"নিরাপত্তা" কঠিন একটি বিড়ম্বনার নাম। আজকাল কোন কোম্পানীর অফিসে গেলেও
রেজিস্টারে নাম লেখা, দেহ তল্লাসি, এক্সরে স্ক্যানিং কতই না চেকিং। তারপর চেক হয়ে গেলে আইডি কার্ড গলায় ঝুলিয়ে
ভেতরে প্রবেশের অনুমতি মেলে। ইউটিউবে দেখলাম চাইনিজরা এমন ব্যবস্থা করেছে এক ফেস
ডিটেকশন দিয়ে সারা শহরে ঘুরে বেড়ালে কোথায় কখন গেল সমস্ত কিছুর তথ্য তারা দিতে
পারে। হয়ত চায়নারা শুধু সন্দেহজনকদের বা ভিআইপিদের নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার
করলেও এটা ব্যক্তিগত প্রাইভেসীর জন্য কেমন কেমন। মাঝে মাঝে অনেকে বিতর্ক করেন, আমি কোথায় যাচ্ছি, কি করছি ;এটা আমার প্রাইভেসীকে বিঘ্নিত করছে। প্রাইভেসী নিয়ে আমার মতামতটা কিছুটা
ভিন্ন। আমি যদি বিবাহ ব্যতীত একাধিক নারীর কাছে না যাই। তবে সমস্যা কোথায়। আমি
যদি রাষ্ট্র বিরোধী বা রাজনৈতিক কাজে না যাই, তবে আমাকে ফলো
করলে সমস্যা কোথায়। যদি আমি চুরি ডাকাতি না করি, তবে ফলো করলে সমস্যা কি। শুধু মাত্র নিজের বেড রুমে ঢোকাটা ফলো করলে
সমস্যা নাই। বেডরুম আর বাথরুমে ক্যামেরা না থাকলেই হল।
অনেকে বলেন আমি
কোথায় যাচ্ছি, কেন ফলো করা হবে। আমি প্রশ্ন করব ফলো
করলে সমস্যা কি? আমি তো আকাম করছিনা। তাই মনে হয় সারভায়লেন্স
ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালদের জন্য সমস্যা নেই। আমার কাছে মনে হয় যারাই প্রাইভেসীর
কথা বলে তাদের মাঝে কোন না কোন দুনম্বরী চিন্তা আছে। তারাই ক্ষেপে যায়।
এখন আমি সারভালেন্সের
ভাল দিকে কথা বলব। আমার চারিদিকে ক্যামেরা থাকলে আমি নিারপদ থাকব। আমাকে কেউ
মারলে বা খারাপ উদ্দেশ্যে ফলো করলে তারা ধরা পরবে। আমাকে বদলোক ক্ষতি করার
চেস্টা করলে আইন শৃঙ্খলার বাহিনীর সদস্যরা কম ক্ষতি করবে। আমি সব সময় ক্যামেরার
মধ্যে থাকব বলে নিজের খারাপ রিপুগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব।
আইন শৃঙ্খলার
মানুষ অসৎ হলে আবার বিপদ। একদিন একজন বলেছিল, মোবাইল জিপিএস
নির্ভর অ্যাপ ৩৬০ ডিগ্রী খুব খারাপ জিনিষ। আপনি কোথায় কোথায় যাচ্ছেন আপনার বন্ধু
বান্ধবরা জেনে যাচ্ছে। আমার মতমত হল, এটা কত ভাল
ব্যবস্থা। চিন্তা করে দেখুন, আপনার হালনাগাদ তথ্য
সবাই পাচ্ছে। শুধুমাত্র অবৈধ স্থানে গেলেই আপনার প্রাইভেসী নিয়ে প্রশ্ন। বাথরুম
ও বেডরুমে ক্যামেরা ছাড়া প্রাইভেসীর আর কোন সমস্যা হয়ত নিরাপত্তা এক্সপার্টরা বলতে
পারবে না। প্রাইভেসী নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন তারা মূলত: সন্মানিত। তারা চান
না তিনি কোথায় যান কেউ জানুক। তিনি কার কার সাথে কথা বলেন, দেখা করেন, সেটা অন্যরা জানুক। অন্যরা জানলে তাতে
তার ইমেজগত ক্ষতি হবে। বিষয়টা সেরূপ।
আমরা শহুরেরা
ঘরের বাইরে লুঙ্গি পরতে চাই না। কারণ কে কি ভাববে। যদি কেউ ক্ষেত ভেবে বসে। অথচ
আমাদের বিশ্ব ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মূর্তজাকে একটা ছবিতে দেখলাম, লুঙ্গি পরে গ্রামের ঈদগাহে নামাজ পড়তে গিয়েছে। তার ভক্তদের নিশ্চয়ই ভাল
লেগেছে। সাধারণ মানুষের মত জীবন যাপন।
অথচ তিনি জানেন, অগণিত ক্যামেরা তাকে ফলো করছে। তাই লুঙ্গি নিয়ে কোন সংকোচ নাই। প্রাইভেসী
নিয়ে কোন সংকোচ নাই। প্রাইভেসী বেডরুম আর বাথরুমের বাইরে চিন্তা করার প্রয়োজন
নেই। বাথরুম আর হোটেলের বেডরুমে ক্যামেরা রাখে পর্ণ ব্যবসার উপাদান সংগ্রহ
কারার জন্য এটা বিপদ। এটা নিয়ে সতর্ক থাকাটা জরুরী। নিজে সৎ থাকলে অন্য কোন
ক্যামেরা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। তবে আমার কাছে মনে হয় রেজিস্টার, কম্পিউটার এন্ট্রি, মেটাল ডিটেক্টর ও এক্সরে মেশিন এত
শত চেক আপ অপেক্ষা ফেইস ডিটেকশন ও আরএফ আইডি সিস্টেম ভাল। ওগুলো নিরাপত্তার নামে
হয়রানী ব্যতীত বেশী কিছু নয়। অনেকে প্রতিষ্ঠানের ইনকাম ভাল। অহেতুক সিকিউরিটি রেখে নিজেদের ইজ্জত বাড়ানোর
অপচেষ্টায় ব্যস্ত। গেঞ্জির আবার বুক পকেট। অনেক প্রতিষ্ঠান আবার টাকার জোরে কিছু
এক্স মিলিটারি ও পুলিশ দিয়ে এমন ভাব করেছে, যে নিজে নিজেই
নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা বানিয়েছে। “হোয়াটে ফান
আন্ডার দা সান”। নিরাপত্তার নামে ফানি কাজগুলি কমানো
প্রয়োজন। সো কল সিকিউরিটির কাজ না করিয়ে ফসল বা মাছ উৎপাদন করা অধিক জরুরী।
তাই প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে যেখানে যত বেশী নিরাপত্তা সেখানে ট্যাক্স ফাঁকি ও
অন্যান্য দুর্নীতি তত বেশী এটা আমার ধারনা।
যে সকল
বেসরকারি বাড়ীর নিরাপত্তা ও প্রাইভেসী যত বেশী কঠিন সেখানে তত বেশী কামলীলা, মদলীলা ও কালাধন চর্চা তত বেশী। আমার ব্যক্তিগত ধারনা। পরিশেষে বলব সৎ মানুষ
দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সারভায়লেন্স ও অন্যান্য নিরাপত্তায় প্রাইভেসীর দোহাই
দেয়াটা যুক্তিহীন। প্রতিটা প্রতিষ্ঠান নিজ নিরাপত্তার অহেতুক খরচ না করে সবার
নিরাপত্তায় সরকারকে সহযোগীতা করাটা জরুরী।
No comments:
Post a Comment