আমরা কোন মটরকে
বেল্ট,
পুলি, গিয়ার ইত্যাদি যে কোন মাধ্যমের সাহায্যে
ঘূর্ণন শক্তিকে অন্য মাধ্যমে স্থানান্তর করে ধান মাড়াই, আখ
মাড়াই ইত্যাদি অনেক অনেক কাজে ব্যবহার করি। পওয়ার টিলার, গাড়ীর
ফ্যান বেল্ট ইত্যাদি অনেক স্থানে আমরা রাবারের বেল্ট ও পুলি ব্যবহার করি। প্রায়
সমস্ত গাড়ীতেই আমরা গিয়ার বক্সের মাধ্যমে পাওয়ার ট্রান্সমিট করি। আমরা মটর থেকে যে
কোন মাধ্যমে পাওয়ার ট্রান্সমিট করলেই পাওয়ার লস হয়। তাই কোন মাধ্যম না নিয়ে মটর
দিয়ে যে কোন মেশিন ডাইরেক্ট চালনা করলেই পাওয়ার লস কম হবে। যেমন পানির মটর দিয়ে
ডাইরেক্ট পানির পাম্প চালনা করা হয়। আমরা অনেক কিছুই সরাসরি মটর দিয়ে চালাই। এটাই
এ্যাফিসিয়েন্ট ব্যবস্থা। আমাদের আশে পাশে সাধারণ বৈদ্যুতিক মটরগুলো সাধারণত
নির্দিষ্ট আরপিএম এ ঘুরে। তবে বর্তমানে ভেরিএ্যাবল আরপিএম বা স্পীড বাড়ানো কমানো
যায় এ ধরনের মটর বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। সনাতন মটরগুলো কার্বন ব্রাশের মাধ্যমে মটরের
বিদ্যুৎ কয়েলে পৌছায়। এই ব্রাশ দীর্ঘদিন চলার ফলে স্বাভাবিক নিয়মে ক্ষয় হয়। এতে
তার ও স্ফুলিঙ্গের মাধ্যমে বিদ্যুতের অপচয়ও হয়। এ ব্রাশলেশ মটর বিঞ্জানের নতুন
আগমন। ডাইরেক্ট ড্রাইভে ঘর্ষণ জনিত ক্ষয় না থাকায় অনেক অনেক দিন মটরগুলো স্থায়িত্ব
পায়। কোন কোন ম্যানুফেকচারার এগুলো দশ বছর পর্যন্ত গ্যারান্টি ও ওয়ারেন্টি দিয়ে
থাকে। ভেরিয়েবল স্পীড মটর সাধারনত ডিসি পাওয়ারের হয়ে থাকে তবে এসি ইনডাকশন মটরও
বর্তমানে ভেরিয়েবল স্পিডের তৈরি হচ্ছে। ডিসি মটরের মধ্যে ইনভার্টর এসির কমপ্রেসর
মটর এ ধরনের প্রযুক্তি। বর্তমানে গাড়ীতে ব্যবহার হচ্ছে হাই স্পীড এসি মটর এর ব্রাশ
নেই। স্পীড ভরিয়েবল করা সম্ভব। যে কোন মটরের স্পীড ভেরিয়েবল বা গতি কম বেশী করতে
পারলে তার জন্য আর গিয়ারের প্রয়োজন হবে না।
আগেকার দিনের
ওয়াশিং মেশিনে পুলি দিয়ে ওয়াশিং মেশিনের ড্রামকে ঘুরানো হত। এতে পুলির রাবার বেল্ট
প্রায়শই ছিঁড়ে যায়। রাবারের ব্যাল্ড ও পুলি ব্যবস্থাপনায় অনেক অনেক পাওয়ার অপচয়
হয়। ব্রাশলেছ ভেরিয়েবল স্পীড মটর দিয়ে সরাসরি ড্রামটি চালনা করলে এতে অনেক অনেক
বেশী পাওয়ার এ্যাফিসিয়েন্সি পাওয়া যাবে। ওয়াশিং মেশিন দীর্ঘদিন টিকবে ও কম বিদ্যুৎ খরচ করবে।
বাই সাইক্যালে হাব
মটর নামে ডাইরেক্ট ড্রাইভ মটর এখন চালু হয়েছে। সাইক্যাল কোন চেইনের মাধ্যমে পাওয়ার
ট্রান্সফার না হয়ে সরাসরি চাকাকে চালনা করে। এতে সাইক্যালের চেইনের মাধ্যমে যে
ইনএ্যাফিসিয়েন্সি হয় তা দূর হবে। আবার সাইক্যালের শক্তি বাড়ানোর জন্য দুই চাকায়ই এ
ধরনের হাব মটর সেট করা যেতে পারবে এতে স্বাভাবিক ভাবে শক্তি দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
যে কোন পাওয়ার
ট্রান্সমিশন হলো পাওয়ার লস তা আমরা বেল্টের মাধ্যমে, পুলির মাধ্যমে,
ঘর্ষণের মাধ্যমে, চাকার মধ্যমে, শ্যাফর্টের মাধ্যমে ও গিয়ারের মাধ্যমে করি না কেন, লস
থাকবেই। তাই যত কম পাওয়ার ট্রান্সমিশন করা যায় ততই লাভ ও এ্যাফিসিয়েন্ট সিস্টেম।
গাড়ীর চার চাকা একটি মটর দিয়ে চালানো যায়। আবার চার চাকায় চারটি মটর দিয়েও চালানো
যায়। একটি বড় ৪০০ হর্স পাওয়ারের মটর দিয়ে আপনি গিয়ার ও শ্যাফটের মাধ্যমে গাড়ীর চার
চাকায় ড্রাইভ দিলেন। একই কাজ আপনি চার চাকায় চারটি ১০০ হর্স পাওয়ারের ছোট মটর আপনি
চারটি চাকায় লাগাতে পারেন। এ মোটরগুলো হতে পারে ভেরিয়্যাবল স্পীডের মটর । এতে
আপনার গিয়ার ও শ্যাফটের মাধ্যমে পাওয়ার ট্রান্সমিশনের লস কমাতে পারবেন। আধুনিক গতিশীল
ইলেকট্রিক গাড়ীগুলো মূলত ডাইরেক্ট ড্রাইভ মটরের মাধ্যমেই তৈরির প্রক্রিয়া চলছে।
এতে বড় বড় মটর লাগিয়ে হেভি গাড়ী তৈরির প্রয়োজন পড়বে না। রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমে
যাবে। বৈদ্যুতিক গাড়ীতে বিদ্যুৎ খরচ কম হবে। পাওয়ার ট্রান্সমিশন লাগবে না বলে জটিল
যন্ত্রপাতির খরচও অনেক কমে যাবে। যন্ত্রপাতি কম থাকায় গাড়ী কম নষ্ট হবে। চারটি
মটরের যে কোন মটর নষ্ট হলে চাকাসহ মটরটি বদল করে নিলেই বৈদ্যুতিক গাড়ীটি পুনরায়
চলার উপযোগী হবে। স্পেয়ার হুইলের মত সহজেই টেকনিশিয়ান ছাড়াই গাড়ীর চালক চাকা সহ যে
কোন মটর বদল করলেই গাড়ী পুনরায় চলবে। এতে প্রয়োজন পড়বে না ট্রান্সমিশন ওয়েল বদলীর
মত ও অন্যান্য জটিল রক্ষণাবেক্ষণ। ডাইরেক্ট ড্রাইভ জ্বালানী সাশ্রয় ও বিদ্যুৎ
সাশ্রয়সহ রক্ষণাবেক্ষণ খরচে একটা বিপ্লব সৃষ্টি করবে বলেই ধারনা করা যায়। আগামী
দিনের জন্য ডাইরেক্ট ড্রাইভ প্রযুক্তি সবক্ষেত্রে ব্যাপক ভাবে প্রচলন হবে এটাই
আমাদের সকলের আশা।
No comments:
Post a Comment