আমি একবার একটা খবর পড়েছিলাম আমেরিকার একজন ব্যক্তি
কেবলমাত্র অফিসে আসা যাওয়ার পথে মোবাইলে এসএমএস টাইপ করে একটি বই লিখে শেষ করেছে।
অবাক ব্যাপার নিশ্চয়ই। আমি এ খবরটা মনে রেখে মোবাইলের মাধ্যমে আমিও আমার বাংলা
লেখালেখির একটা চেষ্টা চালাই। যেহেতু আমি বিজয়ে টাইপ করতেই অভ্যস্ত। তাই অভ্র
ফোনেটিকস দিয়ে টাইপ করতে গিয়ে পরতে হয় নতুন বিপদে। কয়েক দিন অভ্র ফোনেটিকস
দিয়ে টাইপ করার ক্লান্তিকর চেষ্টাটা
চালালাম। বন্ধু/বান্ধবরা অভ্র ফোনেটিকস এর পক্ষে সাপোর্ট দিল। একটা বিষয় মাথায়
আসল। আমি গুগল প্লে ষ্টোরে কেন বিজয় খোজ
করছি না । পরে বিজয়ের একটি অ্যাপস পাওয়া গেল যা মোটামোটি কার্যকর মনে হয়। এখনকার সময়ে মোবাইল থাকলে আর
কোন কিছুর প্রয়োজন হয় না। কিছুদিন আগেও
ট্যাব বা ল্যাপটপ ছাড়া আমরা চলতে পারতাম না। এখন মোবাইল হলেও আমাদের চলে। বরং ভারী
ল্যাপটপ আর ট্যাব বেশী জরুরী না হলে আমরা বহন করতে চাইনা। আমি যে গল্পটি আপনাদের
জানালাম এটি হল আগের দিনের এসএমএস এ যুগের গল্প। যখন এসএমএস মোবাইলের দশ বাটনের
মধ্যে টাইপ করা লাগত। এখন টাচ মোবাইলে একই বাটনের বিভিন্ন লেটার টিপে টিপে টাইপ
করার প্রয়োজন পড়ে না। একেবারে টাচ বাটনে নিদিষ্ট অক্ষর দেখে টাইপ করা যায়। টাইপ
করাটা টাচ বাটনে একবার আয়ত্তে আনতে পারলে অনেক দ্রুত টাইপ করা যায়।
মোবাইলের বিজয় কীতে টাইপ করাটা অভ্যাস হয়ে গেল মন্দ হয়
না। বিজয় অভ্যাস করে কম্পিউটারে টাইপিং ও মোবাইলের টাইপিং প্রায় একই রকম মনে হয়।
অনেক ক্ষেত্রে মোবাইলে টাইপ করা আটির্ক্যাল টাইপিং কম্পিউটারে নিয়ে এডিটিং ইত্যাদি
কাজ করতে গেলে দেখা যায় শব্দগুলো ভাংগা ভাংগা হয়ে জোড়া লাগে। এগুলো অভ্র স্পেল চেক দিয়ে প্রয়োজনীয় কারেকশন করা যায়।
মাঝে মাঝে মোবাইল টাইপিং এ রেফ, একার ও আরো দুই একটা সংযুক্ত বর্ণের
জন্য সমস্যা হয়। তবে কোন তথ্যাদি ধরে রাখার জন্য মোবাইলে নিয়মিত টাইপ করার অভ্যাস
করলে ধীরে ধীরে মোবাইলে টাইপিং সংক্রান্ত সমস্যাগুলি ধীরে ধীরে কেটে যায়। তখন
মোবাইলে টাইপিংটাও স্বাভাবিক কম্পিউটারের মতো স্বাভাবিক হবে।
মোবাইল টাইপিঙের আইডিয়া আসে তখনই যখন আমাদের রাস্তা
ঘাটের ট্রাফিক জ্যামের অলস টাইমগুলো কোয়ালিটি টাইমে রূপান্তর করা যায়। বলার
অপেক্ষা রাখে না এখনকার অধিকাংশ এক্সিকিউটিভ কিছুটা অন্তত ডিজিটাল কার্যক্রমে
অভ্যস্ত হচ্ছে। যেমন এসএমএস পড়া, লেখা, ইমেইল চেক
করা ও ইন্টারনেটে সার্চ দেয়া। আজ হতে পাঁচ বছর আগেও দেখতাম অনেক কর্মকর্তাই এসএমএস,
ইমেইল পাঠাতে ও খুলতে জানত না। এখন অধিকাংশ শিক্ষিতরাই কাজগুলি
জানে। তাই এখন পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব ব্যক্তিদের স্মার্ট ফোনে স্মার্ট কর্মকাণ্ড করতে দেখা
যায়।
বিভিন্ন স্থানে, রাস্তাঘাটে ও গাড়ীতে আজ
অনেককেই স্মার্টফোনে কর্মরতই দেখা যায়।
অনলাইন ও অফলাইন অনেক কাজ যখন স্মার্টফোনে করা যায়। এখন
আমার মত লেখালেখি করা যাদের অভ্যাস আছে তারা লেখালেখির কাজগুলি সহজেই সারতে পারেন।
স্মার্টফোনে লেখালেখির কাজ নোট বা মেমোতে না করে সরাসরি ড্রপবক্সে ফাইল গুলো নিয়ে
করা যায়। এতে একবারেই মোবাইল ফোনে বা কম্পিউটার যে কোন স্থানে ও যে কোন ডিভাইসে
টাইপ করা যাবে। অফিসে বা বাসায় ল্যাপটপ বা পিসিতে করে নিয়ে আমরা সেই লেখাগুলো
মোবাইলে আবার রাস্তাঘাটে প্রয়োজনীয় সময় নিয়ে রিলাক্স মুডে কাজগুলো শেষ করতে পারি।
যে কোন লেখা প্রুফ রিডিং বা সংশোধন পরিবর্ধন বা পরিমার্জনের কাজ মোবাইলে সহজে করা
যায়। তবে কোন রেখা বা আইডিয়া হঠাত মনে পড়লে তা তৎক্ষণাৎ টাইপ করে নতুন নামে লেখাটি
খুলে ফেলে নিলে মন্দ হয় না পড়ে প্রয়োজনীয় সময় হাতে নিয়ে পরিবর্ধন ও পরিমার্জন করে
নিলেই চলবে।
আগে শুনতাম লেখকরা তাদের বিভিন্ন কাজের ফাকে ফাকে লিখতে
বসতেন ছোট ছোট নোট প্যাডে বা কাগজে। পড়ে এক সময় সমস্ত নোটগুলি নিয়ে তারা বসত তাদের
ধারনা গুলোকে ভাষার মনোহারী বিন্যাসে উপস্থাপনা করা। এখনকার সময়ে আইডিয়া গুলো নোট
লেখার পরিবতে মোবাইলে টাইপ করে ফেলতে পারি। এতে নোট জমানো ও পুনরায় সাজিয়ে লেখার
মত পুনরাবৃত্তি ধরনের কাজগুলো আমরা কমাতে পারি। আমরা যেন তেন ভাবে মোবাইলে লেখাগুলো ডিজিটালই সংরক্ষণ করে ফেলতে
পারলে পরে তা যেকোনো ভাবেই ব্যবহার করে যায়। তবে ভ্রমণরত অবস্থায় বাসে বা গাড়ীতে
সাধারণত কলম দিয়ে লেখা যায় না। যদি লিখতে হয় তবে প্রচুর অনুশীলনের প্রয়োজন পড়ে।
কিন্তু মোবাইলের কিতে টাইপ করে লেখা যায়। টাচ ফোনেও গাড়ীর ঝাঁকুনিতে ঠিকভাবে
আঙ্গুল রেখে কাজ করা যায় না। সরে সরে যায়। তবে একটু অভ্যাস করলে গাড়ীর ঝাঁকুনিতে
ছোটখাট টাইপিং কাজ করা যায়। তবে নিধিধায় ভালভাবে কাজ করা যাবে জলপথে ও আকাশ পথে
ভ্রমণের সময়। ট্রেনে সড়ক পথে জানি ভালভাবে করা যাবে।
আমরা যেখানে যে অবস্থায় থাকি না কেন আমাদের হাতের কাছে
স্মার্টফোন থাকলে আর তা স্মার্টলি ব্যবহার
করতে জানলে আমাদের অলস ও বোরিং টাইমগুলো উৎপাদনশীল ও কোয়ালিটি টাইম হবে।
No comments:
Post a Comment