আমাদের
দেশের অনেকেই গোবর দিয়ে রান্না করার জ্বালানী তৈরি করে। প্রতিদিন-গোবর দিয়ে গুটে
তৈরি করাটা মনে হয় আনহাইজেনিক। যদি এ ধরনের গুটে গুলো তৈরি না করে জ্বালানীর জন্য
গোবরকে বায়োগ্যাসে ব্যবহার করাটা অনেক বেশী উপকারী । প্রতিদিন গোবর নাড়া স্বাস্থ্য
সম্মত নয়। কারণ গোবরে অনেক ব্যাকটেরিয়া আছে। তাই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার সস্পর্শে কম
আশাই ভাল। গরুর গোবরের সাথে থাকা ব্যাকটেরিয়া অবশ্যই মানব দেহের জন্য অনেক বেশী
ক্ষতিকর।
প্রতিদিন
একবার করে গোবর সংগ্রহ করে সে গোবর দিয়ে জ্বালানী তৈরি করে। গোবর নাড়া পুনরায়
সাবান দিয়ে নিজেদের পরিষ্কার করা আর সুয়ারেজ ঘেঁটে পুনরায় পরিষ্কার হওয়ার মধ্যে
পার্থক্য তেমন নেই। গরু ,ছাগল, হাস ও মুরগী ইত্যাদি গৃহপালিত পশুর বিষ্ঠা আমাদের কাছে
অশুচি মনে হয় না। আমাদের দেশের সনাতন ধর্মের লোকজন গরুর গোবরের ব্যবহার পবিত্রতার
অংশ হিসাবে মনে করে। গরুর গোবর ছাড়া তাদের অনেক ধর্মীয় আচার অপূর্ণ রয়ে যায়। আর
এভাবে গরুর গোবর অনেকটা দৃষ্টিসীমার সামনে খুব খারাপ পদার্থ হিসাবে দৃষ্টিগোচর হয়
না।
মানুষের
দেহ সুস্থ ও সবল রাখতে প্রতিনিয়ত ব্যাকটেরিয়া সমৃদ্ধ আর্বজনায় সংস্পর্শে আসা ঠিক
হচ্ছে না। বড়জোর গ্লাভস পরে,গামবোট
লাগিয়ে কোদাল ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি দিয়ে সরাসরি চামড়ার স্পর্শ ছাড়া গোবর ও
অন্যান্য গৃহপালিত পশুর বিষ্ঠা সরানো প্রয়োজন। আর গৃহপালিত পশুর বিষ্ঠা ধুয়ে তরল
করে বায়ো ডাইজেস্টরে পাইপের মাধ্যমে প্রেরণ করা সম্ভব। আর এভাবে গোবর নাড়াচাড়া না
করে মেকানিক্যালী সরাসরি বায়োডাইজেস্টারে ফেলা সম্ভব। বায়োডাইজেষ্টরের গ্যাস দিয়ে
চুল্লী চালানো যাবে যা হবে পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্য সম্পন্ন।
গোবরের
তৈরি খড়ি যা কিনা প্রচুর ধোয়া সৃষ্ট করে। যার ফলে গোবর দ্বারা লাকড়ি তৈরি করতে
একদিকে অস্বাস্থ্যকর অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে অপর দিকে তৈরিকৃত লাকড়ি অধিক পরিমাণ
ধোয়ার সৃষ্ট করে হাপানী জাতীয় অন্যান্য শ্বাস কষ্টের রোগের সৃষ্টি করছে।
গোবর
দিয়ে লাকড়ি তৈরির অভ্যাস থেকে আমাদের গ্রামের মহিলাদের সরিয়ে আনতে হবে। প্রয়োজনে
এনজিও বা সরকারী ব্যবস্থায় আর্থিক সাহায্য দিয়ে গোবর ব্যবহারের জন্য বায়ো
ডাইজেস্টর বানাতে হবে।
মূল্যবান
গরুর গোবর শুধু মাত্র পুড়িয়ে নষ্ট করার চেয়ে আমরা বায়োগ্যাস তৈরি ও তার সাথে উন্নত
সার আমরা পার। তাই গোবর আগুনে জ্বালানী হিসাবে না ব্যবহার করে বায়ো গ্যাস ও জৈবসার
দুই কাজেই ব্যবহার করা যাবে। সে লক্ষ্যই আমাদের জ্বালানী হিসাবে গোবর ব্যবহার বন্ধ
করে বায়োডাইজেস্টরের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
No comments:
Post a Comment