চিনি কম খেলে রক্তে চিনি কম বাড়ে। তৈল কম খেলে রক্তে
তৈল কম বাড়বে। পিউরিন আছে এই ধরনের খাবার কম খেলে রক্তে ইউরিক এসিড কম বাড়বে।
প্রাণীজ উৎসে কোলেস্টোরেড আছে আর তা কম খেলে রক্তে কোলেস্টোরেড কম বাড়বে। শর্করা কম খেলে মোটা হওয়ার ভয় কমে যাবে।
আবার সব খেয়ে যদি অনেক অনেক বার্ন করা যায়; তবে আর চিন্তা
নেই। রক্তে যাই উপাদান থাকুক অধিক পরিশ্রম করে তা নি:শেষ করা যায়। বাঙ্গালীদের খাবারে ভাজা পোড়া
খাবার বেশী থাকে। আবার ভাজা-পোড়া খাবার অধিক কায়িক পরিশ্রমী মানুষের জন্য তেমন কোন
সমস্যা নয়। তবে অধিক পরিশ্রম করার যুগ কি আছে। তেমন নেই। জমির কাজ হচ্ছে মেশিনে।
মালপত্র উঠানামার কাজ হচ্ছে ফগ লিফটরে। বিভিন্ন কোম্পানিতে নানা কাজ হচ্ছে রোবটে।
রিক্সার মত ম্যানুয়াল কাজও আজ মোটরে চলে আসছে। যদি কায়িক পরিশ্রমের কাজ কমে যায় তবে
কি ধরণের খাদ্য অভ্যাস মানুষের প্রয়োজন। তা হল ক্যালরী কম খাওয়া। চিনি ময়দা, লবণ এই তিনটিকে বলা হয় সাদা বিষ। এই তিনটি যত কম খাওয়া যায় তত মঙ্গল। যারা
বসে বসে ডেক্সে কাজ করে তারা আজকাল সাদা বিশ কম খাওয়ার চেষ্টা করছেন। যারা পেটের
সমস্যায় ভোগেন তারা বাদে খুব কম লোকজনই আছে যারা ভাজা পোড়া কম খান। আমাদের দেশে
রোজায় ভাজা-পোড়ার আইটেম ছাড়া অচল। তাই ভাজা পোড়ার অভ্যাস থাকুক কিন্তু প্রয়োজন কম
তৈল খাওয়া। যদি ভাজায় ৮০% বা ৯০% তৈল কম ব্যবহার হয় তবে তা হবে বেস্ট অপশন। ভাজা একই রকম থাকবে, কিন্তু তৈল খরচ কম হবে। খাদ্যে কম তৈল থাকবে তাহলে সেটা হবে বেস্ট। আমরা
যারা ভাজা-পোড়া খাই; তারা কমপক্ষে দৈনিক প্রায় পাঁচ চামচ তৈল খাই। একটি চা চামচে
যদি পাঁচ গ্রাম হয় তবে আমরা ৫ গুন ৯ মোট ৪৫ ক্যালরি খাবার নিচ্ছি। তাহলে পাঁচ চামচ
হলে তা হয়ে যাবে; ২২৫ ক্যালরি। এখন আমরা একই ভাজা-পোড়া খেয়ে
যদি এক চামচ তৈল খাই; তবে আমরা মাত্র ৪৫ ক্যালরি নিব। ১৮০ ক্যালরী কম খাব। এই ১৮০ ক্যালরি পুড়তে আপনার প্রয়োজন হবে প্রায় এক ঘণ্টা
মধ্যম গতিতে দৌড় দেয়া। যারা দৌড়াতে কম পছন্দ করেন, তারা দিনে
চার চামচ তৈল কম খেতে পারেন। আমাদের মা বোন ও স্ত্রীদের রান্নায় তৈল নিয়ন্ত্রণ করা
গেলেও বাবুর্চিদের রান্নায় তৈল নিয়ন্ত্রণ করা একদমই যায় না। বেশী তৈল মানে খাবার
বেশী উপাদেয়। অথচ তৈলের স্বাদ ও গন্ধ বা বর্ণ নেই। তবে কিভাবে তৈল উপাদেয় হবে। তৈল
উপাদেয় নয়। ওয়েল ফ্রি কুকিং হয়ত যারা ভীষণ রকম রক্তের ট্রাই গ্লিসারাইড নিয়ে বিপদে
আছেন তারা মেনে চলতে পারেন। আপনি ভাজা-পোড়া সবই খেলেন কিন্তু ওয়েল ফ্রি বা অল্প তৈলে তাহলে কেমন হয়। খুব মজাদার বিষয় নয় কি? বেকিং
করা একটা ভাল পদ্ধতি। এতে তৈল কম খরচ হয়। কিন্তু খাবারের ইভেন বা সমভাবে কুকিং
নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব। ডুবো তৈলে ভাজা হলে ভাজা-পোড়ার সমভাবে ভাজা যায়।
কিন্তু বিপদ হল অনেক তৈল খাবারে থেকে যায়। খাবারের ভাজার স্বাদের জন্য অল্প তৈলই
যথেষ্ট। বাকীটাই তৈল আমরা খামোখা খাই বা খেতে বাধ্য হচ্ছি। তবে উপায় কি? বাতাসে রান্না করলে কেমন হয়? তৈলে না ডুবিয়ে
গরম বাতাস দিয়ে রান্না করলে কেমন হয়। আমার কাছে বিষয়টা খুবই মজাদার মনে হচ্ছে আর
তা হল গরম বাতাস দিয়ে রান্না করা। গরম বাতাস দিয়ে রান্না করলে রান্নাটা সমভাবে করা
যায়। গরম বাতাসে খাবার যেভাবে রাখুক না কেন সমভাবে তাপটা ছড়িয়ে খাবার রান্না করতে
পারে। গরম বাতাসে খাবারে তৈল থাকুক আর না থাকুক সমভাবে রান্না করা সম্ভব হয়। তাই
এটা বিনা তৈলে বা অল্প তৈলে রান্না করাটা বেশ সহজ। বেশ কয়েক বছর হল বাংলাদেশেও
ধীরে ধীরে এয়ার ফ্রাইয়ার বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। এটিতে তৈল খরচ কমার পাশাপাশি
কনভেনশনাল ওভেন থেকে সময় কম লাগে বলে বিদ্যুৎ খরচ কম। তাই এনার্জি এফিশিয়েন্টও বলা
যায়। আসুন আমরা কম তৈল বা বিনা তৈলে রান্নার জন্য এয়ার ফ্রাইয়ার ব্যবহার করে
স্বাস্থ্য রক্ষার পাশাপাশি ভোজ্য তৈলের খরচ বাচাই। কনভেনশনাল ওভেনে বেক করার
অর্ধেক সময়ে রান্না করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী করি। সার্বিক বিবেচনায় একটা বাসস্থানের
জন্য এটি একটি ভাল প্রোডাক্ট।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment