Pages

Thursday, May 19, 2016

লেখালেখি কি একদম মূল্যহীন

আমি নিয়মিত লেখালেখি করার চেষ্টা করি। একবার আমাকে আমার একজন সহকর্মী বলেছিল, আপনার এই লেখালেখি করে কি লাভ। আপনার এই লেখা কে পড়বে। সময় নষ্ট করে কি আপনার কোন উপার্জন হচ্ছে। আমিও এই সহকর্মীর সাথে একমত আমার লেখা কে পড়বে। আমি একটি গুগলের ব্লগ স্পটের ওয়েব সাইটে আমার লেখাগুলি সংরক্ষণ করছি। অবাক করা বিষয় হলো দুই বছরের মধ্যে আমার সাইটিতে হিট প্রায় দশ হাজার অতিক্রম করতে যাচ্ছে। কেউ পড়ে না বিষয়টা মানতে পারছি না। হতে পারে এই লেখালেখি করে আয় করতে পারছি না। আমি আমার লেখালেখি থেকে মূলত আয় করার চিন্তায় কখনো লিখিনি। আয় হবে এটাও ধারনায় রাখি না। আমি বাংলাদেশের উন্নত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরিশাল ক্যাডেট কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছি। ভাল রেজাল্ট করেছি। সারা জীবন বিনোদন হিসাবে পড়াশোনাকে বেছে নিয়েছি। জীবনের প্রতিটি বিষয়ে নিজেকে এত বেশী জ্ঞান চর্চার মধ্যে রাখি, মাঝে মাঝে মনে হয়, পড়ার ও নতুন নতুন সৃষ্টির অন্বেষণে সময় ব্যয় না করে আমি যদি টাকা অর্জনের পিছনে করলে ভাল হত। সম্পদশালী হতে পারতাম। তবে কেন ছাইপাশ লিখে দিনের পর দিন টাইপ করে সময় নষ্ট করছি। আসলে এসময় নষ্ট করাটা কি কাজের। কোন টাকা পয়সা নেই। শুধু সময় নষ্ট। শখের কাজে মনে ভাল অনুভূতি তৈরি হয়। সব সময় টাকা পাওয়া যাবে এ ধারনাটা হয়ত সঠিক নয়।
আমি আমার বড় ছেলে রাশিদ বিশিষ্ট কম্পিউটার এক্সপার্টকে বলে রেখেছি। কোন কারণে আমার অকাল প্রয়াণ হলে আমার  লেখাগুলি থেকে বাছাই করে আমার নামে একটা বই ছাপাবে। আমার নামে একটা ওয়েবসাইট বানাবে বা এই ব্লগ স্পট মেন্টেইন করবে বা নতুন কোন সাইটে রিহোস্ট করবে। আমার সহকর্মীর কথায় আমি মর্মাহত হলেও আমার জন্য ভাল  লাগার বিষয় আছে। আমার নানা রকম মতের ও অনুভূতির লেখাগুলো ইন্টারনেটে বাংলায় সার্চ করে অনেকেই পাচ্ছেন। ইদানীং গুগুলে বাংলার সার্চ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকেই ইউনিকোডে বাংলা টাইপ করতে পারছেন। তাই দিনের পর দিন টাইপ করে লিখে যাওয়া আমার পংতিগুলো বিশাল এই ইন্টারনেটের গ্লোবাল জগতে খুঁজে পেতে লাগছে একটু সময় আর কয়েকটি ক্লিক। টাচ মোবাইলের কয়েকটি টাচ।
তবে কি আমার লেখার পিছনে সময় ব্যয় করাটা অপচয়। আমার লেখার পিছনে যে অতিরিক্ত সময়টা বিনিয়োগ আমি করছি তার জন্য আমাকে বেশ শক্ত একটা কাজ করতে হচ্ছে। আর তা হল সবচেয়ে মজাদার ও সহজ বিনোদন টিভি দেখা প্রায় ছেড়ে দিয়েছি। টিভি না দেখে চিন্তা ভাবনা করে একের পর এক শব্দ কম্পিউটারে টাইপ করে যাচ্ছি। শুধু মনের ইচ্ছেটুকু পূর্ণ করার জন্য। মাঝে মাঝে বেশ দিন কিছু লিখতে পারি না। উদাসভাবে ঘুরতে থাকি। কিন্তু আইডিয়া আর আসে না।
আমার খুচরো লেখার অনুভূতি হল। প্রতিটি শব্দ টাইপ করে আমি যেন প্রতিটি শব্দের জন্য অর্থ অর্জন করছি। যা নাকি জমাচ্ছি। এক সময় এটা ভাঙ্গিয়ে আমার প্রয়োজনীয় কিছু ক্ষুদ্র সুখ ও স্বস্তি ক্রয় করব।
আমার অনুভূতি হল কাজে লাগুক বা নাই লাগুক প্রতিটি ভাল কাজের জন্য এই প্রকৃতিতে রিটার্ন রয়েছে। আর এ রিটার্নটা আমার জীবনকালেও পেতে পারি বা মরনোত্তরও পেতে পারি। প্রতিটি লেখার ৫০০ হতে ১০০০ শব্দের আমার এই প্রয়াস শুধুই আমার মনের অনুভূতি গুলোর প্রকাশ।
আমি অনেক বিষয়ে অনেক পড়ার ও জানার পর আমার কিছু করতে ইচ্ছে করে। তখন আমার সেনা চাকুরী আমার ইচ্ছে গুলো বাস্তবায়নে বিরাট বাধা দেয়। তাই ধারনাগুলো যেন মরে না যায় বা ভুলে না যায়। লিখে রাখি। অতি দ্রুত চাকুরী হতে অবসর নিয়ে পরিকল্পনাগুলো হতে যাচাই বাছাই করে কোন একটি কাজ নিয়ে লেগে পড়া যাবে। অনলাইন একটা পত্রিকা চালু করার আমার খুবই ইচ্ছে আছে। ক্যাডেট কলেজে থাকতে আমি ফটোকপি করে একটি পত্রিকা তৈরি করি। পত্রিকাটির নাম ছিল চন্দ্র দ্বীপের চিঠি কুষ্টিয়ায় বিজিবিতে চাকুরীরত অবস্থায় আমি কুষ্টিয়ার বিজিবি পাবলিক স্কুল ও কলেজের জন্য এবং প্রাইমারী স্কুলের জন্য পত্রিকা বের করতে সমর্থ হই। এর জন্য মত বিনিময় করে অবিভাবকদের মত নিয়ে তাদের খরচে বাৎসরিক ম্যাগাজিন বের করতে সক্ষম হই।

তাই রিটায়মেন্টের এলপিআর পিরিয়ড থেকেই অনলাইন পত্রিকার কাজটা শুরু করা যাবে। এর পর সামর্থ্য ও আর্থিক সংকুলানের মাধ্যমে একের পর আমার সঞ্চিত আইডিয়া গুলো বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাব। আমি সেই সুন্দর দিন গুলির সময় গুনছি যখন সবাইকে আরো কিছু ভাষা কর্ম ও মানবীয় নানা কল্যাণকর কাজ উপহার দিতে পারব।


No comments:

Post a Comment