ইংরেজি বাংলা মিলিয়ে একটা হেডিং দিলাম। রাস্তার পাশের হোটেল রেস্টুরেন্ট
যেটাতেই যাই না কেন, কেউ যদি ডিসপোজেবেল খাদ্যের আধার ব্যবহার করে তাকেই আমরা দূষণকারী
বলতে পারি। ম্যাকডোনালস, কেএফসি, ডোমিনোস ও সাবওয়ে যখন আপনি খেতে যান না কেন সকল খাবারের
সাথে একগাদা টিস্যু, কাগজ, প্লাস্টিক ও ক্যান আপনাকে দেয়া হবে। খাবার শেষে তা আবার
আপনি তাদের ডাস্টবিনে ফেলবেন কত হাইজেনিক তাই না। মানুষের হাতের ধোয়া নাই। অপরিষ্কার
নয়। হাইজেনিক পরিবেশনা। কত ভাল ব্যবস্থা তাই নয় কি? আপনি চাইনিজ বা অন্যান্য রেস্টুরেন্টের
মত ক্রোকারীজ ও কাটলারিজ ব্যবহার করলে তা ওয়ান টাইম হতে অধিক পরিমাণ হাইজেনিক হবে।
কিভাবে? আপনি যত বেশী টিস্যু ব্যবহার করবেন। আপনি তত বেশী কাঠ
কাটলেন। আপনি যত বেশী রঙ্গিন কাগজ ব্যবহার করলেন তত বেশী কাগজ তৈরি করতে কাঠ, কালী
তৈরি করতে অন্যান্য ক্যামিক্যাল ও ছাপাতে কয়লা পুড়িয়ে তৈরি বিদ্যুৎ খরচ করলেন। আপনি
চিনামাটির বাসন বার বার ধুয়ে ব্যবহার করলে আপনার পরিবেশের ক্ষতি ও অপচয় কম হয়। অধিকাংশ
এয়ার লাইনে ডিসপোজেবল পাত্রে খাবার দিলেও অনেকে এয়ার লাইনে চীনামাটি, প্লাস্টিক বা
কাচের পাত্র ব্যাবহার করে এটা অবশ্যই এটা ভাল দিক। যত বেশী ডিসপোজেবল পাত্ররের ব্যবহার
তত বেশী পরিবেশ দূষণ।
ফাস্টফুডের দোকানের খাবার ফাস্ট ভাবে বিক্রয় করে যে বিপুল পরিমাণ
বর্জ্য জমা হয় তা শহরের উপকণ্ঠে ফেলা হয় আর তা সাধারণ মানুষের বাসস্থানের আসে পাশের
পরিবেশে ফেলা হয়। প্লাস্টিক ক্যান, কাগজের প্যাকেট ইত্যাদির ভয়াবহ ভাবে চারিদিকে ছড়িয়ে
ছিটিয়ে যাচ্ছে। আমরা কিভাবে পুরো সিস্টেমটিকে পরিবেশ বান্ধব করতে পারি। তার জন্য আমাদের
বেশী কস্ট করতে হবে না। ফাস্টফুডের পরিবেশনটাকে আমরা অন্যান্য হোটেলের আদলে করলেই চলবে।
প্রথমত: ডিসপোজবেল গ্লাস না দিয়ে মোটা গরম পানিতে ধোয়া প্লাটিকের
গ্লাস দেয়া যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত: ডিসপোজেবল বাটি ও প্লেট ব্যবহার না করে মোটা মেলামাইন
বা কাচের বাটি ও প্লেটে খাবার পরিবেশন করা যায়।
তৃতীয়ত: রঙ্গিন ও ছাপানো কাগজ ব্যবহার না করে সাদা কাগজ ব্যবহার
হতে পারে। রংগিন ও ছাপানো কাগজ বিদ্যুৎ, রং ইত্যাদির অপচয় ঘটায়।
চতুর্থত: টিস্যু পেপারের পরিবর্তে কাপড়ের ন্যাপকিন দিলে মন্দ হয়
না। তবে যাদের কাপড়ের ন্যাপকিন ব্যবহারে সমস্যা তারা টিস্যু পেপার ব্যবহার করতে পারেন।
ফাস্টফুডের দোকানে ফাস্ট টাইপ কার্যক্রমে ডিসপোজেবলের ব্যবহার
কমানোটা হবে অভ্যাসের ব্যাপার। ন্যাপকিন দ্রুত ধোয়ার জন্য ওয়াশিং মেশিন, গ্লাস, প্লেট,চামচ
ও বাটি ধোয়ার জন্য ডিশওয়াসারের জন্য অর্থ ব্যয় করার প্রয়োজন হবে। আর ম্যানুয়ালি করলে প্রাথমিকভাবে খরচ বেশী হলেও দীর্ঘদিন
ব্যবহারে খরচ কমে যাবে।
মনে করি কাপড় দিয়ে একটি ন্যাপকিন বানাতে খরচ দশ টাকা। একটি ন্যাপকিন
যদি ৫০ বার ধুয়ে ব্যবহার করা যায় তবে প্রতিবারে ব্যবহারে খরচ: ১০.০০ ভাগ ৫০ =২০ পয়সা।
অপরদিকে একটি পেপার ন্যাপকিনে খরচ ৭০ পয়সা। ৫০ পয়সা সাশ্রয়। মূলত পরিবেশ দূষণের বিবেচনায়
আরো বেশী সাশ্রয়ী।
ডিসপোজবেল একটা প্লেটের মূল্য ৫ টাকা হলে ১০০ টাকায় প্লাস্টিক
বা মেলামাইনের প্লেট পাওয়া যায়, যা কিনা সাবান পানি ও গরম পানি দিয়ে ধুয়ে শতবার ব্যবহার
করা যাবে। খরচও কম হবে। মনে করি ডিসপোজেবল ১০০ টি প্লেট, ১০০ টি গ্লাস ও ১০০ সেট চামচে
খরচ হল প্রতটিতে ১০/১২ টাকা হিসাবে ১০০০/১২০০ টাকা। তাই ১০০ টি প্লেট গ্লাস একজন প্রফেশনাল
লেবার দুই ঘণ্টায় ধুয়ে ফেলতে পারবে। একটা লেবারকে বর্তমান বাজার দরে ৫০০ টাকা চার্জ
দিলেই হল। নিবিঘ্নে প্রায় ৫০০ টাকা সেভ হবে। তবে কেন ডিসপোজেবলের ব্যবহার। কারণ একটাই
ডিসপোজেবল সামগ্র্রির মূল্য গ্রাহক দিচ্ছে। প্লেট ধোয়া বা সাজানোর ঝামেলায় কেউ যাবেন
না। এটাই কারণ। সেই সাথে আওয়াজ তুলবেন ডিসপোজেবল বেশী হাইজেনিক। যদি যথাযথ ডিটারজেন
ও গরম পানি দিয়ে ধোয়া হয় তবে অন্যান্য সকল ক্রোকারীজ ও কাটলারীজ হাইজেনিক। আর দেরী
নয় আমাদের চারিদিকে ডিসপোজেবল দিয়ে পরিবেশনকারী ফাস্টফুডের প্রতিষ্ঠান গুলিতে পরিবেশ
দূষণকারী ডিসপোজেবল দ্রব্যাদি ব্যবহার বন্ধ করিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
No comments:
Post a Comment