এই পরীক্ষাটি করার জন্য আমাদের
একটি শ্রেডার মেশিন ক্রয় করার প্রয়োজন হবে। যার জন্য পনের হাজার টাকা শ্রেডার
মেশিনটি যেন এমন হয় আমরা তাতে সিডি বা প্লাস্টিকও কাটতে পারি। শ্রেডার মেশিন কুচি
কুচি করে কাটার কারণে কাগজ বা প্লাস্টিকের কাগজে যেই আর্বজনায় যেই পরিমাণ স্থান
নেয়ার কথা বা আয়তন হওয়ার কথা তার থেকে ৭৫% আয়তন কম যায়। শ্রেডারের কাটা গুড়ি গুলি
চারিদিকে ছড়িয়ে দিলে তা অন্যান্য কাগজ বা সামগ্রীর মত আবর্জনার সৃষ্টি করবে না।
গুড়া হওয়ার কারণে তা সুন্দরভাবে মাটির সাথে মিশে যাবে। পলিথিন ব্যাগ বা প্লাস্টিক
আনুমানিক বিশ বছর সময় কালে প্রথমে ছোট ছোট ছোট টুকরায় পরিণত হয়। তারপর তা
ক্রমান্বয়ে মাটিতে মিশতে থাকে। প্লাস্টিক গুড়ো হওয়ার কাজটি যদি আমরা আগেই করে দেই
তাহলে প্লাস্টিক মাটিতে নিমজ্জিত হতে কয়েক বছরেই হয়ে যাবে। তার জন্য বিশ বছর
অপেক্ষার প্রয়োজন হবে না। আবার কাগজ গুড়া গুলি মাটিতে কয়েকদিনেই মিশে যাবে। একটা
বড় কাগজ এলোমেলোভাবে মাটির উপর পড়ে থাকলে তা মাটিতে মিশতে সময় লাগবে কয়েক মাস। আর
শ্রেডারে গুড়া করা কাগজ কয়েক দিনেই মাটিতে মিশে যাবে। তাই শ্রেডারে গুড়া করে আমরা
কাগজের গুড়ার আয়তন কমিয়ে দিয়ে তা পরিবহন করতে চাইলে তা সহজে করা যাবে। আবার
জ্বালানী হিসাব ব্যবহার করতে চাইলে সহজে করা যাবে। শ্রেডার করে লাভই হবে। শ্রেডারে
গুড়া করা কাগজ যেভাবে সুবিধা সেভাবে ব্যবহার করা যাবে। তবে জ্বালানী হিসাবে
ব্যবহার করার জন্য একই শ্রেডারে প্লাস্টিক গুড়া না করে আলাদা আলাদা শ্রেডারে করলেই
ভাল হবে।
শ্রেডারের ব্যবহার একটা
অভ্যাসের বিষয়। অনেক সময় মনে হবে এমনিতেই কাগজ ছিঁড়ে কুচি কুচি করে দিচ্ছি আবার
শ্রেডার মেশিন কিনে কেন খরচ। নিরাপত্তার বিষয়টি বাদ দিলে যে কাগজ ধ্বংস করতে চাই
তা কুচি কুচি শ্রেডিং করলে একটা আনন্দ পাওয়া যায়। তাছাড়া যে কাগজগুলোর কুচি বাতাসে
চারিদিকে ছড়াতে পারে তা এখন আর ছড়াবে না। তা একদম কুচি কুচি করে কাটা হয়ে গেল। বেশ
মজাদার একটা বিষয়। কিছু দ্রব্য কিনে নিলেন। তার থেকে পাওয়া কাগজ বা প্লাস্টিকের
প্যাকেট গুলি ওয়েস্ট পেপার বক্সে না ফেলে শ্রেডারে দিয়ে কুচি কুচি করে বা গুড়া করে
ফেলে দিলেন। এখন তা সহজেই পরিবেশে বা মাটির সাথে মিশে যাবে। সিডি হাত দিয়ে ভাঙ্গা
কষ্টকর তা গুড়া করে নিয়ে আমাদের আশে পাশের মাটতে ফেলে দিলেও একসময় পরিবেশ মিশে
যাবে। একটা পলিথিন বা আস্ত প্লাস্টিকের ব্যাগ সুয়ারেজ সিস্টেম বা অন্যান্য
ব্যবস্থাপনায় পরিবেশ দূষণ করে সেখানে গুড়া করা পলিথিন পরিবেশের কম ক্ষতি করবে।
আমরা যে কোন কিছু রিসাইক্যাল করতে গেল সাধারণ তা গুড়ি গুড়ি করে নেই। প্লাষ্টিক
রিসাইক্যালে পাউডার বানিয়ে নেয়া হয়। তেমনি ক্রস কাট শ্রেডারের কাগজের গুড়া
কম্পোস্টে দেয়া যেতে পারে। ফার্মের মুরগীর নীচে তুষের পরিবর্তে দেয়া যাবে। যা পরে
কম্পোস্ট বানানো যাবে। শ্রেডারে করা গুড়া জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করা যাবে।
কাগজের গুড়াগুলি পানিতে ভিজিয়ে আঠা মিশিয়ে কাগজের মণ্ড তৈরি করে নানা রকম শোপিস বা
খেলনা তৈরি করা যাবে। আমার মনে হয় ১৫/১৬ হাজার টাকার শ্রেডার মেশিন আমাদের কাগজ ও
অন্যান্য প্লাস্টিক গুড়া করে পরিবেশ ঝকঝকে তকতকে রাখতে বেশ কাজে দিবে। একবার
অভ্যাস করে মজা পেলে যে কোন স্থানে যে কোন কাগজের প্যাকেট ডিসপোজ করতে গেলেই
শ্রেডারটি ব্যবহারের কথা মনে হবে এবং শ্রেডারের অভাব বোধ হবে। শ্রেডার মেশিন আপনার
বাড়তি ও অকেজো কাগজ বা প্যাকেট মুহুর্তে চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গেল। সত্যিই বেশ
মজাদার। কাগজের সাথে স্টেপলার পিন, আলপিন ও জেমস ক্লিপ বেশ
ভংয়কর। এগুলো শ্রেডার মেশিন ধ্বংস করে দিতে পারে। পাতলা পলিথিন শ্রেডার মেশিনে
জড়িয়ে যেতে পারে। শ্রেডারের রক্ষনাবেক্ষন ম্যানুয়াল ভালভাবে দেখতে হবে। ছোট
বাচ্চারা আঙ্গুল ঢুকিয়ে দেয়ার মত মারাত্মক কাজ করতে পারে। পরিবেশ বান্ধব ও
নিরাপত্তায় উপকারী শ্রেডার মেশিন হতে পারে আমাদের নিত্যসঙ্গী।
No comments:
Post a Comment