Pages

Thursday, November 22, 2018

মানুষের আশার প্রতিফলনে দেশের নেতৃত্ব


পৃথিবীতে সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক পদ্ধতি হল গণতন্ত্র। রাশিয়ার সমাজতন্ত্র খতমের পর সেটা প্রমাণিত। অপর দিকে ইসলাম পুঁজিবাদী সমাজ বর্জন না করে যাকাত ও মানবীয় ব্যবস্থার দিক নির্দেশনা দিয়ে গণতন্ত্রের বিরোধ করেনি।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সকল মানুষ ভোটের অধিকারের মাধ্যমে তার আশার প্রতিফলন রাখতে চায়। সেটা কি গণতান্ত্রিক ভোটের মাধ্যমে হয়? প্রতিটা মানুষের ভোটের মূল্যমান ঠিক থাকে? থাকে না। যদি থাকত, ভোট ইঞ্জিনিয়ারিং শব্দটা আসত না। পৃথিবীর অনেক গণতান্ত্রিক দেশে এটা হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও নানা ইঞ্জিনিয়ারিং। উন্নত দেশের মধ্যে আমেরিকায় গণতন্ত্র আছে। সেখানেও মানুষের ভোট বেশী পেয়েও নাকি হিলারি নির্বাচিত হয়নি। কারণ তাদের সিস্টেমে স্থানে স্থানে জয়লাভ করতে হবে। টোটাল ভোটে নয়। কোথাও বেশী ভোটে জয়লাভ আবার কোথাও অল্প ব্যবধানে হারা। এই ধরনের সিস্টেম আসলে নির্ধারণ করা অতন্ত্য কষ্টকর যে, জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
বাংলাদেশে কোন দলের মনে করি শতকরা ৪০/৪৫ ভাগ ভোট আছে। তবুও তারা সরকার গঠন করতে না পারার ঝুঁকিতে থাকবে। আবার কোন দলের শতকরা ৩০/৩৫ ভাগ জনপ্রিয়তা নিয়েও সরকার গঠন করতে পাররে। এটাই ইঞ্জিনিয়ারিং। যদি এটা হয়, তবে সেই গণতন্ত্র আসলে কারোর জন্যই ভাল নয়। গণতন্ত্র যদি প্রকৃত অর্থেই থাকতে হয়, তবে সকল ভোটারের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে। কোন এলাকার কেউ নির্বাচিত হওয়া প্রয়োজন তার ব্যক্তিগত ইমেজে। কিন্তু তা কি হচ্ছে। প্রার্থী নির্বাচিত হচ্ছে দলের কারণে। দলে আবার তিনি মনোনয়ন পাচ্ছেন একটা বাণিজ্যের কারণে। এটা কি গণতন্ত্রের জন্য ভাল। মোটেই না। যারা পলিটিকাল সাইন্স পড়ে তারা হয়ত রাজনৈতিক বিষয়ের অদ্যপান্ত জানবেন। তবে আমার মত একজন সাধারণ লেখক এটা জানি। বর্তমান সিস্টেমগুলো ভাল হচ্ছে না। এতে সীমাবদ্ধতা আছে। অসন্তোষ আছে।
এটা কি এমন হতে পারে, সমস্ত নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থীরা নিজেদের মত নমিনেশন নিবে। এখন মনে করি, কুমিল্লা নির্বাচনী এলাকা-১ পাঁচজন প্রার্থী হল। দুইলাখ ভোটের মধ্যে ৬০ ভাগ কাস্ট হল। ১,৬০,০০০ ভোট। এখন মনে করি নির্বাচিত প্রার্থীদের ক=৭০,০০০ খ=৫০,০০০০ গ=১৫,০০০ ঘ=১০,০০০ ঙ=৫,০০০।
প্রার্থীদের মধ্যে ক মনে করি এক্স পার্টি। আর খ,,ঘ ও ঙ এই চারটি হল ওয়াই পার্টির। এখন দেখুন, এক্স পার্টি প্রার্থীর ভোট হল ৭০ হাজার যা একজন প্রার্থী দিয়েছে। অপর দিকে ওয়াই পার্টির চারজন মিলে পেল ৮০ হাজার। এবার দেখুন এমপি এক্স পার্টির লোক নির্বাচিত হলেও পার্টির ভোট বেশী হবে ওয়াই পার্টির। এখন এমন হতে পারে এক্স পার্টির এমপি বেশী হলেও সরকার গঠন সেই করবে, যার ভোট বেশী। হয়তবা ওয়াই পার্টিসরকার গঠন করল। সেই দলের প্রধান হবেন, সরকার প্রধান। মন্ত্রীরা হবে দলীয় ভোট সংখ্যার উপর ভিত্তি করে। এতে জনগণের ভোটের প্রকৃত মূল্যায়ন হবে। মনোনয়ন বাণিজ্য, পার্টির মধ্যে গণতন্ত্র না থাকা  ইত্যাদি সমস্যা দূর হবে। যারা নির্বাচিত হবে তারা পার্টির ইঞ্জিনিয়ারিঙের উপর নির্ভর করতে হবে না। তারা প্রার্থী হবে পার্টির নাম ডিক্লেয়ার দিয়ে বা স্বতন্ত্র হিসাবে। যার ফলে একাধিক প্রার্থী আসবে একই দল থেকে।
আমি যেটা বর্ণনা করলাম, এতে কোন দল কোন প্রার্থীকে নিয়ে ব্যস্ত হবে না। এখন প্রার্থী নির্বাচন করে পার্টি প্রধানরা। ফলে জনগণের চাহিদা অনুযায়ী হয় না। কিন্তু পার্টির ব্যানারে পাশ করে যায়, কিন্তু জনপ্রিয় হওয়া যায় না। আমার আইডিয়ায় সকল প্রার্থী ব্যক্তিগতভাবে নিজের ইমেজ ও জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে পাশ করবে। অপর দিকে একাধিক প্রার্থী দিয়ে ভোট ভাগ হয়ে যাবে এই চিন্তার কোন কারণ নাই। সকল প্রার্থীর সকল ভোটই তখন দলের জন্য মূল্যবান। এমনকি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যারা পাশ করেনি কিন্তু ভোট পেয়েছে তারা যখন ফলাফল হওয়ার পর বিভিন্ন পার্টিতে যোগ দিবে। তাদের ভোটও কাজে লাগবে।
খেয়াল করে দেখুন, এতে সকল প্রার্থী ব্যস্ত হবে পার্টির তাঁবেদারি না করে মানুষের কাছে জনপ্রিয় হতে। আবার পার্টি সরকার গঠন করে ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রার্থীর উপর নির্ভর না করে সার্বিক ভোট বাড়াতে চেষ্টা করবে। ইমেজ বাড়াতে চেষ্টা করবে। দলে দলে কোন্দল কমে যাবে। মারামারি কমে যাবে। আগে অনেক জটিল হিসাব হলেও এখন মূহুর্তের মধ্যে নির্বাচন কমিশন বলতে পারবে কোন প্রার্থী কত ভোট পেল ও কোন দল কত ভোট পেল একটা মাত্র ক্লিক। অপর দিকে পার্টি প্রধানের জনপ্রিয় একাধিক প্রার্থীর মধ্যে বাছাই করার প্রয়োজন হচ্ছে না। জনগণ ভোটের মাধ্যমে বাছাই করে দিচ্ছে। ক্ষমতা বিহীন দলগুলো অনর্থক সমস্যা করবে না। কারণ তাদের ভোট অনুযায়ী তারা মন্ত্রিত্ব ও অন্যান্য ক্ষমতায় থাকবে। তাই সাধারণ জনগণ যোগ্যকে ভোট দিলে সে যেই পার্টিরই হোক তার একটা সুযোগ থাকবে মন্ত্রী হওয়ার। এভাবে চমৎকার একটা ভারসাম্য আসবে। এটা হয়ত থিংক ট্যাংকরা ভেবে দেখতে পারেন।

No comments:

Post a Comment