Pages

Thursday, April 12, 2018

ঠোটের সিক্ততায় আঙ্গুল লাগিয়ে কাগজ উল্টানো


ঠোটের সিক্ততায় আঙ্গুল লাগিয়ে কাগজ উল্টানোতে আমাদের অনেকেরই অভ্যাস আছে আমার বড় ছেলে তখন  ক্লাস ওয়ানে পড়ছিল আমি ঠোটে আঙ্গুল টাচ করে আঙ্গুল সিক্ত করে বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছিলাম ছেলে হঠাৎ বলে উঠল পাপা, তুমি থুতুর দিয়ে পৃষ্ঠা উল্টাচ্ছ কেন তোমার থুতু আমার বইয়ের পাতায় লেগে যাচ্ছে তোমার শরীরের রোগ জীবাণু বইয়ে যাচ্ছে এটা তো ভাল হচ্ছে না ছেলের কথার পর থুতু দিয়ে পৃষ্ঠা উল্টানো ছেড়ে দিয়েছি প্রায় ১০/১১ বছর হতে চলল সময় লাগলেও থুতু দিয়ে পৃষ্ঠা ছাড়াই না অনেকে থুতু দিয়ে টাকা গুনেন এটা আরও ভয়াবহ অনেকে ভাবতে পারেন থুতু দিয়ে পৃষ্ঠাতো সবাই উল্টায় অনেক বড় বড় ডাক্তার, আমলা প্রায় সকলে থুতু ছাড়া পানি দিয়ে জোড় লাগানো পৃষ্ঠার জট ছোটানো মনে হয় অনেক ভাল ব্যাপার স্পঞ্জের কৌটায় পানি রেখে তা দিয়ে পাতা উল্টানো মনে হয় হাইজেনিক তাইতো স্পঞ্জে পানি রেখে ওভাবে বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টানো প্রচলন শুরু হয়েছে সব সময় স্পঞ্জ পানি রাখা যায় না বলে হয়ত আনহাইজেনিক থুতু সিস্টেম চালু আছে
আপনি একটি নতুন বই পেলেন আপনি বইটি থুতু লাগিয়ে বইটি পাতা উল্টাতে থাকলেন আপনি বইটির উপরের ডান কোনায় সবার মত থুতু লাগাচ্ছেন এই বইটি আপনার পড়া শেষ করে যখন আর একজন পড়তে নিল তখন সে আপনি যেখানে থুতু লাগিয়েছেন সেখানে সেও থুতু লাগিয়ে পৃষ্ঠা উল্টাবেন আপনার থুতু হয়ত শুকিয়ে গেছে কিন্তু আপনার কিছু সংক্রামক জীবাণু হয়ত রয়ে গেছে যা আপনার পর যে থুতু মেখে পাতা উল্টাচ্ছেন তিনি কিন্তু মনের অজান্তে আপনার সংক্রামক জীবাণু নিয়ে নিচ্ছেন আধুনিক স্বাস্থ্য সচেতনতার অংশ হিসাবে বাসার প্রতিটি সদস্যের গ্লাস বাসন আলাদা রাখি তেমনি তোয়ালে আলাদা রাখি সেই আপনি থুতু দিয়ে পৃষ্ঠা উল্টানোর কারণে বাইরের অনেক মানুষের থুতু মাখা কাগজ উল্টিয়ে আপনি তা আবার নিজের মুখেই থুতুর সাথে তুলে নিচ্ছেন ২০১৮ সালে পর্যন্ত প্রায় ১০ বছর যাবত আমি থুতু দিয়ে পৃষ্ঠা উল্টানোর অভ্যাস থেকে মুক্ত হওয়ার পর থেকে আমার সামনে কেউ থুতু দিয়ে পৃষ্ঠা উল্টালে আমি তাকে বলি অনুগ্রহ করে কাগজে থুতু লাগাবেন না আস্তে আস্তে সময় নিয়ে উল্টান তারাহুরো করার দরকার নেই প্রায় সবাই থুতু দিয়ে না উল্টানোর প্রস্তাবটা ভাল ভাবে গ্রহণ করেছে কেউ রাগ করেনি।
একটা গল্প আমাদের প্রায় সবার জানা একবার এক রাজা কোন একটা অপরাধের কারণে একজন পণ্ডিতের গর্দান নিলেন পণ্ডিতের শেষ ইচ্ছে ছিল রাজা যেন তার একটি বই পড়েন পণ্ডিতের মৃত্যু দণ্ডের পর রাজা পণ্ডিতের শেষ ইচ্ছে পূরণ করার জন্য পণ্ডিতের দেয়া বইটি পড়তে শুরু করলেন বইটির পৃষ্ঠাগুলো এমন ভাবে জট লাগানো ছিল যে রাজার সেই জট ছাড়াতে জিহ্বায় আঙ্গুল থুতু দিয়ে ভিজিয়ে নিচ্ছিলেন বইটি শেষে যখন রাজা পৈাছালেন তখন শেষ পৃষ্ঠায় লেখা ছিল প্রতিটি পৃষ্ঠা উল্টানোর সময় আপনি মুখে বিষ নিয়েছেন কারণ আমি প্রতিটি পৃষ্ঠায় বিষ মাখিয়ে রেখে ছিলাম কিচ্ছুক্ষণ পর আপনার মত “অন্যায্য রাজা”কে আমার মত পৃথিবীর মায়া কাটাতে হবে ধীরে ধীরে রাজা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন
আমরাও থুতু দিয়ে আনহাইজেনিক ভাবে যদি টাকা গুনতে থাকি বা কাগজ বইয়ের পাতা উল্টাতে থাকি তবে আমাদেরকে অনেক সংক্রামক ব্যাধির সাথে বসবাস করতে হবে আমি গত দশ বছরের পরিশ্রমে এমন এক অভ্যাসে এসেছি টাকা থেকে কোন কিছু গুনতে আমার আর পানি বা থুতুর প্রয়োজন হয় না সময় একটু বেশী লাগতে পারে তবে হাইজেনিক ভাবে থাকার চেয়ে সময়টা বড় কিছু নয় এটা একটা অভ্যাসের বিষয় আপনি আপনার সহকর্মীদের সংশোধন করতে থাকুন একসময় দেখবেন সবাই পানি বা থুতু ছাড়া কাগজ উল্টানো শিখে যাবে অভ্যাস বদল হবে

2 comments: