সরকারী চাকুরীজীবিদের অডিট অবজেকশন আর টাকা টিআর দুইটি শব্দ
অতি পরিচিত। সরকারী কোষাগারে
টাকা জমা করার হয় সরকার নির্ধারিত বিভিন্ন কোড নম্বরের বিপরীতে। টাকা জমা সাধারণত বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা বা সোনালী ব্যাংকের
শাখায় জমা করা হয়। অফিস অব কন্ট্রোলার
জেনারেল অব একাউন্টস এগুলো ম্যানেজমেন্ট করে।
ট্রেজারি চালান সঠিক কোডে সঠিক ভাবে জমা হল কিনা এটা একটা
বিশাল চ্যালেঞ্জ। আর এই চ্যালেঞ্জ
মোকাবেলার জন্য আমাদেরকে লোক পাঠিয়ে ব্যাংকে মাঝে মাঝে চেক করতে হয়। অনেক সময় অডিট টিম টাকা টিআর করার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য মাঝে মাঝে
ব্যাংকে টিআর-এর টাকা জমা হয়েছে তার প্রমাণাদি চায়। আমরা প্রায়শই টিআর-এর কপি দেখি তা যথাযথ ভাবে ব্যাংকে
ও সরকারী কোষাগারে জমা হয়েছে কিনা তা বিবেচনাধীনই থেকে যায়। অনেক সময় ব্যাংকে গিয়ে আমাদের চেক করার সময় হয় অনেক সময় হয় না। পুরো প্রক্রিয়াটি রয়ে যায় একটা বিশ্বাসের আর্বতের মধ্যে।
২০০৪ সালের দিকে একবার পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকুরীরত থাকা
অবস্থায় আমাদের প্রতিষ্ঠানে অডিট টিম কয়েকটি অডিট অবজেকশন দিল। টাকার পরিমাণ কম থাকায় আমরা সাথে সাথে ব্যাংকে লোক পাঠিয়ে টাকা টিআর
করে ফেললাম। অডিট পার্টি
ব্যাংক ম্যানেজারের টিআর কপির জন্য আলাদা সত্যতা প্রতিপাদন চাইল তাও আনা হল। ফাইনাল প্যাচ আমরা পেলাম অডিট পার্টি স্বশরীরে গিয়ে ব্যাংকে চেক
করতে চায়। আমরা গুইমারা
থেকে অডিট টিমকে খাগড়াছড়ি সোনালী ব্যাংকে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত হলাম। অডিট টিম রণে ভঙ্গ দিয়ে বলল, এখন তারা ঢাকা ফেরত যেতে
চায়। অতি শীগ্রই
তারা খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্টে অডিট করবে তখন তারা টিআর গুলি চেক করে অডিট নিষ্পত্তি
করবে। আমরা আরো কয়েকমাসের জন্য অডিটে আটকা থাকলাম। এরূপ অভিজ্ঞতা আমার মত অনেকের আছে।
আ ইন্টারনেটের যুগে এসে ভাবতে ভাল লাগছে টিআর এর টাকা সঠিকভাবে
জমা হল কিনা এ জন্য আর চিন্তা করার কোন প্রয়োজন নেই। আমরা ঘরে বসেই টিআর কপি ও টিআর-এর টাকা সরকারী কোষাগারে
জমা হয়েছে কিনা তা সহজেই চেক করে নিতে পারি। এজন্য আমাদের টিআর-এর কপিটি হাতে নিতে হবে। এর থেকে আমরা পাব টিআর নম্বর, তারিখ, জেলার নাম ,ব্যাংকের নাম ও ব্যাংকের শাখার নাম। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাং ক এই দুইটি অপশন দেয়া আছে। ওয়েব সাইটের ঠিকানাটা হল নিন্মরুপ:
আমার মত যারা আর্মির বাইরে চাকুরী করে তাদের ডিএসওপি ফান্ডের
টাকা,
রিসেল টু এর টাকা, অডিট অবজেকশনের টাকা বা অন পেমেন্ট
রেটে গাড়ী ব্যবহারের পেমেন্ট ইত্যাদি টাকা টিআর করতে হয়। অনেক সময় পানির বিল ও বৈদ্যুতিক বিলের টাকা জমা করার প্রয়োজন হয়। এই সমস্ত ব্যক্তিগত টিআর নিজে নিজে টিআরের কপিটি হাতে নিয়ে ইন্টারনেটে
চেক করতে পারেন। তবে অনেক সময়
ছোট ছোট সোনালী ব্যাংকের শাখায় ইন্টারনেট না থাকার কারণে উপজেলা জাতীয় সোনালী ব্যাংকে
টিআর জমার টাকা ইন্টারনেটে দেখা যায় না। সেগুলো ব্যাংকে
গিয়ে আগের সিস্টেমে ভেরিফাই করার প্রয়োজন পড়ে। আমাদের কষ্ট হলেও চেষ্টা করতে হবে সোনালী ব্যাংকের ইন্টারনেটে
সর্বদা অনলাইন আছে এরূপ শাখা থেকে টিআর-এর টাকা জমা করতে হবে। এতে আমরা ইন্টারনেটে দেখে আমরা টাকা জমার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারব। তাই দুরে হলেও সোনালী ব্যাংকের বড় বড় শাখায় টিআর-এর টাকা
জমা করা যেতে পারে।
অডিটের আগে আমরা ইন্টারনেট ও কম্পিউটার জানা সহকারী বসিয়ে
টিআর-এর সব কপি নিয়ে ভরিফাই করতে পারি। পরবর্তীতে অডিট পার্টিকে ইন্টারনেটে দেখিয়ে টিআর-এর টাকা
ব্যাংকে জমা দানের বিষয়গুলি নিশ্চিত করা যেতে পারে। তার পরেও যদি তার মেনে না নেয় তবে আল্লাহর হেদায়েতের উপর তাদের
ছেড়ে দিতে হবে।
আমরা যারা সরকারী চাকুরীতে কর্মরত আছি তাদের সর্বদাই টিআর
করতে হয়। সরকারী কোন
কাজ করলেই আইটি ভেট টিআর করতে হয়। তাই অনলাইনে
টিআর চেকের ব্যবস্থা সত্যি আমাদের স্বস্তি দিবে।
No comments:
Post a Comment