Pages

Sunday, November 2, 2014

এক কম্পিউটার থেকে ডজন ডজন কম্পিউটার চালানো

প্রযুক্তির নতুন নতুন উত্তরণ আমাদের জন্য কখনও সাশ্রয়ী আবার কখনও খরচ সাপেক্ষ। প্রতিনিয়ত প্রযুক্তি পণ্য আপগ্রেড হচ্ছে। আমি আমার প্রথম ল্যাপটপ ২০০৩ এ কিনে ২০০৫ পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারি। তারপর নষ্ট হয়। আমি আর রিপেয়ার করতে পারিনি। কারণ ততদিনে মডেল পরিবর্তন হয়েছে পার্টস পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ২০১০ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত আমার দ্বিতীয় ল্যাপটপ সাদৃশ নেটবুক ব্যবহার করছি। এখন পর্যন্ত চালাতে পারছি তবে উইন্ডোজ ৭ এর মধ্যে আছি। পরবর্তীতে উইন্ডোজ ৮ বা ১০ অথবা পরবর্তী অপারেটিং সিস্টেমে যেতে অবশ্যই আমার নেটবুক বদল করা ছাড়া কোন উপায় নাই। এর মধ্যে দুইবার ব্যাটারি পরিবর্তন করেছি। কিন্তু আমি যদি আমার রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী চিন্তা করি তবে এখনও আমার নেটবুকটি আরো পাঁচ বছর ব্যবহার করতে পারব। কারণ ইন্টারনেট ব্রাউজ করা ও ছোটখাটো টাইপিং কাজের মধ্যে আমার কার্যাবলী সীমাবদ্ধ।
সমস্যা হল আমরা যতই যত্ন করে কম্পিউটার চালাই না কেন আমাদের কম্পিউটার বা ল্যাপটপগুলো চার থেকে পাঁচ বছর পর সফটওয়্যারের রিকোয়ারমেন্টের কারণে বদল করতে হয়। আর আমাদের ছেলে ও মেয়েদের কম্পিউটারগুলো এদের গেমের রিকোয়ারমেন্টের কারণে প্রতি দুইবছর পর পর হার্ডওয়্যার বদলের প্রয়োজন পড়ছে। ব্যক্তিগত ব্যবহারের কম্পিউটারগুলো নয়ত আপনি দুই/তিন বছর পর পর পরিবর্তন করলেন এতে হয়ত তেমন চাপ পড়ছে না। কিন্তু আপনার প্রতিষ্ঠানে যদি  ১০ টি কম্পিউটার থাকে তার বর্তমান গড় মূল্য ধরুন ৩০,০০০x১০ = ৩ লক্ষ টাকা। এখন এই দশটি কম্পিউটার যদি তিন বছর পর সফটওয়্যার কম্পেটেবিলিটির জন্য বদল করতে হয় আবার তিনলক্ষ টাকা প্রয়োজন আর পুরাতন কম্পিউটার বিক্রি করে যা পাওয়া যায় তা বেশ নগণ্য টাকা। অর্থাৎ কিনতে গেলে বেশী দাম।বেচতে গেলে দাম নাই। এখন আসা যাক এন্টিভাইরাস ব্যবহারের হিসাবে। দশটি কম্পিউটার প্রতিবছর ৭০০০ টাকা এন্টিভাইরাস আপগ্রেডে খরচ করলে দশ বছরে খরচ ৭০,০০০ টাকা।
বিদ্যুৎ খরচের সাশ্রয়টা আরো ব্যাপক। দশটি কম্পিউটারের প্রতিটিতে ৩০০ ওয়াট করে বিদ্যুৎ খরচ হলে মোট খরচ ৩০০০ ওয়াট, এখন যদি দশটি কম্পিউটার মাত্র ৫০০ ওয়াট খরচ করে ২৫০০ ওয়াট বিদ্যুৎ সেইফ করা যায় তাহলে কেমন হয় ,কম্পিউটারগুলো অফিসের কাজে দশ ঘণ্টা চলে তবে একদিনে বিদ্যুৎ সাশ্রয় ২৫০০x১০=২৫০০০ ওয়াট বা ২৫ কিলো ওয়াট। ২৫ কিলো ওয়াটx৮ টাকা=২০০ টাকা আর মাসে ৬০০০ টাকাবছরে ৭২ হাজার টাকা। সরকারী প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ বিল বলে হয়ত আমরা টের পাইনা। কিন্তু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিল বেশ ভালভাবেই টের পাওয়া যায়।
দশটি কম্পিউটারে প্রতি মাসে মাসে কিছু রক্ষণাবেক্ষণ খরচ লেগেই থাকবে। এখন সে জায়গায় একটি কম্পিউটার দিয়ে যদি আমরা ১০-২০টি, কয়েক ডজন বা শতাধিক কম্পিউটার চালাতে পারি তবে মন্দ হয় না। আমাদের জন্য এর সমাধান অনেক আগেই হয়ে গেছে আমরা তেমনিভাবে বিষয়টিতে অবগত নই এটাই হল এর বিস্তারে ও প্রসারে সীমাবদ্ধতা।
আমি ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনীর আর্টডকে চাকুরীরত অবস্থায় জানতে পারি ঘাটাইল সেনানিবাসের এশিয়া নামক প্রশিক্ষণ সেন্টারে একটি কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করেছে যাতে মাত্র একটা সার্ভার থেকে একাধিক কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে আমি সেই ল্যাবটি দেখার সময় ও সুযোগ করতে পারিনি। আমার ইচ্ছে ছিল ঘাটাইল এর এশিয়ার মডেলটি ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে চালু করার জন্য তাদের উৎসাহিত করা। আমি ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ এবং ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের দুই বছর গভর্নিং বোর্ডের সেক্রেটারি থাকাকালীন দুইটি প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার ও ইন্টারনেট উন্নয়নে সহায়তা করেছিলাম। অত:পর মিশনে যাওয়ার কারণে বিষয়টি নিয়ে আর ভাবিনি। মিশন থেকে দেশে ফিরে বিজিপিতে পোস্টিং পেয়ে হঠাৎ  করেই জানলাম, লে: কর্নেল এস এম মনিরুজ্জামান, ৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এ ধরনের নেটওয়ার্কিং করেছেন। তার অফিসের কম্পিউটারগুলোর নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা আমার বেশ ভাল লাগল। আরো জানতে পারলাম তার অফিস সহকারীদের জন্য নেটওয়ার্ক করার ফলে যে সমস্ত কম্পিউটার স্পেয়ার হয়েছে সেগুলো দিয়ে তিনি তার বিজিবি স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব করে দিয়েছেন। এখন অবশ্য সমস্ত হাই স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব রাখতে হচ্ছে কারণ সরকার জেএসসি পরীক্ষায় সকলের জন্য কম্পিউটার বাধ্যতামূলক করেছে। এখন ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে এসএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত সকল ছাত্রছাত্রীদের স্কুলের পরীক্ষার সকল ফলাফল অনলাইনে বোর্ডের সার্ভারে আপলোড করতে হচ্ছে। ফলে হাই স্কুলগুলোতে কম্পিউটার ছাড়া চিন্তা করা যাচ্ছে না।

৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অফিসের নেটওয়ার্কিং থেকেই আমার ইচ্ছে ছিল এধরনের ব্যবস্থা আমাদের কুষ্টিয়া বিজিবি সেক্টর অফিসে করি। ইতিপূর্বে আমি এ ধরনের নেটওয়ার্ক কম্পিউটার ল্যাবের জন্য চিন্তা করেছি। অফিসেও এর ব্যবহার করা যায় তা চিন্তা করিনি। আমি আমার সম্পূর্ণ প্রস্তাব ভারপ্রাপ্ত কমান্ডারকে উপস্থাপন করি তিনি নাকচ করে দেন। পুনরায় আরেক জন ভারপ্রাপ্ত কমান্ডারকে উপস্থাপন করি তিনি তাচ্ছল্য করে বলেন, “জটিলতা বাড়িও না আমিও জটিলতা না বাড়িয়ে চুপচাপ বসে থাকলাম। আমার কোর্স-মেট কর্নেল জাবেদ সুলতান সেক্টর কমান্ডার হয়ে আসলে পুনরায় প্রস্তাবটা দিলাম। তিনি প্রযুক্তি প্রেমী ও সিগন্যাল অফিসার হওয়ায় আমার জন্য বেশ ভাল হল। আমাকে অনেক উৎসাহ দিলেন।
৬বিজিবি ব্যাটালিয়নে যে নেটওয়ার্কটা করেছিল সেই কম্পিউটার ফার্মকে নিয়োগ দিলাম। তবে পিসিআই কার্ড দিয়ে প্রতি রুমে একটা কম্পিউটার থেকে দুইটি বা তিনটি কম্পিউটারের চালনার জন্য তারা সিস্টেম করেছিল। এতে ডকুমেন্ট প্রিন্টিং করা হত প্রতি রুমের মুল কম্পিউটার হতে। কয়েকটি মনিটর বা কীবোর্ড দিয়ে বাকী সহকারীরা আলাদা আলাদাভাবে তাদের কাজ করতে পারে। মনিটর ও কীবোর্ডে বসা সহকারীরা বুঝতেই পারবে না যে সে অন্য একটি কম্পিউটারের নির্ভরশীল ভাবে কাজ করছে। সে যেভাবে তার ডেস্কটপ রেখেছে সে একইভাবে যে কোন ওয়ার্ক স্টেশন থেকে ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড সংযুক্ত হয়েও সে তার নির্দিষ্ট ডেস্কটপটিই পাবে। যা কিনা উইন্ডোজের একই কম্পিউটারে মাল্টি ইউজার লগঅনের মত।
আমি সরবরাহ ফার্মকে চাহিদা দিলাম আমার সকল শাখার কম্পিউটার একই নেটওয়ার্কে থাকবে এবং প্রতিটি সহকারীদের রুমে সংযোগ থাকবে। প্রতি সহকারী যার যার স্থান থেকে প্রিন্ট নিতে পারবে ও পেন-ড্রাইভ ব্যবহার করতে পারবে। সরবরাহকারী আমাকে সলিউশন দিল ইউটিপি ক্যাবল ও সুইচের মাধ্যমে করবে এবং আমেরিকার তৈরি L-230 Ncomputing ছোট বক্স ব্যবহার করবে। এতে কী বোর্ড, মাউস ও মনিটর লাগিয়ে ল্যানের কানেকশন দিলেই কম্পিউটার রেডি। প্রতিটি নেটওয়ার্ক কম্পিউটিং কার্ডে  ইউএসবি পোর্টও থাকবে যা দ্বারা প্রতিটি ওয়ার্ক স্টেশন থেকে পেন-ড্রাইভ, প্রিন্টার ও স্ক্যানার ইত্যাদি ইউএসবি ডিভাইস ব্যবহার করা যাবে। নেটওয়ার্ক কার্ডটি মনিটরের পিছনে এটাচমেন্ট দিয়ে সংযোগ করা হবে এতে টেবিলের উপর স্পেস আরো কম লাগবে এবং সমস্ত তার গুছানো থাকবে।

একদিন পুরোদিন ধরে কম্পিউটার ফার্মের লোকেরা কাজ করল। দেখা গেল, একই রুমের কাছের কম্পিউটারে কাজ করছে দূরের কম্পিউটারে কাজ করছে না। পরে ঢাকায় সরবরাহকারীদের সাথে আলোচনা করে তারা নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত তার বদলিয়ে পুনরায় নেটওয়ার্কিং করল। এবার চালু হল।
সহকারীদের সব ডাটা একসাথে করা হল এবং সার্ভারে কপি করা হল। এরমধ্যে হিসাব শাখার একটি ও রেশন সফটওয়্যারের জন্য একটি মোট দুইটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কের বাইরে রাখলাম। বিকল্প সার্ভার কম্পিউটার হিসাবে অপারেশন শাখার কম্পিউটারটি নির্দিষ্ট করে রাখলাম। প্রায় এক সপ্তাহ পর্যন্ত সহকারীরা তাদের পুরাতন মায়া জন্মানো কম্পিউটারগুলো ছাড়তে চাইল না। তারপর তাদের পুরাতন কম্পিউটারগুলো সরিয়ে দিলাম এখন তারা আবার অন্য কাজ করা শুরু করল। যে তিনটি কম্পিউটার নিরাপত্তার কারণে বহাল রেখেছিলাম সে তিনটি কম্পিউটারে পেন-ড্রাইভ ব্যবহার করে নিজেদের কাজ কর্ম চালু করল। কেউই আর নেটওয়ার্কের ওয়ার্ক স্টেশন ব্যবহার করছে না। আমি আবার মহাসংকট ও মহাফাপরে পড়লাম। তাদের কাছে নেটওয়ার্ক কম্পিউটারগুলো ব্যবহার না করার কারণ জানতে চাইলাম। তারা আমাকে কিছু সমস্যার কথা বলল, আমি সরবরাহকারীকে সমস্যাগুলো সমাধার করতে বললাম। সমস্যাগুলোর প্রায় সবই ছিল বাংলা টাইপিং ও সফটওয়্যার নিয়ে। তাদের সমস্যাগুলো এক এক করে সমাধান করলাম। মন খারাপ করে আমার ১২ জন সহকারী আস্তে আস্তে ব্যবহার শুরু করল। নেটওয়ার্ক ব্যবহার শুরু করার দ্বিতীয় দিন আরেক বিপদে পড়লাম। সার্ভার ভাইরাসে আক্রান্ত। কারণ সমস্ত কম্পিউটারের ডকুমেন্টের ডাটা এক জায়গায় করার কারণে সমস্ত কম্পিউটারের ভাইরাসগুলোও একসাথে হল। তাড়াতাড়ি এন্টি ভাইরাস কিনে সার্ভার কম্পিউটার থেকে ভাইরাস দুর করলাম। এর মধ্যে আরেক সমস্যা হল, কোন একটা সফটওয়্যার সমস্যায় সার্ভার বুটিং নিচ্ছিল না। এ ধরনের সমস্যার জন্য প্রস্তুতি ছিল অর্থাৎ সম্পূর্ণ সার্ভারের ব্যাকআপ ছিল। কিন্তু পুরো সিস্টেমটা চালু করতে দুই ঘণ্টা সময় লাগল। এতে আটজন সহকারীর কাজ বন্ধ। এর মধ্যে দুইজন সহকারীর অত্যন্ত জরুরী ডকুমেন্ট পুনরায় নেটওয়ার্কের বাইরের কম্পিউটার থেকে টাইপ করতে হল। এ অবস্থায় আমি আমার পূর্বে নির্ধারিত ডুয়েল কোর কম্পিউটার বিকল্প সার্ভার হিসাবে তৈরি করে নিলাম। এখন মূল সার্ভারে সমস্যা হলে দ্বিতীয় সার্ভারে লগঅন করেই সহকারীরা কাজ শেষ করতে পারবে।একাধিক সার্ভার করলে ডাটা রাউটারের মাধ্যমে আলাদা ব্যাকআপ রাখা ভাল।
নিয়মিত খেয়াল রাখলে ও সার্ভার কম্পিউটারটি রক্ষণাবেক্ষণ করলে দ্বিতীয় সার্ভারের ব্যবহারের তেমন প্রয়োজনই পরবে না। আমাদের সিস্টেমটি চালু করার প  প্রায় দুইমাস হতে চলল। এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সার্ভার ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি। অপর একটি কম্পিউটার কমপক্ষে ডুয়েল কোর  থাকলে প্রথমটির পাশাপাশি দ্বিতীয় একটি সার্ভার করে নিলে ভাল হবে। কারণ, ইলেক্ট্রনিক্সে কোন বিশ্বাস নেই।
আমি Ncomputing এর ওয়েবসাইট থেকে ডিভাইসটির লাইফ পেয়েছিলাম এক লক্ষ ঘণ্টা যা কিনা প্রতিদিন দশ ঘন্টা ব্যবহারে ২৭ বছরের বেশী সময় ব্যবহার করা যাবে। তবে ২৭ বছর বাদ দিয়ে ১০ বছরও যদি ব্যবহার করা যায় তা হবে বিশাল প্রাপ্তি।

আমরা Thin Client Ncomputing যে কারণে ব্যবহার করব, তা নিচে তুলে ধরলাম:
১. দশটি কম্পিউটারে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে বছরে ৭২,০০০ টাকা আর এতে আপনি গ্রিন হাউস এফেক্ট কমাতে ভূমিকা রাখতে পারেন। সাধারণত এ সিস্টেমে ৯০% এনার্জি সেভিং ধরা যাবে। বিদ্যুৎ খরচ কম হওয়ায় ইউপিএস বা আইপিএস ব্যবহার করে বিদ্যুতের লোডশেডিং এ দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের কাজ চালু রাখা যাবে।  বিদ্যুতের খরচ কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ বিহীন অঞ্চলের স্কুলে সহজেই সৌর শক্তির সাহায্যে কম্পিউটার ল্যাব বা সাইবার ক্যাফে পরিচালনা করা যাবে।
২. সার্ভার কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার আপগ্রেড করলে অন্যান্য সবাই তার সুবিধা পাবে। সকলের জন্য প্রতিটি কম্পিউটারের জন্য আলাদা আলাদা ভাবে খরচ করতে হবে না। সফটওয়্যার আপগ্রেড ও হার্ডওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ  ৭৫% খরচ কমে যাবে।
৩. যে কোন ব্যক্তি নেটওয়ার্কের যে কোন ওয়ার্ক স্টেশনে বসে কাজ করতে পারবে তার জন্য নির্দিষ্ট কম্পিউটারে বসার প্রয়োজন পড়ছে না। এতে কোন কম্পিউটার খালী থাকছে না এবং কোন সহকারীর কোন কম্পিউটার শেয়ার করার জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন পরছে না। যখন যে কম্পিউটার খালী তখন সে কম্পিউটারে কাজ করতে পারা যাবে। এতে সম্পদের সবোর্চ্চ ব্যবহার হচ্ছে। কোর আই থ্রি, ফাইভ বা সেভেন ইত্যাদি সার্ভার ব্যবহার করলে কম্পিউটারের সবোর্চ্চ শক্তিকে অনেকগুলি কম্পিউটারের মাধ্যমে কাজে লাগানো যাবে।
৪. অপটিক্যাল ফাইবার ও রেডিও লিংক করে যত খুশী দূরত্বে নেয়া যাবে। এতে শতাধিক কম্পিউটার চালু রাখা যাবে বিদ্যুৎ খরচ কমবে, রক্ষণাবেক্ষণ খরচ অকল্পনীয় ভাবে কমে যাবে। এমনকি সার্ভারটি প্রতিষ্ঠান প্রধান নিজ রুমে রেখে সকলের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও তথ্যের নিরাপত্তায় বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে।
৫. পেন ড্রাইভের ব্যবহার কমে যাবে। ডকুমেন্ট ভাইরাসে কম আক্রান্ত  হবে। তথ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা যাবে। কারণ সমস্ত ফাইল এক জায়গায় বা ব্যাকআপসহ ক্লাউডে সেইফ করা যাবে।
৬. সার্ভারে ইন্টারনেট দিলে সকলে শেয়ার করতে পারবে। প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা ইন্টারনেট দেয়ার প্রয়োজন পড়ছে না। খরচ কমে যাবে।

আমি এই সিস্টেমে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বজায় রাখা ছাড়া আর কোন অসুবিধা দেখতে পাচ্ছিনা। তবে গোপনীয় ফাইলগুলো আলাদা স্ট্যান্ড এ্যালোন কম্পিউটারে ব্যবহার করা যেতে পারে। বাংলাদেশেপিসি স্টেশননামে চাইনিজ কার্ড পাওয়া যায় সেগুলোর ব্যবহার কেমন তা আমার জানা নেই। কেউ ব্যবহার করলে নীচে কমেন্টে আমাকে জানাবেন বা মেইল করবেন tareq4202@gmail.com এ ঠিকানায়। আমি যা জানতে পেরেছি চাইনিজ কার্ডগুলো আরো সস্তায় পাওয়া যায়। Ncomputing কার্ড ব্যবহার করার পূর্বে ইউটিউব ও ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিয়ে আরো বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন। বাংলাদেশের ডিলার থেকে তথ্য নিতে পারেন। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট www.globacomm.net থেকে কন্ট্রাক্ট নম্বর থেকে যোগাযোগ করে তাদের সহায়তা নিতে পারেন। স্কুল  কলেজের কম্পিউটার ল্যাবের জন্য অর্থ যোগাড় করে একবার এ ধরনের নেটওয়ার্কিং করা গেলে দীর্ঘমেয়াদি খরচ কমে যাবে। আমার সহকারীরা প্রথম প্রথম সম্যসা দিলেও এখন তারা সিস্টমটি বেশ পছন্দ করছে।  পরিশেষে খরচ সাশ্রয়ের জন্য কারো এ তথ্যগুলো কাজে লাগলে ছুটির দুইদিন ব্যয় করে আমার এ লেখাটি সার্থক হবে।

No comments:

Post a Comment