Pages

Thursday, July 19, 2018

সুপার ফুড সজিনা (মরিংগা)


আমার এক বন্ধু এক‌টি গাছ নি‌য়ে প‌রে আছেন। গাছ‌টি হল হাই ব্রিড সজিনা। সজিনা পাতা প্রতি সপ্তাহে কাটা যাবে। পাতা কেটে পাতা তা শাঁকের মত রান্না করা যাবে, পাকুড়া বড়া ক‌রে খাওয়া যাবে। পাটায় পিষে ভর্তা খাওয়া যাবে। সজিনা ধরলেও তাও খাওয়া যাবে। পাতা কাটার পর পাতার আটিগু‌লো কুচি কুচি ক‌রে গরুকে খাওয়ানো যাবে। এই  সজিনার কোন কিছু ফেলনা নয়। আমরা রসুন, তুলসী ও কালিজিরার বিশাল গুনের কথা শুনেছি। সজিনার ডাটা খাওয়ার উপকারিতা অনেকেই জানে না। মুখরোচক এই  সবজিটি  ডালের সাথে ও অন্যান্য ঝ‌োল কারীর সাথে আমরা খাচ্ছি। বাজা‌রেও সজিনার ডাটা ২০০ টাকা কেজি থেকে নেমে ঢাকার  বাজা‌রে ৪০/৫০ টাকা মূল্যে পৌছায়। বারোমা‌সি সজিনা আছে  আবার সিজনাল সজিনা আছে। সজিনা থেকে আরো বেশী উপকারী হল সজিনার পাতা। আফ্রিকায় অনেক এন‌জিও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে সজিনা পাতা শুঁকিয়ে তা বাচ্চা‌দের ও মহিলা‌দের খাই‌য়ে তা‌দের অপুষ্টি অনেক কমিয়ে এনেছে। ইউটিউবে অনেক তথ্য আছে। মরিংগা নি‌য়ে বেশ কিছু বইয়ের সন্ধানও পাওয়া যায়। যদি সজিনার পাতা খাই‌য়ে অপুষ্টি দূর করা যায় তবে এই  সহজ ব্যবস্থায় আমরা যাচ্ছি না কেন? আমরা হয়ত গ্রামে গঞ্জে অনেকেই জানে না। বাংলায় সজিনা লিখে গুগলে সার্চ করলে এত এত তথ্য জানা যাবে অকল্পনীয়। ইংরেজিতে সার্চ দি‌তে হবে মরিংগা লিখে। আমি একবার একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দেখেছি তিনি বাড়ী‌তে বাড়ী‌তে সবজির চাহিদা পূরণ করার জন্য সজিনার ডাল লাগা‌তে বলতেন। কারণ হিসাবে বলতেন এর শাক, ফুল ও ডাটা খাওয়া যায় আর কোন যত্ন ছাড়া এটা বেড়ে উঠে। উৎপাদনের সহজ প্রক্রিয়া এটা‌কে আরো জনপ্রিয় করেছে।
সজিনা পাতায় এমন কোন ভিটামিন বা মিনারেল নেই যা কিনা এর মধ্যে পাওয়া যাবে না। এটা সুপার রিচ একটা খাবার। নীচে তার কিছু বিবরণ:
১। সমপরিমাণ কমলার রস থেকে তিনগুণ ভিটামিন সি আছে।
২। সমপরিমাণ দুধের চেয়েও ২/৩ বেশি ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও জিংক রয়েছে।
৩। সমপরিমাণ গাজর হ‌তে চারগুণ বেশী বিভিন্ন ভিটামিন আছে।
৪। সজিনা পাতায় ভিটামিন, প্রো‌টিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট সবই আছে।
আমি এর মোটা দাগে কিছু বললাম। আধুনিক গবেষকরা তাই সজিনার পাতা‌কে নাম দিয়েছে পুষ্টির ডিনামাইট। প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল থাকার কারণে এটা প্রায় ৩০০ প্রকার রোগ নিরাময় কর‌তে সক্ষম। বিস্তারিত জান‌তে গুগল বা ইউটিউব সার্চ কর‌তে পারেন। অনেকেই বলেছেন সজিনার পাতা নিয়মিত দুই‌ সপ্তাহ খাওয়ার পর থেকে তারা শারীরিক পরিবর্তন গ‌ু‌লো  লক্ষ্য করা শুরু করেন।
আমরা সব সময় বিভিন্ন ধরনের খাবার খাচ্ছি। সব সময় শরীর সব রকম ভিটামিন ও মিনারেল পাচ্ছি কিনা আমরা নিশ্চিত নই। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে এক চামচ আর ঘুম থেকে উঠে এক চামচ সজিনা পাতার গু‌ড়ো শরবত ক‌রে খেলেই আপনি নিশ্চিত হলেন আপনার সকল ভিটামিন ও মিনারেল গ্রহণ করা হল। আর তা হল প্রাকৃতিক উৎস হ‌তে কোন সাইড অ্যা‌ফেক্ট নেই। এটা চিন্তা ক‌রেই আমার মত অনেকেই  সজিনা পাতা নিয়মিত খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতিদিন গাছ থেকে পাতা তুলে খে‌তে পারলে সবচেয়ে ভাল হয়। সেটা সম্ভব না হলে উপায় কিন্তু উপকার‌ভোগীরা বের ক‌রে ফেলেছে।  আর তা হল পাতা শুকিয়ে পাউডার ক‌রে নেয়া। সেই  পাউডার দি‌য়ে শরবত খেলেই হল। শরবত বানা‌তে চিনি, মধু, লবণ, লেবু ও এমনকি ঝাল টেস্টের জন্য কাচামরিচ গুড়াও দেয়া যায়।
সজিনা পাতা খাওয়ার ভক্তরা সজিনা পাতার গুড়ি দি‌য়ে ক্যাপসুল তৈরি ক‌রে বা ট্যাবলেট তৈরি ক‌রে নিয়েছে যেন বাজা‌রে বিক্রি সহজে করা যায়। কখ‌নো শরবতের আয়োজনে সমস্যা হলে ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল আকা‌রে খাওয়া যায়। তাহলে সজিনা পাতার সব ধরনের ব্যবস্থা হ‌য়ে‌ গেছে। আমি ও আমার স্ত্রী সর্বদা সতর্ক থাকি ওজন নি‌য়ে। তারপরও তা নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর। আমি ও আমার স্ত্রী ওজন কমানোর কারণে এটা পছন্দ করেছি। এটা যদি ওজন কমা‌তে সক্ষম হয়। অটোমেটিক্যালি ডাইবেটিস হবে না বা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। রক্তের খারাপ উপাদানগু‌লোর পরিমাণ কমে আস‌বে। চর্ব‌ি কমে যাবে। এগু‌লো ঘটলে ৩০০ রোগ প্র‌তি‌রোধ হবে তখন আর তা গাজাখু‌রি মনে হবে না। ৩০০ রকম রোগ থেকে ঝুঁকি থেকে বেঁচে গেলে সৃষ্টিকর্তার অনুকম্পায়‌ দীর্ঘ জীবন অর্জন সম্ভব হবে তা আশা করা যায়।

1 comment: