Pages

Thursday, November 3, 2016

বড় বড় সাইজের লেজারে বড় বড় কাজের প্রদর্শন


আমি বিভিন্ন অফিসে ব্যাংকে বিশাল লেজার বই অনেক পুরানো অনেক মোটা বড় বড় বই দেখে আমরা ভড়কে যাই। মনে হয় কি বিশাল লেখাপড়াই না হচ্ছে। আগের দিনের বড় মোটা বই নিয়ে টেবিলের উপর রেখে সরকার মশাইরা লেখালেখিতে বসতেন। আমি আমার অফিসের কিছু বড় বড় লেজার বা বই নিয়ে গভেষনা করে দেখলাম এগুলো ছোট করা যায় কিনা। মজার বিষয় হল সব লেজারই এ-ফোর সাইজের মধ্যে লম্বা বা চ্যাপ্টা করে করা যায়। আবার কলাম বেশী হলে কলামের মূল হেডিং ঠিক রেখে হেডিং বাদ দিয়ে কাগজ কেটে কেটে অসংখ্য কলাম করা যায়। এ লেখার শেষে একাধিক কলামের বিষয়ের প্রক্রিয়াটির আরো বিশদ আলোচনায় যাব। তাহলে এত বড় রেজিস্টার কেন? আমি অনেক একাউন্ট ক্লার্ককে এ ধরনের লেজার থেকে মুক্ত হতে বললাম। তারা কেন জানি মন খারাপ করল। আমার মনে হল, যে কোন পরিবর্তন আমরা সহজে গ্রহণ করতে চাই না। আমরা যে কোন বিষয়ে এমনকি তা যদি কঠিনও হয় তাতে অভ্যাস হয়ে গেলে তার থেকে বের হতে পারি না। অর্থাৎ কোন একটা কমফোর্ট জোনে সেট হলে তার থেকে বের হওয়া  কঠিন। আমরা এখনও অনেক প্রতিষ্ঠানে দেখতে পাই বিশাল বিশাল লেজার যা নাড়া চাড়া করার জন্য কমপক্ষে দুইজন প্রয়োজন।


আমি চাকুরীর প্রথমে যখন দেখতাম বিশাল বিশাল লেজার নিয়ে একাধিক ব্যক্তি হাজির কর্মকর্তার সাক্ষর করানোর জন্য। তখন সত্যি বেশ হাসিও পেত। বিরক্তিও পেত। তখন থেকে আমার ইচ্ছে ছিল যখনই সুযোগ পাব তখনই লেজারগুলো ছোট করে ফেলব। এভাবে অনেক আপত্তি সত্ত্বেও আমি অনেক স্থানের লেজার ল্যান্ড স্কেপ লিগ্যাল পেপার সাইজে আনতে পেরেছি। আমার সাথে দ্বিমত কারী ক্লার্ককে বলেছিলাম, কোন ডিটেল আমি কমাইনি। কোন কলাম কমাইনি। তাহলে সমস্যা কোথায়? সমস্যা হল মাইন্ড সেটে। আজকের যুগে বড় বড় লেজার ভীতিকর। মনে হচ্ছে অনেক বড় বড় কর্মযঞ্জ হচ্ছে।বড়সড় বই থেকে ছোট আকারের বই বহন করতে যেমন সুবিধা তেমনি ছোট জায়গায় বের করে লেখা যায়। আর সেসব বইগুলো বড় জায়গা নিয়ে বসতে হয়। আজকের যুগে আমাদের অপ্রয়োজনীয় ও ভাউতাবাজি কাজের কোন সুযোগ নাই। বড় বড় লেজারগুলো বেশী বড় বড় কাজের প্রদর্শন করে একটা ভাউতাবাজি পরিবেশের সৃষ্টি করে। সবচেয়ে ভাল হয় কম্পিউটারে সমস্ত লেজার আপডেট করা। তারপর সাপোর্টিং হিসাবে প্রিন্ট করে বছর ওয়ারী বাধাই করে রাখা যায়। আধুনিক ব্যাংকগুলো অবশ্য তা করছে। কম্পিউটারে প্রিন্ট করে নিলে তা ছোট ফন্টে এ-ফোর সাইজ কাগজে সংরক্ষণ করা সম্ভব।
একজন ক্লার্কের সাধারণ ভাবে এক্সেলে কিছু ঞ্জান সঞ্চয় করতে পারলেই একাউন্টিং ও লেজারের অনেক কাজ সে নিজের মেধা ও মনন খাটিয়ে করে নিতে পারবে। প্রতিষ্ঠানের ছোট খাট কোন কাজে সাধারণত এক্সেলই যথেষ্ট। এর জন্য অনেক টাকা খরচ করে কাস্টমাইজড সফটওয়্যার তেমন জরুরী নয়।


আবারও আসি ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে। আপনি একদম ডিটার-মাইন্ড যে কম্পিউটারে কোন কাজ করবেন না। যা করবেন তা খাতায় লিখিত ভাবে করবেন। অনেক কম্পিউটারে কোন কাজ করতে চায় না নিরাপত্তার ভয়ে। কম্পিউটারের যে কোন ফাইল ও তথ্য সবচেয়ে সহজে পাচার করা যায়। সেজন্য সরকারী ও গুরুত্বপূর্ণ কাজে অনেক প্রতিষ্ঠানই ম্যানুয়াল লেজার সংরক্ষণ করতে চাইবেন। এতে অনেক কলাম তৈরি করা ছোট লেজারের জন্য একটা বড় সমস্যা। প্রথমত: লেজারের লাইন বা রো-তে কোন সমস্যা নেই। লাইন বা রো বাড়াতে হলে পরের পেইজে চলে গেলেই হল। সমস্যা কেবলমাত্র কলাম নিয়ে। এটাও কোন সমস্যা নয়। এটাও অন্য পৃষ্ঠায় পার করা যাবে। তার আগে লেজারের মেইন কলামের লাইন বা রো এর মুল ক্রমিক ঠিক রেখে পরের পৃষ্ঠাগুলো প্রথম বা দ্বিতীয় কলাম বরাবর কেটে ছোট করে নিলেই একাধিক পৃষ্ঠা সহ একাধিক কলাম দেয়া যাবে। একটা সম্পূর্ণ হিসাব শেষ হলে পুনরায় একই ভাবে প্রথম কলাম স্থির রেখে অন্য পাতাগুলো কেটে নিয়ে অনেক কলাম বসানো যাবে। অনেক সময় এ,বি,সি লিখে অনেক নোটবুকে মার্ক স্থাপনের জন্য প্রথম কলামে কেটে রাখা থাকে। পদ্ধতিটিতে ওই ধরনের নোট বুক আকারে কাটা হয়। তবে এতে কেবলমাত্র লাইন বা রো এর ক্রমিক বরাবর অন্য কলামগুলি আনার জন্য প্রথম কলাম স্থির রেখে প্রথম কলামের প্রস্থের মাপের পর অন্য পৃষ্ঠাগুলো আড়াআড়ি কেটে ফেলা হয়। এতে অগণিত কলাম ও অগণিত পৃষ্ঠা প্রথম কলামের বরাবরের লাইন ও রো ঠিক রেখে তৈরি করা যায়। পরিশেষে বলব, লেজারিং কাজকে জটিল না করে আমরা সহজে বহনযোগ্য ও ব্যবহারযোগ্য লেজারের মাধ্যমে করতে পারি।

No comments:

Post a Comment