একটা মুরগীর বিচরনের জন্য কমপক্ষে এক বর্গমিটার জায়গা লাগে। মুরগীর সুস্থ স্বাস্থ্যের জন্য নাকি তিন বর্গ মিটার জায়গা প্রয়োজন। এভাবে পশু বিজ্ঞানীরা পশুর জন্য জায়গা বের করেছেন। কিন্তু আশরাফুল মাখলুকাতের থাকার জন্য নিদিষ্ট জায়গা বের করা গেছে কিনা জানি না। জেলখানার প্রতিটি অপরাধীর জন্য হয়ত বর্গ মিটার জায়গা নির্ধারন আছে। মানুষের জন্য কি আছে। একটা পরিবারের জন্য হয়ত আছে। স্বামী ও স্ত্রীর জন্য এক রুম। ছেলে মেয়ের বয়সভেদে দুইজনে এক রুম বা প্রত্যেকের আলাদা রুম, বাবা ও মা সাথে থাকলে তাদের জন্য এক রুম। গাড়ীর ড্রাইভার বা কাজের লোক থাকলে তাদের জন্য এক রুম। মেহমান আসলে তাদের জন্য এক রুম। বসার, পারিবারিক মিটিং ও টিভি দেখার জন্য এক রুম। রান্না ও ডাইনিং এর জন্য প্রয়োজনীয় রুম। দেখা যাচ্ছে যেন তেন ভাবেই চার/পাঁচজন সদস্য বিশিষ্ট পরিবারের জন্য ১০০০/১২০০ স্কয়ার ফিটের বাসা লেগে যায়।
যারা চাকুরীরত বা সরকারী বাসায় থাকেন তখন পরিবারের জন্য একটা বাসার মাপ বা প্যাটার্ন দাড়িয়ে যায়। তখন মাইন্ড সেট হয়ে যায় আমার ২২০০ বা ২৫০০ স্বয়ার ফিটের বাসা লাগবে।
বাসার সাথে অনেক সরকারী কর্মকর্তাকে সরকার কিছু লোক দেন যারা তাদের বাসস্থান রক্ষনাবেক্ষনে কাজে লাগে। মোটামুটি চাকুরী জীবনের প্রায় পুরোটা সময় সরকারী বাসায় থাকতে থাকতে আমি নিজে কোন বাড়ী করতে পারিনি। তার উপর ফ্লাট কেনার আইডিয়া বাদ দিয়েছি। কারন কোটি টাকার ফ্লাটে এক লক্ষ টাকাও ভাড়া পাওয়া যায় না। তার চেয়ে কোথাও বিনিয়োগ করে সেটা দিয়ে বাসা ভাড়া করাটা অনেক বেশী কার্যকর। তাই আমার চিন্তায় চাকুরী শেষে পেনশনের এককালীন টাকায় বাড়ী নয় বরং ভাড়ায় থাকব। এর মধ্যে আমার স্ত্রী একটা কন্ডিশান দিয়ে দিল সেটা হল ভাড়া বাড়ীটি হতে হবে ছোট। কারন কাজের লোক পাওয়া যায় না। কাজের লোক ছাড়া চলতে হবে। তখনই আমার মাথায় আসল মিনি ও মাইক্রো ফ্লাটের ধারনা।
মিনি বা মাইক্রো ফ্লাট ধারনাটা অনেক দেশে প্রচলিত আছে। ইউরোপ ও জাপানে ছোট ফ্লাটের ধারনা পাওয়া যায়। বেড ফোল্ড করে রাখা। ডাইনিং টেবিল ফোল্ড করে রাখা ইত্যাদি নানা ব্যবস্থায় স্পেস ম্যানেজমেন্ট করা যায়।
একটা শহর ধীরে ধীরে উপরের দিকে বাড়ছে। মানুষ বাড়ছে। আমার মানুষের সক্ষমতা বাড়লে উন্নত ও হাইজেনিক গৃহের চাহিদাও বাড়ছে। অপরদিকে সাধারন খেটে খাওয়া মানুষের জন্য প্রয়োজন ছোট ছোট ফ্লাট বা মিনি ফ্লাট।
বর্তমানে স্পেসের দাম বেশী। রক্ষনাবেক্ষন খরচ বেশী। স্পেস ম্যানেজমেন্ট অনেক অনেক বেশী প্রয়োজনীয় বিষয়। দুইজন মানুষ খেয়াল করে দেখুন ২৫০/৩০০ বর্গফুট ভালভাবে প্রতিদিন পরিষ্কার ও সুন্দর করে রাখতে পারে। এর বেশী হলে আরো মানুষ প্রয়োজন। শহরের স্বামী ও স্ত্রী ছোট পরিবারগুলো সাথে ছোট বাচ্চা নিয়ে কম স্পেসে থাকার চর্চা করা যেতে পারে। ইন্টারনেট বা ইউটিউবে এধরনের হাজার হাজার ভিডিও আছে। যেখানে নানা ফোল্ডিং আইডিয়া পাওয়া যায়।
ছোট স্পেসে পরিষ্কার করতে কম পরিশ্রম লাগে। ছোট বাসা মানে ছোট বাসা নয়। আমরা চাইলে একবার সোফা পেতে লিভিং রুম বানালাম। একবার ডাইনিং টেবিল ফেলে ডাইনিং রুম। একবার পড়ার টেবিল ফেলে পড়ার রুম। আবার বিছানা পেতে শোয়ার রুম হল। আইডিয়াটি হল আমরা যখন যে রকম রুম চাই তা পাব। শুধু ফার্নিচার নাড়াচড়া করে অ্যাডজাস্টমেন্ট। আর এই অ্যাডজাস্টমেন্টটাও সহজে করা যায়। ফার্নিচারগুলো নাড়াচাড়া করেই তা করা যায়। বড় বড় খাট, টেবিল ও অনান্য অ্যাডজাস্টমেন্ট অনেক সহজে করা যায়। একজন মেয়ে মানুষের দ্বারাও সাধারন টেনে/ঠেলে পরিবর্তন গুলো করা সম্ভব। ইউটিউব দেখেও মনে হয়, অনেকেই এ ধরনের ফার্নিচার বানাতে পারবে। বাংলাদেশের স্কয়ার ফিটের এখনো অনেক দাম। হয়ত অনেক তাড়াতারি ফোল্ডিং ফার্নিচার নিয়ে নানা রকম মিনি বা মাইক্রো ফ্লাটের আইডিয়া চালু হবে এবং মানুষ তা ব্যবহারে উদ্ভুদ্ধ হবে।
No comments:
Post a Comment