বাংলাদেশের শতকরা ৯৮% উদীয়মান লেখক
নিজের টাকায় বই ছাপায়। এটা হল বাস্তবতা। কারণ প্রকাশক বই বিক্রয় করতে পারে না।
বাংলাদেশের আনাচে কানাচে যত বইয়ের লাইব্রেরী আছে তাদের কাছে স্কুল কলেজের পাঠ্য বই, নোট ও গাইড বই ছাড়া আর কোন বইয়ের বিক্রয় বা বিপণন হয় কিনা সন্দেহ। রেফারেন্স
বা স্টোরী বুক এখন কমই বিক্রয় হয়। এই বিক্রয় কি আর বাড়ানো যাবে। আমি আশাবাদী নই।
কারণ ডিজিটাল অগ্রগতি আমাদের মেনে নিতে হবে। অনেক দেশের হার্ড কপি ভার্সন লস দিতে
দিতে এক সময় বন্ধ হয়ে গেছে। আমি নিজেও বেশ কয়েক বছর কোন পত্রিকা ক্রয় করছি না।
অনলাইন বা ডিজিটাল ফরমেটে পড়ছি। এটাই হয়ত আধুনিক কালচার। এই কালচার থেকে বের হওয়ার
উপায় নাই। আমাদের নতুন অবস্থার সাথে তাল খাইয়ে নিতে হবে। তাই প্রয়োজন উদীয়মান
লেখক ফোরাম। একজন উদীয়মান লেখকের প্রথম সাপোর্ট হল তার জন্য লস না হয় সেটা
বিবেচনায় আনা। কিছু আর্থিক ইনসেন্টিভ দেয়া। যদিও লেখকদের বইয়ের সাইজ নির্দিষ্ট করা
সমীচীন নয় তথাপিও কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ সম্ভব হলে ছোট ভাবে শুরু করাটা মন্দ নয়। নীচে উদীয়মান লেখকদের
সাজেস্টেট একটা আকৃতি দেয়া হল।
১। বই চার বা আট ফর্মা।
২। মূল্য হতে পারে ১০০/১৫০/২০০
টাকা
৩। বোর্ড বাধাই
৪। অফসেট
উদীয়মান লেখক ফোরামটা কিভাবে
চালনা করা যেতে পারে। তার জন্য কিছু সাজেশন নীচে তুলে ধরলাম:
১। প্রতি উপজেলায় লেখক বের করতে
হবে।
২। প্রতি লেখকের দুইটি করে বই
প্রতি উপজেলায় বিক্রয়ের ব্যবস্থা করবে।
৩। এক লেখক অন্য লেখকের লেখনী
উন্নয়ন করবেন ও মান উন্নত করবেন।
৪। একজন অন্যজনের লেখা সম্পাদনা
করে দিবেন।
৫। প্রচ্ছদ আইডিয়া ও প্রচ্ছদ
কম্পোজ করে নিবে এই জন্য উদীয়মান লেখক ফোরাম চাহিদা করবে। লেখকদের লিংক আপে
সেই চাহিদা অনুযায়ী প্রচ্ছদ শিল্পী হান্ট
করা যাবে।
৫। প্রত্যেকটা বই ওয়ার্ড ফাইলে
কম্পোজ করে তা পিডিএফ ফাইল ফরমেট করা হবে।
৬। পিডিএফ প্রিন্ট ও কাভারের জন্য
রঙ্গিন প্রিন্টের সহায়তা নিবে ও বই বাধাই হবে।
৭। প্রতিটি উপজেলার উদীয়মান লেখকরা
একটি করে বই লাইব্রেরীতে প্রদর্শনের জন্য রাখবে।
৮। উদীয়মান লেখকের বই পিডিএফ
ভার্সন ও হার্ড কপি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনীতে বিনা পয়সায় ছাপানোর চেষ্টা
চালানো হবে। যদি অন্য কোন প্রকাশক বিনে পয়সায় ছাপাতে রাজি না হয় তবে নব্য লেখক
ফোরাম সেই বই প্রকাশনার দায়িত্ব নিবে।
৯। নব্য লেখক ফোরাম অন্য প্রকাশনা
দ্বারা রিজেক্টেড লেখকদের বই প্রথমে মান উন্নয়নের জন্য প্রফেশনাল সম্পাদকের কাছে
দিবে। সেখানে লেখার মান উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালানো হবে।
১০। প্রফেশনাল দ্বারা সম্পাদনার পর
লেখককে প্রি বুকিং করে বইয়ের সংখ্যা নিরূপণ করে নিতে বলা হবে। বইয়ের সংখ্যা
চূড়ান্ত করার পর বই প্রিন্ট করা হবে। এখানে বইয়ের প্রি বুকিং গুরুত্ব পূর্ণ হবে।
কারণ লেখক যেন বেশী বই ছাপিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে না হয় তা লক্ষ রাখা হবে। বই যেন
অবিক্রীত না থাকে সেটা লক্ষ রাখা হবে।
১১। নব্য লেখকের সবচেয়ে শক্তিশালী
বিষয় যেটা করা হবে তা হল বইয়ের নেটওয়ার্ক মার্কেটিং। প্রতিটি উপজেলায় অন্তত দুইটি
করে বই বিক্রির জন্য উদীয়মান লেখকরা দায়িত্ব নিবে।
উদীয়মান লেখকদের করনীয়:
উদীয়মান লেখক ফোরামের লেখকদের
করনীয়:
১। উদীয়মান লেখকরা তাদের পরিচিত
কারা কারা বই নিয়মিত পড়েন তার তালিকা তৈরি করবে। কারা কারা কি ধরনের লেখা পড়েন তার
তালিকা রাখবেন।
২। কারা কারা তার বই কিনতে আগ্রহী
তার তালিকা রাখবে।
৩। নতুন লেখকরা নিজ উপজেলায় বা
জেলায় এক বা একাধিক লাইব্রেরীর শপের সাথে যোগাযোগ করবে যাদের মাধ্যমে নতুন
লেখকদের বই প্রচার ও বিপণন করা যায়।
৩। নব্য লেখকরা জন্মদিন ও বিয়ে
জাতীয় সামাজিক অনুষ্ঠানে তার নিজের প্রকাশিত বই বা উদীয়মান লেখক ফোরামের বই
উপহার দিবে। কারণ যে কেউ বাজারে গেলে নামী/দামী লেখকের বই কিনে। সাধারণত নতুন
লেখকের বই কেউ কিনে না। তাই সামাজিক দাওয়াতের যেখানেই গিফট দেয়া হবে সেখানে নতুন
লেখকরা উদীয়মান লেখক ফোরামের বই গিফট দিবে।
৪। উদীয়মান ফোরমের লেখকরা পরস্পর
পরস্পরের বই পড়বে। পরস্পর পরস্পরের বইয়ের মান উন্নয়নের জন্য গোপনীয়তার সাথে
ক্রিটিকস করবে।
৫। উদীয়মান লেখকরা পরস্পর
পরস্পরের লেখা সম্পাদনের দায়িত্ব নিবে।
৬। কেউ ভাল প্রচ্ছদ করতে পারলে
অন্যদের প্রচ্ছদ করতে সহায়তা করতে হবে।
৭। কেউ কম্পোজ জানলেও উদীয়মান
লেখকদের মধ্যে পরস্পর সহযোগীতা করবে।
৮। উদীয়মান লেখক ফোরামের
কার্যক্রম প্রাথমিক ভাবে ভার্চুয়ালী সামাজিক যোগাযোগ বিভিন্ন এ্যাপের মাধ্যমে
করা হবে।
No comments:
Post a Comment