ভাইরাল মিডিয়া জগৎ। আকাশের শোকে
যখন মুহ্যমান বাংলাদেশের বিবেকবান মানুষ। তখন আবার তসলিমা নাসরিন গরম হয়েছেন।
জরায়ুর স্বাধীনতাকামী নারীর গরম হওয়াটাই স্বাভাবিক।
আমরা যারা বিবাহিত পুরুষ ও নারী, সন্তানসন্তুতি নিয়ে সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করি; তাদের জন্য আকাশের মৃত্যুটা শিক্ষণীয় বিষয়। যারা তসলিমা নাসরিনের জন্য
জরায়ুর স্বাধীনতা চায় তাদের জন্য আলাদা করে ভাববার বিষয় আছে। তরুণ বয়সে শুনতাম, অভিজাত এলাকায় ছেলে মেয়ের কাছে পার্টনার বদল, কাপড় বদলের মত। ওয়ান অর টু নো প্রবলেম। অনেক নারী খোলামেলা পোষাক পছন্দ করে
তাদের নাকি "খুল্লাম" মানে ‘খুলে ফেল্লাম’ স্বভাবের বলা হয়। এখন খুল্লাম স্বভাবের মেয়ের কনজারভেটিব স্বভাবের ছেলের
সাথে পড়লে বিপদ আছে।
সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে মানসিক ও
সাংসারিক জীবনটা অনেক বেশী জরুরী। বিবেকবানদের হা-হুতাশ নয় বা তসলিমা নাসরিনের
জরায়ু স্বাধীনতা নয় বরং সহনশীলতা বেশী জরুরী। প্রতিটি মানুষকে বুঝতে হবে সে
ইউনিক। স্ত্রী বা স্বামী তাদের সাথে জোড়া দেয়া প্রজননগত প্রয়োজনে প্রাকৃতিক
ব্যবস্থা। সেই পার্টনার সব সময় মনঃপূত হবে
সেটা কখনো সম্ভব নয়। গড়মিল থাকবেই। সেজন্য সমাজ ও ধর্ম তালাকের ব্যবস্থা
রেখেছেন। নিজের সাথে মিলেনি তালাক দিয়ে ভাল পার্টনারের সন্ধান করাটা জরুরী।
জীবনটা ছোট, এর মধ্যে পার্টনারকে একের পর এক সুযোগ দিয়ে শুধরানোর কিছু নাই।
এই ছেলে বা মেয়েকে না পেলে অন্যকে পেলে হবে না, এটাও ভুল ও
ইমোশনাল চিন্তা। অন্যর মাঝে ভাল মানুষী না খোঁজে আমরা নিজের দরদ, ধৈর্য ও উদারতা বাড়াতে পারি। একদম প্রথম থেকেই আমার মানসিকতা ছিল, আমার পার্টনার আমার মনোমত পাব না। তাকে আমার উপযোগী করতে চেষ্টা করতে
হবে। না পারলে খেদা হাফেজ। ক্লাস টেনে আমার এক বাংলা শিক্ষক দেবদাস পড়াতে গিয়ে
বলেছিলেন,
জীবনটা তোমার। এক পার্বতীতে পাওনি কি হয়েছে, যে চন্দ্রমুখী তোমাকে চায় তার কাছে যাও। জীবনকে অর্থবহ কর। আজও স্যারের
কথাটা কানে বাজে। সেদিন থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ছ্যাকা খেলে যে চায় তার কাছে যাব।
জীবন অর্থবহ করব। পার্টনারের কারণে আত্মহত্যা জীবনের সবচেয়ে বড় পরাজয় বা
কাপুরুষতা। অনেক পুরুষ ভাবে ‘আমি অক্ষম স্ত্রী অন্য
কারো কাছে চলে যাচ্ছে’ এটা আমার জন্য লজ্জাজনক। বেঁচে লাভ নেই। আমি হলে সেক্ষেত্রে কম চাহিদা সম্পন্ন
স্ত্রী লোক খোজতাম। বেশী যৌন চাহিদা সম্পন্ন পার্টনারকে ত্যাগ করতাম। একবার
ইন্টারনেটে দেখলাম একজন মেয়ে চার জনের সাথে সেক্স করেও পরিতৃপ্ত হয় না। এ গুলোও
মানসিক রোগ। এদের দ্রুত মানসিক চিকিৎসা প্রয়োজন। কোন পুরুষ তার কোমড়ে জোর বেশী
না কম,
সেটা নিয়ে ব্যস্ত না হয়ে তার উপযোগী কম চাহিদা সম্পন্ন
নারী খোঁজা প্রয়োজন।
সমাজে যে পুরুষের স্ত্রী বার বার
চলে যায়,
তাকে নাকি অন্যরা হিজড়া ভাবে। স্ত্রীকে সে সেটিসফাই করতে
পারে না। একটা নারী বিবাহিত না থাকলে সে হিজড়া হয় না। একটা পুরুষ হিজড়া হয়ে যায়।
সেদিন একটা প্রাংক দেখলাম। মেয়েদের জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে তারা যৌনকাজে অভিজ্ঞ
পুরুষ চায়, না অনভিজ্ঞ পুরুষ চায়। শতকরা ৯০% মেয়ে অভিজ্ঞ পুরুষ চায়। কারণ অনভিজ্ঞ
পুরুষ তাকে যথাযথ সন্তুষ্টি নাও দিতে পারে। মেস করে ফেলতে পারে যৌন কার্যক্রম।
নারীরা সেই রিস্কে যেতে চান না। অপর দিকে পুরুষ চিন্তা করে নারীকে আমার মত
তৈরি করে নিব। নারীর আগের অভিজ্ঞতা জ্ঞান প্রয়োজন নাই। থাকলে বরং অসতী হয়ে গেল।
এখন পুরুষ ইচ্ছে করুক আর না করুক আধুনিক নারীরা ইন্টারনেটের বদৌলতে সব ধরেনের
জ্ঞানে তুষ্ট। অনেক নারী নিয়ন্ত্রণ না করতে পেরে প্রাকটিক্যাল জ্ঞানে চলে যাচ্ছে।
যারা প্রাকটিক্যাল লার্নিং চলে যাচ্ছে, সেখানেই আকাশের
মত রক্ষণশীল যুবকদের সমস্যা হচ্ছে।
উপায় কি? নৈতিক শিক্ষা। আকাশ এক নারীর জন্য আত্মহত্যা করেছে। সেখানে ইসলাম ধর্মে চার
বিয়ে করার অনুমতি দিয়েছে। স্ত্রীর স্বেচ্ছাচারিতায় আকাশের উচিত ছিল স্ত্রীকে
তালাক নোটিশ পাঠিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করা। আর নিজের জীবনকে মানব কল্যাণে ব্যয় করা।
একজন মানুষ কষ্ট করে এতটা বছর ধরে ডাক্তারি পড়ল। তার কাছে সমাজের অনেক প্রাপ্যতা আছে। তার এই অকাল তিরোধান মেনে নেয়া যায় না।
আমাদের সমাজে অনেক অনেক মানুষ আছে
যারা স্বামী বা স্ত্রীর স্বেচ্ছাচারিতায় ভুগছে। এই ধরনের মানুষদের জন্য আমার
উপদেশ শরীয়া মোতাবেক এক বা সামর্থ্য থাকলে একাধিক বিয়ে করুন। সুস্থভাবে বাঁচুন।
নিজে সুখী থেকে সমাজকে সুখী করুন। রূপকে নয়, নারী/পুরুষের মনের মিলটার জন্য তালাশ
করুক। পরস্পরকে বুঝুন। মনটা বুঝুন। নারী বা পুরুষ পরস্পরের সমাজ ও পরিবেশ বুঝুন।
আপনার উপযোগী হলে তাকে গ্রহণ করুন। রূপকে নয় মানুষকে খুঁজুন। এতে আপনার পৃথিবী স্বর্গীয় হবে। নরক যন্ত্রণা পাবেন
না।
পরিশেষে বলব, আকাশ ও মিতুর ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় প্রমাণিত হয় ধর্মীয় অনুশাসন সমাজকে সুশৃঙ্খল
করতে পারে। নারী পুরুষের সম্পর্কে ইমোশন নয় বাস্তবতায় ও সামাজিক দায়বদ্ধতায় আনতে
হবে।
No comments:
Post a Comment