আমি ২০০৮ সালে ফেইসবুক চালু করার পর থেকে মাসে একবার ফেইসবুক ভিজিট করি। মূলত:
ফ্রেন্ড রিকুয়েস্টগুলি এ্যাড করার জন্য। আমি যেহেতু নিয়মিত লেখালেখি অনুশীলন করি
তাই ফেইসবুকে লেখা শেয়ার করলে মন্দ হয় না। একবার আমার স্ত্রীর ফেইসবুকে একটি লেখার
লিংক দিয়ে অনেক পাঠক পেয়েছিলাম। তখন মনে হল আমার বন্ধুবান্ধব গ্রুপ ক্যাডেট কলেজ
গ্রুপ ইমেইল গ্রুপ ইত্যাদিতে লেখা পোস্ট করার পাশাপাশি ফেইবুকে দিলে মন্দ হয় না।
সেই চিন্তা করে জুলাই ২০১৭ সালে ফেইসবুক প্রতিদিন দেখা শুরু করি অর্থাৎ একটিভ থাকি।
ফেইসবুক প্রথম থেকে আমার কাছে তেমন পছন্দের ছিল না। তা হল অনেক ফ্রেন্ড তাদের
গার্ল ফ্রেন্ড বা স্ত্রীর সাথে নায়ক নায়িকার স্টাইলের ছবি গুলো বিনা কারণে দেখে
সময় নষ্ট। তবে এখন এসে দেখছি আমার বয়সীরা( ৪৫/৪৬ বছর রেঞ্জ)এখন আর নায়ক নায়িকা
মার্কা ছবি দিচ্ছে না। তবে দুই একটা বিভিন্ন বেড়ানোর দৃশ্য বা সেলফি ছাড়া। সময়
নষ্টের বিষয়টি ছাড়া ফেইসবুকে নিত্যনতুন অনেক তথ্য জানা যায়। এটা একটা চমৎকার দিক। কেউ
ব্রেকফাস্ট পার্টি, জন্মদিন অর্থাৎ আমাদের সুখের ও
বিলাসী মূহুর্তগুলো দেখাতে মন চায় অনেকে দেখাতে পারে অনেকে লজ্জা পায়। তবে সুন্দর
সুন্দর স্থান দৃশ্য শেয়ার করাটা মন্দ না। আবার প্রাইভেট ছবি যেমন স্ত্রী বা গার্ল
ফ্রেন্ডের সাথে অন্ত:রংগ ছবি নায়ক নায়িকার মত সম্পূর্ণ উন্মুক্ত না করে তা নিজেদের
লিমিটেড গণ্ডীর মধ্যে রাখলে মন্দ নয়।তবে অনেকের সুন্দর ছবি উঠাতে পারে এবং তাদের
সুন্দর ছবিগুলো সবাইকে দেখাতে তাদের ইচ্ছে হয়। এটা ভাল। গতানুগতিক নায়ক নায়িকার
বাইরে সুন্দর কাপল দেখতে ভাল লাগে সন্দেহ নেই। আবার অনেক ছবি দেখে মনে হয় এত
সুন্দর মেয়েটা স্বামীটা বয়সী ও বেমানান। আবার অনন্ত জলিলের মত নায়ক মার্কা ছেলের
সাথে সাদামাটা স্ত্রীর ছবি। তবে এগুলো আমার পর্যবেক্ষণ কাউকে হার্ট করার জন্য নয়।
যেহেতু ফেইসবুকে অনেকের প্রাইভেট ছবি পাবলিকলি দেখতে হয় তাই এই পর্যবেক্ষণ।
ফেইসবুক কিন্তু কনসার্ন কারণ বেশীরভাগ মানুষই এখন ফেইসবুকে কমপক্ষে গড়ে দুই ঘণ্টা
ব্যয় করে। তবে এই দুই ঘণ্টা অবশ্য আমদানি হয়েছে টেলিভিশন দেখার সময় হতে। আগে হয়ত
পাঁচ ঘণ্টা টিভি দেখতে এখন তিন ঘণ্টা টিভি আর তিন ঘণ্টা ফেইসবুক। দীর্ঘ সময় টিভির
সিরিয়ালের চেয়ে ফেইসবুকের নিত্যনতুন বিষয় জানাটা একটা ভাল ব্যাপার।
আমরা চাইলে কারো কাছ হতে ভাল না লাগা পোস্ট গুলি নাও দেখতে পারি। প্রথমে আমরা
সম মনা বন্ধুদের দেখে দেখে এ্যাড করতে পারি। যেমন আমার স্ত্রী তার চেনা জানা বন্ধু
ছাড়া কাউকে নট এ্যালাউড। আমি আবার যেই রিকুয়েস্ট পাঠায় তকেই গ্রহণ করি। বন্ধু
বাড়ানোটাই হল মজা। বিপদ যেটা হল এতে রাজনৈতিক বিষয় যেটা পছন্দ করি না এটার পোস্ট
চলে আসে। ধর্মীয় কিছু অলৌকিক বিষয়ে অনেকে পোস্ট দেন, নায়ক নায়িকার স্টাইলে ছবি পোস্ট এবং কারো
ফ্যামিলির গেট টুগেদারের পোস্ট আমার মূল্যবান সময় নষ্ট করতে পারে। এই ভেবে আমি
তাদের আনফ্রেন্ড না করে তাদের পোস্ট আন ফলো করি। মাঝে মাঝে সময় থাকলে তাদের
প্রোফাইলে গিয়ে তাদের পোস্ট দেখি তখন ভালই লাগে।
সীমিত, পরিচিত ও সমমনা ফেন্ড ফেইসবুকে সময় অপচয় না করার
সবচেয়ে বড় সমাধান। তারপরের সমাধান হল যাদের পোস্ট যথেষ্ট মনোপুত: না হলে তাদের
আনফলো করা এটা অন্য একটি সমাধান। অনেকের কাছে আরও কিছু উত্তম উত্তম সমাধান থাকতে
পারে।
পরিশেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক বিশ্বব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয় মাধ্যম এই
জনপ্রিয়তা বাড়বে বই কমবে না। তাই সীমিত ও বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যবহার ফেইসবুক অনেক
উপকারী তথ্যের পাশাপাশি অনেক বিনোদন দিতে পারে তা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়।
No comments:
Post a Comment