ঢাকা শহরে এক বছরের উপরে হল
চাকুরীর সুবাদে পোস্টিং আছি। এই এক বছরে অনেক নারীকে গাড়ী ও মটর সাইক্যাল চালাতে
দেখেছি। কিন্তু নারী বাই-সাইক্যাল চালনাকারী খুব বেশী একটা দেখা যায় না। আমি একবছর
ঢাকায় থাকার পর ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় এলাকায় একজন নারী বাই-সাইক্যাল চালনাকারী
দেখেছি। মনে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। একটা ব্যাক প্যাক পিঠে নিয়ে বাই-সাইক্যাল
চালাচ্ছে। যথেষ্ট ভাল চালায় তা বলা যাবে না। কারণ ট্রাফিক সিগন্যালে বাই-সাইক্যাল
থেকে নেমে পড়ে সাইক্যাল হাতে দাড়াতে দেখলাম। আবার জ্যাম ক্লিয়ার হওয়ার পর সতর্কতার
সাথে পার হল। আমার মনে আছে ২০১৬ সালে আমি বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা আইসিপি দিয়ে
ভারতের কলিকাতায় ভাড়া করা কারে ভ্রমণ করি। ভারতের গেদে সীমান্ত থেকে কলিকাতার
যাওয়ার পথে রাস্তায় একটা কমন দৃশ্য দেখেছি তা হল মেয়েদের বাই-সাইক্যাল চালানো।
আমাদের দেশে গ্রামে এনজিওতে চাকুরীরত মেয়েরা সাইক্যাল চালায় এটা কমন একটা দৃশ্য।
ছাত্রীদের বিশেষ করে ঢাকা শহরে ছাত্রীদের বাই-সাইক্যাল চালাতে দেখা যায় না। এর
কারণ অনিরাপদ সড়ক হতে পারে। সাইক্যাল লেন না থাকাও একটা কারণ হতে পারে।
আমার অনেক লেখনীতে স্মার্ট সিটি
নিয়ে কথা বলেছি। স্মার্ট সিটিতে হাটা ও বাই সাইক্যালের ব্যবস্থা থাকবে। সমস্ত
রাস্তার পাশে ফুটপাত আর রাস্তার মাঝে বাই-সাইক্যাল লেন বেশ জরুরী। কারণ রিক্সা বাই-সাইক্যাল হল পরিবেশ বান্ধব যান। অনেক দেশে রিক্সা নেই। আমাদের
দেশে আছে। রিক্সা থাকুন। অনেক গবেষণা করে রিক্সা গুলো ব্রেক সিস্টেম ও
নিরাপত্তা বাড়ালে চলবে। রিক্সা ও বাই-সাইকেলের জন্য আলাদা লেন থাকলে কখনোও ব্যাটারি চালিত রিক্সার বা সাধারণ রিক্সার
নিরাপত্তা ঝুঁকি কমে যাবে বলে মনে করা যায়।
আমাদের দেশের প্রায় নব্বই শতাংশ
মেয়ে রিক্সা, স্কুটার ও ওবার ইত্যাদিতে যাতায়ত করে;
ধাক্কাধাক্কি পরিহার করা ও নিরাপত্তার জন্য তা করে থাকে। এখন রিক্সা ও বাই
সাইক্যালের জন্য আলাদা লেন করতে পারলে সবচেয়ে লাভবান করা যাবে মেয়েদের। এতে অনেক
মেয়েই বাই-সাইক্যাল চালাতে সাহস পাবে। মেয়েরা অধিক পরিমাণ বাই-সাইক্যাল চালালে
সমাজের কিছু লাভ হবে। সবচেয়ে বড় লাভ হবে মেয়েদের শরীরে কায়িক পরিশ্রম করার সক্ষমতা
বাড়বে। তারা কম রোগাক্রান্ত হবে। সক্ষম মা হবে। উন্নত স্বাস্থ্যের সন্তান জন্ম দিতে
পারবে। তাদের মাঝে মূখাপেক্ষতা কমে যাবে। তারা আত্মনির্ভরশীল হবে। ভারতে ২০১৬ সালের মার্চ মাসের দিকে ভারত
ভ্রমণের সময় অনেকের কছে শুনেছিলাম পশ্চিম
বংগের মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেয়েদের পড়াশোনা উন্নয়নের জন্য সাড়ে তিন
লাখ বাই-সাইক্যাল স্কুলের ছাত্রীদের মাঝে বিতরণ করেন। মেয়েদের বাই-সাইক্যাল
ছেলেদের থেকে বেশী পরিমাণে চালানো প্রয়োজন। এটা এমন একটা ট্রেনিং যা কিনা একটা
নারীকে তার সম্ভ্রম রক্ষা করে পুরুষের স্পর্শ ছাড়া যাতায়ত নিশ্চিত করবে। বাসে ও
অন্যান্য গণ পরিবহনের যাতায়তে নারীদের নামা উঠার পথে ও ভিড়ের ধাক্কায় পুরুষের
সাথে ধাক্কা যুদ্ধ পড়তে হয়। তা নারীর জন্য ও সকলের জন্য বিব্রতকর। তাই পরিবেশ
বান্ধব বাই-সাইক্যালে নারীকে অভ্যস্থ করতে পারলে নারী হয়ে উঠবে অনেক অনেক বেশী
আত্মপ্রত্যয়ী ও ক্ষমতাধর।
গ্রামের রাস্তা ঘাট অনেক বেশী দুরে
দূরে। সেখানে ছাত্রীদের ছোট বয়স থেকে বাই-সাইক্যাল দেয়াটা প্রয়োজন। গ্রামের
স্কুল কলেজ অনেক দূরে দূরে। সেখানে গনপরিবহন তেমন নেই। ছাত্রীরা অনেক দূরের
রাস্তা হেঁটে পার হয়। অনেক সময় ব্যয় হয় ও শারীরিক চাপ যায়। বাই-সাইক্যাল তাদের
স্কুল ও কলেজে আসা যাওয়ার শারীরিক চাপ কমাতে পারবে। পড়াশোনায় তারা আরো এগিয়ে
আনতে পারবে।
বাংলাদেশের গ্রামে অনেক স্থানে
মেয়েদের স্বতঃস্ফূর্ত বাই-সাইক্যাল চালু থাকলেও অনেক স্থানে চালু নাই। সরকার ও অনেক সংস্থা গ্রামের মেয়েদের
বাই-সাইক্যাল অনুদান দিতে পারেন। পিতামাতা মেয়েদের বাই-সাইক্যাল চালনায় উতসাহিত
করতে পারেন। সামর্থবান বাবা মায়েদের মেয়েদের অবশ্য বাই-সাইক্যাল কিনে দিতে পারেন
ও উতসাহিত করতে পারেন।
মেয়েরা পর্দায় থেকেও বাই-সাইক্যাল
চালাতে পারে যেভাবে সৌদি মেয়েরা হিজাব পড়ে অলিম্পিকে যোগদান করে।
পরিশেষে আশা থাকবে দেশ এগিয়ে
যাচ্ছে। সাথে মেয়ে আরো বাই-সাইক্যাল চালাবে ও সক্ষমতা অর্জন করবে।
Tarek I fully agree with your vision. Side be side you should also take some endeavour to write column in news paper.
ReplyDelete