আমার মাথায় মাঝে মাঝে পোকা/ আইডিয়া ঢুকে। এরূপ একটি আইডিয়া হল লেছ ক্যাশ হওয়া।
আমি অনেক দিন হতে লেছ ক্যাশ অনুশীলন করে আসছি। এবার আমার ইচ্ছে হল ঢাকা থেকে কুমিল্লার
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার আমার গ্রামের বাড়ীতে মানি ব্যাগে কম টাকা নিয়ে যাতায়ত করা। প্রথমে
ঢাকা বাসা থেকে মানি ব্যাগে এক হাজার টাকা নিয়ে বের হলাম। আমার বড় আপা সহযাত্রী
হল। কুমিল্লা পৌছানোর পর বুড়িচং উপজেলা শহরে
স্কুটার নিলাম। ছোট বোনকে দেখার জন্য বুড়িচং থামলাম। ছোট বোনের বাসায় গেলাম।
ছোট বোনের বাচ্চাদের জন্য নগদ ছালামী দিলাম।
ছোট বোনের বাসা থেকে বের হয়ে বুড়িচং শহরে জানতে চাইলাম ডাচ বাংলা ব্যাংকের এটিএম আছে
কিনা। লোকজন আমাকে ডাচ বাংলা ব্যাংকের ফাস্ট ট্র্যাকের লোকেশন বলে দিল। আমি সেখানকার
এটিএম থেকে টাকা তুলে নিলাম। পরবর্তী গন্তব্য আমার মা ও বাবার উদ্দেশ্যে ব্রাহ্মণপাড়া
উপজেলার চান্দলা নামক স্থান পর্যন্ত স্কুটার নিয়ে রওয়ানা হলাম।
চন্দলা ইউনিয়ন এলাকার টানা ব্রিজে-এ স্কুটার দিয়ে পৌছে গেলাম। সেখান থেকে রিক্সায়
উঠতে উঠতে একটি ব্যানার চোখে পড়ল। তা হল ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং এর শাখা চান্দলা
বাজারে খুলেছে। ভাল বোধ করলাম। টাকা লাগলে এজেন্ট ব্যাংকারের কাছে আসা যাবে। গ্রামের
বাড়ীর উদ্দেশ্যে চললাম। বাড়ীতে ঢোকার আগে বাড়ীর সামনে রকেট এজেন্টের কাছে থামলাম ।
রকেট এজেন্ট হতে কিছু টাকা তুললাম সামনের আগত সময়ের খরচ গুলি করার জন্য। বাড়ী গেলাম।
বড় ভাইয়ের বাচ্চাদের নগদ সেলামী দিলাম। বাড়ী যাওয়ার পর আমার মায়ের কাছে গ্যাস সিলিন্ডার
নিয়ে লোক হাজির হল। আমি মাকে কিছু টাকা দিলাম সেখান থেকে মা কিছু টাকা গ্যাসওয়ালাকে
দিয়ে বিদায় করল। বিকালে বাবা, মা, বড় বোন ও ভাইদের সাথে বাড়ীর উঠানে আড্ডা শুরু। আমি
ছোট ভাইকে পাঠালাম ফল আনতে। আঙ্গুর, আপেল আর কমলা খাচ্ছি আর গল্প চলছে। এভাবে গল্প
করতে করতে সন্ধ্যা ছয়টায় বসে রাত দশটা বেজে গেল। পরের দিন আমার এক ভাগ্নেকে নিয়ে গ্রামের
বাজার দেখার জন্য বের হলাম। গ্রামের বাজারে প্রথমে গেলাম চান্দলা বাজারে। চান্দলা বাজারে
দুইটি ব্যাংকের অবস্থান পেলাম। একটা হল ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিং আর অপরটি হল
ডাচ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং। ডাচ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং নতুন হয়েছে।
ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকটি হল ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্রের লোকেরাই চালাচ্ছে। বাড়ী থেকে
দুই কিলোমিটার দুরে ব্যাংকের দুইটি শাখা থাকায় ভালই মনে হল। বাড়ী থেকে আসা যাওয়া সহ
৩০ মিনিটে ব্যাংকের কার্যক্রম করা যাচ্ছে। বেশ ভাল বিষয়। আমি আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে ডাচ
বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং থেকে আমার মানি ব্যাগের লো ক্যাশের ব্যালেন্সকে আপ করে নিলাম।
তারপর চান্দলা বাজার ঘুরে ঘুরে দেখলাম। এখনকার সময়ে গ্রামের বাজারে অনেক নির্মান সামগ্রী
পাওয়া যায়। তার কারণ অবশ্য গ্রামে এখন ইট সিমেন্টের বাড়ীর সংখ্যাই বেশী। আর একটা বিষয়
চোখে পড়ল মোবাইলের দোকান ও ওয়ালটনের শো রুম। এখন গ্রামের সব বাজারেই মোবাইলের দোকান
ও ওয়ালটনের শোরুম দেখা যায়।
এর পর আমি কসবা উপজেলার নয়নপুর নামক বাজারে গেলাম সেখানে কোন এজেন্ট ব্যাংকিং খুঁজে
পাওয়া যায় কিনা। সেখানে এজেন্ট ব্যাংকিং এখনও হয়নি। তবে অনেক আগে থেকেই অগ্রণী ব্যাংকের
শাখা বিদ্যমান ছিল। এই বাজারে দেখলাম ডাচ বাংলা ব্যাংকের অনেক রকেট এজেন্ট আছে। ব্যাংকিং
এর জন্য ডাচ বাংলার রকেট একাউন্ট মন্দ নয়। টাকা উঠানো ও জমা সবই করা যাচ্ছে। বাজার
থেকে ফিরে আসলাম। পরের দিন কুমিল্লা শহরের উদ্দেশ্যে গ্রাম থেকে শহরে রওয়ানা হলাম।
শহরে এসে আমার মেঝ বোনের সাথে দেখা করার চিন্তা করলাম। মেঝ বোনের ছেলের জন্য ছালামী
ও ঢাকা যাওয়ার খরচের জন্য মানি ব্যাগ রিচার্জ প্রয়োজন। কালিয়াজুরী বাসার সামনের একটা
দোকানে রকেট সাইন পোস্ট দেখে থামলাম ও টাকা উঠালাম। আমার মানিব্যাগ সাধারণত ১০০০-২০০০
টাকার মধ্যে থাকে। ১০০০ টাকার নীচে চলে গেলে মানিব্যাগে টাকা ২০০০ পর্যন্ত সাধারণত
উঠাই। অন্য কোন খরচের প্রয়োজন হলে তখন সেই খরচের চাহিদা মাফিক অতিরিক্ত উত্তোলন করি।
এক সময় বাসে করে ঢাকায় ফেরত আসলাম। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে আমার মানিব্যাগে
টাকা না রেখে পথে পথে চাহিদা বা প্রয়োজন অনুযায়ী টাকা উত্তোলন করে যাতায়ত বা জার্নি
করার ক্যাশলেছ পরীক্ষা সফল ভাবে করতে পারার জন্য আমি ডাচ বাংলা ব্যাংক ও তাদের রকেট
ব্যাংকিংকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ ডাচ বাঙলা একাউন্টের সাথে তাদের রকেট ও এজেন্ট ব্যাংকিং
লিংক করে নিয়েছি। এতে গ্রামের উপযোগী একটা চমৎকার ব্যবস্থা করতে পারলাম। অনেকে এখন
হয়ত বিকাশের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম করে। কিন্তু ডাচ বাংলা ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ
এটিএম, ফাস্ট ট্রাক, এজেন্ট ব্যাংকিং ও রকেটের মত মোবাইল ব্যাংকিং এর কারণে ব্যাংকটি
আজ গ্রামীণ বান্ধব বা সাধারণ জনগণের কাছের ব্যাংক বলা যায়। এই ব্যাংকটির উপর ভরসা করে
বাংলাদেশের যে কোন স্থানে টাকা কম নিয়ে যাতায়ত করা যায়। আমি আগে হিসাব করে টাকা নিয়ে
বাড়ীতে গিয়ে প্রায়ই টাকা কম পড়ত। তখন বিকাশ করে টাকা আনতে হত বা গ্রাম থেকে কুমিল্লা
শহরে এসে ট্রাস্ট ব্যাংক হতে টাকা তুলতে হত। এবার মানিব্যাগে অল্প টাকা নিয়ে যখন যেখানে
প্রয়োজন ধার কর্জ ছাড়া গ্রামে ঘুরতে পেরে খুব মজা পেলাম। আপনারাও করে দেখতে পারেন।
No comments:
Post a Comment