তসলিমা নাসরিনকে
দেশে ফেরত আনা নিয়ে অনেকে মাঝে মাঝে ফেইস বুক লেখনীতে তৎপর। আমাদের মাঝে অনেকে
খারাপ কথা বলেন। অনেকে ভাল কথা বলেন। আমরা সাধারণত ভালকে শুনি। ইতিবাচক চিন্তা
সমাজকে শান্তি দেয়। সকল মানুষের ধর্মকর্ম একটা অধিকার। কারো বিশ্বাসে ভিন্নতা
থাকতে পারে। তার মানে এই নয় যে, কেউ কারো বিশ্বাসকে অমর্যাদা করার অধিকার দেয়া হয়েছে।
গান্ধীজী স্বাধীনতা এনেছেন অহিংস নীতির উপর ভিত্তি করে। অধিকাংশ নেতা স্বাধীনতা
এনেছেন রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। সেজন্য গান্ধীজী কি ভুল করেছেন? তসলিমা নাসরিন সমাজের কি পরিবর্তন চান? অহিংস নীতি মাধ্যমে চান? না কতটুকু রক্তক্ষরণ চান। সেটা তিনি নিজেও পরিষ্কার নন।
সৈয়দ ওয়ালিওল্লাহ তার "লাল সালু" উপন্যাসে বলেছেন "শস্যের চেয়ে
টুপির সংখ্যা বেশী"। ধর্মের চেয়ে ধর্মের আগাছা বেশী। কেউ তাকে বিরোধ
করেনি। তিনি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে গঠনশীল ও প্রগতিশীল বিপ্লব করেছেন। আমি তসলিমা
নাসরিনের অধিকাংশ বই পড়েছি। এগুলো মানব কল্যাণমূলক বা মানব সেবামূলক লেখা নয়।
যুক্তির অভাব ও বিদ্বেষ ছড়ানোর চিন্তা মাত্র। আপনি কারো বিশ্বাসকে কটূক্তি করে, সে স্থানে থাকাটা আপনার নিরাপত্তার জন্যই উচিৎ নয়। দেশকে
তিনি কতটুকু ভালবাসেন আমি জানি না। তবে দুবাইয়ে যে পরিচ্ছন্নতা কর্মীটি দেশের
জন্য রেমিটেন্স পাঠায়। সে দেশকে ভালবাসে। সে আশা করে বাংলাদেশটা এমন উন্নত হবে
যাতে তার পরিবারটা ভাল থাকবে। ডিউটি শেষে ইমু নিয়ে সে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগে
ব্যস্ত হয়। দেশের বাইরে থেকে প্রতিটা বিষয়ে কটূক্তি করা ছাড়া কখনও গঠনমূলক কথা
তসলিমা নাসরিন বলেননি। দেশের বাইরের মায়া কান্নার কি দাম আছে বলুন। আগে তিনি
প্রমাণ করুন মানুষের বিশ্বাসকে অবজ্ঞা করা ছাড়া অন্য কোন ভাল কাজ তিনি করেছেন কি? তিনি জরায়ুর স্বাধীনতা চান। কিন্তু সুস্থ যৌন জীবনের উপায়
বাতলাননি। সমাধান ছাড়া আন্দোলন। তিনি নির্লজ্জতায় এত উঁচুতে আছেন। তাকে গ্লোবাল
সিটিজেন হিসাবে মানায়। বাংলাদেশী নয়।
এখানে একটা বিষয়
পরিষ্কার তিনি ও তারা অনুসারীরা দেশে জরায়ুর স্বাধীনতা এনজয় করেছেন। তখন কিন্তু
কেউ ব্যস্ত হয়নি। ব্যস্ত হয়েছে তখনই যখন
তিনি ধর্মীয় অনুভূতিকে কটাক্ষ করেছেন। কেউ আস্তিক বা নাস্তিক এটা ব্যক্তিগত বিষয়।
এটা নিয়ে কেউ ব্যস্ত নয়। ব্যস্ত তখনই হতে
হয় যখন আপনি অন্যের আস্তিকতা নিয়ে কটাক্ষ করবেন।
কয়েকদিন আগে শোনা গেল
তার কণ্ঠে শব্দ নাই। আমার স্ত্রী বলল, তসলিমা নাসরিন শয়তানটার স্বর দিয়ে কথা বেরুচ্ছে না। আমি
জানতে চাইলাম কোথায় পাইলা। সে জানাল ফেইস বুকে। আমি বললাম, তুমি তাকে শয়তান বললে। সে তো নারীদের স্বাধীনতা ও মুক্তির
কথা বলে। আমার স্ত্রী পুনরায় ক্ষেপে গিয়ে বলল। যে নবী রসুলকে নিয়ে বাজে কথা বলে সে
শয়তানের দোসর। আমি বুঝলাম তাকে সাধারণ মানুষ প্রগতিশীল ভাবতে পারছে না। তাকে একজন
ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী মানুষ হিসাবেই মনে করছে।
তিনি শ্রদ্ধেয়া থাকতেন
যদি না মানুষের বিশ্বাসের জায়গাটিতে আঘাত না করতেন। তিনি ধর্মীয় বিশ্বাসকে আঘাত না
করে নারী জাগরণ নিয়ে সচেতন করতে পারতেন। নারীদের সাজুগুজু, জামা কাপড় ও অলংকার নিয়ে মানসিকতা নিয়ে ব্যস্ত না থেকে
পুরুষের সাথে মর্যাদার সাথে সমান ভাবে কাজে এগিয়ে আসার তাগিদ দিতে পারতেন। নারী
পুরুষের আস্থার জায়গাটি উন্নত করতে পারতেন। তিনি অনেক বাস্তব ও সত্য কথা বলেছেন।
সন্দেহ নেই। তার পর ধর্ম নিয়ে বাজে কথা বলে বিশাল দুধের গামলায় একফোঁটা চানা ঢেলে
দিয়েছেন।
পরিশেষে বলব, তসলিমা নাসরিন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন তার জন্য ক্ষমা
চাওয়া উচিত। ক্ষমাটা চেয়ে দেশে আসার চিন্তা করতে পারেন। তার আগে নয়। কারণ মানুষ যে
ধর্মেরই হোক মানুষের বিশ্বাসকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ কথা বলার জন্য তাকে সকল ধর্মের
মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়াটা অপরিহার্য।
No comments:
Post a Comment