আমার
কম্পিউটারের আগ্রহ দেখা দেয় ১৯৯২ সালের দিকে। তারপর ১৯৯৮ সালে ব্যক্তিগত কম্পিউটার
কিনতে সমর্থ হই। আমি মিশনে থাকাকালীন ২০০২ সালে ইন্টারনেট ব্যবহারে আগ্রহ পাই ও
ব্যবহার শুরু করি। তখন ইয়াহুতে চ্যাটে বড় ছোট সবাই বেশ হুমড়ি খেয়ে পড়ত। কেন যেন
ইয়াহু চ্যাটে আমার তেমন মজা লাগত না। তখন অনেকে বলত অনেক দেশের অনেক মানুষের সাথে
ভাবের আদান প্রদান করা যায়। যা আগের দিনের পত্র মিতালীর মত। ২০০৬ সালে মূলত আমি
ফেসবুক একাউন্ট খুলি। মাঝে মাঝে ফেসবুক একাউন্ট চেক করতাম। এ্যালবামে ছবি রাখতাম। বেশ
ভালই লাগছিল। কিন্তু এটা ছাড়া চলবে না এ অবস্থায় পরিনি। বন্ধুদের সাথে যোগাযোগের
জন্য গ্রুপ মেইল বেশ কাজে দিচ্ছিল। অতঃপর ২০১২ সালে মিশনে গিয়ে ভাইবারের দেখা পাই।
ভাইবার এসএমএস এর মত ম্যাসেজ আসতে থাকে। সাথে সাথে সবকিছু পাওয়া যাচ্ছে। তথাপিও
মোবাইলে ফেইসবুক চালু করা হয়নি। প্রয়োজনে মাঝে মাঝে ল্যাপটপে বসলে মাসে একবার
দুইবার ফেইসবুকে ঢু মারি। পুরানো বন্ধুবান্ধবদের চেহারা স্বাস্থ্যের পরিবর্তন
দেখতে পাই। স্পেশালি যারা নতুন নতুন দেশ ঘোরার সামর্থ্য অর্জন করেছে তাদের
ফেইসবুকে আনাগোনাটা অনেক বেশী। অনেকে আবার কত বেশী সুখী এটা প্রমাণের জন্য
প্রতিনিয়ত খাওয়া দাওয়া থেকে কাপড় চোপড় সব ছবি ফেইসবুকে দিতে থাকে।
ফেসবুক আমার
কাছে কখনও আকর্ষণীয় মনে হয়নি। কিন্তু ২০১৫ সালের প্রথম থেকে আমার সহধর্মীনীর
ফেসবুক রোগে পায়। এর মধ্যে আমার ছেলেরা তাদের মাকে কিনে দেয় উইন্ডোজ মাইক্রোসফট
ফোন। এটা দিয়ে মজার এক ঝামেলা হল। আমি এ্যান্ড্রয়েট ব্যবহার করি। তাই উইন্ডোজ ফোন
আমার কাছে তেমন সুবিধাজনক মনে হয়নি। কিন্তু সব সময় স্ত্রীর কাছ থেকে একটা চাপ এই
ছবি দাও। এটা করে দাও। দুই ছেলে মায়ের ফেসবুক কর্মকাণ্ডে সহায়তা মোটেই করেনা। সেই
চাপটা আসে আমার উপর। উপায়ন্তর না দেখে পুনরায় তাকে এ্যান্ডরয়েড ফোন দিলাম। এবার
ফেইসবুকে উত্তম সহায়তা দিতে শুরু করলাম। আর সহধর্মীনীর রাতের সিরিয়াল শেষ করে
বিছানায় শুয়ে শুয়ে পুনরায় ফেসবুক পর্ব। এটা হয়ত প্রতিটি ঘরের চিত্র। ফেসবুক ভাল কি
মন্দ এই বিতর্ক বহু দিনের। নতুন বির্তকে যাওয়ার সুযোগ নেই।
অনেকদিন আমার
পরিবার ফেইসবুকে না থাকায় স্বস্তিতে ছিলাম। তবে যোগাযোগ মাধ্যম হিসাবে নিলে অন্যায়
নেই। আমাদের ছোটবেলায় আমরা অনেক অনেক উপন্যাস পড়তাম। আজও অনেককে দেখি অনেক অনেক বই
পড়েন। একজন বলেই বসল আপনারা মোবাইলে কিভাবে পড়েন, আমি বুঝিনা।
তাকে বললাম কয়েকদিন মোবাইলে পড়তে থাক। তারপর আর বই হাতে নিতে ইচ্ছে করবে না।
টেলিফোন যখন বাসায় আসল তখন ভাই বোনেরা লাইন ধরত কার পরে কে বন্ধুদের সাথে কথা
বলবে। মাঝে অনেক রাত পর্যন্ত কথা চলত অনেকের। মোবাইল আসার পর কথার যোগাযোগটা আরো
বেড়ে গেল। অতঃপর ইন্টারনেট চ্যাট। তারপর ফেইসবুক।
ফেসবুক এক
পর্যায়ে সরকারী সংস্থাগুলো নাগরিক সেবার ফীডব্যাক নিতে ফেইবুক ব্যবহার শুরু করল।
আমি ডিসেম্বর
২০১৬ সালে ভারতে বিএসএফ একাডেমীতে একটা ট্রেনিং এ গিয়েছিলাম। প্রথম বিষয় হল কেউ
কোন ক্যামেরা নেয়নি। সবারই ভরসা হল মোবাইল ফোনের ক্যামেরা। এর পর আর একটা বিষয়
লক্ষ্য করলাম। সবাই দুইলাইন লিখে লিখে ছবি ফেইসবুকে দিয়ে দিচ্ছে। সাথে সাথে লাইক
পেয়ে যাচ্ছে এবং আরো উৎসাহে আরো পেজে ছবি দিচ্ছে। আমার একজন সহকর্মী বলল ছবি তুলে
সাথে সাথে ফেইসবুকে দিয়ে দেন। মোবাইল নষ্ট হতে পারে। হারাতে পারে। ফেইসবুকে দিলে
তা হারাবে না। আইডিয়াটা বেশ ভাল। অতঃপর: সবার ফেইসবুকে আপলোড করা শুরু। আমার স্ত্রী
বলেছিল ভাইবারে ছবি দাও। আমি আমার ফেইসবুকে আপলোড করব। এভাবে ভাইবার ফেইসবুক করতে
করতে আমার মনে ভয় হল তবে কি ছবি প্রিন্ট করে এ্যালবাম রাখার চর্চাটি হারিয়ে যাবে।
দীর্ঘদিন
ফেসবুকের নেশা নিয়ে ঘরে ঘরে কম্প্লেইন। একসময় দিন/রাত উপন্যাস পড়া নিয়ে এই সমস্যা
ছিল। টিভি ভিসিআর সিরিয়াল নিয়ে একই সমস্যা। মূলত: যুগের পরিবর্তন। টেকনোলজির
পরিবর্তন। আমি ইন্টারনেটে পড়ি ও লিখি তাই হয়তবা সময় কিভাবে কেটে যায় আমি টের পাই
না। তাই যাদের হাতে অনেক সময় আছে তাদের জন্য ফেইবুক নি:সন্দেহে বন্ধুবান্ধব ও
আত্মীয়দের সাথে যোগাযোগের সময়োপযোগী উত্তম মাধ্যম। আমার স্ত্রী ফেইসবুক ব্যবহারের
কারণে আমি পরিবারের অনেক সদস্য ও অনেক বিষয়ে আপডেট থাকি। তাই বলা যায় ফেইসবুক একটি
ভাল নেশা।
Keep writing Dula Bhai because ur writing is flunt and nice.Again i am saving ur page in my mobile as if i can read more in later time.At the time hope to see u pubilishing books in the future.
ReplyDelete