আমি প্রায় পাঁচ বছর আগে একটি ডিভাইস ক্রয় করে বেশ গর্বিত
ছিলাম। আর তা ছিল পোর্টেবল স্ক্যানার। ৫০০০ টাকা খরচ করে ল্যাপটপ ব্যাগে বহনযোগ্য
পোর্টেবল স্ক্যানার বেশ চমৎকার একটি ডিভাইস ছিল। ছোটোখাটো মেমো ও অন্যান্য চিঠি
স্ক্যান করতে এটা বেশ কার্যকরী ছিল। কোন আলাদা পাওয়ার দেয়ার প্রয়োজন হত না।
ফ্ল্যাটবেড স্ক্যানারের মত টেবিলে বেশী জায়গা নিত না। এটা বড় মাপের একটা টুথ
পেস্টের বাক্সের মত । সহজেই ল্যাপটপ ব্যাগে বহন করা যায়। ইউএসবি পাওয়ারে চলে যখন
স্ক্যান করা হয় ২.৫ ওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করে । আবার স্ট্যান্ড বাই থাকলে তেমন বিদ্যুৎ
খরচ করে না। আমি এই স্ক্যানার দিয়ে অনেক ডকুমেন্ট ,মেমো ও ছবি স্ক্যান
করি। আমার টার্গেট ছিল কমপক্ষে ৫০০০ স্ক্যান করি। এতে অন্তত এক টাকা করে আমার স্ক্যানিং খরচ উঠে যাবে ।
কারণ বাজারে প্রতি কপি স্ক্যান করতে খরচ ৫ টাকা। সেই হিসাবে এক হাজার স্ক্যান করতে
পারলেই দাম উঠে যাওয়ার কথা। সেখানে ৫০০০ কপি টার্গেট। আমার মনে হয় আমার স্ক্যানার
দিয়ে আমি ৫০০০ স্ক্যান করতে সামর্থ্য হই। স্ক্যানারের এই কার্যক্রম যখন চলমান
সেদিন আমার ছেলে দেখাল মোবাইল ফোনের স্ক্যানার অ্যাপ। আমি দেখলাম ক্যামেরা দিয়ে
ছবি তুলে পরিষ্কার ঝকঝকে সাদা কালো ফটোকপির মত ডকুমেন্ট ইমেজ হাজির। সত্যি চট করে
বইয়ের পাতা ডকুমেন্ট যেকোনো কিছু এর দ্বারা মূহুতেই স্ক্যানিং ডকুমেন্টের আদলে ফটো
তোলা সম্ভব। আবার সেই ডকুমেন্ট অপটিক্যাল ক্যারেকটর রিডার চালিয়ে এডিটেবল বা টাইপ
করা ও কারেকশন উপযোগী ডকুমেন্ট তৈরি করা সম্ভব। আমরা স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করে
যা যা কার্যক্রম করতে পারি তার সবকিছুই করা সম্ভব। স্মার্ট ফোনের ক্যামেরার
স্ক্যানার হিসাবে ব্যবহারটা অতুলনীয়। পরীক্ষামূলক ভাবে করে দেখতে পারেন। এতে আপনার
গুরুত্বপূর্ণ দলিল দস্তাবেজ মোবাইলে কপি করে নেয়া সম্ভব। বন্ধুর কাছে একটা গুরুত্বপূর্ণ
নোট আছে। ফটোকপির দোকান বন্ধ চটপট স্মার্ট ফোনের ক্যামেরা দিয়ে স্ক্যান করে
নিন।
মোবাইল ফোনে স্ক্যানিং সবচেয়ে ভাল ভাবে করা যায় যদি
মোবাইল ফোনের ক্যামেরাটি ভাল মানের হয়। স্যামসং জে৭ মডেল আর সিম্ফনি মোবাইল নিয়ে
আমি পরীক্ষাটি করি। ১৩ মেগাপিক্সেলের স্যামসং মোবাইল ফোনের ফলাফল বেশ ভাল।
সাধারণত যেন তেন ভাবে একবার ছবি তুলেই স্ক্যানিং এর কাজটি সম্পন্ন করা গেছে। অন্য
দিকে ১০ মেগাপিক্সেলের সিম্ফনি মোবাইল ফোন দিয়েও ভালভাবে স্ক্যান করা যায়।
তবে মাঝে মাঝে তাড়াহুড়ো করে ঝাপসা ছবি আসার কারণে একাধিক বার ছবি তেলার প্রয়োজন
হয়।
রঙ্গিন স্ক্যানিঙটা ফ্ল্যাটবেড স্ক্যানারের মাধ্যমে করাই
ভাল। রঙ্গিন স্ক্যানিং ভাল ভাবে মোবাইলে করাটা সময় সাপেক্ষ ও অনেক অনুশীলনের
প্রয়োজন পরে। যে কোন এফোর সাইজ কাগজ স্ক্যানিং করার জন্য মোবাইল ফোনের মাধ্যমে
স্ক্যানিং হবে চমৎকার। কাগজের লেখা সাদা কালো চমৎকার ভাবে পড়ার উপযোগী করে
স্ক্যান করা যায়। স্ক্যানিঙটা ভাল হল সাদা কালো লেখা দিয়ে। স্ক্যানিং করার জন্য মোবাইল
ফোনের ক্যামেরাটি অন করলে অটোমেটিক্যালী আগে পিছে ফোকাস করে ক্যামেরা ছবি তুলে
নিবে। প্রয়োজন হলে অটোমেটিক্যালী লাইট কম হলে ফ্লাশ হয়ে যাবে।
অল্প সময়ে স্ক্যান করে ভাইবার, হোয়াটস
অ্যাপ ইত্যাদির মাধ্যমে যে কোন ডকুমেন্ট তড়িৎ যে কারো কাছে পাঠানো যায়। মোবাইল
ফোনকে স্ক্যানিং কাজে ব্যবহারের এই আইডিয়াটি আশা করি অনেকের জন্য অনেক কাজে লাগবে।
No comments:
Post a Comment