Pages

Thursday, July 21, 2016

মোবাইলের অটোমেটিক্যালি রেকর্ডিং

আমি একদিন আমার সহকর্মী নতুন চাকুরীর ইয়ং অফিসারের সাথে আমাদের অধীনস্থ কয়েকজনের মিথ্যা বলা নিয়ে কথা বলছিলাম।আমি সেই ইয়ং কর্মকর্তাকে আফসোসের সাথে জানালাম, অনেককে দেখি সাধারণ ভুল ভ্রান্তিতে মিথ্যা বলে ভুল ভ্রান্তি ঢাকার চেষ্টা করে। এই প্রসঙ্গে আমার নবাগত সহকর্মী কর্মকর্তা আমার কথার সাপোর্ট করে একটা ঘটনা বলল। সে কয়েকদিন আগে তার অধীনস্থকে একটি কাজ করতে বলেছিল। পরে কাজটি পর্যবেক্ষণ করে কিছু ভুল পায়। তখন আমার এই সহকর্মীটি সেই ব্যক্তির কাছে জানতে চায় আমি আপনাকে মোবাইলে যেভাবে কাজটি বলেছি আপনি সেই ভাবে কাজটি করেননি। আমি আপনাকে মোবাইলে দুইবার কাজটির বর্ণনা দিয়েছি আপনি কাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলি বাদ দিয়েছেন। যেমন গেইট বানাননি। বেলুন দিয়ে সাজানো হয়নি। তখন সেই ব্যক্তি বলল আপনি তা বলেননি। তখন ইয়ং কর্মকর্তা বলল, ঠিক আছে আপনি এগুলো এখুনি ব্যবস্থা করে ফেলুন। সেই ইয়ং অফিসার বলল, অতঃপর আমি সেই ব্যক্তির সাথে কথোপকথনের আমার মোবাইলের রেকর্ডটি শুনলাম। সেখানে পরিষ্কার ভাবে তার সাথে অনুষ্ঠানের জন্য গেইট তৈরি ও বেলুন লাগানোর কথা বলেছি। অথচ সে অস্বীকার করল। আমার একবার মনে হল তাকে ডেকে আমার মোবাইলের রেকর্ডটি শুনাই। পরে মনে হল আর ঝামেলা না করে একে দিয়ে ভুল কাজগুলো আদায় করে নেই।

আমি গালে হাত দিয়ে আমার সামনে বসা ইয়ং অফিসারের দিকে তাকিয়ে রইলাম। আমার ২৫ বছর চাকুরী শেষ আর এক বছর চাকুরীর কর্মকর্তার কাছে এটা কি জানলাম। আমি পুনরায় তার কাছে জানতে চাইলাম তুমি কি মোবাইলে সব কথা রেকর্ড কর। সে বলল, জী স্যার। কিভাবে? গুগল প্লে স্টোরে এ ধরনের অ্যাপস আছে। আপনার মোবাইলে কোন কলে আসলে বা আপনি কল করলে অটোমেটিক রেকর্ড হবে। আপনার কথা বলায় কোন ডিস্টার্ব হবে না। আপনি প্রয়োজনে পুনরায় শুনতে পারেন বা মাঝে মাঝে মুছে মোবাইলের মেমোরি খালী করে রাখবেন। আমি হতাশ হয়ে বললাম আমি তোমাকে মাঝে মাঝে ঝেড়ে বকাঝকা দিয়েছি সেগুলোও কি তুমি রেকর্ড করেছ। সবই রেকর্ড হয়েছে স্যার, কিন্তু আপনি তো আমাকে ভালর জন্য আমি বড় ভাই হিসাবে আমি মনে করি। আমি একটু নড়ে চড়ে বসলাম। মনে হল এখন সম্পর্ক ভাল তাই বড় ভাই কোন কারণে ঝামেলা হলে এই ব্যক্তি তো রেকর্ড করা কথা দিয়ে জায়গা মত বসিয়ে দিবে। তার পর তাকে আমার অফিসিয়াল এ্যনরয়েড মোবাইলে সফটওয়্যারটি দিতে বললাম। সেই কর্মকর্তা জানালো এটাতে তার বেশ কিছু লাভ হচ্ছে। যেমন উপরস্থ কর্মকর্তাদের কারো কোন নির্দেশনা সঠিক ভাবে বুঝতে না পাড়লে রেকর্ডটি শুনে নিলেই হল পুনরায় নির্দেশনা প্রদানকারী কর্মকর্তাকে কল করার প্রয়োজন হয় না।
আমার মোবাইলে দেয়ার পর দেখলাম ভালই কাজ করছে। একটাই ঝামেলা তা হল মাঝে মাঝে মুছে দিতে হয়। নয়ত মোবাইলের স্টোরেজ মেমোরি ভর্তি করে মোবাইলকে স্লো করে দিবে।
এখন আর্মি, নেভী, এয়ারফোর্স ও বিজিবি প্রায় সবস্থানেই নারীরা কর্মরত। তাদের প্রায়শই অকুপেশনাল হেজার্ড ফেস করতে হয়। সেসমস্ত হেজার্ড থেকে বাচতে তারা মোবাইল রেকর্ডিং অ্যাপসটি ব্যবহার করতে পারে। তাদেরকে ডিস্টার্ব করলে এটা কাজে দিতে পারে। আসলে এর অনেক ভাল দিক আছে। মন্দ দিক হল ট্রাষ্ট। ধীরে ধীরে ট্রাস্টের সংকট দেখা দিবে। যা কিনা কর্ম পরিবেশ ভাল থাকবে না। আন্তরিকতা নষ্ট হবে।
আমার মোবাইলের অ্যাপসটি দিয়ে আমার একটা লাভ হয়েছে আর তা হল মোবাইলে অধীনস্থদের কাউকে আর বকা দেই না। অনেক ঠাণ্ডা ভাবে চিন্তা করে করে শক্ত শক্ত কথা বলি। যেন সেসব কথা ফাঁস হলে সন্মান হানি না হয়। তাই তো বলা যায়, ভাবিয়া বলিও কথা, বলিয়া ভাবিও না। । এমনিতেই অনেকে অফিসিয়াল ফোনে সর্তকতার সাথে কথা বলেন । কারণ মোবাইলের সার্ভারেও কথা রেকর্ড করা যায়।
 আগের মত রাগও করি না। রাগ হলে মনে করি আমার বকা গালিগালাজ রেকর্ড করে জায়গা মত ছেড়ে দিবে। এত সহজ ব্যবস্থা হাতে হাতে থাকতে নিজেদের রাগ নিয়ন্ত্রণের এটা একটা ভাল ব্যবস্থা। ক্রোধ কখনোই ভাল না। অনেক সময় অনেকে ভুল করে সাধারণত বলে থাকে মোবাইলে কথা বুঝতে পারিনি তাই ভুল হয়েছে। পুনরায় যখন জানতে চাওয়া হয়, না বুঝে থাকলে পুনরায় কেন পরিষ্কার ভাবে বুঝে নেননি। তখন আর কোন বক্তব্য পাওয়া যায় না। যারা মোবাইলে কম বুঝে তাদের সর্তক করার জন্য মোবাইল রেকর্ডিং উত্তম একটি ব্যবস্থা।
আর যাই হোক আমি ট্রাস্ট নষ্ট হওয়ার পর এই ব্যবস্থাটি ভাল। তা বলব না। তবে আমার কাছে মনে হয় যারা প্রতিনিয়ত অকুপেশনাল হেজার্ড ফেস করেন  তারা কল রেকর্ডিং পদ্ধতিটি গ্রহণ করেত পারেন। পরিশেষ আমি বলব আমরা সব সময় সচেতন হয়ে প্রযুক্তির ভাল দিকটাই ব্যবহার করব সেটাই হবে সকলের কাম্য

No comments:

Post a Comment