কাগজের টাকা নকল হয়। ধীরে ধীরে নষ্ট হয়। সে
সমস্ত টাকা পুনরায় সংগ্রহ করতে হয়। নতুন টাকা সার্কুলেশনে দিতে হয়। অকেজো টাকা
ধ্বংশ করতে হয়। অনেক অনেক খরচের ব্যাপার। টাকায় অনেক রোগ জীবাণু থাকে। টাকা দ্রুত
নষ্ট হয়। নকল রোধে টাকাতে অনেক সেফটি ফিচার যোগ করতে হয়। টাকার নকল এড়ানোর জন্য
সকলকে সচেতন থাকতে হয়। নকল টাকা হাতে আসলেও তা ভয়ানক বিপদ। নিরপরাধ লোকের শাস্তি
হতে পারে। নকল টাকা সনাক্ত সবাই করতে পারবে না। এটার জন্য ঞ্জান থাকতে হবে। অপর
দিকে টাকার জন্য যে পরিমাণ ছাপা হবে তার সম পরিমাণ রিজার্ভ সোনা টাকার সমমূল্যের
বিপরীতে মজুদ থাকবে।
আমরা পৃথিবীর অনেক দেশের মত ক্যাশলেছ হতে চাই।
আমাদের টাকা লেনদেন হতে পারে মোবাইল ফোন, কার্ড, অনলাইন ও চেক ইত্যাদির মাধ্যমে। এ ধরনের
ব্যবস্থা চালু হয়েই আছে। শুধু মাত্র আমাদের লেনদেনের পরিমাণ বাড়াতে হতে এবং এ
ধরনের লেনদেন জনপ্রিয় করতে হবে। এতে ব্যাংকের নিরাপত্তা, টাকা পরিবহন ও
ভোল্ট ইত্যাদির বিপুল খরচ মেনটেইন করতে হবে না। শুধু ডিজিটাল/ভার্চুয়াল টাকার
বিপরীতে সম মূল্যের সোনা রিজার্ভ বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে মজুদ থাকবে। একটি দেশ শতকরা
৯৮/৯৯ ভাগ টাকা ডিজিটালী বা ভার্চুয়ালী লেনদেন করার ব্যবস্থা চালু করতে পারবে।
বাকী শতকরা ১/২ ভাগ টাকা হতে পারে কয়েন বা ধাতব মুদ্রার বিনিময়ের মাধ্যমে। অন্ধদের
জন্য ও বৃদ্ধদের ব্যবহারের জন্য কয়েন রাখা হবে। তবে কাগজের টাকা রাখা যাবে না।
কারণ এই টাকা টেকসই নয়। কয়েন আবার এরূপ হবে না যে পাঁচ টাকার পরিমাণ ধাতু দিয়ে ১০০
টাকার মুদ্রা বানানো হবে। কয়েন এরূপ হতে হবে যাতে কয়েন ধাতুর মূল্য কয়েনের ছাপানো
মূল্যের কম কিন্তু কাছাকাছি থাকবে। ১০০০ টাকা মুদ্রায় পিতলের উপর ১০০০ টাকা
মূল্যের সমপরিমাণ বা অল্প কিছু কম স্বর্ণ থাকবে। ৫০০ টাকা মূল্যের কয়েনে ৫০০ টাকার
সম পরিমাণ বা অল্প কিছু কম মূল্যের সোনা পিতলের উপর প্লেটিং করা থাকবে। ১০০ টাকার
রোপার কয়েনে ১০০ টাকার রুপার এলুমিনিয়ামের উপর প্লেটিং থাকবে। আইডিয়াটা হল। যে
মূল্যের কয়েন তার সমমূল্যের বা অল্প কিছু কম মূল্যের ধাতু এই কয়েনে থাকবে। কয়েনের
ওজনই ধাতুর মূল্যের প্রায় সমপরিমাণ দামের হবে। এতে কয়েনের বিপরীতে রিজার্ভ সোনার
প্রয়োজন হবে না। ধাতু পরীক্ষা করতে বিশেষঞ্জের প্রয়োজন হবে না। যে কোন স্বর্ণকার
ধাতু পরীক্ষা করতে পারবে। দেশে সহজেই কয়েন ছাপানো যাবে এবং লো টেক যন্ত্রপাতি
দ্বারাই তা সম্ভব। ১০০০ টাকার কয়েনে প্রায় ১০০০ টাকার সোনা থাকায় নকল হবে না। অন্য
ধাতু দিয়ে নকল করলে স্থানীয়ভাবে তা ধরা যাবে। ধাতুর মূল্যমান অনুযায়ী কয়েনগুলো
নিন্মবর্নিত হতে পারে:
ক। ১ ও ২ টাকার কয়েন এলুমিনিয়ামের হতে পারে।
খ। ৫ ও ১০ টাকার কয়েন তামার তৈরি হতে পারে।
গ। ২০ টাকার কয়েন পিতলের তৈরি হতে পারে।
ঘ। ৫০ ও ১০০ টাকার কয়েন এলুমিনিয়াম ও রুপার
প্লেটিং এ তৈরি হতে পারে।
ঙ। ৫০০ ও ১০০০ টাকার কয়েন পিতল ও সোনার প্লেটিং
এ তৈরি হবে।
উপরের দেয়া কয়েনে ধাতুর মূল্য কয়েনের মূল্যের
কাছাকাছি থাকবে। তবে ধাতুর মূল মূল্য কয়েনের লেনদেন মূল্য হতে কম রাখতে হবে।
অন্যথায় কয়েন গলিয়ে ধাতু আলাদা করার ব্যবসা চালু হয়ে যেতে পারে। টাকার মূল্যমান
কমতে থাকলে ও কয়েনের ধাতুর মূল্য বাড়তে থাকলে মাঝে মাঝে কয়েনে ব্যবহৃত স্বর্ণ ও
রুপার পরিমাণ কমবেশি করার প্রয়োজন হতে পারে। কয়েন চালু হলে একটা লাভ হবে তা হল
কাগুজের টাকা হতে কয়েন বহন কষ্টকর ফলে সবাই ডিজিটাল মানি বা পেমেন্টে আগ্রহ পাবে।
আমার এই আর্থিক ব্যবস্থাপনার মূল বিষয় হল
ডিজিটাল লেনদেন গতিশীল করা। আর যারা একান্তই ডিজিটাল লেনদেন পারবেন না তাদের
বিকল্প কয়েন বা ধাতুর তৈরি মুদ্রা রাখার প্রস্তাব করলাম। অনেক অনেক টাকা খরচ করে
কাগজের টাকা বাহির দেশ হতে আমাদের দেশ তৈরি করে। অথচ কয়েন নিজ দেশে সস্তা
প্রযুক্তি ও কমদামী মজুরী দিয়ে তৈরি করা সম্ভব।
কয়েন আর ডিজিটাল মানি অনেক অনেক অপরাধ দূর করবে।
কাগজের নকল টাকা ও জটিল রক্ষণ পদ্ধতি থেকে মানুষ রক্ষা পাবে। লক্ষ লক্ষ এটিএম বুথ
মেনটেইন করার খরচ কমে যাবে। কয়েন কাগজের টাকা হতে কমপক্ষে দশগুণ বেশীদিন ব্যবহার
করা যাবে। কয়েন রিসাইক্যাল করে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করা যাবে। অল্প কিছু কয়েন
নিয়ে প্রায় ৯৯% ডিজিটাল লেনদেনের অর্থ ব্যবস্থা কাগজের টাকার লেনদেন হতে অনেক বেশী
ইফিশিয়ন্টে হবে এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে তার সাথে পাল্লা
দিয়ে আমরাও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে উন্নত করতে পারি।
No comments:
Post a Comment