Pages

Thursday, April 4, 2019

বেকার থাকা সহজ নয়

আমার মা‌ঝে মা‌ঝে মনে হয় বাংলা‌দে‌শের মানুষ কখনও বেকার থে‌কে না খে‌য়ে মরার কথা নয় য‌দি তার দুই হাত বা দুই পা থা‌কে। বাংলা‌দে‌শে লেবার সংকট। তাই মজুরীর বি‌নিম‌য়ে কাজ সব জায়গায় আছে। আ‌গে কৃ‌ষিকাজ লাভজনক ছিল না এখন কৃ‌ষিকাজ লাভজনক হ‌চ্ছে। সা‌রের প‌রিবর্ত‌ে  কেঁচো সার বা ভার্মী কম্প‌োস্ট দি‌য়ে খরচ ক‌মে যাচ্ছ‌ে। জ‌ৈব বালাইনাশক ব্যবহার ক‌রে কীটনাশ‌কের খরচ শূন্য হ‌য়ে যাচ্ছ‌ে। মাল‌চিং পেপার বা জ‌ৈব মাল‌চিং ব্যবহার ক‌রে জ‌মি চাষ আগাছা বাছার লেবার খরচ অ‌নেক ক‌মে গে‌ছে। একই ভা‌বে মাল‌চিং এর কার‌ণে পা‌নি কম লাগ‌ছে। পা‌নি আ‌রো কমা‌নো যায় ড্রিপ ই‌রি‌গেশ‌নের মাধ্য‌মে।
‌মে‌য়েরা গৃহ কর্ম‌ের পাশাপা‌শি ভার্ম‌ি কম্প‌োস্ট  উৎপাদন কর‌তে পা‌রে মা‌সে ৮/১০ হাজার টাকা নি‌শ্চিত আয় কর‌তে পা‌রে। তার জন্য দি‌নে ক‌য়েক ঘন্টা সময় দি‌লেই চ‌লে। এখন পর্যন্ত ঝিনাইদহ, কু‌ষ্টিয়া, ময়মন‌সিংহ, নরে‌সিংদ‌ী ও কু‌মিল্লা সফলতা পে‌য়ে‌ছে। চিন্তা করুন বাংলা‌দেশ হাজার হাজার কো‌টি টাকার কীটনাশক ও সার আমদানী থে‌কে মুক্ত হ‌তে পা‌রে শুধু জ‌ৈব সার ও জ‌ৈব বালাইনাশক ব্যবহা‌রে। কৃষক হ‌তে পা‌রে সচ্ছল। দে‌শের মানু‌ষের হাজার কো‌টি টাকা অর্গা‌নিক শশ্য ও শাকসব‌জি খাওয়ার কার‌নে বে‌চে যা‌বে স্বাস্থ্যখা‌তে আ‌রো হাজার কো‌টি টাকা। পৃ‌থিবীর দ্ব‌িতীয় বৃহত্তস গার‌মেন্টস শিল্প বাংলা‌দে‌শে র‌য়ে‌ছে। তাই নারী‌দের বেকার থাকার কোন সু‌যোগ নাই। এখন বেকার থাক‌লে বল‌তে হ‌বে শখ ক‌রে বেকার থাকা।
আ‌মি জা‌নি বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ের ছাত্র/ছাত্রীরা ক্ষে‌পে যা‌বে দে‌শে প্র‌তিবছর আট লক্ষ শি‌ক্ষিত বেকার যুবক/যুবতী ত‌ৈরী হ‌চ্ছে। এ‌দের কি হ‌বে। সমাধান একটাই। দে‌শে অ‌নেক এ‌ক্সি‌কিউ‌টিভ জব বাড়া‌তে হ‌বে। উপ‌জেলায় কর্মকর্তা বাড়া‌তে হ‌বে। দে‌শের সকল দপ্ত‌রে কর্মকর্তা বাড়া‌তে হ‌বে। প্র‌য়োজ‌নে ইউ‌নিয়ন পর্যা‌য়ে কর্মকর্তা নি‌য়োগ দি‌তে হ‌বে। প্রাই‌ভেট প্র‌তিষ্ঠান বাড়া‌তে হ‌বে। আপ‌নি য‌দি খোজ নেন কা‌য়িক প‌রিশ্র‌মের লো কস্ট জ‌বের কোন ঘাট‌তি নেই। ঘাট‌তি কেবল বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ের পড়ুয়া‌দের। বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ে পড়া অবস্থায় ছাত্র/ছাত্রীদের কিছু কিছু কা‌জে দক্ষ করা অ‌তি প্র‌য়োজন। যেমন: তা‌দের গাড়ী চালনায় দক্ষ হওয়া, ক‌ম্পিউটা‌রে ওয়ার্ড, এক্স‌েল ও  পাওয়ার প‌য়েন্ট‌ জানা প্র‌য়োজন। ইং‌রেজীতে কথা বল‌তে পারা প্র‌য়োজন। প্র‌েজেন্ট‌‌েশান দেওয়ার দক্ষতা থাক‌তে হ‌বে। ত‌বে আশা করা যায় এ ধর‌নের দক্ষ অনার্স টাইপ শি‌ক্ষিত যুবক যুবতী দে‌শে বি‌দে‌শে চাকুরী পা‌বে। বেকার থাক‌বে না। আমা‌দের দে‌শে ডি‌প্লোমা ই‌ঞ্জি‌নিয়ার বেকার থাকার কথা নয়। নার্স বেকার থাকার কথা নয়। ডাক্তাররা বি‌সিএস না কর‌ল্লে না‌কি বেকার অথচ মৃত্যুর আ‌গের দিন পর্যন্ত ডাক্তার‌দের বেকার থাকার কথা নয়। আপ‌নি এমএ পাশ। আ‌রো কোন দক্ষতা আয়ত্ব ক‌রেন নাই। অথচ চা‌চ্ছেন ওয়াল্ড ক্লাস জব। আমার কা‌ছে ম‌নে হয় প্র‌তিটা মানুষ শি‌ক্ষিত হওয়ার সা‌থে সা‌থে ইনকাম করার জন্য দক্ষতায় আগা‌তে হ‌বে। শুধু পড়া‌শোনা করলাম ইনকাম করা জানলাম না। তা ঠিক নয়। প্রথ‌মেই কিভা‌বে টিউশন করাতে হয়, এটা শিখ‌তে হ‌বে। নি‌জে একটা লিসন নি‌য়ে তা অপর‌কে শেখা‌নো এটা কিন্তু যেন তেন বিষয় নয়। তার জন্য অনুশীলন কর‌তে হ‌বে। প‌ড়ি‌য়ে বু‌ঝি‌য়ে নেয়ার টেক‌নিটটাও বুঝ‌তে হ‌বে। ভাল শিক্ষক হিসাবে ছাত্রজীব‌নে যে আত্মপ্রকাশ কর‌তে পার‌বে সে ভ‌বিষৎ এ ভাল মা‌নের প্রে‌জেন্টেশন দেয়ার কৌশল ও আয়ত্ব কর‌তে পার‌বে। তাই ছাত্র/ছাত্রী‌দের টিউশনী হল নি‌জেকে উপার্জনমূখী করার প্রথম ধাপ। ছাত্র/ছাত্রী যত বড় ধনীর সন্তানই হোক না কেন ছাত্রজীব‌নে পার্ট টাইম উপার্জন করার ব্যবস্থা ক‌রে নেয়াটা বরং অ‌নেক ফলদায়ক।

‌বি‌য়ের বাজা‌রে এসএস‌সি পাশ সরকারী কর্মজী‌বি ভাল না অনার্স পাশ বেকার ভাল। সবাই বল‌বেন, এসএস‌সি পাশ চাকু‌রে ভাল। অনার্স পাশ আর যে কোন স্কি‌লে উপার্জন কর‌তে পার‌লেন না। তাহ‌লে হ‌বে না। পাশ দিলাম চাকুরী পে‌য়ে গেলাম। জি‌তে গেলাম। য‌দি প্র‌তি‌যোগীতায় চাকুরী না হয় তখন? সবার প্রথম লক্ষ্য চাকুরী। আ‌মি অ‌নেক‌েই দে‌খি অনার্স পাশ ক‌রেছ‌ে টিউশনী ও প্রাই‌ভেট ছোটখাট চাকুরীতে লে‌গে আ‌ছে। তারপর বি‌সিএসও ক‌রে ফেল‌ছে। যে যাই বলুক এরা কিন্তু রিয়াল হিরু।

তাই শুধু পড়া‌শোনা নয় উপার্জনমূখী হওয়াটা প্র‌তি ছাত্র/ছাত্রী‌দের লক্ষ হওয়া প্র‌য়োজন। ত‌বেই ক‌মে আস‌বে জা‌তির অ‌ভিশাপ শি‌ক্ষিত বেকা‌রের সংখ্যা।


1 comment: