু পাঁচ টাকা বে‌বি‌টেক্স‌ি ভাড়া ২৫ টাকা। এখন বাস ভাড়া ৩০ টাকা। সিএন‌জি মাথা‌পিছু ভাড়া ৫০ টাকা। সিএন‌জি যায় মি‌নি‌টে মি‌নি‌টে। বাস ভর্ত‌ি হতে লা‌গে ৩০ মি‌নিট। আর জায়গায় জায়গায় থামা তো আ‌ছেই। এখন বাসও কম। বা‌সের যাত্রীও কম। সিএন‌জি র‌য়ে‌ছে শত শত। সমস্যা একটাই রাস্তাগু‌লো বড় করা প্র‌য়োজন। প‌রি‌বেশবাদীরা বল‌বেন, বাস বেশী থাকা প‌রি‌বে‌শের জন্য  ভাল। ত‌বে আমার কা‌ছে ম‌নে হ‌চ্ছে অ‌ধিক সিএন‌জি। অ‌ধিক কর্মসংস্থান। অ‌ধিক রিক্সা। অ‌ধিক কর্মসংস্থান। কর্মসংস্থা‌নের কথা চিন্তা ক‌রে আমা‌দের দে‌শে সিএন‌জি বা রিক্সা কমা‌নো নয় বরং রাস্তা ঠিক কর‌তে হ‌বে। বড় কর‌তে হ‌বে।
অ‌নেক দে‌শে প্র‌তি প‌রিবা‌রের প্র‌তি‌টি সদস্য‌ের জন্য গাড়ী র‌য়ে‌ছে। আমাদের দে‌শে প্র‌তি‌টি সদস্য‌ের জন্য গাড়ী নয় প্রয়োজন অ‌ধিক সংখ্যক ছোট সিএন‌জি জাতীয় গাড়ী। চার চাকা হ‌লে আ‌রো ভাল। ব্যাটারীর গাড়ীর ভাড়াটা খারাপ নয়। আজ ব্যাটারীর রিক্সার ব্যাটারী বিদ্যুৎ  দি‌য়ে চার্জ করা হ‌লেও আগামীকাল সোলা‌রের চার্জ করার একটা প্রক্র‌িয়ায় যাওয়ার  সু‌যোগ ত‌ৈরী থাক‌বে। কোন দে‌শের প্র‌তি‌টি মানুষ গাড়ীর মা‌লিক হওয়া বা চালনা আ‌মি বলব, প‌রি‌বে‌শের জন্য ভাল না। কার শেয়া‌রিং, সিএন‌জি ও মটর সাইকেল রাইড শেয়া‌রিং এগু‌লো প‌রি‌বে‌শের জন্য ভাল অপশন। ট্রেন ও বাস প‌রি‌বেশ বান্ধব। এগু‌লো খুব ভাল অপশন কিন্তু জেলা থে‌কে উপ‌জেলা কা‌নেকশ‌নের জন্য ভাল নয় কারন যাত্রী পূর্ণ কর‌তে বেশী সময় লা‌গে। রিক্সার দুই যাত্রী আর ‌সিএন‌জির পাঁচ যাত্রী পে‌তে তেমন কোন সময়ই লা‌গে না। তাই রিক্সা ও সিএন‌জি শেয়া‌রিং অ‌নেক অ‌নেক গ‌তিশীল। কং‌গোর রাস্তাগু‌লো ভাল নয়। সেখা‌নে দেখতাম ব্যাপক হা‌রে মটর সাই‌কেল রাইড নাম হলবুডা বুডা‌সেখা‌নে গ্রা‌মে গ‌ঞ্জে ও শহ‌রে বিপুল মানু‌ষের কর্মসংস্থান ক‌রে‌ছে এই  “বুডা বুডাএকবার তো দেখলাম মটর সাই‌কে‌লে ডেড ব‌ডি ক্যা‌রি কর‌তে। বাংলা‌দে‌শের গ্রা‌মের রাস্তাগু‌লি এখন ধী‌রে ধী‌রে প্র‌য়োজন মা‌ফিক আ‌রো প্রশস্ত হ‌চ্ছে। রাস্তাগু‌লো আ‌রো দ্রুত প্রশস্ত করা প্র‌য়োজন। খরচ বেশী গে‌লেও গ্রামের রাস্তা ঢালাই ক‌রে করা প্র‌য়োজন। ঢালাই রাস্তা ত‌ৈরীর সামগ্রী গ্রা‌মে খুবই সহজলভ্য। ইট ভাংগা, বা‌লি, রড ও সি‌মেন্ট হ‌লেই ইটের রাস্তা হ‌য়ে যায়। এর বিপরী‌তে বিটু‌মিন রাস্তার জন্য বিটু‌মিন যোগাড় করা; সেগু‌লো জ্বাল দি‌য়ে গলা‌নো, রোলার লাগা‌নো এই  ধর‌নের কাজ থে‌কে সি‌মে‌ন্টের রাস্তা খরচ বেশী হ‌লেও যখন তখন যেন তেন ভা‌বে করা যায়। তাই আমা‌দের দে‌শে গ্রা‌মে গ্রা‌মে  বিটু‌মিন নয়‌ সিমে‌ন্টের রাস্তা করাটা বেশ জরুরী।
বাংলাদে‌শের বাজা‌রে এখন বেশ ক‌য়েক‌টি কোম্পানী এখন ব্যাটারীর মটর সাইকেল চালু ক‌রে‌ছে। রাইড শেয়া‌রিংএর জন্য এগু‌লো অ‌নেক অ‌নেক ভাল। ঢাকার রাস্তায় রাইড শেয়া‌রিং চালু হ‌লেও  গ্রা‌মের রাস্তায় চালু করাটা জরুরী। গ্রা‌মে ব্যাটারীর রিক্সা বেশ গ‌তি‌তে চ‌লে। শহ‌রের আমরা যারা আ‌ছি। আমা‌দের কা‌ছে মা‌ঝে মা‌ঝে সে সব ব্যাটারীর রিক্সার গ‌তিটা ভয়াবহ ম‌নে হ‌বে। কিন্তু গ্রা‌মের মানুষ অভ্যস্ত হ‌য়ে গেছে। গ্রা‌মে এখন প্যাডেল রিক্সায় কেউ  উ‌ঠে না। গ্রা‌মেও শহ‌রের মত গ‌তি এ‌সে‌ছে। সবাই ছুট‌ছে। পি‌ছে তাকা‌নোর সময় বা সু‌যোগ নেই। গ‌তি গ‌তি। সেই  গ‌তি‌তে সিংগেল যাত্রীর জন্য মটর সাইকেল রাইড। দুই যাত্রীর জন্য ব্যাটারী রিক্সা রাইড। পাঁচ যাত্রীর জন্য সিএন‌জি বা এল‌পি‌জি টেক্স‌ি রাইড ব্যাপক হা‌রে বাড়া‌নো গে‌লে কর্মসংস্থান আ‌রো বাড়‌বে। এখন শুধু প্র‌য়োজন সরকারী ব্যবস্থাপনায় রাস্তাগু‌লো সি‌মেন্ট‌ের ঢালাই‌য়ে ত‌ৈরী ক‌রে নিয়‌মিত মেরামত কর‌ে যাওয়া।

(যথাযথ এডিট হয়নি)


Thursday, March 14, 2019

কৃ‌ষি হোক খেলাধূলার মত


আজকাল দেখলাম আমা‌দের ছোট ছোট ছেলে মে‌য়েরা রান্না জানে। যেভাবে রান্না চলছে হাত পোড়ার ভয় নেই। রান্না ঘর নোংরা হওয়ার ভয় নেই। কি করছে তারা ? তারা ডিপ ফ্রিজে রাখা চিকেন না‌গেট, স্মাইলি, স‌সেজ, মিট বল ও রেডি প‌রোটা এয়ার ফ্রাইয়ার বা কনভেনশনাল ওভেনে দি‌য়ে দিচ্ছে খাবার রেডি। মাই‌ক্রোও‌য়ে‌বে গরম ঝটপট চা কফি আর কাপ নুডলস প্রস্তুত। আমি এখনকার জেনারেশনের ঝটপট  কাজে সত্যিই মুগ্ধ। অনেকে বলবেন প্রিজার‌ভে‌টিব দেয়া খাবার বাচ্চা‌দের ক্ষতি করবে। আমি বলব সমস্যা নেই  আপনিও পারেন বাসায় চপ, কাবাব, প‌রোটা, রুটি হাফ কুক ক‌রে রেখে দিন ডিপ ফ্রিজে বাকী বাচ্চারা তা‌দের চাহিদা অনুযায়ী ঝটপট এয়ার ফ্রাইয়ার বা ওভেনে কুক ক‌রে নিবে। কু‌কিংএর এই  কালচারটা আসলেও আমার কাছে মনে হয় আমরা কৃষিকাজকে বাচ্চা‌দের উপ‌যোগী কর‌তে পারিনি। এখন সময় এসেছে কৃষিকাজ বাচ্চা‌দের উপ‌যোগী ক‌রে তোলা। অনেকে হাসবেন কৃষিকাজ কিভাবে সহজ করা যায়। তা করা যায়। একটু চিন্তা করুন। কৃষি বল‌তে চো‌খের সামনে ভেসে উঠে ময়লা মাখা হাত। ঘামে ঝড়া‌নো শরীর। ময়লা কাপড়। অথচ কৃষিকে রেডি ফু‌ডের মতই বাচ্চা‌দের কাছে রেডি করা যায়। আমার বাসার কিছু পাতাবাহার গাছ আছে। মে‌য়ের ইচ্ছে হল একটা লেবু গাছ গ্রো করবে। আমি নার্সারিতে বললাম একটা লেবু গাছ দুই‌ ফিট হাইট হবে। ফুল থাকবে। মাটিতে ভার্মী কম্পোস্ট থাকবে। প্লাস্টিক টব থাকবে ইত্যাদি ইত্যাদি। নার্সারিটি আমার চাহিদা নিল এক সপ্তাহ পর সাপ্লাই দিল। সুন্দর লেবু গাছ ফুল ধ‌রে আছে। এখন আমার মে‌য়ের কাজ হল মা‌টি ড্রাই হ‌তে দেখলে পানি দেয়া আর গাছ বাড়ছে কিনা লক্ষ রাখা। ছোট ছোট বাচ্চা‌দের আমরা এভাবে ছোট ছোট কৃষিতে আন‌তে পারি। আমা‌দের দেশের শহরের সকল মানুষরা টবে বা কন্টেইনারে উন্নত দেশের মত ট‌মে‌টো, লেটুস,পুদিনা পাতা ও কাচা মরিচ জন্মা‌নো শুরু করবে তখন বিশাল এক বিপ্লব শুরু হবে।
মনে করুন আমাদের একটা মার্কেট থাকল যেখানে গ্রো ব্যাগ পাওয়া যায়। গ্রো ব্যাগের মধ্যে আছে কম্পোস্টে, ভার্ম‌ি কম্পোস্ট ও কো‌কো পিট দেয়া গাছ জন্মা‌নোর মিডিয়া। আপনার কাজ হবে গ্রো ব্যাগগু‌লি কেনা। গ্রো ব্যাগগু‌লি এনে একটা কন্টেইনারে রাখবেন। স্ট্যান্ডের উপর রাখবেন। গ্রো ব্যাগে একটু ফু‌টো করা তারপর ক‌কো‌ পি‌টে তৈরি করা ট‌মে‌টোর চারা‌টি লাগিয়ে দি‌য়ে এখন অ্যালুমিনিয়াম স্ট্যান্ড ও প্লাস্টিক স্ট্যান্ড লাগিয়ে দিলেই  হ‌য়ে গেল ট‌মে‌টো চাষ। টবের মধ্যে কয়েকটা  মরিচ গাছ বা যে কোন সবজির গাছ এনে লাগিয়ে দিলে হ‌য়ে গেল। পোকা ধরবে সমস্যা নেই। বাজার থেকে মশারী কিনে চার‌টি খুঁটি দি‌য়ে টবগু‌লির চারিদিকে টাঙিয়ে দিলে হ‌য়ে গেল নেট হাউজে চাষ। নেট হাউজে লাগালে আর কীটনাশক স্প্রে করার প্র‌য়োজন নেই। কম্পোস্ট, ভার্ম‌ি‌ কম্পোস্ট ও ক‌কো ‌পিট দি‌য়ে তৈরি ব্যাগে সমস্ত উপাদান বিশুদ্ধ ও নিয়ন্ত্রিত থাকবে। গ্রো ব্যাগ বাইরের দি‌কে থাকবে সাদা আর ভিত‌রে থাকবে কাল। ভিত‌রে আল্টা ভায়া‌লেট রে ভিত‌রে যে‌তে দিবে না। তা‌তে গ্রো ব্যাগের ভিত‌রে শিকড় বাড়বে। অনুবীজ বাড়বে। ভিত‌রে জলীয় উপাদান ধী‌রে ধী‌রে শুকা‌বে এবং সেচ কম লাগবে। আজকাল গাছের গোড়ায় ফোটায় ফোটায় পানি দি‌য়ে ড্রিপ ইরিগেশন করা যায়। অনেক সময় টাইমারযুক্ত ড্রিপ ইরিগেশন সেট করা যায় যেন হ‌লি ডে ছুটিতে গেলেও সমস্যা নাই। আবার গাছের মধ্যে বা গ্রো ব্যাগে এমনভাবে প্রোভ সেট করা যায় যে জলীয় উপাদান কমে গেলে অটো‌মে‌টিক ফোটায় ফোটায় পানি পরা বা ড্রিপ ইরিগেশন চালু হবে। বাচ্চারা গ্লাভস পড়ে ও সুন্দর ও ছোটখাট টুলস দি‌য়েই  কর‌তে পা‌রে সেই গ্রো ব্যাগের চাষাবাদ। ভালভাবে চাষ করলে একটা ট‌মে‌টো গাছ থেকে হয়ত ২/৩ কেজি ট‌মেটো উৎপাদন করা সম্ভব। বাজা‌রে ৩০০ /২০০ টাকার ট‌মে‌টো উৎপাদনে হয়ত ৬০০/৪০০ টাকা খরচ পড়বে তবুও কোন সমস্যা নেই  কারণ এই  ট‌মে‌টো বিষ ছাড়া। শরীর রক্ষার দিক দি‌য়ে এই বাড়তি দামটা কোন বিষয় নয়।
বিষের যুগে প্র‌য়োজন বাচ্চা‌দের কৃষি শেখা‌নো যেন নিজের খাবার নিজেই তৈরি কর‌তে  পা‌রে। এই  যুগে এত সহজে কৃষি করা যায় তা আগে চিন্তাই  করা যেত রা। এখন প্র‌য়োজন স্কুলের বাচ্চা‌দের আগ্রহী করা উ কৃষিটাকে সহজ করা। এটা করতে পারলে কৃষি হবে বিষমুক্ত।


Wednesday, March 6, 2019

নিজের খাদ্য নিজের কৃষি


আপনার একটা বাড়ী আছে। ছাদ আছে। গাড়ী আছে। কিন্তু শাক সবজির বাগান নাই। আমি বলব, আপনি আপনার গাড়ীটা বিক্রি ক‌রে তার অর্ধেক দামে গাড়ী কিনুন। গাড়ীর বাকী অর্ধেক টাকা কোথাও বি‌নিয়‌োগ করুন। সেই  আয় দি‌য়ে একটা মালী রাখুন। শাকসবজির বাগান করুন। আপনার চকচকে গাড়ী আপনার ইজ্জত বাড়ালেও আয়ু বাড়া‌তে পারবে না। হায়াত মউত আল্লাহর হা‌তে। তবু আমরা ভেজালমুক্ত খাওয়া ও বিষমুক্ত শাক সবজির জন্য অন্তত চেষ্টা চালা‌তে পারি। আমরা কাউ‌কে বিশ্বাস কর‌তে পারি না। এই  পৃথিবীর সবাই  যার যার লাভ লোকশান নি‌য়ে ব্যস্ত। দরিদ্র কৃষক আপনার জন্য অধিক খরচ ক‌রে বিষমুক্ত শাক সবজি উৎপাদন করবে না। কারণ তার নিজেরই চলছে না। আপনার জন্য অধিক খরচ ক‌রে কৃষি সে করবে না। আপনি বেশী দাম দি‌য়ে ভেজালমুক্ত খেতে চাইলেও সবাই যে খাবে তার কোন গ্যারান্ট‌ি নাই। আপনি বেশী মূল্য দি‌য়ে আপনার খাবার চাইলেও আপনি বিষমুক্ত পাবেন না। আপনা‌কে নিজেই উৎপাদন কর‌তে হবে। আজকাল চাষ কর‌তে মা‌টি লাগে না। ক‌কো‌ পিট, কম্পোস্ট ও ভার্ম‌ি কম্পোস্ট দি‌য়ে মা‌টি ছাড়া বা অল্প মা‌টি দি‌য়েও ছাদে বারান্দা ও কার্নিশে চাষাবাদ করা যায়। টবে, কাটা ড্রামে, রেইজ বেড তৈরি করে, ছা‌দের উপর পাকা রেইজ ব‌েড ক‌রেও চাষাবাদ করা যায়। ইচ্ছেটা প্রয়োজন। যারা ডায়‌বে‌টিস, কিডনি, ক্যান্সার ইত্যাদিতে আক্রান্ত তারা বাইরের বিষাক্ত শাকসবজি বর্জন কর‌তে পারেন। বৃদ্ধ ও বাচ্চারা নিজেদের উৎপাদিত বিষমুক্ত শাকসবজি খাও‌য়ানোটা সবচেয়ে ভাল। আধুনিককালে হাই‌পোফো‌নিক কালচারের মাধ্যমে মাছ চাষ ক‌রে মাছের পানি গাছের খাদ্য হিসাবে ব্যবহার ক‌রেও চাষাবাদ করা যায়। আপনার আর্থিক অবস্থা ভাল। আপনি যদি বেশীদিন বেঁচে অর্থ‌কে উপ‌ভোগ কর‌তে চান তবে অন্য সৌ‌খিন খরচ কমিয়ে মালী রেখে ছাদ কৃষি বা আঙ্গিনা কৃষি শুরু ক‌রে দিন। নিশ্চিতভাবে বলা যায় অন্যদের চে‌য়ে বেশী লাভবান হবেন।
যারা আর্থিক ভাবে সবল আছে; ছাদ আছে। তারা ছাদ কৃষির জন্য তৃতীয় পক্ষ‌কে নিয়োগ দি‌তে পারেন। তারা ছাদ কৃষির শুরুটা আপনা‌কে ক‌রে দিবে। দিনে দিনে ঢাকা‌তে এ ধরনের উদ্যোক্তা গড়ে উঠেছে। এখন ফেইসবুক আর ইন্টারনেটে সার্চ দিলে পেয়ে যাবেন। এত সহজ কৃষি। তাহলে আর দেরী কেন। আমরা আমা‌দের মুখের খাবারগু‌লি ভেজাল আর বিষের উপর দি‌য়ে পার কর‌তে পারি না। তার জন্য খরচ বেশী হবে। বেশী খরচে বিষমুক্ত খাবার খাওয়াটা বেশী জরুরী। প্রয়োজ‌নে আমরা দামী কাপড় চোপড় কম কিনব। ঘোরাঘু‌রি কমিয়ে খরচ বাঁচাব। সৌ‌খিনতায় খরচ বাঁচাব। তাও আমা‌দের নিজের খাদ্য নিজে উৎপাদন করাটা জরুরী। প্রয়োজ‌নে  আমা‌দের আশে পাশে অনেকই কিডনি ডায়ালাই‌সিস ও নানা জটিল রোগী লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ ক‌রে অথচ সেই  টাকা আমরা আগে থেকেই বিষমুক্ত খাবারের জন্য ব্যয় কর‌তে পারি। ছাদ বাগান লাভজনক নয় সেটা থেকে স্বাস্থ্য রক্ষা বেশী জরুরী তাই ছাদে শাকসবজি, ফলমূল উৎপাদনে আমরা এগিয়ে যে‌তে পারি।
বাংলাদেশে যে পরিমাণ দালান কোটার ছাদ বিদ্যমান আমার ধারনা সে সব ছাদে চাষ করলে দেশের প্রায়  ৫০% খাবার উৎপাদন হবে। বিষমুক্ত খাবার হবে। আজ কোন ফসলে বা কৃষিপণ্যের খাদ্য শস্যে কোন স্বাদ নেই। তার একমাত্র কারণ বিষযুক্ত খাবার। নিজের জমির বাঁকা, তেরা, ছোট, বড় ও পোকায় ধরা শাকসবজি বাজার‌ে  কেনা টসটসে সবজি থেকে অনেক ভাল কারণ নিজেরটায় বিষ নাই। আমার সবজী আমি ফলাব আর বিষমুক্ত জীবন গরব এটা হ‌তে পা‌রে আ‌দের শ্ল‌োগান। বাকীটা হবে আমা‌দের ইচ্ছে। শহরের সবাই যদি ছাদ বাগান ক‌রে নিশ্চিতভাবে বলা যায় প্রায় ২০% বিষমুক্ত শাকসবজি শহরেই  উৎপাদন করা সম্ভব। আমরা কিছু না পারি সালাদ আইটেম যা আমরা কাচা খাই যেমন লেটুস পাতা, পুদিনা পাতা, ট‌মে‌টো, শসা ও মরিচ ইত্যাদিও যদি আমরা টবে ফলাই তা‌তেও স্বাস্থ্য খা‌তে বিশাল উপকার হবে। আমাদের দেশের শহরের প্রতিটি ছাদ যদি সবুজে আবৃত থা‌কে তবে এটাও নিশ্চিত কয়েক ডিগ্রি তাপ কমে যাবে। বাতাসের অক্সিজেন বেড়ে যাবে। এত এত উপকার থাক‌তে আর আমা‌দের সামর্থ্য থাক‌তে ছাদ বাগান না করাটা হল একটা অপরাধ। নিজের সামর্থ্য থাকলে নিজ, স্ত্রী ও সন্তান‌দের বিষাক্ত খাবার থেকে রক্ষা কর‌তে নিজের ফসল নিজে উৎপাদন না ক‌রে আর কোন উপায় নেই। আসুন সামান্য সামর্থ্য থাকলেও আমরা নিজের শাকসবজি নিজে উৎপাদন করি।