আমি কিছুদিন থেকে (অক্টোবর ২০১৪ হতে ফেব্রুয়ারি ২০১৫ পর্যন্ত) কোন কিছু লিখতে পারছিলাম না।সমস্যাটি কি তাও ধরতে পারছিলাম না। অথচ প্রায় দুই বছর প্রতি সপ্তাহে বা মাসে
কিছু না কিছু লিখে যাচ্ছিলাম। এরূপ না লিখতে পারার কারণ অলসতা না অন্য
কিছু তাও বুঝতে পারছিলাম না। অবশ্য মাঝে মাঝে লেখকদের এরকম হয়। কিন্তু আমি তো সেরকম লেখক না যে আমার লেখায় সাময়িক বন্ধ্যত্ব আসবে। সময় নেই তা বলার অবকাশ নেই। কারন অফিসের কাজ ৮০% সন্তুষ্টি নিয়ে দ্রুত শেষ করি। নিয়মিত শেষ করি। “পেন্ডিং” শব্দটা আমি চেষ্টা করি সব সময় উপেক্ষা করতে।“Do it now” ফর্মুলায় কাজ শেষ
করতে সচেষ্ট থাকি। এমন অনেক কাজ থাকে যা পেন্ডিং
করার প্রয়োজন হয়। সে সকল পেন্ডিং কাজ পুনরায়
জাগ্রত করতে আমি আমার সহকারীদের সহায়তা নেই। তাদের এমনভাবে ফাইলিং করতে বলি যাতে পুনরায় এ বিষয়ে
আমি ব্যবস্থা নিতে পরি। স্মাট ফোনের এ্যানরয়েড প্রোগ্রামের এসএমএস সিডিওলার রিমাইন্ডারের চমৎকার কাজ করে। আপনি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট এসএমএস কাউকে দিতে চাইলে, আপনি তা আগেই কম্পোজ করে নিতে পারেন। তারপর তারিখ ও সময় সেট করে নিলেই কাজ হয়ে গেল।এ ধরনের এসএমএস পাঠানোর আরো অনেক অ্যাপস গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যাবে। শুধু কষ্ট করে খুঁজে নিলেই হল।
আমি একজন মটিভেটরের কিছু লেকচার শুনেছিলাম আর তা
হল। প্রতিদিন আমরা যদি সকাল বেলা ৫০০ শব্দ নিয়মিত লিখি তবে লেখক হওয়াটা তেমন কঠিন কিছু নয়। বিষয়টা হল নিয়মিত ও করতে ইচ্ছে করা। অসফল ব্যক্তিরা মনে হয় নিয়মিত শব্দটা মানতে চায় না। আমি আমার প্রথম জীবনে এ ধরনের
ভুল করেছিলাম। তার জন্য আমাকে কিছু খেসারত দিতে হয়েছিল। এখনও খেয়াল খুশি মত করি বলে সমস্যা হয়। যখন যেটা খুশী করতে চাওয়াটা ভাল কিন্তু নির্দিষ্ট কাজ নিয়মিত না করলে
উন্নতি বিঘ্নিত হয়।
আলোচনাটা শুরু করেছিলাম আমার লেখার বিষয়ে। আমি লিখতে পারছি না। আমার লেখাগুলো সাধারণত হয়, অনেকটা গভেষনা ভিত্তিক বা নানা
রূপ সমস্যার প্রাবন্ধিক রুপায়ন। তাই প্রাসঙ্গিক বিষয় লিখতে পারি নচেৎ টাইপ চলে না। অনেক সময় রাজনৈতিক উত্তালতায় লিখতে ইচ্ছে করে কিন্তু লিখি না। কারণ চাকুরীতে থাকা অবস্থায় লিখতে চাই না। আর লিখেই লাভ কি? কোন কাজে
আসবে না। হয়তবা কিছু ব্যক্তিবর্গ লিখেন এবং বিরূপ অবস্থার মধ্যে পড়েন। আমার লেখার কোন টার্গেট গ্রুপ এখন পর্যন্ত নির্ধারণ করিনি। একটা লক্ষ্য আছে আর তা
হল আমার ব্লগে আমার লেখাগুলো ক্রমাগতভাবে জমা করছি। যখনই সুযোগ পাই বন্ধু বান্ধবদের সাথে আমার ব্লগ শেয়ার করি। এছাড়া ভবিষ্যতে কোন বই প্রকাশ করার ইচ্ছে করলে আমার ব্লগগুলো কাজে লাগাতে পারব। আমার গভেষনাধর্মী ও বৈজ্ঞানিক লেখাগুলো হয়ত বা কালের পরিবর্তনে এডিট করার প্রয়োজন পড়বে।
যে কোন বিষয়ে লেখাটা তখনই সহজ যখন আমরা তা বাস্তবে প্রয়োগ করি। একজন কবি চারপাশের পরিবেশ থেকে তার কবিতার খোরাক খুঁজে পায়। একজন গল্পকার তার প্রতিদিনের খণ্ডিত দৃশ্যগুলি ভাষার সুন্দর ও সুললিত শব্দবিন্যাসে জীবন্ত করে তুলে। একজন উপন্যাসিক চার পাশের মানুষের জীবনটাকে তুলে ধরে শব্দের তুলির আচরে। আমি তাহলে কি তুলে ধরব। আমি কবিতা লিখি না। গল্প আসে না। উপন্যাস নিয়ে চিন্তা করিনি। যদি কবিতা, গল্প ও উপন্যাস কোনটি নিয়ে মাততে চাই তবে নিয়মিত পড়তে হবে।অথচ এ বিভাগে
আমার পদচারণ নাই। আমার পদচারণ আছে তত্ত্বে ও তথ্যে, বিজ্ঞানে ও প্রযুক্তিতে, পারিপার্শ্বিক ও বৈষয়িক বিষয়ে। আমার বিচরণটা বিশাল কিন্তু পাঠক গোষ্ঠী সীমিত। স্কুল থেকে কলেজ পর্যন্ত কখনও বিনোদনের জন্য প্রবন্ধ পড়তাম না। গল্প ও উপন্যাস পড়তাম। অথচ আজ গল্প ও উপন্যাস থেকে কোন আনন্দ পাই না। সর্বশেষ কবে গল্প ও উপন্যাস পড়েছি মনে করতে পারছি না।
তবু হয়ত লিখে যেতে থাকব। কখন কোনদিন কেউ আমার দুই একটি লেখা পড়লেও পড়তে পারে,হুমায়ুন আহমেদের একটা সাক্ষাতকারে সে বলেছিল, তার লিখতে
ভাল লাগত। তাই তিনি লিখতেন। লেখাটা কম কষ্টের নয়। আমি লেখাটা সরাসরি টাইপ করি। তারপর বার বার করে পড়তে থাকি,বারে বারে কারেকশন করতে থাকি। একবার একটা ইংরেজি লেখায় পড়ে ছিলাম ভাল লেখা হল তা যা
অনেকবার এডিট করা হয়। তবে অনেক লেখালেখি যারা করেন তাদের কম এডিটিং প্রয়োজন হয়। তথাপিও বলতে দ্বিধা নেই যত এডিটিং
তত ভাল লেখা। পরিশেষ আশা করব আমার লেখার আগ্রহ সমুন্নত রাখতে যে পরিমাণ দৃঢ়তা প্রয়োজন তা আমাকে অর্জন করতে হবে। হয়ত এতেই আমি সফল হতে পারব। সেই দিনটির অপেক্ষায় থাকলাম।