এখনকার গাড়ীগুলোর মধ্যে ম্যাজিক আছে। পকেটে চাবিরাখলে স্টিয়ারিং এ বসেই গাড়ী স্টার্ট বাটন চাপলেই গাড়ী স্টার্ট। চাবি পকেট থেকে বের করে গাড়ী স্টার্ট করার প্রয়োজন নেই। এগুলো সবই আরএফআইডির কাজ। বাসা থেকে বেরুলাম। পকেটে একগাদা চাবির থোকা। আলমারির চাবি, লকারের চাবি, ঘরের চাবি ও গেইটের চাবি। হরেক পদের চাবি পকেটে। আর এই চাবির হিসাব মিলানো আরেক বিপদ। আমার পোস্টিংএর চাকুরী ট্রাংক ও বাক্স পেটরার অনেকগুলি তালাচাবির ব্যবহার করতে হয় ও করে আসছিলাম। তালা ও চাবি ম্যানেজমেন্ট আরেক বিশাল যুদ্ধ। আমার তালা ও চাবি একটা ব্যাগে রেখে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পোস্টিং এর কারণে মুভ করতে হয়। আমার তালা চাবি মিলানোর একটা ভাল কসরত করতে হয়। প্রায়ই মনে হত এবার অনেকগুলো তালার চাবি মিলাতে হবে। সময় ব্যয় করতে হবে। কতবার যে তালা চাবির মার্কিং করলাম আবার উল্টা পাল্টা হয়ে যায়। ১৯ বার পোস্টিং এর পর মনে হল জীবনটাকে চাবি-মুক্ত করি। প্রথমে আমরা চিন্তা করি লক কেন দেই। লক দেয়ার মূল কারণ হল কাউকে চুরি করা থেকে আটকানো তা কিন্তু নয়। যে ডিটারমাইন্ড চোর তাকে আটকানো অনেকটাই শক্ত ব্যাপার। কারণ সে জানে তালা ভাঙ্গতে। সে জানে চাবি তৈরি করতে হয়। তালা নিরাপত্তা দেয় আমাদের মনে ও চোরকে দেয় বাধা। একটা মানসিক বাধা চোর পায়। এটা আবদ্ধ ও তালা দেয়া জিনিস। এখানে চুরি করতে হলে প্রস্তুতি প্রয়োজন। তালার কাজ মানসিকভাবে ও প্রায়োগিক ভাবে বাধা দেয়। চোরের মাথায় ঢুকে তালা দেয়া আছে। তালা ভাঙ্গতে হবে। কেই দেখে ফেলবে। সময় লাগবে ধরা পরতে হবে। তা থাক অন্য সহজ টার্গেট দেখি। এভাবে আমাদের সম্পদ রক্ষা পায়। আমাদের সম্পদ রক্ষা করতে আমরা চাবি নামক যন্ত্রণা লুকিয়ে রাখা ও সাথে রাখার মত যন্ত্রণার শিকার হই। সেই তায়ালার সংখ্যা অনেকগুলি হলে কথা নেই। নম্বারিং ও চাবি মিলানো ভালই একটা সময় ক্ষেপণকারী কাজ। তাহলে উপায় চাবি বিহীন তালা। ডিজিটাল লক বা কম্বিনেশন লক। আমাদের দেশে ডিজিটাল লকের দাম আকাশ ছোয়া। তবে কম্বিনেশন লকের দাম কমছে। তালাগুলি বড় হচ্ছে। ডিজিটাল লক আর কম্বিনেশন লকগুলি আপনাকে স্বস্থি দিবে। অনেকে বলবেন নিরাপদ নয়। আমি নিরাপদ অনিরাপদ জানি না। অনেকের দেখছি দরজায় ডিজিটাল লক। অফিসে ডিজিটাল লকার ভালই চাবি বিহীন জীবন যাপন করছেন। আজকাল মোবাইল থাকলে মানিব্যাগ ও অন্যান্য কার্ড ছাড়া চলা সম্ভব। মোবাইল ব্যাংকিং এ টাকা নিবেন আর বিজনেছ কার্ড ও অন্যান্য কিছু মোবাইল ছবি তুলে রাখলে হল আমরা মানিব্যাগ বিহীন জীবন যাপন করব। পকেটে মানি ব্যাগ নাই ও পকেটে চাবি নাই। হাতে মোবাইল। ব্যাস সব হয়ে গেল। মানি ব্যাগ ও চাবিমুক্ত অফিসে থাকলে আমরা বাসায়ও তা করতে পারি। কিভাবে করব। বাসায় একটা ডিজিটাল লকার রাখতে পারি দেয়ালের সাথে ফিক্সড। সেই ডিজিটাল লকারে রাখতে পারি বাসার কম খোলা লাগে সেমসমস্ত আলমারি, লকার ও ডোর লকের চাবি। ডিজিটাল লকারগুলোতে আজকাল বুলেটপ্রুফ ও ফায়ার প্রুফও পাওয়া যায়। অনেক অনেক দামের ডিজিটাল লাকার আছে। আমাদের নিজেদের আর্থিক ক্ষমতা অনুযায়ী কিনতে পারি। এখন পর্যন্ত আমদানি নির্ভর তাই দাম বেশী আগামীতে দাম অনেক কমবে সন্দেহ নেই। সমস্ত চাবি ডিজিটাল লকারে গুছানো থাকল তাই নো টেনশন। এখন বাসার অন্যান্য দুই চারটি যা তালা সব সময় খুলতে হয় তা চাবিবিহীন তিন/চার ডিজিট নম্বর ম্যাচ করার লক লাগিয়ে নেন। আপনি হয়ে গেলেন চাবিমুক্ত। এখন বাকী রইল মেইন দরজা ও মেইন গেট। কোন চিন্তা নেই আপনি চাবিবিহীন নম্বর ম্যাচিং লক বা ডিজিটাল লক লাগিয়ে নেন। আপনি হয়ে গেলেন চাবি মুক্ত। আপনার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করার কোন কারণ নেই। এখনকার ডিজিটাল লক অনেক বেশী নিরাপদ। আর টেনশন আপনার বেশী থাকলে মূল দরজায় আর গেইটে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে দেন। তা ইন্টারনেটে কানেক্ট করে দেন সারা পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে দেখতে পারবেন। আপনি চাবি মুক্ত থাকলে আপনি আপনার নিরাপদ জীবন যাত্রায় অনেক বেশী ট্রেসমুক্ত থাকবেন। দিনের পর দিন প্রযুক্তি অনেক সুলভ হচ্ছে তাই ট্রেস ও টেনশনমুক্ত থাকার জন্য আপনি এখনই চাবিমুক্ত জীবন যাপন বেঁছে নিতে পারেন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Keep it up Dula bhai
ReplyDelete