Pages

Friday, April 19, 2019

পৃথিবী রক্ষায় প্রয়োজন আদি কৃষি

মা‌ঝে মা‌ঝে চিন্তা কর‌লে অবাক হই ১৯০০ থে‌কে ২০০০ সাল। পৃ‌থিবী‌তে ব্যাপক উন্নয়‌নের শতক। আবার পৃ‌থিবী‌কে ব্যাপক ধবং‌শের শতকও বলা যায়। এই  সময়ে মানুষ ব্যাপক ভা‌বে পৃ‌থিবীর ভিতরকার খ‌নিজ ধ্বংশ ক‌রে‌ছে। প‌রি‌বেশ ব‌লে কিছু আ‌ছে চিন্তায় আ‌নে‌নি। কৃ‌ষিক্ষ‌‌েতে সার ও কীটনাশক ব্যাপকভা‌বে ব্যবহার ক‌রে ধ্বংশ ক‌রে‌ছে জ‌মির স্বাস্থ্য ও মানু‌ষের স্বাস্থ্য। অ‌নেক অ‌নেক যুদ্ধও ক‌রে‌ছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ইত্যা‌দি। এই  শত‌কে মানুষ ব্যাপকভা‌বে খ‌নিজ পু‌ড়ি‌য়ে‌ছে। কখনও চিন্তা ক‌রে‌নি পৃ‌থিবীর ভির‌রের খ‌নিজ কখনও অফুরন্ত নয়। কৃ‌ষি বাড়া‌নোর জন্য তারা ব্যাপকভা‌বে রাসা‌নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার ক‌রে‌ছে। তা‌দের সময় জ‌ৈব বালাইনাশক ও জ‌ৈব সার তারা জানত। বেশী ফসল ফলা‌নোর আশ‌ায় তারা বৃষক‌কে রোগাক্রান্ত ক‌রে‌ছে। জ‌মির মা‌টি ধ্বংশ ক‌রে‌ছে। অথচ রাসা‌নিক সার ও কীটনাশক আসার আ‌গে মানুষ জ‌ৈব পদ্ধ‌তি‌তে চাষাবাদ ক‌রে‌ছে। জ‌ৈব পদ্ধ‌তির চা‌ষে কৃষক সুস্থ ছিল। সচ্ছল ছিল। এখন মাল্ট‌িনেশনাল কোম্পানী তা‌দের লা‌ভের আশায় রাসায়‌নিক সার ও কীটনাশক‌ে‌ কৃষক‌কে ধ্বং‌শের দ্বারপ্রা‌ন্তে নি‌য়ে গে‌ছে। সরকারী কৃ‌ষি বিভাগ ও মি‌ডিয়া কর্প‌ো‌রেট কোম্পানী গু‌লি‌কে সহায়তা ক‌রে‌ছে। আজ কৃষক জ‌ৈব সার, ভার্ম‌ি কম্প‌োষ্ট, জ‌ৈব বালাই নাশক, মাল‌চিং পেপার ও নেট হাউজ নি‌য়ে এ‌গি‌য়ে যাচ্ছে লাভজনক ও স্বাস্থ্য সম্মত কৃ‌ষির দি‌কে। আমার এখনও ম‌নে আ‌ছে আমার ই‌ঞ্জি‌নিয়ার বাবা আ‌শির দশ‌কে ছু‌টি‌তে গ্রা‌মে গে‌লে তার আত্মীয় কৃষক‌দের উষ্মা প্রকাশ কর‌তেন, কেন তারা বেশী ফল‌নের জন্য সার ও কীটনাশক ব্যবহার কর‌ছে না। কেন তারা ডিপ‌টিউবও‌য়েল ব্যবহার কর‌ছে না। তার প্রায় চ‌ল্লিশ বছর পর আ‌মি গ্রা‌মে গেলে নতুন কৃষক‌দের বল‌ছি রাসায়‌নিক সার ও বিষ বাদ দাও। জ‌ৈব সার ও জ‌ৈব বালাইনাশক ব্যবহার কর। জ‌মি‌তে মালচিং পেপার দাও। ডিপ টিউবও‌য়েল বাদ দাও। চাষাবা‌দের জন্য পুকুর বা খা‌লে বৃ‌ষ্টির পা‌নি জ‌মি‌য়ে তা ড্রিপ ই‌রি‌গেশ‌নের মাধ্য‌মে সব‌জি চা‌ষে ব্যবহার ক‌রো। মা‌টি‌তে কে‌চো আর অনুজীব ফি‌রি‌য়ে দাও। মা‌টি‌তে প্রান আন। মা‌টি‌তে যেখা‌নে ৫% জ‌ৈব সার আর অনুজীব থাকার কথা সেখা‌নে রাসায়‌নিক সার ব্যবহার ক‌রে তার ১% ও বিদ্যমান নাই।
গত শত‌কে কো‌টি কো‌টি টন প্লা‌স্টিক ব্যবহার ক‌রে‌ছে। অথচ সেই  মানুষগু‌লি প্লা‌স্টিক রিসাইক্যাল করার চেস্টা ক‌রে‌নি।
ব্যাক টু দি স্কোয়ার ও ফি‌রি‌য়ে দাও অরণ্য। আজ কো‌টি কো‌টি টাকা খরচ ক‌রে সার কারখানা ত‌ৈরী করার প্র‌য়োজন নাই। আমা‌দের লক্ষ লক্ষ নারীরা গ্রা‌মের রান্নার আবর্জনা, লতাপাতা পচা, গরুর গোবর ও মুরগীর বিষ্ঠা দি‌য়ে ভার্ম‌ি কম্পোষ্ট, ট্রাই‌কো কম্প‌োস্ট ও অনান্য কম্প‌োষ্ট ত‌ৈরী ক‌রে অত্যন্ত কম খর‌চে সার সরবরাহ কর‌তে পা‌রে। এ‌তে নারীরা কম্প‌েষ্টে বিক্রি ক‌রে লাভবান হ‌তে পা‌রে। দা‌রিদ্রতা দূর হ‌বে। রাসায়‌নিক সার ব্যবহা‌রে জ‌মি শেষ ও সার কি‌নে কৃষক ফতুর। জ‌ৈব সা‌রে কৃষাণীর নগদ আয়, জ‌মি উর্বর ও কৃষ‌কের খরচ ক‌মে গি‌য়ে কৃষক লাভবান।
সরবারীভা‌বে জৈব সা‌রের ব্যপক প্রচারনা প্র‌য়োজন। সরকার সা‌রের যে ভর্তু‌কি দেয় সেই  ভর্তুকি সরকার কৃষানী যারা জ‌ৈব সার ত‌ৈরী কর‌ছে তা‌দের ইন‌সেন‌টিভ হিসা‌বে দেয়া যে‌তে পা‌রে।
জ‌ৈব বালাইনাশ‌কের উপর আ‌রো গ‌ভেশনা প্র‌য়োজন। এটা হ‌তে পা‌রে অনান্য রাসায়‌নিক বালাইনাশ‌কের মত পাউডা‌রের ফর‌মে। কৃষক ত‌বে তা সহ‌জে ব্যবহার কর‌তে পার‌বে। এখন নিম পাতা সিদ্ধ কর। মেহগ‌নি বীজ সিদ্ধ কর। কয়েক‌দিন পা‌নি‌তে ভি‌জি‌য়ে রাখ। আবার অ‌নেক সময় গরুর চনা দাও। ইত্যা‌দি নানা জ‌টিল ও কষ্টকর পদ্ধ‌তি‌তে যে‌তে হয়। ডি‌জিটাল যু‌গে মানুষ চায় সহ‌জে সব‌কিছু। তাই কম্প‌োস্ট  সা‌রের মত রে‌ডিমেট প্যা‌কে‌টে ক‌রে জ‌ৈব বালাই নাশক আস‌তে হ‌বে। তা‌বে আশার কথা হল এখন কিছু কিছু প্র‌তিষ্ঠান জ‌ৈব বালাই নাশক প্যা‌কেট জাত কর‌ছে। এগু‌লোর প্রাপ্যতা আ‌রো বাড়া‌তে হ‌বে। পৃ‌থিবী‌কে রক্ষা করার আধু‌নিক উপায় হল ফি‌রি‌য়ে দাও অরণ্য।

No comments:

Post a Comment