একদিন আমার এক বন্ধু বলছিল আমরা যারা ১৯৭০ সালের আগে পিছে জন্ম গ্রহন করেছি তারা লাকী। আমি জানতে চাইলাম কিভাবে? আমার বন্ধু বিশ্লেষন করল; আমরা জন্মের পর দুই/একটি কলের গান দেখেছি। ভিতরে বড় বড় আ্যানোড ক্যাথোড টিউবের তৈরী বড় বড় রেডিও সেট দেখেছি। বাইসকোপ দেখেছি। ধীরে ধীরে প্রযক্তির অগ্রগতিতে আমরা ক্যাসেট টেপ, ভিডিও ভিসিআর টেপ বিলুপ্ত হতে দেখেছি। আমরা ফিলমের ক্যামেরা বিলুপ্ত হতে দেখেছি। আমরা অনলাইন যুগে আছি। বড় বড় মোবাইল সেট থেকে আমরা টাচ ফোন দেখছি। স্টীম ইঞ্জিনের রেলগাড়ীর পর আমরা বুলেট ট্রেন দেখছি। আমরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট দেখছি। আমরা ছোটবেলা চাঁদে মানুষ যাওয়া দেখেছি। তারপর মহাকাশ স্টেশান স্থাপন হওয়া দেখেছি। আমরা তার পর মংগলে মানুষকে যেতে দেখব। ৫জি ইন্টারনেট দেখব। কম খরচে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট দেখব। আমরা বিজ্ঞানের উন্নতির এমন একটা পর্যায় দেখছি, যখন মানুষ অনেক অনেক বেশী বিনোদন ও আরাম আয়েশ ভোগ করতে পারছে। ৫জি ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে হয়ত আমরা ক্যাবল টিভি, ডিটিএইচ ইত্যাদির ব্যবহার কমে যেতে দেখব। মোবাইল, টিভি ও সমস্ত ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ইন্টারনেট কানেকটেড থাকবে রিমোটলী অপারেট করা যাবে। সমস্ত গাড়ী ও কার ড্রাইভারলেছ হয়ে যাবে। স্টোরেজ ক্লাউডে চলে যাবে। ক্যান্সার, ডায়োবেটিক ও এইডস এর টিকার প্রচলন হবে ও দূরারোগ্য ক্যান্সারের চিকিৎসা করে মানুষের আয়ু বেড়ে যাবে। মংগল গ্রহে মানুষ যাবে। পিতামাতারা মংগল গ্রহে সন্তানদের সাথে স্কাইপিতে কথা বলবে। কেন যেন মনে হয় ১৯৭০ সালে জন্ম হয়ে যদি কেউ যদি ৮০/৯০ বছর বাঁচে বা ২০৫০ বা ২০৬০ বছরে মারা যায় তবে প্রযুক্তির এত এত উন্নয়ন দেখবে এবং প্রযুক্তির উন্নয়ন এত বেশী পুর্নাংগতা পাবে যা কিনা পরের ১০০০ বছরে তেমন গতিতে আগাবে কিনা সন্দেহ আছে। এখন যদি আমরা ৫জি গতি পেয়ে থাকি যা কিনা আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় বেশী মনে হয়। তবে আগামী ১০০০ বছরে আর কত আগাতে পারে। কম্পিউটার প্রসেসরের গতি যত বেড়েছে আগামী ১০০০ বছরে আর কত বাড়বে বলে ধারনা করা যাচ্ছে না। ১০০০ বছর আগে মানুষ সিদ্ধ করে ভাত রান্না করে খাচ্ছে। এখনও খাচ্ছে। আগামী ১০০০ বছরেও মনে হয় খাবে। তাই অনেক কিছুই বদলায় না। কাপড় বদল হচ্ছে কিন্তু কাপড়ের তৈরী শার্টের ডিজাইন পরিবর্তন হলেও বহু বছর ধরে টিকে আছে। আগামী ১০০০ বছর ধরে শার্ট প্যান্ট টিকে থাকবে হয়তবা। একজন মানুষ মনে করি কৃত্রিমভাবে বাচিয়ে রাখা হল ১০০০ বছর পর তাকে কম্পিউটার দেয়া হল। সে দেখল ১০০০ বছরে কম্পিউটারের এত উন্নতি হয়েছে সে চালাতে পারছে না আবার এত ফ্যান্ডলী হল চালাতে কোন সমস্যাই হচ্ছে না। তবে উন্নয়ন বা উন্নতি হাজার বছরে হাজার গুন উন্নতি হয় না। কারন প্রযুক্তিরও একটা সেচুরেশন আছে। একটা পর্যায়ের পর অগ্রগতি আর আরএন্ডডি হয় ধীরে ধীরে। আমরা বিগত ১৯৭০ সালের আসে পাশের মানুষরা যা দেখে যাচ্ছি তার পর প্রযুক্তির উন্নয়নটা অত দ্রুত হবে বলে মনে হয় না। তাহলে ১০০০ বছর পর ৫জি থেকে ক্রমান্বয়ে ১০জি হবে। মোবাইল ফোন ফোল্ডেড ও ছোট হয়ে হাত ঘড়ির মত হয়ে যেতে পারে। সমস্ত রোগের টিকা পাওয়া যাবে। মানুষ তখন অনেক বেশী বাঁচবে। বেশী খাবে কিন্তু মোটা হবে না সেই ব্যবস্থাও চালু হবে। মংগল গ্রহে মানুষ যাবে কয়েক মাস সময় লাগলেও মানুষ হয়ত ট্যাবলেট জাতীয় খাবার খাবে। টয়লেট হবে না। খিদা লাগবে না। এমন ট্যাবলেট আসতে পারে শরীরের পানি ইউরিন হয়ে বের হওয়ার প্রয়োজন পরবে না। রিসাইক্যাল হয়ে ইউরিনের পানি পুনরায় শরীরে ব্যবহার হবে। শুধুমাত্র চামড়ার মাধ্যমে বাষ্প হয়ে যে পানিটুকু বের হয় ততটুকু পানি হয়ত ব্যবহার হবে। স্পেস স্টেশানে নভোচারীদের ইউরিন রিসাইক্যাল করে সেই পানি পুনরায় খাচ্ছে। তবে যে যাই বলুক পরের জেনারেশন কেউ আমার লেখাটি পড়লে নিশ্চয়ই বুঝতে পারবে আমরা কত দ্রুত প্রযুক্তির পরিবর্তন দেখেছি। আমার মেয়ের ৯ বছর বয়সে মেয়ের জন্মের আগেই স্মার্ট ফোন পৃথিবীতে ছিল। এই মেয়ের জীবদ্দশায় স্মার্ট ফোন পরিবর্তন হয়ে অন্য কি আসবে জানি না। তবে আমার মনে হয় ফোন ফোল্ডিং হবে, আরো পাতলা হবে, আরো শক্তশালী ইন্টারনেট থাকবে। মোবাইল ফোন হয়ত ঘরে বিদ্যমান আলো ও ঘরে রাখা ম্যাংগনেটিক ফিল্ড থেকে চার্জ হবে। আলাদা চার্জ করতে হবে না। মোবাইল থেকে ঘরের সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রন করা যাবে। হাই রেজুলেশন লাইভ ব্রডকাস্ট করা যাবে। আর অনুমান নয়। নি:সন্দেহে বলা যায় প্রযুক্তির অনেক অনেক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়ে আছে উনিশশত সত্তর সালের নিকটবর্তী জেনারেশন। পরিশেষে বলব, আমাদের পরের জেনারেশন আরো ভাগ্যবান হবে, কারন তারা অন্য গ্রহে বেড়াতে যাবে। অনেক অনেক বেশী বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকবে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment