Pages

Thursday, August 30, 2018

ভিন্নধর্মী চিকিৎসা সাওল সেন্টার


আমি দীর্ঘ চার বছর যাবত আমার লিপিড প্রোফাইল(এক ধরনের রক্ত পরীক্ষা) দেখছি। টিজি বা ট্রাই গ্লিসারাইড(চর্বি জাতীয় উপাদান) স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী। আমি ডাক্তারদের সাথে আলোচনা করে রাইস ব্রান ওয়েলঅনেক দিন থেকে খাচ্ছি। মাঝে মাঝে ঔষধ খাই। আমার ৪৮ বছর বয়সে টিজি বেশী; ভাল লক্ষণ নয়। আমি আমার বয়সী দুই বন্ধুর হার্ট ব্লক ধরা পড়ার পর ২০১৮ সালে ৬ বছর হল আমি সিগারেট ছেড়ে দিয়েছি। যারা ডেক্সে বসে বসে কাজ করে তারা মাঝে মাঝে মোটা হয়ে যায়। টিজি ও কলস্টোরেল বেড়ে যায়। এটা দ্বারা আমরা স্বাভাবিক ভাবেই হার্টে ব্লকের ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাই। ওভার ওয়েটের হালকা সমস্যাটা কমাতেই পারছি না।
চায়ে চিনি খাওয়া ছেড়েছি ২০১৮ সালে প্রায় ১৫ বছর হবে। এখন কোন চা বা কফি চিনি দিয়া দিলে কেমন কেমন লাগে। আমার এই অভ্যাসটা ভীষণ উপকারে লেগেছে। আমার রক্তে সুগারের মাত্রা সর্বদাই স্বাভাবিক। আমি রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড কমানোর জন্য সমস্ত কারীতে তৈল কম খাচ্ছি। ভাজা পোড়া কম খাচ্ছি। ধূমপান ছেড়েছি। তাও স্বাভাবিকের চেয়ে হালকা ট্রাই গ্লিসারাইড রক্তে বিদ্যমান থাকছে। এই বিপর্যয় থেকে বাচার উপায় আছে কি? সবাই বলবেন, দৌড়-ঝাপ বাড়িয়ে দিন। আমি বিভিন্ন অল্টারনেটিভ তৈল খুঁজছি রক্তে ট্রাই গ্লিসারাইড কমানোর জন্য। সত্যি কঠিন কঠিন অপশন ছাড়া, কেউ কোন সহজ অপশন বলছে না। সেদিন একটা ইউটিউব ভিডিও দেখে আমার ধারণা বদলে গেল, ভারতের ডাক্তার বিমল তিনি বিনা কাটা-কাটি ও অপারেশনে হৃদরোগ সংক্রান্ত চিকিৎসা করে যাচ্ছেন। ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছেন। আমি গত ১৫ বছর চায়ে চিনি খাই না। আমার সুগার লেভেল উপরে উঠেনি।
দেখলাম ডাঃ বিমল এরূপ একটা মাত্র টিপস ফলো করে। "সাওল" বা "সাইন্স এন্ড আর্ট অব লিভিং" নামে প্রতিষ্ঠান করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। যদি ডায়াবেটিক রোগীরা কঠিন রকম লাইফ স্টাইল ফলো করে সুস্থ থাকতে পারেন। তবে হৃদরোগীরাও বিনা অপারেশনের বেচে থাকার জন্য জীবনধারণ ও খাদ্যাভ্যাসের কিছু অপশন মেনে চললেই সুস্থ থাকবে।
আমার রক্তের ট্রাই গ্লিসারাইড না কমায় আমি বেশ মনঃকষ্টে দিনানিপাত করছিলাম। অনেক রকম তৈল বদল করে খাওয়া, দৌড়-ঝাপ বাড়ানো ইত্যাদিতে সামান্যই পরিবর্তন হচ্ছিল।
ডাঃ বিমলের ইউটিউব ভিডিও থেকে প্রথম জানতে পারলাম, খাবারে তৈল একদম বন্ধ করা যায়। যে কোন তৈল খাই না কেন রক্তে টিজি বাড়বেই। তাই টিজি কমানোর উপায়ই হল সুগারের মত তৈল খাওয়া বন্ধ করা। যেভাবে আমি চাতে একদম চিনি খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি প্রায় এক যুগ। এটাও সেই রকম একটা ব্যবস্থা। আমাকে একদম তৈল খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে। সমস্ত খাবারে ডাঃ বিমল বললেন, তৈল ছাড়া কারী থেকে শুরু করে সব ধরনের রান্নাই করা সম্ভব। খারার কাবাব বা বেক করে খেলে তৈল লাগে না। এটা রান্নার থেকেও মজা। তিনি আরো বললেন। যাদের রক্তনালীতে টিজি ও কলস্টোরেলের স্তর জমে তা ব্লকের দিকে যাচ্ছে, তা তৈল না খেয়ে কমানো যাবে।  
এটা জানার পর আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে তৈল ছাড়া রেসিপি ট্রাই করলাম। দেখলাম, এটা করা সম্ভব। স্বাদ তেমন খারাপ নয়। চিনি ছাড়া চা বা কফি থেকেও তৈল ছাড়া খাবারের টেস্ট ভাল। আমি নিশ্চিত তৈল ছাড়া খেয়ে অভ্যাস করলে এক সময় তৈল ছাড়া আর মন্দ লাগবে না। তার একটা কথা তৈলে কোন স্বাদ, গন্ধ ও বর্ণ নাই। তৈল চামচ দিয়ে খেলে কোন রকম স্বাদ পাওয়া যায় না। তবে তরকারীর স্বাদ কোথা থেকে আসে। তরকারীর স্বাদ আসে মশল্লা থেকে। মশল্লাকে ভালভাবে পানিতে কষিয়ে নিলে ও সিদ্ধ করে মশল্লার কাচা গন্ধ দূর করে তার মধ্যে যে কোন সবজি সিদ্ধ করলেই হল। আমি পড়ে অবাক হয়ে লক্ষ করলাম। ইউটিউবে জিরো ওয়েলের উপর অগণিত রেসিপি আছে। আমি হিটিং ওভেন দিয়ে জিরো ওয়েল ফেঞ্চ ফ্রাই বানালাম। ছেলেরা,মেয়ে ও স্ত্রী এতই পছন্দ করল; তারা ডিমান্ড করল হলি ডে তে করতে হবে। আমি অনেক পড়াশোনায় নিশ্চিত হলাম। তৈল ছাড়া ভাজা পোড়া অনেক আইটেম তৈল ছাড়া বেকিং ছাড়া খাওয়া যায়। ভর্তায় সরিষার তৈল না মিশিয়ে বানানো যায়। তৈল ছাড়া রান্না করে খাওয়াটা হল মাইন্ড সেটঅনেকটা চিনি বিহীন চায়ের মত।
এটা প্রমাণিত চিনি ও চিনি আছে এ ধরণের খাবার না খেলে রক্ত‌ে সুগার বাড়ার কোন কারণ নেই। তেমনি  তৈল ছেড়ে দিলে রক্ত‌ে চর্ব‌ি কমবে এটা যে কেউ বিশ্বাস করবে। এরপরও কারো কলস্টোরেলের সমস্যা থাকলে সমস্ত প্রাণীজ প্রোটিন ধী‌রে ধী‌রে ত্যাগ কর‌তে হবে। কারণ সমস্ত প্রাণীজ প্রোটিনে কোলস্টোরেল আছে। এটাই স‌লিউশন। এই পদ্ধতি তা‌দের জন্য; যা‌দের টাকা কম আছে। দুই লক্ষ টাকায় রিংপড়া‌নো ও দশ লক্ষ টাকায় বাই পাস সার্জারিকরা‌নোর টাকার অভাব আছে তারা ডাঃ বিমলের পদ্ধতি অনুসরণ ক‌রে ভাল থাক‌তে পারবেন; সন্দেহ নেই। পরিশেষে বলব, আগে থেকে সতর্ক হ‌য়ে লাইফ স্টাইল চেঞ্জ করার প্রচেষ্টা আমরা সবাই ক‌রে দেখ‌তে পারি। বাকীটা সৃষ্টিকর্তার হাতে।

No comments:

Post a Comment