বাংলাদেশে নাকি ১৭% হারে কোটিপতি
বাড়ছে। যা কিনা বিশ্বের সর্বোচ্চ। আমাদের চারিদিকে অনেকের সুন্দর চকচকে গাড়ী ও চোখ
ধাঁধানো বাড়ী আমাদের নজর কারে। এই ধরনের বাড়ী ও গাড়ীতে মানুষের নজর কারে। মনে করুন, আপনার কাছে একটি বাড়ী ও সম্পত্তি আছে; যার মূল্য দশ
কোটি টাকা। এরূপ কোটি পতির সংখ্যা এই দেশে কয়েক লক্ষ। আপনি সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি
করে দিলেন। আপনি দশ কোটি টাকা তিন চারটি ব্যাংকে ইসলামী আমানত হিসাবে রেখে দিলেন।
আপনি যদি ৬% করে পান, তবে আপনি মাসে পাঁচ লক্ষ টাকা
পাবেন। এখন এই পাঁচ লক্ষ টাকায় আপনি বাড়ী ভাড়া করলেন ৬০হাজার টাকায়, দুইটি গাড়ী ভাড়ায় রাখলেন অন কল ২০ হাজার করে ৪০ হাজার টাকা। ১ লক্ষ টাকা চলে
গেল। এখন আপনার বাচ্চাদের জন্য খরচ করলেন মাসে আরো ১ লক্ষ টাকা। কাজের কাজের লোক ও
বুয়া ৫০ হাজার টাকা। চিকিৎসা ও অন্যান্য ৫০ হাজার টাকা; মোট ১ লক্ষ। বাসার বাজার,নামীদামী হোটেলে খাওয়া
ও বেড়ানো ১ লক্ষ টাকা। ইনকাম ট্যাক্স ও মাসিক সঞ্চয় ১ লক্ষ টাকা। তাহলে ৫ লক্ষ
টাকার বিতরণ হয়ে গেল। খেয়াল করে দেখুন, আপনার বাড়ী
নাই। গাড়ী নাই। আপনার শত্রু নাই। আপনার ভাড়া বাড়ী। ভাড়া গাড়ী। সমস্যা হল, পছন্দ হচ্ছে না, চালকসহ গাড়ী বদল করে নিলেন। বাড়ী
পছন্দ হচ্ছে না, বদলিয়ে নিলেন। আমি আপনাকে গ্যারান্টি
দিয়ে বলতে পারি, আপনি বাড়ী ও গাড়ীর মালিক না হওয়ায়, আপনি ভাদাইম্মা। আপনার আত্মীয় স্বজন আপনার ইগনোর করবে আপনার পিছনে লাগতে আসবে
না। আপনার কাছে কিছু আশা বা চাহিদা করবে না। কারণ আপনি ভাদাইম্মা। অথচ আপনি নতুন
চকচকে ভাড়া করা বাড়ীতে থাকছেন। চকচকে ভাড়া করা গাড়ীতে চড়ছেন। বাড়ীর জন্য আপনার
ট্যাক্স দিতে হচ্ছে না। গাড়ীর জন্য ট্যাক্স দিতে হচ্ছে না। আপনি একাধিক ব্যাংকে
টাকা রাখার কারণ হল, কোন ব্যাংক যদি হায় হায়
হয়ে যায়, আপনি পুরোটা হারাবেন না। অনেকে বলবেন, জমি খাটি। অথচ এই জমি দখল হয়ে যেতে পারে। মামলা করে আপনি ফতুর হয়ে যাবেন। আপনি
যদি একটি গাড়ী পোষেন আপনার মাসে ৫০ হাজার টাকা খরচ যাবে। আপনার গাড়ীর মেরামত ও
দুর্ঘটনা। চালকের নানা রূপ উপদ্রব আপনার সহ্য করতে হবে। যদি পার্ট টাইম দুইটি গাড়ী
চুক্তিতে ভাড়া রাখেন তবে বর্তমান বাজার দরে ২০ হাজার করে ৪০ হাজার টায় দুইটি গাড়ী
চুক্তিবদ্ধ ভাড়ায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। কারণ আমাদের নিজের গাড়ী থাকলেও তা
বাংলাদেশে ২৪ ঘণ্টা ব্যবহার করা যায় না বা লাগে না। কারণ আমাদের দেশের অনেক
মার্কেট আছে বাড়ীর আশে পাশে। অনেক স্কুল আছে বাড়ীর আশে পাশে। তাই মাঝে মাঝে
বেড়ানোর জন্য মূলত গাড়ীর ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে। অনেকে চিন্তা করবেন বাড়ী না থাকলে
মেয়ে বিয়ে দেয়া যায় না। ছেলে বিয়ে দেয়া যায় না। সেই সমস্ত ক্ষেত্রে ছেলে মেয়ের
নামে কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট গ্যারান্টি হিসাবে প্রদর্শন করতে পারেন। এতে যদি
কেই কনভিন্স না হয় হবে সেই বিয়ে না দেয়াই ভাল। ছেলে বা মেয়ের ক্ষেত্রে এখনকার সময়
কর্মজীবি হওয়াটা প্রয়োজন। প্রয়োজনে সাধারণ মানের পরিবারে হতে পারে। কর্মজীবীরা
উদ্যমী ও পরিশ্রমী হয়। যে রোজগারের টেকনিক জানে, তার ভাতের অভাব হয় না।
অন্য কথায় চলে গেলাম। আমার লেখার
মূল উদ্দেশ্য হল, অত্যন্ত সহজ ও সাধারণ
জীবন যাপন করা। বাইরের মানুষকে একটা সাধারণ লুক দেয়া। যাতে ঈর্ষা থেকে শত্রু কম
হয়। শত্রু যত কম হবে, আপনি তত ভাল থাকবেন। আপনার স্ট্রেস কম
থাকবে। স্থাবর সম্পত্তি যত কম থাকবে, আপনি তত মামলামুক্ত, কর মুক্ত ও মানুষের চোখ টাটানি থেকে দূরে থাকবেন। আপনি যখন ভাড়া করা বাড়ী
ও ভাড়া করা গাড়ীতে থেকে ভাদাইম্মা হয়ে যাবেন; আপনার গরীব
আত্মীয় স্বজনও আপনাকে তাদের অবস্থানে ধরে নিয়ে আপনার সাথে ভাল সম্পর্ক রাখবে। তাই
সমস্ত স্থাবর সম্পদ ছেড়ে দিয়ে ভাদাইম্মা হওয়াটা ভাল। এতে আপনি ধনী হয়েও শত্রু
মুক্ত থাকতে পারবেন।
No comments:
Post a Comment