প্রত্যেক মানুষের জীবন চক্রে বার্ধক্য অবধারিত। আমরা বার্ধক্য এসে ধীরে ধীরে
লাইফ সাইক্যাল শেষ করে পরাপারে পারি জমাই। যাওয়ার আগে নিকটজনদের পরবর্তী বিরোধ
রোধে অনেকেই দানপত্র দলিল, বণ্টন নামা ও ওসিয়ত
নামা দিয়ে যায়। আমার ও আমার ভাইবোনদের জীবনেও অভিঞ্জতা হল বাবা ও মার কাছ থেকে
দান পত্র নেয়ার প্রস্তাব। মুসলিম ও হিন্দু আইনের সম্পত্তির নিয়ম মেনে চলার জন্য
অনেক পিতা মাতাই সন্তানদের দান পত্র দলিল দেন। এই দানপত্র দলিল অত্যন্ত কম খরচে করা যায়। মুসলিম আইনে হেবা দলিল নামে পরিচিত।
এই দলিল করার জন্য ইন্টারনেট হতে প্রাপ্ত কিছু তথ্য তুলে ধরলাম।
" হেবার ঘোষণাপত্র
দলিলের ফি:
১. মুসলমানদের ব্যক্তিগত আইন
(শরিয়ত) মোতাবেক হেবা মূল্য কোনো স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর বিষয়ক ঘোষণা
রেজিস্ট্রির জন্য সম্পত্তির মূল্য নির্বিশেষে প্রদেয় রেজিস্ট্রি ফি ৪৪০ টাকা।
২. যদি ওই হেবা স্বামী বা স্ত্রী, মা-বাবা ও সন্তান, দাদা-দাদি (নানা-নানি) ও
নাতি-নাতনি, সহোদর ভাইরা, সহোদর বোনরা এবং সহোদর ভাই ও বোনদের মধ্যে হয়।"
লক্ষ্য করুন ইন্টারনেট থেকে
প্রাপ্ত তথ্য হল ৪৪০ টাকা ফি সরকার নিচ্ছে। অনেকের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম।
স্ট্যাম্প বাবদ আরো পাঁচশত টাকা। তাহলে এখন পর্যন্ত খরচ ৪৪০ যোগ ৫০০ টাকা অর্থাৎ
৯৪০ টাকা। দলিলের নকল তুলতে সরকারী খরচ মনে করি ১০০০ টাকা। আর ডকুমেন্ট কম্পোজ করতে আরো ২০০ টাকা। সর্বমোট:
২১৪০টাকা। তবে আমরা দানপত্র দলিল করতে দিতে হয় কম করে হলেও ১০০০০ টাকা। আমি
অনেকের কাছে জানতে চাইলাম বাড়তি টাকা কেন। সবাই বলল অফিস খরচ ৭০০০/৮০০০ টাকা নাকি
লেগে যায়। এটা কি বেশী হল না। এটা গেল পরিষ্কার ঝামেলা মুক্ত দলিলের ক্ষেত্রে। আর
যাদের জরিপ ও অন্যান্য খাজনা দেয়ার সমস্যা থাকলে কথা নেই। অফিস খরচ তখন লক্ষ টাকা
নির্ধারণ হবে। কারণ পুরাতন ফাইল ঘেঁটে ঘেঁটে হালনাগাদ করতে হয়। কি পরিমাণ পরিশ্রম
যে করতে হয় বেচারা সরকারী বাবুদের।
আমি অনেকের সাথে কথা বললাম। জানতে
পারলাম। অনেক মানুষ এর উপর জীবন ধারণ করে। দলিল লেখকরা বেঁচে আছে এই টাকার উপর। রেজিস্ট্রি অফিসের সরকারী কর্মচারীদের
অল্প টাকা নাকি বেতন পায়। তারা এর উপর নির্ভর করেই বেঁচে আছে। অত্যন্ত লজিক্যাল
বিষয়। তাদের দেখভাল সাধারণ মানুষ না করলে কে করবে। আমি দানপত্র দলিল করতে গিয়ে কেউ বলেছে ১২ হাজার, কেউ ১০ হাজার, কেউ ৮ হাজার ও কেউ ৬ হাজার টাকা।
কোন নির্ধারিত রেট নেই। এখানে সামাজিক উন্নয়নের জন্য যেহেতু আমরা দলিল লেখক ও
রেজিস্টারদের দেখভাল করছি তেমনি তারা যেন ঠকে না যায় সেটাও আমাদের দেখতে হবে।
সেজন্য সমাজ সচেতন ব্যক্তিরা দলিল লেখক ও রেজিস্টারের ফি সরকারী বা স্থানীয়
প্রঞ্জাপনের মত করা যেতে পারে। কারণ দলিল লেখক ও দলিল রেজিস্টারদের বেচে থাকার
লড়াইটাও আমাদের বুঝতে হবে। এগুলো রম্য আলোচনা হয়ে গেল।
এখন আসি বাস্তবতার দিকে। সম্পত্তির
মূল্য যাই হোক দান পত্রের খরচ সরকার অনেক কম রেখেছে। কারণ সবাই যেন জমি রেজিস্ট্রি
করে। মুখে মুখে মালিকানা বদল না হয়। আমরা যদি খেয়াল করে দেখি ১ লক্ষ টাকার
সম্পত্তির দানপত্র রেজিস্ট্রি করতে যা খরচ
তবে ১০০ কোটি টাকার দানপত্র রেজিস্ট্রি করতে একই খরচ। বাবা ছেলেকে দান করবে। ছেলে
তার ছেলেকে দান করবে। এভাবে এটার চক্র চলতে থাকবে। দানপত্র চলমান থাকবে। শুধুমাত্র
আত্মীয়ের বাইরে মালিকানা বদলের প্রয়োজনে নতুন দলিল হতে পারে। দানপত্র যদি কোন ব্যক্তি
তার সন্তানের জন্য এক লক্ষ টাকা মূল্য মানের জমি রাখে তবে তার যদি খরচ হয় দশ হাজার
টাকা তবে তা দু:খজনক। আবার এক কোটি টাকার সম্পত্তি যে পাবে সেও দিবে দশ হাজার
টাকা। আমি জমির দানপত্র দলিলের সম্পদের মূল্য বাড়ানোর সাথে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব
করছি না। রেজিস্টারের কাছে এক লক্ষ টাকার জমি নথিতে হালনাগাদ করতে যা পরিশ্রম এক
কোটি টাকার জমি হাল নাগাদ করতে একই পরিশ্রম। সরকার জমি দলিলের লেখা এখন সহজ করেছে।
বিঞ্জ দলিল লেখকরা বাদেও অন্যরা দলিল তৈরি করতে পারে। ইন্টারনেটে সার্চ দিলেও জমির
দলিল লেখার নমুনা পাওয়া যাচ্ছে। একটু চেষ্টা করলেই শিক্ষিতরা জমির দলিল তৈরি করতে
পারবেন। তাতে আপনার কোন লাভ নাই। কারণ জমি লেখক দিয়ে দলিল লেখাতে হবে এবং তাকে
দিয়ে দলিল রেজিস্টারের কাছে জমা করতে হবে। তাই অফিস খরচ হতে বের হওয়া সাধারণ
মানুষের জন্য সহজ নয়।
বাংলাদেশে নাকি আশি লক্ষ জমির
মামলা অনিষ্পন্ন আছে। অনেক মামলা নাকি ১০০ বছরে সমাধান হয়নি। এই অবস্থায় আমার কাছে
মনে হল জমির রেজিস্ট্রেশন অনলাইনে করা যেতে পারে। গাড়ীর রেজিস্ট্রেশন যেমন অনলাইনে
দেখা যায়। জমির রেজিস্ট্রেশন অনলাইনে হতে পারে। ছবি, ভোটার আইডি কার্ডের স্ক্যান কপি, টাকা জমা দানের
ট্রানজিশান আইডি ইত্যাদি অনলাইনে সাবমিট করা যেতে পারে। রেজিস্টার অনলাইনে চেক
করবে। রেজিস্টার ডিজিটাল সাইন দিবে। অতঃপর গ্রাহকের কাছে দলিলের পিডিএফ কপি ইমেইলে
পাঠানো যাবে। আর যে কেউ যে কোন জমি দাগ নম্বর বা জমির রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে
সার্চ করতে পারবে। এতে জমি সংক্রান্ত অনেক প্রতারণা দূর হবে। আমি আশাবাদী আজ না
হউক আগামী ২০/৩০ বছরের মধ্যে জমির ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল হবে। আর দলিল লেখকরা
নিদিষ্ট ফি এর বিনিময়ে অনলাইন ফরম ফিলাপ করবে।
AHS er jomir gegn Ki kene Koto dia korte Hobe.
ReplyDelete