আমি আজ থেকে একবছর
আগে আমার কাছে জমানো ছবি, অডিও ও ভিডিও গান এবং ইন্টারনেট থেকে ডাউন
লোড করা সমস্ত পিডিএফ ফাইল ইত্যাদি অনেক কিছু মুছে দিয়ে আমার পুরাতন ল্যাপটপের
হার্ডডিক্স খালি করে দিলাম। আগে অনেক বড় বড় স্টোরেজ সহ হার্ডডিস্ক নিয়ে কম্পিউটার
ব্যবহার করতাম। এখন কোন কিছু ইন্টারনেট থেকে ডাইন লোড করে হার্ডডিস্কে নিয়ে সেইভ
করার কথা আর তেমন মনে পড়ে না। কারণ একটাই ইন্টারনেটের ব্যাপক ব্যবহার। ইন্টারনেট
ছাড়া আমরা হয়ত আমাদের সময়কে চিন্তা করতে পারিনা। এখন ইন্টারনেট না প্রাপ্তির ভাবনা
অনেক কমে গেছে। হাটে মাঠ ঘাটে মোবাইল অপারেটররা ইন্টারনেট রাখবেই। কারণ এখন ভয়েজ
কল থেকে ডাটা ব্যবহারে মোবাইল অপারেটরদের আয় বেশী। ইন্টারনেট সকল স্থানে প্রাপ্য
হলে ইন্টারনেট থেকে ডাউন লোড করে পিডিএফ ফাইল, অডিও, ভিডিও ও ছবি ফাইল হার্ডডিস্কে সেভ করে জমিয়ে রাখার প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে।
কারণ এখন প্রায় সব স্থান থেকে থ্রিজি ইন্টারনেটের কারণে যথেষ্ট ভাল গতির ইন্টারনেট
বাংলাদেশের প্রায় সব স্থান হতে পাওয়া যায়। আর থ্রিজি ইন্টারনেট মানেই ভাল গতি ও
বাফার ছাড়া ইন্টারনেট। এ কারণে ইন্টারনেট হতে কোন কিছু ডাউন লোড করা ও স্টোর করে
ব্যবহার করা দিনের পর দিন কমে যাচ্ছে। অনেক সময় হার্ডডিস্কে কপি করে হার্ড ডিস্কে
খোজার চেয়ে গুগলে খুঁজে নেয়া মনে হয় আরো সহজ। ইউটিউবে কোন ফাইল ডাউনলোড করা যত না
যন্ত্রণার তার চেয়ে অনলাইনে দেখা অনেক সহজ। আপনি ১০০০টি ভিডিও আপনার হার্ডডিস্কে কপি
করে রাখলেন। কোন নির্দিষ্ট গান খুঁজে পেতে আপনার যে সময় লাগবে তার চেয়ে দ্রুত আপনি
ইউটিউব থেকে খুঁজে পাবেন। আবার আপনার কাঙ্ক্ষিত গান আপনার মজুদ করা একহাজার গানের
মধ্যে আছে কিনা আপনার পক্ষে মনে রাখাও কঠিন। আর দিনের পর দিন ভিডিও অডিও কোয়ালিটির
উন্নতি হওয়ায় এখন স্টোর করে লাভ নাই লেটেস্ট ভিডিও ও অডিও ডাউনলোড করাই এখন
বুদ্ধিমানের কাজ। তবে কোথাও থ্রিজি ইন্টারনেট কানেকশন না থাকলে বা ব্রডব্যান্ড না
থাকলে ইন্টারনেট হতে ফাইল ডাউন লোডের প্রয়োজন হতে পারে। কোন কোন ক্ষেত্রে ঘন ঘন
প্রয়োজন এরূপ কোন ফরমেট বা তথ্যাদি রাখা যেতে পারে। অফিসের সকল ফাইল যা অনলাইনে
রাখা নিরাপদ না। সেক্ষেত্রে সেগুলো স্টোর
করা যেতে পারে। এছাড়া ইন্টারনেট হতে কোন ফাইল সেভ করার প্রয়োজন দেখি না। এমনকি
ইম্পরট্যান্ট ফাইল বরং ক্লাউডে আপলোড করে রাখাটা নিরাপদ। নিজের ব্যক্তিগত ডকুমেন্ট
স্ক্যান করা কপিও অনলাইন স্টোরেজ কপি করে রেখে দিলে তা সহজে যে কোন প্রয়োজনে যে
কোন স্থান হতে ব্যবহার করা যায়। অনলাইন স্টোরেজ ড্রপবক্স ছাড়াও আরো অনেক মাধ্যম ও
সার্ভিস আছে আমরা আমাদের জন্য সুবিধা জনক সার্ভিসটি ব্যবহার করতে পারি। আমরা
ইন্টারনেটে কোন গুরুত্বপূর্ণ ফাইলও আমরা আমাদের অনলাইন স্টোরেজ বা ক্লাউডে সেভ
করতে পারি।
আমাদের অনেক
প্রয়োজনীয় ফাইল হার্ডডিস্ক বা ল্যাপটপে কপি করে রাখলে তা নষ্ট হতে পারে বা হারিয়ে
যেতে পারে। তাই অনলাইন স্টোরিং একটি ভাল
অপশন। অনেক সময় বাসা বা অফিসে সার্ভিসিং এর লোকজন ও বাচ্চারা ল্যাপটপ
নাড়াচাড়া করে। তাই অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু সেভ না করাই ভাল। প্রয়োজনীয় কিছু থাকলে তা
ক্লাউডে অর্থাৎ অনলাইন স্টোরেজে রাখা ভাল। যে সব বিষয় সাধারণ ক্যাচ ওয়ার্ড দিয়ে
সার্চ করে পাওয়া যায় সে সব কনটেন্ট ল্যাপটপে বা ডেস্কটপে সেভ করার প্রয়োজন নেই।
মোবাইলের স্টোরেজে তো সেভ করার প্রশ্নই উঠে না। মোবাইল স্টোরেজ সাধারণত লিমিটেড হয়।
ইন্টারনেট ব্যাপক
প্রাপ্তির আগে আমরা প্রচুর সিডি জমাতাম। আবার মোবাইল হার্ডডিস্কে সংরক্ষণ করতাম।
এখন মনে হয় তার প্রয়োজন নেই। বই পড়া আমার শখ। এই শখের জন্য আমি অনেক অনেক পিডিএফ
ফাইল স্টোর করতাম। এখন দেখি আমার স্টোর থেকে বের করতে বা খুঁজতে যত সময় লাগবে তার
চেয়ে দ্রুত গতিতে ইন্টারনেটে সার্চ করে বের করা যায়। তাই পিডিএফ বই জমানো ছেড়ে
দিয়েছি। মাঝে মাঝে দেখা যায় কোন কোন জমানো কনটেন্ট ল্যাপটপে বছরের পর বছর ব্যবহার
ছাড়া আছে। তাই যে সব কনটেন্ট ব্যবহার ছাড়া জমা আছে তা মুছে দেয়া অত্যাবশ্যক।
তথ্যের নিরাপত্তায়ও এখন কোন কিছু ল্যাপটপ, কম্পিউটার বা মোবাইলে স্টোর
করা ঠিক না। আপনি হয়তবা বেখেয়ালে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত কনটেন্ট ডাউনলোড করলেন। সেই
ল্যাপটপ, কম্পিউটার বা স্মার্টফোন সার্ভিস সেন্টারে বা
হারিয়ে গিয়ে অন্য কারো হাতে পড়ল এতে আপনার
সন্মান হানি বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেহাত হওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। তাই কোন
কিছু স্টোর করা প্রয়োজন নেই। অনলাইনে সব আছে কেন আমরা স্টোর করব। তাই এখনকার
স্লোগান হতে পারে “ব্যক্তিগত গ্যাজেটে নো ডাটা স্টোরেজ”
নিজের তৈরি কোন
লেখা লেখি বা প্রেজেন্টেশন যা অনলাইনে নাই তা স্টোর করা যেতে পারে। তবে এগুলো ড্রপ
বক্সে বা এজাতীয় অনলাইনে রাখলে ভাল যাতে দ্রুত যে কোন সময় যে কোন স্থান হতে
ব্যবহার করা যায়। এমনকি তা অন্যদের সাথেও শেয়ার করা যাবে খুব সহজে। ইমেইল, ভাইবার
ও এসএমএস যে কোন মাধ্যমে লিংকটা পাঠাতে পারলেই কাজ হয়ে যাবে।
যুগের সাথে তাল
মিলিয়ে আমরা সিডি কেনা প্রায় ছেড়ে দিয়েছি। আমরা মোবাইল হার্ডড্রাইভ ক্রয় করে তা
ব্যবহার করছিলাম। এখন তারও প্রয়োজন কমে আসছে। তথ্যের নিরাপত্তার দিক দিয়ে চিন্তা
করলে নো স্টোরেজই গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা। আসুন আমরা ডাটা স্টোরিং ও রক্ষণাবেক্ষণ
ছেড়ে দিয়ে অনলাইনে অভ্যস্ত হই।
No comments:
Post a Comment